আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

ধর্ম ও ধার্মিক এবং আমার অভিজ্ঞতা - ০১

লিখেছেন রাহুল মল্ল

নিজে নাস্তিক হয়েও বিভিন্ন সময় ধার্মিক বন্ধু, পরিবার, সহপাঠীর সাথে দিন কাটাতে হয়। এই ক্ষেত্রে প্রায়  ধর্ম-ধার্মিক ব্যাপারে অদ্ভুত কিছু অভিজ্ঞতা জানা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে ধারাবাহিক সিরিজের আজ ১ম পর্ব।  

১) আমাদের বাড়িতে প্রতি বছর শীতলা পূজায় পাঁঠাবলি হয়। দেখে খারাপ লাগতো। কিছু নিরীহ প্রাণী হত্যা করে উৎসব করাটা। একবার মা-বাবাকে বললাম, বলিটা অন্তত বন্ধ করেন। এমনি নিরিবিলি পূজা করেন। সবাই আমার ওপর রেগে  গেল। বললো, দেবতা রেগে গেলে ধ্বংস করবে।  তারপর একটু চিন্তা করে বললাম, ঠিকাছে, তাইলে বলিগুলো আমি নিজেই করি এই বছর। সাথে সাথে মা-বাবা সহ সকলে বলল, ছিঃ ছিঃ এসব পাপ। নিরীহ ছাগল কাটার কথা মুখে আনাই পাপ।

২) প্রায় ৩ বছর ধরে দেশের বাইরে মেসে থাকি। প্রথম প্রথম যখন মেসে উঠলাম, সেই মেসে সবাই হিন্দু। কয়েকজন অনুকুল ভক্ত, কয়েককজন ইসকন ভক্ত। যাইহোক, বিদেশে রান্না করে খাওয়া তা মুশকিল। আপনার সব কাজ করে দেবে, টাকা লাগলে ধার দেবে কিন্তু রান্না করে দেবে না। আপদে পড়লাম। প্রথমত, রান্না জানি না। কোনোদিন করিনি। দ্বিতীয়ত, আমাকে একা খেতে হবে রান্না না শিখে নেয়া অব্দি। 

ধীরে ধীরে ২-৩ মাসে শিখে গেলাম রান্না। একদিন ছুটির দিনে খাসির মাংস কিনে আনলাম ১২ ডলার দিয়ে। রান্না করে খেতে বসব। ২ জন তখন স্নান করে ঠাকুর নমস্কার করে খেতে বসছে আমার পাশেই। বললাম, নেন অল্প অল্প করে। স্বাভাবিকভাবে তারাও আমাকে দেয় মাঝেমাঝে। খাওয়া অবস্থায় কেউ বলে মাংসে মসলা কম, একজন বলে এলাচি বেশি। বা আরেকটু সিদ্ধ হবে। আমি নতুন রান্না শিখলাম, কেমনই বা রান্না করব। যা রান্না করেছি, খেয়েছে সেদিনের মত।

তার কিছুদিন পর বাসায় খাসির মাংস নিয়ে আসলো। একজন অন্যজনকে বলছে, দাম ১৮ ডলার করে। চিন্তায় পড়ে গেলাম; আমি এত সস্তাদরে কিনলাম কীভাবে? পরদিন মার্কেটে আবার গেলাম। দেখলাম, আমি যা কিনেছি, সেটা গরুর মাংস।

৩) দাদুর শরীর খুব অসুস্থ। ডাক্তার বলেছে সময় শেষ। সেই ঘটনা মৃত্যুর ২ দিন আগে। শুয়ে আছে, চারপাশে সবাই বসে থাকে সারাক্ষণ। পানি ছাড়া কিছুই খাচ্ছে না। দাদু ছিল প্রচণ্ড ধার্মিক। সবাই আমাকে ডেকে বললো, "একটু গীতাপাঠ কর। শুনলে স্বর্গে যাবে।" আমি পাশে বসে প্রথম থেকে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর দাদু হাত দিয়ে ইশারা করল। তার শুনতে ভাল লাগছে না, বিরক্ত লাগছে। বলল সরে যেতে। আমি গীতাপাঠ বন্ধ করে বসে থাকলাম। 

৪) গ্রামে একমাত্র মুসলিম বাড়ি আমাদের পাশের ঘর। তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক। প্রতিবেশী হলেও নিজের পরিবারের মত আসা-যাওয়া। একদিন তাদের মেয়েকে দেখতে আসে বরপক্ষ। আমাকে রাখা হল বরপক্ষ আপ্যায়নে। সবাইকে একে একে চা-নাস্তা দিলাম। খাওয়াদাওয়া শেষে মুরব্বীরা বসে বিয়ের আলোচনা করছে। আমি বরের সাথে বসে কথা বলছি। কথার একপর্যায়ে বর বললো "এখানে কি শুধু একটাই মুসলিম বাড়ি?" বললাম, "হ্যাঁ।" বর বললো, "তাহলে তো সমস্যা। আরো কয়েক পরিবার মুসলিম থাকলে আশেপাশের হিন্দু পরিবারগুলো পিটিয়ে তাড়ানো যেতো।" 

বিয়ের পর আসা-যাওয়াতে বর জানতে পারলো, আমি পাশের বাড়ির হিন্দু। 

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন