শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬

সহিহ মুসলিমরা সবচেয়ে সংখ্যালঘু হবার পথে

লিখেছেন সমকোণী বৃত্ত

"২০৭০ সালের মাঝেই ইসলাম হবে তামাম দুনিয়ার সবচেয়ে সংখ্যালঘু অনুসারীদের ধর্ম" (প্রাসঙ্গিক একটি পোস্ট দেখুন) - না, আপনি ভুল পড়েননি, ঠিকই পড়েছেন। আসুন, বিষয়টা একটু পরিষ্কার করা যাক।

পৃথিবীতে বর্তমানে মুসলিমের সংখ্যা ১৫০ কোটির আশেপাশে। কিন্তু সহিহ মুসলিমের সংখ্যা কত?

আসুন, যারা সহিহ মুসলিম নয় তাদের বাদ দিয়ে হিসাব করি, তাহলেই সহিহ মুসলিমের সঠিক সংখ্যাটা জানা যাবে।

তালেবানরা সহিহ মুসলিম নয়,
বোকো হারাম সহিহ মুসলিম নয়,
আইসিসরা সহিহ মুসলিম নয়,
লাস্কার-ই-তাইয়্যিবাও সহিহ মুসলিম নয়,
আল-কায়দাও সহিহ মুসলিম নয়,
আন্সারুল্লাহ বাংলা সহিহ মুসলিম নয়,
হামাস সহিহ মুসলিম নয়,
জামাতে ইসলাম সহিহ মুসলিম নয়,
হরকত-উল-জিহদও সহিহ মুসলিম নয়,
যারা নামাজ পড়ে না, তার সহিহ মুসলিম নয়,
যারা নিয়মিত পড়ে না, তারাও সহিহ মুসলিম নয়,
যারা ধর্ষণ করে তারাও সহিহ মুসলিম নয় (যদিও ধরা পড়ার আগে সহিই ছিল),
যারা পর্দা করেনা তারা সহিহ মুসলিম নয়,

আরো কিছু সংগঠন যেমন [হরকত-উল-জিহাদ, হরকত-উল-মুজািহদিন, জইস-মুহদ, জিহাদ-এ-মুহদ, তাহ-রিখ-এ-নিফাজ-সিরায়াত-এ-মুহদ, আল-হিকমা, আল-বদর-মুজািহিদন, জামাতে ইসলামিয়া, হিজাব-এ-ইসলািময়া, জিময়াতুল মুজািহিদন বাংলােদশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি বাংলাদেশ (জি), শাহাদাত ই আল হিকমা ও জাত মুসিলম জনতা বাংলােদশ (জেএমজিব), শাহাদাত-ই আল হিকমা, হরকাতুল জিহাদ আল ইসলািম, শহীদ নসুাহ আল আরাফাত বিডে, হিজবুত তাওহিদ, জামায়াত-ই ইয়াহিয়া, আল তুরাত, আল হারাত আল ইসলামিয়া, জামাতুল ফালাইয়া তাওহিদি জনতা, বি ইসলামী, জুাতুল আল সাদাত, শাহাদাত-ই-নবুওয়ত, আহর দল, জইশ মাফা বাংলাদেশ, আল জিহাদ বাংলাদেশ, ওয়ারত ইসলািমক, জামায়াত-আস-সাদাত, আল খিদমত, হরকত-এ ইসলাম আল জিহাদ, হিজবুহ ইসলামী সমাজ, মুসিলম শিরয়া কাউলি, ওয়া ইসলামিক ফর জিহাদ, জইশ মুহাদ, তা আমীর উদীন বাংলাদেশ, হিজবুল মাহাদী, আল ইসলাম মাটায়ারস বিডে ও তানজীম] এরা কেউই সহিহ মুসলিম নয়,

কিছু তরিকা যেমন: আটরশি, চরমোনাই, দেওয়ানবাগ, রসুলবাগ, কুতুববাগ, মাইজভান্ডারী, এনায়েতপুরী, শার্ষিনা, কল্লাশাহ, খাজাবাবা, চন্দ্রপুরী - এরাও সহিহ মুসলিম নয়,

আরো কত দল যে হবে... আরো আছে সেসব সহ এগুলো বাদ দিয়ে সহিহ মুসলিমের সংখ্যা বের করুন, বের করে আমাকে জানান।

আমার আবার বড় বড় হিসেব দেখলেই ঘুম আসে।

এক জোড়া পোস্টার

সাইনবোর্ডে লেখা: "চার্চ চত্বরের পাহারায় আছে কুকুরেরা"
ওপরে-নিচে বড়ো হরফে লেখা: "ঈশ্বর নয় কেন?"
(অনুবাদসহ পাঠিয়েছেন মোকাম্মেল)

কোরান কুইজ – ৯০

নিশ্চয়ই মোমিন মুসলমানগণ কোরান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখেন। বেয়াড়া নাস্তিকগনও নিজেদেরকে কোরান-অজ্ঞ বলেন না কখনও। তাই মুসলিম-নাস্তিক নির্বিশেষে সকলেই অংশ নিতে পারেন কোরানের আয়াতভিত্তিক এই ধাঁধা প্রতিযোগিতায়। এই সিরিজের মাধ্যমেই তাঁরা নিজেদের কোরান-জ্ঞান যাচাই করে নিতে পারবেন। 

প্রশ্ন ১০০: মৃত্যকালে মানুষের প্রাণহরণ করে কে?

১) একজন ফেরেশতা
২) একাধিক ফেরেশতা
৩) আল্যা স্বয়ং

উত্তর বেছে নিয়েছেন? এবারে মিলিয়ে দেখুন।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.

উত্তর ১০০: 

তিনটি উত্তরই সঠিক:
১. একজন ফেরেশতা (সুরা ৩২:১১) 
২. একাধিক ফেরেশতা (সুরা ৪৭:২৭)
৩. আল্যা স্বয়ং (সুরা ৩৯:৪২)

পরম বিনোদনের ব্যাপার এই যে, একজন খাছ মুছলিম কোরানের অজস্র পরস্পরবিরোধী বাণী ও অগণ্য ভুল নিজে চোখে দেখলে বা অনুধাবন করলেও অবলীলায় দাবি করে - এই কিতাবখানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, যা সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত, যাতে কোনও অসামঞ্জস্য নেই। এই জাতীয় চোখ-থাকিতেও-অন্ধ মানুষদের সম্পর্কে রিচার্ড ডকিন্স বলেছিলেন: "মানবজাতির কলঙ্ক" (a disgrace to the human species)।

* কোরানের ছয়টি ভিন্ন অনুবাদ একসঙ্গে পাওয়া যাবে এখানে

** কৃতজ্ঞতা: আবুল কাশেম।

শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬

ইছলাম ত্যাগের কারণসমূহ - ১৭

ব্রিটেনের কাউন্সিল অভ এক্স-মুসলিম নামের সংগঠনের উদ্যোগে #ExMuslimBecause নামে টুইটারে একটি প্রচারণা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রাক্তন মুছলিমরা উপস্থাপন করছে ইছলাম ত্যাগের বিবিধ কারণ। অতি দীর্ঘ ও ক্রমবর্ধমান এই কারণ-তালিকা থেকে কিছু সরস ও সিরিয়াস কারণ অনুবাদ করে প্রকাশ করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। এতে যুক্ত করা হচ্ছে/হবে ধর্মকারীর ঠিকানায় পাঠানো লেখা/ছবি/ভিডিওও।

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬

BharathRF:  আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ব্লগার ও কার্টুনিস্টদের 'আক্রমণ' থেকে যার সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হয়, সেই আল্যা কীভাবে অন্যদের রক্ষা করবে?

NoorTwinks: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ মনুষ্যসৃষ্ট কোনও কিছুতেই আমি ভয় পাই না।

ঘুণপোকা: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ অমুসলিমের মৃত্যু-সংবাদে যে-দোয়া পড়া হয়, সেটা আসলে অভিশাপ। ছিঃ, ইসলাম!

a jimmin n a jammin:  আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ধর্ম ছাড়া পৃথিবী অনেক সুন্দর হতো।

Milad Jama: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ একজন কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান হিসেবে আমি নবীর সক্রিয় দাসপ্রথাচর্চা সমর্থন করতে পারি না।

হাবিবুর: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমাদের হিন্দু প্রতিবেশী পরিবারকে নিজ দেশ ত্যাগ করতে হয়েছে মুসলিমদের অত্যাচারে।

the_mehran:  আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম একমাত্র ধর্ম, যার ‌একান্ত নিজস্ব 'ফোবিয়া' আছে।

Frank: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ ও সাধারণ জ্ঞান।

রাফাত সিরাজ নির্ঝর: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম ঘৃণা করে বাকস্বাধীনতা, সঙ্গীত, নাচ, কার্টুন, অবিশ্বাসী, সমকামী, নারী, কুকুর ও মানবাধিকার।

Ahmed: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ "কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য..." (কোরান ৮:৪১)

মুসলমান - ইসলাম = মানুষ

লিখেছেন পুতুল হক

মুসলমানের মধ্য থেকে ইসলামটুকু নিয়ে নিন, সে তখন আর দশটা সাধারণ মানুষের মত মানুষ। জিহাদের নামে সে নিজেকে বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেবে না। বাবার বিরুদ্ধে ছেলে দাঁড়াবে না, ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাই দাঁড়াবে না। শুধুমাত্র অ-ইসলামী হবার কারণে কারো মাথা কেটে নিতে তখন তাদের ঠিক হাত কাঁপবে। 

একজন হিন্দু বা ইহুদি বা খ্রিষ্টানের সাথে মুসলমানের কোনো পার্থক্য নেই। তারা একইভাবে হাসে, কাঁদে, সুখ পায়, দুঃখ পায়, ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পার্থক্য শুধুমাত্র তাদের বিশ্বাসে। যখনই সে মুসলমান, তখনই সে বাকিদের জন্য হুমকি। তখন সে সমগ্র পৃথিবী ইসলামের ছায়াতলে আনার স্বপ্ন দেখে। পৃথিবীর সকল নারীকে কালো বোরখায় ঢেকে দেয়ার স্বপ্ন দেখে। 

মোহাম্মদের বাহিনীর কথা ভাবুন একবার। এরা কিন্তু একই আরবে বসবাসকারী যারা ইহুদি, খ্রিষ্টান আর পৌত্তলিক হয়ে পাশাপাশি বসবাস করেছে ইসলামের আগ পর্যন্ত। তাদের মধ্যে ঝগড়া-ফ্যাসাদ ছিল, কিন্তু ধর্মের নামে একে অপরকে কখনো নির্মূল করেনি। এরাই যখন মুসলমান হলো, তখন বানু নাদীর, বানু কাউনুকা, বানু কোরাইজা ধ্বংস করে দিলো। 

কা’বা ঘর, যাকে মুসলমান এখন বলে আল্লার ঘর, সেখানে কি ইসলামের পূর্বে যে কোনো ধর্মের মানুষ প্রার্থনা করতে যায়নি? ৩৬০ টি মূর্তিকে যারা ভাঙে, এক সময় তারাই এদের পুজা করেছে। পূর্বপুরুষ যাদের শ্রদ্ধা করেছে, ভালবেসেছে তাদের কী অবলীলায় ধ্বংস করে দিলো! আরবের লোক বেদুঈন ছিল, যাযাবর ছিল, পৃথিবীর অন্য অংশের তুলনায় হয়তো পিছিয়ে পড়ে ছিল, কিন্তু ইসলামের জন্মের আগে তারা গণহত্যা করেছে বলে শুনেছেন? অথচ পরবর্তীতে এরাই ধ্বংসে মেতে উঠলো। 

একটা ভয়ংকর মানসিক রোগের নাম ইসলাম। এই রোগে মানুষ তার প্রকৃত পরিচয় ভুলে যায়, তার বিবেক পচে যায়, বিচার-বিবেচনার স্বাভাবিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। স্কুল থেকে দু'শ কিশোরী ধরে নিয়ে যায় মুসলমান, প্রকাশ্যে ক্রীতদাসী বিক্রি করে মুসলমান, সাংবাদিকের মাথা কেটে ফেলার দৃশ্য সগর্বে প্রচার করে মুসলমান। ইসলামে মানবতা, গণতন্ত্র, নারী স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। তাই মুসলমানরা এসবের বিরোধী। ইসলামে দুনিয়ার জীবন গুরুত্বহীন, তাই উন্নতি-প্রগতির বালাই নেই। মুসলমান ফিরে যেতে চায় ১৪০০ বছর আগের যুগে, যখন সমতল পৃথিবীর ওপর সাত আসমান ছিল আর খুঁটি দিয়ে পৃথিবী গেড়ে দেয়া হয়েছিল। 

একটা ভদ্র শিক্ষিত ছেলেও একসাথে চার স্ত্রীর কথা ভাবে, যদি সে হয় মুসলমান। চিন্তা করা যায়, একজন স্বামী তার স্ত্রীকে ফেলে রোজ রাতে দাসী ভোগ করবে, কিন্তু স্ত্রী তাকে কিছুই বলতে পারবে না! আপনি যতই পাপ করুন, যতই অন্যায় করুন, আল্লার সাথে কাউকে অংশীদার না করলে আপনার সব পাপ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। 

তবে মুসলমানের মধ্য থেকে ইসলামটুকু বের করে দিলে সে আর পৃথিবীর জন্য, মানবতার জন্য হুমকি হবে না। সে তখন সাধারণ মানুষ, যার মনে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, মানুষের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা থাকে, যে অন্যের মত প্রকাশকে নিশ্চিত করে, প্রিয়তমার হাত ধরে হাঁটার সময় তার খোলা চুলের সুবাস নেয়।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

চার দ্বিপদী

১.
এক শিশিতে বিশ্বাস আর আরেক শিশিতে ভয়
এই দু'শিশির ঝাঁকুনিতেই ধর্ম জন্ম হয়
(লিখেছেন মুস্তাফিজ রহমান)

২.
হাদিছ ঘেঁটে কোরান ঘেঁটে জানি আমি পষ্ট,
যে রচেছে এসব, সে তো বদের মহান, নষ্ট
(লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সাঃ))

৩.
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গেয়েছিলেন:
অলির কথা শুনে বকুল হাসে
কই, তাহার মতো তুমি আমার কথা শুনে হাসো না তো

সেই দুই চরণের ছান্দস ত্রুটিযুক্ত প্যারোডি:
আল্যার কথা শুনে নাস্তিককুল হাসে,
কই, তাদের মতো মমিন আল্যার কথা শুনে হাসে না তো

৪.
৫৪, ৯-এ ব্যাপক ফারাক - যতোই বলুক গণিতে
আল্যা চাইলে বৃদ্ধ-শিশ্ন দংশায় কচি যোনিতে

ক্রুশের ছবি – ১৮

শুধুই ক্রুশের ছবি। অন্যদিকে নজর গেলে তার দায় ধর্মপচারকের নহে!


ডাস্টবিন থেকে কুড়আনো চিন্তা - ১৫

লিখেছেন ধর্মব্যবসায়ী

৫৬.
নাস্তিক বলল, "ওরে মমিন, তোর পোঁদ মারা গেল বলে!"
মমিন বলল, "আল্লাপাক আমার রক্ষাকর্তা।"

আল্লা বর্শা-বল্লম হাতে মমিনের গুহ্যদ্বারে বসে মমিনের পোঁদ পাহারা দিতেছে, দৃশ্যটা কল্পনা করেই নাস্তিক হাসতে হাসতে শেষ।

৫৭.
দাবি করা হয়, বুদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম নাকি দর্শননির্ভর। তাহলে ইসলাম ধর্ম কি ধর্ষণনির্ভর? 

৫৮.
টিভিতে খবর দেখাল - রাতের অন্ধকারে মূর্তি ভাঙতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে আওয়ামিলীগ কর্মী।
অ্যান্টিলীগ মমিন: "দেখ দেখ, লীগই রাতে মূর্তি ভেঙে জামাতের ঘাড়ে চাপায়।
নাস্তিক: "আওয়ামীলীগ হইলে মুসলমান হওয়া যাবে না, এমন কোনো কথা আছে? প্রতিমার মত শিরক বেদাতি জিনিস ভাঙা প্রত্যেকটা মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব, এবং সুন্নতও বটে।"

৫৯.
রাব-বুল-আলামিন = রবের ষাঁড় আলামিন (মোহম্মদ)

৬০.
মডারেট মুচুল্লিরা সহি মুসলিমদের সহিংসতা ধামাচাপা দিতে কয়, "সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নাই।"
কথা সইত্য, এ জন্যেই ইসলাম কোনো ধর্ম না, ইহা পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান।

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬

দ্য গ্রেইট ইছলামী পিছলামি

চুরির শাস্তি - চোরের হাত কেটে ফেলা, 
বিবাহবহির্ভূত যৌনসম্পর্কের শাস্তি - পাথর ছুঁড়ে হত্যা, 
ইছলাম ত্যাগের শাস্তি - হত্যা... 
ইত্যাকার বর্বর বিধানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে কোরান অনুমোদিত এবং সেসব ইছলামী আইনের অন্তর্ভুক্তও বটে। সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন যে কোনও মানবিক মানুষই ভয়াবহ এই কুৎসিত বিধানগুলোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকে।

তবে খাছ মুছলিমদের যদি প্রশ্ন করা হয়, ওপরোক্ত আইনগুলো তারা সমর্থন করে কি না, তারা 'হ্যাঁ' অথবা 'না' উত্তর দেয় না প্রায় কখনওই। কারণ ঘোর অমানবিক এই আইনগুলো সমর্থন করলে নিজেদের বর্বরতা প্রকাশিত হয়ে পড়ে, আবার বিরোধিতা করলে ক্ষুণ্ণ হয়ে যায় নিজেদের মুছলিম পরিচয়... এই দোটানায় পড়ে তারা প্রয়োগ করতে শুরু করবে ছহীহ ইছলামী পিছলামি।

সোয়া সাত মিনিটের ভিডিওতে এমন কয়েকটি পিছলামির অপূর্ব সংকলন:

ভিডিও লিংক:https://youtu.be/j7GZNaZkkio

ফাতেমা দেবীর ফতোয়া - ২৯

লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সঃ)

১৪১.
বাংলাস্তানে নিরীহ বাউলদের হত্যা করে কারা? মূর্তি ভাঙে কারা? উস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁর বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে ছাই করে কারা? নাস্তিক লেখকদের কুপিয়ে, জবাই করে হত্যা করে কারা? অমুসলিমদের উপাসনালয় ভাঙে কারা, পোড়ায় কারা? বৌদ্ধমূর্তি ভাঙে কারা?

যাদের এত এত অবদান বাংলাস্তানকে পৃথিবীর দরবারে নতুন নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য, তাদেরকে সরকার শুধু লালন-পালন করছে, এসব মহান কাজে উৎসাহ উদ্দীপনা দিচ্ছে। কিন্তু কোনো পুরস্কার দিচ্ছে না কেন?

১৪২.
আল্যা এত আত্মপ্রদক্ষিণরত কেন? তার রচিত কেতাব কুরান জুড়ে তিনি কেবলই আমি-আমি-আমি-আমিই-আমিই-আমিই... করেছেন কেন?

১৪৩.
- নবীজির অনেকগুলি বিবি দাসী ও গনিমত ছিল ছহবত করার জন্য। কিন্তু বড় বিবি খাদিজা ছাড়া আর কারো গর্ভে তিনি বাচ্চা পয়দা করতে সক্ষম হননি কেন?

- খাদিজা মারা যাবার সময় নবীজির বয়স ছিল ৫০ বছর। তারপরই নবীজি বেহিসাবে বিবাহ করতে শুরু করেন এবং দাসী ও গণিমত ছহবত করতে শুরু করেন এতোদিনের অবদমিত কাম চরিতার্থ করার জন্য। অপরদিকে খাদিজা নবীজির আম্মুর বয়েসী ছিলেন বলে ছেলের বয়েসী নবীজির চাহিদা মেটাতে অক্ষম ছিলেন। কিন্তু নবীজি খাদিজার চাকর ছেলে ছিলেন বলে খাদিজার জীবদ্দশায় অন্য কারুর সাথে কামলীলা করার হিম্মত করতে পারেননি। খাদিজা মারা যাবার সময় নবীজির বয়েস ৫০ ছিল এবং তার বলে আর তেমন বল ছিল না বলে এত অগণিত জনের সহিত ছহবত করেও কোনো সন্তান উৎপাদন করতে পারেননি। আহারে!

১৪৪.
শান্তির ধর্মের অনুসারীরা দৈনিক পাঁচবার আজান নামের অশ্রাব্য শব্দদূষণ সৃষ্টি ক'রে শান্তিপ্রিয় জনসাধারণের শান্তি কেড়ে নেয়। বিশেষ করে, শেষরাতে মানুষ যখন গভীর ঘুমে নিমগ্ন থাকে, তখন অকথ্য অশ্রাব্য স্থূলতম শব্দ সৃষ্টির মাধ্যমে নিদ্রিত নিরপরাধ মানুষের নিদ্রা ভঙ্গ ক'রে পৃথিবীতে দোজগী পরিবেশের অবতারণা করে। এটা শান্তির ধর্মের অনুসারী শান্তিকামীদের দ্বারা সৃষ্ট বোনাস অশান্তি।

১৪৫.
অনেকেই অভিযোগ করে থাকে, আল্ল্যাকে ডেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায় না, বিপদে আপদে তার কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে কখনো পাওয়া যায় না, দুর্ভিক্ষের সময় খাবার পাওয়া যায় না... ইত্যাদি। কিন্তু আল্যাকে কাবাঘরে চিরগৃহবন্দী করে রেখে তার কাছে সাহায্য চাওয়া ও তাকে ডাকাডাকি করা তো চূড়ান্ত ব্যঙ্গাত্মক ব্যাপার। আল্যা নিজে অসহায়ভাবে বন্দী থেকে অন্য কাউকে কীভাবে সাহায্য সহযোগিতা করবেন? কোন অপরাধে তাকে বন্দী করে রাখা হলো? তাকে কি কোনোদিন মুক্তি দেয়া হবে না? আল্যার কি কোনো আল্যাধিকার নেই?

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

ধর্মের ভণ্ডামি ও ভণ্ডামির ধর্ম

সার্বিকভাবে যুক্তিপ্রবণ, পরিণতমনস্ক, সক্রিয়মস্তিষ্ক ও চিন্তাশীল মানুষদের সঙ্গে ধর্মব্যবসা লোকসানেরই পথ দেখে শুধু, ধর্মবাজেরা সেটা খুব ভালো করেই জানে। তাই তাদের লক্ষ্য থাকে অবুঝ শিশুদের প্রতি, যাদের মগজে ভিত্তিহীন ভীতি ও প্রলোভন প্রবিষ্ট করিয়ে দিয়ে ধর্মভীরু বানিয়ে ফেলা একেবারেই শ্রমসাধ্য ব্যাপার নয়। 

একটা সাইট নজরে পড়লো muslimconverts.com নামে। সেখানে শিশুদের জন্যও একটি অংশ আছে, যেখানে লেখা আছে, একেবারে খুদে শিশুরাও চাইলে পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়াই নূরের পথে আসতে পারবে। অর্থাৎ বাবা-মাকে না চটিয়ে চুপচাপ ইসলাম গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এবং বলা হচ্ছে, পরে যখন সাহস ও তাগদ হবে, তখন তাদেরকে কথাটা পেড়ে ফেললেই চলবে। 
If you are a Small child you can still become a Muslim without your parents permission. 
If you are a child you do not need your parent's permission to become a Muslim. If you fear they may harm, you can become Muslim in secret and tell them when you are ready. 
পূর্ণাকারে দেখতে হলে ছবিতে ক্লিক করতে হবে

কী ধূর্ত কাপুরুষতা! কী চূড়ান্ত ভণ্ডামি!

তবে একটি কথা তারা সজ্ঞানেই এড়িয়ে গেছে: ইসলাম-গ্রহণ-করা শিশু প্রাপ্তমনস্ক হবার পর যদি তার বোধোদয় হয় এবং নিজের ভুল বুঝতে পেরে ইসলাম ত্যাগ করে, তখন ইসলামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার যুক্তিতে কোরান-হাদিসের আইন অনুযায়ী তাকে হত্যা করা হবে।

(১০.৬.১২ তারিখে প্রথম প্রকাশিত) 

হা-হা-হাদিস – ১৬৩

কতো রসময় কথা গুপ্ত আছে হাদিসে!

Narated By 'Abdullah bin 'Umar : Once I went upstairs in Hafsa's house and saw the Prophet answering the call of nature with his back towards the Qibla and facing Sham.

ধর্মাতুল কৌতুকিম – ৭২

২১০.
- ইছলামে কেন যে জুয়া নিষিদ্ধ, বুঝতে পারি না।
- কেন, জুয়া ব্যাপারটাই তো খারাপ।
- তা বটে, কিন্তু একেবারেই কোনও তথ্য-প্রমাণ-স্যাম্পল ছাড়া কাল্পনিক ৭২ হুর, গেলমান আর দুধ-মধুর নহরের লোভে নিজেকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার চেয়ে বড়ো জুয়া আর কী হতে পারে?

২১১.
শেষ বিচারের দিনে।
আল্যা: মিথ্যা কথা বলেছো?
বান্দা: বলেছি।
আল্যা: চুরি করেছো?
বান্দা: করেছি।
আল্যা: ধর্ষণ করেছো?
বান্দা: করেছি।
আল্যা: মানুষহত্যা করেছো?
বান্দা: করেছি।
আল্যা: জুম্মার নামাজ কামাই করেছো? 
বান্দা: করিনি।
আল্যা বান্দার সামনে খুলে দিলো বেহেশতের দরজা।

২১২.
- ফেরেশতা হওয়া খুবই সহজ।
- কীভাবে?
- খাদ্য আর কামের প্রয়োজন না থাকলে যে কেউই ফেরেশতা হতে পারে।

সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৬

হুদাইবিয়া সন্ধি-১: প্রেক্ষাপট: কুরানে বিগ্যান (পর্ব- ১১১): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – পঁচাশি

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭ > পর্ব ৭৮ > পর্ব ৭৯ > পর্ব ৮০ > পর্ব ৮১ > পর্ব ৮২ > পর্ব ৮৩ > পর্ব ৮৪ > পর্ব ৮৫ > পর্ব ৮৬ > পর্ব ৮৭ > পর্ব ৮৮ > পর্ব ৮৯ > পর্ব ৯০ > পর্ব ৯১ > পর্ব ৯২ > পর্ব ৯৩ > পর্ব ৯৪ > পর্ব ৯৫ > পর্ব ৯৬ > পর্ব ৯৭ > পর্ব ৯৮ > পর্ব ৯৯ > পর্ব ১০০ > পর্ব ১০১ > পর্ব ১০২ > পর্ব ১০৩ > পর্ব ১০৪ > পর্ব ১০৫ > পর্ব ১০৬ > পর্ব ১০৭ > পর্ব ১০৮ > পর্ব ১০৯ > পর্ব ১১০

"যে মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"

[ইসলামের ইতিহাসে "হুদাইবিয়া সন্ধি (চুক্তি)" এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সন্ধি পরবর্তী সময়ে কুরাইশ ও অন্যান্য অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় নৃশংসতার বৈধতার প্রয়োজনে মুহাম্মদ তাঁদের বিরুদ্ধে এই চুক্তিভঙ্গের অজুহাত হাজির করেন ও  তাঁর আল্লাহর নামে সেই বিখ্যাত “৯:৫ -তরবারির আয়াত (The Verse of the Sword)” সহ সুরা তওবার আরও অনেক নৃশংস আদেশ জারি করেন। ইসলামকে জানতে হলে মুহাম্মদকে জানতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। তাই হুদাইবিয়া সন্ধির এই অধ্যায় থেকে শুরু করে সুরা-তওবা অধ্যায় পর্যন্ত প্রতিটি পর্বের আলোচনা শুরুর পূর্বে "শুরু করিতেছি আল্লাহর নামে"-এর অনুকরণে "যে মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।" বাক্যটি যুক্ত করবো।]

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যায়েদ বিন হারিথা (অথবা আবু বকর) এর অধীনে একদল সৈন্য সহ 'বানু ফাযারাহ' গোত্রের ওপর যে-হামলাকারী দল পাঠিয়েছিলেন, সেই হামলা তারা কীভাবে সম্পন্ন করেছিলেন; কী অমানুষিক পাশবিকতায় তাঁর এই অনুসারীরা উম্মে কিরফা নামক এক অতি বৃদ্ধা মহিলাকে হত্যা করেছিলেন; কীভাবে তারা অন্যান্য বন্দীদের সাথে উম্মে কিরফার কন্যাকে ধরে নিয়ে এসে 'যৌনদাসী'-তে রূপান্তরিত করেছিলেন; মুহাম্মদের আগ্রাসী হামলায় ধৃত এই সুন্দরী রমণীটি 'গনিমতের মাল'-এর অংশ হিসাবে মুহাম্মদের কোন সাহাবীর (মুহাম্মদের জীবিত অবস্থায় দীক্ষিত তাঁর প্রত্যক্ষ অনুসারী) ভাগে পড়েছিল; অতি সম্ভ্রান্ত পরিবারের এক মুক্ত মানুষের অবস্থান থেকে নিমেষেই যৌনদাসী রূপে পরিবর্তিত হওয়ার পর এই অসহায় নারীটির নব্য দাস-মালিক তার এই যৌনদাসীর বস্ত্র উন্মোচন সম্পন্ন করার পূর্বেই কেন তাঁকে মুহাম্মদের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন; সেই অনুসারীর কাছ থেকে এই যৌনদাসীটিকে গ্রহণ করে মুহাম্মদ তাঁকে তাঁর কোন আত্মীয়কে দান করেছিলেন - ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

মুহাম্মদের প্রতিষ্ঠিত ইসলাম নামক আদর্শে উন্মুক্ত শক্তি প্রয়োগে অবিশ্বাসী জনপদের মুক্ত মানুষকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে এসে তাঁদেরকে দাস ও যৌনদাসীতে রূপান্তরিত করে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়া, তারপর তাদেরকে ইচ্ছামত বিক্রি করা (পর্ব- ৯৩) অথবা দান করা (পর্ব-১০১ ও ১১০) সম্পূর্ণরূপে বৈধ!

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) মতে হিজরি ৬ সালের শাবানমাসে (যার শুরু হয়েছিল ডিসেম্বর ১৬, ৬২৭ সাল) মুহাম্মদের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা বানু আল-মুসতালিক গোত্রের লোকদের ওপর অতর্কিত নৃশংস আগ্রাসী হামলা চালান ও তাঁদের সম্পদ লুণ্ঠন করেন, তাঁদের কিছু লোককে খুন করেন ও বহু লোককে বন্দী করে ধরে এনে দাস ও যৌনদাসী রূপে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন (পর্ব-৯৭-১০১);  বানু আল-মুসতালিক হামলার তিন মাস পরে, হিজরি ৬ সালের জিলকদ মাসে (যার শুরু মার্চ ১৩, ৬২৮ সাল), মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ তাঁর ৭০০- ১৪০০ সশস্ত্র অনুসারীকে সঙ্গে নিয়ে মদিনা থেকে মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। যাত্রার প্রাক্কালে তিনি বারংবার ঘোষণা দেন যে, "তিনি ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা যাচ্ছেন, যুদ্ধের উদ্দেশ্যে নয়।" মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা যখন মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া নামক স্থানে পৌঁছান, তখন মক্কাবাসী কুরাইশরা তাদেরকে মক্কা প্রবেশে সক্রিয় বাধা প্রদান করেন। দুই পক্ষের মধ্যে কোন্দলের উপক্রম হয় ও এক পর্যায়ে মুহাম্মদ ও মক্কাবাসী কুরাইশদের মধ্যে এক ঐতিহাসিক সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হয়, ইসলামের ইতিহাসে যা "হুদাইবিয়া সন্ধি (চুক্তি)" নামে বিখ্যাত।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮) বর্ণনা: [1] [2] [3]

'অতঃপর [বানু আল-মুসতালিক হামলা] আল্লাহর নবী রমজান ও শওয়াল মাস মদিনায় অবস্থান করেন এবং জিলকদ মাসে যুদ্ধ করার অভিপ্রায় না নিয়ে ওমরা-হজ পালনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তিনি তাঁর সাথে যোগ দেয়ার জন্য অন্যান্য আরব গোত্র ও প্রতিবেশী বেদুইনদের আহ্বান জানান এই ভয়ে যে, হয়তো কুরাইশরা তাঁর সশস্ত্র বিরোধিতা করবে অথবা তাঁর কাবা-শরীফ দর্শন প্রতিরোধ করবে; তারা আসলে তাইই করেছিল। বহু আরব গোত্র তাঁর সাথে যোগদানে বিরত থাকে  ও তিনি মুহাজির ও আনসার এবং তাঁর সাথে যুক্ত কিছু আরব গোত্রদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। তিনি কুরবানির জন্য পশুদের সঙ্গে নেন ও তীর্থযাত্রীর পোশাক পরিধান করেন, যাতে সকলেই জানতে পারে যে যুদ্ধ করা তাঁর উদ্দেশ্য নয়, তাঁর উদ্দেশ্য হলো কাবা-শরীফ দর্শন ও তার শ্রদ্ধা করা।

মুহাম্মদ বিন মুসলিম বিন শিহাব আল-যুহরি হইতে < উরওয়া বিন আল-যুবাইয়ের হইতে < মিসওয়ার বিন মাখরামা ও মারওয়ান বিন আল-হাকাম আমাকে [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] জানিয়েছেন: 

আল্লাহর নবী হুদাইবিয়া সন্ধি-বর্ষে (year of al-Hudaybiya) শান্তির উদ্দেশ্য কাবা-শরীফ দর্শন অভিপ্রায়ে গমন করেন, তিনি ৭০ টি উট কুরবানির জন্য সঙ্গে নেন। তাঁর সঙ্গে ছিল ৭০০ অনুসারী, যাতে একটি উট ১০ জন লোকের ভাগে পরে। আমি আরও যা শুনেছি তা হলো যাবির বিন আবদুল্লাহ বলতেন যে, "হুদাইবিয়া যাত্রায় আমরা ছিলাম ১৪০০ লোক।"’

- অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।]

>>> মহাকালের পরিক্রমায় এক নির্দিষ্ট স্থান ও সময়ের ইতিহাস হলো সেই নির্দিষ্ট স্থান ও কালের পারিপার্শ্বিক অসংখ্য ধারাবাহিকঘটনাপরম্পরা ও কর্মকাণ্ডের সমষ্টি। এই ধারাবাহিক ঘটনাপরম্পরায় পূর্ববর্তী ঘটনাপ্রবাহের পরিণাম (consequence) পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ঘটনাপরম্পরার এই ধারাবাহিকতাকে উপেক্ষা করে কোনো বিশেষ সময়ের ইতিহাসের স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়; বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। সে কারণেই মুহাম্মদের তথাকথিত নবুয়ত পরবর্তী সময় থেকে হিজরত পূর্ববর্তী সময়ে মুহাম্মদের বাণী (পর্ব: ২৬) ও কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে হিজরত, নাখলা ও নাখলা-পূর্ববর্তী অভিযানের কারণ ও পর্যালোচনা সম্ভব নয়; নাখলা ও নাখলা পূর্ববর্তী অভিযানে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী নৃশংস কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে বদর যুদ্ধের কারণ ও পর্যালোচনা সম্ভব নয় এবং বদর যুদ্ধের ফলাফল ও বদর যুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে ওহুদ যুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের নৃশংস কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে ওহুদ যুদ্ধের কারণ ও পর্যালোচনা অসম্ভব।

নাখলা ও নাখলা পূর্ববর্তী অভিযানের (পর্ব: ২৮-২৯) পরিণাম হলো বদর যুদ্ধ (পর্ব: ৩০-৪৩), আর এই যুদ্ধে কুরাইশদের প্রতি মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের পাশবিক নৃশংসতার পরিণাম হলো ওহুদ যুদ্ধ (পর্ব: ৫৪-৭১); একই ভাবে, ওহুদ যুদ্ধের ফলাফল ও ওহুদ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের ঘটনাপরম্পরার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদের কারণ ও পর্যালোচনা সম্ভব নয়। বনি নাদির (ও বনি কেউনুকা) গোত্র উচ্ছেদ ও কুরাইশসহ অন্যান্য অবিশ্বাসী গোত্রের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের (পর্ব: ৫২-৭৫) পরিণাম হলো খন্দক যুদ্ধ (পর্ব: ৭৭-৮৬); ইসলামের ইতিহাসের এই একই ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে খন্দক যুদ্ধ পরিস্থিতি ও এই যুদ্ধের ফলাফল বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে বনি কুরাইজা গণহত্যার কারণ ও তার পর্যালোচনা  অসম্ভব (পর্ব- ৯৪)।

অনুরূপভাবে, হুদাইবিয়া সন্ধি সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা পেতে হলে মুহাম্মদের নবুয়ত পরবর্তী সময় থেকে হুদাইবিয়া সন্ধি পর্যন্ত ইসলামের ইতিহাসের সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। বিশেষ করে, হুদাইবিয়া সন্ধি-পূর্ববর্তী গত এক বছরে বনি কুরাইজা গণহত্যা (মার্চ, ৬২৭ সাল) সহ অবিশ্বাসী গোত্র ও জনপদের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আরও চোদ্দটি অতর্কিত আগ্রাসী হামলা, খুন, জখম, লুণ্ঠন ও মুক্ত মানুষকে ধরে নিয়ে এসে দাস ও যৌনদাসী করণ এবং উম্মে কিরফা-র পাশবিক হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে হুদাইবিয়া সন্ধির কারণ ও বাস্তবতা অনুধাবন সম্ভব নয়। তাই উৎসাহী পাঠকদের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ এই যে, ইসলাম-বিশ্বাসী অসংখ্য পণ্ডিত ও অপণ্ডিতদের "সুবিধাজনক উদ্ধৃতিযুক্ত" ভাষণ ও রচনায় বিভ্রান্ত হতে না চাইলে, তাঁরা যেন ন্যূনতম পক্ষে পূর্ববর্তী ঘটনা-প্রবাহের অতি সংক্ষেপ সারাংশ ও পর্যালোচনা সম্বলিত নিম্নবর্ণিত এই পর্বগুলোর দিকে আর একবার চোখ বুলিয়ে নেন:

তথাকথিত নবুয়ত প্রাপ্তির সময় থেকে বদর যুদ্ধ পর্যন্ত ঘটনা: পর্ব: ৪১-৪৩
হিজরতের সময় থেকে ওহুদ যুদ্ধ পর্যন্ত ঘটনা: পর্ব: ৬৯
নবুয়ত প্রাপ্তির সময় থেকে বনি কুরাইজা গণহত্যা পর্যন্ত ঘটনা: পর্ব- ৮৬ ও ৯৪
বনি কুরাইজা গণহত্যার সময় থেকে হুদাইবিয়া সন্ধি পর্যন্ত ঘটনা: পর্ব- ১০১ ও ১০৯

অত্যন্ত সংক্ষেপে, মুহাম্মদের নবুয়ত প্রাপ্তির সময় সময় থেকে হুদাইবিয়া সন্ধি পর্যন্ত ইসলামের ইতিহাসের দিকে আর একবার নজর দেয়া যাক:

নবুয়ত পরবর্তী মুহাম্মদের মক্কার নবী জীবনের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস:

৬১০ খ্রিষ্টাব্দের কোনো এক সময়ে হেরা পর্বতের গুহার ভেতর জিবরাইল ফেরেশতা মারফত মুহাম্মদের তথাকথিত নবুয়ত প্রাপ্তির ঘটনাটি ঘটে। এরপর প্রায় তিন বছর মুহাম্মদ তাঁর মতবাদ প্রচার করেন গোপনে, তারপর প্রকাশ্যে। মুহাম্মদ যখন প্রকাশ্যে তাঁর মতবাদ প্রচার শুরু করেন, কোনো কুরাইশই তাঁর প্রচারে কোনোরূপ বাধা প্রদান করেননি; কিন্তু মুহাম্মদ যখন তাঁর ধর্মপ্রচারের নামে কুরাইশদের পূজনীয় দেব-দেবী, কৃষ্টি-সভ্যতা ও পূর্ব-পুরুষদের অসম্মান করা শুরু করেন,
তখন তাঁরা তাঁদের ধর্মরক্ষা ও অসম্মানের প্রতিবাদে মুহাম্মদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।কুরাইশরা মুহাম্মদকে বারংবার এহেন গর্হিত কর্ম থেকে বিরত হওয়ার আহ্বান জানান, কিন্তু মুহাম্মদ তাঁদের কথায় কোনোই কর্ণপাত করেন না। তিনি তাঁর “আল্লাহর নামে (ওহি মারফত)” কুরাইশদের দেব-দেবী ও পূর্ব-পুরুষদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অসম্মান, শাপ-অভিশাপ, পরোক্ষ হুমকি শাসানী ও ভীতি প্রদর্শন পুরোদমে চালিয়ে যান। মুহাম্মদের নিজ গোত্র হাশেমী বংশের গোত্রপ্রধান ছিলেন তাঁর চাচা আবু তালিব, তিনি ছিলেন মক্কার কুরাইশদের সকল সম্মানিত গোত্র প্রধানদের একজন। মুহাম্মদের এই সকল আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে সংক্ষুব্ধ কুরাইশরা এই “হাশেমী গোত্রপ্রধান ও মুহাম্মদের অভিভাবকের কাছে অন্ততঃপক্ষে দু'বার সম্মিলিতভাবে দেখা করে  মুহাম্মদের এহেন গর্হিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান।  আবু তালিব তাঁর ভাতিজা মুহাম্মদকে অনুরোধ করেন যেন মুহাম্মদ কুরাইশদের দেব-দেবী ও পূর্ব-পুরুষদের কোনোরূপ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, উপহাস ও অসম্মান না করে। মুহাম্মদ তাঁর চাচা আবু তালিবের এই অনুরোধ অগ্রাহ্য করেন। ব্যর্থ আবু তালিব কুরাইশদের তাঁর এই ব্যর্থতার খবর জানিয়ে দেন। তিনি তাঁদেরকে আরও জানিয়ে দেন যে, মুহাম্মদের মতবাদ ও কর্মকাণ্ডে তিনি বিশ্বাস করেন না, কিন্তু মুহাম্মদের বিরুদ্ধে তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না এবং গোত্রপ্রধান ও অভিভাবক হিসাবে তিনি মুহাম্মদকে যে কোনো আপদে ও বিপদে স্বগোত্রীয় নিরাপত্তা সুবিধা দান করবেন।

সেই অবস্থায় একান্ত বাধ্য হয়ে মুহাম্মদের অসহনশীল, তাচ্ছিল্য ও আক্রমণাত্মক মতবাদের বিরুদ্ধে কুরাইশরা কঠোর জনমত ও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ও  তাঁরা তাঁদের ধর্মান্তরিত পরিবার সদস্য, প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের বিভিন্ন উপায়ে পূর্ব-ধর্মে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। ফলে কুরাইশদের যেসব পরিবারের সদস্য, প্রিয়জন ও বন্ধু-বান্ধবরা মুহাম্মদের মতবাদে একদা দীক্ষিত হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আবার তাঁদের পূর্ব-ধর্মে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ পরিবার পরিজনদের সাথে যোগদান করতে থাকেন। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মুহাম্মদ তাঁর ধর্মরক্ষার খাতিরে নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে (৬১৫ সাল) তাঁর অনুসারীদের তাঁদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবিসিনিয়ায় হিজরত করার আদেশ জারি করেন।

সুদীর্ঘ সাত বছর কুরাইশরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এই সব কর্মকাণ্ড সহ্য করার পর, অতিষ্ঠ সংক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ কুরাইশরা অনন্যোপায় হয়ে মুহাম্মদের পৃষ্ঠপোষক হাশেমী গোত্রের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ “সামাজিক ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা” জারি করেন; যা তাঁরা মুহাম্মদের তথাকথিত নবুয়ত প্রাপ্তির সপ্তম থেকে নবম বছর (৬১৬-৬১৯ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত (দু'–তিন বছর) চালু রাখেন। পরবর্তীতে মুহাম্মদের উপরি বর্ণিত গর্হিত কর্ম-তৎপরতা চালু থাকা সত্ত্বেও ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে এই কুরাইশরাই আবার দয়া-পরবশ হয়ে এই নিষেধাজ্ঞাটি বাতিল করেন। হিজরতের প্রায় তিন বছর আগে (৬১৯ সাল) সর্বাবস্থায় সাহায্য ও সহায়তাকারী স্ত্রী খাদিজা ও সগোত্রীয় নিরাপত্তা সুবিধা দানকারী চাচা আবু-তালিব অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে মৃত্যুবরণ করেন। আবু-তালিবের মৃত্যুর পর মুহাম্মদের চাচা আবু লাহাব হাশেমী বংশের গোত্রপ্রধান নিযুক্ত হন ও তিনি তাঁর ভাই আবু তালিবের মতই মুহাম্মদের ওপর স্বগোত্রীয় নিরাপত্তা সুবিধা জারি রাখেন। কিন্তু যখন আবু লাহাব জানতে পারেন, মুহাম্মদ প্রচার করছেন যে, তাঁর পিতা আবদ আল-মুত্তালিব (মুহাম্মদের দাদা)-এর স্থান হলো জাহান্নামের আগুন, তিনি মুহাম্মদের ওপর থেকেস্বগোত্রীয় নিরাপত্তা সুবিধা বাতিল করেন এবং প্রতিজ্ঞা করেন যে, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, ততদিন মুহাম্মদের এমনতর অসম্মান ও গর্হিত প্রচারণার বিরোধিতা করবেন। হাশেমী বংশের গোত্র-সুবিধা বাতিল হওয়ার পর কুরাইশরা মুহাম্মদের অসহনশীল, তাচ্ছিল্য ও আক্রমণাত্মক মতবাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর জনমত গড়ে তোলেন ও তাঁরা তাঁদের ধর্মান্তরিত পরিবার সদস্য, প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের বিভিন্ন কলা-কৌশলের মাধ্যমে পূর্ব-ধর্মে ফিরিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টা চালান। ফলে কুরাইশদের যেসব পরিবারের সদস্য ও প্রিয়জনরা মুহাম্মদের মতবাদে দীক্ষিত হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই আবার তাঁদের পূর্ব-ধর্মে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ পরিবার পরিজনদের সাথে যোগদান করতে থাকেন।

এমত পরিস্থিতিতে মক্কায় মুহাম্মদের ধর্ম-প্রচার প্রচণ্ড বাধাগ্রস্ত ও অনিশ্চিত হয়ে পরে। এই সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে মুহাম্মদ গোপনে প্রথমেই গমন করেন তায়েফে (৬১৯ সাল) ও তায়েফের গণ্যমান্য বিশিষ্ট নেতৃবর্গদের তিনি তাঁর নিজ বাসভূমি মক্কার কুরাইশদের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেন, তাঁরা তাঁর প্রস্তাবে রাজি হননি। মুহাম্মদ তাঁর নবী-জীবনের এই কঠিন মুহূর্তে সৌভাগ্যক্রমে মদিনা থেকে মক্কায় আগত কিছু তীর্থযাত্রীর সন্ধান পান, তাঁরা মুহাম্মদের মতবাদে আগ্রহ প্রদর্শন করেন। তায়েফের মতই এবারও মুহাম্মদ মক্কাবাসী কুরাইশদের বিরুদ্ধে এই বিদেশীদের সাথে গোপনে বৈঠক করেন (১ম ও ২য় আকাবা); তাঁরা মুহাম্মদকে মদিনায় হিজরত করার আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে মুহাম্মদ ও তাঁর হিজরতকারী অনুসারীদের সর্বাত্মক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। জীবনের এই কঠিন মুহূর্তে মুহাম্মদ “তাঁর ধর্মরক্ষার চেষ্টায়” তাঁর অনুসারীদের মদিনায় হিজরত করার আদেশ জারি করেন এবং  প্রলোভন, হুমকি ও এমনকি হত্যার আদেশ জারি করে মুহাম্মদ তাঁর অনিচ্ছুক অনুসারীদের মদিনায় হিজরত নিতে বাধ্য করেন। কিছু কাল পর তিনি নিজেও মদিনায় হিজরত করেন (সেপ্টেম্বর ২৪, ৬২২ সাল); কুরাইশরা নয়, মুহাম্মদ নিজ স্বার্থে তাঁর অনুসারীদের তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে মদিনায় তাড়িয়ে নিয়ে আসেন।

হুদাইবিয়া সন্ধি পূর্ববর্তী সাড়ে পাঁচ বছরের মুহাম্মদের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস:

মদিনায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনের (সেপ্টেম্বর, ৬২২ সাল) পর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ছিলেন সম্পূর্ণভাবে মদিনাবাসী মুহাম্মদ অনুসারীদের (আনসার) স্বল্প আয়ের ওপর নির্ভরশীল! অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ! এমত পরিস্থিতিতে দলপতি মুহাম্মদের আদেশ ও নেতৃত্বে বাণিজ্য-ফেরত কুরাইশ কাফেলার ওপর রাতের অন্ধকারে অতর্কিত হামলা করে জোরপূর্বক তাদের মালামাল লুণ্ঠনের অভিযান শুরু করেন। পর পর সাতটি ডাকাতি চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর মুহাম্মদের আদেশে তাঁর অনুসারীরা প্রথম সফল আগ্রাসী অভিযান ও সহিংস যাত্রার গোড়াপত্তন করেন "নাখলা" নামক স্থানে (জানুয়ারি, ৬২৪ সাল); মুহাম্মদ ও কুরাইশদের মধ্যে পরবর্তী যাবতীয় সহিংস সংঘর্ষের আদি কারণ হলো নাখলায় এই বাণিজ্য কাফেলা ডাকাতি ও সহিংসতা। এরই ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হয় বদর যুদ্ধ। বদর যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ৭২ জন কুরাইশকে নৃশংসভাবে খুন করেন (দু'জনকে বন্দী অবস্থায়); খুন করার পর তাঁরা সেই লাশগুলোকে অমানুষিক ঘৃণা ও অশ্রদ্ধায় বদর প্রান্তের এক নোংরা শুষ্ক গর্তে একে একে নিক্ষেপ করেন ও  ৬৮ জনকে বন্দী করে মদিনায় ধরে নিয়ে আসেন। মাত্র পাঁচ জন ছাড়া বাকি ৬৩ জন বন্দীর প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা সর্বোচ্চ ৪০০০ দিরহাম মুক্তি-পণ আদায় করেন (পর্ব: ৩০-৪৩)।

বদর যুদ্ধের অপ্রত্যাশিত সাফল্যের পর মুহাম্মদ আরও বেশি বেপরোয়া ও নৃশংস হয়ে ওঠেন। তিনি পর পর মদিনার বেশ কয়েকটি মানুষকে খুনের আদেশ জারি করেন। তাঁর অনুসারীরা অমানুষিক নৃশংসতায় তাঁর সেই আদেশ কার্যকর করেন। মুহাম্মদ এই খুনিদের ভূয়সী প্রশংসা করেন ও উপাধিতে ভূষিত করেন। এই মানুষগুলোর অপরাধ ছিল এই যে, তাঁরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের "মৌখিক প্রতিবাদ ও সমালোচনা" করেছিলেন। একই সাথে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা বনি কেইনুকা ইহুদি গোত্রকে তাঁদের শত শত বছরের আবাসভূমি মদিনা থেকে উচ্ছেদ করেন ও তাঁদের সম্পত্তি লুট করেন (পর্ব: ৪৬-৫১); মুহাম্মদ বনি কেইনুকা গোত্রের সমস্ত লোককে খুন করতে চেয়েছিলেন. তাঁদের প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল আবদুল্লাহ বিন উবাই নামের এক অসীম সাহসী আদি মদিনাবাসীর কল্যানে।

বদর যুদ্ধের ঠিক এক বছর পরে (মার্চ, ৬২৫ সাল), বদর যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা কুরাইশদের প্রতি যে-নৃশংসতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় মক্কাবাসী কুরাইশরা প্রতিশোধস্পৃহায় উহুদ যুদ্ধটি সংঘটিত করেন। ওহুদ যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের চরম পরাজয় ঘটে, সমবয়সী চাচা হামজা বিন আবদুল মুত্তালিব সহ ৭০ জন অনুসারী হন খুন ও তাঁর নবী-গৌরব হয় ধূলিস্যাৎ (পর্ব: ৫৪-৭১)!

ওহুদ যুদ্ধের এই চরম পরাজয়ের পর মুহাম্মদ ব্যর্থ হন পর পর আরও বেশ কিছু কর্মকাণ্ডে (পর্ব: ৭২-৭৪); ওহুদ যুদ্ধের পর ছয়টি মাসের একের পর এক চরম বিপর্যয়ে নাস্তানাবুদ মুহাম্মদ পরিস্থিতি সামাল দিতে ও প্রতিপক্ষের কাছে তাঁর শক্তিমত্তার নিদর্শন পেশ ও তাঁর অনুসারীদের পার্থিব সুযোগ-সুবিধা (গণিমত) ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, তিনি নিরপরাধ বনি নাদিরগোত্রকে “জিবরাইলের অজুহাতে" জোরপূর্বক বিতাড়িত করেন ও তাঁদের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করেন। বনি কেইনুকা গোত্রের মত এবারেও মুহাম্মদ বনি নাদির গোত্রের সমস্ত লোককে খুন করতে চেয়েছিলেন! তাঁদের প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল আবারও সেই একই আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের কল্যাণে (পর্ব: ৫২ ও ৭৫)।

হুদাইবিয়া সন্ধি পূর্ববর্তী এক বছরেরমুহাম্মদের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস:

বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদ ও অবিশ্বাসী জনপদের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের উপর্যুপরি একের পর এক আগ্রাসী হামলার ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হয় খন্দক যুদ্ধ (পর্ব:৭৭-৮৬); মুহাম্মদের অধিকাংশ অনুসারী খন্দক যুদ্ধে কীরূপ অসহায় ও ভীত-সন্ত্রস্ত ছিলেন, ওহুদ যুদ্ধের মতই খন্দক যুদ্ধেও মুহাম্মদের বহু অনুসারী কীভাবে মুহাম্মদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছিলেন, তাঁর প্রাণবন্ত ইতিহাস মুহাম্মদের স্বরচিত ব্যক্তিমানস জীবনীগ্রন্থ কুরান ও আদি বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত সিরাত ও হাদিসে বর্ণিত আছে।

এমত পরিস্থিতিতে অনুসারীদের কাছে নিজের শক্তিমত্তার প্রমাণ উপস্থাপন করতে, অনুসারীদের পার্থিব সুযোগ সুবিধার জোগান (গণিমত) নিশ্চিত করতে ও প্রয়োজনে ‘তিনি' কতটা নিষ্ঠুর হতে পারেন" এই বার্তা প্রতিপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে উচ্চাভিলাষী নৃশংস মুহাম্মদ 'জিবরাইলের অজুহাতে" হুদাইবিয়া সন্ধির এক বছর আগে বানু কুরাইজা গণহত্যা সংঘটিত করেন! মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা মদিনার বাজারে গর্ত খুঁড়ে সেই গর্ত-পাশে তাঁদের ৬০০-৯০০ জন নিরস্ত্র পুরুষ মানুষকে দলে দলে ধরে এনে এক এক করে জবাই করে খুন করেন ও তারপর তাঁদের কাটা-মুণ্ডু ও লাশ সেই গর্তে নিক্ষেপ করেন। আর যৌনাঙ্গের চুল গজানো শুরু হয়নি, এমন ছেলে-সন্তান ও সমস্ত কন্যা-সন্তান ও নারীদের বন্দী করে দাস ও যৌনদাসীতে রূপান্তরিত করেন ও পরবর্তীতে এই যৌনদাসীদের অনেককে নাজাদ অঞ্চলে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে করে তিনি ঘোড়া ও যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করেন (পর্ব: ৮৭-৯৫)।

বানু কুরাইজা গণহত্যার পর হুদাইবিয়া সন্ধি-পূর্ববর্তী সাত মাসে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা কমপক্ষে চোদ্দটি আগ্রাসী হামলা চালান, যার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো, মুহাম্মদের নেতৃত্বে হুদাইবিয়া সন্ধির মাত্র তিন মাস আগে (শাবান, হিজরি ৬ সাল) বানু আল-মুসতালিক হামলা ও যায়েদ বিন হারিথার (অথবা আবু বকর) অধীনে হুদাইবিয়া সন্ধির মাত্র দুই মাস আগে (রমজান, হিজরি ৬ সাল) বানু ফাযারাহ হামলা ও উম্মে কিরফা-র পাশবিক হত্যাকাণ্ড!

>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, ইসলামের ইতিহাসের এমনই এক প্রেক্ষাপটে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ তাঁর ৭০০-১৪০০ অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে মদিনা থেকে মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। যাত্রার প্রাক্কালে তিনি বারংবার ঘোষণা দেন যে, "তিনি ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা যাচ্ছেন, যুদ্ধের উদ্দেশ্যে নয়।" এমনই এক পরিস্থিতিতে গত সাড়ে পাঁচ বছরে অবিশ্বাসী জনপদের ওপর বহু আগ্রাসী ও নৃশংস হামলার নেতৃত্ব ও আদেশ দানকারী এই মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ও তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে কুরাইশদের কীরূপ আচরণ সভ্য মনুষ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে? নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে মুহাম্মদকে বিশ্বাস করে তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের সাদর আমন্ত্রণে মক্কায় ঢুকতে দেয়াই দেয়াই ছিল কুরাইশদের বুদ্ধিদীপ্ত যৌক্তিক পদক্ষেপ? নাকি নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের মক্কা প্রবেশে বাধা দেওয়াই ছিল কুরাইশসহ যে কোনো সভ্য সমাজের মানুষের এক স্বাভাবিক আত্মরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া?

পাঠক, ইতিহাসের এমনই এক প্রেক্ষাপটে যদি আপনারা কুরাইশদের মত একই অবস্থানে থাকতেন, তবে কি আপনারা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিনা বাধায় মক্কায় ঢুকতে দিতেন?

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1]“সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৯৯-৫০০

[2]অনুরূপ বর্ণনা (Parallal): “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫২৯-১৫৩০ http://books.google.com/books?id=sD8_ePcl1UoC&printsec=frontcover&source=gbs_ge_summary_r&cad=0#v=onepage&q&f=false

[3] অনুরূপ বর্ণনা:  “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৫৭১-৫৭৪ http://www.britannica.com/biography/al-Waqidi

ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ২৮১-২৮২

মডারেট মুসলিম মানসপট

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে যখন অমুসলিম লেখকদের লেখা বাদ দেওয়া হলো, তখন মডারেট মুসলমানদের মন্তব্য: "মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা এমনিতেই সাম্প্রদায়িক হয়। এটা নিয়ে উচ্চবাচ্য করার কিছু নেই। মাদ্রাসা দিয়ে ইসলামকে বিবেচনা করবেন না।"

মাদ্রাসায় যখন বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়, বোমা তৈরির সময় অসাবধানতাবশত বোমা বিস্ফোরণে মাদ্রাসা ভস্ম হয়ে যায়, তখন মডারেট মুসলমানদের মন্তব্য: "মাদ্রাসার সাথে জড়িত মানুষেরা এমনিতেই উগ্রবাদের সাথে জড়িত থাকে। মাদ্রাসা দিয়ে ইসলামকে মূল্যায়ন করা ঠিক নয়।"

মাদ্রাসার ছাত্ররা যখন দল বেঁধে সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়, ভাস্কর্য ভাঙে, মূর্তি ভাঙে, মাদ্রাসার বড় বড় আলেম আর হুজুরেরা যখন নারীদের নিয়ে একের পর এক অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে যায়, মাইকে নাস্তিক কতলের ঘোষণা দেয়, তখন মডারেট মুসলমানদের মন্তব্য: "কিছু মাদ্রাসার ছাত্র কিংবা মোল্লাদের কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলাম নিয়ে মন্তব্য করতে যাবেন না।"

এখন আপনি মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কারের কথা বলুন, মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা কথা বলুন, মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে ১৪০০ বছর আগের মরুভূমির ধুলাবালির শিক্ষা না দিয়ে, কুয়োর ব্যাঙ না বানিয়ে রেখে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার কথা বলুন, তখন মডারেট মুসলমানদের মন্তব্য: "ইয়ে মানে... মানে... উম... হুম... মানে ইয়ে.... হুম... উম মাদ্রাসা তো আছেই ধর্মীয় শিক্ষার জন্য। সেখানে যদি ধর্মই না পড়িয়ে বিজ্ঞান পড়ানো হয়, তাহলে তার নাম আর মাদ্রাসা দেওয়ারই বা দরকার কী!"

অন্য সব সময় মডারেট মুসলমানদের কাছে মাদ্রাসা খারাপ। শুধু বর্তমান যুগের সাথে তুলনায় অকেজো, অচল, বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের অনুকূল আবহাওয়া উপযোগী দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক এই মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কারের কথা বলুন, তাতেই মডারেটরা ব্যথায় কোঁকাতে শুরু করবে। অথচ খোঁজ নিয়ে দেখুন, এই মডারেট মুসলমানদের পরিবারের কেউই মাদ্রাসায় পড়ে না। নিজের সন্তানটি একদম স্মার্ট। তবে তারা আবার এটাও আশা করবে যে, অন্যের সন্তান মাদ্রাসায় যাবে, কোরানে হাফেজ হবে, আলেম হবে আর ইসলাম রক্ষা করবে।

এই মডারেট মুসলমানেরাই সবচেয়ে বেশি ভীতিকর। এরা লাইফ স্টাইল চাইবে ইউরোপ-আমেরিকার মতো, আবার রাষ্ট্রধর্ম চাইবে ইসলাম! স্বপ্ন দেখে ইউরোপ-আমেরিকায় গিয়ে বসবাস করবে, আবার ওদিকে এটাও আশা করে যে, একদিন ইউরোপ-আমেরিকা শাসন করবে ইসলাম! এই মহাজ্ঞানী মডারেটদের মাথায় এটা ঢোকে না যে, ইসলাম যেখানে শাসন করে, সেখানে ইউরোপ-আমেরিকা কিংবা সভ্যতা হয় না। ইসলামে যেখানে শাসন করে, সেখানে হয় নারীদের বস্তাবন্দী করা, সেখানে দাবা খেলা হারাম, সেখানে ধর্ষণের জন্য নারীকে চারজন সাক্ষী যোগাড় করতে হয়, সেখানে ছবি দেখা ছবি আঁকা সবই হারাম। এই মডারেটেরা হাতকাটা ব্লাউজ পরে ফেইসবুকে ছবি আপলোড দিয়ে তারপর আবার ইসলাম প্রচার করতে বসবে, 'খুনি আস্তিক এবং তার হাতে নিহত নাস্তিক দুজনেই সমান অপরাধী।' একদিকে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে লিটনের ফ্ল্যাটে যাবে, আবার অন্যদিকে নাস্তিকেরা ইসলাম অবমাননা করছে জিকির তুলবে। ওপরে হিজাব নিজে টপস, তারপর স্টাইলিশ হিজাবী সেলফি দেবে। আবার বলবে, 'মুসলমান হয়ে পূজা/ক্রিসমাস/প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা দেওয়া হারাম।' তাদের চোদ্দ গোষ্ঠীর কেউ মাদ্রাসাতে না গেলেও মাদ্রাসা নিয়ে কিছু বললেই তাদের অনুভূতিতে লেগে যায়।

(সর্বমোট সাতটি ছবি; সবগুলো দেখতে হলে মূল ছবি বা ছোট ছোট ছবিগুলোর ওপরে একের পর এক ক্লিক করতে হবে)

আগেও বলেছি, এখনও বলছি: এই মডারেট মুসলমানেরাই সবচেয়ে বড় অপরাধী। মাদ্রাসা, জঙ্গিবাদ, আল-কায়েদা, আইএস এরা তো স্রেফ সন্ত্রাসের মুখপাত্র মাত্র। এই মডারেট মুসলমানেরাই সন্ত্রাসের মূল যোগানদাতা, যারা মুখে আইএস ঘৃণা করে, আবার এটাও আশা করে, কোনো একদিন পৃথিবীব্যাপী খিলাফত হবে, জিহাদ হবে, ইসলাম কায়েম হবে।

নিত্য নবীরে স্মরি – ২২৩

পূর্ণাকারে দেখতে ছবির ওপরে ক্লিক করতে হবে 

রবিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৬

ইছলাম ত্যাগের কারণসমূহ - ১৬

ব্রিটেনের কাউন্সিল অভ এক্স-মুসলিম নামের সংগঠনের উদ্যোগে #ExMuslimBecause নামে টুইটারে একটি প্রচারণা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রাক্তন মুছলিমরা উপস্থাপন করছে ইছলাম ত্যাগের বিবিধ কারণ। অতি দীর্ঘ ও ক্রমবর্ধমান এই কারণ-তালিকা থেকে কিছু সরস ও সিরিয়াস কারণ অনুবাদ করে প্রকাশ করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। এতে যুক্ত করা হচ্ছে/হবে ধর্মকারীর ঠিকানায় পাঠানো লেখা/ছবি/ভিডিওও।

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫

Gerrit Smith: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আখিরাতে সুন্নী জিহাদীদের সঙ্গে নিজেকে কল্পনা করতে পারি না।

Tanbir llias: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলামবাদীরা বাংলাদেশে আমার বাসায় হামলা করেছিল। সৌভাগ্যক্রমে আমি তখন বাসায় ছিলাম না। তখন তারা নাস্তিকহত্যার ফতোয়া জারি করে।

Shubby Sq: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আল্যা তার বইটা লেখার সময় জানতো শুধু মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে।

Saudi Atheist: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ নারীর পর্দা করার প্রয়োজনীয়তা আমি বোধ করি না। কারণ কর্মস্থলগামী কোনও পশ্চিমা নারীকে দেখে আমার ঈমানদণ্ড উত্থিত হয় না।

জাহেদা পারভীন: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমি শৈশবে তিন হুজুরের কাছে আরবি পড়েছি, তাদের প্রত্যেকেই আমার শিশু-শরীর হাতড়িয়েছে।

Hani Kafir: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ সমালোচনা করলে ইছলাম সহিংসতা প্রয়োগ করে।

Mahnoor Wahab: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ নারীর ওপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব আছে (সুরা ২:২২৮) - এ কথা গ্রহণ করতে আমি অস্বীকৃতি জানাই।

Jihadi Kermit: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ বর্বর নবী অপেক্ষা সুস্বাদু মদ উত্তম।

Parisa: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমি আমার স্বামীকে অন্য মেয়েদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই না।

Khaled Osman: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ মোহাম্মদ মানুষ হত্যা করেছে, নারীধর্ষণ করেছে, তার ছিলো এক গাদা বিবি। তবু মুছলিমরা তাকে মনে করে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব।