আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬

উছিলা পীরন্তনী

লিখেছেন জর্জ মিয়া

১. বিকেল ৪ টার দিকে গেলাম ঢাকা কিডনি হাসপাতালে, এক বন্ধুর আব্বা এসেছেন রোগী হয়ে, তাকে দেখতে। গিয়ে শুনলাম, বেচারাকে ভুলভাবে এখানে আনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবারে ডায়রিয়া হওয়ায় স্থানীয় এক ফার্মাসিস্টের পরামর্শে স্যালাইন দেয়া হয়, তাকে এ কারণেই নাকি তার প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে। গত দু'দিন সে প্রস্রাব করেননি। গতকাল লঞ্চে উঠেছে, লঞ্চ ছাড়তেই তিনি প্রস্রাব-পায়খানা ঠিকমত করেছেন। শেরে বাংলা থেকে এখানে পাঠানো হয়েছে, এখানকার ডাক্তাররা বললো, কিডনিতে এমন কোনো সমস্যা হয়নি, যার জন্য তিনি এখানে থাকতে পারেন। টেস্ট করানোর পরেও কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। 

প্রশ্ন হচ্ছে: শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার তবে তাকে কিসের ভিত্তিতে এখানে পাঠালো? আমি ডাক্তার নই, তাদের মুখে আমি যতটুকু শুনেছি, সেই শোনা কথাতেই আমার মাথায় প্রশ্নটা ঘুরপাক খেল। 

২. হাসপাতালের আংকেলের (বন্ধুর বাবা) বেডের পাশের বেডে আর এক ভদ্রলোক বসে আছেন। কথা বলেন খুব। সকালে তাঁর ডায়ালাইসিস করানো হয়েছে, বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন বোঝা যাচ্ছে। কিছুক্ষণ তিনি আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। আমি না পারছি কিছু বলতে, না পারছি সইতে, বেচারা অসুস্থ মানুষ, হয়তো তাই সবার সাথে কথা বলে মন ভালো করার চেষ্টা করছেন। বেশ কিছু সময় আলাপের পরে এই ডায়ালাইসিস ভদ্রলোকের কাছে আর একজন লোক এলেন। তাঁদের কথোপকথনটা তুলে দিই।

ডায়ালাইসিস করানো ব্যক্তি: ভাই, এখন কি অবস্থা আপনের মেয়ের জামাইয়ের?
- জ্বি, বাই, এখন অনেক ভাল। আগে না এনে ভুল করেছি, ময়মনসিংহতে না নিয়ে যেয়ে এখানেই আগে আনার দরকার ছিল। আজকে ২২ দিন বাড়িত্তে বার অইসি, যখন বাইর অইসি, তখন কইসি আল্লা আমি চেষ্টার কোনো ত্রুটিই রাখবো না ইনশাল্লা। আমার মেয়ের জামাইকে তুমি সুস্থ করে দেওয়ার মালিক। 

মেজাজ গেল খিঁচে, এমনিতেই আংকেলকে শুধু শুধু ঢাকা আনানো হয়েছে। তার ওপরে এই দুই বাচালের আমদানিতে বিরক্ত হয়ে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তাঁদের কথোপকথনে শুনলাম, এই শ্বশুর ভদ্রলোক চরমোনাইর মুরিদ।
- চাচা মিয়া, হুজুরের কাছে নিয়ে যান নাই? 
- না, বাবা।
- কেন, চাচা? তিনি তো পীর! তিনি কি পারতেন না ঠিক করে দিতে আপনের জামাইরে? চেষ্টার কোনো ত্রুটিই রাখবেন না। আল্লার কাছে শপথ করলেন, জামাই নিয়া চলে আসলেন মেডিকেলে! কেন গো, চাচা? এই মেডিকেলের চিকিৎসার চেয়ে কি আপনের হুজুরের দোয়া কম কার্যকরী? এইখানে নিয়া আইলেন, ধরেন, আপনের জামাইর হায়াত আল্লা দিসে আগামীকাল পর্যন্ত। এখন আপনে আমারে বলেন এই ডাক্তারদের কি কোনো ক্ষমতা আছে এরে বাঁচানোর?
- না, ঠিক তা নাই।
- তাইলে এইখানে ক্যান? সবার আগে আপনের দরকার ছিল পীরের কাছে যাওয়া। আল্লা চাইলে এই কামেল পীরের উছিলায়ত আপনের মেয়ের জামাইরে ভাল কইরা দিতে পারে না কি? 

আমি এ কথা বলায় দু'জনেই চুপ রইলেন, যতক্ষণ আমি সেখানে ছিলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন