আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৫

রক্তের ধর্ম

লিখেছেন পুতুল হক

হাসপাতালের শিশুদের আইসিইউতে গুরুতর অসুস্থ আট দেড় বছরের একটি বাচ্চা মেয়ে। তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। বোরকা পরিহিতা মা কেঁদেকেটে আল্লাহকে ডাকছে। এক ব্যাগ প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্তের জন্য শিশুটির বাবা নানা জায়গায় ফোন করছে। কোথাও মিলছে না প্রয়োজনীয় রক্ত। দামী পাজেরো জিপের সামনে দাঁড়িয়ে উদ্ভ্রান্ত বাবার চোখে পানি। সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি আর দাড়ির আড়ালে এক বাবা, যে যতোটা না বাবা, তার চেয়ে বেশি মুসলমান। 

একজন তরুণ ডাক্তার ডিউটি শেষ করে ঘরে যাচ্ছিলো। লোকটিকে দেখে সে কাছে গিয়ে জানতে চাইলো কী সমস্যা তাঁর? লোকটি হাতের স্লিপ দেখিয়ে বলল, তার মেয়েটিকে বাঁচাতে এক্ষনি রক্ত দরকার কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না। তরুণ ডাক্তার তাঁকে আশ্বস্ত করলো, কারণ তার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে গেছে। লোকটি তার খোদার কাছে শুকরিয়া আদায় করলো। করমর্দন করলো বারবার। বুকে জড়িয়ে ধরলো। তাকে ভাই বলে ডাকলো। যখন রক্ত নেয়ার প্রস্তুতি চলছে, তখন লোকটি জানতে চাইলো ডাক্তার ছেলেটির নাম। নাম শুনে লোকটির মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো। সে দ্রুত জানালো, ছেলেটির রক্ত সে নিতে পারবে না। এই বলে সে আবার নানা জায়গায় ফোন করতে লাগলো।

সময় বয়ে চলছে। পনের মিনিটি, তিরিশ মিনিট, পয়তাল্লিশ মিনিট... ছেলেটি আইসিইউর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারছে না, কেন শিশুটির বাবা তাঁর রক্ত নিচ্ছে না। ছোট মেয়েটির অবস্থা মোটেই ভালো নয়। হিমোগ্লোবিন ছয়ের নীচে। আরও নানান জটিল সমস্যা। 

এর মধ্যে সে শুনতে পেলো, শিশুটির মা তার স্বামীর সাথে চিৎকার করে ঝগড়া করছে। কঠোর পর্দার তরুণী মা এতো লোকের ভিড়ে মুখের নেকাব সরিয়ে ফেলেছে। তার মাথার কাপড় খসে পড়েছে। সে পাগলের মত তাঁর স্বামীর ওপর আছড়ে পড়ছে। সে একজন মা। যে কোনো মূল্যে সে তার বাচ্চা মেয়েটিকে বাঁচাতে চাইছে। সে তাঁর স্বামীর পায়ে ধরে কাঁদছে। 

এক ঘন্টা এভাবে নষ্ট করে অবশেষে স্ত্রীর অনুরোধে লোকটি আবার সেই ডাক্তার ছেলেটির কাছে আসে। বলে যে, হিন্দু হবার কারণে সে রক্ত নিতে চাইছে না। কিন্ত তাঁর স্ত্রীকে কিছুতেই সামলানো যাচ্ছে না। ছেলেটিকে অনুরোধ করে রক্ত দেবার জন্য। 

কয়েক সেকেন্ড বাকরুদ্ধ থাকার পর ছেলেটি সম্বিৎ ফিরে পেয়ে তৎক্ষণাৎ নার্সদের বলে রক্ত নেয়ার ব্যবস্থা করে। নিজ হাতে নিজের শরীরের রক্ত শিশুটির শরীরে প্রবেশ করায়। 

ঘটনা এই পর্যন্ত আমার জানা আছে। কোনো গল্প নয়, সত্য ঘটনা। গত সপ্তাহে বাংলাদেশের কোনো এক জেলার সরকারী মেডিকেল কলেজের ঘটনা। এরকম ঘটনা গোঁড়া হিন্দু এমনকি উন্নত পশ্চিমের গোঁড়া খ্রিষ্টানদের মধ্যেও আছে। রক্ত নিতে বাধা দেয়া যেমন আছে, তেমনি আধুনিক চিকিৎসার বদলে ইমাম, মন্দির বা চার্চের ভণ্ডামি চলছে।

কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার ছেলেটা ফোন করে আমাকে ঘটনাটা বলল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন