শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১১

বায়োনিককাব্য


ইউটিউবার বায়োনিকড্যান্স নিজের রচিত দুটো ধর্মবিরোধী কবিতা পড়ে শোনাচ্ছেন। কবিতাদুটোর মান সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। বাংলা কবিতাই ঠিকমতো বুঝি না, আবার ইংরেজি! তবে বক্তব্য খুবই স্পষ্ট, পরিষ্কার, সুখপাঠ্য ও সহজবোধ্য। শুনতে/পড়তে বেশ লাগলো। 

ভিডিওর নিচে কবিতার ট্র্যান্সক্রিপ্টও দেয়া হলো। 

What Would It Take?

I am an atheist
I don't believe in god
That anybody COULD
Is something I find quite odd
The evidence just ain't there
There isn't any proof
If there really IS a god
Then the fucker stands aloof

But I'm not inflexible
I can be made to believe
Just remove faith as a factor
And my belief you'll achieve
Not saying I'd FOLLOW
God could still be an ass
But at least I'd no longer doubt
Even if I'm not attending mass

So now it's YOUR turn
You god-bothering believers
How can we wake you
From your delusional fevers?
Can it be done?
Can your belief be negated?
Or are you dogmatic?
Can it not be debated?
Can you be shown
That your god is a fake?
How do we do it?
What would it take?
How do we show you?
Can you concede
That your faith and reality
Just don't agree?
Or are you the type
Who'll beleive no matter what?
SOmeone to whom facts
Are just pulled out of one's butt?

I ask because it seems
That no matter what atheists say
Our words have no effect
And we cannot manage to sway
You believers from your faith
Even with the facts on our side
Which leaves us little more
Than to ridicule and deride
Your position, your beliefs
Which are little more than dreams
At least from this position
That's how it seems
Cuz you've gone and placed yourselves
Up in ivory towers
Where facts and reality
Have no persuasive powers
You WANT to believe in god
Regardless of the facts
Which leads you to perform
Intellectually dishonest acts
Like continuing belief
And being dogmatic
And refusing to think
Instead running on automatic


Doubt is a Virtue

Virtues are behaviors
That help ourselves and others
They keep us from doing harm
To our sisters and to our brothers.
Politness, charity, and compassion
All virtuous indeed;
Bravery, devotion, courtesy
And helping those in need.
Yes, virtues make our lives much better
Both individually and as a collective
I'm sure that you'll agree
If you take a moment to be reflective

By contrast, vices are an indulgence
They're selfish and help only you
Vices aren't necessarily harmful
But then again, they might be, too.
"I wanna do this, I wanna do that!"
That's the vice-doer's cry;
Indulging their wants and desires
Whether or not they hurt others thereby.
There is nothing wrong with indulgence
If you take care to be virtuous too
But if your vices cause others distress
I may have to have words with you.

So let me ask you this:
When it comes to faith and doubt
Which one makes you a virtuous hero
And which one makes you a lout?

With doubt you're checking to see
Whether your conclusions are correct
Examining facts, making sure
Doing your best to protect
People from the unknown
Or their own unwarranted assumptions
Because reality doesn't reshape
To fit our hopes and presumption.
If there was ever a virtue of thought
Doubt has to be it
It keeps our view of the world honest
Instead of bullshit.

Now let's look at faith
And see if it's virtuous too
Whether it's selfless and beneficial
Or a vice that we should eschew.
Faith is belief without proof
Without any evidence
It's based in our imagination
And not reality; hence,
Faith could send us astray
Lead us to believe things that're wrong
It's hopes and wishes elevated to fact
Whether or not they were true all along.
If you don't see how that's an indulgence
I'm not sure that I can help out
But the fact remains that faith is the vice
While the virtue is definitely doubt.

Doubt gives us real answers
It shows the world as it truly is
Faith only shows us our wishes
It's not in the fact-telling biz.
Even if faith gets the answer
It's lazy, and right only by chance,
Whereas doubt gets it right using facts
Which lets us confidently advance.
It's clear which method works better,
And which of the two really does stink;
Faith is running on automatic,
While doubt forces us to think.

লিংকিন পার্ক - ১১


সময়াভাবে যে-বিষয়গুলো নিয়ে পোস্ট দেয়া হয়ে ওঠে না...

১.
টুপি না পরার কারণে ছাত্রের মাথা ফাটিয়েছে ইসলামী ঘিলুসমৃদ্ধ মাথার মালিক এক মাদ্রাসাশিক্ষক। ঘটনা বাংলাদেশেই। 

২.
রুশ অর্থোডক্স চার্চের ধর্মানুনুভূতি উত্থিত হয়েছে স্বনামধন্য দুই লেখক ভ্লাদিমির নাবোকভ ও গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের দু'টি উপন্যাসের কারণে। 
(লিংক পাঠিয়েছেন অদিতি অন্তরা) 

৩. 
প্রবল ধর্মবিশ্বাস মানুষকে করে তোলে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য। আর তাই নির্বিষ ও প্রায়-আদর্শ ধর্ম হিসেবে বহুল প্রচারিত বৌদ্ধধর্মের অনুসারী এক ভিক্ষুর কর্মপদ্ধতির সঙ্গে অন্য ধর্মের অনুসারীদের আচরণের তারতম্য দেখলাম না কোনও। জ্বীনের আছর ছাড়ানোর মতো ঘটনা। ফলাফল - তেরো বছরের বালিকার মৃত্যু। 

৪. 
ঈশ্বরের ইন্টারভিউ। খুব বুদ্ধিদীপ্ত। 

৫. 
চৌদি আজবে স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের ব্যাপারে খুব সন্দিগ্ধ হয়ে উঠেছে! নবীজির দেশের পুরুষদের এ কী অধঃপতন! ছেচল্লিশ সেকেন্ডের ভিডিও।

৬.
স্কুলে সৃষ্টিতত্ত্ববাদ পড়ানো নিষিদ্ধ করে বিবর্তনবাদ আরও গভীরভাবে পড়ানোর আন্দোলনে শরীক হয়েছেন ডেভিড অ্যাটেনবরো। 

৭.
বোরাকে চড়ে ইসলামের নবীর বেহেশতভ্রমণ, চাঁদের দু'টুকরো হয়ে যাওয়া, যিশুর পানিকে মদে রূপান্তর, মুসা নবীর আদেশে সাগরের পানি দু'ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়া... এই জাতীয় গঞ্জিকাসেবনপ্রসূত গল্পগুলো বিশ্বাসীরা সত্য বলে মেনে নিয়ে আমাদের হাসির পাত্র হয়ে ওঠে। মগজ খুলে ডিপ ফ্রিজে ভরে না রেখে এসবে বিশ্বাস করা সম্ভব? যে কোনও ধর্মই আসলে কৌতুকের অনন্ত উৎস। এই যেমন আমেরিকায় প্রচলিত খ্রিষ্টধর্মের একটি ধারা মরম্যানদের উৎকট কিছু বিশ্বাস সম্পর্কে পড়ে বিনোদন লাভ করুন।

৮.
গ্রিক পৌরাণিক উপাখ্যান থেকে চোথা মেরে বাইবেলে ঢোকানো পাঁচটি কাহিনী। পরে সেই বাইবেল থেকে চোথা মেরে রচিত হলো কোরান...

৯.
বিশ্বাসীদের ধারণা, সৎ ও নৈতিক জীবনযাপন করতে চাইলে নাস্তিকদেরকে ধর্মের পথেই আসতে হবে। সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন ও ভুয়া এই ধারণার চুলচেরা ব্যবচ্ছেদ করা হয়েছে এই নিবন্ধে। 

১০. 
কোনওরকম ঐশী হস্তক্ষেপ ছাড়াই এক ব্যক্তি অ্যালকোহলাসক্তি থেকে মুক্তি পেয়েছে। প্যারোডি সংবাদের বিশ্বখ্যাত সাইট দ্য অনিয়ন (ইংরেজি মতিকণ্ঠ? ) থেকে পাওয়া সংবাদ।  

হিটলার যেভাবে মহান ব্যক্তি


ইসলাম ও আল্লাহর নামে মুসলমানদের করা অপকীর্তির ফিরিস্তি তুলে ধরা হলে মুমিনীয় "যুক্তি" বরাবরই হয় এরকম: তারা সত্যিকারের মুসলিম নয়; অতএব তাদের করা কুকর্মের দায় ইসলামের ওপরে চাপানো যায় না এবং তাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে ইসলামের বিচার করা উচিত নয়। তবে মুসলিমদের সুকীর্তির কৃতিত্ব ইসলামের বলে চালানোর বেলায় কিন্তু কীর্তিমানদের মুসলমানিত্বের পরীক্ষা প্রবলভাবে শিথিল। মুসলিমদের অর্জন ইসলামের বলে গৃহীত হলে মুসলিমদের অপকর্ম ইসলামের ঘাড়ে চাপানো যাবে না কেন? এমন আস্তিকীয় "যুক্তি" ব্যবহার করে তো হিটলারকেও ভালো মানুষ বলে প্রমাণ করা সম্ভব!

এবং সেটাই করেছেন প্রিয় খ্যাপা ইউটিউবার CultOfDusty তাঁর স্বভাবসুলভ খাপ-খোলা তরবারির ভঙ্গিতে। তবে তিনি উদাহরণ টেনেছেন খ্রিষ্টধর্মের। তবে আমরা তো জানিই, এমন প্রসঙ্গে বিশ্বাসীদের "যুক্তি" অবিকল এক রকমের।


বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১

ইসলাম - একটি মানবিক ধর্ম


শান্তির ধর্মের শাস্তিও মানবিক নামের একটি পোস্ট থেকে আমরা জেনেছি ইসলামে ব্যবহৃত সাজাপদ্ধতির কথা। নিন্দুকেরা তাকে বর্বর বলে, বলুক। ইসলামী ন্যায়বিচারের মর্যাদা তারা বুঝলে তো! 

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: যাঁরা ইসলামী ধাঁচে মানবিক নন, নিচের পোস্টারটি তাঁদের কাছে বর্বর মনে হবে।


বিশ্বাস - বাস্তবতা অস্বীকারের নামান্তর


পৃথিবীর বয়স এবং মানবজাতির উদ্ভব প্রাসঙ্গিক বিতর্কে অস্ট্রেলিয়ার দুই সংসদ সদস্যকে কী যে লজ্জা দিলেন রিচার্ড ডকিন্স! মাত্র চার মিনিটের ভিডিও। 


সনাতনী কামিনী - ০৪

(হিন্দুধর্মে নারীর স্থান বিষয়ক তথ্যবহুল এই সিরিজের এটাই সর্বশেষ পর্ব। পুরো লেখাটিকে ই-বুক আকারে প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে। বাস্তবায়নে আছেন কোনও কামেল ভাই?)

লিখেছেন নিলয় নীল

সনাতনী কামিনী - ০১সনাতনী কামিনী - ০২, সনাতনী কামিনী - ০৩

শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী--
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি
...
লজ্জা দিয়ে, সজ্জা দিয়ে, দিয়ে আবরণ,
তোমারে দুর্লভ করি করেছে গোপন।
পড়েছে তোমার 'পরে প্রদীপ্ত বাসনা--
অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নারীর কাব্যিক সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে। তিনি পারেননি হিন্দু পিতৃতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে। হিন্দু পিতৃতন্ত্র পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে সফল পিতৃতন্ত্র। এতোটাই সফল যে, তা নারীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, স্বামীর মৃত্যুর পর তার সাথে জ্বলন্ত অগ্নিতে নিজেকে পোড়ালে স্বর্গলাভ হয়! হিন্দু পিতৃতন্ত্র এতো বেশি সফল যে, রবীন্দ্রনাথের মতো বহুমুখী প্রতিভারাও এই পিতৃতন্ত্রের জয়গান গেয়েছেন। সেই পিতৃতন্ত্রের রাজত্ব এখনও ভালোভাবেই বহাল আছে।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটা কথা বলেছিলেন, "যাঁরা দাবি করেন, সনাতন ধর্মের নির্ভুল বিধি-ব্যবস্থার জন্যই তা এতো হাজার বছর ধরে তা টিকে আছে, তাঁদেরকে বলতে চাই: টিকিয়া থাকাটাই চরম সার্থকতা নয়। অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে , কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।" 

এবার আসা যাক শ্রী ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী গীতাতে। 

পঞ্চপাণ্ডবের শ্রেষ্ঠ বীর শ্রীমান অর্জুনের মুখে আমরা শুনতে পাই: “অধর্মাভিভাবাৎ কৃষ্ণ প্রদুষ্যন্তি কুলস্ত্রিয়ঃ/স্ত্রীষু দুষ্টাসু বার্ষ্ণেয় জায়তে বর্ণসঙ্করঃ॥” (গীতা, ১:৪০). বাংলা অর্থ: হে কৃষ্ণ, অধর্মের আবির্ভাব হলে কুলস্ত্রী ব্যভিচারিণী হয়। আর ব্যভিচারিণী হলে  বর্ণসংকরের সৃষ্টি হয়।

বর্ণসংকর হলে কী হয়? - “সঙ্করো নরকায়ৈব কুলঘানাং কুলস্য চ/পতন্তি পিতরো হ্যেষাং লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ॥” (গীতা, ১:৪১). বাংলা অর্থ: বর্ণসঙ্কর, কুলনাশকারীদের এবং কুলের নরকের কারণ হয়। শ্রাদ্ধ-তর্পণাদি ক্রিয়ার লোপ হওয়াতে ইহাদের পিতৃপুরুষ নরকে পতিত হয়।

যুক্তি দেখানো যেতে পারে যে, এটা অর্জুনের কথা, ভগবানের নয়। তবে ভগবান কিন্তু অর্জুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এবার ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী শোনা যাক: “মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহ্যপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ/স্ত্রিয়ো ব শ্যাস্তথা শূদ্রাস্তেপি যান্তি পরাং গতিম্॥” (গীতা, ৯:৩২). বাংলা অর্থ: আমাকে আশ্রয় করে স্ত্রী, বৈশ্য, শূদ্র এসব পাপযোনিরাও পরম গতি লাভ করে থাকে। (ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন, নারীর সঙ্গে বৈশ্য, শূদ্ররাও পাপযোনির আওতায় পড়েছে। কিন্তু ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়রা পড়েনি। তবে ভগবানের কাছে নারীর কোনও জাত নেই। ব্রাহ্মণের সন্তান হলেও নারী পাপযোনি হবে। নারীর যোনি সব সময়ই সকল পাপের উৎস।)

ইসলামী স্বর্গে যেমন প্রতি মুসলিম পুরুষের জন্য ৭২ টি হুরের বন্দোবস্ত আছে, হিন্দু উপাখ্যানগুলোতেও যুদ্ধকালে বীরের মতো মারা গেলে পরকালে নারীপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয়া আছে। যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মতো যুদ্ধ করে মারা গেলে স্বর্গে পাওয়া যাবে অসংখ্য সুন্দরী নারী। দেখুন : বনপর্ব ১৮৬-১৮৭, কর্ণপর্ব ৪৯/৭৬-৭৮, শান্তিপর্ব ৬৪/১৭, ৩০; ৯৬/১৮, ১৯, ৮৩, ৮৫, ৮৬, ৮৮, ১০৬; রামায়ণের অযোধ্যাকাণ্ড ৭১/২২, ২৫, ২৬, সুন্দরকাণ্ড ২০/১৩। (সূত্র : প্রাচীন ভারত সমাজ ও সাহিত্য, পৃষ্ঠা ৬৩). (তবে শহীদ হতে উন্মুখ ও হুরস্বপ্নবিভোর মুসলিমদের মতো হিন্দু বর্তমান জগতে আর দেখা যায় না)  

দেবী দুর্গাকে শক্তির দেবী বলে পুজা করে অনেক হিন্দু হয়তো হিন্দুধর্মে নারীবাদের দেখা পান। তবে দেবী দুর্গার আবির্ভাব জানা থাকলে অমন চিন্তা মাথাতেও আসবে না। এই দেবীকে সৃষ্টি করা হয়েছে বিভিন্নন পুরুষ দেবতার জ্যোতি থেকে। মহিষাশুর বর পেয়েছিলেন যে, মানব, দেবতা বা দানব কারো হাতেই তাঁর মৃত্যু হবে না। যখন মহিষাশুর দেবতাদের বিতাড়িত কররেন স্বর্গ থেকে, তখন তারা একজোট হয়ে তাদের জ্যোতি দিয়ে তৈরি করলেন দেবী দুর্গাকে। পুরুষের প্রয়োজন মেটাতেই দেবী দুর্গার জন্ম।

হিন্দুধর্মের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রথা হলো সতীদাহ প্রথা। এই বাংলাতে ১৮১৫ থেকে ১৮২৮ সাল পর্যন্ত মাত্র তেরো বছরে পুণ্যলাভের আশাতে ৮১৩৫ জন নারীকে আগুনে পুড়িয়ে সতী বানানো হয়েছিল। ওই সময়ে জিন্দু নারীদের বিয়ে হতো ১০-১২ বছরের মধ্যে। এবং এই প্রথার বলিদের অধিকাংশের বয়স ২০-রও কম। একবার কল্পনা করে দেখুন তো: একটা বালিকাকে টেনে-হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আগুনের দিকে। নিশ্চিত মৃত্যু আঁচ করে বালিকা সবার হাতে-পায়ে ধরছে বাঁচার জন্য। সেই বালিকার বাবা-মাও আছে সেখানে। তারা তাদের মেয়ের নিশ্চিত ৩৫,০০০,০০০ বছরের স্বর্গপ্রাপ্তির কথা ভেবে বাধা দিতেও পারছে না। বালিকাটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আগুনের দিকে, আর বাবা-মা বলছে, "বল হরি হরিবোল, বল হরি হরিবোল..."

ঋগ বেদের দশম মণ্ডলের ১৮ নম্বর সূক্তের ৭ নম্বরে পরিষ্কারভাবে বলা আছে: 
इमा नारीरविधवाः सुपत्नीराञ्जनेन सर्पिषा संविशन्तु |
अनश्रवो.अनमीवाः सुरत्ना आ रोहन्तु जनयोयोनिमग्रे || (RV 10.18.7)

....Let these women, whose husbands are worthy and are living, enter the house with ghee (applied) as collyrium (to their eyes). Let these wives first step into the pyre, tearless without any affliction and well adorned.

অথর্ব বেদে বলা আছে: আমরা মৃতের বধু হবার জন্য জীবিত নারীকে নীত হতে দেখেছি। (১৮/৩/১,৩)

পরাশর সংহিতায় বলা আছে: মানুষের শরীরে সাড়ে তিন কোটি লোম থাকে, যে নারী মৃত্যুতেও তার স্বামীকে অনুগমন করে, সে স্বামীর সাথে ৩৫,০০০,০০০ বৎসরই স্বর্গবাস করে। (৪:২৮)

ব্রহ্মপুরাণে বলা আছে: যদি স্বামীর প্রবাসেও মৃত্যু হয়, তবে স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে স্বামীর পাদুকা বুকে ধারন করে অগ্নীতে প্রবেশ করা।

সনাতন ধর্মের মতো প্রতিটি ধর্মেই রয়েছে নারীবিদ্বেষী পুরুষালি বিধান। তবু গড়পড়তাভাবে নারীরাই বেশি ধর্মপ্রবণ কেন? তাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসতে হবে ধর্ম নামের অনাবশ্যক ও ক্ষতিকর এই জঞ্জাল থেকে।

ঈশ্বরসংশ্লিষ্ট শব্দমালা


ছবিতে ক্লিক করে পূর্ণাকারে দেখুন।

বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১

শান্তির ধর্মের শাস্তিও মানবিক


ইসলামী শাস্তিপদ্ধতি অত্যন্ত বর্বর ও অমানবিক বলে যে-অভিযোগ করা হয়ে থাকে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। বস্তুত শরিয়া আইনের শাস্তিপদ্ধতি সবচেয়ে মানবিক - প্রমাণ করে দেখালো এক ইসলামবাজ। আমি কনভিন্সড। 


অণুচিন্তন


লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম

১.
ধর্মকেই সকল দ্বান্দ্বিকতার উৎস ব'লে চিহ্নিত করা যায়।

২.
মহান শক্তিমান শয়তানের মৃত্যু আমি চাই না। ওটি আমার রক্তে না থাকলে আমি বাঁচতে পারব না অসংখ্য 'সৎ ধার্মিকদের' ভিড়ে এই পৃথিবীতে।

আজকাল আবার প্রথাবিরোধীরা মহান শয়তান বলে পরিচিত! পৃথিবীটা টিকিয়ে রাখতে অন্তত একজন শয়তান প্রয়োজন। আমি পৃথিবী টিকিয়ে রাখতে চাই।

৩.
আমার কাছে একটি কাজ খুবই কঠিন লাগে - মূর্খের সাথে তর্ক করা এবং অবুঝদেরকে বোঝানো।
যদি এরা সত্যিকার অর্থে মূর্খ এবং অবুঝ হতো, তাহলে সমস্যাটি ছিল না।

কুফরী কিতাব: Richard Dawkins - The Magic of Reality (অডিও বুক)

রিচার্ড ডকিন্সের অতি সম্প্রতি প্রকাশিত শিশুতোষ বই The Magic of Reality-র অডিও ভার্শন। সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে অ্যামাজোন থেকে কিনে পড়াটাই উচিত হবে। বাকিদের জন্য অডিও-বুকের ডাউনলোড লিংক দেয়া হচ্ছে। ই-বুক নেটে লভ্য হলে সেটির লিংকও দেয়া হবে পরে।


ডাউনলোড লিংক (১৩৮ মেগাবাইট):
(লিংকের পাতায় গিয়ে ওপরে বামদিকে নিম্নমুখী তীরচিহ্নে ক্লিক করে ফাইলটি ডাউনলোড করুন)

বিনোদনী নরকভীতি


বিশ্বাসীরা যখন দোজখের ভয় দেখায় অবিশ্বাসীদেরকে, সেটা অবিশ্বাসীদের জন্য কতোটা হাস্যকর, সে সম্পর্কে বিশ্বাসীদের, বোধহয়, কোনও ধারণাও নেই।

খ্যাপা নাস্তিক TheAmazingAtheist অতীব চমৎকারভাবে সেটা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর মূল বক্তব্য: নরকের ভয় পেতে পারে শিশুরা, but it's not gonna work on grown people like me, who actually have a brain in their fucking heads. 


মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১

কোরান কুইজ – ০৭


নিশ্চয়ই মোমিন মুসলমানগণ কোরান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখেন। বেয়াড়া নাস্তিকগনও নিজেদেরকে কোরান-অজ্ঞ বলেন না কখনও। তাই মুসলিম-নাস্তিক নির্বিশেষে সকলেই অংশ নিতে পারেন কোরানের আয়াতভিত্তিক এই ধাঁধা প্রতিযোগিতায়। এই সিরিজের মাধ্যমেই তাঁরা নিজেদের কোরান-জ্ঞান যাচাই করে নিতে পারবেন।

প্রশ্ন ১৩. আল্লাহর একদিন মানুষের কতোদিনের সমান? 
ক) এক হাজার বছর।
খ) পঞ্চাশ হাজার বছর।

(স্ক্রল করে নিচে উত্তর দেখুন)

.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.

উত্তর ১৩. উভয়টিই সত্য। 
(সুরা ২২.৪৭, ৭০.৪) 

কোরানের তিনটি ভিন্ন অনুবাদ একসঙ্গে পাওয়া যাবে এখানে


** কৃতজ্ঞতা: আবুল কাশেম। 

বরাহকলুষিত হারাম হাওয়া


লন্ডনের হাওয়া-বাতাস এখন সম্পূর্ণভাবেই হারাম। কাফেরদের কাজ-কামের কুনো ঠিক-ঠিকানা নাই আসলে। 

সেই পঁয়ত্রিশ বছর আগে পিংক ফ্লয়েড নামের কোন এক ফালতু গ্রুপ Animals নামে একটা অ্যালবাম বাইর করসিল, যেইটার পাঁচটা গানের ভিত্রে তিনটার নামে আছিলো ইসলাম-ঘৃণীত প্রাণী pig! ইসলাম-ঘোষিত আরেকখান নোংরা প্রাণীর নামেও একখান গান আছিলো তাতে - dog. তবে বাকি গানটার নাম ছিলো পুরাই ইসলামসম্মত: দুম্বা অর্থাৎ sheep. 

সেই অ্যালবামের কাভারে একখান উড়ন্ত শুয়োরের (নাউজুবিল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহ) ছবি দিসিল বেতমিজেরা। ছবিতে শুয়োরটা লন্ডনের ব্যাটারসি পাওয়ার স্টেশনের উপ্রে উড়তেসিল। 


তো এই পঁয়ত্রিশ বছর পরে কুন বেদ্বীনের মাথায় জানি ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী কুবুদ্ধি খেলসে! এখন একখান শুয়োরের রেপ্লিকা সেই পাওয়ার স্টেশনের উপ্রে উইড়া বাতাসরে হারাম বানায়া দিতেসে। লন্ডনবাসী মুমিনরা পারলে এখন নিঃশ্বাস বন্ধ কইরা রাখে! 

এই খবর আবার স্কাই নিউজে দেখাইসে! 



ইবলিসের কুকথা - ০৩


লিখেছেন দিলরুবা হোসাইন

৭.
১৪০০ বছর আগে আবিষ্কৃত শয়তান নিধনে আল্লাহর যুদ্ধ কৌশল কতইনা অত্যাধুনিক! আমেরিকার পেন্টাগন এই কৌশল লুকিয়ে-চুরিয়ে পড়েও উন্নতি করতে পারছে না।
শয়তানের রাত্রিকালীন অবস্থান: সকল মানুষের নাকের ডগায়।
বাইনোকুলার: বড় বড় তারা।
ক্ষেপনাস্ত্র: বজ্রপাত।
ঈমানদারদের প্রতি পরামর্শ: ঘুম থেকে উঠে এবং দিনে তিনবার অবশ্যই নাক সাফ করবেন।
ফলাফল: শয়তান বহাল তবিয়তে কুমতলব দিয়ে যাচ্ছে, আল্লাহর অনুসারী অপেক্ষা শয়তানের অনুসারী বেশি যুদ্ধপ্রস্তুতি ছাড়াই শয়তান বিজয়ী।

এবং অবশ্যই আমরা নিকটবর্তী মহাকাশ কে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জিত করেছি, এবং আমরা এই প্রদীপগুলিকে শয়তান কে তাড়ানোর জন্য রুজূমান্‌ (ক্ষেপণাস্ত্র) হিসেবে বানিয়েছি। [সুরা ৬৭:৫]

নিশ্চয়ই আমরা নিকটবর্তী মহাকাশকে (সৌন্দর্যের জন্য) তারকারাজি দিয়ে সাজিয়েছি। এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে পাহারা দেয়ার জন্য। চারপাশ থেকে (তারকারাজির) আঘাতের কারণে তারা তাদের চেয়ে উচ্চ শ্রেণী (ফেরেশ্‌তা)-দের কথা শুনতে পারেনা। (তারা) নির্বাসিত, এবং (তাদের জন্য) রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তা সত্ত্বেও যদি কেউ চুরি করে কোন কিছু শুনতে চায়, তীব্র আলোকোজ্জ্বল প্রজ্বলিত অগ্নিশিখা তাদের তাদের পিছে লাগিয়ে দেয়া হয়। [সুরা ৩৭:৬-১০]

এবং নিশ্চয়ই, আমরা মহাকাশ বড় বড় তারকারাজি দিয়ে বিন্যস্ত করেছি এবং দর্শকদের জন্য সুশোভিত করে সাজিয়েছি। এবং আমরা এটাকে (নিকটবর্তী মহাকাশ) প্রত্যেক শাইতান রজীম (নির্বাসিত শাইতান) থেকে পাহারা দিয়ে রেখেছি। কিন্তু যে চুরি করে শুনতে চায়, তাকে জ্বলজ্বলে অগ্নিশিখা দ্বারা ধাবিত করা হয়। [সুরা ১৫:১৬-১৮

৮. 
হিন্দু হেসে বলে, মুসলমানেরা কাবার চারদিকে ঘুরে কাবার পূজা করে, কালো পাথরে চুমু খায়, রাতদিন কেবলামুখী হয়ে সেজদা দিয়ে নামাজ পড়ে। মুসলমান হেসে বলে, হিন্দুরা মূর্তিপূজা করে, এটা তো চরম মুর্খতা। এভাবে এক ধর্মের অনুসারী অন্য ধর্মের অনুসারীদের হাসির কারণ: নিজের ধর্মের অনুসারীরাই যেন বেশি বুদ্ধিমান। এদিকে নাস্তিকসকল মানুষের মত বুদ্ধিমান প্রাণীর কাল্পনিক উপাস্য বিগ্রহ নিয়েই হাসে।

৯. 
হজ্জ ইসলামের একটি উল্লেখযোগ্য স্তম্ভ। হজ্জের সমাপ্তি ঘটে মিনায়; তিনটি স্তম্ভের দিকে ২১ টি করে পাথর নিক্ষেপ করে। শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এত কিছুর পরও শয়তান-ই মূলত: জিতে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের মুসলমান অপেক্ষা কাফের/মুনাফেক/বিধর্মী/নাস্তিকের সংখ্যা বেশি। সকল মুসলমানও বেহেশতে প্রবেশ করবে না। আল্লাহর অনুসারী অপেক্ষা শয়তানের অনুসারীর সংখ্যা সকল যুগেই বেশি। শয়তান আবার হাসে। আল্লাহর সৃষ্ট শয়তানের ক্ষমতা আল্লাহর চেয়ে বেশি; অসহায় আল্লাহ !!

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

খেজুরে বিবাদ


একজন ব্যবসায়ী তার দোকানে কী কী পণ্য বিক্রি করবে, সেটা একান্তই তার ব্যাপার। আইনবিরোধী কোনওকিছু না হলেই হলো। কিন্তু রমজান মাসে ব্রিটেনে এক মুসলিমের দোকানে ইসরায়েলী খেজুর বিক্রি হতে দেখে ঈমানে ধাক্কা খেলো এক মুসলিমা। সরব প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠলো সে। দোকানে ঢুকে জোর গলায় দাবি জানাতে লাগলো: এই খেজুর দোকান থেকে সরাতে হবে! এ যেন মাতুলগৃহের বায়না! ওটা তার ব্যবসায়ী পণ্য। সম্পূর্ণই আইনসিদ্ধ। তর ইচ্ছা না হইলে তুই কিনিস না! দূরে গিয়া মুড়ি খা! মামলা খতম।

জঙ্গি-মেজাজী এই মহিলার নিজের তোলা ভিডিও দেখতে দেখতে ভাবলাম, ব্রিটেনে অজস্র খাস মুসলিম তাদের রেস্টুরেন্টে ইসলামে হারাম অ্যালকোহলের ব্যবসা চালিয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে (এমনকি পবিত্র রমজানের সময়েও), তা নিয়ে এই মহিলার শিরঃপীড়া নেই কেন? 


খোমাখাতার কাবজাব - ০২


লিখেছেন আসিফ মহিউদ্দীন

৪.
- এতই আপনাদের নাস্তিকদের অহংকার, তবে কোরানের মত একটা সুরা লিখে দেখান, নিদেন পক্ষে একটা আয়াত? কেউ কি পেরেছে, না পারবে কোরানের মত একটি আয়াত লিখে দেখাতে? পারলে তবেই আপনার কথা মেনে নেবো।
- "আলীফ জাম মীম"// "ৎ ঋ ড়"
- এটা কি কিছু হলো নাকি? এর অর্থ কি? হাবিজাবি কিছু বললেই হয়?
- আলীফ লাম মীমের অর্থ কি?
- এর অর্থ শূধু এর লেখক পরম করুণাময় জানেন।
- "আলীফ জাম মীম"/"ৎ ঋ ড়" এর অর্থও এর লেখক (আমি) জানেন, কিন্তু গুপ্তজ্ঞান বিধায় আপনাকে বলা যাচ্ছে না।
- শালা নাস্তিক কুনখানকার।

৫.
প্রতিটি ধর্মপ্রান আস্তিক এক একজন পটেনশিয়াল টেররিস্ট, সাম্প্রদায়িক চরিত্রের, জাতিগতবিদ্বেষী, বর্ণবাদী, নারী অবমাননাকারী। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, তারা তাদের নিজ নিজ ঈশ্বর প্রেরিত কেতাবসমুহ, তার বাণী এবং আদেশ নিষেধসমূহ সিরিয়াসলি আক্ষরিকভাবে নেয় না।

৬.
আস্তিকীয় আবালীয় মন্তব্য:
ধর্মীয় মৌলবাদও মৌলবাদ, নাস্তিকীয় মৌলবাদও মৌলবাদ! (যারা নিজেদের বিশ্বাসকেই শেষ কথা মনে করে, সেই অর্থে মৌলবাদ)

এখন এই বক্তব্য থেকে আরো কিছু বক্তব্য দেয়া যেতে পারে। যেমন:
# অশিক্ষিত থাকার ইচ্ছা এক ধরনের মৌলবাদ, শিক্ষাবিস্তারের কথা বলাও এক ধরনের মৌলবাদ!!!
(আমার বিশ্বাস - শিক্ষা প্রয়োজন, আরেকজনার বিশ্বাস হতে পারে - শিক্ষা খারাপ, অতএব আবালীয় যুক্তি অনুসারে উভয়ই মৌলবাদ)
# সবার জন্য বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার পক্ষে বক্তব্য রাখা, আবার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার বিপক্ষে বক্তব্য রাখা উভয়ই মৌলবাদ!!!
# সকলের জন্য সমান অধিকারের পক্ষে আন্দোলন করা, এবং তার বিপক্ষে আন্দোলন করা, উভয়ই মৌলবাদ!!!

আমার বক্তব্য: নাস্তিকীয় মৌলবাদ বলেই কিছু নাই।
মৌলবাদ প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বাসের উপরে, যুক্তি-প্রমাণ-তথ্য-উপাত্তের উপরে প্রতিষ্ঠিত কোনো তত্ত্ব মৌলবাদ হতে পারে না। নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস নয়, এটা হচ্ছে বিশ্বাসহীনতা, যুক্তির সাহায্য বিশ্বাসকে যাচাই করে দেখা।

"বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সূচাগ্র সরণী"


ফ্রান্সের রাস্তাঘাটে হেঁটমুণ্ডু ঊর্ধ্বপোঁদ আসন গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি হইসে, সেই খবর তো বেবাকেরই জানা। কিন্তু আইন হইসে তো কী হইসে! ইছলামীরা বিনা যুদ্ধে নাহি দিবে সূচাগ্র সরণী! জঙ্গি স্টাইলে প্রতিবাদ শুরু হইয়া গেসে। ইতরামির আরও একখান নজির দেখেন ভিডুতে, যেইটা দেইখা একজন কমেন্ট করসে ইউটিউবে: Watching Islam in action is like watching a scary movie.Very disturbing and scary. 


রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১

লিংকিন পার্ক - ১০


সময়াভাবে যে-বিষয়গুলো নিয়ে পোস্ট দেয়া হয়ে ওঠে না...

১.
শিশুকে নিয়ে বীভৎস ধর্মীয় রিচ্যুয়াল পালনের কারণে মা-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই আইন বাংলাদেশে প্রয়োগ করা হলে অসংখ্য পিতা-মাতাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতো। কেন? সংবাদটা বিশদ পড়লেই তা বোঝা যাবে। 

২. 
খ্যাতিমান বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, পদার্থবিদ, রসায়নবিদ, সাংবাদিক, লেখক প্রমুখের কাছে নিউ স্টেটম্যান পত্রিকা জানতে চেয়েছিল তাঁদের ঈশ্বর-অবিশ্বাসের কারণ। অনেক পরিচিত নাম পাবেন তালিকায়। 

৩. 
পরম ইছলামী বিনোদনপাঠ। কাফেররা কিছুতেই বুঝতে চায় না, মানবজাতির সমস্ত বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পেছনে রয়েছে একটিমাত্র গ্রন্থ - কোরান। আবার দেখুন, বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের পরে জানা গেল, কোরানে নাকি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস সম্পর্কে সম্যক লেখা আছে এবং ভূমিকম্প আসলে আল্যাফাকের প্রেরিত সতর্কবাণী। আরও একখানা বিনোদনপাঠ। 

৪. 
তিন হাজারেরও বেশি ভগবানেশ্বরাল্লাহ ও দেবতা-দেবীদের নিয়ে সাইট। প্রত্যেকের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, এমনকি টপ লিস্ট পর্যন্ত আছে তাতে।

৫. 
এক ক্যাথলিক ধর্মযাজক দশ বছরের কিছু বেশি সময়ে শত শত শিশুকে যৌননিপীড়ন করেছে। এবং চার্চ নিজস্ব ঐতিহ্য বজায় রেখে রক্ষা করেছে এই নেকড়েকে রক্ষা করে চলেছে নানান উপায়ে। এক চার্চ থেকে বদলি করে অন্য চার্চে পাঠিয়ে সেখানকার শিশুদের নিপীড়ন করার সুযোগ করে দিয়েছে। এ বিষয়ের ওপরে ভিত্তি করে ২০০৬ সালে নির্মিত একটি মর্মবিদারী ডকুমেন্টারি দেখুন।   

৬. 
চৌদি রাজা আবুল্ল্যা থুক্কু আবদুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর থেকে চৌদি মহিলারা ভোট দিতে এবং ভোটে দাঁড়াতে পারবেন!!! হায় হায়, আল্লাহর আরশ না কাঁইপা যায়!!
(স-ভূমিকা লিংক পাঠিয়েছেন মালা আলম)

৭.
২০১২ সালে অনুষ্ঠিতব্য Global Atheist Convention-এর চমৎকার প্রমো-ভিডিও

বিবর্তন বনাম ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন


ভিডিওটা আগেই দেখেছি, তবে ধর্মকারীতে দিয়েছি কি না, মনে করতে পারছি না। যদি দিয়ে থাকিও, তবু আরেকবার দেখে নেয়া যায় এই অদ্ভুত সুন্দর ভিডিও। প্রসঙ্গ - বিবর্তন বনাম ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন। 


দু'টি শিরোনাম


ঈশ্বর হুকুম দিলে অনুগত ধর্মযাজকের দোষ কী! 

ভুল করে বলে ফেলা সত্য

হ্রস্বরসবাক্যবাণ – ২১


১. 
ইসলামের অনন্যতার একটি প্রমাণ: কেবলমাত্র ইসলামেই ধর্ষিতা হওয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

২. 
আবহাওয়ার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টাকেই ধর্ম বলা হয়। 

৩. 
আমার জীবনযাপনপদ্ধতি ঈশ্বরের পছন্দ না হলে সে এসে আমাকে বলুক। তুমি সেটা বলার কে?

(সবগুলোই সংগৃহীত)

শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

নির্ধার্মিক মনীষীরা – ৪১


লক্ষ-কোটি কুশিক্ষিত ও জ্ঞানপাপী আমাদের ঘিরে রেখেছে। যুক্তি প্রয়োগে তারা ভীত, সত্যের মুখোমুখি হতে কুণ্ঠিত, পাছে বিশ্বাস হারিয়ে যায় বিধায় তথ্য এড়িয়ে চলতে তৎপর। কিছু অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত ব্যক্তির স্বচ্ছ, যুক্তিনিষ্ঠ ও মানবতাবাদী চিন্তাধারাও তাদেরকে লজ্জিত করে না।  

শাহ আবদুল করিম - বাংলা বাউল গানের জীবন্ত কিংবদন্তী। ধর্ম ও ঈশ্বর সম্পর্কে তাঁর ধারণা:

আমি কখনোই আসমানী খোদাকে মান্য করিনা। মানুষের মধ্যে যে খোদা ব ইরাজ করে আমি তার চরণেই পুজো দেই। মন্ত্রপড়া ধর্ম নয়,কর্মকেই ধর্ম মনে করি। লাখ লাখ টাকা খরচ করে হজ্জ্বপাওলনের চেয়ে এই টাকাগুলো দিয়ে দেশের দুঃখী দরিদ্র মানুষের সেবা করাটাকে অনেক বড় কাজ মনে করি। প্রচলিত ধর্ম-ববস্থা আমাদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিদ্বেষ তৈরী করে দিয়েছে। কতিপয় হীন মোল্লা-পুরুত আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে বিভাজন নিয়ে এসেছে। এই বিভাজনই যদি ধর্ম হয় সেই ধর্মের কপালে আমি লাত্থি মারি।

‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এই হলো আমার ধর্ম। নামাজ রোজার মতো লোক দেখানো ধর্মে আমার আস্থা নাই।কতিপয় কাঠমোল্লা ধর্মকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। আমার এলাকায় প্রতিবছর শীতের সময় সারারাত ওয়াজমাহফিল হয়। দূর-দূরান্ত থেকে বিশিষ্ট ওয়াজীরা আসেন ওয়াজ করতে। তারা সারারাত ধরে আল্লা-রসুলের কথা তো নয় বরং আমার নাম ধরেই অকথ্য-কুকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কি আমার অপরাধ? গান গাইলে কি কেউ নর্দমার কীট হয়ে যায়? (তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস পড়ছে দ্রুত, উত্তেজনায় কন্ঠস্বর চাগান দিয়ে উঠছে ক্রমে) এই মোল্লারা ইংরেজ আমলে ইংরেজী পড়তে বারণ করেছিলো, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো। আজো তারা তাদের দাপট সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে।
...
ঈশ্বরকে আমি মনে করি একটা পেঁয়াজ, খোসা ছিলতে গেলে নিরন্তর তা ছিলা যায় এবং হঠাৎ একসময় দেখি তা শূন্য হয়ে গেছে। আমি ঈশ্বরকে এক বিশাল শক্তি হিসেবে গন্য করি, ব্যক্তি হিসেবে নয়। ব্যক্তি কখনো একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নরূপে অবস্থান করতে পারেনা, শক্তি তা পারে। বৈদ্যুতিক শক্তির কথা ধরুন, একই সাথে কোথাওবা ফ্যান ঘুরাচ্ছে, কোথাও বাতি জ্বলাচ্ছে, কোথাও কারখানা চালাচ্ছে…

তথ্যসূত্র। সন্ধান দিয়েছেন: একুশ তাপাদার।

বিপুলা এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড


পাঠিয়েছেন থাবা বাবা

কোথাও যদি কোন ঈশ্বর থেকেও থাকে যে কি না এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছে, আমাদের মানুষদের দেখার জন্য তার ইলেক্ট্রন মাইক্রস্কোপেও কাজ হবে কি না সন্দেহ! 


ঈশ্বরপুত্রের ভেলকি


অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে যিশু বরাবরই পারদর্শী

দেড় মিনিটের ভিডিও।


ব্ল্যাসফিমেরিক ০৮


(ব্ল্যাসফিমাস লিমেরিক - এই দুই শব্দ থেকে বানানো একটি নতুন শব্দ ব্ল্যাসফিমেরিক। দ্বিতীয় ছড়াটি কিন্তু ইয়ে-টাইপ। কড়া শব্দ আছে, কইলাম! অতএব ইমোটা খিয়াল কৈরা 

লিখেছেন আশেকে রাসূল

১.
শুনছো খোদা, তোমার দিকে তাকিয়ে অধম বান্দেয়
ঊর্বরা সে ক্ষেতটি চষার লাঙলটাতে শান দেয়
কিন্তু দিলে চক্ষে ধুলা
ঝুলিয়ে চার বিবির মুলা
জুটাচ্ছো না একটিও তাই আশেক রাসূল কান্দে 

২.
এই দুনিয়ার চিপাচাপা জুড়ে মানবমানবী কত
দ্বীনের রাস্তা হইতে নামিয়া চুদিতেছে অবিরত
বুঝে না রে ওগো তারা কিল্লাই
শুরুতে একটি বিসমিল্লাই
গলদ শুধরি চোদাচুদিটাই হয়ে ওঠে ইবাদতও

গডোমোবাইল


আমার ধারণা, এই গাড়ি তিনটের ইনস্যুরেন্স প্রয়োজন হয় না।




শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

হিচ্চড় সংকলন


অনেকদিন হিচ্চড় (Hitchslap) দেখা হয় না। ক্রিস্টোফার হিচেন্সের বিখ্যাত চড়গুলোর কয়েকটির সংকলন। অতি অবশ্যদ্রষ্টব্য। 


খর্বশক্তিমানও নয় সে


পূর্ণাকারে দেখতে ছবির ওপরে ক্লিক করুন

মহাকবিরাজ মহানবী – ০৫


অবর্ণন রাইমস বর্তমান সিরিজের ভারপ্রাপ্ত হয়ে আমাকে ভারমুক্ত করেছেন। আল্যাফাক তার হায়াত দারাজ করুক।

নিশ্চয়ই ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান এবং মহানবী নিশ্চয়ই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সর্ব বিষয়ে সার্বিকভাবে জ্ঞানান্বিত ব্যক্তি। আর তাই ইসলামী চিকিৎসাবিজ্ঞানও চির-আধুনিক ও সর্বজনীন। বুঝে পাই না, মুসলিমরা কেন নবী বর্ণিত নানাবিধ চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে সুন্নত পালনে অনীহ। 

মোমিন বান্দাদেরকে যাতে আর অনৈসলামিক চিকিৎসার পেছনে অনর্থক অর্থব্যয় করতে না হয়, সেই লক্ষ্যে শুরু করা হয়েছে এই সিরিজ। 

চিকিৎসাপদ্ধতি ৫.

বিল্লাল একজন পরহেজগার মানুষ। তাবলিগ করে, মানুষের সাথে মিষ্টি করে কথা বলে, ছহীহ এসলামি তরিকায় জীবনযাপন করে। বিল্লালকে পছন্দ না করে উপায় নাই।

আমাদের কাহিনী বিল্লালকে নিয়ে না, তার ভাগিনাকে নিয়ে। একমাত্র ভাগিনাকে বিল্লাল বড়ই স্নেহ করে। তাকে সে ছহীহ এসলামি কায়দায় জীবনযাপনের তালিম দিচ্ছে। ফলাফল বেশ প্রমিজিং। এগারো বছর বয়স ভাগিনার। সেও মামা-অন্ত প্রাণ। মায়ের ধমক তো নিত্তনৈমিত্তিক, ভাগিনার সব আবদার তার মামার কাছে। সেই মামার বাসায় দুদিন থাকার প্রোগ্রাম তার কাছে তাই ভিখিরির সামনে পোলাওভর্তি প্লেট! আজ সকালেই ভাগিনা পৌঁচেছে মামার বাসায়। বাসা বলতে খুপরি একটা রুম, আর সাথে লাগোয়া বারান্দাটা রান্নাঘর হিসাবে ব্যবহার করা। কোই বাত নেহি! মামা-ভাগিনা যেখানে, আর কী লাগে সেখানে?!

সারাদিন অনেক ভালো গেলো। টিভিতে একসাথে দুজনে জোকার বিনায়কের কমেডি সিরিয়াল দেখলো ওরা, পাকিস্তানে ফেসবুক বন্ধের খবরে খুশি হয়ে গেলো, পল্টনে মুমিনদের শান্তিপূর্ণ হামলায় পড়ে পুলিশের প্রতিশোধমূলক গ্রেফতার অভিযান দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। সারাদিনের পরে, রাতের দশটায় ভাগিনার মাথায় খেয়াল চাপলো তার এখন আইসক্রিম খেতে হবে। মামার বাড়ির আবদার বলে কথা। বিল্লাল তখন তখনই বেরিয়ে পড়ে পাড়ার দোকান বন্ধ হবার আগমূহূর্তে এক লিটার আইসক্রিম পেয়েও গেলো। বাসায় আনার পরে দুজনে মিলে মজা করে সাঁটালো পুরোটা।

গোল বাধলো তার পরে।

এতোখানি আইসক্রিম! গলা দিয়ে নামার প্রতিশোধ নিলো টনসিলের ওপর। ভাগিনার টনসিল ফুলে ঢোল। ঢোক গেলা যাচ্ছে না, ব্যথায় ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। সারারাত ঘুম হল না ভাগিনার। দরদী মামাও বিছানার পাশে জেগে বসে রইলো সারারাত। সকাল হতে না হতে অবস্থা আরও খারাপ। ভাগিনার পুরানো প্লুরিসি-র (জ্ঞানীরা পড়েন- ফুসফুসঝিল্লির প্রদাহ) ব্যথা জাগান দিয়ে উঠলো। বিল্লালের মামার মন। চোখে পানি এসে গেলো। একমাত্র ভাগিনা ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে, কিছুই কি করার নাই?

অবশ্যই করার আছে! বিল্লালের মনে পড়ে গেলো কী করতে হবে। বাসায় যত আগরবাতি ছিলো সব এনে ফেললো সে সামনে। তারপর তার অর্ধেকটা নিয়ে কুচিকুচি করে কাটলো।
'ভাগিনা, ওষুধ পেয়ে গেছি!'
ভাগিনা ক্লান্ত চোখে মামার দিকে দেখলো।
'হাঁ করো তো দেখি।'
ভাগিনার হাঁ করা মুখে আগরবাতি গুঁজে দিলো বিল্লাল। মুখে আগরবাতির বিস্বাদ লাগতেই তড়াক করে উঠে পড়লো ভাগিনা।
'এইটা কি দিলেন মামা!'
'টনসিল আর প্লুরিসির এই তো নিদান ভাগিনা।'
'আপনারে বলসে!'
'খামোশ! পেয়ারা প্রফেট (পিউবিক হেয়ার, থুক্কু PBUH) মুখে আগরবাতি গুঁজে রাখার এই নিদান দিয়া গেছেন। নবীজীরে তুমি মিথ্যা বলতে চাও??'

(সূত্র: বুখারি ৭.৭১.৫৯৬, ৬১১, ৬১৩, ৬১৬)

অনুপ্রেরণা: আনাস

বাস্তববাদই নাস্তিক্যবাদ


পূর্ণাকারে দেখতে ছবির ওপরে ক্লিক করুন

প্রথাবিরোধী প্রাচীন সত্যবাদীদের গল্প

(এই পোস্টের লেখক মাজহারুল ইসলাম দশম শ্রেণীর ছাত্র। তিনি মাত্র কয়েকদিন হলো আমার ফেইসবুক-বন্ধু। তাঁর বেশকিছু স্ট্যাটাস ও নোট পড়ে আমি রীতিমতো মুগ্ধ ও চমৎকৃত হয়েছি।) 

এঁর কাছ থেকে আরও লেখা পাবার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণে ঋদ্ধ হয়ে উঠুক ধর্মকারী।)


লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম

আমার মনে হয়, ধর্মানুভূতিতে আঘাত করেনি বা নিজে আহত হয় নি; এমন মানুষ পৃথিবীতে নেই। বোধহয় বিশুদ্ধ ধার্মিকের এই অনুভূতি সামান্য কম, ছদ্মবেশীদের অনেক বেশি। ছদ্মবেশীদের আঘাত লাগলে বা লাগার সম্ভাবনা আছে বুঝলেই তাদের ক্ষিপ্রতা দেখা যায়। আমরা সবাই এখন ক্ষিপ্র আঘাতকারীদের বিরুদ্ধে।

কিন্তু এটি পৌরাণিক ভাবাদর্শের মতোই জ্ঞানকে বাধা দিচ্ছে, জ্ঞানীদেরকে হত্যা করছে। নিজেদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে এই ভান ধরে ধর্মানুভূতি নামক ধারালো মনোঅস্ত্রটি আহত, খুন, আঘাত ও পীড়ন ক'রে চলেছে জ্ঞানীদের, প্রথাবিরোধীদের, রাষ্ট্রকে ও সমাজকে।

বেঁচে থাকার চূড়ান্ত আশাহীনতায় ভুগছে মানুষ,কিন্তু তারা এই ধ্রুব সত্যটি ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। যারা পেরেছে/পারছে তাদেরকে আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল/হচ্ছে পৃথিবী থেকে।

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথাবিরোধী সত্যবাদীদের পরিণতি খুবই নির্মম। কেননা সত্য গ্রহণে মানুষের যেমন অনীহা; সত্য গোপনে তারা তেমনি তত্‍পর। ধর্মকে হাতিয়ার করে মানুষ সত্যবাদীদেরকে আঘাত করেছে বহুভাবে। তবে আধুনিকেরা সব সময়ই যুগ থেকে বিচ্ছিন্ন,কিন্তু কালোত্তীর্ণ। কেননা তাঁরা সত্য খুঁজে পেয়েছেন/পান।

যুগ থেকে একটু পেছনে তাকালেই আমরা এই সত্যগুলো খুঁজে পাই। যেখানে সত্যের পরাজয় হয়েছিল, জয় হয়েছিল ধর্মের। কিন্তু যেহেতু সত্য চিরন্তন; তাই আজকের যুগে আমরা সেগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারছি। আর ধর্ম যে ভিত্তিহীন, তাও বুঝে উঠতে পারছি। যদিও এখনো আমরা ধর্মাস্ত্রের ব্যবহারটি ভুলে যাই নি। ভুলিনি কীভাবে জ্ঞানীদেরকে আঘাত করতে হয়। তাদেরকে বিনাশ করতে হয়।

একটু ইতিহাসে ফিরে যাই, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে। আমার ইতিহাস জ্ঞান কম। তবে যেটুকু জানি, আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করছি। তবে এগুলো জানা নেই, এমন মানুষ খুব কমই আছে বোধহয় !

প্রাচীনকালের সত্যবাদীদের পরিণতি:

১. সক্রেটিস

(প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Σωκράτης সক্রাত্যাস্‌) (খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০ - খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯) প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। এই মহান দার্শনিকের সম্পর্কে তথ্য লিখিতভাবে পাওয়া যায় কেবলমাত্র তাঁর শিষ্য প্লেটো-র ডায়ালগ এবং সৈনিক জেনোফন-এর রচনা থেকে। তৎকালীন শাসকদের কোপানলে পড়ে তাঁকে হেমলক বিষ পানে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাঁকে পশ্চিমা দর্শনের ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি এমন এক দার্শনিক চিন্তাধারা জন্ম দিয়েছেন, যা দীর্ঘ ২০০০ বছর ধরে পশ্চিমা সংস্কৃতি, দর্শন ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে। সক্রেটিস ছিলেন এক মহান সাধারণ শিক্ষক, যিনি কেবল শিষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাঁর কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষায়তন ছিল না। যেখানেই যাকে পেতেন, তাকেই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর বোঝানোর চেষ্টা করতেন। তিনি মনব চেতনায় আমোদের ইচ্ছাকে নিন্দা করেছেন, কিন্তু সৌন্দর্য দ্বারা নিজেও আনন্দিত হয়েছেন।

তাঁর একটি উক্তি: "নিজেকে অন্যের মধ্যে বিলিয়ে দেয়াই আমার অভ্যাস; আর এজন্যই এমনিতে না পেলে পয়সাকড়ি দিয়েও আমি দার্শনিক আলোচনার সাথী সংগ্রহ করতাম।"

২. নিকোলাউস কোপের্নিকুস

(লাতিন ভাষায়: Nicolaus Copernicus নিকোলাউস্‌ কোপের্নিকুস্‌, তৎকালীন পোলীয় ভাষায়: Mikołaj Kopernik মিকল্বাই কপের্নিক্‌, আধুনিক পোলীয় ভাষায়: মিকউয়াই কপর্নিক্‌) (১৯শে ফেব্রুয়ারি, ১৪৭৩ - ২৪শে মে, ১৫৪৩) একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তিনিই প্রথম আধুনিক সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের মতবাদ প্রদান করেন।

কোপের্নিকুসের একটি বিখ্যাত বই হল- "De revolutionibus"। এই বইটি তিনি লিখেছিলেন আনুমানিক ১৫১২ খ্রিস্টাব্দের পরে। কিন্তু তা প্রকাশ পায় ১৫৪৩ এর এপ্রিলে। কেননা তখন এই ধরণের বই প্রকাশ করা ছিল ভয়ের ব্যাপার। খ্রিষ্টার যাজকেরা ছিলো অত্যন্ত শক্তিশালী। বাইবেলের বিশ্বাস থেকে একটু স'রে গেলেই তারা লোকজনকে পুড়িয়ে মারতো ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে। এজন্য কোপের্নিকুস যখন ১৫৪৩ সালের ২৪শে মে Frombork-এ মৃত্যুবরণ করেন, তখন তাঁর হাতে তাঁর লেখা অতি বিখ্যাত বই De revolutionibus-এর একটি কপি দেয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে যেন তিনি তাঁর সারা জীবনের কার্যক্রমের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছিলেন। বলা হয়, তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। স্ট্রোকের পর কোমায় চলে যান। কোমা থেকে উঠে তাঁর অতি প্রিয় বইটির দিকে তাকান এবং শান্তিতে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই বইটির নাম পালটে হয় "দ্য রেভোলিউশনিবাস অর্বিউম কোয়েলিস্তিউম"। 

বইটির শুরুতে একটি অস্বাক্ষরিত মুখবন্ধও ছাপা হয়। কিন্তু তিনি এটি লেখেন নি, এবং তিনি জানতেনও না এই মুখবন্ধটি থাকবে তাঁর বইয়ে। মূলত মুখবন্ধটি বাতিল করে দেয় বইটির প্রস্তাব এবং তাঁর নীতি। এ থেকেই বুঝতে পারা যায়, কী ধর্মীয় বিভীষিকার মধ্যে বের করতে হয়েছিল এই বইটি। স্বীকার করে নিতে হয়েছিল যে, জ্যোতির্বিদ্যা সত্য জানে না, সত্য জানে শুধু বাইবেল!

৩. জর্দানো ব্রুনো

জর্দানো ব্রুনো (১৫৪৮–১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৬০০) একজন ইতালীয় দার্শনিক, ধর্মযাজক, বিশ্বতত্ত্ব বিশারদ এবং ওকাল্টিস্ট (গূঢ় রহস্যাদিতে বিশ্বাসী ব্যক্তি)।

ব্রুনো তার স্মৃতিবর্ধন পদ্ধতির জন্য বিখ্যাত যা সংগঠিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্ব সম্পূর্ণ সুষম এবং অসীম নয় তার প্রাথমিক প্রস্তাবকদের মধ্যে তিনি একজন।

প্রচলিত ধর্মের বিরোধিতার (heresy) অপরাধে ১৫৯২ সালে ইতালির ধর্মীয় বিচারসংস্থা বেঁধে ফেলে তাঁকে। এবং আট বছর ধরে ব্রুনোর মতবাদ বিচার করে ধর্মদ্রোহিতার অপরাধে তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়। এজন্য অনেকে তাকে চিন্তার মুক্তির জন্য নিবেদিত একজন শহীদ হিসেবে গণ্য করে থাকেন।

৪. গ্যালিলিও গ্যালিলি

গ্যালিলিও গ্যালিলি একজন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক যিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সাথে বেশ নিগূঢ়ভাবে সম্পৃক্ত। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতি সাধন যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, বিভিন্ন ধরণের অনেক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, নিউটনের গতির প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, এবং কোপারনিকাসের মতবাদের পক্ষে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতে আধুনিক যুগে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের এতো বিশাল অগ্রগতির পেছনে গ্যালিলিওর চেয়ে বেশি অবদান আর কেউ রাখতে পারেননি। তাঁকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক এবং এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। অ্যারিস্টটলীয় ধারণার অবসানে গ্যালিলিওর আবিষ্কারগুলোই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে – বাইবেল বিরোধী এই সত্য কথা বলার অপরাধে চার্চ গ্যালিলিওকে অভিযুক্ত করেছিল ‘ধর্মদ্রোহিতার’ অভিযোগে, ১৬৩৩ সালে। গ্যালিলিও তখন প্রায় অন্ধ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ। অসুস্থ ও বৃদ্ধ বিজ্ঞানীকে জোর করে ফ্লোরেন্স থেকে রোমে নিয়ে যাওয়া হয়, হাটু ভেঙে সবার সামনে জোড় হাতে ক্ষমা প্রার্থনা করিয়ে বলতে বাধ্য করা হয়, এতদিন গ্যালিলিও যা প্রচার করেছিলেন তা ধর্মবিরোধী, ভুল ও মিথ্যা। বাইবেলে যা বলা হয়েছে সেটিই আসল, সঠিক - পৃথিবী স্থির অনড় - সৌরজগতের কেন্দ্রে। গ্যালিলিও প্রাণ বাঁচাতে তাই করলেন। পোপ ও ধর্মসংস্থার সম্মূখে গ্যালিলিও যে স্বীকারোক্তি ও প্রতিজ্ঞা-পত্র স্বাক্ষর করেন, তা বিজ্ঞান সাধনার ইতিহাসে ধর্মীয় মৌলবাদীদের নির্মমতার এবং জ্ঞান সাধকদের কাছে বেদনার এক ঐতিহাসিক দলিল:

"আমি ফ্লোরেন্সবাসী স্বর্গীয় ভিন্সেঞ্জিও গ্যালিলিওর পুত্র, সত্তর বৎসর বয়স্ক গ্যালিলিও গ্যালিলি সশরীরে বিচারার্থ আনীত হয়ে এবং অতি প্রখ্যাত ও সম্মানার্হ ধর্মযাজকদের (কার্ডিনাল) ও নিখিল খ্রিষ্টীয় সাধারণতন্ত্রে ধর্মবিরুদ্ধ আচরণজনিত অপরাধের সাধারণ বিচারপতিগণের সম্মূখে নতজানু হয়ে স্বহস্তে ধর্মগ্রন্থ স্পর্শপূর্বক শপথ করছি যে, রোমের পবিত্র ক্যাথলিক খ্রিষ্টধর্ম সংস্থার দ্বারা যা কিছু শিক্ষাদান ও প্রচার করা হয়েছে ও যা কিছুতেই বিশ্বাস স্থাপন করা হয়েছে আমি তা সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি, এখনও করি এবং ঈশ্বরের সহায়তা পেলে ভবিষ্যতেও করব। সূর্য কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ও নিশ্চল এরূপ মিথ্যা অভিমত যে কীরূপ শাস্ত্রবিরোধী সে সব বিষয় আমাকে অবহিত করা হয়েছিল; এ মিথ্যা মতবাদ সম্পূর্ণরূপে পরিহার করে এর সমর্থন ও শিক্ষাদান থেকে সর্বপ্রকারে নিবৃত্ত থাকতে আমি এই পবিত্র ধর্মসংস্থা কর্তৃক আদিষ্ট হয়েছিলাম। কিন্তু তৎসত্ত্বেও সে একই নিন্দিত ও পরিত্যক্ত মতবাদ আলোচনা করে ও কোনো সমাধানের চেষ্টার পরিবর্তে সেই মতবাদের সমর্থনে জোরালো যুক্তিতর্কের অবতারণা করে আমি একটি গ্রন্থ রচনা করেছি; এজন্য গভীর সন্দেহ এই যে, আমি খ্রিষ্টধর্মবিরূদ্ধ মত পোষণ করে থাকি। .... অতএব সঙ্গত কারণে আমার প্রতি আরোপিত এই অতিঘোর সন্দেহ ধর্মাবতারদের ও ক্যাথোলিক সম্প্রদায়ভুক্ত প্রত্যেকের মন হতে দূর করবার উদ্দেশ্যে সরল অন্তকরণে ও অকপট বিশ্বাসে শপথ করে বলছি যে পূর্বোক্ত ভ্রান্ত ও ধর্মবিরূদ্ধ মত আমি ঘৃণাভরে পরিত্যাগ করি। ...আমি শপথ করে বলছি যে, আমার ওপর এ জাতীয় সন্দেহের উদ্রেক হতে পারে, এরূপ কোনো বিষয় সম্বন্ধে ভবিষ্যতে আর কখনও কিছু বলব না বা লিখব না। এরূপ অবিশ্বাসীর কথা জানতে পারলে অথবা কারও ওপর ধর্মবিরূদ্ধ মতবাদ পোষণের সন্দেহ উপস্থিত হলে পবিত্র ধর্মসংস্থার নিকট অথবা যেখানে অবস্থান করব সেখানকার বিচারকের নিকট আমি তা জ্ঞাপন করব। শপথ নিয়ে আমি আরও প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই পবিত্র ধর্মসংস্থা আমার ওপর যে সব প্রায়শ্চিত্তের নির্দেশ প্রদান করবে আমি তা হুবহু পালন করব। এসব প্রতিজ্ঞা ও শপথের যে কোন একটি যদি ভঙ্গ করি তাহলে শপথভঙ্গকারীর জন্য ধর্মাধিকরণের পবিত্র অনুশাসনে এবং সাধারণ অথবা বিশেষ আইনে যেসব নির্যাতন ও শাস্তির ব্যবস্থা আছে তা আমি মাথা পেতে গ্রহণ করব। অতএব ঈশ্বর ও যেসব পবিত্র গ্রন্থ আমি স্পর্শ করে আছি, এঁরা আমার সহায় হোন। আমি উপরে কথিত গ্যালিলিও গ্যালিলি শপথ গ্রহণ ও প্রতিজ্ঞা করলাম এবং নিজেকে উপযুক্তভাবে বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে প্রতিশ্রুত হলাম। এর সাক্ষ্য হিসেবে স্বহস্তলিখিত শপথনামা যার প্রতিটি অক্ষর এইমাত্র আপনাদের পাঠ করে শুনিয়েছি, তা আপনাদের নিকট সমর্পন করছি। ২২শে জুন, ১৬৩৩ খ্রীষ্টাব্দ, রোমের মিনার্ভা কনভেন্ট।”

৫. হাইপেশিয়া 

হাইপেশিয়া (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Υπατία হুপাতিয়া) (৩৭০ - মার্চ, ৪১৫) বিখ্যাত মিশরীয় নব্য প্লেটোবাদী দার্শনিক এবং গণিতজ্ঞ। মহিলাদের মধ্যে তিনিই প্রথম উল্লেখযোগ্য গণিতজ্ঞ। তিনি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ আলেক্সান্দ্রিয়ান প্যাগানও ছিলেন। শিক্ষক হিসেবে তার সাফল্য উল্লেখ করার মত।

"এখানে শায়িত ডাইওফেন্টাস—আহ্‌, কী মনোরম দৃশ্য! গণিতের সুষমায় এই প্রস্তরখণ্ডে উৎকীর্ণ আছে তাঁর কথা। স্রষ্টা দিয়েছিলেন তাঁকে বালকজীবন তাঁর জীবনের এক ষষ্ঠাংশ। তারপর এক দ্বাদশাংশ কাটে তাঁর তারূণ্যের উচ্ছ্বাসে যখন শ্মশ্রূমণ্ডিত হয় মুখ। আরও এক সপ্তাংশ পরে তাঁর শুভ পরিণয়, আর দাম্পত্যের পঞ্চম বর্ষশেষে সংসার আলো করে আসা ছেলে। কিন্তু হায়, দুর্ভাগা প্রিয় পুত্র—পৃথিবীর আলো নিভে আসে তার যখন সে উপনীত হয় পিতার অর্ধেক জীবন। হৃদয়ের কষ্ট ভোলেন ডাইওফেন্টাস সংখ্যার সৌন্দর্যে চারটি বছর। অতঃপর অবসান হয় তাঁর জীবনের খেলা”।"

ছন্দোময় এই ধাঁধাঁটিতে করুণভাবে মূর্ত হয়ে আছে তৃতীয় শতকের মহান গণিতবিদ ডাইওফেন্টাসের জীবন। ধারণা করা হয়, এর রচয়িতা হাইপেশিয়া—ইতিহাসবেত্তাদের মতে পৃথিবীর প্রথম নারী, গণিত ও বিজ্ঞানে যিনি রেখে গিয়েছেন অসামান্য অবদান। শুধু তাই নয়, অন্ধকার যুগে ইউরোপের তলিয়ে যাবার পূর্বে পেরিক্লিসের সোনালী যুগের তিনি ছিলেন শেষ বিজ্ঞানী।

ভূমধ্যসাগরের কোলে নীলের পলল অববাহিকায় গড়ে উঠা প্রাচীন মিশরীয় নগরী আলেকজান্দ্রিয়া। এখানেই আনুমানিক ৩৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন হাইপেশিয়া, থমথমে এক সময়ে যখন মিশরের আত্মিক জগত ছিল বিপর্যস্ত। মেয়েদেরকে মনে করা হত মানুষের চেয়ে নিচু প্রজাতির—অ্যারিস্টোটলের নারীবিদ্বেষী শিক্ষার সুদূরপ্রসারী প্রভাব তখনো পুরোপুরি কাটেনি হেলেনীয় সভ্যতায়। ওদিকে শক্তিধর রোমান সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে দীক্ষিত হচ্ছে খ্রিষ্টধর্মে, ৩১২ খ্রিষ্টাব্দে যার সুচনা করে যান সম্রাট কনস্ট্যান্টিন। কিন্তু নতুন এই ধর্মের ঊষালগ্নে প্রায়ই দাঙ্গা বেঁধে যেত পবিত্র তাওরাত ও ঈঞ্জিলের অনুসারী এবং প্রাচীন দেবদেবীর উপাসনাকারীদের মধ্যে, আর রক্তরঞ্জিত হত মিশরের রাজপথ।

হাইপেশিয়ার পিতা থিওন ছিলেন আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক, যিনি পরবর্তীতে এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। থিওন চেয়েছিলেন মেয়ে হয়ে উঠবে একজন পরিপূর্ণ নিখুঁত মানুষ হয়ে। তাই শৈশব থেকেই পরম মমতায় মেয়ের চারদিকে গড়ে তোলেন অনুসন্ধিৎসা, জিজ্ঞাসা এবং জ্ঞান অন্বেষণের এক আনন্দময় জগত। পিতার তত্ত্বাবধানে হাইপেশিয়া লাভ করেন সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন ও শিল্পের উপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, অর্জন করেন কন্ঠের যথাযথ ব্যবহার এবং বাগ্মীতার দ্বারা মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা। মনোজগত প্রসারিত করার সাথে সাথে আত্মজার শারীরিক শিক্ষার দিকেও যত্নশীল হন থিওন, যাতে কন্যার সুস্থ দেহ ও তীক্ষ্ণ মানস জগতের সুন্দর সমন্বয় গড়ে উঠে—মেয়েকে শিক্ষা দেন সন্তরণ, অশ্বচালণা এবং পর্বতারোহণ।

পিতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেননি হাইপেশিয়া— অতুলনীয় মেধার কারণে অল্প সময়েই তিনি এসব শিক্ষা যথেষ্ট আয়ত্ত করেন এবং এমনকি পিতার জ্ঞানকেই ম্লান করে দেন এক সময়; আজকে থিওন মূলত তাঁর মেয়ের জন্যই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। মাত্র ঊনিশ বছর বয়সে হাইপেশিয়া টলেমির Almagest উপর লেখা তাঁর পিতার বিশ্লেষণধর্মী একটি গ্রন্থের সম্পাদনা করেন। Almagest হচ্ছে তেরো খণ্ডের সেই বিশাল গ্রন্থ যাতে টলেমি তাঁর সমসাময়িক যাবতীয় গণিত ও মহাকাশ জ্ঞান সংকলিত করেন এবং আরবীয় পণ্ডিতগন যার নামকরণ করেন Al-kitabul-mijisti বা মহান গ্রন্থ। একজন তরুণী হিসেবে সেই সময় তিনি এক অকল্পনীয় অভিযানে বেরিয়ে পড়েন—উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যান এথেন্সে, দার্শনিক কনিষ্ঠ প্লুটার্ক ও তাঁর মেয়ে এসলেপিজেনিয়া পরিচালিত গ্রিসের নিও-প্লেটোনিক বিদ্যালয়ে। এখানেই গণিতবিদ হিসেবে হাইপেশিয়ার সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে আনাতোলিয়ার উচ্চভূমি থেকে আইবেরীয় উপদ্বীপে, বসফোরাস থেকে সুদূর জীব্রাল্টার পর্যন্ত।

এথেন্স থেকে প্রত্যাবর্তনের পর হাইপেশিয়া আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত ও দর্শনের উপর শিক্ষাদানের আমন্ত্রণ পান। ৪০০ খ্রিষ্টাব্দে, আনুমানিক তিরিশ বছর বয়সে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। এটি ছিল এক অনন্য ঘটনা, যা আরো বেশী তাৎপর্যপূর্ণ এ কারণে যে আলেকজান্দ্রিয়াতে তখন ছিল খ্রিষ্টান শাসিত সরকার আর হাইপেশিয়া ছিলেন গ্রিসের প্রাচীন ধর্মের অনুসারী। হাইপেশিয়ার গৃহ ও শ্রেণীকক্ষ মুখরিত হত সেযুগের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতবর্গের পদচারণায়। তাঁকে মনে করা হত দৈবশাস্ত্রে পণ্ডিত, বলা হত আফ্রোদিতির দেহে প্লেটোর আত্মা। এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা থেকে আগত জ্ঞানোৎসাহীরা তাঁর কাছে শুনতেন ডাইওফেন্টাসের Arithmetica সম্পর্কে, শিখতেন ডাইওফেন্টাসের উদ্ভাবিত পদ্ধতি, অনির্ণেয় সমীকরণের সমাধান এবং সংকেতের ব্যবহার। প্যাগান হওয়া সত্ত্বেও হাইপেশিয়া বহু খ্রিষ্টানের শ্রদ্ধা লাভ করেন এবং খ্রিষ্টীয় লেখকদের কাছে তিনি ছিলেন গুণের আকর। সমসাময়িক খ্রিস্টান ঐতিহাসিক সক্রেটিস স্কলাস্টিকাস তাঁর চার্চের ইতিহাস গ্রন্থে বর্ণনা করেন:

একদা আলেকজান্দ্রিয়াতে ছিল এক নারী—দার্শনিক থিওনের কন্যা হাইপেশিয়া, যিনি সাহিত্য ও বিজ্ঞানে এরূপ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন যা ছাড়িয়ে যায় তাঁর কালের সব দার্শনিকের জ্ঞান। প্লেটো এবং প্লুটোনিয়াসের উত্তরসূরী হিসেবে তিনি উন্মোচিত করতেন দর্শনের তত্ত্ব দূরদূরান্ত থেকে আগত তাঁর শ্রোতাদের সামনে। আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহারের সাবলীলতায় প্রায়ই তিনি বের হতেন জনসমক্ষে, যা তিনি অর্জন করেছিলেন মনের উৎকর্ষে। এমনকি পুরুষের সমাবেশে তার অবস্থান ছিল না মোটেও ব্রীড়াবনত। কারণ অনন্য আত্মমর্যাদা এবং গুণের দরুণ তিনি ছিলেন সকল পুরুষের শ্রদ্ধার পাত্র।

হাইপেশিয়া গণিতের ওপর বেশ কয়েকটি অভিসন্দর্ভ রচনা করেন, দশম শতাব্দীর বৃহদাকার বাইজ্যান্টীয়-গ্রিক অভিধান সুদা-তে যার উল্লেখ পাওয়া যায়। এসব রচনার অধিকাংশ সম্ভবত আলেকজান্দ্রিয়ার টলেমি (ইনি আলেকজান্ডারের সেনাপতি, মিশরের টলেমি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা— গণিতবিদ টলেমি নন) গ্রন্থাগার কিংবা সেরাপিসের মন্দির ধ্বংস হওয়ার সাথে হারিয়ে যায়, এবং বর্তমানে তাদের কিছু খণ্ডাংশ পরিলক্ষিত হয় মাত্র। এদের মধ্যে ডাইওফেন্টাসের Arithmetica এর উপর লেখা হাইপেশিয়ার ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থটির টিকে থাকার সপক্ষে যথেষ্ট প্রমান পাওয়া যায় গবেষকদের মতে এটি ডাইওফেন্টাসের মূল গ্রন্থটিতেই একীভূত হয়ে আছে।

এছাড়া তাঁর আরও একটি মূল রচনা On the Astronomical Canon of Diophantus এর কিয়দংশ পঞ্চদশ শতকে ভ্যাটিকান গ্রন্থাগারে আবিষ্কৃত হয়, ১৪৫৩ সালে ধর্মসহিষ্ণু অটোমান (উসমানী) সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদের কনস্ট্যান্টিনোপল তথা বাইজ্যান্টাইন সাম্রাজ্য বিজয়ের পর এটি সম্ভবত সেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাইওফেন্টাসের গণিত মূলত একঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ সংক্রান্ত সমস্যার উপর আলোকপাত করে যেখানে হাইপেশিয়া বেশ কিছু বিকল্প সমাধান এবং নতুন সমস্যাবলীর অবতারণা করেন।

এছাড়াও হাইপেশিয়া পার্গে'র বিখ্যাত গণিতবিদ এপোলোনিয়াসের কোণকসংক্রান্ত গ্রন্থের উপর রচনা করেন On the Conics of Apollonius, যার ফলে উপবৃত্ত, পরাবৃত্ত ও অধিবৃত্তের ধারণা সহজবোধ্য হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের কাছে আর গ্রন্থটি বেঁচে থাকে অনেক শতাব্দী, যদিও অন্ধকার যুগে চলে যাওয়ার পর ইউরোপীয়রা প্রাচীনতম এই বক্ররেখাগুলির ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু অষ্টম শতকেই আরবীয় গণিতবিদগন এদের অপার সৌন্দর্য আবিষ্কার করেন এবং তাঁরা মিলন ঘটিয়ে দেন বীজগাণিতিক সমীকরণ ও জ্যামিতির। পারস্যের কবি দার্শনিক গণিতবিদ ওমর খৈয়াম তৃতীয়মাত্রার সমীকরণ সমাধান করতে গিয়ে এদেরকে নিয়ে যান ধ্রুপদী উচ্চতায়—এটি ইয়োহান কেপলার কিংবা রেনে ডেকার্তের জন্মের প্রায় ছয়শো বছরের পূর্বের কথা।

হাইপেশিয়া সম্ভবত তাঁর পিতার সাথে যৌথভাবে ইউক্লিডের Elements গ্রন্থটির সম্পাদনা ও উন্নয়ন সাধন করেন। Elements এর এই সংস্করণটি আজও গণিতশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহারিক প্রযুক্তির উপর ছিল হাইপেশিয়ার মূল ঝোঁক। তাঁর ছাত্র বিশপ সাইনেসিয়াস, যিনি খ্রিষ্টানদের ত্রিত্ববাদ গঠনে সহায়তা করেন, হাইপেশিয়াকে Astrolabe আবিষ্কারের জন্য অভিনন্দন জানান।

Astrolabe ব্যবহৃত হত সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয়ে এবং রাশিচক্রের আরোহণকারী চিহ্ন হিসেব করতে। হাইপেশিয়া যন্ত্রটিকে এতই সূক্ষ্ম করেন যে এটি গোলীয় জোতির্বিদ্যার যথার্থ সমাধান দিত। এছাড়াও তিনি পরিস্রাবণ ও তরলতলের উচ্চতামাপক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন এবং তরলের আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের জন্য তৈরি করেন Hydroscope.

হাইপেশিয়ার সমসাময়িক পণ্ডিতগন প্রায় কাব্যময়ভাবে তাঁর কথা বলে গিয়েছেন। ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক সক্রেটিস, নিসেফোরাস এবং ফিলোস্তোরজিয়াস ভিন্ন মতবাদে বিশ্বাসী হলেও তাঁর প্রশংসা করেন উদারভাবে। তাঁর সুনাম ছিল ব্যাপক এবং অকৃত্রিম। হাইপেশিয়া কখনো বিয়ে করেননি; ধারণা করা হয়, এমন কাউকে তিনি পাননি যিনি তাঁর মনন ও দর্শনের সমকক্ষ হতে পারেন।

যেহেতু হাইপেশিয়া ছিলেন নিও-প্লেটোনিক মতবাদে বিশ্বাসী এবং মিশরের ক্রমশ ঘোলাটে হওয়া রাজনীতিতে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন, খ্রিষ্টান ধর্মীয় রাজপুরুষেরা তাঁর ব্যাপারে শঙ্কা অনুভব করতে শুরু করলেন। তাঁরা হাইপেশিয়ার দর্শনকে মনে করতেন চার্চদ্রোহী এবং ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টিকারী, এবং ৪১২ খ্রিস্টাব্দে সিরিল যখন আলেকজান্দ্রিয়ার প্যাট্রিয়ার্ক নিযুক্ত হন, তখন তিনি পরিকল্পিতভাবে এসব চার্চদ্রোহীদেরকে দমন শুরু করেন। তিনি ইহুদিদেরকেও আলেকজান্দ্রিয়া থেকে বিতাড়ন শুরু করেন। আলেকজান্দ্রিয়ার তৎকালীন খ্রিষ্টীয় রোমান গভর্ণর ওরেস্টেসের সাথে বন্ধুত্ব এবং রাজনৈতিক জোট গঠন হাইপেশিয়ার জন্য ব্যাপারটি আরো জটিল করে তোলে। কারণ চার্চ ও রাষ্ট্রের সংঘাত দ্বন্দ্বমুখর করে তুলেছিল ওরেস্টেস এবং সিরিলের সম্পর্ক। হাইপেশিয়ার প্রভাবকে সিরিল মনে করতেন চার্চের জন্য বড় হুমকি। প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে সিরিল তাঁর অনুসারীদের ক্ষেপিয়ে তোলেন। এরই ফলশ্রুতিতে ৪১৫ খ্রীষ্টাব্দে লেন্টের পবিত্র মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে নিত্রীয় সন্ন্যাসীদের হাতে আক্রান্ত হন হাইপেশিয়া। তারা তাঁকে নগ্ন করে হেঁচড়ে নিয়ে যায় চার্চ সিজারিয়ামে, ঝিনুকের খোল দিয়ে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে এবং তা পুড়িয়ে দেয়। ইষ্টান অর্থডক্স এবং রোমান ক্যাথলিক চার্চ পরে পৃথকভাবে সিরিলকে 'সন্ত' উপাধিতে ভূষিত করে।

মর্মন্তদ এই ঘটনা ছিল গণিত ও বিজ্ঞানের উপর এক ভয়ংকর আঘাত। মার্গারেট ওয়ের্থহেইম তাঁর পীথাগোরাসের ট্রাউজার গ্রন্থে বলেন—"গ্রীক গণিতবিজ্ঞানের মহান যুগ, যার সুচনা এক পুরুষের জন্মের মধ্য দিয়ে, তা সমাপ্ত হয় এক নারীর মৃত্যুতে।"

এবং সম্ভবত পরবর্তী ১৪০০ বছরে পৃথিবী বিজ্ঞান সাধনায় ব্রতী এমন বর্ণিল নারী আর পাবে না… যতক্ষণ না পর্যন্ত পোল্যান্ডের এক শিক্ষক দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক মেয়ে; মেরি কুরি তাঁর নাম।

পরিশিষ্টঃ হাইপেশিয়ার মৃত্যুর মাত্র ষাট বছরের মধ্যে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। ইউরোপে শুরু হয় অন্ধকারযুগ আর সেখানে ভীড় জমাতে থাকে দৈত্যদানো, রাক্ষস-খোক্ষস, ভুতপ্রেত, ভ্যাম্পায়ার আর ডাইনিদের দল। কিন্তু গণিত ও প্রকৃতি জ্ঞানের মুক্ত সমীরণ বইতে থাকে আরবের রুক্ষ্ম মরুময় উপদ্বীপে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে মেসোপটেমিয়া, পারস্য, আনাতোলিয়া, আফ্রিকার উপকূল, আন্দালুসিয়া, মধ্যএশিয়া, ভারত মহাসাগর, ভলগা ধরে দূরদূরান্তে..

(হাইপেশিয়ার জীবনীটি সংগ্রহ করা হয়েছে http://www.amarblog.com/Maverick/posts/19215
থেকে)