আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

বিধাতার নির্বুদ্ধিতা

লিখেছেন তানজিমা আহসান তুলি

Deconstruction Theory বা বিনির্মাণ তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের বাক্যগুলি মধ্যযুগীয়। এসবের গঠন দুর্বল। এগুলিকে লিঙ্গুইস্টিকে বলে "উইক টেক্সট"; মানে একাধিক ব্যাখ্যা হতে পারে। মানবিকেরা মানুষের মতন, অমানুষেরা অমানুষের মতন ব্যখ্যা করবে ।এই "ডিকনস্ট্রাকশন"-জনিত দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ধর্মকে মানবিক বা যুগোপযোগী করে তোলার চেষ্টাকে বলে “উইক থিওলজি” বা “দুর্বল ধর্মতত্ত্ব”। 

এজন্য দেখা যায়, ইউরোপের ইংরেজি ভার্শনের কুরান অনুবাদে তুলনামূলক উদার শব্দচয়ন করা হয়। বাংলা অনুবাদে আরবির সাথে অসামঞ্জস্য দেখা যায়। কিন্তু বিজ্ঞানের ভাষা ইংরেজি, বাংলা, আরবি, ফারসি বা মান্দারিন যা-ই হোক না কেন, ব্যাখ্যা একই। জাকির নায়েকের মত ধর্মব্যবসায়ীরা এই সুযোগটা মোক্ষমভাবে কাজে লাগায়! ধর্ম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে এসব "জোকার নায়কদের" কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে সারা বিশ্বে।

ফলে ধর্মগ্রন্থ অনুসরণ করাটা খুব ভয়ংকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। যেমনটা ঘটছে পাকিস্তানে, আফগানিস্তানে, সিরিয়ায়। কারো মতে এটা ধর্মসম্মত, আর কারো মতে - ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা।

আল্লা বা ঈশ্বরকে যতোই বুদ্ধিমান দাবি করা হোক না কেন, একটি গ্রন্থের মধ্যে দিয়ে তার বক্তব্যকে পৃথিবীতে পাঠানোর মতন বোকামী আর হতে পারে না! কারণ সেই বইয়ের হাজার হাজার ভাবার্থ হতে পারে, ফলে আল্লা বা ঈশ্বর ঠিক কী চাইছেন, তা কোনোদিনই জানা সম্ভব না। অর্থাৎ হীরক রাজার দেশের অবস্থা – "ব্যাখ্যার কোনো শেষ নাই > ব্যাখ্যার চেষ্টা বৃথা তাই"।

সুতরাং একজন চোর, ডাকাত, মাস্টারমশাই, ব্যবসায়ী, যোদ্ধা একই বই পড়লেও এদের কাছে কোরানের ব্যাখ্যা হবে আলাদা। মোদ্দা কথা, ১৫০০ মিলিয়ন মুসলিম কোরান পড়ে ১৫০০ মিলিয়ন ব্যাখ্যা তুলে নিয়ে আসতে পারে, যার অনেকগুলিই পরস্পরবিরোধী হবে, কিছু মিলও থাকবে। এবং সেটাই বাস্তব।

আল্লা বা ঈশ্বর বুদ্ধিমান হলে বইয়ের মাধ্যমে ইনস্ট্রাকশন পাঠানোর মত মানবীয় স্থূল জ্ঞানের কাজটি করতেন না। তিনি তো সৃষ্টির মা-বাপ। একদম মানুষের মস্তিস্কের মধ্যে কোরানটাকে জেনেটিক্যালি ওয়ারড করে পাঠিয়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে যেত! 

আল্লা কী চান? তার আইনের সাম্রাজ্য? সেটা তো মানুষের জেনেটিক কোডে ঢুকিয়ে দিলেই অনায়াসেই হয়ে যেত! তিনিই তো মানুষ তৈরি করেছেন! অথচ জেনেটিক কোড ব্যবহার না করে বইয়ের মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছা বা আইনের কথা জানানোর মতো গাধামো কেন তিনি করলেন, তা সত্যই খুব গোলমেলে! 

একবার ভেবে দেখুন। একটি প্রতিষ্ঠিত আইনেরও হাজার ব্যাখ্যা হয় - আইন-বাক্যটি কিন্ত বদলায় না। যেমন, সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাধী আইনের কথা বলা যায়: আইন একই, কিন্তু পক্ষে-বিপক্ষে আলাদা ব্যাখ্যা। সুতরাং কিছু আইন সংকলন করে ছেড়ে দিলেই আইনের সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয় না, সামাজিক বিবর্তনের সাথে সাথে সেই একই আইনের ব্যাখ্যাও বদলে যায়। 

সুতরাং একটি গ্রন্থের মাধ্যমে সর্বকালীন সার্বজনীন একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠার করার ধারণাটাই ডাঁহা ভুল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বা আল্লার যদি সত্যিই অস্তিত্ব থাকত, ধর্মরাজ্য বানাতে ধর্মগ্রন্থ বাজারে ছাড়ার মতন বোকামি তিনি করতেন না। জেনেটিক কোডে সামান্য রদ-বদল করে তিনি তার ধর্ম রাজ্য বানাতে পারতেন! ধর্মগ্রন্থ বাজারে ছেড়ে ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার খোয়াব আসলে মানবিক ক্রিয়া-কলাপ। এ কারণে ধর্মের ব্যাখ্যামূলক বিতর্কগুলি অর্থহীন জঞ্জালের সৃষ্টি করছে। কারণ কোনো ব্যাখ্যাই আসলে কোনো না কোনোভাবে বেঠিক না। কারণ ওই রকম দুর্বল বাক্যের একটি মাত্র ভাবার্থ থাকতে পারে না।

সুতরাং যারা কোরানে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড এবং নৃশংসতা পাচ্ছে, তারাও যেমন ঠিক, আবার যারা ফুল-ফলের শোভিত গন্ধ পাচ্ছে, তারাও ঠিক।

অথচ দেখুন, বিজ্ঞানের ভাষা হয় একক ব্যাখ্যার। ভিন্ন ব্যাখ্যার কোনো সুযোগই নেই। তবুও কেউ যদি কোরানে বিজ্ঞান আছে বলে গর্বিত বা খুুশি হয়, তাতে কী যায় আসে।

মোদ্দা কথা, আল্লা নিজের ভেলকি বা কেরামতি দেখাতে চাইলে মানুষের জেনেটিক কোডেই সেটার ব্যবস্থা করতে পারতেন - বইয়ের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের চেষ্টাটা আমাদের মতন নশ্বর মানুষের কাজ!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন