আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৫

৫৭ ধারার ধারাবাহিক ইতরামি

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

নবীকে নিয়ে কটূক্তি করার অপরাধে সুনামগঞ্জে একজনকে কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা কী তৎপর সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মানুভূতি রক্ষায়।

২০০৩ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে এক পরিবারের ১১ জন হিন্দুকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। আজ ১২ বছরেও তার বিচার হয়নি।

আগামী অক্টোবরে রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপরে বর্বর হামলার ৩ বছর পূর্তি হবে। 

কোনো বিচার নেই। আর নবী নিয়ে শুধু ফেসবুকে লিখলেই জেল। কোনো মসজিদ ভাঙা হয়নি। মুসলমানের বাড়ি পোড়ানো হয়নি। শুধু লিখলেই দোষ। যা শালার! কী মহান অসাম্প্রদায়িক দেশ!

পাকিস্তান একদিক দিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। তাদের দেশে ব্লাসফেমি আইন আছে। পাকিস্তান প্রকাশ্যে ঘোষণা করে সেই দেশে আল্লাহ-নবী নিয়ে কটূক্তি করা নিষেধ। তারা বর্বর হলেও সভ্য সাজার ভেক ধরে না বাংলাদেশের মতো। 

বাংলাদেশ ব্লাসফেমি আইনের ভদ্র সংস্করণ ৫৭ ধারা রেখেছে। বাংলাদেশ সভ্য রাষ্ট্রের ভেক-ধরা অন্যতম বর্বর রাষ্ট্র। মাথার ওপরে হিজাব আর নিচে মিনিস্কার্ট পরা মডারেটদের মতো।

ইসলামিক দেশে মুসলমানদের ধর্মানুভূতি আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করে। তাই এই ধর্মানুভূতিকে সম্মান করলেই আল্লাহর সেবা করা হয়ে যায়। তাই মুসলমানদের ধর্মানুভূতির হেফাজতে বাংলাদেশ তৎপর।

অতএব ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র মুসলমানদের। ইসলাম ধর্ম নিয়ে লিখলেই জেল। আর অন্য ধর্মের লোকদের পুড়িয়ে মেরে ফেললেও কোনো সমস্যা নেই।

ইছলাম - শান্তির নীড়




ধাতুল-রিকা (Dhatul-Riqa) হামলা!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব- ৭৬): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – পঞ্চাশ

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ 

ওহুদ যুদ্ধ, 'আল-রাজী’ ও বীর মাউনা-র চরম ব্যর্থতার পর স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) মদিনায় অবস্থানরত বনি নাদির নামক এক ইহুদি গোত্রের সমস্ত মানুষকে তাঁদের শত শত বছরের আবাসস্থল ও ভিটে মাটি থেকে প্রায় এক বস্ত্রে কী ভাবে বিতাড়িত করে তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি করায়ত্ত করেছিলেন তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

উপার্জিত সেই অর্থে মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ তাঁর পরিবার-পরিজনদের ভরন-পোষণের ব্যবস্থা করেন, কিছু সম্পদ মুহাজিরদের মধ্যে বিতরণ করেন এবং তারপর যা অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে জিহাদের জন্য ঘোড়া ও যুদ্ধ-অস্ত্র খরিদ করেন। 

নৃশংস ও অমানবিক কায়দায় উপার্জিত এই লুটের মালের সবটুকুই মুহাম্মদ তাঁর আল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে বাণী বর্ষণের মাধ্যমে "বিশেষ করে তাঁর ও তাঁর পরিবারের বাৎসরিক ভরণ-পোষণের জন্য বৈধ” করেছিলেন (পর্ব ৫২)। 

বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদের পর খন্দক যুদ্ধ (ফেব্রুয়ারি, ৬২৭ সাল) পর্যন্ত সময়ে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ধাতুল-রিকা, দ্বিতীয় (শেষ) বদর, দুমাতুল-জানদাল (Dumatul-Jandal) নামের বেশ কয়েকটি হামলা সম্পন্ন করেন। 

তবে বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদের ঠিক পরেই কোন হামলাটি সংগঠিত হয়েছিল, সে ব্যাপারে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে। মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের মতে তা ছিল ধাতুল-রিকা হামলা। এই হামলায় তারা ‘ঘাতাফান (Ghatafan)’ গোত্রের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করে।

'ঘাতাফান' হলো মক্কা ও মদিনার পূর্ব দিকে উত্তর আরবের এক গোত্র-সমষ্টি; হিজাজ (লোহিত সাগর, জর্ডান, নাজাদ ও আসির পরিবৃত স্থান - বর্তমান সৌদি আরবের পশ্চিম অঞ্চল) ও সামমার পর্বতমালার মধ্যবর্তী স্থানে তাদের অবস্থান। তাদের অঙ্গ দলগুলোর কয়েকটি হলো:

১) আবস (Abs),

২) আশজা (Ashja), ও

৩) ধুবায়ান (Dhubyan): এই গোত্রের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো হলো, 

(ক) ফাযারাহ (Fazarah) - ইউয়েনা বিন হিসনের (Uyaynah b. Hisn) গোত্র, 

(খ) মুররাহ (Murrah), 

(গ) থালাবাহ (Thalabah); ও অন্যান্য।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ সাল) ও আল তাবারীর বর্ণনা: 

[প্রাসঙ্গিক বিষয়, অলৌকিক কিচ্ছা (পর্ব-৩৮) পরিহার।]

"বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদ অভিযানের পর আল্লাহর নবী রাবির দুই মাস [রবি-উল আওয়াল ও রবি-উস সানি] এবং জুমাদি-উল আওয়াল মাসের কিয়দংশ (অগাস্ট ১১ হইতে অক্টোবরের শেষ, ৬২৫ সাল) মদিনাতেই অবস্থান করেন। 

তারপর তিনি নাজাদের [মধ্য সৌদি আরব] ঘাতাফান গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বানু মুহারিব (Muharib) ও বানু থালাবা (Thalaba) গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযানে বের হন; তিনি নাখাল (Nakhl) পর্যন্ত পৌঁছেন। এটিই হলো ধাতুল রিকা হামলা। 

সেখানে তারা ঘাতাফান গোত্রের এক বড় দলের সম্মুখীন হন। দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয়, কিন্তু কোনো সংঘর্ষ সংঘটিত হয় না। কারণ তারা একে অপরের ভয়ে ছিল ভীত।

আল্লাহর নবী ভয়-নামাজ (৪:১০২) সম্পাদন করেন ও তারপর তিনি তাঁর লোকজন নিয়ে ফিরে আসেন। ----

[৪:১০২ - যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফেররা চায় যে, তোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাক, যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।] 

সাদাকা বিন ইয়াসার হইতে < আকিল বিন জাবির হইতে < জাবির বিন আবদুল্লাহ আল আনসারি হইতে বর্নিত:

আমরা আল্লাহর নবীর সাথে ধাতুল-রিকা অভিযানে নাখাল পর্যন্ত গমন করি। এক পর্যায়ে মুসলমানদের একজন এক মুশরিক মহিলাকে খুন করে। সেই সময় তার স্বামী ছিল বাহিরে। যখন আল্লাহর নবী মদিনায় প্রত্যাবর্তনের পথে, মহিলার স্বামী ফিরে এসে ঘটনাটি জানার পর প্রতিজ্ঞা করে যে মুহাম্মদ-অনুসারীদের উপর এর প্রতিশোধ না নিয়ে সে ক্ষান্ত হবে না।-------’। [1][2][3]

- (অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।)

‘After the attack on B. al-Nadir the apostle stayed in Medina during Rabi'ul-Akhir and part of Jumada. Then he raided Najd making for B. Muharib and B. Tha'laba of Ghatafan, until he stopped at Nakhl. This was the raid of Dhatu'l-Riqa'. 

There a large force of Ghatafan was encountered. The two forces approached one another, but no fighting occurred, for each feared the other. The apostle led the prayer of fear; then he went off with the men.

(T. Muhammad b. Ja'far b. al-Zubayr and Muhammad b. 'Abdu'l-Rahman from 'Urwa b. al-Zubayr from ABu Hurayra: We went with the apostle to Najd until at Dhatu'l-Riqa' he met a number of Ghatafan.There was no fighting because the men were afraid of them. The prayer of fear came down (Sura 4:102) and he divided his companions into two sections, one facing the enemy and the other behind the apostle. ---)

Sadaqa b. Yasar from Aqil b. Jabir from Jabir b. 'Abdullah al-Ansari said:

We went with the apostle on the raid of Dhatu'l-Riqa' of Nakhl and a man killed the wife of one of the polytheists. When the apostle was on his way back her husband, who had been away, returned and heard the news of her death. He swore that he would not rest until he had taken vengeance on Muhammad's companions. ----’. 

>>> মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, আল তাবারীর বর্ণনায় যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো:

১) মক্কাবাসী কুরাইশ বাণিজ্য বহরের ওপর হামলা (পর্ব-২৯), বনি কেউনুকা গোত্রের ওপর হামলা (পর্ব-৫১) ও বনি নাদির গোত্রের ওপর হামলার মতই, মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ঘাতাফান গোত্রের ওপর হামলা করতে গিয়েছিলেন! 

এখানে আক্রমণকারী গোষ্ঠী নিঃসন্দেহে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা। আর আক্রান্ত জনগোষ্ঠী হলেন ঘাতাফান গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বানু মুহারিব ও বানু থালাবা গোত্রের লোকেরা।

২) এই ঘটনার পূর্বে ঘাতাফান গোত্রের কোনো লোক মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের উপর কোনোরূপ আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন, এমন আভাস কোথাও নাই।

৩) মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এই আক্রমণাত্মক হামলা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ঘাতাফান গোত্রের লোকেরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। নিঃসন্দেহে তাঁদের এই প্রচেষ্টা ছিল "মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার চেষ্টা"

৪) ঘাতাফানদের এই আত্মরক্ষা বাহিনী সংখ্যা ও শক্তিতে আক্রমণকারী মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারী বাহিনীর সমকক্ষ ছিলেন। 

৫) মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ঘাতাফানদের আত্ম-রক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে কোনো সুবিধা করতে পারবে না উপলব্ধি করে কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই মদিনায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। 

৬) মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের অমানুষিক বর্বরতায় বনি কেউনুকা ও বনি নাদির গোত্রের সমস্ত লোক যে শোচনীয় পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন, ঘাতাফান গোত্রের লোকেরা তাঁদের শক্তি বলে বনি কেউনুকা ও বনি নাদির গোত্রের অনুরূপ সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

৭) এমত পরিস্থিতিতেও মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ঘাতাফানদের ‘এক নিরপরাধ মহিলাকে তাঁর স্বামীর অনুপস্থিতিতে খুন করেছিলেন!"

প্রশ্ন হলো,

“আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ও সংক্ষুব্ধ এই লোকেরা যদি এহেন আগ্রাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ ও তাঁদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কর্মকৌশল হিসাবে একক বা সম্মিলিতভাবে আক্রমণকারী মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের প্রতি-আক্রমণ (Counter attack) ও পরাস্ত করার চেষ্টা করেন, তবে কি তাকে অত্যন্ত গর্হিত কর্ম রূপে আখ্যায়িত করা যায়? 

মদিনায় আগমন পরবর্তী সময়ে একের পর এক মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এ সকল আগ্রাসী আক্রমণে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত মক্কাবাসী কুরাইশ সম্প্রদায়, বিতাড়িত বনি কেউনুকা ও বনি নাদির গোত্র এবং আক্রান্ত ঘাতাফান গোত্রের লোকদের প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষার প্রচেষ্টা কি অন্যায়?”

মুহাম্মদের সাথে সুর মিলিয়ে তাঁর অনুসারীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত এই মানুষগুলো ও তাঁদের কর্মকাণ্ডকে আইয়্যামে জাহিলিয়াত (অন্ধকারের যুগ/বাসিন্দা) রূপে আখ্যায়িত করে আসছেন। 

কিন্তু ইসলামের ইতিহাসের আদি উৎসে ইসলাম-অনুসারীদেরই বর্ণনায় তাদের এই দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র অত্যন্ত স্পষ্ট।

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৪৫-৪৪৭

[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭,ইংরেজী অনুবাদ: M.V. McDonald, Annotated by W. Montogomery Watt, নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-88706-345-4 (pbk.), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৫৪-১৪৫৭

[3]“কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬, পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৯১

বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

হারাম-হালালের হাল-হকিকত


ভূমিকম্প বিষয়ে বিজ্ঞানের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা ও ধর্মগুলোর নির্ভরযোগ্য সত্য বাণী

লিখেছেন সাংকৃত্যায়ন

ভূমিকম্প বিষয়টি সৃষ্টির শুরু থেকেই ছিল। বিবর্তনের ধারায় মানুষ যখন অলীক কিছুর ব্যাখ্যা দিতে পারতো না, তখন জন্ম হয়েছিল ধর্মের। প্রায় প্রতিটি ধর্মেই ভূমিকম্পের নানা ধরনের ধর্মীয় ব্যাখ্যা আছে। অধিকাংশ ধর্মের মতে, ভূমিকম্প ঈশ্বরের আদেশেই হয়ে থাকে, নয়তো ভয় দেখানোর জন্য। এই লেখার প্রথম দিকে আমরা জানবো পৃথিবীর বিভিন্ন পুরানো ধর্ম এবং মিথলজিতে ভূমিকম্পের বর্ণনা, লেখার মধ্যখানে আমরা আলোচনায় আনবো ভারতীয় উপমহাদেশের ধর্ম হিন্দু-বৌদ্ধ-জৈন ও আব্রাহামিক ধর্ম ইসলাম-খ্রিষ্টান-ইহুদিবাদে ভূমিকম্পের দৃষ্টিভঙ্গি এবং শেষে আমরা জানবো বিজ্ঞান ভূমিকম্প সম্পর্কে কী বলেছে। সেই সাথে লেখার শেষ অংশে থাকবে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন- মন্দির, মসজিদ, গির্জার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র।

ভূমিকম্পের ধর্মীয় ইতিহাস আলোচনা করবো, আর সেক্ষেত্রে গ্রীক পুরাণ আলোচনায় আসবে না, তা কখনোই হতে পারে না। গ্রীকরা বিশ্বাস করতো - ভূমিকম্পের কারণ পোসাইডোন নামের এক বৃদ্ধ দেবতা। যার মুখভর্তি দাঁড়ি, হাতে ত্রিশূল, হিংসুটে রাগান্বিত চেহেরা। পোসাইডোন থাকতো পানির নিচে। 


গ্রীকরা ভয়ে তাকে পূজা করতো। নিয়মিত অর্চনা এবং উপহার দিতো। যদি কোন কারনে তিনি সন্তুষ্ট না হতেন, তবে সুনামি ভূমিকম্পের মত মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখাতেন। আর তাই পোসাইডেনকে “পৃথিবীর কম্পনকারক” নামেও ডাকা হয়।

ভুমিকম্প নিয়ে সব থেকে মজার ঘটনা পেয়েছি পশ্চিম আফ্রেকিরা মিথলজিতে। অন্যান্য সব ধর্মের মতে তারাও বিশ্বাস করে, পৃথিবী সমতল, যার একপাশে আছে বিশাল বিশাল সব পর্বত, অন্যপাশে আছে একজন বিশাল দৈত্য। সেই দৈত্যের স্ত্রী আকাশ ধরে ঝুলে থাকতো।


দৈত্যের যখন স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করার ইচ্ছে হতো, তখন সে লাফ দিলে পৃথিবী কেঁপে উঠত। 

অন্যদিকে পূর্ব আফ্রিকার মানুষরা বিশ্বাস করতো, এক মৎস্য-দৈত্য পিঠে একটি পাথর নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। ওই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটি গাভী। যার শিং-এর ওপর দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী। মাঝে মাঝে গাভীটির ঘাড়ে ব্যথা হলে এক শিং থেকে অন্য শিং-এ পৃথিবীকে স্থানন্তরের সময় পৃথিবী কেঁপে উঠে।

আফ্রিকার অন্য কিছু মানুষ মনে করত পৃথিবীটা হল একটা দৈত্যের মাথা। গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ হল উকুনের মত পরজীবী।


মাঝে মধ্যে দৈত্যটি চলাচলের সময় মাথা এদিক ওদিক ঘোরালেই ভূমিকম্প দেখা দেয়। 

মানুষের উৎপত্তি থেকে পৃথিবীর সব দেশেই মিথলজি ছিল। যার কিছুমাত্র পাওয়া গেলেও অধিকাংশই অনাবিষ্কৃত বলে ধরে নিতে পারি। জাপানের মিথলজিতে ভূমিকপম্পের কারণ - এক মৎস্য-দৈত্য কিংবা এক বিশাল মাগুর মাছ, যার নাম নামাজু। কাদার তলদেশে বাস করতেন দৈত্য নামাজু। কোনো কারণে নামাজু পৃথিবীতে আক্রমণ করতে চাইলে ঈশ্বর কাশিমা তাকে পাথর মেরে দূরে তাড়িয়ে দিতেন।


মাঝে মাঝে ঈশ্বর ক্লান্ত হয়ে পড়লে, কিংবা অন্য কোনো কাজে মনযোগ দিলে দৈত্য নামাজু এসে পৃথিবীকে ঝাঁকুনি দিলে ভূমিকম্প হয়। এটি জাপানের খুবই জনপ্রিয় কাহিনী। তাই মিথলজির দৈত্য নামাজুকে এখনও মনে রাখার জন্য জাপানের আবহাওয়া সংস্থার ভূমিকম্পের সতর্ক-বার্তার যন্ত্রে একটি মাছের ছবি ব্যবহার করা হয়। 

বেলজিয়ামের মিথলজিতে পাওয়া যায়, মানুষ যখন খুব পাপী হয়ে ওঠে, ঈশ্বর তখন একজন রাগী দেবতাকে পৃথিবীতে পাঠায়। সেই সময় চারপাশে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শোনা যায়, এই শব্দের কারণেই কেঁপে ওঠে পৃথিবী। আবার নিউজিল্যান্ডের মানুষ বিশ্বাস করতো, পৃথিবী হচ্ছে একজন মা। তার গর্ভে আছেন নবাগত ঈশ্বর। যার নাম রু। মায়ের (পৃথিবীর) গর্ভে শিশু ঈশ্বর নড়াচড়া করলে পৃথিবী কেঁপে ওঠে।

অদ্ভুত সব কল্পকথার মাঝে এক সময়কার মোজাম্বিকের মানুষদের বিশ্বাস আরও অদ্ভুত। তারা মনে করত, পৃথিবী একটি জীবন্ত প্রাণী। তাই মানুষের মত পৃথিবীরও নানা সমস্যা আছে। 


মাঝে মাঝে পৃথিবীর জর হলে সেই অসুস্থতার খবর মানুষকে জানানোর জন্য পৃথিবী শরীরের কাঁপুনি দিতো। যাতে ঈশ্বরের কাছে মানুষ পৃথিবীর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতে পারে। 

অন্যদিকে মঙ্গোলিয়ার মানুষদের বিশ্বাস পৃথিবীটা একটি বিশাল ব্যাঙের পিঠের উপর বসে আছে। 


ব্যাঙটি চলতে চলতে মাঝে মাঝে ঝাঁকুনি দেয়। ব্যাঙের ঝাঁকুনিতেই পৃথিবীতে ভূমিকম্প হয়। 

পেরুর মিথলজিতে লেখা আছে, ঈশ্বর পৃথিবীতে আসেন মানুষের সংখ্যা ও কতজন তাকে অনুসরণ করছে, তা গুনে দেখার জন্য।


মূলত ঈশ্বর যখন হাঁটেন তার পায়ের কম্পনের কারণে ভূমিকম্প হয়। এই সময় পৃথিবীর মানুষরা "আমি এখানে আছি, আমি এখানে আছি" চিৎকার করলে ঈশ্বর তাড়াতাড়ি মানুষ গুনে দ্রুত পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে পারে। 

নর্স পুরাণের বর্ণনাতে আছে, সৌন্দর্যের দেবতা বলডারকে হত্যা করায় দেবতা লকিকে একটি বিষধর সাপ মাথার ওপর দিয়ে শিকল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। সেই সাপ তার মাথায় ক্রমাগত বিষ ঢেলে চলেছে। তার স্ত্রী সেজিন তাকে বাঁচানোর জন্য একটি পাত্রে বিষ ভরে রাখছে। 


পাত্রটি পুর্ণ হয়ে গেলে সে যখন তা খালি করতে যায় তখন ক্রমাগত পড়তে থাকা বিষ থেকে নিজেকে বাচানোর জন্য লকি নাড়াচাড়া করে, ফলে ভূমিকম্প হয়।

রোমানিয়ায় বিশ্বাস করা হয়, পৃথিবীর ভিত্তি (পিলার) হল কতগুলো বিশ্বাসের স্তম্ভ। বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী। যখন মানুষের বিশ্বাস দুর্বল যায় পৃথিবী কেঁপে উঠে। 

মধ্য আমেরিকায় মানুষরা বিশ্বাস করতো, পৃথিবী সমতল এবং তার চারপাশে চারজন দেবতা আছেন।


যখন তারা দেখতে পায় পৃথিবী জনসংখ্যা অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে, তখন তারা পৃথিবীকে একটু ঝাঁকিয়ে দেয় জনসংখ্যা কমানোর জন্য। 

চীনের মিথলজিতে আছে পৃথিবীর ভিতরটা গুহার মত। যার ভিরতে একটি বিশাল ড্রাগন আছে।


ড্রাগনটি রাগান্বিত হলে পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেয়।

লাটভিয়ার মিথলজিতে আছে, ড্রেবখুলাস নামের একজন দেবতা হাতের মাঝে পৃথিবীকে ধরে রেখেছেন। তার এক হাত থেকে অন্য হাতে পৃথিবীকে নেওয়ার সময় পৃথিবী একটু নড়চড়ে উঠে। 

আমরা এতক্ষণ দেখলাম পৃথিবীর নানা অঞ্চলের ভুমিকম্প বিষয়ে নানা মতবাদ। এবার আমরা দেখবো, ভারত উপমহাদেশে ভূমিকম্প নিয়ে প্রচলিত ধারণা, বিশ্বাস এবং মিথোলজির কথা। তবে এতক্ষণ পর্যন্ত যা বলেছি, তা বিশ্বাস না করলেও চলবে। কারণ এসব কথা সব বানানো গল্প এবং মানুষকে বোকা বানানোর ইতিহাস। কিন্তু নিচে বর্তমানে সময়ের প্রধান ধর্মগুলিতে বর্ণনা তুলে ধরা হল। যা আপনি বিশ্বাস করতে না চাইলেও বিশ্বাস করতে হবে। 

হিন্দু ধর্মে অনেক ধরনের লোককথা প্রচলিত আছে। ভারতের আসাম প্রদেশে এবং চীনের পাশের অঞ্চলে কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, পৃথিবীর ভেতরে একটি জাতি আছে, মাঝে মাঝে তারা পৃথিবীর ওপরের অংশে আঘাত হানে পৃথিবীর ওপরের পৃষ্ঠে কেউ থাকে কিনা দেখার জন্য। তাই যখন ভুমিকম্প হয়, আসামের মানুষরা চিৎকার করে আমরা আছি, আমরা আছি বলে। তখন ওপর থেকে মানুষের চিৎকার শুনে ভিতরের মানুষরা ঝাঁকুনি বন্ধ করে দেয়। 

তবে হিন্দুধর্মে ভূমিকম্পের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হল - পৃথিবীটি দাঁড়িয়ে আছে আটটি হাতির উপর, হাতিগুলি দাঁড়িয়ে আছে কচ্ছপের ওপর। কচ্ছপটি দাঁড়িয়ে আছে একটি গোখরো সাপের উপর।


যখন এর কোন একটি প্রাণী নড়াচড়া করে পৃথিবী কেঁপে উঠে। 

ভূমিকম্প নিয়ে ভারতে আরও একটি লোককথা আছে। সাতটি সাপ পৃথিবী ও স্বর্গকে দেখাশোনার দায়িত্ব আছে। যখন একটি সাপের দায়িত্ব শেষে অন্য সাপ দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন তাদের নড়াচড়ার সময় পৃথিবীতে ভূমিকম্প হয়। 

হিন্দুধর্মের আরেক ব্যাখাতে পাওয়া যায়, অবতার বরাহ হল হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর রূপ। এই অবতারে বিষ্ণুকে বন্য শুকুরের মত দেখায়। পুরাণে আছে, হিরণ্যাক্ষ নামক রাক্ষসের হাত বরাহ যুদ্ধ করে পৃথিবীকে উদ্ধার করেন। রাক্ষস হিরণ্যাক্ষ পৃথিবীকে চুরি করে সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে রেখেছিল। 


তখন পৃথিবীর কান্না দেখে বিষ্ণু বরাহ রূপ ধারণ করে হিরণ্যাক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করে পৃথিবীকে উদ্ধার করেন এবং পৃথিবী বিয়ে করেন।

ভূমিকম্প নিয়ে বৌদ্ধধর্মে বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে। মহাপরিনির্বাণ সূত্রে ভূমিকম্প নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা হয়েছে। মহাপরিনির্বাণ সূত্র বুদ্ধের শেষ উপদেশমালার ভিত্তি। শয়তান মার যখন বুদ্ধকে নিমন্ত্রণ করতে আসে, তখন বড় ধরণের বজ্রপাত এবং ভূমিকম্পন দেখা দেয়। বুদ্ধের সেবক আনন্দ তখন বুদ্ধের নিকট ভূমিকম্পের কারণ জিজ্ঞেস করলে বুদ্ধ ভূমিকম্পের আটটি কারণ উল্লেখ করেন: 


১. এই পৃথিবী কিছু তরলের উপর দাঁড়িয়ে আছে। বায়ুমণ্ডলীয় নানা সমস্যার কারনেই তরল উত্তেজিত হয়, ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ভূমিকম্পের হয়। 

২. যখন কোনো তপস্বী, দৈব শক্তি কিংবা বুদ্ধত্ব পায় অথবা একজন তপস্বী যখন মনোযগের সর্বোচ্চ মাত্রায় যায়,  তখন ভূমিকম্প হয়। 

৩. যখন একজন বোধিসত্ত্ব তুসিত স্বর্গ থেকে মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়। 

৪. যখন একজন বোধিসত্ত্ব মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়। 

৫. যখন তথাগত বুদ্ধ অতুলনীয় জ্ঞানের সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। 

৬. যখন ধর্মচক্র ঘূর্ণায়মান হয়। 

৭. যখন একজন তথাগত পৃথিবী ছাড়ার ঘোষণা দেন। 

৮. যখন একজন বুদ্ধ নির্বাণের খুব কাছে চলে আসে, তখন ভূমিকম্প হয়।

ইব্রাহীমকে যেসব ধর্মে নবী মানা হয়, সেসব ধর্মকে আব্রাহামিক ধর্মের শাখা বলা হয়। এর শাখা হল ইসলাম, ইহুদী, বাহাই এবং খ্রিষ্টান ধর্ম। খ্রিষ্টান ধর্মে (লুক ১৩:১-৫) আছে, যদি মন থেকে পাপ দূর করা না যায়, তবে ভূমিকম্প হবে। যীশু খ্রিষ্ট বেঁচে থাকার সময় নানা কারণে ভূমিকম্প হয়েছে, সে কথা বাইবেলে অসংখ্য বার পাওয়া যায়। বাইবেলে (লুক ২১:১১) বলা আছে, এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে ভূমিকম্প হবে। তাই ঈশ্বর সবাইকে সাবধান হতে বলেছেন। এছাড়া আছে ঈশ্বরের কথা শুনতে হবে, নাহলে তিনি স্বর্গসহ কাঁপিয়ে দেবেন। ইহুদি ধর্মেও বলা আছে, ভূমিকম্প ঈশ্বরের নির্দেশে হয়। আবার আব্রাহামিক ধর্মের আরেকটি শাখা ইসলামেও ভূমিকম্প নিয়ে অসংখ্য মন্তব্য করা হয়েছে। যেখানে বারবার বলা হয়েছে, একটি কথা: ভূমিকম্প হল আল্লাহর আদেশে, মানুষকে ভয় দেখানো এবং সঠিক পথে আনার সতর্কবার্তা। কোরানের ১৬:৫, ১৬:৪৫, ১৭:৫৯, ৬:৬৫, ২৯:৩৭-৪০, ৭:৯৭-৯৯ সহ আরও আরও আয়াতে ভূমিকম্প বিষয়ে ভয় দেখানো বা আল্লাহর নির্দেশের ইঙ্গিত আছে। কোরানে সূরা যিলযাল নামে (সূরা নং - ৯৯, আয়াত সংখ্যা - ৮) একটি সূরা আছে, যা সম্পূর্ণ ভূমিকম্প নিয়ে এবং যিলযাল অর্থ হল ভূমিকম্প। আল-আল্লামা ইবনে আল-কাইউম বলেছেন, মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন। যার ফলে তখন বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুষ্ঠিত হয়। এটা মানুষগুলোকে ভীত করে, তারা মহান আল্লাহর নিকট তওবা করে, পাপকর্ম করা ছেড়ে দেয়, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং তাদের কৃত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়।"

এতক্ষণ আমরা দেখলাম ভূমিকম্পের ধর্মীয় ব্যাখা এবার আমরা দেখবো ভূমিকম্প বলতে বিজ্ঞান কী বোঝে। আধুনিক বিজ্ঞানের মতে, ভূমিকম্প হল ভূপৃষ্ঠের নিচে শিলাস্তরের ভাঙন এবং সংঘর্ষ। আমরা জানি পৃথিবীর নিচে (ভেতরে) অনেকগুলি শিলাস্তর আছে। এই শিলাস্তরগুলি শক্তি সঞ্চয় করে, যখন সেই শক্তির আকস্মিক মুক্তি ঘটে, ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ কিছুক্ষণের জন্য কেঁপে ওঠে। পাথরের শিলাস্তরগুলি একে অন্যকে ঘর্ষণ করে, তখন মৃদু কম্পন হয়। যখন শিলাস্তরগুলি একে অন্যকে ঠেলতে থাকে, প্রসারিত হয়ে জায়গা দখল করতে চায়। এমন পারস্পরিক সংঘর্ষের শিলাস্তর ভেঙে যায় এবং পৃথিবীতে ভূমিকম্প দেখা দেয়।



ব্যাখ্যাটা আরেকটু সহজ করে নিচ্ছি। আমাদের এক হাতের আঙ্গুল দিয়ে অন্য হাতের আঙুলগুলিকে ধরে রাখলাম। যদি হালকা ভাবে ধরে রাখি, তবে টান দিলেই দু'হাত ছুটে যাবে। কিন্তু যদি শক্ত করে ধরে রাখি, তবে ছোটাতে একটু শক্তি খরচ করতে হবে এবং টানতে টানতে এক সময় দু হাতের বন্ধন ছুটে যাবে। সাথে সাথে ছোট একটি শব্দ সৃষ্টি হবে ও হাতের মাঝে একটু করে কম্পন হবে। ভূমিকম্পের সময় পৃথিবীর নিচেও এমনটি হয়। যখন দুটি শিলাস্তরের মাঝে শক্তি দিয়ে ঘর্ষণ কিংবা পৃথক হয়ে যাওয়ার ফলেই ভূমিকম্প হয়। 

এতক্ষণ জানলাম ভূমিকম্প নিয়ে পুরানো দিনের বানানো গল্প এবং অপদার্থ বিজ্ঞানের কিছু ভ্রান্ত ব্যাখ্যা, সেই সাথে বর্তমানের ধর্মগুলির নির্ভরযোগ্য সত্য বাণী। এবার আমরা দেখবো ভূমিকম্প নিয়ে বর্তমান সময়ের কিছু মিথলজি। অনেকের ধারণা, ভূমিকম্প যেহেতু ঈশ্বর, ভগবান, আল্লহর তরফ থেকে হয়, তাই ভূমিকম্পে মসজিদ, মন্দির, গির্জা এসবের কোনো ক্ষতি হয় না। মানুষ অনেক কিছুই দাবি করতে পারে। আমি তার বিরোধিতা করছি না, তবে লেখার শেষটা হল কিছু মিথলজির বাস্তব চিত্র দিয়ে।






মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫

বেদ্বীনবাণী - ৩৬



আমার "আমার অবিশ্বাস" পাঠ - ২৩

হুমায়ুন আজাদের 'আমার অবিশ্বাস' নামের বই থেকে ছেঁকে তোলা শ্রেষ্ঠ উদ্ধৃতির সংকলন।

১০৮.
আজকাল যেমন রয়েছে ধর্মীয় মৌলবাদীরা, তেমনি আছে ধর্মীয় উদারতাবাদীরা। ধর্মীয় মৌলবাদীরা অদিম, তারা তাদের বিশ্বাসে অবিচল, এবং অত্যন্ত ক্ষতিকর; উদারতাবাদীরা বিভ্রান্তিকর।... ধার্মিকদের বিশ্বাস অবশ্যই ভুল; কিন্তু ধর্মীয় উদারতাবাদীদের এমনকি ভুলও বলা যায় না, তারা ভুলের থেকে বেশি ভুল।

১০৯.
সারাক্ষণ আমি ভাবি না বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে; বিশ্বাসের ব্যাপারটি ভুলেই থাকতে পারি, ভুলেই থাকি; তার থেকে অজস্র আকর্ষণীয়তায় ভ'রে আছে পৃথিবী ও জীবন। এই রোদ অজস্র বিশ্বাসের থেকে চিরন্তন, এই বৃষ্টি মূল্যবান লাখ লাখ বিশ্বাসের থেকে, কর্কশ কাকের ডাককেও মনে হয় পাঁচ কোটি বিশ্বাসের থেকে সুখকর; আর রয়েছে মানুষের মুখ, মানুষের শরীর, এবং রয়েছে বই।

১১০.
আমি আর দ্বিতীয়বার জীবন যাপন করতে চাই না।; পুনর্জন্ম আর পরলোকে উত্থান আমার কাছে হাস্যকর।

১১১.
জীবনে মানুষ জীবন যাপন করে না; যাপন করে অন্য কিছু; জীবনযাপনের নামে মানুষ ক'রে চলেছে প্রথাযাপন। প্রথা জীবনের শত্রু, প্রথা জীবনকে নিরক্ত ক'রে তোলে, তার ভেতর থেকে শুষে নেয় প্রাণ; কিন্তু প্রথায় অভ্যস্ত হয়ে গেলে প্রথাকেই মনে হয় জীবন। 

১১২.
যে সমাজে প্রথার পরিমাণ যতো বেশি, তার মানুষ ততো মৃত, নিরক্ত, অসুস্থ, বিকৃত, ততো প্রতিভাহীন।

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫

মুছলিম ও পপকর্নের সাদৃশ্য

একটি বিদেশী আইডিয়ার অনুকরণে

খণ্ড খণ্ড চিন্তা-ভাবনা

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

১.
বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই আছে। কারো পহেলা বৈশাখ নিয়ে কোন ধর্মীয় গোঁড়ামি নেই। শুধু মুসলিমদের কেন ফতোয়া আসে? পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের উৎসব, পহেলা বৈশাখে গেলে ঈমান চলে যাবে, হেনতেন!

কোনো বৌদ্ধ কিংবা খ্রিষ্টান তো বলে না পহেলা বৈশাখে গেলে তাদের ধর্ম নষ্ট হয়ে যাবে। এমনকি শহরে যেসব আদিবাসী (অবাঙালি) আছেন, তাঁরাও পহেলা বৈশাখে আসেন। কারো তো ধর্ম নিয়ে মাথাব্যথা ওঠে না। শুধু মুসলিমদের কেন সবকিছুতেই ধর্ম নিয়ে চুলকানি?

লন্ডনে ব্যারিস্টারি পাশ করা, অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি করা, বাংলাদেশের নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা মুসলিমেরা কীভাবে বলে, পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের উৎসব, এসবে গেলে ধর্ম নষ্ট হয়ে যায়! এদের আপনি অশিক্ষিত বলবেন কীভাবে? শুধু মোল্লারা ফতোয়া দেয়, এই অজুহাতই বা কীভাবে দেখাবেন?

গ্রামাঞ্চলে অমুসলিমদের ওপরে হামলা হলে তখন মডরেট খচ্চর মুসলমানেরা যুক্তি দেখায় - অশিক্ষিত ধর্মান্ধ মুসলিমেরা এসব করে। শিক্ষিত মুসলিমেরা করে না। যখন এসব উচ্চশিক্ষিত ছাগলেরা ছাগলামি করে, বলে - তারা সহী মুসলিম নয়! সব ইহুদি নাসাদাদের ষড়যন্ত্র!

"আপনি আগে বাঙালি নাকি মুসলিম?" - কত্ত বড় প্রশ্ন! কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান ধর্মের ধর্মগুরুরা তো এই ফতোয়া দেয় না। শুধু ইসলাম ধর্ম থেকে কেন ফতোয়া আসে?

‪# ‎অফটপিক‬: যে-ব্যক্তি এই প্রশ্নগুলো করবেন, অবশ্যই তাঁকে ইসলামবিদ্বেষী এবং সাম্প্রদায়িক ট্যাগ দেবে অনেকে। শুধু প্রশ্নের উত্তর তারা দিতে পারবে না।

২.
"ধর্ষণ করে যে - সে ধর্ষক।"

"ধর্ষণের জন্য পোশাককে দায়ী করে যে - সে ছুপা ধর্ষক।"

"যে ইনিয়ে বিনিয়ে বলবে, আসলে মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য হলেও পোশাকে শালীনতা রাখা উচিত - সে সবচেয়ে ভয়ংকর ধর্ষক।"

৩.
কোরবানির ঈদে পাল্লা দিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে গরু কিংবা উট যখন কেনা হয়, তখন টাকা অপচয় হয় না। এটা বিলাসিতাও না। টাকা অপচয় হয় শুধু পহেলা বৈশাখে ৫০০ টাকায় পান্তা ইলিশ খেলে! কী বুঝলেন?

একদল ছুপা ছাগলের পাল ইনিয়ে বিনিয়ে এটার বিরোধিতা করে। ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। পান্তাও বাঙালির ঐতিহ্য। তো পান্তা-ইলিশ নিয়েই কেন শুধু অপচয় চলে আসছে?

আপত্তিটা আসলে পান্তা ইলিশে নয়। আপত্তি বৈশাখি মেলাতেই। আপত্তি বাঙালি ঐতিহ্যে। পান্তা-ইলিশ এখন মেলার অন্যতম আকর্ষণ। সেটাকে বন্ধ করতে পারলে মেলারই একটা অংশ বন্ধ করা যায়।

শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে জামাতি-হেফাজতিদের সেই আপত্তি কিন্তু আসলে ফুলে নয়। আপত্তি শহীদ মিনারে। ফুলই যদি না দেয়, তাহলে মানুষ শহীদ মিনারে যাবে কেন? শহীদ মিনার তো আর মোনাজাতের জায়গা না কিংবা কনসার্টের জায়গা না। মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতেই যায়। ফুল দেওয়ার এই প্রথাটা বন্ধ করতে পারলে শহীদ মিনারটাও চাপা পড়ে যায়।

লাখ লাখ টাকা দিয়ে গরু কেনা অপচয় না। রোজায় ২০ টাকার বেগুন ৫০০ টাকায় কেনা অপচয় না। যেন বেগুন ছাড়া ইফতার সহী হবে না। কুরানে লিখা আছে!

ঈদের ৫০০ টাকার শার্ট ২০০০ টাকা দিয়ে কিনলে অপচয় হয় না। পচা ময়দার সেমাই ২০০ টাকা দিয়ে কিনলেও অপচয় হয় না। অপচয় শুধু বৈশাখি মেলাতে। আসলে অপচয়-টপচয় কিছুই না। ছাগল বলেন বা আরিফ ভাঁড় হোসাইনের মতো সুশীল বলেন, তাদের চুলকানি বৈশাখি মেলাতেই।

৪.
"যেসব মেয়েরা পর্দা করে না তারাই ধর্ষনের স্বীকার হয়।" - মোল্লা ছাগল।

"দেখুন, ধর্ষণ সমর্থন করার কিছু নেই। তবে মেয়েদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হলেও শরীর ঢেকে চলা উচিত।" - মডরেট ছাগল।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে: মাদ্রাসায় যেসব বালক মোল্লাদের বলাৎকারের শিকার হয়, তারা কি পর্দা করে না বলে ধর্ষিত হয়? 

৫.
টিএসসিতে হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে মেয়েকে জানোয়ার ধার্মিকেরা নগ্ন করে ফেলল পোশাক তাদের পছন্দ হয়নি বলে। ইসলামি দেশে এ কেমন পোশাক!

বইমেলায় হাজার মানুষের ভীড়ে লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে মারা হল তিনি নাস্তিক বলে। ইসলামি দেশে নাস্তিক কোপানো জায়েজ।

সরকার দলের সংগঠন ওলামা লীগ দাবী জানাচ্ছে ৯৮% মুসলিমের দেশে শিক্ষানীতি ইসলামিক করার। অমুসলিমেরা শিক্ষক বেশি হচ্ছে, অমুসলিমদের লেখা বইয়ে জায়গা পাচ্ছে বেশি। এতে তাদের আপত্তি। এমন সাম্প্রদায়িক উস্কানির পরেও কারো কোনো প্রতিবাদ নেই। থাকুক না কয়েকটা ইসলামি দল!

নীলফামারিতে পোস্টার ছাপিয়ে হুমকি দিয়ে হিন্দুদের ভারত চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হলো। তারপর মন্দিরে আগুন দেওয়া হলো।

৯০% মুসলিমের দেশ বলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চায় তারা। একটা পরিপূর্ণ এবং আদর্শ ইসলামিক রাষ্ট্র দাবি করে। তাদের সেই আশা পূরণ হচ্ছে। 

নাস্তিকদের কোপানো হচ্ছে, পোশাকে বোরকা-হিজাব না থাকলে কুকুরের মত ঝাঁপিয়ে পড়ছে, পোস্টার ছাপিয়ে হুমকি দিয়ে রীতিমত ঢাকঢোল পিটিয়ে হিন্দুদের ওপরে হামলা করা হচ্ছে। সরকারও ৭২-এর অসাম্প্রদায়িক সংবিধানের ঘোষণা না দিয়ে ইসলামিক মদিনা সনদের ঘোষনা দিচ্ছে। একটা পরিপূর্ণ আফগানিস্তানের দিকে বাংলাদেশ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। অভিনন্দন বাংলার মদিনাবাসী!

গরুপূজারি গাধাগুলো - ১১৩


তবে পান করে গরুর মুত!
রয়টারের পোনে দুই মিনিটের রিপোর্ট। পাঠিয়েছেন ক্যাটম্যান

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/n4idiSFX7jI

রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৫

ফাতেমা দেবীর ফতোয়া - ১১

লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সঃ)

৫১.
এতদিন ভাবতাম, বাজেতম ইছলাম ধর্মরে কেউ কেউ শান্তির ধর্ম কয় ক্যান? পরে দেখলাম, আরে ঘটনা ত সত্যি, এক্কেরে হাঁচা হাঁচা। ইছলামের নবীজিরে, ইছলামের কুরানরে, ইছলামের য়াল্ল্যারে, ইছলামের ক্বাবা শরীফরে, ইছলামে য়াল্ল্যার যৌনাঙ্গ হাজরে আসওয়াদরে ও সর্বোপরি ইছলামরে গালাগালি কইরা যেই অপার শান্তি, হেই রকম শান্তি নিখিলের আর কিচ্ছুতে নাইক্কা। এখন বুঝতাছি, ইছলাম আসলেই শান্তির ধর্ম।

৫২.
- কয়েকটি ন্যুড বারের নাম লিখো এবং ওসব জায়গার কর্মকাণ্ড বর্ণনা করো।

- ক্বাবা শরীফ, শিব মন্দির ও কালী মন্দির এগুলি হলো একেকটি কুখ্যাত ন্যুড বার।

* ক্বাবা শরীফে য়াল্ল্যাপ্যাককে নেংটু পুটু ক'রে তার যৌনাঙ্গে মুছলিমরা চুমু খায় সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দেখিয়ে। আবার এসব বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ক'রে, ছবি তুলে সবখানে ছড়িয়ে দেয়; যদিও ছবি তোলা এবং ভিডিও করা ইছলামে হারাম।

* শিব মন্দিরে শিব ভগবানকে নেংটু পুটু ক'রে হিন্দুরা তার যৌনাঙ্গে দুধ ঢালে, চুমু খায়। এবং তার ছবি তুলে, ভিডিও ক'রে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয় এই বিকৃত যৌনতা।

* কালী মন্দিরে কালী ভগবতীকে নেংটু পুটু ক'রে যা ইচ্ছে তাই করে হিন্দুরা। এমনকি পশু এনেও যোগ করে এই নেংটু যৌনোৎসবে। 

এই তিনটি কুখ্যাত ন্যুড বারে প্রতিনিয়ত বিকৃত যৌনাচার-চর্চা হয়। এমন কি পিতা-পুত্র-কন্যা-মাতা মিলেও এই যৌনোৎসবে যোগ দেয়। লজ্জা শরমের কোনো বালাই নাইক্কা।

৫৩.
হীরার বিচার ঔজ্জ্বল্যে, মসলিনের বিচার সূক্ষ্মতায়, ধর্মের বিচার বর্বরতায়।

৫৪.
তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে। (কোরান ৩১:১০)

তিনি কেন আকাশে খুঁটি দিলেন না? বাঁশের অভাব ছিল বুঝি? 

তিনি পৃথিবীকে যদি পর্বত দিয়ে চাপা না দিতেন, তাহলে তো পৃথিবী আমাদের নিয়ে ঢলে পড়ে যেতো। আমরা পড়ে যেতাম পৃথিবী থেকে। আমরা পৃথিবী থেকে পড়ে কোথায় যেতাম?

৫৫.
নিচের আসমানে তারাগুলিকে লটকানো দেখেই আমি আস্তিক হয়ে গেছি। আসমানে, তা-ও আবার নিচের আসমানে তারা লটকিয়ে দিতে একমাত্র য়াল্ল্যাতালা ছাড়া কোনো মানুষ পারে না ব'লে আমি মনে করি। যদি কেউ পেরে থাকে, তবে লটকিয়ে দিয়ে দেখাক তো! আমি আবার সাথে সাথেই নাস্তিক হয়ে যাবো।

নুহ নবী ও খেলনা জীবেরা



পবিত্রতার ধারণা

লিখেছেন নাস্তিক দস্যু

ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় পড়তে গিয়ে এক ছোট্ট ছেলে দেখতে পেল, ছেলেমেয়েরা পবিত্র কোরানে পা লাগলে আদবের সহিত সালাম করে। আবার রেহাল, জোযদান ইত্যাদির সাথে পা লাগলেও সালাম করে। সে শুনেছিল, কোরান পবিত্র জিনিস, তাই ওটাতে পা লাগলে সালাম করতে হয়। কিন্তু রেহাল-জোযদানে পা লাগলে সালাম করার দরকার কী? এই প্রশ্ন তার মনে ঘোরপাক খেতে লাগল।

একদিন সে তার হুজুরকে জিজ্ঞেস করল, “হুজুর, কোরানের সাথে পা লাগলে সালাম করতে হয়, এটা নাহয় বুঝতে পারলাম। কিন্তু রেহাল-জোযদানে পা লাগলে সালাম করতে হবে কেন?”

হুজুর উত্তরে বলল, “পবিত্র কোরান এমন একটি পবিত্র জিনিস, যার সংস্পর্শে যা কিছু আসে, সবই পবিত্র হয়ে যায়। কোরানের সাথে রেহাল, জোযদান স্পর্শ হওয়ার কারণে এসবও পবিত্র এবং দামী হয়ে গেছে। তাই এসবকেও সম্মান করতে হবে।”

কথাটি ছেলেটির মনে গেঁথে রইল যে, পবিত্র কোরানের স্পর্শে যা কিছু আসে, সবই পবিত্র হয়ে যায়।

একদিন ছেলেটি বড় হলো। সে ইসলামের খেদমতের উদ্দেশ্যে নিজেকে তাবলীগ জামাতের সাথে সংযুক্ত করল।

একদিন সে ইসলাম প্রচারে বের হল। একটা বাড়িতে গিয়ে দেখে বাড়ির কর্ত্রী মাশাল্লয়াহ! বাড়িতে কর্তা নাই। এই তো সুযোগ! সাথে সাথে ছেলেটি মুহাম্মদী আদর্শে বলীয়ান হয়ে উঠল। সে বিভিন্নভাবে ঐ রমণীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে মেরাজের জন্য রাজি করাল। তারপর আল্লার নাম নিয়ে শুরু হল মেরাজকার্য। কাজ প্রায় শেষের দিকে। একটু পরেই হাউজে কাউছারের পানি বের হবে। হচ্ছে... হচ্ছে...

এমন চরম টাইমে ঘরের বাইরে কর্তা এসে তার বউকে ডাক দিল, “এই রাবেয়া! রাবেয়া! দরজা বন্ধ ক্যান?”

ইসলামের খেদমতে আসা ছেলেটা গেলো বিপদে পড়ে। এখন সে কী করবে? এইসব কোথায় মুছবে? এই ঘরের কোন জিনিস দিয়ে মোছা যাবে না। তাহলে কর্তার নজরে পড়ে যেতে পারে। ওইদিকে কর্তা চেঁচিয়ে চলেছে, “এই রাবেয়া!...”

ছেলেটা খুব দ্রুত ভাবতে লাগল। হঠাৎ তার মনে পড়ল, সে আসার সময় তালিম দেয়ার জন্য একটা কুরান সাথে এনেছিল। তাড়াতাড়ি তার থেকে একটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ঈমানদণ্ডখানা মুছতে লাগলো। এটা দেখে রমণী খুবই অবাক হল। কোরান দিয়ে মাল মুছা হচ্ছে! 

রমণী ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল, “এইটা তো কবিরা গুনাহ! এইরাম করলেন ক্যা?”

ছেলেটি তখন ঔ হুজুরের ফতোয়াই দিল, “পবিত্র কোরান এমন একটি পবিত্র জিনিস, যার সংস্পর্শে যা কিছু আসে, সবই পবিত্র হয়ে যায়। কোরানের সাথে ঈমানদনণ্ড স্পর্শ হওয়ার কারনে এটাও পবিত্র এবং দামী হয়ে গেছে। তাই এটাকেও সম্মান করতে হবে।”

আরও বলল, “আমার ইয়েটা কোরানের সাথে লাগার ফলে পবিত্র এবং সম্মানীত অই গেছে। এখন কোরান যেমন পবিত্র, আমার ঈমানদণ্ডও তেমনই পবিত্র!”

শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

হা-হা-হাদিস – ১৩১


ইসলামী ইতরামি

লিখেছেন নিলয় নীল

১.
জয়নাব প্রিয়া ডালা একজন সাউথ আফ্রিকান মনোবিজ্ঞানী, যিনি সম্প্রতি তাঁর প্রথম উপন্যাস প্রকাশ করেন। উপন্যাসটি প্রকাশ-অনুষ্ঠানে তিনি সালমান রুশদির প্রশংসা করেন। সালমান রুশদির প্রশংসা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সভাস্থল ত্যাগ করেন অনেকেই।

এই ঘটনার একদিন পরেই ডালাকে অপহরণ করা হয়। তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে তাঁর উপর নির্যাতন করা হয়, ইট দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। মারাত্মকভাবে আহত করে তার পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরিবার তখন ডালাকে পাগল বলে সাব্যস্ত করে। পরিবারের ধারণা, কোনো সুস্থ মানুষ রুশদির প্রশংসা করতে পারে না, ডালা একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ বলেই এই প্রশংসা করেছে।

ডালা এখন ডারবানের সেন্ট জোসেফ মেন্টাল হেলথকেয়ারে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি পাগল, তাই তাঁকে চিকিৎসা করাচ্ছে তাঁর পরিবার। এদিকে সালমান রুশদি ডালার জন্য এগিয়ে এসেছেন, পাগল সাজিয়ে মানসিক হাসপাতালে রাখার যন্ত্রণা থেকে ডালার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক লেখক সংঘ PEN এর বরাতে জানা যায়, ডালার এমন একটি পরিবারে বিয়ে হয়েছে, যেটি ডারবানের সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবার হিসেবে সমাধিক পরিচিত। তাঁর স্বামীও জানিয়েছে, ধর্মীয় নেতারা ডালাকে যা বলে, তাই তাঁকে মেনে নিতে হবে, নিশ্চয়ই সে ধর্মের ঊর্ধ্বে নয়। 

২.
ঘটনা পাকিস্তানের পাঞ্জাবের লাহোরে, গত ১০ এপ্রিল পবিত্র জুম্মাবার। এইদিন দুপুরে একদল মুসল্লি একটি ছেলের বাইক থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে ছেলেটি খ্রিষ্টান। তারপর থেকেই তাকে মারধোর করা হয় শুধু খ্রিষ্টান হওয়ার দায়ে। পরবর্তীতে তাকে নিয়ে উল্লাস করে এক পর্যায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। 

কিছুদিন আগে খ্রিষ্টানদের চার্চ পুড়িয়েছিল আল্লাহার বান্দারা, ঐ ঘটনায় ২ জন আল্লাহার বান্দাকে ধরে খ্রিষ্টানরা মাইর দিয়ে পুলিশে তুলে দেয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই খ্রিষ্টান নিরীহ ছেলেটির উপর শোধ তোলে মুসল্লিরা। তবে ছেলেটি পরম করুণাময় আল্লাহার রহমতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছে, তার শরীরের একাধিক যায়গায় মারাত্মকভাবে পুড়ে গেলেও এখন সে সুস্থতার পথে।

৩.
সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো শুরু হলো হালাল সেক্স শপ, তাও আবার পবিত্র শহর মক্কায়! এই সেক্স শপের মালিক হলেন মরক্কোর আব্দুলাজিজ আওরাগ, যার মাধ্যমে প্রথম সফল অনলাইন হালাল সেক্স শপ “এল আশিরা”র যাত্রা শুরু হয়। 

সেক্স শপ সম্পর্কে অনেকের ধারণা থাকলেও হালাল সেক্স শপ যারা ভালো বোঝেন না তাদের অবগতির জন্য সৌদি এক ধর্মনেতার উদ্ধৃতি থেকে কিছু পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি। 
  • হালাল সেক্স শপে ব্রা প্যান্টি থেকে শুরু করে বোরকা হিজাব সবই থাকবে। 
  • সেক্স সামগ্রী স্বামী-স্ত্রীর সেক্সের জন্য ব্যবহৃত হবে। 
  • অবিবাহিত পুরুষ এবং বিবাহিত বা অবিবাহিত নারী একাকী এখান থেকে সামগ্রী ক্রয় করতে পারবে না। 
  • অবশ্যই যৌনসামগ্রী ইসলামীভাবে স্বীকৃত হতে হবে। 
  • সমকামের যৌনসামগ্রী কখনোই হালাল সেক্স শপে পাওয়া যাবে না। 
  • স্বকাম সামগ্রী পাওয়া যাবে না। 
আব্দুলাজিজ আওরাগ বলেন, আমাদের প্রোডাক্ট অনুভবকে বাড়াবে, অদ্ভুত সেনসিটিভিটি তৈরি করবে, যার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী উভয়ই হালালভাবে যৌনসুখ উপভোগ করতে পারবে। মুসলমান মহিলারা শুধু পর্দা মেনে রান্নাঘরেই থাকবে না, তাকে হালাল ভালবাসাকেও প্রধান্য দিতে হবে। 

৪.
মেয়েটি বিধবা থাকা সত্ত্বেও গর্ভবতী হয়েছে, সাধারণত বিধবারা কিছু করলেও কেয়ারফুলি করে, যাতে গর্ভবতী হয়ে জানাজানি না হয়, তাহলে এই মেয়েটি কি ধর্ষিত হয়েছে? কে তাকে ধর্ষণ করছে? কে তাকে গর্ভবতী বানিয়েছে?

এসবের উত্তর না খুঁজেই মেয়েটিকেই একতরফা দায়ী করা হলো অবৈধ সেক্স করা ও বাচ্চা জন্মদানের জন্য। তারপর প্রকাশ্যে সহিহ উপায়ে ১০০ বেত্রাঘাত করা হলো গর্ভবতীকে। বাহ কি সুন্দর ইছলামী বিচার!!!

৫.
আইএস নেতা আবু বকোর আল বাগদাদি তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরকে নির্বোধ ও অশিক্ষিত বলেছেন। আল বাগদাদি আরও বলেন, মোল্লা ওমরকে আধ্যাত্মিক বা রাজনৈতিকভাবে বিশ্বাস করা যায় না। অন্যদিকে তালেবান এক যোদ্ধা আইএসকে এক হাত দেখে নিয়েছেন। তালেবান আরেক নেতা বলেছেন, আইএসের বিরুদ্ধে সবার সোচ্চার হতে হবে, কারণ আইএস ইসলামের নামে চরম অশান্তি সৃষ্টি করছে। 

অনেক আগে এক হুজুরের মুখে শুনেছিলাম, একসময় সহিহ মুসলমানরা অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে, জিহাদ করতে করতে যখন অমুসলিমদের শক্তি থাকবে না, তখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানরা জিহাদ করবে। এরপর যখন মুসলমানদেরও শক্তি থাকবে না, তখন কে সহিহ আর কে সহিহ না, এই দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করবে। তবে সেইদিন আসার আগেই দুই সহিহ মুসলমান পক্ষ কেন একে অপরের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করবে? খবরে প্রকাশ, আইএস ও তালিবান একে অপরের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করছে! নাউজুবিল্লাহ্‌।

৬.
অবশ্যই শিশুদের হত্যা করতে হবে এবং কোনোরকম সহানুভূতি ছাড়াই। শুধু শিশু নয়, অবিশ্বাসী ও অমুসলিম নারীদেরকেও হত্যা করতে হবে কোনোরূপ মায়াকান্না ছাড়া। মানবাধিকার পরে। আগে ইসলাম, ইসলামের পথে যা যা করা প্রয়োজন, তা যতই অমানবিক হোক না কেন, তা করতেই হবে।

আমার বোরখা-ফেটিশ – ১৪২



শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৫

হিন্দুধর্মে ইসলামী সুন্নাহ!

লিখেছেন রিফু

কেমন হত, যদি ইসলাম ধর্মের সুন্নাহর প্রচলন হিন্দুধর্মে থাকতো?

আসুন, জেনে নিই।

শিবের সুন্নাহ:
স্থান-কাল-পাত্র বিচার না করিয়া নারীর স্নান দেখিতে উন্মত্ত হইয়া বিশ্বযুদ্ধ শুরু করিয়া দেওয়া।

কালীর সুন্নাহ:
স্বামীকে পদতলে রাখা। ঐ বিড়াল মারা আরকি।

কৃষ্ণের সুন্নাহ:
১. চুরি করা। বিশেষত মিষ্টি খাদ্যজাত বস্তু।
২. স্নানাগারে মেয়েদের গোসলের সময় উঁকি দেওয়া। (জাকির নায়েক এই থেকে হাসান হোসেনের ভবিষ্যদ্বাণী প্রসব করেছেন হয়তো।)
৩. মামী-চাচীদের দিকে কামুক দৃষ্টি দেওয়া। দেখতে সুন্দর হলে বিছানায় গড়াবেন। (রাধা)
৪. সামর্থ্য থাকলে ষোল হাজার একশত আট, সামর্থ্য না থাকলে হাজার খানেকে থামতে হবে। (মুহাম্মদী ৪ বিবাহ ইজ ওল্ড সুন্নাহ)
৫. টাকা না থাকলে বার ড্যান্সারকে বীর্য পুরষ্কার দেওয়া। (মা পার্বতীকে গণেশের বীজ দেয়।)

কৃষ্ণ ও কামসূত্র সুন্নাহ:
ডগি স্টাইল, গ্রুপ সেক্স, বাটারফ্লাই ইত্যাদি বৈচিত্রপূর্ণ সেক্স স্টাইল।

কামদেব ও কামসূত্র সুন্নাহ:
সেক্স করা। নিয়মিত সেক্স পজিশন পালটানো।

গোমাতার সুন্নাহ:
ঘাস খাওয়া।

হনুমানের সুন্নাহ:
বাঁশ খাওয়া।

গণেশের সুন্নাহ:
ডায়বেটিস বা ওজন নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু খাওয়া।

নিত্য নবীরে স্মরি – ১৮৭


'নবীপোন্দন সপ্তাহ' উদযাপনের সময় এঁকেছেন দিগম্বর পয়গম্বর

'নবীপোন্দন সপ্তাহ' উদযাপনের সময় এঁকেছেন ঈশ্বরের স্রষ্টা

ভয় পেয়ো না

সুকুমার রায়ের 'ভয় পেয়ো না' অনুসরণে লিখেছেন ধর্ম দানব

ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না
ধর্ষণ বা বস্ত্রহরণ? ওসব আমি পারবো না।

মনটা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগটি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব? বাসায় কি মা-বোনটি নেই?

যৌনক্ষুধা দেখছ চোখে, ভয় পেয়েছ কতই না!
জানো না মোর নপুংশতা, কাউকে আমি গুঁতোই না?

এস আরো কাছে এস, শরীরখানা ধরতে দাও,
নারী 'ভোগ্যপণ্য' নয়, তা দেখেছে কি কেউ কোথাও?

মুখে আমার খিস্তি শুনে, হচ্ছে নাকি খুব ঘৃণা?
জন্ম তোমার হতোই না তো পুং-পাঁজরের হাড় বিনা!

অভয় দিচ্ছি, শুনছ না যে? ধরব নাকি জোর চেপে?
কাছে এস, নইলে কিন্তু যাচ্ছি আমি খুব ক্ষেপে!

আমি আছি, বন্ধু আছে, আছে আরও নয় ছেলে
সবাই মিলে ছিঁড়ব পোশাক মিথ্যে অমন ভয় পেলে।

পরছো শাড়ি নাভির নিচে, বোরখা কোথায়? হিজাব নেই?
ঈমানদন্ড দিচ্ছে গুঁতো, তোমার শরীর দেখছে যেই।

পুরুষ আমি। শ্রেষ্ঠ আমি। স্রষ্টা? সে তো পুরুষ হায়!
নারী তুমি, হীন তুমি। ধর্ষণ? সেও তোমার দায়!

বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৫

চিত্রপঞ্চক - ১১৬



পাঠিয়েছেন নিলয় নীল


পাঠিয়েছেন রাশিয়া-প্রবাসী মোকাম্মেল

অ্যামেরিকান এথিস্টস কনভেনশনে বন্যা আহমেদের বক্তব্য

সৌজন্য: মুক্তমনা মডারেটর

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/taqd6w4lAHw

প্রিয় দর্শক-শ্রোতা, আমার নাম রাফিদা আহমেদ বন্যা এবং আমি অ্যামেরিকান অ্যাথিস্টস কে ধন্যবাদ দিতে চাই আমাকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য, আপনাদের সবাইকে বলতে, আমার ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথা, ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে। যদিও আমি এখনো জখম কাটিয়ে উঠার পথে আছি, তারপরও আমার কিছু চিন্তা লেখার চেষ্টা করেছি, আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য।

আমার স্বামী, আমার প্রয়াত স্বামী, ডঃ অভিজিৎ রায় এবং আমি বাংলাদেশী-মার্কিন নাগরিক, নাস্তিক এবং পেশায় সফ্‌টওয়্যার প্রকৌশলী এবং আমরা ইসলামী সন্ত্রাসের সাম্প্রতিক শিকার, বাংলাদেশে। কয়েক সপ্তাহ আগে অভিজিৎ ও আমি আমাদের দেশ, বাংলাদেশে গিয়েছিলাম দেশটির জাতীয় বইমেলায় যোগ দিতে। বইমেলাটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়, প্রতি বছর, পুরোটা ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে, এবং হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন মেলায় আসে। এটি একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান যাতে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন করি, ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে। বইমেলায় যোগ দেয়াটা বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমার ও আমার স্বামীর জন্য, কারণ আমরা দুজনেই বাঙালি লেখক ও ব্লগার। আমরা লিখতাম বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদ নিয়ে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, আমার স্বামী লিখেছিল ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে। আমরা ভেবেছিলাম ইতিমধ্যেই অনেক কিছু লেখা হয়ে গেছে ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষাগুলোতে, এই বিষয়ে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য ছিল ছড়িয়ে দেয়া, বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের কথা, মৌলবাদ-বিরোধিতার কথা, বাংলাদেশে আমাদের মাতৃভাষায়।

যেখানে আমি মাত্র একটি বই লিখেছিলাম, যার বিষয় ছিল প্রাণের বিবর্তন, আমার স্বামী সেখানে দশটি বই লিখেছিল ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ে, গত ১২টি বছর ধরে। সে ছিল আরো সিরিয়াস, আরো সৃষ্টিমুখর লেখক, আমার তুলনায়। এছাড়া সে তৈরি করেছিল মুক্তমনা নামে প্রথম অনলাইন প্লাটফর্ম, ২০০১ সালে, বাংলায়। অভিজিতের বইগুলোর বিষয় ছিল প্রাণের উৎপত্তি, মহাবিশ্ব কিভাবে শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে তা। সে লিখেছিল সমকামিতার পেছনের বিজ্ঞান নিয়ে বই। সে এমনকি খুব সাহিত্যিক একটি বই লিখেছিল যার বিষয় ছিল নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আর্জেন্টিনীয় নারীবাদী লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো’র সম্পর্ক।

কিন্তু, তার দুটি বই যাদের শিরোনাম ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ এবং ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ অনেক মনোযোগ কেড়েছিল। একদিকে, এগুলো তাকে অতিমাত্রায় জনপ্রিয় করেছিল প্রগতিশীল তরুণদের মাঝে। অন্যদিকে, এগুলো তার বিরুদ্ধে জাগিয়েছিল ইসলামী মৌলবাদীদের সহিংসতা ও ক্রোধ।

ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখ যখন আমরা অনেক আলোকিত এবং জনাকীর্ণ বইমেলা ছেড়ে আমাদের গাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, তখন অভিজিৎ এবং আমাকে নির্মমভাবে আক্রমণ করে ইসলামী মৌলবাদীরা। আমাদেরকে বার বার আঘাত করা হয় চাপাতি দিয়ে, রাস্তার ধারে। আমার মাথায় চারটি ছুরিকাঘাতের জখম আছে, আমার বুড়ো আঙুলও কেটে ফেলা হয়েছে। আমার দুই হাতেই বেশকিছু জখম আছে এবং স্নায়ু ও শিরা সারিয়ে তোলার জন্য আমাকে কয়েকবার অপারেশনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। হ্যাঁ, আমার মাথাও কামাতে হয়েছে, জখমগুলোর চিকিৎসা করার জন্য।

কিন্তু আমার স্বামীর এত ভাগ্য ছিল না। সে ই ছিল আসল লক্ষ্য আততায়ীদের, যারা তাকে কুপিয়ে হত্যা করতে সফল হয়েছে। অনেক দর্শক ছিল বইমেলায়, আশেপাশে, কিন্তু তারা এতই ভীত ছিল যে কেউ আমাদের সাহায্য করেনি। অবশেষে একজন তরুণ ফটোসাংবাদিক পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দ্রুত এসে আমাদেরকে হাসপাতালে নেয় যেখানে অভিজিৎ মারা যায়।

দুর্ভাগ্যজনক যে, বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত ঘটনাটি সম্পর্কে একটি বাক্যও বলেনি। অভিজিৎ ছিল আমার সহ-মুক্তচিন্তক, আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু, আমার স্বামী এবং আমার জীবনসঙ্গী। তাকে হত্যা করা হয়েছে কারণ সে লিখেছিল বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ নিয়ে, নাস্তিকতা নিয়ে, এবং লিখেছিল ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে। তার জীবন শেষ হয়েছে, আমার জীবন ওলট পালট হয়ে গেছে।

এই বার্তাটি যখন তৈরি করছি, তখন শুনলাম আরেকজন বাংলাদেশী ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে আজ সকালে, একই ভাবে কুপিয়ে একই কারণে। আমার মনে হয় আপনাদের মাঝেও একজন আছেন, শ্রোতাদের মাঝে, আসিফ মহিউদ্দিন নামে, যাকে কোপানো হয়েছিল একইভাবে, কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে গেছে। কিন্তু এমন নয় যে, আমাদের গল্প একেবারে অনন্য। এমন হত্যার ঘটনা ঘটেছে বারংবার, প্রত্যেক দিন, বিশ্বের সবখানে। কিন্তু বাংলাদেশ সবসময় এমন ছিল না। এটা তুলনামূলক নতুন একটি দেশ যা ধর্মনিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ধর্মীয় মৌলবাদ এদেশে ভালভাবে আসন গেড়েছে, অন্য অনেক দেশের মতোই গত কয়েক দশকে যা বিশ্বের অন্যত্রও দেখা যায়। অসংখ্য মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে মুখ খুলে কথা বলার জন্য।

আমরা বারবার দেখেছি যে, কথা মৌলবাদী-দেরকে ভীত করে তোলে। কিন্তু তারা আমাদের দেহ ক্ষত-বিক্ষত করতে পারে, আমাদেরকে নিরব করার চেষ্টা করতে পারে তাদের যত অস্ত্র আছে সব দিয়ে, কিন্তু আমাদেরকে ধ্বংস করতে পারবে না কারণ, প্রিয় সহ-নাস্তিকবৃন্দ, আমাদের কথাকে হত্যা করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ।