আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০১০

পাঠকদের উদ্দেশে

দেশী পোলা নামে এক ব্লগার একই সঙ্গে সামু, আমু ও চতুর্মাত্রিক ব্লগে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যেটির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ধর্মকারীর দুই পাঠক। আরও একজন, যিনি স্পষ্টতই ধর্মকারীর পাঠক নন, এই পোস্টের লিংক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, "উত্তরে কি বলবেন"। 

চারপাশে ধর্মকারীর বিরূপ সমালোচনায় বরাবর কোনও প্রতিক্রিয়া আমি দেখাই না। কী লাভ! তবে ধর্মকারীর পাঠক দু'জনের (হয়তো আরও কেউ থাকতে পারেন) কাছে ধোঁয়াশাটুকু দূর করে দেয়ার জন্যেই এই পোস্টরচনা। আর এই ফাঁকে দেশী পোলাকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা: ধর্মকারী ব্লগের প্রচারে অবদান রাখার জন্য।

দেশী পোলার পোস্টটির সারকথা এই: ধর্মকারীতে ইসলাম ও নবীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। ভিডিওর মূল বক্তব্য নিয়ে ব্লগারের আপত্তি লক্ষ্য করা যায়নি, তবে তাঁর আপত্তি ভিডিওটির নির্মাতা ও উপস্থাপক স্টিভেন ক্রাউডার-কে নিয়ে। ক্রাউডার "একটা উগ্র ডানপন্থী পলিটিক্যাল কমেন্টেটর, গ্লেন বেক বা ফক্স চেনেল -এর সাথে উনি হরদম উঠানামা করেন"; এছাড়া তিনি গান রাইটসের সমর্থক, সমকামী বিয়ের বিরোধী, ওবামাকে কৃষ্ণাঙ্গ ছাগল বলেছেন...

দেশী পোলা (শুধু তিনি কেন, কেউই) কি ধর্মকারীতে প্রকাশিত একটি পোস্টও দেখাতে পারবেন, যেখানে ক্রাউডারের বক্তব্য ও অবস্থান (যেগুলোর কথা দেশী পোলা উল্লেখ করেছেন) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করা হয়েছে ক্ষীণতমভাবে হলেও? 

এখন লক্ষ্য করুন: ধর্মকারীতে দেয়া পোস্টটিতে আমি ক্রাউডারের নাম নেয়া তো দূরের কথা, তাঁর সম্পর্কে একটি শব্দও লিখিনি (সত্যি বলতে, দেশী পোলার পোস্ট পড়ার আগে জানতামও না। তবে এই অজ্ঞতাকে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্য আমার নেই।)। শুধু ভিডিও সম্পর্কে লিখেছি দুটোমাত্র বাক্য: "নতুন কোনও কথা নেই, তবে উপস্থাপনা বেজায় আকর্ষণীয় ও বড়োই হাস্যোদ্রেককারী। বিনোদন পেতে চাইলে অবশ্যদ্রষ্টব্য।" 

উপরোক্ত ভিডিও প্রকাশের অর্থ "ঘৃণা নিয়া ব্যবসা"? সব্বোনাশ! যুক্তির ধারে কাটা পড়ে যাবো তো!

তাঁর এই ভিডিও ধর্মকারীতে প্রকাশিত হয়েছে বলে তাঁর যাবতীয় বক্তব্য ও মতবাদ ধর্মকারী সমর্থন করে, এমন অযুক্তিসিদ্ধ ধারণা পোষণ করার আগে একটু ভেবে দেখাটা সমীচীন ছিলো, মনে হয়। ইসলামের নবীর বলা কোনও কথা আমার পছন্দ হলে এবং সেটি আমি উদ্ধৃত করলেই আমি নবীর অনুসারী হয়ে পড়বো নাকি? একইভাবে রবি ঠাকুরের একটি প্রবন্ধের বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে সেটির উদ্ধৃতি দিলেই আমাকে তাঁর বাকি সমস্ত মতবাদ ও বিশ্বাসের সমর্থক মনে করাটাও নিরেট নির্বুদ্ধিতা হবে না? 

প্রশ্নাতীত আনুগত্য ও নিঃশর্ত ভক্তি লক্ষ্য করা যায় ধর্মবিশ্বাসীদের মধ্যেই শুধু। নবীর সমস্ত কুকথা ও কুকর্ম মুখ ফুটে স্বীকার সাহস তো তাদের নেইই, বরং তারা সেসব ন্যায়সঙ্গত প্রমাণ করার জন্যে প্রাণপাত করতেও রাজি। তাঁকে যাবতীয় মানবীয় দোষ ও রিপুর ঊর্দ্ধে তুলে মহামানব জ্ঞান করাটাই তাঁর অন্ধঅনুসারীদের আরাধ্য বিষয়। 

পক্ষান্তরে, অন্ধ আনুগত্য ও প্রশ্নাতীত ভক্তির চর্চা নাস্তিকেরা করে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, হুমায়ুন আজাদের অনেক মতামতের সঙ্গে সহমত পোষণ করি, সবগুলোর সঙ্গে নয়।এবং সেটি অকপটে স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা-সংকোচে ভুগি না। গ্রাউন্ড জিরো মসজিদ বিষয়ে খ্যাতনামা নাস্তিক ক্রিস্টোফার হিচেন্স ও স্যাম হ্যারিসের অবস্থানও পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য নয় আমার কাছে। অন্ধভক্তি থাকলে দ্বিমত প্রকাশ করতে আমি পারতাম? জেনে রাখা উচিত, সবচেয়ে খ্যাতিমান ও ডাকসাইটে নাস্তিকের সমস্ত বাণীও বাকি নাস্তিকদের কাছে বেদবাক্য নয়। আর ক্রাউডার তো কোন ছাড়!

এতো কথা বলার উদ্দেশ্য একটাই: স্টিভেন ক্রাউডারের ভিডিওটি আমার কাছে বিনোদনী মনে হয়েছে বলেই সেটি আমি পোস্ট হিসেবে দিয়েছি; তার অর্থ এই নয় যে, গান রাইটস, সমকামী বিবাহ, ওবামাসহ যাবতীয় বিষয়ে তাঁর অবস্থান ধর্মকারী সমর্থন করে। কক্ষনওই নয়।

বস্তুত, অন্ধভক্তি চর্চার অভ্যস্ত দৃষ্টিকোণ থেকেই দেশী পোলার মনে হয়েছে, ক্রাউডারের ভিডিও ধর্মকারী যেহেতু পোস্ট করেছে, তার অর্থ - ক্রাউডার ধর্মকারীর কাছে বাই ডিফল্ট নমস্য, পূজনীয় এবং তাঁর সমস্ত বক্তব্য ও মতামত ধর্মকারীর শিরোধার্যই শুধু নয়, সেসবের দায় সে-ও বহন করে! কী বালখিল্য!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন