আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আমাদের আত্মীয়েরা – ৮২

অভিজিৎ রায়-এর লেখা বিবর্তনের দৃষ্টিতে নৈতিকতার উদ্ভব (১ম পর্ব) থেকে:

১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসের ১৬ তারিখ। শিকাগোর ব্রুকফিল্ড চিড়িয়াখানা। বিন্তি জুয়া (Binti Jua) নামে এক মেয়ে গরিলা খাঁচার ভিতর পায়চারি করছিল। হঠাৎ খাঁচার বাইরে দর্শকদের মধ্য থেকে একটি তিন বছরের শিশু দেয়ালের উপর বসে গরিলাকে দেখতে গিয়ে খাঁচার ভিতরে প্রায় বিশফুট নীচে কংক্রিটের মেঝেতে আছড়ে পড়ে। পড়েই জ্ঞান হারায় ছেলেটি। বিন্তি পায়চারী বাদ দিয়ে ছেলেটির দিকে এগিয়ে যায়। ১৬০ পাউণ্ডের দীর্ঘদেহী গরিলাটিকে ছেলেটির দিকে এগিয়ে যেতে দেখে দর্শকদের মধ্যে মুহূর্তেই চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। বিন্তি কাছে গিয়ে অনেক মনোযোগ দিয়ে ছেলেটিকে দেখতে লাগলো। তারপর এক সময় দুই হাতে শিশুটিকে বগলদাবা করে ফেললো। দর্শকদের মধ্যে তখন আতংক চরমমাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। অনেকেই ভাবছিলেন, এবারে নিশ্চয়ই বাচ্চাটাকে ছিঁড়ে খুরে খেয়ে ফেলবে ঐ পাষণ্ড গরিলা। কিন্তু তারপরে যা ঘটল, তার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলো না। এ কাহিনী কেবল আমরা রূপকথাতে কিংবা কল্পকাহিনীতেই শুনেছি। বিন্তি শিশুটিকে নিয়ে বিশফুট দেয়াল পার হয়ে খাঁচার এক প্রান্তের একটি প্রবেশ দ্বারে এসে দাঁড়িয়ে থাকলো যাতে নিরাপত্তাকর্মীরা তার কাছ থেকে এসে নিয়ে যেতে পারে। নিরাপত্তাকর্মীরা বিন্তির কাছ থেকে বাচ্চাটি নিয়েই সোজা হাসপাতালের দিকে ছুটলেন। শিশুটি পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করলো দিন কয়েকের মধ্যেই। এভাবেই ব্রুকফিল্ড চিড়িয়াখানার বিন্তি নামের গরিলাটি বাঁচিয়ে দিয়েছিলো একটি ছোট্ট শিশুর জীবন।

বিন্তি জুয়া নামের গরিলাটি বিশ ফুট নীচে পড়ে যাওয়া ছেলেকে কোলে তুলে নিচ্ছে। ১৯৯৬ সালের আগাস্ট মাসের ১৬ তারিকে এভাবেই গরিলাটি বাঁচিয়েছিলো ছেলেটির জীবন।

এ ধরনের পরার্থপরতামূলক কাজ যে কেবল বিন্তিই নামের পশুটিই করেছে তা কিন্তু নয়। ১৯৮৬ সালে জার্সি চিরিয়াখানায় জাম্বো নামে আরেকটি গরিলাও ঠিক এমনিভাবে আরেকটি মানব শিশুর জীবন বাঁচিয়েছিল। সেখানেও শিশুটি খাঁচার ভিতরে পড়ে গিয়েছিল, আর জাম্বো বিন্তির মতো শিশুটিকে কোলে করে নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে তুলে না দিলেও বহুক্ষণ ধরে শিশুটির কাছে দাঁড়িয়ে তাকে রক্ষা করেছিল, যাতে অন্য গরিলারা আক্রমণ করতে না পারে। এতোদিন মানবিকতা, সহিষ্ণুতা, পরার্থপরায়ণতা, সহযোগিতা, নৈতিকতা প্রভৃতি শব্দগুলোকে ‘মানুষের’ একচেটিয়া সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করার যে রেওয়াজ ছিল, বিন্তি কিংবা জাম্বোর প্রয়াস সে সব স্বতঃসিদ্ধ ধারণার প্রতি শক্তিশালী চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো যেন। বিজ্ঞানীরা বলেন, শুধু গরিলা নয় শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং কিংবা বনোবোদের মধ্যে এ ধরনের পরার্থিতার সন্ধান খোঁজ করলেই পাওয়া যায়, তারা একে বলেন আবেগানুভুতি (empathy)। আবেগানুভূতি মানুষ শুধু নয়,অন্যান্য অনেক প্রাণীর মধ্যেও দৃশ্যমান (animal empathy)।

(কৃতজ্ঞতা: ফাহিম আল হামিম)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন