লিখেছেন ইমতিয়াজ খোকন
'স্থান' (বা স্পেস) আর 'সময়' (টাইম) কী আল্লাফাকের তৈয়ার? তাহলে বলুন তো, আল্লাফাক 'স্থান' তৈয়ার করিয়াছেন কোন স্থানে বসিয়া? ঐ স্থানের স্বরূপ কী? ঐ স্থান কোথা হৈতে আসিল? ঐ স্থানের তৈয়ারক কে? আল্লাফাক 'সময়' বানাইলেন কোন সময়ে? ঐ সময়ের পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? ঐ সময়টাইবা কে ফয়দা করিল?
আল্লা কী নূর বা আলোর তৈয়ার? তবে কি তিনি আলোর ধর্ম, যেমন- প্রতিফলন, প্রতিসরণ, বিচ্ছুরণ, সমাবর্তন ইত্যাদি মেনে চলেন? যদি মেনে চলেন, তবে আল্লা আয়নার সামনে দাড়ালে, প্রতিফলনের ফলে দ্বিতীয় কোন আল্লা তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি? এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে যাওয়ার সময় আল্লার কী দিক পরিবর্তন হয়? তিনি যদি সত্যিই আলোর তৈরী হয়ে থাকেন, তাহলে ব্ল্যাকহোলে তেনার কী পরিণতি হৈবে? যদি বলেন, তিনি আলোর তৈরী নন, তবে বলুন তো তিনি কিসের তৈরী?
কেউ কেউ বলেন, খোদা নাকি এক ধরনের শক্তি স্বত্তা, যা পরমাণু তথা কোয়ার্ক কণিকার মাঝেও বিরাজমান! শুনে মনে প্রশ্ন জাগে: খোদা কী স্বনিয়ন্ত্রিত? নাকি আইনস্টাইনের সুত্র (শক্তি= ভর ও আলোর বেগের বর্গের গুণফল) মেনে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টারের ভেতর মানুষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন? যদি তেনার নিয়ন্ত্রন ক্ষমতা নিজের হাতে না থাকে, তবে তিনি বিশ্ব নিয়ন্ত্রক হৈলেন কীভাবে?
আল্লাফাকের কী চউখ বা এরূপ কোন অঙ্গ আছে, তা নাহলে তিনি দেখেন কীভাবে? তেনার কি ভোকাল কর্ড বা এরূপ কোনো যন্ত্র আছে, তা নাহলে তিনি কথা বলেন কীভাবে? তেনার কি কান বা এরূপ কোনো ইন্দ্রিয় আছে, তা নাহলে তিনি শোনেন কীভাবে? আল্লাফাকের যদি চোখ-কন্ঠ-কানের মত অঙ্গ থাকে, তবে তিনি নিরাকার হৈলেন কীভাবে?
আল্লাহ কি 'নিজেকে নিজে সৃষ্টি' করেছেন? 'নিজেকে নিজে সৃষ্টি' করার পদ্ধতিতে যদি একজন আল্লাহ তৈরী হতে পারে, তবে কেন ঐ পদ্ধতিতে একাধিক আল্লাহ তৈরী হবে না? একই পদ্ধতিতে কেন মহাবিশ্ব তৈরি হতে পারে না? এজন্য একজন আল্লাহ'র প্রয়োজন হৈল কেন? নাকি মক্কার মসনদ দখলের জন্য কোন যুদ্ধবাজ ধর্মব্যাপারী 'আল্লাতুন' নামক দেবী হৈতে 'আল্লাহ' ফয়দা করিয়াছেন?
আল্লাহ কী বিশ্ব নিয়ন্ত্রণকর্তা? তিনি কি মানুষের ইচ্ছাশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন? মানুষ যদি স্ব-নিয়ন্ত্রিত না হয়ে অন্যের ইচ্ছানুসারে যান্ত্রিকভাবে (রোবটের মত) নিয়ন্ত্রিত হয়, তবে তার কৃতকর্মের (পাপ-পুণ্যের) বিচার হৈবে কেন? কোনো ট্রাক দুর্ঘটনার পর ড্রাইভারের বিচার না করে ট্রাকের বিচার করাটা হাস্যকর নয় কি? আল্লাহ যদি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তবে তিনি বিশ্ব নিয়ন্ত্রণকর্তা হৈলেন কীভাবে?
আল্লাহ কি অতিকামপ্রবণতা আর লাম্পট্য পছন্দ করেন? তা নাহলে বেহেশতে (যেখানে মুমিন পুরুষের জন্য রয়েছে ৭২টা হুর ও ৩০টা গেলমান) এত কাম আর লাম্পট্যের ছড়াছড়ি কেন? নাকি ইহা আল্লাহ'র খোলসের ভেতর কোনো অতিকামুক আর লম্পট ব্যক্তির অলীক বেহেশত কল্পনা?
আল্লাহ কি সর্বশক্তিমান? অনুরূপ একটি 'আল্লাহ' তৈয়ার করার শক্তি কি ওনার আছে? নিজেকে নিজে ধ্বংস (আত্বহত্যা) করার শক্তি কি ওনার আছে? যদি না থাকে তবে তিনি সর্বশক্তিমান হৈলেন কীভাবে?
কেউ কেউ বলে থাকেন, আল্লাফাক সর্বত্র বিরাজমান! তাদের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই: সর্বত্র বিরাজমান মানে কী তিনি সব জায়গায় অস্তিত্বশীল? তাহলে কি তিনি গু-মুত-কফ-পুঁজ-বীর্য ইত্যাদিতেও অস্তিত্বশীল? যদি তিনি উক্ত বস্তুসমূহে নিজের অস্তিত্বকে ধারণ করেন, তবে এগুলো নাপাক হৈল কোন দুঃখে? যদি তিনি সর্বত্র বিরাজমান না হয়ে থাকেন, তবে তেনার অস্তিত্ব কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে?
শুনেছি আল্লাফাক সপ্তম আসমানে আরশে কুরসীতে বসে আছেন! এখন প্রশ্ন হল: তেনার কী বসার অঙ্গ তথা নিতম্ব আর ঊরু আছে? থাকিলে ঐ দুই ঊরুর ফাঁকে কী আছে? শিশ্ন নাকি যোনি? নাকি কিছুই নাই? দুই ঊরুর ফাঁকে কিছু না থাকিলে তিনি নিশ্চয়ই হিজড়া বা খোজা? যদি বলেন তেনার কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাই, তবে সবিনয়ে জানতে চাইবো, কোনোরূপ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছাড়া একজন নিরাকার ব্যক্তি বসতে পারেন কীভাবে?
আল্লাফাকের কি জীবন আছে? জীবন থাকিলে তিনি নিশ্চয়ই জীব? জীব হৈলে তিনি কি জীবের সাধারণ বৈশিষ্ট্য, যেমন- জীবের জন্ম ও মৃত্যু আছে, জীব ছোট থেকে বড় হয়, খাদ্য গ্রহণ করে, বংশবৃদ্ধি করে, মলত্যাগ করে ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের অধিকারী? আর যদি আল্লাফাকের জীবন না থাকে, তাহলে তিনি কি মৃত?
স্বর্গে হুরপরীদের পাশাপাশি গেলমান বা চিরকিশোর কেন রাখা হল? আল্লাহ্ কী সমকামিতা ভালোবাসেন? নাকি যারা আল্লাহ্ তত্ত্বের আবিষ্কারক, তারা সমকামী ছিলেন?
আল্লাহ্ কেন আদমের পাঁজরের হাড় দিয়ে ইভকে তৈরী করলেন, কেন ইভ-এর হাড় দিয়ে আদমকে নয়? কিংবা কেন উভয়কে সমরূপ মাটি থেকে নয়? তবে কি আল্লাহ্ পক্ষপাতদুষ্ট? আল্লাহ্ যদি ন্যায়বিচারক হন, তবে কেন তিনি নারী-পুরুষের সমতা বিধান করেননি? ধর্মগ্রন্থে নারীর উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রধান কি নারীর প্রতি অবিচার নয়?
আল্লাহ কি 'কামসুত্র' পড়ে কোরান লিখেছিলেন? তা নাহলে তেনার বেহেশতে আওরাত (যার অর্থ যোনি!) তথা সেক্সের এত সমারোহ কেন? তেনার পেয়ারা হাবিবেকে এগারখান যোনি ভোগের অধিকার দেয়া হৈল কেন? আবার নবীর উম্মতকে চাইরখান যোনির স্বাদ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হৈল কেন? নাকি আল্লাহ বা ধর্মীয় বিধানের নাম করে এসব কোনো আরব্য লম্পটের শয়তানি?
কোরান কি কোন বিজ্ঞানগ্রন্থ? তবে স্কুল-কলেজের বিজ্ঞানের বইগুলোতে কেন কোরানের আয়াত খুঁজে পাওয়া যায় না? ডারউইন-আইনস্টাইন-হকিং-এর মত আধুনিককালের অন্য সকল বিজ্ঞানীদের থিসিস বা হাইপোথিসিসে কেন কোরান বা আল্লাহ'র নাম উল্লেখ নেই? কেন আলেম-ওলামা বা ইসলামী বোজুর্গানরা, বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের পূর্বেই কোরান গবেষণা করে একখানা সূত্র বা প্রযুক্তি আবিষ্কার করে দেখাতে পারেন না?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন