আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ইসলামী সন্ত্রাসে মডারেটদের নীরব ইন্ধন

লিখেছেন সেক্যুলার ফ্রাইডে

রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দেশ, মদিনা সনদের দেশ, মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠতার দেশ বাংলাদেশের মত স্বল্পশিক্ষিত ও ততোধিক দরিদ্র একটি দেশে মুসলমানদের ধর্মানুভুতি ও ধর্মঅহং যতটা তীব্র, সে তুলনায় ধর্মশিক্ষা, ধর্মবোধ, ধর্মানুশীলন ও ধর্মোপলব্ধির মাত্রাটা অতি মাত্রায় নড়বড়ে।

আর সে কারণেই এদেশের মডারেট মুসলমানদের অনেকেই প্রায়শঃ জাকির নায়েক নামের এক ধর্মব্যাপারীর সাথে সুরে সুর মিলিয়ে উন্নাসিক ভাবালুতার চূড়ান্ত পরাকাষ্ঠায়, উচ্চকিত কণ্ঠে বলে ওঠে:

"মুসলমানদের ভুলের দায় দায়িত্ব ইসলামের নয়; মুসলমানদের সকল ভুলের দায়ভার বর্তায় সেইসব মুসলিমদের উপর যারা সে ভুলগুলো করছেন।"

এবং একই সাথে তাঁরা গোয়েবলসীয় কায়দায় কিছু ক্লিশে বাক্য আওড়ে চলেন যার মাঝে রয়েছে - "ইসলাম একটি সম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা", "ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম", "কোরআনে রয়েছে লুক্কায়িত সেই বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সমাহার যা আজও আবিষ্কৃত হয়নি", "ইসলাম দিয়েছে নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান‌" ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

জাকির নায়েকের মত ব্যবসায়ীরা এই কাজটা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে; কারণ ধর্মই তাদের জীবিকার মাধ্যম, সেটাই পুঁজি; ধর্মবাণী নিয়ে নিত্যনতুন মোচড়ের সৃষ্টি করা বা ত্যানা প্যাঁচাতে পারাটাই তাদের জীবিকার অংশ, এবং তাদের সে প্রচেষ্টা বোধগোম্যও; কিন্তু মডারেট মুসলমানেরা কিছুমাত্র না ভেবে, সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কেন এই হাস্যকর অবস্থানটি নেন?

কেন তাঁদের নৈতিক মেরুদণ্ডের দুর্বলতাটি পরম নির্লজ্জতায় সকলের সামনে দৃশ্যমান করে তোলেন?

চিন্তার দুর্বলতা ও নিতান্ত অবহেলাতেই তাঁরা এ সত্যটি বিস্মৃত হন যে, কোনো একটি সমাজের অনিয়ম যখন দৃষ্টিকটুভাবে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠে, মানবসভ্যতার অগ্রগতির পরিপন্থী হয়ে ওঠে, অপরাপর মানুষের জন্য নিরাপত্তা ও মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে, তখন সেই সেই নিয়মলজ্ঘনটিকে বলা হয় অপরাধ। নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সেটা শাস্তিযোগ্য এবং সেই অপরাধকে উৎসাহিত করার, প্রচার ও প্রসার করার নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্বটি সেই নীতিমালার, যা তার উদ্ভবের কারণ।

তাঁদের দাবী - কুরআনের বাণী এবং রাসুলের জীবনধারাই ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা, মানবজাতির জন্য তা সর্বোত্তম এবং সেটাই "সহি ইসলাম"; সে কথা আদৌ যদি সত্য হবে তবে,
- কেন আজও যে যে সুনির্দিষ্ট ভুলগুলোর জন্য গোটা মুসলমান সমাজের বৈশ্বিক ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, সেই ভুলগুলোকে আজ অবধি বিচক্ষণ মুসলমান পণ্ডিতেরা তালিকাভুক্ত করতে, ধিক্কার দিতে, তিরস্কার করতে, এবং দণ্ডবিধান রুজু করতে ব্যর্থ হয়েছেন?
- কেন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে আজ পরম সহিষ্ণুতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিবর্তে বর্বরতা, স্বৈরতন্ত্র ও রাজতন্ত্র রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে?
- কেন মুসলমান দেশগুলো দরিদ্রতম হওয়া সত্ত্বেও সেখানে সম্পদের অসম বণ্টন এত নগ্নভাবে পরিলক্ষিত?
- কেন শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চায় মুসলমান সমাজগুলোই সবচাইতে পিছিয়ে?
- কেন অধিকাংশ মুসলমান সমাজে আজ জিহাদের ছদ্মাবরনে উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী মতাদর্শ অধিকতর জনপ্রিয়? কেন জীবন তাদের কাছে যেন খোলামকুচি?
- কেন মুসলমান সমাজে ছবি তোলা হারাম কি হালাল সেটা নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনা হয়, কিন্তু AK47 বা কালাশনিকভ কেনা ও ব্যবহার হারাম কি হালাল, সেটা নিয়ে কদাপি আলোচনা হয়না? একেবারেই নৈব নৈব চ?
বিশেষ কোনো একটি গোষ্ঠীর পক্ষাবলম্বনে, নাগরিক স্বার্থের বিরুদ্ধে, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে, আইনবহির্ভূত পন্থায়, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সাহায্যে, ভীতি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে নিগৃহীত করা বা তাদের জিম্মি করে তোলা বা তাদের উপর বল প্রয়োগ করা বা সহিংসতার ব্যবহারকে পৃথিবীজুড়ে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সন্ত্রাসবাদ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে।

সাধারণ মুসলমানেরা কি সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত?

না জড়িত নয়; মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী, এমন সরলীকরণকৃত মত গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু মুসলমান পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো কি সেটা করছে? হ্যাঁ, করছে।

সাধারণ মুসলমানেরা কি এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে? আশ্চর্যজনকভাবে তাদের এই ভূমিকাটি খুবই অস্পষ্ট, এবং তাদের পিনপতন নিরবতায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এই অবস্থানটি মূলত সমর্থনসূচক এবং তারা সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। সেটা যদি না-ই হবে, তবে কেন তাদের কখনই এই অন্যায়ের প্রতিবাদে গর্জে উঠতে দেখা যায় না? কেন ইসলামের নামে চলা অন্যায়ের প্রতিবাদে মডারেট মুসলমানরা হাস্যকরভাবে ব্যর্থ ?

কেন দেশে দেশে তারা আইসিস, বোকোহারাম, তালিবানের ও জামাতের মত বর্বর সব খুনি চক্রের সদম্ভ উপস্থিতিতে বিচলিত হয় না এবং সেগুলোকে সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্র হিসেবে উপস্থাপিত করে, কিন্তু বিচলিত ও সোচ্চার হয় সামান্য এক কার্টুনে? কেন সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মীয় ফ্যাসীবাদের বিরুদ্ধে তাদের কার্যকরী কোনো ভুমিকাই নেই?

মূল্যহীন কৈফিয়ত ও একগুঁয়েমীর ভ্রান্তি থেকে যতদিন না মডারেট মুসলমানেরা বেরিয়ে আসবে, সমাজসম্পর্কের প্রতি, মানবসভ্যতার প্রতি দায়বদ্ধ ও দায়িত্বশীল হতে শিখবে, ততদিন মুসলিম সমাজের এই সহিংসতা এই দোষগুলোর দায়ভার ইসলামকেই নিতে হবে।

ইসলামের শিক্ষার আদিম ও অসংবেদনশীল চরিত্রের কারণে, অনৈতিক ও ভ্রান্ত ব্যাখ্যার কারণেই মুসলমানেরা আজ এই অপরাধগুলো করে চলছে; এই ভ্রান্তির মাঝে বসবাস করছে! ... এই অক্ষমতা অবশ্যই ইসলামের এবং তার বিদ্যমান শিক্ষার; উটপাখির মত বালুতে মুখ গুঁজে যে মরুঝড় থামানো যায় না সেটা গোঁড়া মুসলমান সমাজের একটি অংশ কখনই বোঝেনি; আর সে কারণেই যুক্তির পরোয়া না করে, শুধুমাত্র নিজের মত আঁকড়ে থেকে, স্বমতে অত্যাসক্ত মুমিনেরা তাদের নিজ নিজ ভ্রান্তির জন্যেই প্রতিদিন হাস্যাস্পদ ও নিগৃহীত হচ্ছে।

প্রয়োজন ইসলামের শিক্ষার আশু যুগোপযোগী সংস্কার; প্রয়োজন আল্লাহর বাণী ইসলামের মৌলিক চরিত্র স্থির ও সংস্কারযোগ্য নয় - এই মৌলবাদী প্রচারনা থেকে বেরিয়া আসবার; আজ সেটা শুধু অত্যাবশ্যকই নয়, অবধারিতও।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন