আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শুভ্র বচন - ৩

লিখেছেন শুভ্র আহমেদ

৭.
চেনা বামুনের পৈতা লাগে না। কোন ধর্মের লোকেরই কইতে হয় না: I am not a terrorist.
কিন্তু একখান বিশেষ ধর্মের লোকদের জপমালা নিয়ে জপতে হয়: I'm not a terrorist

৮.
ইসলামি নৈতিকতা:
১. ডাকাতি করা হালাল (বদর যুদ্ধের ইতিহাস দ্রষ্টব্য), কিন্তু ব্যাংকে টাকা রেখে বৈধ ইন্টারেস্ট খাওয়া হারাম।
২. ৬ বছরের মেয়েশিশুকে বিয়ে করা হালাল, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ের ভালোবেসে চুমু খাওয়া হারাম।
৩. দাসীর সাথে সেক্স করা হালাল, কিন্তু হস্তমৈথুন করা হারাম।
৪. চার বিয়ে হালাল, কিন্তু প্রেম করা হারাম।
৫. বিধর্মী নারী বিয়ে করা হারাম, কিন্তু বিধর্মী নারীদের যৌনদাসী বানানো হালাল।
৬. যুদ্ধ করা হালাল, কিন্তু সংস্কৃতিচর্চা (নাচ-গান, অভিনয়) হারাম।
৭. বাল্যবিয়ে হালাল, কিন্তু সমকামিতা হারাম।
৮. মিথ্যাচার ও প্রতারণা (ইহুদি কবি কা'ব ইবনে আশরাফ এর হত্যাকাহিনী দ্রষ্টব্য) হালাল, কিন্তু ইসলামের কোনো ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হারাম।
৯. দলবেঁধে হৈ-হুল্লোড় করে রক্ত প্রবাহিত করা (কোরবানির ঈদ) হালাল, কিন্তু নববর্ষ পালন হারাম।
১০. ইহুদি-নাসারাদের সাথে বন্ধুত্ব হারাম, কিন্তু আগবাড়িয়ে তাদের দেশে হামলা করা হালাল।
৯.
লেখার জবাব মুসলিমরা কেন লেখা দিয়ে দেবে? কিংবা কীভাবে দেবে?

মুসলিম দেশগুলাতে শিক্ষার হার সবচে কম। এই অশিক্ষিত ধর্মীয় গোষ্ঠীটি লেখার জবাব লেখা দিয়ে দিবে সেই আশা বাতুলতা। এই আশা ছেড়ে দিয়েই লিখে যেতে হবে।

লেখার জবাবে চাপাতিই আসবে - এইটা মেনে নিয়েই, এই আশংকা সামনে রেখেই পথ চলতে হবে।

অশিক্ষিত মুসলিমদের কাছে কলমের জবাবে কলম আশা করা আর মরুভুমিতে পানির ঝর্ণা আশা করা একই কথা।

দ্বীনবানের দীন বাণী - ৪৭

ভিডিওসূত্র: https://youtu.be/-e34y6O45Bc

ন্যাংটা নবী

বা দিগম্বর পয়গম্বর


আমার বোরখা-ফেটিশ – ১৯৫


বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

পুতুলের হক কথা - ২২

লিখেছেন পুতুল হক

৮৬.
বেশ কয়েকবছর আগে বাংলায় কোরআন পড়েছিলাম। কেমন খাপছাড়া কথা, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই কথা বারবার করে বলা, এই ধমকাচ্ছে, এই ভয় দেখাচ্ছে, এই অভিশাপ দিচ্ছে, এই লোভ দেখাচ্ছে, এই আবার নিজের মহিমার কথা নিজেই বলছে, কখনো ফার্স্ট পারসন কখনো বা থার্ড পারসন, মাথামুণ্ডু ধরতে পারি না। ছন্দ বা সুর কোথায়, সেটাও খুঁজে পাইনি। হয়তো অনুবাদের কারণে, হয়তো আমার মোটামাথার কারণে, কে জানে বাপু!

৮৭.
ইহুদিরা ষড়যন্ত্র করে আল-কোরআন নামের একটা বই লেখে। সেই বইয়ের প্রচারের জন্য তারা মোহাম্মদ নামের এক জঙ্গি তৈরি করে।
সব দোষ ইহুদি-নাসারার।

৮৮.
অনেক মুসলিমকে বলতে শুনেছি, তারা ভূত বিশ্বাস করে না। তাদের ভাষায় - ভুত বলে পৃথিবীতে কিছু নেই, এসবই মানুষের কল্পনা, কুসংস্কার। কিন্তু তারা জ্বীন আর ফেরেস্তা আছে বিশ্বাস করে। দু'দুটো ফেরেস্তা মানুষের কাঁধে খাতা-কলম নিয়ে বসে আছে। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার সময়, ভালোবাসার সময়, চুরি-ডাকাতি করার সময়, প্রতিটি মুহূর্তে তারা মানুষের কাঁধে বসে থেকে শুধু লিখতে থাকে। আর জ্বীনদের নাকি আলাদা দেশ আছে, তারা ঘর-সংসার করে, তাদের বাচ্চা হয়। 
ভূত দেখেনি বলে ভূত বিশ্বাস করে না, কিন্তু না দেখেও জ্বীন আর ফেরেস্তার কথা প্রবলভাবে বিশ্বাস করে।

৮৯.
কল্পনার স্বর্গ-নরক না থাকলে দুনিয়াতে অনেক লোক বেকার হয়ে পড়বে।

৯০.
নানুমণি বুরখা পরতেন না। বাইরে যাবার সময় একটা ওড়না জড়িয়ে নিতেন। অনেক বাল্কি ছিলেন, তার ওপর অসুস্থ। খুব কষ্ট হত তাঁর। ঘেমে অস্থির হয়ে বলেছিলেন, "মেয়েদেরকে ঢেকে রাখার জন্য ছেলেদের কেন যে এতো ইচ্ছা?" আমি বলেছিলাম, "আল্লাহর ইচ্ছা।" নানুমণি বলেছিলেন, "রাখো তোমার আল্লাহর ইচ্ছা, সব পুরুষের বুদ্ধি!"

গরুজাতির মোল্লা-পুরুতবিদ্বেষ

উপমহাদেশের গরুগুলো, খুব সম্ভব, জানে, মুছলিম মোল্লা ও হিন্দু পুরুত তাদের বড়ো শত্রু, যেহেতু কোরবানি ও বলির কাজটি তারাই করে থাকে। আর সে কারণেই এই প্রজাতির ওপরে নিরীহ গরুজাতির এতো রাগ বলে মনে হয়! নিচের ছোট্ট ভিডিও দুটোয় প্রমাণ দেখুন:



প্লেবয়ে মুছলিম জেনানাদের ছবি

প্লেবয়ের অক্টোবর সংখ্যার জন্য মডেল হয়েছে এক মুছলিম জেনানা। শুনে পুরুষদের উৎফুল্ল হবার কোনও কারণ নেই। কারণ ছবিগুলো অতি বেশরিয়তী নয়। মোটামুটিভাবে ছহীহ লেবাছ তার পরনে। এবং হিজাবসহ। একটি নমুনা:


তবে আশাহতদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার: জার্মানিবাসী তুরস্কীয় বংশোদ্ভুত মুছলিম অভিনেত্রী সিলা সাহিন প্লেবয়ের জার্মান সংস্করণের জন্য দুঃসাহসী ফটো-সেশনে অংশ নিয়েছিলেন সেই ২০১১ সালে!


সেই সময়ের নয়টি ছবির লিংক (ছবিগুলো বড়োদের। অতএব ইমোটা খিয়াল কৈরা!  )
একদুইতিনচারপাঁচছয়সাতআটনয় (প্রথমটি ছাড়া প্রতিটি ছবিই অতিকায় আকারের বলে লিংকে যাবার পর ছবিগুলোর ওপরে আবার ক্লিক করতে হতে পারে)

নিত্য নবীরে স্মরি – ২৫৫

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শেখ'স শপ - ১৩

লিখেছেন শেখ মিলন

৩৭.
আদালতে আসামীকে প্রশ্ন করা হচ্ছে:
- তুমি মিছিলের ওপর চাপাতি হামলা করেছিলে কেন? 
- ওরা চিল্লাপাল্লা করে অশান্তি সৃষ্টি করছিলো, তাই আমি ওদের কল্লা ফালায়ে দিছি... ইসলাম শান্তির ধর্ম, অশান্তি পছন্দ করে না।

৩৮.
বহু জন্ম আগে,
আমি আদম, তুমি ইভ...
জন্মান্তরে,
তুমি পার্বতী, আমি শিব...

৩৯.
কেউ উপাসনালয়ের ভেতরে বসে ভিক্ষা করে পরকালে সুখে থাকার জন্য,
আবার কেউ উপাসনালয়ের সম্মুখে বসে ভিক্ষা করে দিনে দু'বেলা দু'মুঠো খাবারের জন্য।
আমি উপাসনালয়ের বাইরের ঐ ভিক্ষুকগুলোর কথা বলি...
কারণ তারাই বাস্তববাদী, আর ভেতরের ভিক্ষুকেরা তো কল্পনাবিলাসী।

দুর্বিষহ দুর্গন্ধযুক্ত দু'টি কিতাবের তুলনা

সূরা ৮.১৭ মিনিট

(জিব্রাইল পর্ন-মশগুল থাকায়) বিলম্বে নাজিল হয়েছে এক পর্ন লেখক উগ্র নাস্তেক ইত্তিলা ইতু-র ওপরে

সূরা ৮ মিনিট, 
আয়াত ১৭ সেকেন্ড
স্লোভাকিয়ায় অবতীর্ণ

১. তোমরা যাহারা ৮ মিনিট ১৭ সেকেন্ড লইয়া উত্তেজিত হইয়াছ ও হইতেছ, তাহারা কেহই পর্ন জগৎ সম্পর্কে অজ্ঞাত নহো, তা আমি জানি আমার অসীম ক্ষমতার গুণে।

كنت متحمس، خائفا في أولئك الذين أخذوا 8 دقائق و 17 ثانية، وأيا منهم لا يدركون العالم الاباحية، لكني أعول أمي قوة لانهائية.

২. প্রতি রাতে তোমরা কে কত মিনিট উম্মে সানির পেছনে ব্যয় কর, তাহাও আমার নজরের বাহিরে নহে।

وقالت المبلغ الذي تنفقه كل ليلة دقائق مشمس، ولا حتى لي للخروج من الطريق.

৩. তোমরা কি বেহেশতের ৭২ হুরীর জন্য অপেক্ষা করিতে রাজি নহো, যাহার প্রতিশ্রুতি আমি তোমাদের দিয়াছি? নিশ্চয়ই আমি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করি না।

ما أنت على استعداد لانتظار السماء النعيم القابضة للاستثمارات سبعين هور، الذي قد أعطيت لك الالتزام؟ أنا لا نعد استثناء.

৪. আর তাহারাই নিক্ষিপ্ত হইবে জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুনে, যাহারা বিশ্বাস রাখে না আমার প্রতিশ্রুতিতে।

وسوف يلقى في نار جهنم، وأنا لا أعتقد أن تلك الوعود.

৫. এবং নিয়মিত উপভোগ করে ৮ মিনিট জাতীয় উত্তেজক ভিডিও, যাহা আমি সম্পূর্ণ হারাম করিয়াছি তোমাদিগের জন্য।

وتتمتع بانتظام مثيرة الفيديو ثماني دقائق، وهو ما حرم لاستكمال لكم.

৬. এবং এ সম্পর্কে স্পষ্ট বিধান রাখিয়াছি পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।

وضعت في نص واضح في الكتب السابقة.

৭. নিশ্চয়ই আমি মহান, করুণাময়, অসীম দয়ালু।

أنا بالتأكيد عظيم، الرحيم، الرحمن الرحيم.

সত্যাসত্য ভগবানেশ্বরাল্যারা

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সাইমুম (উপন্যাস: পর্ব - ৫)

লিখেছেন উজান কৌরাগ


সংগ্রামে ভরা জীবন শাশ্বতীদির। সত্য এবং নিজের বিশ্বাসে অটল থেকে সমাজ আর পরিবারের সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই ক’রে মাথা তুলে দাঁড়ানোর এক আদর্শ চরিত্র। ঘুম যেহেতু আসছেই না, লেখাটা পড়েই ফেলি। ক্লিক ক’রে ওর ব্লগে ঢুকে পড়তে শুরু করলাম।

জন্মান্তর (পর্ব - এক)

রতিক্লান্ত দেহে আমার বর এখন বেঘোরে ঘুমোচ্ছে তার ভাঁজ করা ডান হাত আমার বুকের ওপর দিয়ে বাঁ-কাঁধের কাছে আর দ আকৃতির ডান পা দুই ঊরুর ওপর রেখে; তার নিশ্বাস পড়ছে আমার গলার ডানদিকে, গালেও। আমরা দু’জনই নগ্ন! এই যে আমার বর নগ্ন হ’য়ে তার ডান হাত আর ডান পায়ের ভর রেখেছে আমার শরীরের ওপর, আমার শরীরের সাথে লেপটে সে দিব্যি ঘুমোচ্ছে, এই অভিজ্ঞতা আমার আজই প্রথম নয়; অনেক রাত আমরা এভাবে পার করেছি। তবু আমার মনে হচ্ছে আজই প্রথম, আজই প্রথম আমি বরের স্পর্শ সুখ পেলাম; আজই প্রথম আমার জীবন পূর্ণতা পেল, নারীজীবন! কী যে সুখ অনুভূত হচ্ছে, কী যে ভাল লাগছে, কী যে আনন্দের হড়কা বান বইছে আমার হৃদ চরাচরে, সেই অনুভূতি কখনোই আমি শব্দে শব্দে লিখে বা মুখে ব’লে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারবো না কারো কাছে; এমনকি আমার বরের কাছেও নয়। এই সুখ, ভাললাগা, আনন্দের অনুভূতি অব্যক্ত; সকলের সঙ্গে ভাগ ক’রে নেবার পরও হৃদয়ের কোটরে কিছু গোপন থেকেই যায়, যা কারো কাছে ব্যক্ত করা যায় না, এই অনুভূতির কোনো শরিক হয় না। কোনো শব্দেই গাঁথা যায় না এই সুখানুভূতির মালা, কোনো উপমায়ই স্পর্শ করা যায় না এই সুখানুভূতির নিগূঢ় নিগদ, কোনো ভাষায়ই অনুবাদ করা যায় না এই সুখানুভূতির পংক্তিমালা; এ এক অপার সুখের অলিখিত বিমূর্ত মহাকাব্য, যার রসাস্বাদন কেবল নিজেই করা যায়, তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা যায়! এই অতুল আনন্দে, বিপুল সুখে ঘুম আসছে না আমার! এখন রাত কতো? দুটো তো হবেই। ঝমঝম ক’রে বৃষ্টি নামছে, আষাঢ়ে বৃষ্টি। মহল্লায় কোনো সাড়াশব্দ নেই, সারা মহল্লার মানুষ এখন ঘুমোচ্ছে; আমিই কেবল জেগে জেগে হাবুডুবু খাচ্ছি সুখের ভাবালুতায়। মনে হচ্ছে রাত দীর্ঘ হোক, এমনি ক’রে অঝোর ধারায় কামুক বৃষ্টি নেমে ভেজাক মাটির জরায়ু, যাতে আমি দীর্ঘ সময়ব্যাপী একা একা এই সুখ উদযাপন করতে পারি!

আজ আমার কতো কিছু মনে পড়ছে; শৈশব-বাল্য-কৈশোরের কথা, বাবা-মায়ের কথা, স্কুলের বন্ধুদের কথা, পাড়া-পড়শি এবং আত্মীয়-স্বজনের কথা। মনে পড়ছে সেইসব অপমান, অবহেলা, দুঃখগাঁথা দিনগুলোর কথা। আজকের এমন সুখের রাতে সেইসব কথা মনে করতে চাইনে, যা আমার জন্য মোটেও সুখকর নয়, তবু মনে পড়ছে। তা ব’লে সেইসব দুঃখগাথা দিনের কথা মনে ক’রে আমি আজকের এই সুখের রাতে এই ভেবে কাঁদতে বসবো যে, আহা, কতো অশ্রু দিয়েই না আমি কিনেছি এই সুখ; সেইসব দিনের কথা স্মৃতিতে উথলে উঠবে, আমি আনন্দ অশ্রু বিসর্জন ক’রে বুক ভাসাবো, বালিশ ভেজাবো, বরের গা ভেজাবো; অমন মেয়েই আমি নই। কান্নার দিন আমি অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। এখন কেবল হাসবো। হাসবো আর তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করবো জীবন, আহা নারীজীবন! 

আমি জানি যে, আমার এই সুখের জীবন আরো সুখের হতে পারে, যদি সমাজের মানুষের হাতে হাত ধরে, পায়ে পা মিলিয়ে পথ চলতে পারি। কিন্তু সেই সৌভাগ্য কি এই পোড়া দেশে আমার হবে! সমাজের কেউ কেউ কাঁকড় বিছিয়ে রাখবে আমার পথে, বাক্যবাণ নিক্ষেপ ক’রে আমাকে ক্ষতবিক্ষত করতে চাইবে। তবু এই বিরূপ সমাজের ভেতর থেকেই যে অল্প ক’জনকে সঙ্গে পাব, তাদের হাত ধরেই আমি এগিয়ে যাব ভবিষ্যতের পথে। যাত্রাপথে কিছু লোক গায়ে হুল ফোটালে, পায়ে কামড় দিলে তা আমি আমলে নেব না। এরা মহাকালের কাঁকড়া-বিছা জাতীয়; অতীতে ছিল, এখনো আছে, হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। এদের জন্য মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রা কোনোকালে থেমে থাকেনি, ভবিষ্যতেও থেমে থাকবে না। 

আজ আমার মনে পড়ছে তুলিভাবীর কথা। বেচারি তুলিভাবী! অমন ভরপুর যৌবন, কিন্তু বর ইংল্যান্ডে থাকায় তার যৌবন গুমরে কাঁদতো একলা ঘরে। বাড়িতে ছিল কেবল শাশুড়ি আর শ্বশুর। আমাদের বাড়ি আর ভাবীদের বাড়ি ছিল পাশাপশি; ফরিদপুর শহরের শেষ প্রান্তের দিকে, যেখান থেকে শুরু ফসলের উন্মুক্ত মাঠ আর মাঠের পরে গ্রাম। যার ফলে আমরা গ্রাম আর শহরের মিশ্র স্বাদ পেতাম। আজ থেকে পনের বছর আগের কথা, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এতোদিনে নিশ্চয় আমাদের পাড়াটা বদলে গেছে; হয়তো বদলে গেছে মানুষও। তখন আমাদের পাড়ায় তো আমরা সবাই সবাইকে চিনতাম, এমনকি ভাড়াটিয়াদেরকেও। 

ভাবী তখন বাইশ-তেইশ বছরের যুবতী, তার শরীরে উছলে পড়া যৌবন; যৌবন ভরা শরীরে নতুন স্বাদ আর লোভ জাগিয়ে তার বর ইকবাল ভাই ফিরে গেছে ইংল্যান্ডে, এদিকে সে তো যৌবন যাতনায় অধীর চঞ্চল! ভাবীর শ্বশুরের নাম সিরাজুল ইসলাম, আমরা সিরাজ চাচা ব’লে ডাকতাম। সিরাজ চাচা, চাচী আর ভাবীর সঙ্গে আমাদের পরিবারের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। এ বাড়ির ভাত-তরকারি ও বাড়িতে যেত, ও বাড়ির ভাত-তরকারি এ বাড়িতে আসতো। যেহেতু ইকবাল ভাই থাকতো বিদেশে, আর সিরাজ চাচা এবং চাচী খুব বৃদ্ধ নয় ব’লে তাদের সেবাযত্নেও অতিরিক্ত সময় ব্যয় হতো না, ফলে সংসারের টুকিটাকি কাজ সামলেও অনেক অবসর পেত ভাবী। তাই যখন-তখন আমাদের বাসায় আসতো সে, মা এবং আমার বড় দুই আপুর সঙ্গে গল্প ক’রে আর লুডু খেলে সময় কাটাতো। আমি তখন আঠারোয় পা দিয়েছি, মাঝে মধ্যে আমিও লুডু খেলতাম তাদের সঙ্গে। এই তুলিভাবীর সঙ্গেই আমার প্রথম যৌনসম্পর্ক!

মহাভারতের একটা গল্পের কথা মনে পড়ছে আমার। ওই যে যুদ্ধ শেষেও কুরুক্ষেত্রে ওঘবতী নদীর তীরে পিতামহ ভীষ্ম যখন শরশয্যায় শায়িত তখন যুধিষ্ঠির তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘পিতামহ, স্ত্রী-পুরুষের মিলনকালে কার স্পর্শসুখ অধিক হয়?’ এই প্রশ্নের উত্তরে ভীষ্ম যে গল্পটি যুধিষ্ঠিরকে শুনিয়েছিলেন, সেই গল্পটি। গল্পটি হলো: 

‘ভঙ্গাস্বন নামে একজন ধার্মিক রাজর্ষি পুত্রকামনায় অগ্নিষ্টুত যজ্ঞ ক’রে শতপুত্র লাভ করেছিলেন। এই যজ্ঞে কেবল অগ্নিরই স্তুতি করা হয়, এজন্য বরাবরের ঈর্ষাকাতর ইন্দ্র ক্রুদ্ধ হ’য়ে রাজর্ষির অনিষ্ট করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। একদিন ভঙ্গাস্বন মৃগয়া করতে গেলে ইন্দ্র সুযোগ পেয়ে তাকে বিমোহিত করলেন। ভঙ্গাস্বন দিগ্ভ্রান্ত, শ্রান্ত ও পিপাসার্ত হ’য়ে অরণ্যে ঘুরতে লাগলেন, ঘুরতে ঘুরতে একটি সরোবর দেখতে পেয়ে কাছে গিয়ে তিনি প্রথমে তার অশ্বকে জল পান করালেন। তারপর নিজে সরোবরে অবগাহন করলেন এবং তৎক্ষণাৎ স্ত্রীরূপ পেলেন। নিজের এই আকর্ষিক রূপান্তর দেখে বিস্মিত, লজ্জিত ও চিন্তিত ভঙ্গাস্বন তখনই অশ্বের পৃষ্ঠে আরোহন ক’রে রাজপুরীতে ফিরলেন। তাকে দেখে তার পতœী-পুত্রগণ এবং রাজপুরীর অন্যান্যরা চিনতে না পারলে তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে সকল বৃত্তান্ত জানালেন সবাইকে। এরপর তিনি তার পুত্রদেরকে ডেকে বললেন, “আমি বনে চ’লে যাব, তোমরা সকলে একত্র থেকে সৎভাবে রাজ্য ভোগ কর।” 

স্ত্রীরূপী ভঙ্গাস্বন রাজ্য ত্যাগ ক’রে অরণ্যে গিয়ে এক তপস্বীর আশ্রমে বাস করতে লাগলেন। কালক্রমে সেই তপস্বীর ঔরসে ভঙ্গাস্বনের গর্ভে একশ পুত্রের জন্ম হলো। একদিন তিনি তার এই শতপুত্রকে নিয়ে রাজপুরীতে গিয়ে পূর্বজাত শতপুত্রকে বললেন, “তোমরা আমার পুরুষ অবস্থার ঔরসজাত পুত্র, আর এরা আমার নারী অবস্থার গর্ভজাত পুত্র। তোমরা তোমাদের এই ভ্রাতাদের সঙ্গে মিলিত হ’য়ে রাজ্যভোগ কর।”

ভঙ্গাস্বনের আদেশ অনুসারে তার দুইশত পুত্র একত্রে মহানন্দে রাজ্য ভোগ করতে লাগলো। তাদের সুখ দুষ্টু ইন্দ্রের সহ্য হলো না; ইন্দ্র ভাবলেন, আমি রাজর্ষি ভঙ্গাসনের অপকার করতে গিয়ে উল্টো উপকারই করেছি। তিনি তৎক্ষণাৎ ব্রা‏হ্মণের বেশ ধারণ ক’রে রাজপুরীতে গিয়ে ভঙ্গাসনের ঔরসজাত পুত্রদের বললেন, “যারা এক পিতার পুত্র তাদের মধ্যেও সৌভ্রাত্র থাকে না; কশ্যপের পুত্র সুর এবং অসুরগণের মধ্যে বিবাদ হয়েছিল। তোমরা রাজর্ষি ভঙ্গাসনের ঔরসজাত পুত্র আর ওরা একজন অরণ্যচারী তপস্বীর ঔরসজাত পুত্র; এই পৈত্রিক রাজ্য ভোগ করার অধিকার কেবল তোমাদের, ওরা তোমাদের পৈত্রিক রাজ্য ভোগ করছে কেন?”

ইন্দ্র কু-বুদ্ধি দেবার পর ভঙ্গাসনের উভয় পক্ষের পুত্রদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হলো, তারা যুদ্ধ ক’রে পরস্পরকে বিনষ্ট করলো। পুত্রদের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ভঙ্গাস্বন মুষড়ে পড়লেন। তখন ইন্দ্র তার কাছে গিয়ে বললেন, “তমি আমাকে আহব্বান না ক’রে অগ্নিষ্টুত যজ্ঞ করেছিলে সেজন্য আমি রুষ্ট হ’য়ে তোমাকে শাস্তি দিয়েছি।”

ভঙ্গাস্বন পদানত হ’য়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ইন্দ্র প্রসন্ন হলেন। বললেন, “আমি তুষ্ট হয়েছি; বলো, তুমি তোমার কোন্ পুত্রদের পুনর্জীবন চাও-তোমার ঔরসজাত পুত্রদের, না গর্ভজাত পুত্রদের?”

তপস্বিনীবেশী ভঙ্গাস্বন তখন কৃতাঞ্জলি হ’য়ে বললেন, “আমি আমার স্ত্রী অবস্থার গর্ভজাত সন্তানদের পুনর্জীবন চাই।”

ইন্দ্র বিস্মিত হ’য়ে বললেন, “তোমার গর্ভজাত পুত্ররা ঔরসজাত পুত্রদের চেয়ে বেশি প্রিয় হলো কেন?”

ভঙ্গাস্বন বললেন, “দেবরাজ, পুরুষ অপেক্ষা স্ত্রী অধিক স্নেহময়ী, পুরুষের চেয়ে স্ত্রীর স্নেহই প্রবল।”

ইন্দ্র প্রীত হ’য়ে বললেন, “সত্যবাদিনী, আমার বরে তোমার সকল পুত্রই জীবিত হোক। এখন তুমি বলো, পুরুষত্ব না স্ত্রীত্ব চাও তুমি?”

ভগ্নাস্বন বললেন, “আমি স্ত্রীরূপেই থাকতে চাই।”

ইন্দ্র আরো বিস্মিত হ’য়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “দেবরাজ, স্ত্রী-পুরুষের মিলনকালে পুরুষের চেয়ে স্ত্রীরই অধিক সুখ হয়, আমি স্ত্রীরূপেই তুষ্ট আছি।” 

ইন্দ্র তার ইচ্ছাপূরণ ক’রে বিদায় নিলেন।’

আমি একালের ভঙ্গাস্বন। তবে দুষ্টু দেবরাজ ইন্দ্র বা অন্য কোনো দেবতা আমার রূপান্তর ঘটায়নি; প্রকৃতিই আমার ভেতরে বপন ক’রে রেখেছিল নারীত্বের বীজ, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অঙ্কুরিত হ’য়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছিল। প্রকৃতিই আমার মনের ভেতরে নারীত্বের বিস্তার ঘটিয়েছে, আর আমার শরীরের রূপান্তর ঘটিয়েছে শল্য চিকিৎসক। আমার রূপান্তরের কথা শুনে কেউ কেউ আমাকে শয়তান কিংবা ডাইনি বলতে শুরু করেছে, কেউ বলছে এটা প্রকৃতিবিরুদ্ধ, পুরুষমানুষ আবার নারী হয় নাকি? এদেরকে কিছুতেই বোঝাতে পারিনা যে, হয়, পুরুষ নারী হয়, আবার নারীও পুরুষ হয়; যদি প্রকৃতি পুরুষের ভেতর নারীত্বের আর নারীর ভেতর পুরুষত্বের বীজ বপন ক’রে রাখে; যেমনি আমার ভেতরে বপন করা ছিল নারীত্বের বীজ। 

শুধু কি মানুষ, প্রাণীজগতের আর কোনো প্রাণীর মধ্যে এমন রূপান্তর ঘটে না? নিশ্চয় ঘটে, প্রাণিজগতের আরো অনেক প্রাণীর মধ্যে নিশ্চয় এমন রূপান্তরের ঘটনা ঘটে। এতো বড় পৃথিবীতে অগণিত প্রাণীর বাস; হয়তো প্রতি মুহূর্তে বিবর্তন ঘটছে, প্রতি মুহূর্তে বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে এই পৃথিবী; আমরা তার কতটুকুই বা জানতে পারি! তবু বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে মাঝে মাঝেই আমরা এমন কিছু ঘটনা জানতে পারি, যে-ঘটনা আমরা কোনোদিন দেখিনি, যে-ঘটনা আমাদের পরিচিত প্রাণীদের মধ্যে আমরা ঘটতে দেখিনি। ফলে এই অদেখা-অজানা ব্যাপারটা কারো কারো কাছে অস্বাভাবিক বা প্রকৃতিবিরুদ্ধ মনে হলেও আদতে তা স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক। উত্তর আমেরিকার ক্লিনার ফিশের কথাই ধরা যাক, এই মাছের মধ্যে রূপান্তরকামিতার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Laborides Dimidiatus. এই প্রজাতির পুরুষ মাছ একসঙ্গে পাঁচ থেকে দশটা স্ত্রী মাছের সঙ্গে থাকে এবং যৌনাচার করে। এটা কিন্তু মানুষের মতোই স্বাভাবিক। আমরা জানি যে, শ্রীকৃষ্ণের একাধিক স্ত্রী এবং অসংখ্য সখী ছিল; হযরত মুহাম্মদ তেরো স্ত্রী, একাধিক যৌনদাসী এবং গণিমতের মালের সঙ্গে যৌনাচার করেছেন; আগের দিনের রাজা-বাদশাহ এবং পুরোহিতগণ ডজন ডজন স্ত্রী এবং যৌনদাসী রাখতেন; এখনো সৌদি আরবের বাদশাহ এবং বনেদীদের বিবির বহরের কথা আমরা জানি; আর আজকাল আমাদের দেশের অনেক সামর্থ্যবান মানুষও সামাজিক মর্যাদার জন্য ঘরে এক পত্নী রাখলেও বাইরে অনেক উপপত্নী রাখেন! 

ক্লিনার ফিশ প্রজাতিতে একই সঙ্গে পাঁচ থেকে দশটা স্ত্রী মাছের মধ্যমণি হ’য়ে থাকা পুরুষ মাছটির হঠাৎ মৃত্যু হ’লে স্ত্রী মাছের ভেতর থেকে যে কোনো একটা মাছ বয়োজ্যেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে হোক অথবা প্রভাব খাটিয়েই হোক দলের অন্য স্ত্রী মাছগুলোর দায়িত্ব নেয়। আর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ক্রমে ক্রমে ওই স্ত্রী মাছটির দৈহিক পরিবর্তন হতে থাকে; মাত্র দু-সপ্তাহের মধ্যেই তার গর্ভাশয়ে ডিম্বানু উৎপন্ন বন্ধ হয় এবং নতুন পুরুষাঙ্গ গজিয়ে সে পূর্ণাঙ্গ পুরুষ হ’য়ে যায়। 

রূপান্তরের উদাহরণ আরো আছে। উত্তর আমেরিকার সমুদ্র উপকূলে Atlantic Slipper Shell নামে এক প্রজাতির ক্ষুদ্র প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা; যার বৈজ্ঞানিক নাম Crepidula Formicata. এই প্রজাতির পুরুষেরা একা একা ঘুরে বেড়ায়, ঘুরতে ঘুরতে কোনো স্ত্রীর সংস্পর্শে এলে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়; যৌন সঙ্গমের পর পরই পুরুষটির পুরুষাঙ্গ খসে পড়ে এবং সে স্ত্রীতে রূপান্তরিত হয়, রূপান্তরের পর এরা আর একা একা ঘুরে বেড়ায় না, স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করে। 

এই যে দুটি প্রজাতির একটির স্ত্রী পুরুষে এবং অপরটির পুরুষ স্ত্রীতে রূপান্তরিত হলো, এটা কি প্রকৃতিবিরুদ্ধ? এই দুই প্রজাতির স্ত্রী বা পুরুষের তো এই রূপান্তরে কোনো হাত নেই, প্রকৃতির নিয়মে আপনাআপনিই এরা রূপান্তরিত হয়েছে। পৃথিবীতে নিশ্চয় এরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে যা এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। তার মানে রূপান্তরকামিতা প্রকৃতির স্বাভাবিক একটি ঘটনা।

অথচ মোল্লা-পুরোহিতরা তো বটেই সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ থেকে শুরু ক’রে আজকের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা শিক্ষিত প্রজন্মের বেশিরভাগ মানুষই রুপান্তারকামিতাকে আখ্যা দেয় প্রকৃতিবিরুদ্ধ এবং দৈহিক বিকৃতি ব’লে। প্রকৃতিতে উদাহরণ থাকা সত্ত্বেও এরা বলে, ‘ওসব তো আল্লাহ বা ভগবানের ইচ্ছায় এমনিতেই হয়েছে। আর মানুষ তো শল্য চিকিৎসা করিয়ে স্বেচ্ছায় নিজের শরীরের বিকৃতি ঘটাচ্ছে। আল্লাহ যেভাবে পাঠিয়েছে, সেভাবেই থাকা উচিত; খোদার ওপর খোদগারি করার দরকার কী!’

কী আশ্চর্য, শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে রূপান্তরকামিতা যদি খোদার ওপর খোদগারি হয়, তবে তো খৎনা করাও খোদার ওপর খোদগারি। আল্লাহই যদি মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে থাকবে, তো তিনি নিশ্চয় মানুষকে অপরিপূর্ণভাবে পাঠাননি, যার যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, নিশ্চয় ততটুকু দিয়েই তিনি পাঠিয়েছেন। সেই হিসেবে পুরুষ এবং নারীর যৌনাঙ্গ সৃষ্টিতেও তিনি কোনো অপূর্ণতা রাখেননি। তাহলে ইহুদিদের রীতি গ্রহণ ক’রে মুসলিম পুরুষরা কেন তাদের পুরুষাঙ্গের বাড়তি চামড়াটুকু কেটে ফেলবে, নিশ্চয়ই ওই চামড়াটুকুর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন বলেই আল্লাহ চামড়াটুকু দিয়েছেন! খৎনা ক’রে চামড়া কেটে ফেলা কি খোদার ওপর খোদগারি নয়! আফ্রিকার কোনো কোনো দেশের মুসলিম নারীদেরকেও খৎনা করা হয়, নিশ্চয়ই তা খোদার ওপর খোদগারি! মুসলমানদের দেহে যে কোনো ধরনের অস্ত্রপাচার করাও নিশ্চয় খোদার ওপর খোদগারি! 

আমি তুলিভাবীকে পছন্দ করতাম তার হাসিখুশি চেহারা এবং অমায়িক ব্যবহারের জন্য। সহজেই সে সবার সাথে মিশতে পারতো, সবাইকে আপন ক’রে নিতে পারতো। তখন আশ্বিন মাস; আমি ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। শুক্রবার দুপুরবেলা; নামাজ পড়তে যাব না শুনে আব্বা গজগজ করতে করতে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে আমি ঘর থেকে বেরোলাম আমাদের গলির মোড়ের দোকানের উদ্দেশে। ভাবীদের বাড়ির সদর গেটের সামনে দিয়ে যাচ্ছি, জানালা দিয়ে আমাকে দেখে ভাবী বললো, ‘কোথায় যাচ্ছ?’ 

বললাম, ‘সুবলদার দোকানে যাচ্ছি।’

‘কেন?’

‘এমনিতেই, কোনো কাজ নেই।’

‘সেমাই রান্না করেছি, খেয়ে যাও।’

এটা আমার জন্য নতুন কিছু নয়, ভাল কিছু রান্না করলে ভাবী আর চাচী হরহামেশাই আমাকে খেতে ডাকে। ভাবী এসে গেট খুলে দিল, আমি মহানন্দে ভাবীর পিছন পিছন চললাম সেমাই খেতে। এ বাড়িতে আমার অবাধ যাতায়াত। ঘরে ঢুকে বেতের চেয়ারে বসলাম, ভাবী গেল আমার জন্য সেমাই আনতে। অল্পক্ষণ পরই ছোট্ট মেলামাইনের বাটিতে একবাটি সেমাই আর চামচ এনে আমার হাতে দিয়ে ভাবী বসলো চেয়ার লাগোয়া বিছানায়। আমি খেতে খেতে বললাম, ‘চাচী কই?’

‘বাবা আর মা আজ সকালে ঢাকায় গেছে, বেলা আপার পেটের টিউমার অপারেশান হবে আগামীকাল।’ 

বেলা আপা, মানে সিরাজ চাচার ছোট মেয়ে, ভাবীর ননদ। 

বললাম, ‘কবে আসবে?’

‘বাবা পরশুদিনই চ’লে আসবে, কিন্তু মা থাকবে আরো কিছুদিন।’ 

আমি সেমাই খাচ্ছি, ভাবীর রান্নার হাত দারুণ, যা রান্না করে তাই যেন অমৃত! আমি খাচ্ছি, ভাবী আদর ক’রে আমার মাথার চুলে-কাঁধে আঙুলের স্পর্শ বুলিয়ে যাচ্ছে। ভাবীর এই আদুরে স্পর্শও নতুন কিছু নয়; মা আর আপুদের সামনেও তো ভাবী আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, পিঠ চাপড়ে দেয়, লুডু খেলতে খেলতে বা অন্য কোনো উপলক্ষ পেলে আদর ক’রে গাল টিপে দেয়! 

সেমাই খেয়ে হাত-মুখ ধুয়ে, জল খেয়ে এসে আবার চেয়ারে বসলাম। ভাবীও আমার এঁটো বাটি রান্নাঘরে রেখে এসে আবার আগের জায়গায় বসলো। আমার লেখাপড়া, কলেজ, বন্ধুবান্ধব সম্পর্কে নানা ধরনের প্রশ্ন করতে করতে ভাবী একইভাবে আমাকে আদর করতে লাগলো। আমার হাতটি তার কোলের ওপর নিয়ে টিপতে লাগলো। এরপর আমার হাতটি নিয়ে তার মুখে ঘষতে ঘষতে হঠাৎ নরম স্তনে চেপে ধরলো। আমি ভয় পেয়ে বেশ জোরেই বললাম, ‘ভাবী, এ কী করছো!’

‘চুপ....!’ পুকুরের জলে খসে পড়া গাছের পাতার মতো নীরবে ভাবীর ডানহাতের তিনটি আঙুল স্পর্শ করলো আমার ঠোঁট।

(চলবে)

ক্যাপশন কী হতে পারে?

পাঠিয়েছেন অর্নব আহমেদ

নিমো হুজুরের খুতবা - ১

লিখেছেন নীল নিমো

(কোরবানিরই রেশ নিয়ে যাই চলে...)

১.
আজকে এক মুরিদ প্রশ্ন করিল, "হুজুর, নবী ইব্রাহীমের পর এতগুলো নবী-রাসুল আসল, কেউই কুপাকুপি কইরা ঈদ বা আনন্দ পাইলো না। স্বয়ং ইব্রাহিমও কোনোদিন ঈদুল আজহা পালন করে নাই। তাহলে নবী মুহাম্মদ নিরীহ পুশুপাখি কুপাকুপি করে আনন্দ উল্লাস করতে আদেশ দিল কেন? এই লন লিস্ট: Adam, Idris (Enoch), Nuh (Noah), Hud (Heber), Salih (Methusaleh), Lut (Lot), Ibrahim (Abraham), Ismail (Ishmael), Ishaq (Isaac), Yaqub (Jacob), Yusuf (Joseph), Shu’aib (Jethro), Ayyub (Job), Dhulkifl (Ezekiel), Musa (Moses), Harun (Aaron), Dawud (David), Sulayman (Solomon), Ilias (Elias), Alyasa (Elisha), Yunus (Jonah), Zakariya (Zachariah), Yahya (John the Baptist), Isa (Jesus), Muhammad"

আমি উত্তর দিলাম, "ধুর বোকা, আমাদের প্রীয় নবী মুহাম্মদ কুপাকুপি শিক্ষা না দিলে কি নবী আসা বন্দ হইত? মুহাম্মদ হলেন শেষ নবী, এরপরে অন্য কোনো নবী আসলেই তার ঘাড়ে কোপ পড়বে। নবী মুহাম্মদ ও তার উম্মতদের ভয়ে আল্লাপাক পৃথিবীতে আর কোনো নবী পাঠাচ্ছে না। আল্লাপাক যখন কোনো নবী পাঠাচ্ছেন না, তখন আর কী করা? আসুন, পশুপাখির উপর কুপাকুপি প্যাক্টিস করে আনন্দ করি।"

২.
আমার কিছু পাকিস্থানি ঈমানদ্বার মুরিদ ভেজিটেরিয়ান হয়ে গেছে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা ঈদুল আজহাতে পশুপাখি কুপাকুপির পরিবর্তে গাছ কুপাকুপি করে আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ স্বীকার করবে।


হে মুমিন, তুমি ভেজেটেরিয়ান হইছো তো কী হয়েছে? তুমি ভুলে যেও না তুমি মুসলমান... কুপাকুপি তোমাকে করতেই হবে। এইটাই আল্লাহর হুকুম। সব ধরনের কুপাকুপিই আল্লাহপাক পছন্দ করে।

৩.
একটি দুঃসংবাদ। ফ্রি গরুর মাংশ খাইয়া আজকে দুপর থেকেই আমার কোষ্টকাঠিন্য শুরু হইয়াছে। কোষ্টকাঠিন্য মানেই হল টয়লেটে গিয়া জিহাদ করা। আজকে বিকালে টয়লেটে গিয়ে জিহাদ করার সময় "আল্লাহু আকবর" বলে জোরে জোরে তাকবির দিচ্ছিলাম। আমার চিৎকার শুনে আমার ড্যানিশ প্রতিবেশি টেরোরিষ্ট হামলা মনে করে ভয় পাইয়া পুলিশ ডাকছে। আমি এখন ড্যানিশ পুলিশের হেফাজতে আছি। আমার জন্য দোয়া করবেন।

শান্তিকামী (peace fucker) ইছলাম

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

জর্ডানের লেখক নাহেদ সাত্তার; ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার দিয়েছিলেন, যেখানে দেখানো হচ্ছিলো, এক দাড়িওয়ালা লোক কল্পিত বেহেশতে বিছানায় নারীদের নিয়ে শুয়ে খোদাকে মদ ও বাদাম পাঠাতে বলছেন।

অনুবাদ করেছেন মাওলানা দূরের পাখি

এই ছবি দেখে জর্ডানের মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে। তারা ইসলাম অবমাননার দায়ে ওই লেখকের বিরুদ্ধে মামলা করে। আজ ওই মামলার জন্য আদালতে হাজিরা দিতে গেলে লেখক নাহেদ সাত্তারকে এক ইসলামী জিহাদি গুলি করে হত্যা করে।

বাংলাদেশে ধর্মানুভূতির কারণে একের পর এক ব্লগার হত্যা, প্রকাশক হত্যা, সমকামীদের নিয়ে ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা হত্যা, এমনকি ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেবার ছুঁতোয় নিরীহ দর্জিকে পর্যন্ত কুপিয়ে হত্যা।

প্যারিসে কার্টুন দেখে হত্যা, ডেনমার্কে মুভির পরিচালককে হত্যা, পাকিস্তানে সেক্যুলার ব্লগারকে গুলি করে হত্যা, আমেরিকাতে সমকামীদের ক্লাবে হত্যা - পৃথিবীর সবখানেই শান্তির ধর্মের অনুসারীরা রক্তের ফিনকি ছুটিয়ে চলছে।

এমনকি খোদ ভারতে, যেখানে শান্তির নেক বান্দারা সংখ্যালঘু, সেখানেও এক মৌলবাদী তৃণমূল মুসলিম নেতার অভিযোগে তারক বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারক বিশ্বাস হিন্দুধর্মের সমালোচনা করেছেন অনেকবার, তাতে কারও ধর্মানুভূতিতে লাগেনি। ভারতে 'পিকে', 'ওহ মাই গড' নির্মাণ করে কাউকে খুন হতে হয়নি। 'হেরা ফেরি' মুভিতে "রামলাল গলি কা কুত্তা" বলার পরেও পরিচালক কিংবা অভিনেতা কেউই জেলেও যাননি, খুনও হননি।

কিন্তু ইসলাম নিয়ে একটা লেখা লিখাতে তারক বিশ্বাসকে জেলে যেতে হয়েছে। জেল থেকে বের হবার পর হয়তো কুপিয়ে খুনও করা হবে জর্ডানের লেখক নাহেদ সাত্তারের মতো।

বাংলাদেশ থেকে ভারত, পাকিস্তান, জর্ডান, ইউরোপ, আমেরিকা - কোথাও থেকে নেই শান্তির (!) ধর্মের অনুসারীদের শান্তি প্রতিষ্ঠার দাপটে। এই শান্তি এমনই শান্তি! শান্তির ধর্মের অনুসারীদের 'ধর্মানুভূতি' ইউনিভার্সাল। কোথাও একটুও পার্থক্য নেই।

এমন এক অসাধারণ শান্তির বীজ পৃথিবীতে রোপনের জন্য মোহাম্মদকে শান্তিতে মরণোত্তর নোবেল দেওয়া উচিত।

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

খায়বার যুদ্ধ - ১২: কিনানা বিন আল-রাবিকে নির্যাতন ও খুন!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৪১): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত পনের

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।" 

মানব ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ ও দুঃখজনক ইতিহাসের একটি হলো ক্রীতদাস-দাসী প্রথার প্রচলন ও প্রসার! এই প্রথায় একজন মুক্ত মানুষ বংশ বংশানুক্রমে পরিণত হতেন অন্য একজন মানুষের "ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে", অন্যান্য গৃহপালিত গবাদি পশুর মতোই। একবার এই অবস্থায় রূপান্তরিত হওয়ার পর, সেই মানুষটির স্বাধীন সত্তা হতো পুরোপুরি রহিত। তিনি তখন মুক্ত মানুষ থেকে রূপান্তরিত হতেন তাঁর মালিকের ইচ্ছার বাহন। যে প্রক্রিয়ায় একজন মানুষ এই দুঃসহ অবস্থার শিকার হতেন, তার আদি উৎস “মাত্র একটি!" আর তা হলো, আদি-তে এই মানুষগুলো কিংবা তাঁদের পূর্বপুরুষদের কোনো এক বা একাধিক মুক্ত মানুষকে কোনো এক 'শক্তিধর মানুষ'তার উন্মুক্ত শক্তি প্রয়োগে জোরপূর্বক বন্দী করে অথবা তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি, অর্থবল বা প্রতারণার মাধ্যমে (পর্ব: ৭৯) রূপান্তরিত করেছেন এই দুঃসহ জীবনে। অতঃপর তারা তাঁদেরকে রেখেছেন নিজেদের সম্পত্তিরূপে, অথবা তাঁদের বিক্রি বা দান করেছেন অন্যের কাছে। অতঃপর, তাঁদের আমৃত্যু পরিণতি এক মনিব থেকে অন্য মনিবের কাছে একই প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর ও দুঃসহ জীবন! বংশ বংশানুক্রমে! আদি উৎসে মুলতঃ এই শক্তিধর মানুষরাই ছিলেন 'ক্রীতদাস-দাসী" প্রথার মূল জোগানদার (Supplier) ও চালিকাশক্তি। মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ছিলেন এই দলেরই প্রতিনিধিত্বকারী! উন্মুক্ত শক্তিবলে অমানুষিক নৃশংসতায় স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীরা কীভাবে মুক্ত মানুষদের বন্দী করে তাঁদেরকে এই দুঃসহ জীবনের অন্তর্ভুক্ত ও বাজারজাত (Marketing) করে দাসপ্রথার প্রসার ঘটিয়েছিলেন, তা আদি উৎসের মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় অত্যন্ত স্পষ্ট - যার আলোচনা গত পর্বে করা হয়েছে। “দাসপ্রথার” ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের অবদানকে যদি এক বাক্যে প্রকাশ করা হয়, তবে তা হবে এই:

"অবিশ্বাসী জনপদের মুক্ত মানুষদের জোরপূর্বক বন্দী করে ধরে নিয়ে এসে তাঁদেরকে দাস-দাসী রূপে রূপান্তর, সরবরাহ ও বাজারজাত করার মাধ্যমে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ দাসপ্রথার উন্নতি ও প্রসারে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছিলেন।"

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দ), আল-তাবারী (৮৩৯ -৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ), আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) প্রমুখ আদি উৎসের বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকরা 'খায়বার যুদ্ধ' উপাখ্যানের পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের যে প্রাণবন্ত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন, তা মুহাম্মদের মদিনা জীবনের অসংখ্য নৃশংসতার আর একটি উদাহরণ হিসাবে ইসলামের ইতিহাসেই পাতায় সাক্ষ্য হয়ে আছে। এই অমানুষিক নৃশংস ঘটনার সবচেয়ে বিস্তারিত বর্ণনা (পর্ব-১৩৪) লিপিবদ্ধকরছেন আল-ওয়াকিদি, তাঁর “কিতাব আল-মাগাজি' গ্রন্থে।

আল-ওয়াকিদির (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) অব্যাহত বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1] [2] [3]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ১৪০) পর:

'কিনানা ইহুদিদের মধ্যে থেকে শামাখ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে আল্লাহর নবীর কাছে যে-বার্তা পাঠায়, তা হলো, "আমি কি তোমার কাছে আসতে পারি ও কথা বলতে পারি?" যখন শামাখ আসে, মুসলমানরা তাকে আল্লাহর নবীর কাছে নিয়ে আসে ও সে তাঁকে অভিবাদন জানায় ও তাঁকে কিনানার বার্তাটি শোনায়, তিনি তার প্রতি ছিলেন সদয়। একদল ইহুদির সঙ্গে কিনানা আসে ও আল্লাহর নবীর সঙ্গে তাঁর চুক্তি মোতাবেক ও তাঁর শর্ত অনুযায়ী শান্তি স্থাপন করে। ইবরাহিম যা বলেছে, তা হলো, ধনুক ও যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মালিক ছিল আবু আল-হুকায়েকের পরিবারের ও তারা এগুলো বাইরের আরবদের কাছে ভাড়া দিয়েছিলো। তারা তাদের অলংকারগুলোও বাইরে আরবদের কাছে ভাড়া দিয়েছিলো। তারা ছিলো মদিনার সবচেয়ে খারাপ ইহুদি।----- ইবনে আবি আল-হুকায়েক সেখানে আসে ও আল্লাহর নবীর সাথে যে-চুক্তিটি করে তা হলো,

[১] তিনি দুর্গ মধ্যে অবস্থিত সৈন্যদের হত্যা করবেন না ও তাদের সন্তানদের ছেড়ে দেবেন।

[২] তারা তাদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ, যেমন সোনা, রূপা, তূণী, অস্ত্রশস্ত্র ও তাদের পরিধানে ছাড়া যাবতীয় বস্ত্রসামগ্রী আল্লাহর নবীর কাছে পরিত্যাগ করে তাদের সন্তানদের নিয়ে খায়বার ও তার অঞ্চল থেকে চলে যাবে।

আল্লাহর নবী বলেন: যদি তুমি আমার কাছে কোনোকিছু গোপন করো, তবে আল্লাহ ও তার নবী তোমার নিরাপত্তার দায় পরিহারকরবে। ইবনে আবি আল-হুকায়েক এ ব্যাপারে তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়। সম্পদগুলো হস্তগত করার জন্য আল্লাহর নবী লোক পাঠান ও একে একে তা হস্তগত করেন। অস্থাবর সম্পদ ও অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করার জন্য তিনি লোক পাঠান ও সেগুলো তিনি তার নিজের কাছে রাখেন। তিনি যা হস্তগত করেন, তার মধ্যে ছিলো একশত বর্ম আবরণ, চার শত তরবারি, এক হাজার বর্শা ও পাঁচ শত ধনুক ও তার তূণী। আল্লাহর নবী কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক-কে আবু আল-হুকায়েকের পরিবারের অর্থ-ভাণ্ডার, তাদের সর্বপ্রকার অলংকার ও উটের চামড়ার থলিতে যা ছিল, সে সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন। এগুলোর ছিলো তাদের আভিজাত্যের পরিচিতি। যখন মক্কায় কোনো বিবাহ উৎসব হতো, তারা তার জন্য তাদের কাছে আবেদন করতো, অতঃপর এই অলংকারগুলো তাদের কাছে এক মাস যাবত রাখার জন্য ধার দেওয়া হতো। এই অলংকারগুলো আবু আল-হুকায়েক-এর পরিবারের এক প্রধান থেকে আরেক প্রধানের কাছে গচ্ছিত থাকতো।

সে জবাবে বলে, "হে আবু আল-কাসেম, আমাদের যুদ্ধের সময় আমরা তা খরচ করে ফেলেছি ও সেগুলোর কোনোকিছুই আর অবশিষ্ট নেই। আমরা এই রকম একটি দিনের লোকসান বাঁচানোর জন্য তা করেছি। যুদ্ধ ও যোদ্ধাদের খোরাক সরবরাহ কিছুই অবশিষ্ট রাখেনি।" তারা এ বিষয়ে শপথ করে, তাদের শপথ নিশ্চিত করে ও তা প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা করে। আল্লাহর নবী তাকে বলেন, "এটি যদি তোমার কাছ থেকে খুঁজে পাত্তয়া যায়, তবে আল্লাহ ও তার নবী তোমার নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করবে।" সে তাতে রাজি হয়।অতঃপর   আল্লাহর নবী বলেন, "তোমার সমস্ত সম্পদ আমি হস্তগত করেছি, তোমার জীবন এখন আমার হাতে ও তোমাকে রক্ষা করার কেউ নেই।” সে বলে, "হ্যাঁ।" অতঃপর আল্লাহর নবী আবু বকর, উমর, আলী ও দশ জন ইহুদিকে এই চুক্তির সাক্ষী রাখেন।

ইহুদিদের মধ্যে থেকে এক লোক কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক-এর কাছে আসে ও বলে, "মুহাম্মদ যার খোঁজ করছে, তা যদি তোমার কাছে থাকে, কিংবা তার হদিস যদি তোমার জানা থাকে, তবে তাকে জানাও; কারণ তাহলে তুমি নিশ্চয়ই তোমার জীবন রক্ষা করতে পারবে। যদি তা না করো, আল্লাহর কসম, সেটি তার দৃষ্টিগোচর হবে। সে অন্যান্য অনেক বিষয়ে জানতে পেরেছে, যা আমরা জানতাম না।" ইবনে আবি আল-হুকায়েক তাকে ধমক দেয় ও ইহুদিটি সরে দাঁড়ায় ও বসে পড়ে।

অতঃপর আল্লাহর নবী থালাবা বিন সাললাম বিন আবি আল-হুকায়েক-কে তাদের এই ধন ভাণ্ডার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন, সে ছিল এক দুর্বল প্রকৃতির লোক। সে জবাবে বলে, "আমি একমাত্র যেটুকু জানি, তা হলো, প্রতিদিন সকালে আমি কিনানা-কে এই ধ্বংসাবশেষগুলোর আশেপাশে যেতে দেখতাম," ও সে সেই ধ্বংসাবশেষ এর দিকে আঙুল দিয়ে দেখায়; "যদি কোনোকিছু থাকেও, তা সে মাটি চাপা দিয়ে রাখে, তা সেখানে আছে।"

যখন আল্লাহর নবী নাটা দখল করেছিলেন, কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক অনুধাবন করেছিলেন যে, ধ্বংস অনিবার্য। নাটার অধিবাসীদের পরাজিত করা হয়েছিল ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে। অতঃপর সে উটের চামড়া নির্মিত থলিতে করে অলংকারাদি নিয়ে ধ্বংসাবশেষের ওখানে গিয়েছিলো ও রাত্রিকালে মাটি খনন করে তা লুকিয়ে রেখেছিলো, যা কেউই দেখেনি। অতঃপর সে আল-কাতিবার ধুলাবালি দিয়ে তা মাটি সমান করে রেখেছিলো। এই ধ্বংসাবশেষগুলো সেই, প্রতিদিন সকালে যার চারপাশে থালাবা তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছিলো।

আল্লাহর নবী আল-যুবায়ের বিন আল-আওয়াম ও একদল মুসলমান কে থালাবার সঙ্গে ঐ ধ্বংসাবশেষের উদ্দেশ্যে পাঠান। যে স্থানটি থালাবা দেখায়, সে সেখানে খনন করে তার মধ্য থেকে সেই ধনভাণ্ডার টেনে তোলেন। কিছু লোকে বলে: প্রকৃতপক্ষে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার নবীকে এই ধনভাণ্ডার প্রদর্শন করে। ধনভাণ্ডারটি বাইরে নিয়ে আসার পর, আল্লাহর নবী কিনানা-কে নির্যাতন করার জন্য আল-যুবায়েরকে হুকুম করেন, যতক্ষণে না সে তার কাছে যা কিছু আছে. তার সবকিছুর সন্ধান না জানায়। আল-যুবায়ের তাকে নির্যাতন করে: সে এক জ্বলন্ত কাষ্ঠখণ্ড নিয়ে তার কাছে এগিয়ে আসে ও তা তার বুকে বিদ্ধ করে। তারপর আল্লাহর নবী হুকুম করেন যে, সে যেন তাকে মুহাম্মদ বিন মাসলামার কাছে হস্তান্তর করে, যাতে সে তার ভাইয়ের হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে হত্যা করে; মুহাম্মদ বিন মাসলামা তাকে হত্যা করে। তিনি হুকুম করেন যে অপর ইবনে আবি আল-হুকায়েক কে (কিনানার ভাই) ও যেন নির্যাতন করা হয় ও অতঃপর তাকে বিশর বিন আল-বারার কাছে হস্তান্তর করা হয়, যাতে সে তাকে হত্যা করতে পারে। কিছু লোক বলে যে, সে তার কল্লা কেটে ফেটেছিল। তারপর আল্লাহর নবী অনুভব করেন যে, তাদের সম্পদের ওপর তাঁর অধিকার আছে, তিনি তাদের সন্তানদের বন্দী করেন।---' 

- অনুবাদ, টাইটেল, [**] ও নম্বর যোগ - লেখক।

>>> আদি উৎসে আল-ওয়াকিদি, মুহাম্মদ ইবনে ইশাক  ও আল-তাবারীর ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা খায়বারের ইহুদিদের পরাস্ত ও বন্দী করার পর তাঁদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তগত করেন। আল-কাতিবা দখল করার পর  অনন্যোপায় খায়বার জনপদবাসীদের পক্ষে কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক নামের এক লোক মুহাম্মদের কাছে তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। মুহাম্মদ তাঁর সাথে এই চুক্তিতে রাজি হন যে, যদি তাঁরা তাঁকে তাদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করে, তবে তিনি তাদেরকে হত্যা না করে তাঁদের সন্তানদের নিয়ে খায়বার ও তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে বিতাড়িত হওয়ার সুযোগ দেবেন। খায়বারের জনগণের পক্ষে কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক মুহাম্মদের এই প্রস্তাবে রাজি হন। অতঃপর মুহাম্মদ কিনানা-কে তাঁর পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার তাঁর কাছে হস্তান্তর করার আদেশ করেন। পরিবারের এই সঞ্চিত ধনভাণ্ডার রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন কিনানা। প্রত্যুত্তরে কিনানা মুহাম্মদকে জানায় যে, সেই ধনভাণ্ডারের কোনোকিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই, সবকিছু খরচ হয়ে গিয়েছে - যা ছিলো মিথ্যা। সত্য হলো, পরাজয় নিশ্চিত জেনে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা আল-কাতিবা আক্রমণ করার আগেই কিনানা তাঁদের পরিবারের এই ধনভাণ্ডারটি একটি ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিলেন ও প্রতিদিন সকালে তিনি এর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেন। থালাবা বিন সাললাম নামের কিনানার পরিবারেরই এক লোক সেই স্থানে কিনানার এই ঘোরাঘুরির বিষয়টি দেখে ফেলেছিলেন। পরবর্তীতে থাালাবার সাহায্যে মুহাম্মদ এই গুপ্তধনটির সাক্ষাৎ পান ও তা হস্তগত করেন এবং এই অপরাধ ও কিনানার কাছ থেকে আরও তথ্য আদায় করার জন্য মুহাম্মদের আদেশে তাঁর অনুসারীরা এই লোকটি ও তাঁর ভাইকে অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যা করেন। আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যা সুস্পষ্ট, তা হলো, কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক নামের এই লোকটির অপরাধ ছিলো এই যে, তিনি তার পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার মুহাম্মদের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন।

কে এই কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক?

কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক ছিলেন মদিনায় অবস্থিত বনি নাদির গোত্রের এক নেতা, যাদেরকে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের শত শত বছরের আবাসভূমি থেকে প্রায় একবস্ত্রে বিতাড়িত করেছিলেন। কী অপরাধে মুহাম্মদ এই গোত্রের সমস্ত মানুষকে মদিনা থেকে বহিষ্কার করেছিলেন, তার বিস্তারিত আলোচনা “বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদ: শেষদৃশ্য!” (পর্ব: ৭৫) পর্বে করা হয়েছে। মুহাম্মদের এই নৃশংসতার বৈধতা প্রদানে ইসলাম বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা যে অজুহাতসচরাচর হাজির করেন তা হলো,

১) কিনানা মিথ্যা বলেছিলেন
২) সে মুহাম্মদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে সেই চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন।

What a Joke!

>> অতর্কিত আক্রমণে এক বিস্তীর্ণ জনপদের লোকদের অমানুষিক নৃশংসতায় খুন, জখম ও বন্দী করে তাদের সমস্ত সম্পত্তি হস্তগত করছে একদল সন্ত্রাসী! তাঁদের স্ত্রী-কন্যা-মা-ভগ্নীদের বন্দী করে তাঁদেরকে রূপান্তরিত করছে যৌনদাসীরূপে। তাঁদেরকে পরাস্ত ও পর্যুদস্ত করার পর তাঁদেরকে বাধ্য করছে চুক্তি স্বাক্ষর করতে। এই অনন্যোপায় জনগোষ্ঠী জীবন বাঁচানোর তাগিদে করেছে এক চুক্তি। এমতাবস্থায় তাঁদের একজন তাঁদের নিজস্ব পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার এই ডাকাত সর্দারের কাছ থেকে রক্ষার প্রাণান্তকর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নির্যাতিত ও খুন হয়েছেন অমানুষিক নৃশংসতায়। এই পরিস্থিতিতে ডাকাত সর্দারের সেই অমানুষিক নৃশংসতার বৈধতার অজুহাত:

"কেন সেই লোকটি তথ্য গোপন করে ঐ ডাকাত সর্দারের কাছে থেকে তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করতে চেয়েছিলেন!"

আগেই বলেছি, যে সমস্ত ইসলাম অনুসারী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত বিভিন্ন অজুহাতে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের অমানবিক ও অমানুষিক নৃশংস বর্বরতার সপক্ষে নির্লজ্জ গলাবাজি করে চলেছেন, তাদের ও তাদের পরিবারকেও যদি অন্য কোন তথাকথিত কামেল-পীর-ফকির-গুরু-বাবাজী ও তার চেলা-চামুন্ডেরা একইরূপ অজুহাতে একইভাবে খুন ও দাস-দাসীতে রূপান্তর করে ভাগাভাগি করে নেন, তাহলেই, বোধ করি, তারা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারবেন (পর্ব: ৫২)

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে আল-ওয়াকিদির মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। ইবনে ইশাকের মূল ইংরেজি অনুবাদ ইন্টারনেটে বিনামূল্যে ডাউনলোড লিঙ্ক: তথ্যসূত্র [2]

The detailed narrative of Al-Waqidi (continued): [1] [2] [3]

‘Kinana sent a man from the Jews named Shammakh to the Prophet saying, “May I come to you and speak with you?” When Shammakh arrived, the Muslims brought him to the Prophet and he greeted him and he informed him of the Message of Kinana, and he was gracious to him. Kinana arrived with a group of Jews and made a peace with the Prophet in accordance with his agreement, and contracted with him according to his terms. Ibrahim said that the bow and weapons belonged to the family of Abu Al-Huqayq and they hired them out to the Arabs. Their Jewelry was also hired out to the Arabs. They were the most evil of the Jews of Yathrib. -----      

Ibne Abi Al-Huaqayq came down and made an agreement with the Messenger of God, that he spare the blood of the soldiers who were in the fortress and leave their children from them. They set out from Khaybar and its land, with their children, and they relinquished all they possessed of property or land to the Messenger of God such as gold, silver, quivers, weapons, and cloth, except for the garments worn by the people. The Messenger of God said: The protection of God and His messenger is relinquished from you if you conceal anything from me. And Ibn Abi al-Huqayq agreed with him about that. The Messenger of God sent for the wealth and took it one by one. He sent for the chattels and the weapons and he kept them, and he found among the coats of mail a hundred coats, four hundred swords, a thousand spears, and five hundred bows with their quivers.

The Messenger of God asked KInana b. Abi Al-Huqayq about the treasure of the family of Abu al-Huqayq, and the jewelry from their Jewelry, and what there was of the skin of the camel. Their nobility was known by it. When there was a wedding in Mecca they would approach them; and the Jewelry would be loaned to them for a month when it would be with them. The Jewelry was with the one lord after the other from the family of Abu al-Huqayq.

He replied, “O Abu al-Qasim, we spent it during our war and there does not remain anything from it. We saved it for such a day as this. The war and provisions for the warriors left nothing behind.” They took an oath about that, and they affirmed their oath, and they strove. The Messenger of God said to him, “The protection of God and His prophet will be denied you if it is discovered with you.” And he agreed. Then the Messenger of God said, “All that I took from your property and your blood is released to me, and there will be no protection for you!” He said, “Yes.” Then the Messenger of God asked Abu Bakr, Umar, Ali and ten Jews to witness the agreement.

A man from the Jews went to Kinana b. Abi al-Huqayq and said, “If you have what Muhammad is seeking from you or you know of it, inform him, for surely you will protect your blood. If not, by God, it will appear to him. He has come to know about other things we did not know.” Ibn Abi al-Huqayq scolded him, and the Jew stepped aside and sat down. Then the Messenger of God asked Thalaba b Sallam b Abi al-Huqayq, who was a weak man, about their treasure. He replied, “I only know that I used to see Kinana, every morning, go around these ruins,” and he pointed to the ruins, “if there was something and he buried it, it is in there.” Kinana b Abi al-Huqayq had, when the Messenger of God was successful over Nata, ascertained the destruction. The people of Nata were taken by fear, and he went with the skin of the camel containing their Jewelry, and he dug for it in the ruins by night and no one saw him. Then he leveled it with the dust of al-Katiba. These were the ruins that Thalaba saw him go around every morning.

The prophet sent al-Zubayr b. al-Awwam and a group of Muslims with Thalaba to those ruins. He dug where Thalaba showed him, and he pulled out from it that treasure. Some say: Indeed, God most high showed His messenger that treasure. When the treasure was taken out, the Messenger of God commanded al-Zubayr to hurt Kinana b Abi al-Huqayq until he revealed all that he had with him. Al-Zubayr hurt him: he came to him with a firebrand and pierced him in his chest. Then the Messenger of God commanded that he hand him to Muhammad b Maslama to kill him for his brother, and Muhammad b Maslama killed him. He commanded that the other Ibn Abi al-Huqayq (the brother of Kinana) also be tortured and then handed over to the care of Bishr b al-Bara to be killed by him. Some say that he cut of his head. After that the Messenger of God felt he had the right to their property and imprisoned their children.’---

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1]“কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬৭০-৬৭৩; ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩৩০-৩৩১

[2] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫১৫

[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮,ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৮২-১৫৮৩

আমাদের আত্মীয়েরা – ৯৯

আমরা বানরেরই বংশধর, হাওয়ার পোলা নই।


ইছলাম ত্যাগের কারণসমূহ - ৪১

ব্রিটেনের কাউন্সিল অভ এক্স-মুসলিম নামের সংগঠনের উদ্যোগে #ExMuslimBecause নামে টুইটারে একটি প্রচারণা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রাক্তন মুছলিমরা উপস্থাপন করছে ইছলাম ত্যাগের বিবিধ কারণ। অতি দীর্ঘ ও ক্রমবর্ধমান এই কারণ-তালিকা থেকে কিছু সরস ও সিরিয়াস কারণ অনুবাদ করে প্রকাশ করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। এতে যুক্ত করা হচ্ছে/হবে ধর্মকারীর ঠিকানায় পাঠানো লেখা/ছবি/ভিডিওও।

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ > পর্ব ৪০

Ahmed Shoueiry: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ লিঙ্গভিত্তিক পৃথকীকরণ (sex segregation) ব্যাপারটা অপ্রাকৃতিক ও অস্বাস্থ্যকর। এর ফলে পুরুষেরা তাদের কৌমার্য হারায় যৌনকর্মীদের কাছে, আর নারীরা তাদের সতিচ্ছদ পর্দা অটুট রাখতে আশ্রয় নেয় পায়ুকামের।

Soulaymane Elmiri: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ রমজান মাসে যখনই আমি খেতে বের হই, আমার জীবন পড়ে বিপদের ঝুঁকিতে। এছাড়া আমার ছয় মাসের জেল ও জরিমানাও হতে পারে।

AgnosticAlias: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ কোরান-ভর্তি অসঙ্গতি আর যৌনবৈষম্য, তবু এটা নাকি "নিখুঁত কিতাব"! যতো দ্রুত সম্ভব কোরানের হালনাগাদ করুন।

Rehana Harrison: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমাকে সব সময় আতঙ্কের ভেতরে বাস করতে হতো - না জানি কখন নিজের অজান্তে গুনাহ্ করে ফেলি!

Arsheen Rabbani: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমার প্রয়োজন নেই ১৫০০ বছরের পুরনো এক কিতাবের (যেটার প্রামাণ্য সম্পর্কে আমি রীতিমতো সন্দিহান), যেটা আমাকে বলে দেবে - গান শোনা আমার উচিত কি না।

Siguchi: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ অগণিত বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তি!

Sarah imanuel: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে বলে আল্লাহকে এবং তার পরে মুছলিম উম্মাহকে। এভাবে মর্যাদাহানি করা হয় বাকি মানবজাতির।

F. Jeffery (F.J.): আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম দাসপ্রথা বিলোপ করেনি। কাফেররা করেছে। বেশ কয়েকটি মুছলিমপ্রধান দেশে আজও দাসপ্রথার প্রচলন আছে।

Ahmed Shoueiry: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম সৃজনশীলতার বিরোধী। যে এ কথা মানে না, তাকে দমন (হত্যা/পঙ্গু/কুপিয়ে আহত) করা হবে।

Reda Alouani: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ এমন কোনও উড়ন্ত ঘোড়া নেই, যা পৃথিবীর বাইরে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে এবং উড়তে পারে আলোর চেয়ে দ্রুততর গতিতে।

মুছলিমদের সুখ-অসুখ

পূর্ণাকারে দেখতে ছবির ওপরে ক্লিক করতে হবে

শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছর (পর্ব ১৩)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ


{নবী মুহাম্মদ চরিত্রের অন্ধকার দিক হচ্ছে, তিনি সমালোচনা মেনে নিতে পারতেন না; মক্কার কুরাইশগন যখন তাকে পাগল/কবি/পুরাণ-কথক/গণক/জাদুকর বলে সমালোচনা করতে থাকলো; একই সাথে মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, শেষ-বিচার/দোযখ/বেহেস্ত আর আল্লাহর একত্বের ধারণাকে উপহাস করেতে থাকলো; মুহাম্মদ এবং তার অবচেতনের আল্লাহ-জ্রিবাইলও ক্রমশ ক্ষেপে উঠলো; শুরু হলো কুরাইশদের সমালোচনা, উপহাস, শাস্তি প্রদানের আয়াত প্রকাশ; আর নবাগত মুসলিমদের উৎসাহিত করার জন্য মদ/নারী/দাসীর লোভ তো থাকছেই; একটু সচেতনভাবে আজকের পর্বের ৬ টি প্রকাশ পড়লে বুঝতে বাকি থাকে না, কীভাবে মুহাম্মদের আল্লাহ আর জ্রিবাইল মহাবিশ্বের অসীম চিন্তা বাদ দিয়ে মক্কার গুটিকয়েক (১৫০০-২০০০) মানুষের কথায় পুতুল নাচের বাঘের মত ক্ষেপে উঠতো!

একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, মুহাম্মদ যখন মানসিকভাবে বেশি চাপে থাকতেন, তখন সূরায় আয়াতের সংখ্যা লম্বা হয়ে যেত; আর ক্রমশ ভয় ও লোভ প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ত! আমি একটি হিসাব করে দেখেছি, তিন-চার মাস পর পর মুহাম্মদ হঠাৎ হঠাৎ ক্ষেপে উঠতেন, এবং মনের সকল রাগ-ক্ষোভ লম্বা সূরায় প্রকাশ করতেন! আগামী পর্বে তার নমুনা আবার দেখা যাবে!

এই পর্বের ৬ টি প্রকাশে একটি বিষয় হয়ত পাঠকের চোখে পড়বে - মুহাম্মদ তার নারী সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির সমসাময়িক অবস্থার কিছুটা প্রকাশ করেছেন; আজ এটুকুই থাক, আরবের নারী নিয়ে আগামী পর্বে আরও জেনে নেওয়া যাবে! চলুন, আপনাকে আজ মক্কার পতিতালয় থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি! 

মক্কা, সহজ কথায় একাধিক দেশের বাণিজ্য-যাত্রার মধ্যপথের সরাইখানা, বেদুঈন আর আরব গোত্রের বিনোদন আর মূর্তিপূজার কেন্দ্র। মোটামুটি ৪ ধরনের পতিতালয় ছিল মক্কায়, (ক) বাড়ির সামনে সাদা পতাকা ওড়ানো গণ-পতিতালয়, (খ) স্বাধীন নারী নিজ বাসায় শরীর বিক্রি করতেন, (গ) কোনো কোনো কুরাইশ তাদের দাসীদের দিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময় পতিতাবৃত্তি করাতেন, (ঘ) সামান্য কিছু কুরাইশ তার একাধিক স্ত্রী কতৃক দেহব্যবসা করাতেন!

বিস্তারিত ক্রমশ প্রকাশ্য। শুধু একটা প্রশ্ন রেখে যাই, যেহেতু হিজাজের (মক্কা, মদিনা, তায়েফ) কোনো সরকার ব্যবস্থা ছিলো না, তবে তাদের কোনো মুদ্রা থাকারও কথা নয়; তাহলে হিজাজের জনগণ, ইথিওপিয়া, ইয়েমেন, তায়েফ, মক্কা, ইয়াসরিব, সিরিয়া, মিশর এবং ইরানে কেনাকাটা করতো কী দিয়ে? আর মক্কার পতিতালয়ে শরীর ক্রয়-বিক্রয় হত কি ঘোড়ার ডিম দিয়ে! ভাবতে থাকুন, উত্তর পেলে জানাতে পারেন; না পেলে অপেক্ষা করতে থাকুন।

কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ১৩ তম পর্ব; এই পর্বে থাকছে মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছরের ৬ষ্ঠ ছয় অংশঅনুবাদের ভাষা একাধিক বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৪ তম প্রকাশ; সূরা আল ইনফিতার (৮২) (বিদীর্ণ করা) ৬ থেকে ১৯ আয়াত:

৬. হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?
৭. যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুঠাম করেছেন এবং অতঃপর সুবিন্যস্ত করেছেন,
৮. যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন।
৯. না, কখনই না, তোমরা তো শেষ বিচারকে অস্বীকার করে থাকো;
১০. অবশ্যই তোমাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে।
১১. সম্মানিত লেখকগণ (যারা লিপিবদ্ধ করছে তোমাদের কার্যকলাপ),
১২. তারা জানে তোমরা যা-কিছু কর।
১৩. সৎকর্মশীলগণ থাকবে জান্নাতে।
১৪. এবং দুষ্কর্মকারীরা থাকবে জাহান্নামে;
১৫. তারা এতে প্রবেশ করবে বিচারের দিনে 
১৬. আর তারা সেখান থেকে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না।
১৭. তুমি জানো, বিচার দিবস কী?
১৮. আবার বলি: কর্মফল দিন কি তা কি তুমি অবগত আছ?
১৯. সেদিন কোনো মানুষ অন্য মানুষের জন্য কোনোকিছুর ক্ষমতা রাখবে না। আর সেদিন সকল বিষয় হবে আল্লাহর কর্তৃত্বে।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৫ তম প্রকাশ; সূরা আল হাক্কাহ (৬৯) (নিশ্চিত সত্য) ৩৮ থেকে ৫২ আয়াত:

৩৮. আমি কসম করছি সে সব জিনিসের, যা তোমরা দেখতে পাও,
৩৯. এবং যা তোমরা দেখতে পাও না
৪০. নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের বাহিত বার্তা।
৪১. এটা কোনো কবির রচনা নয়; তোমরা অল্পই বিশ্বাস কর।
৪২. এটা কোনো গণকের কথাও নয়, তোমরা কমই অনুধাবন কর।
৪৩. এটা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের নিকট থেকে অবতীর্ণ,
৪৪. সে যদি আমার নামে কিছু রচনা করে চালাতে চেষ্টা করত
৪৫. আমি অবশ্যই তার ডান হাত ধরে ফেলতাম।
৪৬. তারপর নিশ্চয়ই তার কন্ঠশিরা কেটে ফেলতাম,
৪৭. অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউই তাকে রক্ষা করার থাকত না।
৪৮. এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।
৪৯. আমি অবশ্যই জানি যে, তোমাদের মধ্যে মিথ্যা আরোপকারী রয়েছে।
৫০. আর এটি নিশ্চয় কাফিরদের জন্য এক নিশ্চিত অনুশোচনার কারণ।
৫১. নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।
৫২. অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৬ তম প্রকাশ; সূরা আল মাআরিজ (৭০) (উন্নয়নের সোপান), ১৯ থেকে ৩৫ আয়াত:

১৯. মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থিরমনা করে,
২০. যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন সে হয়ে পড়ে অতিমাত্রায় উৎকন্ঠিত।
২১. আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে, তখন সে হয় অতি কৃপণ।
২২. তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায়কারী।
২৩. যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে।
২৪. আর যাদের সম্পদের নির্ধারিত হক রয়েছে
২৫. প্রার্থী ও বঞ্চিতের।
২৬. এবং যারা কর্মফল দিনকে সত্য বলে জানে।
২৭. আর যারা তাদের রবের শাস্তি সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত,
২৮. নিশ্চয় তাদের পালনকর্তার শাস্তি থেকে নিঃশঙ্ক থাকা যায় না।
২৯. এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।
৩০. তাদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্র ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না
৩১. অতএব, যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে, তারাই সীমালংঘনকারী।
৩২. এবং যারা আমানাত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।
৩৩. আর যারা তাদের সাক্ষ্যদানে অটল,
৩৪. এবং যারা তাদের নামাযে যত্নবান,
৩৫. তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৭ তম প্রকাশ; সূরা আদ-দোখান (৪৪) (ধোঁয়া), ৪৩ থেকে ৫৯ আয়াত:

৪৩. নিশ্চয়ই যাক্কুম বৃক্ষ হবে
৪৪. পাপীর খাদ্য।
৪৫. গলিত তামার মত পেটে ফুটতে থাকবে।
৪৬. যেমন ফোটে পানি।
৪৭. একে ধর এবং টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে,
৪৮. অতঃপর তার মাথার ওপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দিয়ে শাস্তি দাও।
৪৯. এবং বলা হবে: আস্বাদন কর, তুমিতো ছিলে সম্মানিত, অভিজাত।
৫০. এটা তো ওটাই, যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করতে।
৫১. নিশ্চয় খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে
৫২. বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাধারার মধ্যে,
৫৩. তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং তারা মুখোমুখী হয়ে বসবে।
৫৪. এরূপই ঘটবে; তাদেরকে সঙ্গিনী দেব আয়তলোচনা হুর।
৫৫. তারা সেখানে শান্ত মনে বিভিন্ন ফল-মূল আনতে বলবে।
৫৬. প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন
৫৭. তোমার রাব্ব নিজ অনুগ্রহে। এটাই তো মহা সাফল্য।
৫৮. আমি তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
৫৯. অতএব তুমি অপেক্ষা কর, তারাও অপেক্ষাকারী।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৮ তম প্রকাশ; সূরা আল মু'মিনূন (২৩) (মুমিনগণ), ১ থেকে ১১ আয়াত:

১. অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ
২. যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;
৩. আর যারা অনর্থক কথাকর্ম থেকে বিমুখ।
৪. আর যারা যাকাতের ক্ষেত্রে সক্রিয়।
৫. এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।
৬. তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।
৭. সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমালংঘনকারী,
৮. এবং যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে
৯. আর যারা নিজেদের নামাযের ব্যাপারে যত্নবান।
১০. তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে।
১১. তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫৯ তম প্রকাশ; সূরা ছোয়াদ (৩৮) (আরবি বর্ণ), ৬৭ থেকে ৮৮ আয়াত:

৬৭. বল: এটা এক মহা সংবাদ
৬৮. যা হতে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ।
৬৯. ঊর্ধ্ব জগৎ সম্পর্কে আমার কোনো জ্ঞান ছিল না, যখন ফেরেশতারা কথাবার্তা বলছিল।
৭০. আমার নিকট তো এই অহী এসেছে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।
৭১. স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেন - আমি কাদা থেকে মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।
৭২. যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সম্মুখে সেজদায় নত হয়ে যেয়ো।
৭৩. ফলে ফেরেশতাগণ সকলেই সিজদাবনত হল।
৭৪. কিন্তু ইবলিস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
৭৫. আল্লাহ বললেন, ‘হে ইবলিস, আমার দু'হাতে আমি যাকে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে কিসে তোমাকে বাধা দিল? তুমি কি অহঙ্কার করলে, না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন?
৭৬. সে বলল: আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে।
৭৭. তিনি বললেন, ‘তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। কেননা নিশ্চয় তুমি বিতাড়িত।
৭৮. তোর প্রতি আমার এ অভিশাপ বিচার দিবস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
৭৯. সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে সে দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন, যেদিন তারা পুনরুত্থিত হবে।’
৮০. তিনি বললেন - তোমাকে সময় দেয়া হল,
৮১. অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।
৮২. সে বলল: আপনার ক্ষমতার শপথ! আমি তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করব।
৮৩. তবে তাদের মধ্যে যারা আপনার খাঁটি বান্দা, তাদেরকে ছাড়া।
৮৪. তিনি বললেন: তবে এটাই সত্য, আর আমি সত্যই বলি
৮৫. তোর দ্বারা ও তোর অনুসারীদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করবই।
৮৬. বল: আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবি করে, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই।
৮৭. এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র।
৮৮. এর সংবাদ তোমরা অবশ্যই জানবে, কিছুকাল পরে।

আয়াত প্রকাশের মনোজগত: আমরা মুহাম্মদের নারী সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির আলোচনা শুরু করেছি, হয়ত আগামী দুই পর্বে এই বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আমরাও বিষয় পরিবর্তন করবো না, যতক্ষণ নবী মুহাম্মদের নারী বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হয়; আমরা খুঁজে দেখবো, সত্যিই কি আরবে কোনো নারী স্বাধীনতা ছিল না? কেমন ছিল মক্কা, মদিনা, তাইফ এবং বেদুঈন নারীরা? আর সত্যিই কি জীবন্ত কন্যাসন্তান কবর দেবার প্রথা ছিল তৎকালীন মক্কায়? শুধু এতটুকু বলে শেষ করি আজ: এ বিষয়ে আপনার সকল জ্ঞান ধাক্কা খেতে বাধ্য; যেমন করে মুহাম্মদের নারী দৃষ্টিভঙ্গি চরম ধাক্কা খাবে দ্রুতই!

(চলবে)

আকালের কালে

জান্নাত ও জাহান্নাম: একটি হিসেব

লিখেছেন কেপলার টুটুবি

জান্নাত আর জাহান্নাম লাভের একটা ক্যালকুলেশন করি, চলুন। হিসাব মেলাই।

স্টেপ১:

বর্তমান পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৭০০ কোটি। এর মধ্যে মুসলিম আছে ২৩% অর্থাৎ ১৬০কোটি; আর বাকি ধর্মাবলম্বী মানুষ আছে ৭৭% অর্থাৎ ৫৪০ কোটি মানুষ। আল্লার কথা মতো - এখান থেকে জান্নাতে যাবে ১৬০ কোটি মানুষ। বাকি ৭৭% মানুষ জাহান্নামে।

স্টেপ ২:

১৬০ কোটি মুসলিমের মধ্যে নামেমাত্র মুসলিম (সুদখোর, ঘুষখোর, টিভি-সিনেমা-নাচ-গান-বাজনামগ্ন , চোর, প্রতারক, বিধর্মী চাল চলনে অভ্যস্ত) আছে ৯০% অর্থাৎ ১৪৪কোটি। আর সহিহ মুমিন নামাযী, আল্লার খাস বান্দা পাওয়া যাবে মাত্র ১০% মানে ১৬ কোটি। শুধু এরাই জান্নাতে যাবে। 

স্টেপ ৩:

এখন আসি এই ১৬ কোটি সহিহ মুমিন মুসলিমদের নিয়ে, যাদের মধ্য আবার গ্রুপিং আছে। ১. শিয়া মুসলিম, ২. সুন্নী মুসলিম, ৩. ওহাবি বা মওদুদি মুসলিম। এরা সবাই একে অপরকে গালাগাল দেয়। যেমন - শিয়ারা বলে, সুন্নীরা হইলো বেদাতী, মাজার পূজারী, মুশরিক। সুন্নীরা বলে, শিয়া আর ওহাবিদের আকীদা (মানে গোড়াতেই) ভুল। এরা জান্নাত পাবে না। ওহাবীরা আরো ইন্টারেস্টিং। ওরা বলে, আমরাই একমাত্র আল্লাভক্ত। নবী-টবী কিছু না। অনলি আল্লাহ। তোরা জাহান্নামী।

এই তিন গ্রুপেই আছে নবী নিয়ে টানাটানি। এরপর মারামারি, বোমা ফাটানো, শিয়ার মুসজিদ সুন্নিরা উড়ায় দেয়। সুন্নীরা ওহাবিদের। হা হা হা। আবার এরদে ভেতরেও ছোট ছোট গ্রুপিং আছে, যা বর্ণনা করতে গেলে উপন্যাস লিখতে হবে। তাই বাদ দিলাম। 

এখন এদের মধ্যে যে কোনো এক গ্রুপকে আমি সহিহ ধরে নিলাম, যাদের আকিদা সঠিক। যারা আল্লারে খুশি করবে। যারা জান্নাতে যাবে। তাইলে ১৬ কোটিকে তিনভাগ দিলে হয় ৫ কোটি ৩০ লাখ।

স্টেপ ৪:

এবার আসি ৫ কোটি ৩০ লাখদের নিয়ে। এরা সহিহ মুসলিম হলেও এদের মধ্যেও রয়েছে কিছু সমস্যা। যেমন, জীবনে ১ ওয়াক্ত নামায কাযা কেউ করেনি, এরকম কেউ বলতে পারবে না। আর ১ ওয়াক্ত নামায কাযা করার শাস্তি হলো ২ হাজার কোটি বছর জাহান্নামের আগুনে পোড়া। আরো আছে। যেমন: নামায ভুল, আযান না শোনা, মিথ্যা বলা, হারাম জিনিস খেয়ে ফেলা, কবিরা গুনা (যে গুনা ক্ষমা করা হয় নাহ) করে ফেলা ইত্যাদি ইত্যাদি। 

অর্থাৎ সহিহ মুসলিম হলেও এদের মধ্যে থেকে সবাই জান্নাতে যাবে না। ফিল্টার হয়ে এদের থেকে জান্নাতে যাবে ৫ কোটি ৩০ লাখের ১% মানে ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।

সুতরাং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মধ্যে জান্নাতে যাচ্ছে মাত্র ০.০০৭% অর্থাৎ ৫ লক্ষ ৩০ হাজার জন। আর জাহান্নামে যাবে ৯৯.৯৯৩% অর্থাৎ ৬৯৯ কোটি ৯৪ লক্ষ মানুষ। 

আমার মন্তব্য: আল্লাহ পরম করুণাময় আর অসীম দয়ালু, যিনি পৃথিবীর ৯৯% মানুষকে জাহান্নামে ফেলে ভাজি করবেন অনন্তকাল ধরে।