আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৪

কে যিশু (ঈসা)?

লিখেছেন জসীম উদদীন

ইসলামে বর্ণিত ঈসা আর খ্রিষ্টধর্মের প্রধানতম ব্যক্তি যিশু একই ব্যক্তি, যার জন্ম হয়েছিল অলৌকিক পবিত্র আত্মার দ্বারা। তিনি খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক হিসেবে বেশি পরিচিত। ইসলামের মতে, ইজ্ঞিল বিকৃত বলে কোরান তার বর্তমান অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে না। কিন্তু এই ধর্মীয় ইতিহাসগুলো ব্যতীত অন্য কোনো নিরপেক্ষ ইতিহাসে যিশুর অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। 

যিশু বা ঈসা নামের কেউ কি সত্যিই ছিল বা পৃথিবীতে তার জন্ম হয়েছিল কোনো অলৌকিক ক্ষমতা বলে? প্রশ্নটা মনে হওয়ার কারণটা হল - যিশুর জীবনচরিত রচনাকারী চার ব্যক্তি মার্ক, মথি, লূক ও ইউহেন্না তাঁদের বর্ণনায় কেবল অলৌকিকভাবে যিশুর জন্মের কথা জানায়। তার জন্মপরবর্তী তিরিশ বছর সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। তবে তার ৩০ বছর বয়সে তার ধর্মপ্রচারের কথা সম্পর্কে জানা যায়। মাঝের বছরগুলো বা যিশুর বাল্যকাল সম্পর্কে কোথাও কোনোকিছুর উল্লেখ নেই। Dan Browen তার Da Vincie Code বইতে বলেছিলেন যে, প্রথম খ্রিষ্টান গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয় গলে (বর্তমান ফ্রান্স)। যিশুর মৃত্যুর প্রায় ৮০ বছর পরে। কিন্তু যিশুর সমসাময়িক কোনো ইতিহাসে (ধর্মীয় ইতিহাস ব্যতীত) যিশুর অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

হেরোডোটাসের মতে ইতিহাসর লেখা শুরু হয় প্রায় খ্রি:পূ: ৫ম শতাব্দী থেকে। এই দীর্ঘ সময়ের বিবরণীতে কোথাও যীশুর অস্তিত্বের কথা বা প্রমাণ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না। খ্রি:পূ: ৩২০০ অব্দে মিশরীয় ফারাও রাজবংশের সৃষ্টি হয়, খ্রি:পূ: ৪০০০ অব্দে মিশরে চাষাবাদ শুরু হয়, খ্রি:পূ: ৭০০০ অব্দে সিরিয়ার উত্তর উপকূলে ‘বাস সামরাতে’ জনবসতি ছিল তার প্রমাণ মেলে। তারও কোটি কোটি বছর আগে ডাইনোসর নামে একটি প্রজাতি যে পৃথিবী কাপিঁয়ে বেড়াত, তারও প্রমাণ আছে, কিন্তু যিশুর অস্তিত্ব সম্পর্কে কোনো প্রমাণ বা তথ্য নাই। 

তবে খ্রিষ্টধর্ম সম্পর্কে সম্ভবত সর্বপ্রথম জানা যায় ইতিহাসের সবথেকে কুখ্যাত যোদ্ধা জাতি ভাইকিংসদের বিভিন্ন বর্নণা থেকে। এদের নর্থম্যান বা নর্সম্যানও বলা হয়, ভাইকিংরা পূর্বদিকে রাশিয়া ও কনষ্ট্যন্টিনোপল পর্যন্ত অন্যদিকে পশ্চিমে গ্রীনল্যান্ডে পৌছে গিয়েছিল। ভাইকিংরা ৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ইউরোপীয় অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। আইসল্যান্ড ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার সাহিত্যে ভাইকিংদের শৌর্য-বীর্যের কথা বলা হয়েছে, স্কান্ডিনেভিয়ার মানুষরা খ্রিষ্টর্ধমে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করলে ভাইকিংরা ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়ে শেষ হয়ে যায়। 

ভাইকিংদের ভাবা হতো ইউরোপীয় অঞ্চলের ত্রাস, দস্যুতার জন্য বিখ্যাত এই জাতিটি যুদ্ধবাজ মনোবৃত্তির জন্যও ইতিহাস বড় একটি স্থান দখল করে আছে। তাদের ঐ সময়ের রচিত বীরগাথা থেকে জানা যায় যে, “দেবতা থরের আদেশে তারা ইংগোল্যান্ড আক্রমণ করে। কিন্তু থর তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। এই জাতি আমাদের (ভাইকিংস) থেকেও গরীব। এখানে কিছু মঠ আর কিছু সন্ন্যাসী আছে। তারা তাদের পিতা ও তার পুত্রের প্রার্থনায় ব্যস্ত। এ জাতি নিতান্ত অসহায়। এরা কিছুই জানে না।” 

রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ইহুদী ধর্মনেতাদের উদ্যোগে রোমান সম্রাটগণ খ্রিষ্টধর্ম প্রচার বন্ধে নানারকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। ৩১১ খ্রি: রোমান সম্রাট গ্যালেরিয়াস খ্রিষ্টানদের ওপর নির্যাতন বন্ধের নির্দেশ দেন এবং পরে ৩১৩ খ্রি: সম্রাট কনস্টান্টাইন খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় অধিকার দেন। ৩৯৫ খ্রি: সম্রাট প্রথম থিউডোসিয়াস খ্রিষ্টধর্মকে রোমান সাম্রাজ্যের একমাত্র বৈধ ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। রোমান সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রিষ্টধর্মের প্রসার ঘটে। ৪৭৬ খ্রি: জার্মানদের হাতে রোমান সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। র্জামান যোদ্ধারা ঐ সময়ে প্রচুর গির্জা ভাঙে, সাথে সাথে পুরোহিতদেরও হত্যা করা হয়। 

মূলত ঐ সময়ে পুরোহিতসহ শিক্ষানবিশ পুরোহিতেরা ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এই কৃতিত্বের একজন বড় দাবীদার পোপ প্রথম গেগরীর (৫৯০-৬০৪), যার হাত ধরে পোপতন্ত্রের বিকাশ হয়। যিনি র্জাযিমান দুর্ধর্ষ জাতিদের খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করেছেন। তিনি কয়েকবার লম্বর্ডদের আক্রমণ থেকে গির্জা-পুরোহিতদের রক্ষা করে শাসনকার্যে ধর্মের ব্যবহার শুরু করেন। এরপরে পোপ লিও, সেন্ট অগাস্টিন, সেন্ট টমাস একুইনাস, সেন্ট অ্যানাটনী, সেন্ট প্যাকোমিয়াস প্রভৃতি ব্যক্তির প্রচারণার কারণে খ্রিষ্টধর্ম সম্প্রসারিত হতে থাকে। এই সকল ব্যক্তিবর্গই খ্রিষ্টধর্মের সাথে লৌকিক ব্যাপারগুলো যোগ করেন। 

এ তো গেল খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের ব্যাপার। কিন্তু সত্যিই যে যিশু বা ঈসা জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে ব্যাপারে কোনো তথ্যই পাওয়া যায় না। এমনকি তার চার প্রধান শিষ্য হিসেবে কথিত যারা ইজ্ঞিল লিখেছে, তারাও কেউ যিশু/ঈসাকে দেখেছে,  তারও কোন প্রমাণ মেলে না। এখন প্রশ্ন থেকেই যায়: যিশু কে? সত্যিই কি তিনি অলৌকিক কোনো ক্ষমতাবলে জন্মেছিলেন? এর প্রমাণসহ উত্তর কেউই আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি। তাহলে ধরে নেয়াই যায় যে, যিশু/ঈসা কোনো বাস্তব ব্যক্তি নয়, একটি কাল্পনিক চরিত্র মাত্র। এটা বলাই কি সঙ্গত নয়?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন