আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৬

ভণ্ড জাকির নায়েকের ভণ্ডামি: পর্ব দুই (পঞ্চম অংশ)

লিখেছেন ডঃ চ্যালেঞ্জ নায়েক


জাকির নায়েক বলেছে, সূর্যের মধ্যে কালো কালো বিন্দুগুলো আনুমানিক ২৫ দিনের মধ্য একবার ঘুরে আবার পুর্বের জায়গায় আসে, তাই সূর্য আনুমানিক ২৫ দিনে একবার নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করে। এই হিসাবটা বিজ্ঞানীরা বের করেছেন। কেউ কুরআন দেখে সূর্যের নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করাটা আবিষ্কার করেনি। কারণ কুরআনে সূর্যের নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণের কথা বলা হয়নি। বরং সূর্যের কক্ষপথ বা চলার পথ দিয়ে পরিভ্রমণ বা ভ্রমণের কথা বলা হয়েছে। কুরআন এবং হাদিস অনুযায়ী, সূর্য ও চন্দ্র পৃথিবীর চারপাশে পরিভ্রমণ করে, সেটাই বলা হয়েছে ওই আয়াতে।

এরপর জাকির নায়েক বলেছে, "একবার চিন্তা করেন পবিত্র কুরআনে সূর্যের গতি আর নিজ অক্ষের চারপাশে প্রদক্ষিনের কথা বলা হয়েছে সেই ১৪০০ বছর আগে আর বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে কিছু দিন আগে।" এ জন্যই জাকির নায়েককে সবাই জোকার নায়েক বলে।

সে কিছু উল্টাপাল্টা কথা বলে দাবী করে বসলো, কুরআনে ১৪০০ বছর আগেই বিজ্ঞানের আধুনিক আবিষ্কারের কথা লেখা আছে। কুরআনের অর্থ পরিবর্তন করে, ভিন্ন শব্দ আমদানী করে, তার ভিন্ন অর্থ দিয়ে কুরআনের মূল অর্থকে পরিবর্তন করে, তার সুবিধামত নতুন অর্থ করে, এত কিছুর পরেও কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাতে ব্যর্থ হয়ে নির্লজ্জের মতো দাবি করে বসলো, কুরআনে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের কথা ১৪০০ বছর আগেই লেখা আছে।

সাধারণ মানুষ জানে না বা বুঝতে পারে না, আসলে কুরআনে সত্যিই জাকির নায়েকের বলা কথাগুলো আছে কি না। আর মুসলমানরা কোনোকিছু নিজে যাচাই করার ক্ষমতা বা ইচ্ছা কোনটাই রাখে না। ফলে তারা জাকির নায়েকের বলা অগণিত মিথ্যে কথা এবং প্রতারণামূলক কথাগুলো বিশ্বাস করে। কেউ কিছু যাচাই করে না বলে সহজেই জাকির নায়েকের মতো ভণ্ড ও প্রতারকদের প্রতারণার শিকার হয়।

এরপর জাকির নায়েক সূরা ইয়াসিনের ৪০ নাম্বার আয়াত উল্লেখ করে বলেছে সেখানে লেখা আছে, “সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর দিবসকে অতিক্রম করা। এরা প্রত্যেকে সন্তরন করে তাহাদের নিজস্ব গতিতে।” এই আয়াতটি উল্লেখ করে জাকির নায়েক দাবি করেছে, এখানে ‘সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া’ দিয়ে বোঝানো হয়েছে, সূর্য আর চাঁদের কক্ষপথ আলাদা। কিন্তু আগের দিনে মানুষ মনে করতো সূর্য ও চন্দ্রের কক্ষপথ একটাই।

এখানেও জাকির নায়েক কৌশল বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এই আয়াতে বলা হয়েছে সূর্যের পক্ষে চাঁদের নাগাল পাওয়া সম্ভব নয়। কেন সূর্যের চাঁদকে নাগালের কথা বলা হলো? সূর্য আর চাঁদতো একই কক্ষপথে নেই। তাহলে কেন সূর্যের চাঁদকে ধরে ফেলা বা নাগাল পাবার কথা বলা হয়েছে? এর কারণ কুরআন লেখক ভেবেছে, সূর্য আর চাঁদের কক্ষপথ একটাই কিন্তু সূর্য চন্দ্রের নাগাল পেতে পারে না। আর তাই এই আয়াতে বলা হয়েছে, সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া। অর্থাৎ কুরআন মতে, সূর্য এবং চাঁদের কক্ষপথ একটাই। কিন্তু তবুও সূর্য চাঁদের নাগাল পেতে পারে না। যদি কুরআন লেখক জানতো যে, সূর্য আর চাঁদের কক্ষপথ আলাদা, তবে একটাকে আরেকটার নাগাল পাওয়ার কথা বলা হতো না।

তাই যদি না হবে, তাহলে কুরআন লেখক কি জানতো না যে, সূর্য চন্দ্রের নাগাল ঠিকই পায়? কারণ সূর্য পৃথিবী এবং চন্দ্রকে তার মহাকর্ষ শক্তির দ্বারা নিজের কাছে আটকে রাখে। অর্থাৎ কুরআন লেখক আসলে জানতো না যে, সূর্য চন্দ্র ও পৃথিবীর নাগাল অনেক আগে থেকেই পেয়ে বসে আছে এবং নিজের কাছে মহাকর্ষ বল দ্বারা এদেরকে আটকে রেখেছে। এসব কথা জানতো না বলেই কুরআন লেখক ভেবেছে, সূর্য আর চন্দ্র একই পথে বিচরণ করে কিন্তু এগুলো একটা আরেকটাকে ধরতে পারে না। তাই সে এই ভাবে কথাটি বলেছে যে, সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া।

এছাড়াও এই আয়াতে বলা হয়েছে রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা। রাত কেন দিনকে অতিক্রম করতে যাবে। রাত আর দিন কি সূর্য ও চন্দ্রের মতো গতিশীল যে, একটা আরেকটাকে অতিক্রম করবে? কিন্তু কুরআন রাত ও দিনকে সূর্য ও চন্দ্রের মতো গতিশীল হিসেবে বর্ণনা করেছে বিভিন্ন আয়াতে। (পরে এসম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে)

অর্থাৎ কুরআন এই আয়াতটিতে উল্টাপাল্টা কথা বলেছে। কিন্তু জাকির নায়েক এই উদ্ভট কথাবার্তার আয়াতগুলো দিয়েই গোঁজামিল দিয়ে কুরআনকে বিজ্ঞানময় প্রমাণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে এবং মিথ্যে বলে ও চতুরতা করে মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।

জাকির নায়েক এরপরে বলেছে, “আর এরা দুটোই সূর্য এবং চাঁদ, গতিশীল আর নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করে।” এই আয়াতে বলা হয়েছে, রাত, দিন, সূর্য ও চন্দ্র এরা প্রত্যেকে নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করে। কিন্তু আমরা জানি, সূর্য-চন্দ্র নিজ অক্ষে প্রদক্ষিণ করলেও দিন ও রাত নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করে না। কারণ রাত ও দিনের সূর্য-চন্দ্রের মতো নিজ নিজ অক্ষ নেই। কিন্তু কুরআনে সূর্য-চন্দ্রের মতো রাত-দিনও নিজ অক্ষকে প্রদক্ষিণ করে বা নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করে এই কথাটি বলা হয়েছে। কারণ কুরআন লেখক ধরেই নিয়েছে, সূর্য আর চাঁদের মতো দিন-রাতেরও গতিপথ আছে। রাত-দিন গতিশীল নয় এই কথাটি কুরআন লেখক জানতো না বলে কুরআনে এই ভুল কথাগুলো বলেছে। কিন্তু জাকির নায়েক শুধু “সূর্য ও চন্দ্রের নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করে” এই অংশটুকু নিয়ে রাত দিনের কথা এড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ জাকির নায়েক কৌশলের আশ্রয় নিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন