আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

প্রশ্নহীনতাই প্রগতিহীনতা

লিখেছেন জর্জ মিয়া

রাত দুটো বেজে গেছে, নোমান ঘুমাচ্ছে না কিছুতেই। আসলে বলতে গেলে ওর ঘুম আসছে না। আজকে একজন নাস্তিক বন্ধুর কিছু প্রশ্নে তার সবকিছু ওলটপালট হয়ে আছে। নাস্তিক বন্ধুটি এমন সব প্রশ্ন করছে, যার সাথে সে যে একেবারেই অপরিচিত, তাও নয়। মনের অজান্তেই তার মনেও এমন কিছু প্রশ্ন এসেছে আগে। যেমন, নাস্তিক বন্ধুটির করা একটা প্রশ্ন আরও অনেক আগে থেকেই তার মনেও জাগতো। প্রশ্নটি ছিলো: মরনের পরের জীবন আসলে কেমন? হাদিস-কোরানের আলোকে দেখতে গেলে সেখানে যে সমস্ত শাস্তি ও আরামের কথা বলা হয়েছে, তার সাথে নাস্তিক বন্ধুটির কথাটাকে সে ধরে নিয়েছে, "দোযখ এবং বেহেশত আদতে মোটেও সুখকর নয়। দুটোই এক ধরনের একঘেয়েমির মত। একটাতে অনন্তকাল সাজা, যা বিরক্তিকর, অন্যদিকে অনন্তকাল যৌনসম্ভোগ, মদ্যপান - এসবও বিরক্তিকর।" 

তাছাড়া আরও কিছু প্রশ্নের জবাবে নোমান বলতে গেলে দিগভ্রান্ত। এর মধ্যে এমন একটা প্রশ্ন ছিলো: "কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে যায় এবং সে যদি যা চায়, তা-ই করতে পারে, তাহলে কথা হচ্ছে, নোমান জান্নাতী হয়ে গেলে সে কি চাইলেই তার নাস্তিক বন্ধুটিকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে? ধরা যাক, অন্য আরও একজন জান্নাতী চাইছে, তার সে নাস্তিক বন্ধুটি দোযখবাসীই থাকুক। সেক্ষেত্রে স্রষ্টার পদক্ষেপ কী? যদি ধরা হয় যে, জান্নাতী এবং জাহান্নামী কেউই তাদের স্বতন্ত্র চিন্তা ভাবনা করতে অক্ষম, তাহলে সে জান্নাতে-যা-চাইবে-তা-পাবে বলার যৌক্তিকতা কোথায়?"

নোমানের কাছে এ ধরনের প্রশ্নের জবাব নেই। নাস্তিক বন্ধুটি আবার এও প্রশ্ন করলেন: স্রষ্টার স্রষ্টা কে? আরও খোলাখুলিভাবে বললে, আল্লাহ যদি মানুষ সৃষ্টি করে থাকেন, তবে আল্লাহকে সৃষ্টি করলেন কে? নোমান এ প্রশ্নের জবাব কিছুটা দিতে চেয়েছে এভাবে, "আল্লাহ স্বয়ম্ভু, তার কোনো স্রষ্টা থাকতে পারে না। তার কোনো শরিক নেই, এমনকি তাকে কেউ সৃষ্টি কিংবা জন্ম দেননি।" কিন্তু নাস্তিক বন্ধুটি সে কথা মানতে নারাজ। তার যুক্তি হচ্ছে, যদি আল্লাহকে কেউ সৃষ্টি না করে থাকে, আল্লার কেন দায় পড়লো মানুষ সৃষ্টি করার? আল্লাহ যেমনভাবে সৃষ্ট, ঠিক তেমনভাবেই মানুষ সৃষ্ট কেন নয়? 

এবার নোমান কিছু ভাবছে। উত্তর কিছু একটা পেয়েছে: "আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন এমনভাবে যে, দেখে মনে হবে মানুষ স্বাধীন। আসলে সেটা মোটেও ঠিক নয়। আল্লাহর এই মানুষ সৃষ্টিকে আমরা এবার একটু অন্যভাবে দেখি। ধরি, একটা মোবাইল কি নিজে থেকে হতে পারে? পারে না। একজন প্রস্তুকারক অবশ্যই আছে। তাহলে মোবাইল যিনি প্রস্তুত করেছেন, তিনি মোবাইলে যে সব প্রোগ্রাম যেভাবে প্রস্তুত করেছেন, ঠিক সেভাবেই চলছে। এখানে ব্যবহারকারী ইচ্ছেমত চালাতে পারছেন ঠিকই, কিন্তু ঐ প্রস্তুতকারকের করে দেয়া নিয়মের বাইরে নয়। এমনকি মোবাইল নিজেও জানে না, তার স্রষ্টা কে? তাহলে বলা যায়, আমাদেরকে আল্লা যেভাবে বানিয়েছেন, সেভাবে আসলে সমস্ত কিছুর সম্বন্ধে জ্ঞান রাখা সম্ভব নয়। মোবাইলের যেমন লাইফ টাইম আছে, আমাদের ও তেমন আছে।"

নাস্তিক: তাহলে আপনি বলতে চাইছেন, আল্লা সম্পর্কে মানুষের পক্ষে কোনো ধারনা নেয়া সম্ভব নয়?
নোমান: হ্যাঁ, সেটাই। 
নাস্তিক: (হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায় অবস্থা!) বিজ্ঞ নোমান ভাই! আপনি হয়তো জেনে থাকবেন যে, আল্লার কাছে ক্ষমার অযোগ্য যে সকল গুনাহ আছে, তার মধ্যে শিরক প্রধান 
নোমান: হ্যাঁ। শিরক গুরুতর পাপ। এ পাপের ক্ষমা নেই। এ পাপের সাজাই হচ্ছে নিশ্চিত জাহান্নাম! 
নাস্তিক: কিন্তু নোমান ভাই, আপনি খেয়াল করেছেন কি না, জানি না, ইতিমধ্যেই আপনি এই পাপ করে ফেলেছেন! আল্লাহ বলেই দিয়েছেন, তার সাথে কাউকে শরিক না বানাতে। কিংবা তুলনা করা একেবারেই নিষেধ। কেননা ইছলামী গ্রন্থেই বলা আছে, আল্লাহকে কারো সাথে তুলনা না করতে। আপনি সেখানে সামান্য মোবাইল প্রস্তুতকারীর সাথে মানুষের স্রষ্টা আল্লাকে তুলনা করে ফেলেছেন! এখনই তওবা করুন। মাফ পাবেন কি না, জানি না, তবে তওবা করে তাহাযযুদ আদায় করে নিন। মাফ পেলেও পেতে পারেন। 
নোমান: ইশ! কী ভুলটাই না করে ফেললাম! আল্লাহ কি আমাকে মাফ করবেন? আপনি ঠিকই বলেছেন, এখনই অযু করে তাহাযযুদ পড়ে নিই। মাফ পেলেও পেতে পারি।
নাস্তিক: হ্যাঁ, ভাই, যান। শুধু আর একটা কথা বলি: আপনার ভেতরে যে খোদাভীতি, ঠিক এ কারণেই জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুছলিমরা এত পিছিয়ে। প্রথমে প্রশ্ন করতে শিখতে হয়। আর সেটাকেই আপনার আল্লা মহাপাপ তথা শিরকের সমতুল্য করে জারি রেখেছেন। "বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায় > বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন