মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ইসলামে কাম ও কামকেলি - ৩৬

মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)

পর্ব ০১ > পর্ব ০২ > পর্ব ০৩ > পর্ব ০৪ > পর্ব ০৫ > পর্ব ০৬ > পর্ব ০৭ > পর্ব ০৮ > পর্ব ০৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫

এখানে একটি প্রশ্ন এসে যায়। জিহাদিদের উন্মত্ত ধর্ষণপ্রক্রিয়ার ফলে যদি বন্দিনীটির গর্ভসঞ্চার হয়, তাহলে কী হবে? অনেক জিহাদিই চাইত না যে, তাদের সেক্স-মেশিনটি তাড়াতাড়ি গর্ভসঞ্চার করে বসুক, সুতরাং তারা বীর্যপাতের ঠিক পুর্বমুহুর্তে লিঙ্গটি বের করে নিয়ে আসত। এই প্রথা সম্পর্কে মহম্মদের (দঃ) মনোভাব ছিল ঘোলাটে। কখনও তাকে এই প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায়, কখনও বা তাকে নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করতে দেখা যায়। এ সম্পর্কে গোটাকয়েক সুন্দর হাদিস উল্লেখ করা হলো। (কয়টাস ইন্টারাপশন বা যোনির বাইরে বীর্যপাত সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাবে এই সিরিজের ৩ নং পর্বে)।

বানু আল-মুস্তালিক গোত্রের বন্দিনীদের ক্ষেত্রে কয়টাস ইন্টারাপশন পালন করতে মহম্মদ অনুমতি দেননি, তবে বন্দিনীদের ধর্ষণ করার ক্ষেত্রে তার কোন নিষেধ ছিল না।
সহি বুখারি, ভলিউম-৫, বুক নং-৫৯, হাদিস নং-৪৫৯: 
ইবনে মুহাইরিজ হতে বর্ণিতঃ আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম এবং আবু সাইদ আল-খুদরিকে দেখতে পেলাম। আমি তার পাশে উপবেশন করে তার কাছে আজল (কয়টাস ইন্টারাপশন) সম্পর্কে জানতে চাইলাম। আবু সাইদ বলল- “আমরা রাসুলুল্লাহর সাথে বানু মুস্তালিকদের বিরুদ্ধে এক অভিযানে যাই। কিছু আরব বন্দিনী আমাদের হস্তগত হয়। আমরা প্রবলভাবে নারীসঙ্গ কামনা করছিলাম; নারীসঙ্গবিবর্জিত জীবন আমাদের জন্যে কঠিন হয়ে পড়েছিল এবং আমরা আজল করতে চাইলাম। আমরা বললাম- আল্লাহর রাসুল আমাদের মাঝে হাজির থাকতে তার কাছে জিজ্ঞেস না করে কী করে এ কাজ করি? আমরা এ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- এটা না করাই বরং তোমাদের জন্যে ভাল। কারণ কোন আত্মা জন্ম নেওয়ার হলে তা জন্মাবেই, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত।”
যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করার ঢালাও অনুমতি আছে ইসলামে - এই সত্যটা মেনে নিতে অনেক ইসলামপন্থীর বড় কষ্ট হয়। এই বর্বর প্রথার মধ্যে লুক্কায়িত অমানবিকতাকে ঢাকা দিতে তারা নানারূপ যুক্তি দাঁড় করেন। তাঁরা আমতা আমতা করে বলেন, “দেখ, কোনোকিছুর ভালমন্দ যাচাই করতে হলে তোমাকে অবশ্যই পারিপার্শিকতা বা স্থানকাল বিবেচনায় রাখতে হবে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করার যে প্রথা চালু ছিল, তার অনেক ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে এখন। সেই সময়ে যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করা দোষের কিছু ছিল না। মুসলমান সৈনিকদেরকে তাদের গৃহ হতে বহু দূরে যুদ্ধ এলাকায় পাঠানো হতো। বহুদিন যাবত স্ত্রীসঙ্গ হতে বিরত থাকতে হতো তাদের। সুতরাং তাদের যৌনক্ষুধা মেটাতে আল্লাহ এর অনুমতি দিয়েছিলেন। তাছাড়া বন্দিনীদেরও যৌনক্ষুধা ছিল, পুরুষের ছোঁয়া ছাড়া তারা বাকী জীবনটা কাটাবেই বা কী করে? সুতরাং এ ছিল নেহায়েতই সমানে সমান খেলা। ইসলামি আইন আপাত কঠোর মনে হলেও এর পেছনে অবশ্যই কোনো সুন্দর ও জোরালো যুক্তি থাকতেই হবে।” 

যদি তাঁদের প্রশ্ন করা হয়, ‘ভাল কথা। এটা ছিল সে যুগের রীতি, তবে আইনটি কি এখনও চালু আছে? হ্যা কিংবা না স্পষ্ট করে বলুন।’ এই সহজ প্রশ্নের কোন সরাসরি জবাব অবশ্য মিলবে না।

প্রশ্নটিকে সুকৌশলে পাশ কাটাবেন তাঁরা, হয়তো বলবেন, “আমাদেরকে অবশ্যই কন্টেক্সট বিচার করে কোনো প্রথার ভালমন্দ যাচাই করতে হবে। কোনো  মুসলমান শক্তি যদি অন্য কোন দেশ জয় করে নেয়, ইসলামিক আইন অনুসারে তারা পরাজিতদের প্রতি সবসময়ই ন্যায়বিচার করে থাকে। ইসলাম অবশ্যই বিজিত নারী ও শিশুদিগকে রক্ষা করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে......ইত্যাদি, ইত্যাদি।” কখনও সোজাসাপটা জবাব দেবেন না তাঁরা।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন