আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০১৬

হুদাইবিয়া সন্ধি - ১৮: চুক্তি ভঙ্গ চার!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১২৮): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত দুই

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী: এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কার কুরাইশদের সঙ্গে হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষর শেষে মদিনায় ফিরে আসার মাত্র দুই-আড়াই মাস পর ৬২৮ সালের জুন মাসে (সফর, হিজরি ৭ সাল), খায়বার বিজয় সম্পন্ন করার প্রাক্কালে আল-হাজ্জাজ বিন ইলাত আল-সুলামি নামের তাঁর এক অনুসারীকে কুরাইশদের সঙ্গে প্রতারণার অনুমতি প্রদানের মাধ্যমে কীভাবে হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছিলেন, তার বিস্তারিত আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, “হুদাইবিয়া সন্ধি-চুক্তি স্বাক্ষরের দুই-আড়াই মাস পরের এই চুক্তিভঙ্গটিই কি মুহাম্মদের ‘সর্বপ্রথম’ চুক্তিভঙ্গ?"
জবাব হলো, “না! চুক্তিভঙ্গের জন্য মুহাম্মদ আড়াই মাস সময় নেননি!”
"কবে তিনি 'সর্বপ্রথম' হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করেছিলেন?"
জবাব হলো, “সন্ধিচুক্তি শেষে তাঁর মদিনায় প্রত্যাবর্তনের ঠিক পরে পরেই!”

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দ), আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ), আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ), ইমাম বুখারী (৮১০-৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ) প্রমুখ আদি ও বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই প্রত্যেকেই তাঁদের নিজ নিজ গ্রন্থে এই ঘটনার প্রাণবন্ত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। সবচেয়ে বিস্তারিত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন আল-ওয়াকিদি, তাঁর “কিতাব আল-মাগাজি” গ্রন্থে।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনা:  [1] [2] [3] [4]
(আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি ও ইমাম বুখারীর বর্ণনা ইবনে ইশাকের বর্ণনারই অনুরূপ) 
(আল-তাবারাী: ‘এই উপাখ্যানের সমস্তই আল-যুহরী < উরওয়া < আল-মিসওয়ার ও মারওয়ান হইতে উদ্ধৃত --ইবনে ইশাকের বর্ণনা:’)

'আল্লাহর নবী যখন মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন, আবু বসির উতবা বিন আসিব বিন জারিয়া নামের মক্কায় অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের একজন তাঁর কাছে আসে। আযহার বিন আবদু আউফ বিন আবদ বিন আল-হারিথ বিন যুহরা ও আল-আখনাস বিন শারিক বিন আমর বিন ওহাব আল-থাকাফি আল্লাহর নবীর কাছে তার সম্বন্ধে চিঠি লেখেন ও তারা বানু আমর বিন লুয়েভি গোত্রের এক লোককে পাঠান, যার সঙ্গে ছিল তাদেরই সাথে বসবাসকারী এক আশ্রিত ব্যক্তি (Mawla)।

যখন তারা সেই চিঠি সহকারে আল্লাহর নবীর কাছে আসে, তিনি বলেন, "আবু বসির, এই লোকদের সাথে আমরা কী অঙ্গীকার করেছি, তা তুমি জানো। আমাদের ধর্মে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ সঠিক নয়। আল্লাহ তোমাকে মুক্ত করবে ও তোমার মত অসহায়দের পলায়নের একটা উপায় বের করবে, সুতরাং তোমার লোকদের কাছে ফিরে যাও।" সে বলে, "আপনি কি আমাকে মুশরিকদের কাছে ফেরত পাঠাবেন, যারা আমাকে আমার ধর্ম থেকে বিচ্যুত করতে প্রলুব্ধ করবে?" তিনি বলেন, "যাও, কারণ আল্লাহ তোমাকে মুক্ত করবে ও তোমার মত যারা অসহায়, তাদের পলায়নেরএকটা উপায় বের করবে।"

তাই সে তাদের সাথে ধু আল-হুলায়েফা (মদিনা থেকে ৬-৭ মাইল দূরবর্তী) পর্যন্ত গমন করে, যেখানে সে এবং ঐ দুইজন লোক এক দেয়ালের পাশে বসে পড়ে। আবু বসির বলে, "এই যে বানু আমর গোত্রের ভাই, তোমার তলোয়ার কি খুব ধারালো?" যখন সে বলে যে, তা তেমনই, তখন সে বলে, সে তা দেখতে চায়। জবাবে লোকটি বলে, "যদি দেখতে চাও, তবে দেখো।" আবু বসির তা খাপ থেকে খোলে ও তা দিয়ে এক ঘায়ে তাকে হত্যা করে।" তার আশ্রিত ব্যক্তিটি দৌড়ে পালিয়ে আল্লাহর নবীর কাছে আসে, তিনি তখন মসজিদে বসে ছিলেন; যখন আল্লাহর নবী তাকে আসতে দেখেন, তিনি বলেন, "এই লোকটি ভয়ংকর কিছু একটা দেখেছে।" যখন সে সেখানে আসে, আল্লাহর নবী বলেন, "কী ব্যাপার, তোমার কী দুঃখ?" সে বলে, "তোমার লোকটি আমার লোকটিকে খুন করেছে"; প্রায় একই সাথে তরবারি উঁচিয়ে আবু বসির সেখানে আসে এবং আল্লাহর নবীর পাশে দাঁড়িয়ে বলে, "আপনার দায়িত্ব শেষ হয়েছে ও আল্লাহ তা আপনার কাছ থেকে নিরসন করেছে। আপনি আমাকে যথাযথভাবে লোকগুলোর কাছে হস্তান্তর করেছিলেন, আর আমি আমার ধর্ম রক্ষা করেছি, যাতে আমি পাছে নীতিভ্রষ্ট বা উপহাসের পাত্র না হই।"

আল্লাহর নবী বলেন, "দুর্ভাগ্য তার মায়ের, যুদ্ধের আগুন সে জ্বালাতে পারতো, যদি অন্যরাও তার সাথে থাকতো।"

অতঃপর আবু বসির প্রস্থান করে ও আল-ইস (al-'Is) পর্যন্ত গমন করার পর যাত্রা বিরতি দেয়, সেটি ছিল ধু আল-মারওয়া অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলবর্তী ঐ রাস্তার পাশে যে-রাস্তা দিয়ে কুরাইশরা সিরিয়া গমনে অভ্যস্ত ছিল। [5]

আল্লাহর নবী আবু বসিরকে কী বলেছেন, তা মক্কায় অবরুদ্ধ মুসলমানরা শুনতে পায়, তাই তারা 'আল-ইস' স্থানে গিয়ে তার সাথে যোগ দেয়। প্রায় সত্তর জন লোক নিজেদেরকে তার সাথে সংযুক্ত করে। তারা তাদের পাশ দিয়ে যাওয়া কুরাইশদের যাদেরকেই তারা ধরতে পারে, তাদের সকলকে খুন ও তাদের প্রত্যেকটি বাণিজ্য-কাফেলা টুকরো টুকরো করে তছনছ করার মাধ্যমে কুরাইশদের এমনভাবে নিপীড়ন করে যে, কুরাইশরা আল্লাহর নবীর কাছে চিঠি লিখে এই মিনতি করে (begging) যে, তিনি যেন আত্মীয়তার স্বার্থে এই লোকগুলোকে নিয়ে নেন, কারণ এই লোকগুলোকে তাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই; তাই আল্লাহর নবী তাদেরকে নিয়ে নেন ও তারা মদিনায় গিয়ে তাঁর সাথে যোগ দেয়

যখন সুহায়েল [পর্ব: ১১৮] শুনতে পান যে, আমিরি গোত্রের ঐ পাহারাদার লোকটিকে আবু বসির খুন করেছে, তিনি তাঁর পিঠটি কাবা শরীফের গায়ে হেলান দিয়ে শপথ করেন যে, তিনি সেখান থেকে সরবেন না, যতক্ষণে না এই লোকটির রক্তমূল্য পরিশোধ করা হয়। আবু সুফিয়ান বিন হারব বলেন, "আল্লাহর কসম, এটি নিছক মূর্খতা। তা আদায় হবে না।" তিনি তিনবার এটি বলেন।' [6]

আল-ওয়াকিদির অতিরিক্ত বর্ণনা:
'আল্লাহর নবী যখন আল-হুদাইবিয়া থেকে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন, আবু বসির, যে হলো উতবা বিন উসায়েদ বিন জারিয়া (হারিথা), বানু যুহরা গোত্রের মিত্র, মুসলমান অবস্থায় তাঁর কাছে আসে। সে তার লোকদের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছে, ও এসেছে হেঁটে। আল-আখনাস বিন শারিক ও আযহার বিন আবদু আউফ আল-যুহরি আল্লাহর নবীর কাছে চিঠি লেখেন। তারা বানু আমির বিন লুয়েভি গোত্রের এক লোককে পাঠান, যাকে একটি উটের মূল্যের বিনিময়ে ভাড়া করা হয়েছিল। বানু আমির গোত্রের এই খুনায়েস বিন জাবির, কাউসার নামের তারই কাছে আশ্রিত এক ব্যক্তিকে (mawla) সঙ্গে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। শান্তিচুক্তির উল্লেখ ও আবু বসিরকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ সম্বলিত একটি চিঠি সহকারে এই দুই জন লোক খুনায়েস বিন জাবির-কে এক উটের পিঠে করে রওনা করান। আবু বসির সেখানে পৌঁছার তিন দিন পরতারা আল্লাহর নবীর সম্মুখে এসে উপস্থিত হন।

---আল্লাহর নবী তাকে আমিরি গোত্রের লোকটি ও তার সঙ্গীর কাছে হস্তান্তর করেন ও সে তাদের সাথে রওনা হয়। মুসলমানেরা আবু বসিরকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে। “এই আবু বসির, ফূর্তি করো! নিশ্চয়ই তোমার জন্য এক পুরস্কার ও সমাধানের একটি উপায় আছে। সম্ভবত, একজন লোক এক হাজার লোকের চেয়ে উত্তম। সুতরাং কিছু করো, কিছু করো!", তারা তাকে তার সঙ্গের লোকদের সম্বন্ধে আদেশ করে।

তারা যাত্রা করে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ধু আল-হুলায়েফা নামক স্থানে এসে পৌঁছে, তখন ছিল যোহর নামাজের সময়। আবু বসির ধু আল-হুলায়েফার এক মসজিদে প্রবেশ করে ও মুসাফির হিসাবে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। খাবারের জন্য সে যা সঙ্গে এনেছিল, তা হলো খেজুর। সে সামনে ঝুঁকে মসজিদের দেয়ালের নিচে তার খাবারগুলো রাখে, অতঃপর খাওয়ার চেষ্টা করে। সে তার সাথের দুই সঙ্গীদের বলে, "নিকটস্থ হও ও খাও।" তারা বলে, "তোমার দেয়া খাবারের প্রয়োজন আমাদের নেই।" সে জবাবে বলে, "যদি তোমরা আমাকে তোমাদের খাবার প্রদান করতে, আমি সাড়া দিতাম ও তোমাদের সাথে খাবার খেতাম।" তারা লজ্জিত হয়, নিকটস্থ হয় ও তার সাথে তাদের হাতগুলোও খেজুরের ওপর রাখে। তারা তাদের নিজেদের খাবারগুলো উপস্থিত করে ও এক সাথে খায়, সে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে। আমির গোত্রের লোকটি দেয়ালের এক পাথরে তার তরবারিটি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।

আবু বসির বলে, "এই যে বানু আমির ভাই, তোমার নাম কী?"
সে বলে, "খুনায়েস।"
সে বলে, "কার ছেলে?"
সে জবাবে বলে, "জাবির-এর ছেলে।"
অতঃপর আবু বসির বলে, "হে ইবনে জাবির, তোমার এই তরবারিটি কি ধারালো?"
সে জবাবে বলে, "হ্যাঁ।"
সে বলে, "এটি আমার হাতে দাও, পরীক্ষা করে দেখি, যদি তুমি ইচ্ছা করো?"

তাই আমিরি লোকটি সেটি নেয়, কারণ সে আবু বসিরের চেয়ে তরবারিটির নিকটবর্তী রেখেছিলেন; তারপর আবু বসির দাঁড়িয়ে যায় ও তরবারিটি টেনে বের করে, আমিরি লোকটি তখন তরবারির খাপটি ধরে ছিলেন। অতঃপর আবু বসির তা দিয়ে আমিরি লোকটিকে হত্যা করে। কাওসার দৌড়ে মদিনার দিকে পালিয়ে যায়, আবু বসির তার পিছু ধাওয়া করে, কিন্তু সে তাকে ধরতে পারে না; কাওসার তার আগেই আল্লাহর নবীর কাছে এসে পৌঁছে। আবু বসির বলে, "যদি আমি তাকে ধরতে পারতাম, তবে আমি তাকে তার সঙ্গীর রাস্তায় পৌঁছিয়ে দিতাম!"

এদিকে আল্লাহর নবী তাঁর অনুসারীদের সাথে আছর নামাজের পর বসেছিলেন, সেই সময় আশ্রিত ব্যক্তিটি (mawla) দৌড়ে হাজির হয়। যখন আল্লাহর নবী তাকে দেখেন, বলেন, "এই সেই লোক, যে আতঙ্কগ্রস্ত।" কাউসার কাছে আসে ও আল্লাহর নবীর সম্মুখে এসে দাঁড়ায়, আল্লাহর নবী বলেন, "কী ব্যাপার?" সে জবাবে বলে, "তোমার সঙ্গীটি আমার সঙ্গীকে খুন করেছে। আমি তার কাছ থেকে কোনোভাবে পালিয়ে এসেছি।" যে কারণে আবু বসির পিছিয়ে পড়েছিল, তা হলো তার অর্জিত লুণ্ঠিত সামগ্রী (Booty) তাদের উটের পিঠে করে আনা। কাউসার তার স্থান পরিত্যাগ করে না যতক্ষণে না আবু বসির সেখানে এসে হাজির হয়। উটটি মসজিদের দরজার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ও সে আমিরি লোকটির তরবারি পরিহিত অবস্থায় ভিতরে প্রবেশ করে। সে আল্লাহর নবীর সামনে দাঁড়ায় ও তাঁকে বলে, "আপনার দায়িত্ব শেষ হয়েছে ও আল্লাহ তা আপনার কাছ থেকে নিরসন করেছে। আপনি আমাকে শত্রুদের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন, আর আমি তাদের বাধা থেকে আমার ধর্ম রক্ষা করেছি। আপনি কি চান যে, আমি সত্য সম্বন্ধে মিথ্যা বলি? "

আল্লাহর নবী বলেন, "দুর্ভাগ্য তার মায়ের! যুদ্ধের আগুন সে জ্বালাতে পারতো, যদি অন্যরাও তার সাথে থাকতো।"

---আবু বসিরকে বলা আল্লাহর নবীর কথাগুলো, "দুর্ভাগ্য তার মায়ের! সে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে পারতো, যদি অন্যরাও তার সাথে থাকতো," মক্কায় অবরুদ্ধ ও আল্লাহর নবীর সঙ্গে মিলিত হতে ইচ্ছুক মুসলমানদের কাছে এসে পৌঁছে। তারা গোপনে আবু বসিরের কাছে আসার চেষ্টা করছিলো। তাই আল্লাহর নবী মুসলমানদের কী বলেছেন তা জানিয়ে উমর ইবনে খাত্তাব তাদের কাছে চিঠি লেখেন। যখন উমরের সেই চিঠিটি তাদের কাছে এসে পৌঁছে, যেখানে তাদের জানানো হয়েছে যে, আবু বসির সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানটিতে আছে, যে রাস্তা দিয়ে কুরাইশদের বাণিজ্য-কাফেলা গমন করে, মক্কার মুসলমানেরা একজন একজন করে পালিয়ে আবু বসিরের কাছে এসে সমবেত হয়। তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় সত্তর জন। তারা কুরাইশদের যাদেরকেই পরাভূত করতে পারে, তাদেরকেই হত্যা করে তাদের উদ্বেগের কারণ ঘটায়। এমন কোনো বাণিজ্য-কাফেলা অতিক্রম করেনি, যা তারা লুট করেনি, যা কুরাইশদের যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সত্যিই সেই পথে ত্রিশটি উট সঙ্গে নিয়ে সিরিয়া গমনকারী আরোহীদের ধরে নিয়ে আসা হয়, সেটি ছিল মুসলমানদের সর্বশেষ লুণ্ঠন সামগ্রী। তাদের প্রত্যেকেই একজন করে লোক ধরে নিয়ে আসে। যাদেরকে তারা ধরে আনে, তাদের প্রত্যেক লোকের মূল্য ছিল ত্রিশ দিরহাম।

তাদের কেহ কেহ বলে, "এক পঞ্চমাংশআল্লাহর নবীর কাছে পাঠিয়ে দাও।" আবু বসির বলে, "আল্লাহর নবী তা গ্রহণ করবেন না। আমি আমিরি লোকটির কাছ থেকে লুণ্ঠিত সামগ্রী তাঁর কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম, তিনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি বলেছিলেন, 'যদি আমি তা করি, তবে তাদের সাথে করা চুক্তি পূর্ণ করা হবে না।'" তারা আবু বসিরকে তাদের কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ করে। ---আবু বসির কুরাইশদের করে ক্রুদ্ধ, তাই কুরাইশরা চিঠি সহকারে তাদের এক লোককে আল্লাহর নবীর কাছে পাঠান ও জিজ্ঞাসা করেন আত্মীয়তার সম্পর্কে, "তুমি কি আবু বসির ও তার সহচরদের গ্রহণ করবে না, কারণ তাদের কে আমাদের আর কোন প্রয়োজন নেই?"

অতঃপর আল্লাহর নবী আবু বসিরের কাছে চিঠি লেখেন, তখন সে ছিল মৃত্যুশয্যায়; সেটি পড়তে পড়তে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তা তার হাতেই ছিল। তার সহচররা সেখানে তার কবর দেয়, তার জন্য প্রার্থনা করে ও তার কবরের কাছে এক মসজিদ নির্মাণ করে। তার সহচররা মদিনায় গমন করে। তাদের মোট সংখ্যা ছিল সত্তর জন।'

- অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।

>>> মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি, ও ইমাম বুখারীর ওপরে বর্ণিত বর্ণনার আলোকে আবু বসির উপাখ্যানের প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহ আলাদা আলাদা ভাবে বিশ্লেষণ করা যাক। The Devil is in the Detail (পর্ব ১১৩)!"

ঘটনার বর্ণনায় আমরা জানছি, মুহাম্মদ কুরাইশদের সাথে হুদাইবিয়ায় সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষর শেষে মদিনায় প্রত্যাবর্তনের পর পরই আবু বসির নামের এক নব্য মুহাম্মদ অনুসারী তাঁর অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মক্কা থেকে পালিয়ে মদিনায় মুহাম্মদের কাছে আসেন। আবু বসির ছিলেন থাকিফ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত [7]  ও তারা ছিলেন বানু যুহরা গোত্রের মিত্র। এই খবরটি জানার পর আল-আখনাস বিন শারিক বিন আমর বিন ওহাব আল-থাকাফি ও তাঁদের মিত্র বানু যুহরা গোত্রের আযহার বিন আবদু আউফ বিন আবদ বিন আল-হারিথ বিন যুহরা নামের দুই লোক এক চিঠি সহ বানু আমির গোত্রের (সুহায়েল বিন আমরের গোত্র) খুনায়েস ও কাউসার নামের দুই লোককে মদিনায় মুহাম্মদের কাছে পাঠান। ঐ চিঠিতে তাঁরা হুদাইবিয়া সন্ধির শর্তের উল্লেখ করে আবু বসিরকে মক্কায় ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেন। আল-ওয়াকিদির বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, এই লোকগুলো মদিনায় আসার তিনদিন আগেই আবু বসির মদিনায় এসেছিলেন।

প্রশ্ন হলো?
আবু বসির মদিনায় এসে এই তিনদিন কী করেছিলেন? তিনি কি এই তিন দিন মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের সাথে সাক্ষাত ও শলাপরামর্শ না করে নিশ্চিন্তে বসে বসে সময় কাটাচ্ছিলেন? নাকি তাঁদের সাথে দেখা করে শলাপরামর্শ করছিলেন? হুদাইবিয়া সন্ধির শর্ত অনুযায়ী তাকে মক্কায় ফেরত পাঠানো হবে, এই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মুহাম্মদ ও অন্যান্য মুসলমানদের সাথে সাক্ষাত করে এমত পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উদ্ধার পেতে পারেন, এ বিষয়ে কোনো শলাপরামর্শ না করে নিশ্চিন্তে চুপচাপ সময় অতিবাহিত করছিলেন, এমন দাবি অবিশ্বাস্য! অন্যদিকে মুহাম্মদ ছিলেন এক অত্যন্ত তীক্ষ্ণবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। সুনিশ্চিত সেই বাস্তবতার সম্মুখীন তাঁকে হতেই হবে জানা সত্ত্বেও এই তিনদিন তিনি আবু বসির ও তাঁর অন্যান্য অনুসারীদের সঙ্গে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কৌশল সম্বন্ধে কোন শলাপরামর্শই করেননি, এমন দাবি যৌক্তিক নয়। তথাপি, যেহেতু এই তিনদিন সময়ে আবু বসিরকে ঘিরে মদিনায় কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে আদি উৎসে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থিত নেই, তাই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়।

আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যা আমরা নিশ্চিতরূপে জানি, তা হলো, খুনায়েস ও কাউসার নামের কুরাইশদের এই দুই পত্রবাহক যখন মুহাম্মদের কাছে এসে আবু বসিরকে ফেরত দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন, তখন মুহাম্মদ আবু বসিরকে যা বলেছিলেন, তা হলো, "আল্লাহ তোমাকে মুক্ত করবে ও তোমার মত অসহায়দের পলায়নেরএকটা উপায় বের করবে, --!" আর তাঁর অনুসারীরা আবু বসিরকে যা বলেছিলেন, তা হলো, "নিশ্চয়ই তোমার জন্য এক পুরস্কার ও সমাধানের একটি উপায় আছে, সম্ভবত, একজন লোক এক হাজার লোকের চেয়ে উত্তম, সুতরাং কিছু করো, কিছু করো!" অর্থাৎ, বিভিন্ন ভাবে তাঁরা তাকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের এই বক্তব্যগুলো কী আবু বসিরকে দেয়া “নিছক সান্ত্বনা বাক্য, নাকি আগের তিন দিন শলাপরামর্শের ফাইনাল রিহার্সেল?

এই প্রশ্নের সুনিশ্চিত জবাব আমরা জানতে পারি এই উপাখ্যানের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা নিশ্চিতরূপে জানি, অতঃপর আবু বসির যখন প্রতারণার আশ্রয়ে একজন নিরপরাধ নিরীহ লোককে নৃশংসভাবে খুন করে মুহাম্মদের কাছে প্রত্যাবর্তন করেন, তখন এই জঘন্য কাজটির জন্য মুহাম্মদ তার কাছে কোনো কৈফিয়ত দাবি করেছিলেন, কিংবা তাকে কোনো তিরস্কার করেছিলেন, কিংবা তার এই অত্যন্ত গর্হিত কর্মের (প্রতারণা, খুন, চুক্তি-লঙ্ঘ) কারণে তার ওপর তিনি কোনোরূপ বীতশ্রদ্ধহয়েছিলেন, এমন আভাস কোথাও নেই! যা বর্ণিত আছে, তা হলো - এই খুনি মুহাম্মদের কাছে এসে তরবারি উঁচিয়ে ঘোষণা করেছিলেন "আপনার দায়িত্ব শেষ হয়েছে",আর অন্যদিকে মুহাম্মদ তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন, "যুদ্ধের আগুন সে জ্বালাতে পারতো যদি অন্যরাও তার সাথে থাকতো”; যা প্রায় নিশ্চিতভাবেই প্রমাণ করে যে, তাদের ঐ উক্তিগুলো “নিছক সান্ত্বনা বাক্য" ছিল না!

মুহাম্মদ তাঁর এই "কোড বাক্য"-এর মাধ্যমে আবু বসির ও মক্কা থেকে হিজরত ('পলায়ন') করতে ইচ্ছুক সকল অনুসারীদের কী নির্দেশ দিয়েছেন, তা তারা খুব ভালভাবেই বুঝেছিলেন। তাই হিজরত ইচ্ছুক মক্কার মুসলমানরা আবু বসিরের কাছে একে একে জড়ো হয়েছিলেন, ওমর ইবনে খাত্তাব মক্কার মুসলমানদের চিঠি দিয়ে আবু বসিরের ঠিকানা জানিয়ে তাদেরকে তার কাছে জড়ো হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন, একে একে জড়ো হয়েছিল ৭০ জন মুহাম্মদ অনুসারী; যারা তাদের নবীর আদেশে কুরাইশদের বিরুদ্ধে "যুদ্ধের আগুন" জ্বালিয়েছিলেন।এই সমস্ত কর্মের কোনোটিই মুহাম্মদের অগোচরে সংঘটিত হয়নি। তাদের প্রতি মুহাম্মদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিলো! যার প্রমাণ হলো, যখন কুরাইশরা মুহাম্মদের কাছে "তাঁদেরকে এই দুর্দশা থেকে মুক্তি লাভের" মিনতি করেছিলেন, তখন মুহাম্মদের এক চিঠিতেই তারা তাঁর কাছে ফিরে গিয়েছিলেন।

>> মুহাম্মদ ও কুরাইশদের সঙ্গে সংঘটিত ঐতিহাসিক হুদাইবিয়া সন্ধি-চুক্তির শর্তগুলোর বিস্তারিত আলোচনা 'চুক্তি স্বাক্ষর (পর্ব-১২২)' পর্বে করা হয়েছে। আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও বিস্তারিত বর্ণনার আলোকে আমরা নিশ্চিতরূপেই জানতে পারি, হুদাইবিয়া সন্ধি শেষে মুহাম্মদ তাঁর মদিনায় প্রত্যাবর্তনের পরেই এই চুক্তির যে-শর্তগুলো লঙ্ঘন করেছিলেন, তা হলো এই:

১) শর্ত ছিল, "তারা আগামী দশ বছর যুদ্ধ বন্ধ রাখবে যাতে জনগণ সহিংসতা পরিহার করে নিরাপদে থাকতে পারে--।" মুহাম্মদ এই শর্তটি নিশ্চিতরূপেই ভঙ্গ করেছিলেন! কারণ মুহাম্মদের পরোক্ষ (নাকি সরাসরি?) আদেশে, আবু বসিরের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা কুরাইশদের প্রতি তাদের সহিংসতা পুরাদমে অব্যাহত রেখেছিলেন।

২) শর্ত ছিল “যদি কোনো ব্যক্তি তার অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মুহাম্মদের কাছে আসে, তবে তিনি তাকে তাঁদের কাছে ফেরত দেবেন।”

>> মুহাম্মদ কি এই শর্ত পালন করেছিলেন? মুহাম্মদের মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের প্রথম সারীর ইসলামী স্কলার উরওয়া বিন আল-যুবায়ের বিন আল-আওয়াম (মৃত্যু ৭১৩ সাল) এর মতে, "হ্যাঁ!" মুহাম্মদ কী কারণে মক্কা থেকে পালিয়ে আসা উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা বিন আবু মুয়াত-কে মক্কায় ফেরত পাঠাননি, তার ব্যাখ্যা প্রদান কালে তিনি যা উদ্ধৃত করেছিলেন, তা হলো, “যদি এটি আল্লাহর হুকুম না হতো তবে আল্লাহর নবী এই মহিলাটিকে ফেরত পাঠাতেন, যেমন তিনি পুরুষদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন।" এ বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা "চুক্তি ভঙ্গ এক (পর্ব- ১২৫)!” পর্বে করা হয়েছে। ‘যেমন তিনি পুরুষদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন’ অর্থ হলো মুহাম্মদ যেমন আবু জানদাল বিন সুহায়েল ও আবু বসিরকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন। ইসলামের ইতিহাস পাঠের সময় যে-সত্যটি সর্বদাই মনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন, তা হলো - ইসলামী মতবাদের এক অবশ্যপালনীয় অত্যাবশ্যকীয় শর্তের কারণে ইসলাম বিশ্বাসীরা অত্যন্ত অসহায় ও ইসলামের সকল ইতিহাস একপেশে ও মিথ্যাচারে সমৃদ্ধ (পর্ব: ৪৪); হুদাইবিয়া চুক্তির প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল বলেই মুহাম্মদ আবু জানদাল-কে তাঁর পিতা সুহায়েলের কাছে ফেরত দিয়েছিলেন, এই দাবি কী কারণে এক্কেবারেই হাস্যকর, তার বিস্তারিত আলোচনা "আবু জানদাল বিন সুহায়েল উপাখ্যান (পর্ব: ১২০)!" পর্বে করা হয়েছে। আর আবু বসির-কে মুহাম্মদ ফেরত পাঠিয়েছিলেন, এই দাবি সত্য নয়। কারণ আদি উৎসের বর্ণনায় যা আমরা নিশ্চিতরূপে জানি, তা হলো: “মুহাম্মদ আবু বসিরকে মক্কায় ফেরত পাঠাননি”! কী কারণে তিনি তা করেননি? তাঁর ইচ্ছা ছিল, সমর্থ ছিল না? নাকি তাঁর সমর্থ ছিল, ইচ্ছা ছিল না?

৩) শর্ত ছিল, "তারা একে অপরের প্রতি শত্রুতা প্রদর্শন করবেন না।" মুহাম্মদ এই শর্তটি নিশ্চিতরূপেই ভঙ্গ করেছিলেন! কারণমুহাম্মদের আদেশ ও সমর্থনে তাঁর অনুসারীরা কুরাইশ বাণিজ্য বহরের ওপর হামলা, তাঁদের মালামাল লুণ্ঠন ও খুন কখনোই বন্ধ করেননি।

৪) শর্ত ছিল, "তারা একে অপরের প্রতি কোনোরূপ গোপন অভিসন্ধি বা প্রতারণার আশ্রয় নেবেন না।” মুহাম্মদ এই শর্তটি নিশ্চিতরূপেই ভঙ্গ করেছিলেন! কারণ, আবু বসির উপাখ্যানের এই বর্ণনার প্রত্যেকটি ঘটনা পরস্পরায় মুহাম্মদের গোপন অভিসন্ধি ও প্রতারণার লক্ষণ দিবালোকের মতই স্পষ্ট!

আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণে যে-সত্যটি সুস্পষ্ট, তা হলো - মুহাম্মদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ আদেশ ও সমর্থনে তাঁর অনুসারীরা কুরাইশ বাণিজ্য বহরের ওপর হামলা, তাঁদের মালামাল লুণ্ঠন ও খুন কখনোই বন্ধ করেননি। তাঁদের এই গর্হিত কর্মকাণ্ড পুরাদমে ছিল অব্যাহত, আগের মতই কিংবা তার চেয়েও বেশি! অর্থাৎ, হুদাইবিয়া সন্ধি-স্বাক্ষর শেষে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করার পরেই মুহাম্মদ হুদাইবিয়া সন্ধির প্রায় প্রত্যেকটি শর্ত লঙ্ঘন করেছিলেন! 

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি।

The Narratives of Muhammad Ibne Ishaq: [1] [2] [3] [4]
‘When the apostle arrived in Medina Abu Basir 'Utba b. Asid b. Jariya, one of those imprisoned in Mecca, came to him. Azhar b. 'Abdu 'Auf b. 'Abd b. al-Harith b. Zuhra and al-Akhnas b. Shariq b. 'Amr b. Wahb al-Thaqafi wrote to the apostle about him, and they sent a man of B. 'Amir b. Lu'ayy with a freed slave of theirs.When they came to the apostle with the letter he said, 'You know the undertaking we gave these people and it ill becomes us that treachery should enter our religion. God will bring relief and a way of escape to those helpless like you, so go back to your people.' He said, 'Would you return me to the polytheists who will seduce me from my religion?' He said, 'Go, for God will bring relief and a way of escape for you and the helpless ones with you.' So he went with them as far as Dhu'l-Hulayfa (About six or seven miles from Medina) where he and the two men sat against a wall. Abu Basir said, 'Is your sword sharp, O brother of B. 'Amir?' When he said that it was he said that he would like to look at it. 'Look at it if you want to,' he replied. Abu Basir unsheathed it and dealt him a blow that killed him. The freedman ran off to the apostle who was sitting in the mosque, and when the apostle saw him coming he said, 'This man has seen something frightful.' When he came up the apostle said, 'What's the matter, woe to you?' He said: 'Your man has killed my man,' and almost at once Abu Basir came up girt with the sword, and standing by the apostle he said, 'Your obligation is over and God has removed it from you. You duly handed me over to the men and I have protected myself in my religion lest I should be seduced therein or scoffed at.' The apostle said, 'Woe is his mother, he would have kindled a war had there been others with him.'Then Abu Basir went off until he halted at al-'Is in the region of Dhu'l-Marwa by the sea-shore on the road which Quraysh were accustomed to take to Syria. The Muslims who were confined in Mecca heard what the apostle had said of Abu Basir so they went out to join him in al-'Is. About seventy men attached themselves to him, and they so harried Quraysh, killing everyone they could get hold of and cutting to pieces every caravan that passed them, that Quraysh wrote to the apostle begging him by the ties of kinship to take these men in, for they had no use for them; so the apostle took them in and they came to him in Medina. When Suhayl heard that Abu Basir had killed his 'Amiri guard he leant his back against the Ka'ba and swore that he would not remove it until this man's bloodwit was paid. Abu Sufyan b. Harb said, 'By God, this is sheer folly. It will not be paid.' Three times he said it.’

The additional narratives of Al-Waqidi: [4]
‘When the Messenger of God arrived in Medina from Al-Hudaybiyya, Abu Basir, that is Utba b Usayd b jariya (Haritha), an ally of the Banu Zuhra, came to him as a Muslim. He had escaped from his people, and came walking.  Al-Akhnasb Shariq and Azhar b Abd Awf al-Zuhri wrote a letter to the Messenger of God. They sent a man from the Banu Amir b Luayy, having hired him for the price of a camel. Khunays b Jabir, the Amiri, set out with a mawla of his named Kawthar.The two had sent Khunays b Jabir on a camel, with a letter mentioning the peace between them, and requesting the return of Abu Basir to them. When they arrived before the Messenger of God, they arrived three days after Abu Basir. ------the Messenger of God handed him to the Amiri and his companions, and he set out with them. The Muslims tried to cheer up Abu Basir. “O Abu Basir, rejoice! Indeed there is a reward for you and a way out. Perhaps one man will be better than a thousand men. So act, act!” and they commanded him about those who were with him. ‘-- The word of Messenger of God to Abu Basir, “Woe to his mother. He would have kindled a war if there were more men with him,” reached the Muslims who were imprisoned at Mecca and desire to join the Messenger of God. They tried to steal away to Abu Basir. So Umar b al-Khattab wrote to them about what the Messenger of God had said to the Muslims. When the letter of Umar came to them informing them that Abu Basir was at the coast, on the road of the Quraysh caravan, the Meccan Muslims tried to creep away, man by man until they reached Abu Basir and gathered around him. They numbered almost seventy men. They created anxiety among the Quraysh, killing those they overpowered. A caravan did not pass, but they took possession of it, until they hurt the Quraysh.----’.

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫০৭-৫০৮ http://www.justislam.co.uk/images/Ibn%20Ishaq%20-%20Sirat%20Rasul%20Allah.pdf

[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৫১-১৫৫৩ http://books.google.com/books?id=sD8_ePcl1UoC&printsec=frontcover&source=gbs_ge_summary_r&cad=0#v=onepage&q&f=false

[3]অনুরূপ বর্ণনা “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬২৪-৬২৯
ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩০৭-৩১০

[4] অনুরূপ বর্ণনা- সহি বুখারী: ভলিউম ৩, বই ৫০, নম্বর ৮৯১
অনেক বড় হাদিস, এই পর্বের প্রাসঙ্গিক অংশ:
‘-- When the Prophet returned to Medina, Abu Basir, a new Muslim convert from Quraish came to him. The Infidels sent in his pursuit two men who said (to the Prophet), "Abide by the promise you gave us." So, the Prophet handed him over to them. They took him out (of the City) till they reached Dhul-Hulaifa where they dismounted to eat some dates they had with them. Abu Basir said to one of them, "By Allah, O so-and-so, I see you have a fine sword." The other drew it out (of the scabbard) and said, "By Allah, it is very fine and I have tried it many times." Abu Bair said, "Let me have a look at it." When the other gave it to him, he hit him with it till he died, and his companion ran away till he came to Medina and entered the Mosque running. When Allah's Apostle saw him he said, "This man appears to have been frightened." When he reached the Prophet he said, "My companion has been murdered and I would have been murdered too." Abu Basir came and said, "O Allah's Apostle, by Allah, Allah has made you fulfill your obligations by your returning me to them (i.e. the Infidels), but Allah has saved me from them." The Prophet said, "Woe to his mother! What excellent war kindler he would be, should he only have supporters." When Abu Basir heard that he understood that the Prophet would return him to them again, so he set off till he reached the seashore. Abu Jandal bin Suhail got himself released from them (i.e. infidels) and joined Abu Basir. So, whenever a man from Quraish embraced Islam he would follow Abu Basir till they formed a strong group. By Allah, whenever they heard about a caravan of Quraish heading towards Sham, they stopped it and attacked and killed them (i.e. infidels) and took their properties. The people of Quraish sent a message to the Prophet requesting him for the Sake of Allah and Kith and kin to send for (i.e. Abu Basir and his companions) promising that whoever (amongst them) came to the Prophet would be secure. So the Prophet sent for them (i.e. Abu Basir's companions) -----.’

[5] ‘আল-ইস (al-'Is) স্থানটি মদিনা থেকে চার রাত্রির ও ধু আল-মারওয়াথেকে দুই রাত্রির যাত্রা। ধু আল-মারওয়া হলো ওয়াদি আল-কুরা (এক দীর্ঘ উপত্যকা যা উত্তরে সিরিয়ার দিকে বিস্তৃত) উপত্যকায় অবস্থিত একটি গ্রাম’।

[6] ‘বানু আমির গোত্রের গোত্র-প্রধান হিসাবে সুহায়েল বিন আমর এর দায়িত্ব ছিল এই যে তিনি ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁর গোত্রের খুন হওয়া কোন ব্যক্তির পক্ষে রক্ত মূল্য দাবী করেন’। 

[7] Ibid “সিরাত রসুল আল্লাহ”- ইবনে হিশামের নোট নম্বর ৭৫৫, পৃষ্ঠা ৭৬৯

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন