আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ২৫ মে, ২০১৫

বাঙালি মুসলমান মানস

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

১.
ফিলিস্তিনের মুসলমানের জন্য কাঁদতে-মুততে সাগর বয়ে যায়।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য কাঁদতে-মুততে মহাসাগর বয়ে যায়।
শুধু নিজ দেশ বাংলাদেশের অমুসলিমদের ওপরে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ দিয়ে একটা স্রেফ একটা শব্দ বের হয় না।
ওখানে কাদের কথা বলা হচ্ছে? তারা কারা? তারা দেখতে কেমন?

উত্তর: দেখতে তারা মানুষের মতন। হাত, পা, নাক, চোখ, মুখ, কান সবই আছে, কিন্তু তারা মানুষ নয়। তারা হচ্ছে বাঙালি মুসলমান। মানুষের মতো দেখতে একটা জন্তু মাত্র। যাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় - তারা সবার আগে মুসলমান। তাই তারা আগেভাগে মুসলমানদেরকেই খুঁজে নেয়। মানুষকে কখনোই নয়।

২.
হিন্দু এবং বৌদ্ধ ডাক্তার-নার্স যাঁরা আছেন, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি:

গোপালগঞ্জের টুঙ্গি পাড়ায় হিন্দু ডাক্তার মুসলমান রোগীকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছে গুজব ছড়িয়ে কী ধোলাইটি দিলো, দেখেছেন নিশ্চয়। 

এরপর নিজেরাও ধোলাই খাওয়ার আগে সতর্ক হোন। ডাক্তার, নার্স হয়েছেন তো কী হয়েছে? নামে তো মালাউন। রোগী মুসলমান হলে আপনারা অপারেশন করবেন না। সহকর্মী মুসলিম ডাক্তারদের হাতে দিয়ে দেবেন। কারণ আপনাদের করা অপারেশন সফল না হলে ধোলাই খাবেন।

কোনো সিরিয়াস রোগী এলে আপনারা চিকিৎসা দেবেন না। শেষে মারা গেলে গুজব ছড়াবে - রামু হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ইচ্ছে করেই মেরে ফেলেছে।

এখন থেকে আপনারা শুধু সর্দি-কাশি এসবের চিকিৎসা দেবেন। প্যারাসিটামল,স্যালাইন, ডাবের পানি, ভাতের মাড়। কখনো সুযোগ পেলে কাঁঠালপাতাও দিয়ে দেবেন। 

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো।

৩.
"লালমনিরহাটে হিন্দু পল্লীতে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর।"

এটা একটা সাম্প্রতিক খবর। হিন্দুদের বাড়িঘর এবং প্রতিমা ভাঙচুর নিয়ে আর কিছু লেখার নেই। অসাম্প্রদায়িক (!) বাংলাদেশে এসব প্রতিদিনই হয়। আমার খারাপ লাগে সাংবাদিকদের লেখার ধরন দেখলে।

বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা, হিন্দু পল্লীতে হামলা, আদিবাসী পল্লীতে হামলা! অনেকটা পতিতা পল্লী, যৌনপল্লীর মতো করে বিষয়টাকে উপস্থাপন করা। কাটা গায়ে নুন-মরিচের ছিঁটা।

কেন? হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলা লেখা যায় না? বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপরে হামলা লিখা যায় না? কিংবা লেখা যায় না পাহাড়ে আদিবাসীদের ওপরে বাঙালিঅদের হামলা? কিন্তু এভাবে লেখা হবে না। লেখা হবে হিন্দুপল্লীতে হামলা। মনোভাব এমন, বাংলাদেশের কিছু মানুষ, যারা মুসলিম নয়, অসহায় তারা। তারা বাংলাদেশের আশ্রিত। তারা পল্লীতে থাকে। তাদের ওপরে হামলা করা যায়। একটা নিষিদ্ধ বা অস্বাভাবিক এলাকা পল্লী, সেখানে তারা বসবাস করে।

হয়তো সাংবাদিকেরা বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতা মাথায় রেখেই লেখালেখি করেন। বাংলাদেশের অনেক মুসলিমের কাছেই হিন্দু, বৌদ্ধ মেয়েদের গায়ের গন্ধ অন্যরকম। তারা শাড়ি পরে, বোরকা পরে না, তাই তাদের পতিতার মতো দেখায়। হিন্দু মেয়ের সাথে সেক্স করতে পারলে কোমরের ব্যথা সেরে যাবে, এমন মনে করা মুসলমানের সংখ্যাও কয়েক কোটি। আর আদিবাসী মেয়েগুলো তো তাদের কাছে শুধুই মাল।

বিশ্বাস হয় না? গ্রামে চায়ের দোকানে বসে হিন্দু মেয়ে নিয়ে আলাপ শুনতে পারেন। বড়ুয়াত মাইয়াগুলো নাকি পুতুলের মতো! শহরে কোনো আদিবাসী মেয়ে হাঁটার সময় আপনার আশেপাশে মুমিন বান্দাদের কথাবার্তা খেয়াল করবেন। আমি আমাদের ভার্সিটির শাটল ট্রেনেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এমন ছেলের মুখে পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে এমন বাজে কমেন্ট শুনেছি, যা শুনলেই আপনার গা ঘিনঘিন করবে। অথচ তার নোট খাতায় নামের আগে বড় করে মোহাম্মদ লেখা ছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন