আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

যৌবন বিগত, ধর্ম আগত

লিখেছেন উজান কৌরাগ


না-জায়েজ ছবিটাতে সংগীতশিল্পী তিমির নন্দীর পাশে নজরুলসঙ্গীত শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা; আধুনিক সহি মুসলিম নারী! বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি সহি লাইনে আছেন। আজকাল দেখি আবার নতুন ভেক ধরেছেন মাথায় হিজাব (এটাকে কী বলে?) বেঁধে। ইনিয়ে-বিনিয়ে এমনভাবে কথা বলেন, মনে হয় যেন মাত্রই আল্লাহ্'র সাথে সাক্ষাৎ করে এলেন। অথচ তিনি গান করেন, যা ইসলামে হারাম; ভ্রু প্লাক করেছেন, যা ইসলামে হারাম; মুখে রঙ মেখেছেন, যা ইসলামে হারাম; মুখ বের করে রেখেছেন, যা ইসলামে হারাম; পরপুরুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যা ইসলামে হারাম; ক্যামেরার সামনে বসে গান গেয়েছেন, দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন, যা ইসলামে হারাম!


এক সময় তিনি এলোচুলে, বাহারি সাজে ক্যামেরার সামনে কিংবা খোলা মঞ্চে গান পরিবেশন করেছেন। তখন গান শোনার পাশাপাশি মানুষ তার শারীরিক সৌন্দর্যও অবলোকন করেছে, কিন্তু তখন তিনি মাথায় হিজাব পরেননি। তখন তাঁর যৌবন ছিল, পুরুষেরা তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হলে সেই বয়সেই হওয়ার কথা; এখন তার যৌবন বিগত, এই বয়সের নারীদেরকে অতি বৃদ্ধরাও বোধহয় খুব কমই কামনা করে, তরুণেরাও শ্রদ্ধা করে; অথচ এখনই তিনি সহি ভেক ধারণ করেছেন। যৌবনে শারীরিক সৌন্দর্য দেখিয়ে, রঙিন লাইটের সামনে কালো চুলের রোশনাই ছড়িয়ে হাজারো পুরুষের সামনে দুলে দুলে গান গেয়ে টাকা কামিয়েছেন, আরাম-আয়েসে বিলাসী জীবন-যাপন করেছেন; আর এখন পড়তি সৌন্দর্য, পক্ককেশ ঢেকে সহি মুসলমানিত্ব জাহির করছেন! একটা পোশাক পরা মানুষের ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার; কে কী পরবে না পরবে তা অন্য কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। কিন্তু বেশভূষার কিছু কিছু পরিবর্তন মানুষের ভেতরের ভণ্ডামিকে প্রকট করে তোলে; তখন আর কিছু না বলে মুখ বুজে থাকা যায় না। বাংলাদেশে অধিকংশ মানুষের মধ্যেই এটা একটা কমন ব্যাপার যে, যৌবনে যারা খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি, যথেচ্ছ যৌনাচার-ব্যভিচার, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, অসৎ পথে টাকা রোজগার ইত্যাদি করেছেন, একটা বয়সের পরে এরাই আবার পরম ধার্মিক সেজে ধর্মেকর্মে মন দিয়েছেন বা ধর্মরক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। 

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এখন ফাতেমাতুজ জোহরা স্টাইলটাই চলছে, চলছে নিজেকে সহি মুসলমান প্রমাণের তুমুল প্রচেষ্টা; কি ছেল কি মেয়ে, যৌবন ফুরোলে সবাই সহি মুসলমান! আজকাল শুটিং ইউনিট, থিয়েটার, সঙ্গীত সংগঠন, আবৃত্তি দল ইত্যাদি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোতে রোজার মাসে কাজ বাদ দিয়ে ইফতার এবং ঘটা করে ইফতার পার্টির হিড়িক পড়ে যায়, যেটা বিশ বছর আগেও এতোটা প্রকট ছিল না। যে নায়িকা কোমর দুলিয়ে, পরপুরুষের বক্ষে পেষিত হয়ে নাচানাচি করে, কিন্তু দিন শেষে সেও ফেইসবুকে পোস্ট দেয় -'ইসলাম শান্তির ধর্ম। নামাজ পড়ুন, রোজা রাখুন।' এইসব ভণ্ড চরিত্রে আজ ভীষণ ভারী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের বুক। 

ভণ্ড ফাতেমাতুজ জোহরার মধ্যে আমি পুরো বাংলাদেশটাকে দেখতে পাই! একাত্তরে জন্ম নেওয়া একটি স্বাধীন-সুন্দর-সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশ মাত্র কয়েক দশকের মধ্যে ধর্মীয় কলুষতা, সাম্প্রদায়িকতা, হিংস্রতার বিষবাষ্পে পতিত হতে হতে মহাপতনের দিকে ধাবিত হয়েছে। অবাক হবো না, যদি দু'দশক পরে দেখি নারীরা হিজাব পরে সিনেমা করছে, গান গাইছে, আবৃত্তি করছে, মঞ্চে অভিনয় করছে। ভণ্ডামির চূড়ান্ত মঞ্চের দিকে আমরা ধাবিত হচ্ছি। তবে এই ভণ্ডামিও খুব বেশি বছর দীর্ঘায়িত হবে না, কারণ একটা পর্যায়ে হিজাব কেন, বোরখা পরেও নাচতে-গাইতে-অভিনয় করতে দেবে না; গৃহবন্দী হওয়াই এদেশের নারীদের ভবিতব্য। তবু আমাদের বলতেই হবে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। আরো শান্তি আসছে, সুদিন আসছে...

* যৌথ ছবিটা তিমির নন্দীর ফেইসবুক ওয়াল থেকে এবং অন্যগুলো গুগল থেকে সংগৃহীত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন