আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

জনৈক উন্মাদ রবীন্দ্রনাথের কাহিনী

লিখেছেন আক্কাস আলী

নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ একদা কারওয়ান বাজারের চিপা গলিতে পায়চারী করিতেছিলেন আর সকলকে উচ্চস্বরে বলিয়া বেড়াইতেছিলেন যে, “আমি গীতাঞ্জলী রচনা করিয়াছি... উহা অনেক সুন্দর হইছে... উহার প্রতিটি কবিতার ভাষাশৈলী বহুত উন্নতমানের যাহা বলাই বাহুল্য... আমি নোবেল পুরস্কার পাইয়াছি...”

আমি বেশ খানিকটা দূরে দাঁড়াইয়া ব্যাপারখানা লক্ষ্য করিতেছিলাম। কী হইলো আমাদের ঠাকুরদাদার! গীতাঞ্জলীর প্রশংসা তিনি নিজেই করিতেছেন! তাও আবার এই কারওয়ান বাজারের চিপাগলিতে! খটকা লাগিলো... কোথাও একটা গলদ আছে...

হঠাৎ এক তরকারিওয়ালা তাহাকে উদ্দেশ্যে করিয়া চিল্লাইয়া উঠিলো, “ঐ মালু... কী বালের বই লেখছস তুই? আমি বইডা পইড়া দেখছিলাম গত রাইতে, কিছুই ত হয় নাই! তোরে আবার কবি কয় কেডা? আর তোরে পুরস্কার দিছেই বা কুন হালায়?”

তরকারীওয়ালার এইরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা শুনিয়া আমাদের রবিদা কিছুক্ষণ স্তব্ধ হইয়া রহিলেন! কিছুক্ষণ পর তীব্র ক্রোধে বিকট একটা আওয়াজ তুলিলেন... গগণ বিদীর্ণ হইবার উপক্রম! অমনি আশেপাশে লোকজন জমিয়া গেলো। অবশেষে ঠাকুর দাদার মুখ হইতে কথা বাহির হইলো, মূর্খ কুলাঙ্গার তরকারিওয়ালার উদ্দেশে তিনি বলিলেন, “ওহে বৎস... তুমি কি সবদিক ভাবিয়া এইসব কথা বলিলে? তুমি কি জানো, আমি এই জগতের কত বড় কবি? গীতাঞ্জলীর প্রতিটি কবিতায় আমি কীরূপ অসাধারণ কারুকার্য ও ভাষাশৈলী প্রদর্শন করিয়াছি? আর তুমি এইসব অস্বীকার করিতেছো? যাও, যদি পারো, তাহা হইলে গীতাঞ্জলীর মত একটা বই লিখিয়া আনো। অন্তত একটা কবিতা লিখিয়া আনিতে পারিলেও চলিবে... চ্যালেঞ্জ রইলো হে তরকারিওয়ালা, দেখি তুমি কতটুকু পারো... আমি জানি তুমি তাহা পারিবে না, আর না পারিলে আমি তোমার গর্দান নিবো। আর হ্যাঁ, তোমার কবিতা কীরূপ হইয়াছে, তাহা আমি নিজেই রায় দিবো”

আমি তো পুরাই টাসকি খাইলাম! ঠাকুরদাদা আবার উন্মাদ হইয়া গেলো নাকি!? নিজের কবিতার প্রশংসা নিজে করে! তরকারিওয়ালারে চ্যালেঞ্জ দেয়! তার মত কবিতা লিখিতে কহে! ঐ কবিতা গীতাঞ্জলীর সমকক্ষ হইয়াছে কি না, তাহা ঠাকুরদাদা নিজেই রায় দিবেন! আবার তরকারিওয়ালার কবিতা ভালো না হইলে তাহার গর্দান নিবেন! নাহ... ব্যাপারখানা ঠিক সুবিধার মনে হইলো না। আমি এইবার আগাইয়া গেলাম। ব্যাপারখানা খোলাসা হওয়া দরকার।

কাছে যাইতেই আমি ধাঁধায় পড়িয়া গেলাম! কাহিনী কী! এই ব্যাক্তিটির চেহারার অবয়ব যেনো একটু অন্যরকম লাগিতেছে। এই ব্যক্তি তো রবীন্দ্রনাথ নয়... যদিও দাদার মতই লম্বা পাকা গোঁফদাড়ি রহিয়াছে।

পাশের এক পানের দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “ভাইজান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এইখানে কী করিতেছেন? উনি কি মাঝেমধ্যেই এই গলিতে আসেন?”

পানের দোকানদার তাহার তরমুজের বীচির মত দাঁতগুলো বাহির করিয়া জবাব দিলো, “হেহে... কারে কী কন, মিয়া? আপনের মাথাডাও তো গেছে দেখতাছি! উই হালার নাম রবীউল্লাহ। মাথায় গণ্ডগোল আছে। উন্মাদ... হালায় নিজেরে কবি কয়! হ্যায় নাকি রবীন্দ্রনাথ! সারাদিন বিড়বিড় কইরা কবিতা কয় আর এই গলিতে ডিউটি দেয়।”

দোকারনাদের কথা শুনিয়া আমি কিছুটা লজ্জিত বোধ করিলাম। আমি কাহারে রবীন্দ্রনাথের আসনে বসাইয়াছিলাম! ঠাকুর দাদার মত লোক কি এই চিপাগলিতে আসিয়া নিজের কবিতার প্রশংসা নিজেই করিবে? আর এক তুচ্ছ তরকারিওয়ালাকে চ্যালেঞ্জ করিবে! পানের দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করিবার পূর্বেই এই ব্যাপারখানা আমার বোধগম্য হওয়া উচিত ছিলো।

আমি লজ্জিত বিবেকে সুরা বাকারার ২৩ ও ২৪ নম্বর আয়াত পাঠ করিতে করিতে বাড়ি ফিরিলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন