আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১১

জ্বীন-শয়তান সমাচার


লিখেছেন রুবাইয়্যাত আহসান

বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে
আমরা তখনও পিছে,
বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজছি
হাদিস ও কোরান চষে।
বাহিরের দিকে যত মরিয়াছি
ভেতরের দিকে তত
গুনতিতে মোরা বাড়িয়া চলেছি
গরু ছাগলের মত।

জ্বীন-ভূত বিষয়াদি চর্মচক্ষে না দেখার কারণে সম্পূর্ণ অন্যের বর্ণনার উপর নিজের ভরসাটুকু সম্পূর্ণ চাপিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারি না। এখন আবার প্রত্যেকেই জাকির নায়েক- ধর্ম বিষয়ক কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে প্রত্যেকেই সাত খন্ড রামায়ণ না শুনিয়ে ছাড়ার মতলব করেন না, আবার নিজের পেটে থাকা কিছু বিদ্যের দাবী নিয়ে সেটার অযথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে ‘আমি ঠিক, বাকী সব ভুল’ দাবী তুলনেওয়ালারও হতোদ্যম হয় না। তাই খুঁজে পেতে একটা বই জোগাড় করলাম জ্বীন বিষয়ে জানার জন্য। বইটা নিয়েই দুইটা কথা বলতে আসলাম।

যে বইটা নিয়ে আলোচনা করতে আসছি, সেটার বিষয় বস্তু জ্বীন। বিষয়বস্তু না বলে বলা ভাল - পুরো বইটি লেখা হয়েছে জ্বীন নিয়ে। বইটার প্রচারের কোন ইচ্ছা নাই, তাই ডাউনলোড লিংক দিলাম না। আর ভয় পাবার কিছু নাই, বাঙালি এখনও এত উন্নত জাতের কোন চীজ হয়ে উঠতে পারে নাই যে, সে মানব জিন নিয়ে গবেষনা করবে। আর আমি নিজেও বাঙালি ব্যতীত ভিন্ন কোন শ্রেণীতে পড়ি না। মানব শিশুর ইন্টেলেকচুয়াল ইন্টিলিজেন্স ফর্ম করে ছয় থেকে সাত সপ্তাহে - বাঙালির এই জিনিস আদৌ কোনোদিন তৈরী হয় কি না, বৈদ্যনাথ তলার কোনো স্টেথেস্কোপওয়ালা তা এ পর্যন্ত হলফ করে বলার সাহস পর্যন্ত করে উঠতে পারে নাই- সেহেতু এই বিষয়ে সন্দেহের কোনো ঘাটতি আছে কারো বলে মনে হয় ন। ভূত, পেত্নি নিয়ে বিস্তর গল্প ফাঁদা হয়েছে এ যাবৎ - আব্বা-আম্মারা আমাদের হাতে সেই শৈশবকালে ফিডারের পাশাপাশি হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন রূপকথার গল্প। কালক্রমে ফিডারটা মুখ থেকে সরে যাবার কারণে আমাদের বাম হাতে রূপকথা বইখানা ধরা থাকলেও ডান হাত আর ফিডার ধরার কাজে ব্যবহৃত না হয়ে খালি পড়ে থাকতো। যেহেতু সকল বাঙ্গালীই সব্যসাচী, তার অন্য হাত বেকার খালি পড়ে থাকুক, সে তা কখনোই চায়নি। আমাদের ধর্মপুরুত গোষ্ঠীও মওকা বুঝে সেই খালি হাতে পবিত্র গ্রন্থ চাপিয়ে দিয়েছে। ভারসাম্য রক্ষার জন্য রূপকথার ঠাকুরমার ঝুলির যোগ্য সামঞ্জস্য বই পেয়ে আমরা দিরুক্তি করিনি।

তবে বইখানার প্রারম্ভিক কথাদুটো খুব মনঃপূত হয়েছে আমার। কথাটা হুবহু আমার ব্লগের প্রথম দুই লাইনেই কোট করে তুলে দিয়েছে, বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করিনি। যদি লেখাটার ইমেজ পিকচার দেখাই তাহলে কিছুটা লজ্জা পেতে পারেন- এমনিতেই রমজান মাস, আর কিছু থাকুক না থাকুক- বাঙালীর লাজের কোন কমতি কোনো কালে ছিলো না। এই পোস্টে প্রচুর ইমেজ ব্যবহার করেছি। অতি আবশ্যক না হলে লিংক আকারেই সংযোজন করে দিলাম, এমবেড করা অপেক্ষা।

প্রথমটাই দেখুন- রমজান সাধনার মাস বলে কথা, খোদা আর তার রসুল দুটো জিনিস বাগিয়ে বসে আছেন।

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম বা ৭৮৬
যাবতীয় প্রশংসা অনন্ত মহান আল্লাহর প্রাপ্য
এবং
বুক ভরা দুরুদ ও সালাম তাঁর রসূলের জন্য।


জ্বীন জিনিসটা কি?

পবিত্র কোরানের বহু জায়গায় জ্বীনের উল্লেখ করা আছে অত্যন্ত ‘সুস্পষ্ট ভাষায়’। প্রিয় নবীজির প্রিয় হাদিসেও জ্বীন বিষয়ক বহু আলোচনা পাওয়া যায়। তাই জ্বীনে অস্তিত্বে বিশ্বাস রাখার বিষয়টি ঈমান-আকীদার অংশ হয়েই দাঁড়ায়।
মূলতঃ অমুসলিম পন্ডিতদের মধ্যে রয়েছে ‘ভূত’ নিয়ে অদ্ভুতরকমের বিভ্রান্তি।
[ভূত নিয়ে নানা বিভ্রান্তির জবাব দেওয়া যায় জ্বীন দিয়ে- ক্ষিকজ্]


কেননা ভূত বলে কিছুই নেই- আছে জ্বীন।
[মজা মারেন!!! হাসলে দাঁত ভেঙ্গে দিবো!!]

জ্বীনদের বিভিন্ন কার্যকলাপে মাঝে-মধ্যে দেখে শুনে কেউ কেউ সেগুলোকে ভূতের কারসাজি বলে মনে করেন এবং ওগুলোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হাতড়াতে থাকেন। কিন্তু আমরা যারা জ্বীনের অস্তিত্বে বিশ্বাসী, জ্বীনদের বিষয়ে অনেক কিছুই জানি না।

হযরত আবূ উমার আয্-যাহিদ এর মতে- জিন্নাত বা জ্বীনজাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বীন।



[আল্লাহর সৃষ্টিকূলের মাঝে শ্রেষ্ঠতর সৃষ্টি হলো মানুষ বা আশরাফুল মাখলুকাত। পক্ষান্তরে নিকৃষ্টতম সৃষ্টি হলো কুত্তা- সাহাবীদের মতে, প্রাণীকূলের মধ্যে একমাত্র কুত্তার স্পর্শ লাগলেই অযু করতে হয়। মানুষের সবচেয়ে নিকটবর্তী এই প্রাণীটিকে ব্রাত্য করে রাখার কারণ খোদা মাবুদ জানে-

আমিরিকানদের ডায়লগ আছে একটা- একটা ফাকার মেয়ে খোজার আগে একটা সাকার কুত্তা খুজে বের করো। এই হাদীস শোনার পর তারা বলবে- একটা ফাকার মেয়ে খোঁজার আগে একটা সাকার জ্বীন খুঁজে বের করো।]

তবে এইটুকু জ্বীনের পরিচয় তা বলতে গেলে আপত্তি জানাবো। শুধু এইটুকুই না। হযরত আবুল আলিয়াহ (রহঃ) বলেছেন- কিছু কিছু উট জন্মানোর পর প্রথমদিকে জ্বীন হয়ে থাকতো।


হ্যা, ভুল পড়েননি। জ্বীন শাস্তি স্বরূপ উট হয়ে যেত না, বরং উট জ্বীন হয়ে যেতো। অনেকটা জন্মান্তরবাদ থিওরীর মতো- আগে পশু হয়ে জন্মাবা, পূন্যের খাতা ভারি হলে মানুষ না, ডিরেক্ট জ্বীন।

হে মানব প্রজাতি, তোমরা জ্বীনে বিশ্বাস না রেখে বরং উটে বিশ্বাস রাখো।

জ্বীনদের খাদ্য কি?

গু-গোবর।

হযরত শায়খ আবদুল কাদীর জীলানী (রহঃ) হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে তার সঙ্গে তার মুরীদরাও রওনা হন। সেই সফরে তারা যখনই কোনো মঞ্জিলে যাত্রা বিরতি দিতেন, তাদের কাছে সাদা পোশাক পরিহিত এক যুবক হাজির হত। কিন্তু সে তাদের সাথে কোন কিছুই খাওয়া-দাওয়া করত না। বড়পীর হযরত আবদুল কাদীর জীলানী (রহঃ) আপন মুরীদদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তারা যেন ওই যুবকের সাথে কথা না বলে।

এভাবে যেতে যেতে তারা এক সময় মক্কা শরীফে গিয়ে প্রবেশ করলেন এবং একটি বাড়িতে উঠলেন।

কিন্তু তারা যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন, তখন সেই যুবকটি ঢুকত এবং তারা বাড়িতে ঢোকার সময় যুবকটি বের হয়ে যেত। এটা বেশ কয়েকজনের কাছে আশ্চর্য লাগলেও বড়পীরের আদেশ মতো কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে যেতে পারছিলো না।

একবার সবাই বের হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু একজন তখনও থেকে গিয়েছিলেন পায়খানায়। সেই সময় সেই যুবকটি জ্বীনটি প্রবেশ করে। তাকে তখন কেউ দেখতে পায়নি। সে ঘরে ঢুকে একটা থলি খুলে গোবর-নাদি বের করে খেতে শুরু করে। সে সময় পায়খানায় থেকে যাওয়া মুরীদ ওই ঘরে প্রবেশ করেন। এবং তিনি সেই জ্বীনকে দেখতে পান। তখন জ্বীনটি সেখান থেকে চলে যায় এবং এরপর আর কখনও তাঁদের কাছে আসেনি।

মুরীদটি এ ঘটনার কথা বড়পীর সাহেবের কাছে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ও ছিল সেইসব জ্বীনদের অর্ন্তগত, যারা রসুলুল্লাহহ (সাঃ)-এর মুখে পবিত্র কোরান শুনেছিলেন এবং সাহাবী জ্বীন হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।
(-আরজাওয়াতুল জ্বান, ইবনু ইমাদ, বাংলা গ্রন্থ জ্বীন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস)

অর্থাৎ জ্বীনদের খাদ্য গু-গোবর এবং তারা অর্ন্তযামী নয়। অর্ন্তযামী নয় এ কথা ঢালাও ভাবে বলা যায় না, তবে কেউ যদি জ্বীনদের চোখ-স্পর্শ কিংবা কোনোরকম অস্তিত্ব এড়িয়ে থাকতে চান, তারা ওয়াশরুমে অবস্থান করবেন।

জ্বীনরা কি বংশ বিস্তার করে?

হ্যাঁ, জ্বীনরা বংশ বিস্তার করে। জ্বীনদের পুরুষ-নারীও আছে। মেয়ে জ্বীনদের কথা যেহেতু উল্লেখ করা নেই, সেহেতু ধরে নেওয়া হয় তাদের একাংশ পেত্নি সম্প্রদায় থেকে এসেছে। এরা সেক্স করে, এদের সন্তানসন্ততি হয়। এদের পর্নো ভিডিও নেটেও পাওয়া যায়, অনেকে হয়তো দেখে থাকবেন। পর্নো সাইটে ভিডিও দেখার জন্য ঢুকেছেন, কিন্তু গিয়ে দেখলেন পেজ লোডিং হচ্ছে তো হচ্ছে না, পাতা এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে, নড়াচড়া করছে না। কোনো কোনো সময় হঠাৎ ভিডিও বাফারিং হতে হতে গিয়ে এক জায়গায় এসে স্থির হয়ে যায়। যাঁরা জানেন না, তাঁদের জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, আপনারা তখন যেটা দেখেন সেটা জ্বীনদের পর্নো।


শয়তানের পছন্দ-অপছন্দ?

শয়তানেরও পছন্দ অপছন্দ আছে। বিশেষ করে ভোটকা-মটকু-পাডা লোকদের শয়তান বেশি পছন্দ করে।

হযরত অহাব বিন মুনাব্বিহ (রহঃ) বলেছেন, প্রত্যেক মানুষের সাথে তার শয়তান থাকে। কাফিরের শয়তান কাফিরের সাথে খায়-দায় ও তার সাথে বিছানায় শোয়। তবে সেই শয়তান গে কি না, সেটার কোনো হাদিস কোথাও পাওয়া যায়নি। আবার মুমিনের শয়তান মুমিনের থেকে দূরে থাকে। বেশি খায় ও বেশী ঘুমায়, এমন লোককে শয়তান বেশী পছন্দ করে।

তবে সত্যি কথা বলতে ,- আল্লাহ নিজেই শয়তান লালন করেন। এটা একটা কনফিউজিং ব্যাপার যে, তিনি নিজে শয়তান থেকে বিরত থাকতে বলেছেন মানুষকে, অনেক অনেক হাদিস পয়দা করেছেন এই কথা স্মর্তব্যে আবার তিনি নিজেই উপযাজক হয়ে শয়তান চাপিয়ে দেন মানুষের ঘাড়ে। তাহলে মানুষকে শয়তান থেকে দূরে থাকার কথাটা কি ফাইজলামি?

জ্বীনের অসঅসা?


উপরের ছবি মতে- আল্লাহ পবিত্র কোরানে বলেছেন, হে নবী! আপনি মানবজাতিকে এই দুআটি বলে দিন। আমি মানুষের পালনকর্তা, মানুষের বাদশাহ্ ও মানুষের উপাস্যের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি ‘খাননাস’ (শয়তান) এর ‘অসঅসা’র অনিষ্ট থেকে, যে অসঅসা দেয় মানুষের অন্তরে, চাই সে জ্বীনদের মধ্য থেকে হোক কিংবা মানুষের মধ্যে থেকে। [তাফসীরুল কোরআন, আবদুর রাযযাক, খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১৯৬। ইবনুল মুনযির]

এখানে একটু জানিয়ে রাখা প্রয়োজন অসঅসা জিনিসটা কি?-কাযী আবূ ইয়াঅলা (রহঃ) বলেছেন- অসঅসার বিষয়ে একটি বিশেষ মত হলো, এ একটি উহ্য কথা বিশেষ- যা অন্তরে অনুভূত হয়। সহজ বাংলায় বলতে গেলে - আপনি যা চিন্তা করছেন কিন্তু মুখে বলছেন না বা অন্য কোন ইন্দ্রিয় দ্বারা তা প্রকাশ করছেন না, তা। অন্য এক মত অনুযায়ী, অসঅসা হলো এমন বিষয় যা চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে অনুভূত হয় এবং এ দ্বারা মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে স্পর্শন, সঞ্চালন ও প্রবেশন ঘটে।

যেমন একদা হুজুরে পাক নামাজ পড়ার সময় নামাজ ফালায়া শয়তানের সাথে ফাইট দিসিলো। ফাইটে হুজুর জিতছেন- এমন চিপি দিছেন গলা ধইরা, শয়তান নবীজির মুখে হাতে থুতু মাইরা পালায়া গেছে।

তবে অন্য আরেক কু-চিন্তা মাথায় চলে আসলো এই হাদিস শোনার সাথে সাথে। নামাজের সময় হুজুর নাকি প্রায়ই বেভুলো হয়ে যেতেন। এবারও কি সেরকম কিছু হলো নাকি!! কিসে চিপ দিতে গিয়ে কিসে দিয়েছেন, আর চিপ দিওয়ার কারণে কী জিনিস বের হয়েছে, যেটাকে থুতু বলে প্রচার করছেন, কে জানে!!!- আর না ঘাঁটাই বাবা, থুতু খুঁজতে গিয়ে কী না কী বের হয়ে যাবে!!


জ্বীনের অন্য রূপ:

সব কিছুরই ভিন্ন এক রূপ রয়েছে ইসলামী পরিভাষায়, যেমন নবীরা অন্যরূপে নবী পরিচয়ের বাইরে একজন সাধারণ মানুষ বৈ অন্য কিছু না। আবার রসুলেরা প্রকারন্তরে প্রত্যেকে এক একজন নবী।

ঠিক তেমনি এক মুহাদ্দিস বর্ণনা করেছেন, শয়তান জান্নাতে প্রবেশ করে চারপেয়ে পশুর আকারে, যেন ঠিক উটের মতো। ওর উপর আল্লাহর অভিশাপ পড়ে। ফলে ওর পাগুলো খসে যায় এবং সাপে পরিনত হয়।
হযরত আবুল আলিয়াহ্ (রহঃ) বলেছেন- কিছু কিছু উট জন্মানোর পর প্রথম দিকে জ্বীন হয়ে থাকতো।


আমাদের সম্মানিত হুজুরে মুহাম্মদ তিনি একজন এতিম ছিলেন। আমার স্কুলে থাকাকালীন গল্প পড়েছি মদীনার চিপায় দাঁড়ায়া এক বাচ্চা কাঁদছিলো- মুহাম্মদ তাকে নতুন জামা কাপড় পরিয়ে তার দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দেন। এরকম অনেক হাদীসও দেখেছি- রাস্তায় বাচ্চারা খেলাধূলা করছিলো, মুহাম্মদ তাদের কাছে থেমে তাদের সাথে হাসি ঠাট্টা করেন।

আমাদের এলাকায় এক দোকানদার থাকতো, সেও একই কাজ করতো। আমরা খেলতে থাকলে দেখা হলেই থেমে যেত। হাসি মুখে একচোট খেলেও নিতো আমাদের সাথে। কিন্তু যখন আমাদের কারো সাথে একাকি দেখা হতো- ধরে মার দিতো। আমি নিজেও বেশ কয়েকবার কোনো কারণ ছাড়াই চড় খেয়েছি। কোনো কথা না বলে এসে দুম করে চড় কষিয়ে দিতো। স্যাডিস্টরা বাচ্চাদেরকে তাদের অতি শক্তিশালি কোনো প্রতিপক্ষ বলে কখনোই মনে করে না। তারা বাচ্চাদের সামনে তাদের অস্বাভাবিক প্রবৃত্তির প্রকাশ খুব স্বাভাবিক ভাবে ঘটায়। ইতিহাসের দিকে তাকালে এমন অনেক উদাহরণ দেখা যাবে- এমন অনেক সাধারন অথবা বিখ্যাত লোকের বাচ্চা নিপীড়ন, যৌন নিপীড়ন, বাচ্চা নির্যাতনের অভিযোগ আছে। এদের মাঝে কিছু প্রমাণিত আবার অনেকগুলোই প্রমাণহীন। পোপ একটা বড় উদাহরণ হতে পারে।

যে প্রসঙ্গে বলা আসুন দেখি-হযরত উমমে আব্বান বিনতে আল্-ওয়াযাঅ (রহঃ) এর পিতামহ জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে নিজের একটি পাগল বাচ্চাকে নিয়ে যেতে নবীজি বলেন, ‘ওকে আমার কাছাকাছি নিয়ে এসো এবং ওর পিঠটি আমার সামনে কর। তারপর নবীজি তার উপর নীচের কাপড় ধরে পিঠে মারতে মারতে বলেন- ‘ওরে আল্লাহর দুশমন! বেরিয়ে যা!’ ফলে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে চোখ খোলে। [আল-হাওয়াতিফ, ইবনে আবিদ্ দুনইয়া, পৃষ্ঠা ১১৬]


কয়েকদিন আগের খবরটি নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যান নি- এক ভন্ড পীর কিভাবে বাচ্চাদের দুপা ধরে বন বন করে ঘুরিয়ে চিকিৎসা দিতো। আর এরকম অনেক কাহিনী কেচ্ছা কিংবা সচক্ষেই দেখেছেন- ওঝা, কবিরাজ তুকতাক করে, মরিচ পুড়িয়ে, চাল খাইয়ে কিভাবে রোগী সারায়। জ্ঞানী মুহাম্মদ তাদের থেকে আলাদা কোন কিছু নয়।

বরং এটা আরও ভয়ঙ্কর অমানবিক ও প্রকৃত ‘শয়তানের’ কাজ যে- একটা পাগল বাচ্চাকে ধরে প্রহার করা। পার্ভাট কোথাকার!

এরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে:
(হাদীস) হযরত উসামা বিন যাইদ (রাঃ) বলেছেন- আমরা রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে হজ্জের জন্য (মদীনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে) রওয়ানা হয়েছি। ‘বাত্বনে রওহা’ নামক স্থানে এক মহিলা নিজের বাচ্চাকে সামনে এনে বলে- ‘ হে আল্লাহর রসুল! এ আমার ছেলে। যখন থেকে আমি ওকে প্রসব করেছি তখন থেকে এখন পর্যন্ত এর রোগ সারেনি।’ তো জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) মহিলাটির কাছ থেকে বাচ্চাটি নিয়ে নিলেন। এবং তাকে নিজের বুক এবং পায়ের মাঝখানে রেখে, তার মুখে থুথু দিয়ে বলেন- ‘ওহে আল্লাহর দুশমন! বেড়িয়ে যা! আমি আল্লাহর রসুল।’ এরপর নবীজি বাচ্চাটিকে তার মায়ের হাত তুলে দিয়ে বলেন- ‘একে নিয়ে যাও। এখন ওর কোনও কষ্ট নেই।’
[আবু ইয়াঅলা- আবূ নূআইম, দালায়িলুন নুবুয়ত। বায়হাকী, দালায়িলুন নবুয়ত ৬: ২৫ মুজমাউয যাওয়াদি ৯:৭]


আমাদের চিকিৎসালয় গুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত, মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত, ড্রাগ হাউজগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া উচিত। প্লাসিবো বলতে কি বোঝায়, তা যারা বোঝেন, এটার সাথে দয়া করে গুলিয়ে ফেলবেন না। এটা কোন প্লাসিবোও নয়- এটা নির্যাতন। একটা অসুস্থ বাচ্চাকে হাত পা চাপ প্রয়োগ করে তার মুখে থুথু মারা অসুস্থ বিকৃত মস্তিষ্কের লোক ছাড়া অন্য কেউ করতে পারে না।

জ্বীন কিভাবে ধরে?

'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসে আমরা সেই তখন পড়েছিলাম, খালি চুলে ঘুরে বেড়ানোর কারনে কোন মেয়েকে যেন জ্বীনে ধরেছে। এটার উৎপত্তি স্থলটা পাওয়া যাবে- তাযকিয়ারে হামদূনিয়্যাহ্ তে।

এক কবি পত্নিকে জ্বীনে ধরল। কবি সেই ঝাঁড়ফূঁক করলেন, যা তদবীরকারীরা করে থাকেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি মুসলমান না ইহুদী না নাসারা (খ্রিস্টান)?’ শয়তান তাঁর স্ত্রীর মুখ দিয়ে বলল, ‘আমি মুসলমান।’ কবি বললেন, ‘তাহলে তুমি আমার স্ত্রীর উপর ভর করাকে হালাল ভাবলে কিভাবে, আমিও তো তোমার মতো মুসলমান?’ সে বলল, ‘আমি একে ভালোবাসি।’ কবি ফের প্রশ্ন করলেন, ‘কেন তুমি এর উপর চড়াও হয়েছ?’ জ্বীন বলল, ‘এ বাড়ির মাঝে মাথা খুলে চলাফেরা করছিল বলে।’ কবি বললেন, ‘তুমি যখন এতই লজ্জাশীল, তো জুরজান্ থেকে ওর জন্য একটা ওড়ান আনলে না কেন, যা দিয়ে এর মাথা ঢেকে দেওয়া যেত?’

মেয়েরা খালি মাথায় চলাফেরা করবেন না। শয়তান আপনাদের অ্যাটাক করবে।

প্লেগ কেন হয়?

অদ্যাবধি ভিন্ন কোনো ধারণাতে আস্থা রাখতাম। তবে এখন আমি জানি, কী কারণে প্লেগ রোগ ছড়ায়। এর কারণ জ্বীন। এ ব্যাপারে নবীজির হাদিস আছে, যা দিয়ে এর সত্যতা প্রমাণ করা যায়।


হযরত আবূ মুসা আশতারী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
‘আমার উম্মত আন্ত্রিক ও প্লেগের দ্বারা ধ্বংস হবে।’ সাহাবীগণ বলেন- হে আল্লাহ রসূল (সাঃ)! আন্ত্রিক রোগ তো আমরা জানি, কিন্তু প্লেগ কি জিনিস?’
তিনি বলেন- ‘তোমাদের শত্রু জ্বীনদের হামলা বিশেষ’

শুধু যদি এইটুকুই বলে ক্ষান্ত হতো তাহলে কথাই ছিলো। কিন্তু তা না, বরং হাদিস থেকে এটা আরো নিশ্চিত হওয়া যায়, প্লেগ রোগে মারা যাওয়া কোনো ব্যক্তি শহীদের মর্যাদা পায়।


(হাদীস) হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
প্লেগ রোগে প্রচন্ড কষ্ট আছে। যা আমার উম্মতকে চাপিয়ে দেয়া হবে তাদের শত্রু জ্বীনদের তরফ থেকে। সেই জ্বীনদের কুঁজ হবে উটের কুজের মতো। যে ব্যক্তি প্লেগ-পীড়িত এলাকায় থাকবে, সেই ইসলামী রাস্ট্রের সীমান্ত রক্ষী (মুজাহিদের মতো) হবে। প্লেগে ভুগে যে মরা পড়বে, সে শহীদের মর্যাদা পাবে। এবং যে মানুষ প্লেগ প্রভাবিত এলাকা ছেড়ে পালাবে, সে ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় ময়দান ছেড়ে পলায়নকারীর মতো অপরাধী বলে গণ্য হবে।

জ্বীনদের এই বদনজর নিয়ে আবার একটি হাদিস আছে:
(হাদিস) বর্ণনায় হযরত উম্মে সালমাহ (রাঃ)- জনবা রসুলুল্লাহ (সাঃ) একবার তাঁর ঘরে একটি বাচ্চা মেয়েকে দেখেন, যার জ্বীনের বদনজর লেগেছিলো। তিনি বলেন, একে অমুকের কাছ থেকে ঝাড়ফুঁক করিয়ে নাও, এর বদনজর লেগেছে।

উপরের এই তিন হাদিসের প্রমাণসূত্র হলো-
১.মুসনাদে আহমাদ। মুসান্নিফে ইবনে আবী শায়বাহ্। কিতাবুত্ব তাওয়াঈন, ইবনে আবিদ দুনইয়া। বাযযার। আবূ ইয়াঅলা। ইবনে কুযাইমাহ্। তবারানী। হাকিম ও সিহহাহ্। দালায়িলুন নুবুয়ত, বায়হাকী প্রভৃতি।
২. আবু ইয়াঅলা। তবারানী, বাযযার।
৩. বুখারী, কিতাবুত ত্বিব্ব বাব ৩৫। সহীহ্ মুসলিম কিতাবুস সালাম, হাদীস ৮৫। মুসতাদরকে হাকিম ৪:২১২। মাসাবীহস সুন্নাহ ১৩:১৬৩। মুসান্নিফে আবদুর রাযযাক ১৯৭৬৯। মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস ৪৫২৮।

এই হলো হুজুরে সাল্লাহিআলাইহিসল্লামের জ্ঞান-গরিমা। কোরান পয়দা করে টাইম রিলেটিভিটি ঢুকাইছেন মাগনা?

শয়তান কারা?

শয়তানের একটা ভালো উদহারণ হলো বাংলাদেশের ক্রিকেট প্লেয়াররা। খেলার মাঝে দেখা যায় এরা প্রায়ই কাঁখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। হাঁটার সময়ও কাঁখে হাত রেখে হাঁটতে থাকে।
পল্লী গ্রামের ছবি আঁকতে গেলে যে কোন শিল্পী কমন যে ডায়াগ্রামটা ভাবেন- কলসী কাঁখে গ্রামের বধূ পানি আনতে যাচ্ছে। সিনেমাতেও তার বহিঃপ্রকাশ- কাঁখে হাত রেখে স্কুলের পিটি প্যারেডের মতো লাফাতে লাফাতে ব্যায়াম করছে নায়িকা।

এই কাঁখে হাত রেখে কে চলাফেরা করে জানেন- শয়তান!!!


হযরত হামীদ বিন হিলাল (রহঃ) বলেছেন- নামায পড়ার সময় কাঁখে হাত রাখতে নিষেধ করার কারণ- শয়তানকে যখন পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হয়, সেই সময় সে ছিলো কাঁখে হাত রাখা অবস্থায়।
[ইবনু আবী শায়বাহ]

নামধারক শয়তান

হুজুরে আলা নাম দিয়েও শয়তান চিনে নেন। সত্যি বলতে কি- নামে নয় কামেই পরিচয়, এই প্রবাদের জন্ম তারও অনেক পরে। শিহাব নামে যত লোক আছে সব শয়তান। ফেসবুকে যে হাজার হাজার শিহাব, সব শয়তান। বিশ্বাস না হলে হুজুরের হাদিসের সাথে মিলিয়ে দেখুন-


শয়তানের হাতিয়ার কি কি?

আসুন চিনে নেই শয়তানের হাতিয়ার কি কি-
হযরত কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেন- ইবলীসকে যখন আসমান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন সে আল্লাহর কাছে কয়েকটি প্রশ্ন করে। আল্লাহ সেগুলোকে উত্তর দেন-যেমনঃ
- হে প্রভু! আপনি তো আমাকে অভিশপ্ত করলেন, কিন্তু আমার ইলম কি হবে?
- জাদু।
- আমার কোরআন কি হবে?
- কবিতা।
- আমার কিতাব কি?
- মানুষের শরীরে খোদাই করা চিহ্ন।
- আমার খাদ্য কি?
- যাবতীয় মরা প্রাণী এবং যেসব হালাল পশু আল্লাহর নাম না নিয়ে যবেহ্ করা/ মরা হয়।
- আমার পানীয় কি হবে?
- মদ।
- আমার বাসস্থান?
- গোসলখানা।
- বৈঠকখানা?
- হাট-বাজার।
- আমার মুআযযিন কে?
- গায়ক-বাদক।
- আমার ফাঁদ বা জল কি?
- নারী।
[মাকায়িদুশ শায়তান, ইবনু আবিদ দুনইয়া]

উপরের কথপোকথনে কখনো মনে হয়নি আল্লাহর উপর থেকে শয়তানের আস্থা বা শ্রদ্ধা হারিয়ে গিয়েছে- বরং এখনও তাকে সম্বোধন করছে মহাপ্রভুর নামেই। আর তাদের এই কথোপকথন থেকে স্পষ্ট- মদ খাওয়া শয়তানের কাজ, প্রত্যেক গোসলখানা হলো শয়তানের আড়ত, হাট-বাজারের শয়তান কিলবিল করতে থাকে, নারীরা প্রত্যেকেই হলো শয়তানের অস্ত্র, সব কবি প্রকারান্তরে শয়তান, আর সব মরা প্রাণী আর আল্লাহর নাম না নিয়ে জবাই করা প্রাণী শয়তানের খাবার।

আমাদের চিনে রাখা প্রয়োজন এই শয়তানদের

হযরত মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন- শয়তানের পাঁচটা ছেলে। প্রত্যেককে সে একটা একটা কাজে নিযুক্ত করে রেখেছে। তাদের নামগুলো হলো- সাবরাদ, আঊর, মাসূত, দাসিম ও যিলনাবূর।
►সাবরাদের দায়িত্বে আছে বিপদাপদে ধৈর্য হারানোর কাজ। মানুষের বিপদ বিপর্যয়ের সময় এই শয়তান তাকে অধৈর্য্য হয়ে মৃত্যুকে ডাকতে, জামাকাপড় ছিঁড়তে, বুক মুখ চাপড়াতে এবং ইসলাম-বিরোধী অজ্ঞসূচক কথাবার্তা বলতে প্ররোচিত করে।
► আঊর এর দায়িত্বে আছে ব্যাভিচার। এই শয়তান মানুষকে ব্যাভিচারের নির্দেশ দেয় এবং ওই কাজের দিকে আকৃষ্ট করে।
► মাসূত এর দায়িত্বে আছে মিথ্যা সংবাদ রটানো। যেমন, এই শয়তান মিথ্যা কথা শুনে অন্য লোককে তা বলে। সে আবার তার এলাকার লোকেদের কাছে গিয়ে বলে- একজন আমাকে এইসব কথা বলেছে। তার নাম জানি না বটে, তবে সে আমার মুখচেনা।
► দাসিমের কাজ হলো মানুষের সাথে সাথে তার বাড়িতে আসা এবং বাড়ির লোকেদের দোষের কথাগুলো বলে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে তাকে ক্ষেপিয়ে তোলা।
► আর যিলনাবূর এর দায়িত্বে আছে হাট-বাজার। সে তার (গুমরাহীর) পতাকা পুঁতে রেখেছে হাটে বাজারে।

শয়তান এক পায়ে জুতা পরে-
(হাদীস) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-
তোমাদের মধ্যে কেউ যেন একপায়ে জুতা পরে না হাঁটে। কেননা শয়তান চলে এক পায়ে জুতা পরে।


মুহাম্মদের জ্ঞানের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। শয়তানকে যখন জান্নাত থেকে বিচ্যুত করা হয়, তখন সে কোন ব্রান্ডের জুতা পড়ত এটা উল্লেখ করা হয়নি। বাংলাদেশের অন্তত ২% লোকের জুতা কেনার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই, আবার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ভ্যাগাবন্ড টাইপের অনেক পোলাপান হুমায়ূন আহমেদ পড়ে জুতা খুলে হিমু সাজতে চায়। এক পায়ের কথা যেহেতু বলা আছে, আমরা বীজগাণিতিক হিসেবে ধরে নিতে পারি, যে ব্যক্তি কোন পায়েই জুতা পরে না- সে ডবল শয়তান!!

শয়তানের পছন্দের রং-
(হাদীস) বর্ণনায় হযরত রাফিই বিন ইয়াযীদ সাকাফী (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:


শয়তান লাল রং পছন্দ করে, অতএব তোমরা লাল রং (এর পোশাক পরা) থেকে নিজেদের বাঁচাবে এবং বিরত থাকবে সমস্ত গর্বসৃষ্টিকারী পোশাক থেকেও।
[আবূ আহমাদ আল হাকিম, ফিল কিনা। কামিল ইবনু আদী, ১১৭২। ইবনু কানিই। ইবনুস সুকুন। ইবনু মানদাহ। আবূ নাঈম, ফিল মা অরিফাত, বায়হাকী, ফী শুআবুল ঈমান। আল-জামিই আস-সগীর। মাজমাউয যাওয়াইদ, ৫:১৩০। জামউল জাওয়ামিই, ৫৬১৯। কানযুল উম্মাল ৪১১৬১। ফাতহুল বারী ১০:৩০৬। মুসনাদুল ফিরদাউস, দায়লামী হাদীস,৩৬৮৮;২:৩৭৯। মারাসীল, আবু দাউদ। আল-জামিই আল কাবীর ১:৮৪]

শয়তানের শয়তানী

হাদীসগুলো দেখি আসুন-


হযরত হামনাহ্ বিনতে জাহাশ (রাঃ) বলেছেন- আমার মাসিক স্রাব হত অতিরিক্ত । সে কথা আমি জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে তিনি বলেন, এটা হলো শয়তানের চালগুলো মধ্যে একটা চাল।

আবার অন্যত্র অন্য একটি হাদিস হতে দেখা যায়-


হযরত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, জনাব রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক মানবশিশুর ভূমিষ্ঠলগ্নে শয়তান তাকে খোঁচা দেয়। যার কারণে সেই বাচ্চা সজোরে কেঁদে উঠে। কেবল মরিয়ম ও তাঁর পুত্র (হযরত ঈসা) এ থেকে মুক্ত ছিলেন।

হাদীসটি বর্ণনার পর হযরত আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) বলেন, যদি ইচ্ছা হয়, তো আল্লাহর এই আয়াতটি পড়ে নাও:
(হযরত মরিয়মের মা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন-) হে আল্লাহ্! আমি মরিয়ম ও তার সন্তানকে অভিশপ্ত শয়তানের অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয়ে সঁপে দিলাম।
[সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৩৬]


হযরত আবূ হুরাইরাহর অন্য এক বর্ণনায় এরকম আছে, প্রত্যেক মানবশিশুর ভূমিষ্ঠকালে তার পাঁজরে শয়তান আঙুলের খোঁচা দেয়। পারেনি কেবল হযরত ঈসার বেলায়। তাঁকেও সে খোঁচা দিতে গিয়েছিলো। কিন্তু লেগেছিলো পর্দায়।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছেন: বাচ্চা সেই সময় চিৎকার করে, যখন শয়তান নড়াচড়া করে।

[তবারানী, বুখারী, কিতাবুল আমবিয়া, বাব ৪৪। মুসলিম, কিতাবুল ফাযায়িল, হাদীস ১৪৬। মিশকাত ৬৯। কানযুল উম্মাল ৩২৩২৫। তাফসীর ইবনু জারীর, ৩:১৬২। বুখারী, কিতাবু বাদয়িল খলক, বাব ১১। মুসনাদে আহমাদ, ২:৫২৩। সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ফাযায়িল হাদীস ১৪৮।]

তাড়াতাড়ি শেষ করব, এরপরেও আরো অনেকগুলো কাহিনী কেচ্ছা আছে শয়তান আর জ্বীন নিয়ে। বেশ কিছু শর্টকাট মেরে যাচ্ছি।
হাঁচাহাঁচিতে রয়েছে বরকত:


আরো একটু মজা-
এইটা নিয়ে তেমন ডিটেলস লিখছি না।-তবে মহিলাদের গর্ভপাত আর মাইওপিয়া বা হ্রস্বদৃষ্টি টাইপ কেসে কে দায়ী তার একটা সুরাহা হলো আরকি!! মাথার ঘিলু ওজন করে মাপালে নির্ঘাত একটা থান ইটের সমান হবে।


কুকুর বিষয়ক বিভ্রান্তি

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর জবানে পাওয়া যায়- কুকুররা এক প্রকার জ্বীন এবং এরা খুব দুর্বল শ্রেনীর জ্বীন। সুতরাং কারো কাছে কুকুর বসে গেলে কিছু দেওয়া অথবা সরিয়ে দেওয়া দরকার।
আবার হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন- কুকুর হলো এক প্রকার জ্বীন। যখন ও তোমাদের খাওয়ার সময় আসবে তো ওকে কিছু দেবে। কেননা ওরও একটা প্রবৃত্তি (নফস্) আছে।


ঠিক তারপরই যে হাদিসটা দেওয়া হয় রসুলুল্লাহের- সেখানে দেখা যায়:
যদি এই কুকুরেরা এক মাখলূক (আল্লাহর সৃষ্টিজীব) না হত, তবে আমি এগুলোকে কতল করার নির্দেশ দিতাম, কিন্তু কোনও মাখলুককে বিলীন করে দিতে আমার ভয় হয। তবে তোমরা ওগুলোর মধ্যে সমস্ত কালো কুকুরকে কতল করে দেবে, কেননা ওরা হলো এক প্রকার শয়তান।

যারা জানেন তাদের হয়তো জানানো লাগবে না, যারা জানেন না তাদের জন্য আরেকবার উল্লেখ করি- ইতিপূর্বে এই হাদিসখানা প্রসবের পূর্বেই রসূলের আরেকটি হাদিসে পাওয়া যায়, জীব্রাইল তার জন্য ওহী নিয়ে আসতে পারছিলেন না তার ঘরে একটা কুকুর অবস্থান করার কারণে। যে ঘরে কুকুর থাকে সে ঘরে আল্লাহর রহমত প্রবেশ করে না।

কুত্তা এক প্রকার জ্বীন!!! হাসতে হাসতে মরি। তবে তারচেয়েও আশ্চর্য ব্যাপার রসুলুল্লাহের হাদিস খানা। কালো কুকুরকে কতল কর!!
আমি মোটামুটি নিশ্চিত অ্যাপার্থাইড শাসনামলে মুহাম্মদ জন্মগ্রহণ করলে ভয়ঙ্কর এক উগ্র বর্ণবাদী হয়ে উঠতেন-ক্রীতদাস বেলালের কথাটা বাদ দিলে আমি খুব জোরালো গলায় এটা বলতে পারতাম। তবে এক বেলাল কোন ধ্রুব সিদ্ধান্তে পৌছানোর জন্যও যথেষ্ট নয়, এটাও মনে রাখা দরকার।


বনী ইসরাঈলের লোকেরা বাঁদর আর শুয়োরে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিলো- সাপও তেমনি রূপান্তরিত জ্বীন।


বাম হাতিদের উপর নির্যাতন কম চালানো হয় নি। আর সেটার শুরুও আজকের কথা নয়। সিনিস্টার বাযারা বাম হাতি তারা শয়তান, যারা বাম হাতি তারা মোটা বুদ্ধির লোক, তারা পিছিয়ে পড়া লোক- এটাই সেই প্রস্তর যুগের ধ্যান ধারনা। বরংচ একজন বিজ্ঞানীর নাম বললে প্রথমেই বলতে হবে একজন বামহাতি বিজ্ঞানীর কথা- তিনি জার্মান ছিলেন। ক্রিকেটর বরপুত্রের কথা বললে বলতে একজন বামহাতির কথা। একজন বিখ্যাত নাট্যকারের নাম বললে বলতে হবে বামহাতির কথা.....ইত্যাদি ইত্যাদি। বাম মানেই খারাপ। ইংরেজী সিনিস্টার শব্দটা সেই ভুল ব্যাখ্যাই করে,সিনিস্টার মানে শয়তান বা শয়তানের মতো। ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই কিন্তু বামপন্থী-ডানপন্থীর চুকবুক ললিতকলা শিখতে গিয়ে জেনেছি এই শব্দটা এসেছে ফরাসি শব্দ 'সেনেস্ত্রে' থেকে। আর এই সেনেস্ত্রা মানে বাম দিক। আমি জেনে চমকে গিয়েছিলাম। ধর্মান্ধ নই, ধর্মপুরুতদের লেখা আদর্শলিপির পাঠ নিয়ে বড় হয়ে উঠিনি- কিন্তু আর দশজনের চোখে নিজের অবস্থান কী, ভেবে একটু হতোদ্যম হই।


নেংটা পুটু হয়েও জ্বীনদের চোখে ফাঁকি দেবার তরিকা:
জ্বীনরা অদৃশ্য কিংবা দৃশ্যমান। তারা দেখছে কিংবা দেখছে না আপনাকে। আপনার যেহেতু জানার কোন উপায় নেই- সেহেতু নবীজির শিখিয়ে দেওয়া পন্থাটা আপনার জন্যই-



আরো -


বইটা, ভেবেছিলাম, শেয়ার করবো না। কিন্তু আপনাদের বঞ্চিত করতে ইচ্ছে করছে না। আহসনা হাবীবের ‘রাত বারোটার পরের জোকস’ পড়তে পড়তে যারা বোর হয়ে গিয়েছেন, দুই বলদের ভিডিও দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন- তারা দেখতে পারেন এই ‘বলদীয় কেচ্ছা কাহিনী’।




শেষ করি আজকের একটা খবর দিয়েই। কালেরকন্ঠ পত্রিকায় আসলো খবরটা। জ্বীনের বাদশা পরিচয় দিয়ে ফোন করে, চিঠি দিয়ে এখনো লোকেদের বিরক্ত করে, তাদের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা আদায় করা হয়। মূলত এটাই হলো বাস্তবতা। হুজুরে আলা প্রিয় নবীর সময়েও একই কাজ হয়েছে, এখনও হচ্ছে। সময়টাই কেবল বদলেছে- এই যা!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন