আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ৬ জুন, ২০১৫

চাই ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ

লিখেছেন সেক্যুলার ফ্রাইডে

ধর্মগুলো, বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম, আক্ষরিক অর্থেই দাবি করে নিঃশর্ত আনুগত্য। শুধু আল্লাহ্‌ ও তাঁর নবীর আনুগত্যই যথেষ্ট নয়, হাদিসে আছে, মুসলমানদের ওপর নেতার আদেশ শোনা ও মানা অপরিহার্য এক কর্তব্য, এমনকি সে আদেশ তার পছন্দনীয় না হলেও। শৈশব থেকেই কথিত এই দ্বীনি ও ঈমানী দৃষ্টিকোণে বেড়ে ওঠা শিশু তাই জীবনাচারে কখনই শেখে না প্রশ্ন করতে। চিন্তার মুক্তি তার কাছে অবোধ্য, এমনকি নিন্দনীয়। আর সে কারণেই স্বমতেই সে হয়ে ওঠে অত্যাসক্ত, সে বেছে নেয় ধর্মান্ধতা, দলান্ধতা বা মতান্ধতার পথটিকেই।

এই ধর্মান্ধ, দলান্ধ বা মতান্ধদের মৌলিক সমস্যাটাই হচ্ছে, বিধিনির্দিষ্ট যে কোনো বিষয়কে প্রশ্ন ছাড়াই মেনে নেওয়ার আনুগত্য এবং সেই আনুগত্যের কারণে হৃদয় ও মস্তিষ্ক বন্ধক দেওয়ার প্রবণতা। এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে চিন্তার অক্ষমতা, এবং চিন্তার এই অক্ষমতার গণ্ডিতেই আবদ্ধ বলে এই ভাবধারায় বেড়ে ওঠা মানুষটির বোধও হয় ওঠে খণ্ডিত; তাদের ঔচিত্য-অনৌচিত্যের বিষয়ক ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি যৌক্তিক মানস থেকে উদ্ভুত না হয়ে গড়ে ওঠে ধর্মীয় অনুশাসন বা দৃঢ় বিশ্বাস বা গুরুবচনের বর্ণনা থেকে।

আমার ধর্ম, আমার দল, বা আমার মতই সবচাইতে বড়, সেটাই শ্রেষ্ঠ, আর সকলকে আমারই ছায়াতলে আসতে হবে, নয়তো শাস্তি পেতে হবে ... হৃদয় ও মস্তিস্ক বন্ধক দেয়ার এই প্রবনতা জন্ম দেয় দুর্জ্ঞেয় এক অহংবোধের। ব্যাখ্যাতীত এই অহংবোধ ব্যক্তি মানসে হিংস্রতা জন্ম দেয়ার ও যৌক্তিক বিরোধিতা দমনে সহিংসতার আশ্রয় নেয়ার বড় একটি কারণ। এই ভ্রান্ত অহংবোধ জন্ম দেয় হয় 'তুমি আমার পক্ষে অথবা তুমি আমার বিপক্ষে' - এর মত ঘৃণিত ফ্যাসিবাদী প্রবণতার।

ধার্মিকের ধর্মচিন্তা ও ধর্মশিক্ষার তুলনায় ধর্মীয় অহংবোধ যত বেশি বড় হবে, সে তত বেশি হিংস্র হবে - সেটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য সুস্থ ও নৈতিক রাজনৈতিক শিক্ষার পরিবর্তে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, মূল্যবোধকে পায়ে ঠেলে কেবল পেশী শক্তিকেই প্রাধান্য দেয়ার ধারা এবং ব্যক্তিজীবনে নৈতিকতার চর্চা না করার প্রবণতাটি সমাজে আজ জন্ম দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ অসাধ্য এক অস্থিরতার, সৃষ্টি করেছে এক বুদ্ধিবৃত্তিক শূন্যতার।

বুদ্ধিবৃত্তিক এই শূন্যতা শেষ অর্থে আবার সহায়তা করছে মৌলবাদের রাজনীতিকেই। ধর্মীয় আধ্যাত্মবাদ দিয়েই মৌলবাদ আজ পুূরণ করছে সমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক শূন্যতা; আর সে বৃত্তে সে ধীরে ধীরে আবদ্ধ হয়ে উঠছে শূন্যতার শিকার জনগোষ্ঠীই। আর তাইতো পথ চলতে জনতা আজ কাপড় পড়ে টাকনুর ওপরে, একই সঙ্গে নারীকে করে তোলে হিজাব-বন্দী। চিরকালীন 'খোদা হাফেজ' সম্বোধন প্রতিস্থাপিত হয় 'আল্লাহ্‌ হাফেজ' দিয়ে।

ক্ষুদ্র স্বার্থের ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার রাজনীতি তাই অভীষ্ট সাধন করছে মৌলবাদেরই। আর ঠিক সে কারণেই ফ্যাসিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার সক্রিয় বিরোধিতা ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন অসম্ভব।

শান্তির জন্য সমাধানের পথ একটিই: ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার রাজনীতির অবসান চাই; চাই ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবসান। চাই ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধের মধ্য দিয়ে সকলের জন্য সমান আইনী অধিকার নিশ্চিত করা।

চাই ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন