আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩

কুরানে বিগ্যান (পর্ব-২৩): মুহাম্মদের মোজেজা তত্ত্ব - এক

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২

সমগ্র কুরানের এক-তৃতীয়াংশ বাক্য শুধুই হুমকি-শাসানি-ত্রাস এবং পুরাকালের নবীদের গল্প সম্পর্কিত। কুরানের মোট ৬২৩৬ টি বাক্যের ৪৭০০ টিরও বেশির জন্মস্থান মক্কায়। মক্কার এই ৪৭০০ টি বাক্যের ১২০০ টিরও বেশি শুধুই পুরাকালের নবীদের উপকথা সম্পর্কিত। অর্থাৎ মক্কায় প্রবক্তা মুহাম্মদ তাঁর আল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে যে বাণীগুলো প্রচার করেছিলেন, তার প্রতি চারটি বাক্যের একটিই হলো পুরাকালের নবীদের গল্প ও কল্পকাহিনী। এই গল্পগুলো প্রচারের সময় স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বারংবার সেই পৌরাণিক নবীদের অলৌকিক কর্মকাণ্ডের উপাখ্যান অবিশ্বাসীদের স্মরণ করিয়ে দিতেন। কিছু উদাহরণ:

হযরত মুসা (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

কুরানে মুসা (আঃ) ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফেরাউনের গল্প কমপক্ষে ২১ বার বর্ণিত হয়েছে। প্রবক্তা মুহাম্মদের (আল্লাহ) বাণীর (কুরান) এক বিশেষ বৈশিষ্ট হলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই বিষয়/বাক্য বার বার প্রদান। হযরত মুসার (আঃ) মোজেজা গুলো ছিল নিম্নরূপ:

ক) তাঁর লাঠিটি সাপ হয়ে গেল!

৭:১০৪-১০৮ - আর মূসা বললেন, হে ফেরাউন, আমি বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত রসূল। আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সত্য এসেছে, তার ব্যতিক্রম কিছু না বলার ব্যাপারে আমি সুদৃঢ়। আমি তোমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলদেরকে আমার সাথে পাঠিয়ে দাও। সে বলল, যদি তুমি কোন নিদর্শন নিয়ে এসে থাক, তাহলে তা উপস্থিত কর যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক। তখন তিনি নিক্ষেপ করলেন নিজের লাঠিখানা এবং তাৎক্ষণাৎ তা জলজ্যান্ত এক অজগরে রূপান্তরিত হয়ে গেল। আর বের করলেন নিজের হাত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চোখে ধবধবে উজ্জ্বল দেখাতে লাগল। 

২০:১৯-২২ - আল্লাহ বললেনঃ হে মূসা, তুমি ওটা নিক্ষেপ কর। অতঃপর তিনি তা নিক্ষেপ করলেন, অমনি তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল। --তোমার হাত বগলে রাখ, তা বের হয়ে আসবে নির্মল উজ্জ্বল হয়ে অন্য এক নিদর্শন রূপে; কোন দোষ ছাড়াই। 

২৬:৩২-৩৩অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল। আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো। 

২৭:১০ - আপনি নিক্ষেপ করুন আপনার লাঠি। অতঃপর যখন তিনি তাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখলেন, তখন তিনি বিপরীত দিকে ছুটতে লাগলেন এবং পেছন ফিরেও দেখলেন না। হে মূসা, ভয় করবেন না। আমি যে রয়েছি, আমার কাছে পয়গম্বরগণ ভয় করেন না। 

২৮:৩১ - আরও বলা হল, তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর। অতঃপর যখন সে লাঠিকে সর্পের ন্যায় দৌড়াদৌড়ি করতে দেখল, তখন সে মুখ ফিরিয়ে বিপরীত দিকে পালাতে লাগল এবং পেছন ফিরে দেখল না। হে মূসা, সামনে এস এবং ভয় করো না। তোমার কোন আশংকা নেই। 

খ) সমুদ্রের পানি দু'ভাগ হয়ে মাঝপথে শুষ্কপথ নির্মাণ!

২০:৭৭-৭৮ - আমি মূসা প্রতি এই মর্মে ওহী করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও এবং তাদের জন্যে সমুদ্রে শুষ্কপথ নির্মাণ কর। পেছন থেকে এসে তোমাদের ধরে ফেলার আশঙ্কা করো না এবং পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয় করো না। অতঃপর ফেরাউন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল এবং সমুদ্র তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জত করল। 

২৬:৬৩ - অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল। 

২:৫০ - আর যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখন্ডিত করেছি, অত:পর তোমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং ডুবিয়ে দিয়েছি ফেরআউনের লোকদিগকে অথচ তোমরা দেখছিলে।

গ) পাথরের ভেতর থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে বারটি প্রস্রবণ তৈরি! 

৭:১৬০ - আর আমি পৃথক পৃথক করে দিয়েছি তাদের বার জন পিতামহের সন্তানদেরকে বিরাট বিরাট দলে, এবং নির্দেশ দিয়েছি মুসাকে, যখন তার কাছে তার সম্প্রদায় পানি চাইল যে, স্বীয় যষ্টির দ্বারা আঘাত কর এ পাথরের উপর। অত:পর এর ভেতর থেকে ফুটে বের হল বারটি প্রস্রবণ। প্রতিটি গোত্র চিনে নিল নিজ নিজ ঘাঁটি। আর আমি ছায়া দান করলাম তাদের উপর মেঘের এবং তাদের জন্য অবতীর্ন করলাম মান্না ও সালওয়া। যে পরিচ্ছন্ন বস্তুত জীবিকারূপে আমি তোমাদের দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ভক্ষণ কর।

২:৬০ - আর মূসা যখন নিজ জাতির জন্য পানি চাইল, তখন আমি বললাম, স্বীয় যষ্ঠির দ্বারা আঘাত কর পাথরের উপরে। অত:পর তা থেকে প্রবাহিত হয়ে এল বারটি প্রস্রবণ। তাদের সব গোত্রই চিনে নিল নিজ নিজ ঘাট। আল্লাহর দেয়া রিযিক খাও, পান কর আর দুনিয়ার বুকে দাংগা-হাংগামা করে বেড়িও না।

ঘ) পাহাড়কে সামিয়ানার মত উপরে তুলে ধরা!

২:৬৩ - আর আমি যখন তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তুর পর্বতকে তোমাদের মাথার উপর তুলে ধরেছিলাম এই বলে যে, তোমাদিগকে যে কিতাব দেয়া হয়েছে তাকে ধর সুদৃঢ়ভাবে এবং এতে যা কিছু রয়েছে তা মনে রেখো যাতে তোমরা ভয় কর।

৪:১৫৪ - আর তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেবার উদ্দেশ্যে আমি তাদের উপর তূর পর্বতকে তুলে ধরেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম, অবনত মস্তকে দরজায় ঢোক। আর বলেছিলাম, শনিবার দিন সীমালংঘন করো না| এভাবে তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম।

৭:১৭১ - আর যখন আমি তুলে ধরলাম পাহাড়কে তাদের উপরে সামিয়ানার মত এবং তারা ভয় করতে লাগল যে, সেটি তাদের উপর পড়বে, তখন আমি বললাম, ধর, যা আমি তোমাদের দিয়েছি, দৃঢ়ভাবে এবং স্মরণ রেখো যা তাতে রয়েছে, যেন তোমরা বাঁচতে পার। 

ঙ) মুসার হাত বগলে রাখার পর তা বের করলে নিরাময় উজ্জ্বল হয়!

২৭:১২ - আপনার হাত আপনার বগলে ঢুকিয়ে দিন, সুশুভ্র হয়ে বের হবে নির্দোষ অবস্থায়। এগুলো ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কাছে আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্যতম। নিশ্চয় তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়। 

২৮:৩২ - তোমার হাত বগলে রাখ। তা বের হয়ে আসবে নিরাময় উজ্জ্বল হয়ে এবং ভয় হেতু তোমার হাত তোমার উপর চেপে ধর। এই দু’টি ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের প্রতি তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে প্রমাণ। নিশ্চয় তারা পাপাচারী সম্প্রদায়। 

চ) মৃত মানুষকে জীবিতকরণ!

২:৭৩-৭৪ - অত:পর আমি বললাম: গরুর একটি খন্ড দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে আল্লাহ্ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শণ সমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর। অত:পর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তা পাথরের মত অথবা তদপেক্ষাও কঠিন। পাথরের মধ্যে এমন ও আছে; যা থেকে ঝরণা প্রবাহিত হয়, এমনও আছে, যা বিদীর্ণ হয়, অত:পর তা থেকে পানি নির্গত হয় এবং এমনও আছে, যা আল্লাহর ভয়ে খসে পড়তে থাকে! আল্লাহ্ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।

২:৫৬ - তারপর মরে যাবার পর তোমাদিগকে আমি তুলে দাঁড় করিয়েছি, যাতে করে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও|

ছ) অলংকারাদির দ্বারা তৈরি বাছুর থেকে অলৌকিক ‘হাম্বা হাম্বা’ শব্দ!

৭:১৪৮ - আর বানিয়ে নিল মূসার সম্প্রদায় তার অনুপস্খিতিতে নিজেদের অলংকারাদির দ্বারা একটি বাছুর তা থেকে বেরুচ্ছিল ‘হাম্বা হাম্বা’ শব্দ। তারা কি একথাও লক্ষ্য করল না যে, সেটি তাদের সাথে কথাও বলছে না এবং তাদেরকে কোন পথও বাতলে দিচ্ছে না! তারা সেটিকে উপাস্য বানিয়ে নিল| বস্তুত: তারা ছিল জালেম| 

জ) বেহেশতী খাবার পৃথিবীতে আনয়ন!

(৭:১৬০), ২:৫৭ - আর আমি তোমাদের উপর ছায়া দান করেছি মেঘমালার দ্বারা এবং তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছি ’মান্না’ ও সালওয়া।’ সেসব পবিত্র বস্তু তোমরা ভক্ষন কর, যা আমি তোমাদেরকে দান করেছি| বস্তুত: তারা আমার কোন ক্ষতি করতে পারেনি, বরং নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করেছে|

হযরত ইবরাহিম (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

কুরানে হযরত ইবরাহিম (আ:) এর গল্প কমপক্ষে ১২ বার বর্ণনা করা হয়েছে। তার মোজেজা গুলো ছিল নিম্নরূপ:

ক) অগ্নি অলৌকিকভাবে ইব্রাহীমের উপর শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাওয়া!

২১:৬৯ - আমি বললামঃ হে অগ্নি, তুমি ইব্রাহীমের উপর শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও। 

২৯:২৪ - তখন ইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের এছাড়া কোন জওয়াব ছিল না যে তারা বলল, তাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর। অতঃপর আল্লাহ তাকে অগ্নি থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসী লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। 

খ) মৃতকে জীবিতকরণ!

২:২৬০ - আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাও| পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অত:পর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলোকে ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন।

হযরত ঈসা (আ:) ও তার মা মরিয়মের অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

ক) কোলের শিশুর অলৌকিক কথা বলা!

৩:৪৬ - যখন তিনি মায়ের কোলে থাকবেন এবং পূর্ণ বয়স্ক হবেন তখন তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন| আর তিনি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

৫:১১০ - যখন আল্লাহ বলবেন: হে ঈসা ইবনে মরিয়ম, তোমার প্রতি ও তোমার মাতার প্রতি আমার অনুগ্রহ স্মরণ কর, যখন আমি তোমাকে পবিত্র আত্নার দ্বারা সাহায্য করেছি। তুমি মানুষের সাথে কথা বলতে কোলেও এবং পরিণত বয়সেও এবং যখন আমি তোমাকে গ্রন্থ, প্রগাঢ় জ্ঞান, তওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিয়েছি --

১৯:২৯-৩০ - অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বললঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব? সন্তান বললঃ আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন। 

খ) কাদামাটি দিয়ে তৈরী পাখিকে জীবনদান ও জন্মান্ধ/কুষ্টরোগী নিরাময়!

৩:৪৯ - আর বণী ইসরাঈলদের জন্যে রসূল হিসেবে তাকে মনোনীত করবেন। তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে। আমি তোমাদের জন্য মাটির দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরী করে দেই। তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি, তখন তা উড়ন্ত পাখীতে পরিণত হয়ে যায় আল্লাহর হুকুমে। আর আমি সুস্খ করে তুলি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত কুষ্ঠ রোগীকে। আর আমি জীবিত করে দেই মৃতকে আল্লাহ্র হুকুমে। আর আমি তোমাদেরকে বলে দেই যা তোমরা খেয়ে আস এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস| এতে প্রকৃষ্ট নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

৫:১১০ - যখন তুমি কাদামাটি দিয়ে পাখীর প্রতিকৃতির মত প্রতিকৃতি নির্মাণ করতে আমার আদেশে, অত:পর তুমি তাতে ফুঁ দিতে; ফলে তা আমার আদেশে পাখী হয়ে যেত এবং তুমি আমার আদেশে জন্মান্ধ ও কুষ্টরোগীকে নিরাময় করে দিতে এবং যখন আামি বনী-ইসরাঈলকে তোমা থেকে নিবৃত্ত রেখেছিলাম, যখন তুমি তাদের কাছে প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলে, অত:পর তাদের মধ্যে যারা কাফের ছিল, তারা বলল: এটা প্রকাশ্য জাদু ছাড়া কিছুই নয়।

গ) বেহেশত থেকে খাবার আনয়ন! 

৩:৩৭ - অত:পর তাঁর পালনকর্তা তাঁকে উত্তম ভাবে গ্রহণ করে নিলেন এবং তাঁকে প্রবৃদ্ধি দান করলেন-অত্যন্ত সুন্দর প্রবৃদ্ধি। আর তাঁকে যাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে সমর্পন করলেন। যখনই যাকারিয়া মেহরাবের মধ্যে তার কছে আসতেন তখনই কিছু খাবার দেখতে পেতেন। জিজ্ঞেস করতেন ‘মারইয়াম’ কোথা থেকে এসব তোমার কাছে এলো? তিনি বলতেন, ‘এসব আল্লাহর নিকট থেকে আসে।

৫:১১২-১১৫ - যখন হাওয়ারীরা বলল: হে মরিয়ম তনয় ঈসা, আপনার পালনকর্তা কি এরূপ করতে পারেন যে, আমাদের জন্যে আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করে দেবেন? তিনি বললেন: যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে আল্লাহকে ভয় কর। তারা বলল: আমরা তা থেকে খেতে চাই; আমাদের অন্তর পরিতৃপ্ত হবে; আমরা জেনে নেব যে, আপনি সত্য বলেছেন এবং আমরা সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাব। ঈসা ইবনে মরিয়ম বললেন: হে আল্লাহ্ আমাদের পালনকর্তা আমাদের প্রতি আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করুন। তা আমাদের জন্যে অর্থাৎ, আমাদের প্রথম ও পরবর্তী সবার জন্যে আনন্দোৎসব হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হবে। আপনি আমাদের রুযী দিন। আপনিই শ্রেষ্ট রুযীদাতা। আল্লাহ্ বললেন: নিশ্চয় আমি সে খাঞ্চা তোমাদের প্রতি অবতরণ করব। অত:পর যে ব্যাক্তি এর পরেও অকৃতজ্ঞ হবে, আমি তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অপর কাউকে দেব না। 

হযরত ইউসুফ (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

১২:৯৩ - তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও। এটি আমার পিতার মুখমন্ডলের উপর রেখে দিও, এতে তাঁর দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসবে। আর তোমাদের পরিবারবর্গের সবাইকে আমার কাছে নিয়ে এস। 

১২:৯৬ - অতঃপর যখন সুসংবাদদাতা পৌঁছল, সে জামাটি তাঁর মুখে রাখল। অমনি তিনি দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলেন। বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা জানি তোমরা তা জান না? 

হযরত নূহ (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

২৩:২৭ - অতঃপর আমি তার কাছে আদেশ প্রেরণ করলাম যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনে এবং আমার নির্দেশে নৌকা তৈরী কর। এরপর যখন আমার আদেশ আসে এবং চুল্লী প্লাবিত হয়, তখন নৌকায় তুলে নাও, প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং তোমার পরিবারবর্গকে, তাদের মধ্যে যাদের বিপক্ষে পূর্বে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের ছাড়া। এবং তুমি জালেমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না। নিশ্চয় তারা নিমজ্জত হবে। 

হযরত সুলায়মান (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

২৭:১৬-১৭ - সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব। ’ সুলায়মানের সামনে তার সেনাবাহিনীকে সমবেত করা হল। জ্বিন-মানুষ ও পক্ষীকুলকে, অতঃপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যূহে বিভক্ত করা হল। 

হযরত হূদ (আ:) এর অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

১১:৬৪ - আর হে আমার জাতি! আল্লাহর এ উষ্ট্রীটি তোমাদের জন্য নিদর্শন, অতএব তাকে আল্লাহর যমীনে বিচরণ করে খেতে দাও, এবং তাকে মন্দভাবে স্পর্শও করবে না। নতুবা অতি সত্বর তোমাদেরকে আযাব পাকড়াও করবে। 

অন্যান্য অলৌকিকত্বের বর্ণনা:

২:২৪৩ - তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ্ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না।

২:২৫৯ - তুমি কি সে লোককে দেখনি যে এমন এক জনপদ দিয়ে যাচ্ছিল যার বাড়ীঘরগুলো ভেঙ্গে ছাদের উপর পড়ে ছিল? বলল, কেমন করে আল্লাহ্ মরনের পর একে জীবিত করবেন? অত:পর আল্লাহ্ তাকে মৃত অবস্থায় রাখলেন একশ বছর। তারপর তাকে উঠালেন। বললেন, কত কাল এভাবে ছিলে? বলল আমি ছিলাম, একদিন কিংবা একদিনের কিছু কম সময়। বললেন, তা নয়; বরং তুমি তো একশ বছর ছিলে। ---

>>> অবিশ্বাসীরা মুহাম্মদের কাছে পৌরাণিক নবীদের এরূপ অলৌকিক কিচ্ছা-কাহিনী দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বারংবার শুনে আসছিলেন। এমতাবস্থায় যে কোনো মুক্তবুদ্ধির বিবেকবান মানুষ স্বাভাবিকভাবেই মুহাম্মদের কাছে তাঁর নবুয়তের প্রমাণ স্বরূপ “অনুরূপ কোনো অলৌকিকত্ব” দাবি করতেই পারেন। বিনা প্রমাণে কেন তাঁরা তাঁকে নবী বলে মানবেন? হ্যাঁ, অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই যে কোনো মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতই অবিশ্বাসীরাও মুহাম্মদের কাছে তাঁর নবুয়তের প্রমাণ হাজির করতে বলেছিলেন। তাঁদের দাবি বেশি কিছু ছিল না। তারা মুহাম্মদের কাছে চেয়েছিলেন মুহাম্মদেরই বর্ণিত পূর্ববর্তী নবীদের অনুরূপ অলৌকিক কোনো নিদর্শন, যা দেখে তাঁরা নিশ্চিত হবেন যে, মুহাম্মদ সত্যিই আল্লাহের নবী! 

মুহাম্মদ কি তা হাজির করতে পেরেছিলেন? মুহাম্মদেরই জবানবন্দীর আলোকে তার বিশদ আলোচনা করবো পরবর্তী পর্বে।

[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।]

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন