আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬

বিগ ব্যাং সম্পর্কে জাকির নায়েকের মিথ্যাচার (নাকি অজ্ঞতা?)

লিখেছেন মানবিক মানব

বিশিষ্ট ইসলামিক বক্তা জাকির নায়েক তার "কোরান ও আধুনিক বিজ্ঞান: বিরোধ নাকি সাদৃশ্য" বক্তব্যের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো: 
যদি কোনো বিজ্ঞানীকে জিজ্ঞেস করেন, কীভাবে আমাদের বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হয়েছে, সে বলবে বিগ ব্যাং থিওরির কথা। প্রথমে এই বিশ্ব জগতের সমস্ত উপাদান ছিল একটা বিন্দুতে, তারপর সেখানে একটা বিস্ফোরণ হলো, সৃষ্টি হলো ছায়াপথ। সেটা আবারো খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে তৈরি হলো বিভিন্ন সৌরজগৎ। সেখানে তৈরি হলো বিভিন্ন গ্রহ, সূর্য আর আমরা যে-গ্রহে বাস করি, সেই পৃথিবী। আমি আমার বক্তৃতার শুরুতে একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম, সুরা আল আম্বিয়ার ৩০ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে, " অবিশ্বাসীরা কি ভাবিয়া দেখে না , আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী মিশিয়া ছিল ওতপ্রত ভাবে? অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম।"
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে বিগ ব্যাং থিওরি বর্ণনা করা হয়েছে খুব সংক্ষেপে। চিন্তা করুন, আমরা যে-কথাটা জানলাম আজকে, পবিত্র কুরআন এ কথাটা বলেছে চোদ্দশো বছর আগে। এছাড়াও পবিত্র কুরআনে আছে, সুরা ফসিলতের ১১ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে যে, " অতপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যাহা ছিল ধুম্রপুঞ্জ বিশেষ , অনন্তের দিকে উহাকে এবং পৃথিবীকে বললেন তোমরা আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং উভয়ে বলিল আমরা আসলাম একান্ত অনুগত হইয়া।" যে আরবি শব্দটি এখানে বলা হয়েছে, সেটা 'দুখান' - যার অর্থ ধোঁয়া। কোনো বিজ্ঞানীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলবেন, এই বিশ্বজগৎ তৈরির আগে মহাবিশ্বের বিভিন্ন উপাদান সেগুলো ছিল বায়বীয় অবস্থায়। আর এই আরবি শব্দ দুখান যার অর্থ ধোঁয়া, এটাকে আরও সঠিক ভাবে বললে বলা হবে বায়বীয়।
বর্তমানের খুব বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস-এর মতে, তিনি বলেছেন, "মহাশূন্যের যে বিভিন্ন পদার্থের উপাদান আবিষ্কার করা গেছে , সেটাই হলো গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।" আর এগুলোর ওপর ভিত্তি করেই আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পেরেছি বিগ ব্যাং থিওরির সত্যতা আর এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হবার রহস্য।
এই হচ্ছে ইসলামিক বিশেষজ্ঞ জাকির নায়েকের বক্তব্য। এর আলোকে এখন আমি কিছু কথা বলবো। 

জাকির নায়েকের মতে, কোনো বিজ্ঞানীকে প্রশ্ন করলে তিনি বিশ্বজগৎ সৃষ্টির ব্যাপারে বিগ ব্যাং থিওরির কথা বলবেন। সেটা হলো, এই মহাবিশ্বের সব উপাদান মিশে ছিল এক বিন্দুতে এবং একটা মহা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্টি হয়েছে এই মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সিগুলো। সেই গ্যালাক্সিগুলো আবার পরবর্তীতে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে তৈরি করে বিভিন্ন সৌরজগত, সূর্য, গ্রহ পৃথিবী ইত্যাদি। বিগ ব্যাং-এর সাথে কোরআনের মিল খুজতে তিনি দু'টি সুরার দুইটি আয়াত উল্লেখ করেন। আয়াতগুলো হলো, সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত ৩০ ("কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে , আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল , অতপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম") এবং সুরা ফসিলাত, আয়াত-১১ ("অতপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রপুঞ্জ , অতপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল , আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।"

এই আয়াত দু'টি দিয়ে তিনি বুঝিয়েছেন যে, পৃথিবী ও আকাশ এক সাথে মিশে ছিল, মহান আল্লাহ এদেরকে পৃথক করে দিয়েছেন এবং আকাশ যা ছিল ধুম্রপুঞ্জ তথা গ্যাস আকারে, তাদের আদেশ করলেন মহাবিশ্ব যেভাবে চলছে, সেভাবে চলতে। অর্থাৎ এই আয়াত দুটো বিগ ব্যাং থিওরি সংক্ষেপে প্রকাশ করে।

ঠিক আছে, ধরে নিলাম, এই দু;টি আয়াত বিগ ব্যাং থিওরির সাথে মিলে যায়। কিন্তু আমার কিছু প্রশ্ন আছে। বিগ ব্যাং-এর আগে কি সত্যিই সবকিছু ধুম্রপুঞ্জ বা গ্যাস আকারে ছিল? আসুন, দেখি, বিগ বাং থিওরি কী বলে। 

বিগ ব্যাং থিওরি অনুযায়ী, 'মহাবিশ্বের সমস্ত উপাদান ছিল শক্তি রূপে। তখনও সৃষ্টি হয়নি পদার্থ। মহাবিশ্বের সমস্ত উপাদান পরস্পর এক বিন্দুতে মিলিত হয়। ফলে তাদের ঘনত্ব বেড়ে হয় প্রায় অসীম। এই অসীম ঘনত্বের ফলে তৈরি হয় (প্রায়) অসীম তাপমাত্রার। তার ফলে একটা বৃহৎ বিস্ফোরণের সৃষ্টি হয়। এই বিস্ফোরণকেই বিগ ব্যাং বলা হয়। সেই বিস্ফোরণের ফলে উপাদানগুলো প্রচণ্ড গতিতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিগ ব্যাং-এর এক সেকেন্ড পরেই তাপমাত্রা কমতে থাকে। এর অনেক পরে বিভিন্ন কণা যেমন, ফোটন কণার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আরও অনেক কণা যেমন, প্রোটন, ইলেকট্রন এবং নিউট্রনের সৃষ্টি হয়। এবং তৈরি হয় বিভিন্ন গ্যালাক্সির। বিগ ব্যাং-এর লক্ষ লক্ষ বছর পড়ে তৈরি হয় প্রথম পদার্থ হাইড্রুোজেন। এবং পরবর্তীতে হিলিয়াম ও অন্যান্য পদার্থ। এগুলো পরস্পর মিলিত হয়েই তৈরি করে বিভিন্ন সৌরজগত, সূর্য এবং সূর্যের চারপাশে ঘূর্ণায়মান বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহ ইত্যাদি। গ্যালাক্সিগুলো বিভিন্ন দিকে ছুটে চলেছে প্রচণ্ড গতিতে।ফলে পরস্পর থেকে দুরে সরে যাচ্ছে গ্যালাক্সিগুলো। এটাই হচ্ছে বিগ ব্যাং থিওরির মূল কথা।

তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিগ ব্যাং থিওরির কোথাও বলা হয়নি, বিগ ব্যাং-এর পূর্বে মহাবিশ্ব বায়বীয় বা গ্যাসীয় ছিল। বরং বলা হয়েছে গ্যাস বা পদার্থ তৈরি হয়েছে বিগ ব্যাং-এর লক্ষ লক্ষ বছর পরে।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন