মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০১৪

ধর্মকর্মকাণ্ডকীর্তিকাহিনী - ১০

(ধর্মকারী বরাবরই সিরিজময়। অতএব আরও একটি সিরিজের অবতারণা করা নিশ্চয়ই যায়েজ। 

'ইসলামী ইতরামি' ও 'লিংকিন পার্ক' সিরিজে ধর্মান্ধদের কাণ্ডকারখানা সংক্ষেপে বর্ণনা করে লিংক ধরিয়ে দেয়া হয়। তো একদিন নিলয় নীল প্রস্তাব দিলেন, তিনি নানান ধর্মের ধর্মগুরু ও মোমিনদের ঘটানো কিছু কিছু কীর্তি সবিস্তারে লিখতে আগ্রহী। তিনি এমনকি অতি নিয়মিত লেখা দেয়ার হুমকিও প্রদান করেছেন। তাঁর হুমকিতে ভীত ধর্মকারী মাঝেমধ্যে তার অলিখিত আইনের ('প্রথম পাতায় এক লেখকের একটির বেশি লেখা থাকবে না') ব্যত্যয় ঘটাতে সম্মত হয়েছে।

সিরিজের নামে পাঁচটি বিশেষ্যপদ ব্যবহার করা হলেও শব্দসংখ্যা আসলে ন'টি: ধর্ম, কর্ম, কাণ্ড, কীর্তি, কাহিনী, ধর্মকর্ম, কর্মকাণ্ড, কাণ্ডকীর্তি ও কীর্তিকাহিনী।) 

লিখেছেন নিলয় নীল

নিজের জিব কেটে ভগবান শিবকে উৎসর্গ করলো কিশোর 

ভারতের ভূবনেশ্বরে এক কিশোর দেবতা শিবের সেবায় তার নিজের জিব উৎসর্গ করেছে। সম্প্রতি স্থানীয় এক শিব মন্দিরে বসে একটি ভোঁতা ব্লেড দিয়ে সে তার জিবটি কেটে ফেলে। এরপর এটি একটি বাটিতে করে শিবের পায়ে উৎসর্গ করে।


তার নাম লালমোহন সরেন। বয়স ১৭; এই প্রদেশেরই দুগদা জেলার বিখ্যাত মন্দির হচ্ছে মহাদেব গ্রহা। সেদিন সকালে প্রতিদিনের মতোই অসংখ্য ভক্ত পূজো করছিলেন। তখন মন্দিরের একপাশে বসে আপন মনে কাটছিল নিজের জিবটি। এ সময় এর চাতাল লাল হয়ে যায় ফোঁটা ফোঁটা রক্তে।

কাটার পর সে তার পায়ের কাছে রাখা একটি বাটিতে জিব আর একটি চিরকুট রাখে। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি ভগবান শিবের সেবায় আমার জিব উৎসর্গ করলাম।’ দয়া করে আমাকে মন্দির থেকে তাড়িয়ে দিও না, আমি সারা জীবন ভগবানের পায়ের কাছে বসে থাকতে চাই।’


তবে এ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। তারপর লালমোহনকে বুঝিয়ে শুনিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার জিবটি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেন। তবে তাদের এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছে লালমোহন।


ঝাড়খণ্ডের ওই অঞ্চলটি সাঁওতাল উপজাতিদের বাস। এরা নানা ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাসী। এছাড়া দেবতাদের সন্তুষ্ট করতে তারা নানা ধরনের অদ্ভূত ধর্মীয় আচারাদি পালন করে থাকে। তবে লালামোহনের এ কাজে একটুও বিস্মিত হননি স্থানীয়রা। কেননা এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। বরং এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের বাড়াবাড়িতেই আশ্চর্য হচ্ছেন তারা। 

স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ শর্মা বলেন, ‘এই আদিবাসীরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অদ্ভূত সব ধর্মীয় আচারাদি পালনে অভ্যস্থ। ২০১১ সালে এই একই মন্দিরে এক বালক তার দুটি আঙ্গুল কেটে দেবতাকে উৎসর্গ করেছিল। তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের এখানে নতুন নয়। যদিও বাইরের অনেকে এতে আশ্চর্য হন।’


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন