আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫

নিত্য নবীরে স্মরি – ১৯৮


ইছলামী শিক্ষা

ফরাসী পত্রিকা শার্লি এব্দো-য় প্রকাশিত নবী-কার্টুনের প্রতিবাদে
কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অংশ নিয়েছিল প্রায় ১০০০ মুছলিম;
ফাকিস্তানের লাহোরে রাস্তায় নেমে এসেছিল প্রায় ১০০০ মুছলিম;
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সমবেত হয়েছিল প্রায় ১০০০ মুছলিম;
ইরানে ফরাসী দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়েছিল ২০০০-এরও বেশি মুছলিম;
রাশিয়ার ইঙ্গুশেটিয়ায় একত্রিত হয়েছিল ১৫ হাজার মুছলিম;
রাশিয়ার চেচনিয়াতে আয়োজিত সভায় অংশ নিয়েছিল ৮ লক্ষাধিক মুছলিম;
...
...
...
...
...
এবং

আইসিস-এর কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে অর্থাৎ আইসিস ছহীহ ইছলামী নহে দাবি করে -
আয়ারল্যান্ডের এক সমাবেশে অংশ নিয়েছে টেনেটুনে ৫০ মুছলিম।
ইহা হইতে আমরা কী ইছলামী শিক্ষা পাইলাম?

একমাত্র সত্য ধর্ম আপনারটাই

উইকিপিডিয়া বলছে, বর্তমান বিশ্বে ধর্মের সংখ্যা ৪২০০-র মতো। এছাড়া মানবজাতির ইতিহাসে বিলুপ্ত হয়ে গেছে হাজার হাজার ধর্ম। তবে নিশ্চিত থাকুন, আপনার অনুসৃত ধর্মটিই একমাত্র সঠিক ধর্ম। বিলুপ্ত ও বর্তমান বাদবাকি সমস্ত ধর্মই ভ্রান্ত।

বর্তমানে প্রচলিত প্রধান সবক'টি ধর্মেই অসংখ্য শাখা-প্রশাখা-উপশাখা-পাতিশাখা। যেমন, খ্রিষ্টধর্ম বিভাজিত মাত্র ৩৩ হাজার (হ্যাঁ, ৩৩ হাজার) শাখায়, ইছলামে শাখার সংখ্যা ৫০-এরও বেশি... ইহুদি ধর্ম, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্মও বহুশাখাধারী। তবে এই কথাটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, প্রত্যেক ধর্মের প্রতিটি আলাদা শাখাই একমাত্র সত্যধর্মের দাবিদার! খুব খিয়াল কৈরা!

এ নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী একটি ছোট্ট গবেষণা করেছেন। এই গবেষণায় অবশ্য শাখা-প্রশাখা-উপশাখা-পাতিশাখাগুলোকে হিসেবে আনা হয়নি।


আরও মনে রাখবেন, হাজার হাজার ভগবানেশ্বরাল্লাহর মধ্যে আপনার উপাস্য যে বা যারা, সে বা তারাই শুধু সত্য। তবে বাকিদের তালিকাতেও একটু চোখ বুলিয়ে নিলে ক্ষতি কী! এই নিন: তালিকা ১, তালিকা ২, তালিকা ৩ এবং সাড়ে আট মিনিটের ভিডিওতে চলমান তালিকা।

বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫

যৌনকেশ, অবাধ রমণীসঙ্গম ও নাস্তিককুল

ধর্মকারীর উদ্দেশে লেখা হেইট মেইল বা হেইট কমেন্ট আমি বেজায় উপভোগ করলেও ব্লগে প্রকাশ করি না তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যাবে বলে। ধর্মকারীর উদ্দেশ্য তো বিনোদন, কলহ নয়।

তবে মনে হচ্ছে, মাঝে-মধ্যে দু'-একটির কথা বলা উচিত বিনোদনের কারণেই। এই যেমন গতকাল "মুসলিম" নিকধারী একজন খিস্তিখেউড়খচিত মন্তব্যে যা লিখলেন, তা ভদ্র ভাষায় অনুবাদ করলে অনেকটা এরকম দাঁড়ায়:
এটা যৌনকেশ পরিত্যাগ করার সাইট। এখানে সবাই এসে যৌনকেশমুণ্ডন করে যায়। শ্যালক, অবাধ রমণীসঙ্গমের লক্ষ্যে নাস্তিক সেজেছো! 
মুসলিম সাহেব, যৌনকেশমুণ্ডনের বিধান কিন্তু নাস্তিকদের নেই, আছে মোমিন মুছলমানদের। দেখুন, সহি বুখারিতে (খণ্ড ৭, বই ৭২, হাদিস ৭৭৭) আবু হুরাইরা বর্ণনা দিচ্ছে: "আল্লাহর রাসুল বলেছেন - ফিতরার পাঁচটি নিদর্শন: খতনা করা, যৌনকেশমুণ্ডণ করা, নখ কাটা, এবং গোঁফ ছোট করে ছেঁটে রাখা।"

অতএব মোমিন মুছলমানের করিতব্য কর্মকে নাস্তিকদের ওপরে চাপানো কি ঠিক হলো? 

আর মোমিন মুছলিম আর বাকিদের মধ্যে পার্থক্য কী, জানেন তো? গড়পড়তা মোমিন মুসলিম নিচে নিয়মিত শেইভ করে, তবে ওপরে করে না। আর গড়পড়তাভাবে বাকিরা করে ঠিক এর উল্টোটা।

এখন আসা যাক অবাধ রমণীসঙ্গম প্রসঙ্গে। প্রথমে একটু হেসে নিই প্রাণ খুলে। কারণ নাস্তিক হবার এমন অপ্রতিরোধ্যরকমের আকর্ষণীয় কারণটির কথা জীবনে প্রথম শুনলাম 

মুসলিম ভাই, ইছলামেই তো ইহ- ও পরকালে অবাধ রমণীসঙ্গমের সমূহ সুযোগ আছে! নাস্তিকদের দোষারোপ করেন কেন? আপনাদের নবীই তো অবাধ রমণীসঙ্গমের অনুসরণীয় তথা সুন্নতি উদাহরণ স্থাপন করে গেছে।

বৈচিত্র্যপিয়াসী নবী গণ্ডায়-গণ্ডায় বিয়ে করেছে, স্ত্রীরা নানান বয়সী (নাতনির বয়সী থেকে শুরু করে মা'র বয়সী), নানান গোত্রের ও ধর্মের।
এছাড়া দাসী ও উপঢৌকন হিসেবে প্রাপ্ত এবং যুদ্ধবন্দী মেয়েদের সাথেও তার ছিলো বিবাহবহির্ভুত যৌনসম্পর্ক।

তবে এ-কথাও সত্যি যে, নিজে ঈর্ষণীয় ইন্দ্রিয়পরায়ণ জীবনযাপন করলেও অনুসারীদের কথা সে ভোলেনি। তাদের দিয়েছে চারটি বিয়ের অনুমতি। বোনাস হিসেবে আছে দাসী ও যুদ্ধবন্দিনীদের (গনিমতের মাল) অবাধ ভোগের অধিকার। 

এ তো কেবল ইহকালে। আর পরকালে নিশ্চয়ই আপনাদের প্রত্যেকের জন্য রহিয়াছে বাহাত্তরটি করিয়া কুমারী ও অগণ্য গেলমান।

এবার আমাদের, নাস্তিকদের, অবস্থা দেখুন। পরকালে রোস্ট হওয়াই আমাদের নিশ্চিত নিয়তি। ইন্দ্রিয়সুখলাভের কোনও সম্ভাবনা সেখানে আমাদের একদমই নেই। একমাত্র সুযোগ ইহকালে। আর তাই সেই চেষ্টা যদি আমরা করিও, তাতে এতো হিংসা করলে চলে, ভাই, যখন আপনাদের সুযোগ আছে গাছেরটা খাবার এবং তলারটাও কুড়োবার?

(প্রথম প্রকাশ: ১.৯.১০)

আগে জীবজন্তুর অধিকার, পরে ধর্ম

এই বিশ্বজগতে খাদ্যচক্র ব্যাপারটি বড়োই বর্বর ও নির্দয়। এখানে এক প্রাণী আরেক প্রাণীর খাদ্য। 


ফলে প্রকৃতিতে প্রাণীহত্যা অনিবার্য। খাদ্যের ব্যাপারে মানুষও বিভিন্ন প্রাণীর ওপরে নির্ভরশীল। এই প্রাণীগুলোকে আমাদের হত্যা করতে হয় নিয়মিত। তবে যেহেতু আমরা অন্য প্রাণীদের তুলনায় বেশি বুদ্ধিমান ও সংবেদনশীল, আমাদের উচিত প্রাণীহত্যা প্রক্রিয়াটি প্রাণীদের জন্য যথাসম্ভব কম কষ্টদায়ক করে তোলার চেষ্টা করা। উন্নত দেশগুলোয় তেমন প্রক্রিয়াই প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। 

কিন্তু কিছু ধর্মে উৎসবের নামে ও কখনও উৎসব করে প্রাণীহত্যাচর্চা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই প্রাণীহত্যা পদ্ধতিটি হয় প্রাণীদের জন্য অবর্ণণীয় কষ্টের। প্রাণীকে হালাল উপায়ে জবাই করার ইছলামী ধারা ও ইহুদিদের ব্যবহৃত কোশের (kosher) পদ্ধতি দু'টি বর্বরোচিত বিধায় সব সময়ই সমালোচিত হয়ে এসেছে।

এবারে ডেনমার্ক হালাল ও কোশের পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রাণীহত্যা নিষিদ্ধ করেছে। মুছলিম ও ইহুদিরা যথারীতি ক্ষিপ্ত, কিন্তু ডেনমার্কের কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন,
আগে জীবজন্তুর অধিকার, পরে ধর্ম।
আরও একটি সুসংবাদ। নেপালে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত বীভৎস গাধিমাই উৎসবে প্রাণীহত্যাই নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। হিন্দুদের এই উৎসবে একদিনে এক জায়গায় কয়েক লক্ষ প্রাণী বলি দেয়ার ঐতিহ্য প্রচলিত ছিলো এতোদিন। 

এক বছর আগে প্রকাশিত গাধিমাই বিষয়ক একটি সচিত্র পোস্ট

ক্রুশের ছবি – ১৫

শুধুই ক্রুশের ছবি। অন্যদিকে তাকান নিজ দায়িত্বে...



আরো দুইখান ছবি এইখানে, তয় ইমোটা খিয়াল কৈরা!

মুসলমানদের রবীন্দ্রনাথ-বিরোধিতা

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

জন্মটা হিন্দুর ঘরে হওয়ার কারণে বাঙালি মুসলমানের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের কাছে রবীন্দ্রনাথ একটা জ্যান্ত যমদূতের নাম। বাংলা সাহিত্য মানেই রবীন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্রনাথ মানেই বাংলা সাহিত্য, এই সত্যটা তারা জানে। তারা জানে, যতই রবীন্দ্রনাথকে সাম্প্রদায়িক তকমা দেওয়া হোক কিংবা বলা হোক বৃটিশদের দালাল, এতে রবীন্দ্রনাথের কিছুই হয় না। বাংলা থাকলে, বাঙালি থাকলে, বাংলা সাহিত্য থাকলে রবীন্দ্রনাথও থাকবেন, এই ধ্রুব সত্যটা জেনেই এই মূর্খরা রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতায় নামে এবং এটা তারা ঈমানি দায়িত্ব হিসেবেই নেয়। বাঙালি মুসলমানের একটা বিরাট অংশ রবীন্দ্রনাথকে কবি বলেই স্বীকার করতে চান না।

অথচ বিশ্বে বাঙালিদের গৌরব কিংবা বাঙালি বলতে ইউরোপিয়ান-আমেরিকানরা যে-মানুষটিকে চেনেন, সেটা আমাদের রবীন্দ্রনাথ। দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের যে বাড়িটিতে মহান নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়র জন্মেছিলেন, সেই বাড়িটির বাগানে একজন মাত্র বিখ্যাত ব্যক্তির আবক্ষমূর্তি বসানো আছে। জানেন সেটা কার?

- আমাদের রবীন্দ্রনাথের। বাঙালির রবীন্দ্রনাথ।

লেখক গোলাম মুরশিদ সেই বাড়িটি ভ্রমণে গেলে উনার সহযাত্রী যে-বাঙালি মুসলমানটি ছিলেন, তিনি বলছিলেন: "সামনের বার এখানে আসলে রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে এখানে একটি নজরুলের মূর্তি বসিয়ে যাব।"

অথচ ঐ লোক ৩০ বছর ধরে বিলেতের বাসিন্দা। ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, আর বাঙালি মুসলমান ইংল্যান্ডে গিয়েও ধর্মান্ধ থাকে!

এই শিক্ষিত বাঙালি মুসলমানেরা রবীন্দ্রনাথ-বিরোধিতা করে কায়দা করে। যেমন, রবীন্দ্রনাথ গোঁড়া হিন্দু ছিলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধী ছিলেন, তিনি বৃটিশদের দালালি করতেন ইত্যাদি। এসব খোঁড়া অজুহাত।

রবীন্দ্রনাথ গোঁড়া হিন্দু?

তাঁর বেশভূষা ছিল মোল্লাদের মতো। বিরাট আলখেল্লা, মুখে দাড়ি। তাঁর বাড়ির পাচক ছিলেন মুসলিম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গেদু মিয়া। একবার হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হওয়ার উপক্রম হলে রবীন্দ্রনাথ গেদু মিয়াকে বলেছিলেন, ""শোন গেদু মিয়া, পরিস্থিতি ভালো না। ধর্মান্ধরা যেকোন সময় একটা রক্তারক্তি ঘটিয়ে ফেলতে পারে। কেউ যদি তোমাকে জিজ্ঞেস করে তোমার ধর্ম কী, তুমি সরাসরি উত্তর দেবে রবীন্দ্রনাথের ধর্মই আমার ধর্ম। আমি বাঙালি।"

রবীন্দ্রনাথের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নিলে এদেশের মুসলমানদের একটা অংশের অনুভূতিতে আঘাত লাগে। তারা মুসলমানদের দেশে হিন্দু (!) কবি রবীন্দ্রনাথের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলে আল্লাহর গজব পড়বে বলে লিফলেট বিলি করে উস্কানি দেয়।

এই গুজব ছড়ানোর দল মাদ্রাসা পড়ুয়া কিংবা কাঠমোল্লা। তারা এক পর্যায়ের রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী।

এর বাইরে আছেন বাংলার রাজনীতিবিদেরাও। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসে এ দেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টায় ছিলেন। রাজাকারকে রাষ্ট্রপতি বানানো, রাজাকারদের পুনর্বাসন, মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁসি দেওো - এসব কাজ তিনি বেশ সুচারুভাবে করেছিলেন। তিনি বলতেন, সময় আসুক, হিন্দু কবির লেখা জাতীয় সঙ্গীতটাও পাল্টানো হবে।

এই তো গত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা রাজকার সাকা চৌধুরী বলেছিল, "দেশ স্বাধীন করলাম আমরা, আর জাতীয় সংগীত লিখল কোথাকার কোন রবীন্দ্রনাথ!"

এই রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতায় রবীন্দ্রনাথের কিছু যায় আসে না। আকাশে উড়ন্ত ঈগল দেখে হাঁস-মুরগী শুধু ঈর্ষা করতে পারে। এর বেশি কিছু নয়। যে সময় তারা রবীন্দ্রনাথ পড়ত, সে সময় তারা নানা জিহাদি পাঠ্যপুস্তক পড়বে, জঙ্গি হবে। প্রথমে বিধর্মী মারবে। তারপর শিয়া-সুন্নি মারবে।

তারা রবীন্দ্রনাথ না পড়ে দেলোয়ার হোসেন সাঈদির 'নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে' পড়বে। কীভাবে মেয়েদের ছোট করা যায়, সেটা শিখবে। তারা শিখবে কীভাবে ধর্ষণের জন্য পোশাককে দায়ী করা যায়। তারা শিখবে নারী মানেই শস্যখেত!

এই রবীন্দ্রনাথ-বিরোধিতা শুধু করেই যাবে তারা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ থাকবেন বাঙালির মননে। হুমায়ুন আজাদের উক্তিটিই ধ্রুবসত্য।

"রবীন্দ্রনাথ আজ বাঙলার মাটি থেকে নির্বাসিত তবে আকাশটা তাঁর। বাঙলার আকাশের নাম রবীন্দ্রাকাশ।"

বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫

হা-হা-হাদিস – ১৪১

ফাতেমা দেবীর ফতোয়া - ১৭

লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সঃ)

৮১.
নবীজি ও অন্যান্য মমিনেরা সবাই বেহেশতে হুরী পাবে ছহবত করার জন্য। নবীজির বিবিগণ ও অন্যান্য মমিনগণের বিবিগণ সেখানে ছহবত করবে কাহার সহিত? তাহাদের কামনা নিবৃত্ত করবে কী উপায়ে? উহারা সবাই কি বেহেশতে স্বমেহন করবে অনন্তকাল ধরে?

৮২.
মরুভূমির কালছারে ছয়লাপ এখন বাংলার মাটি। যেমন, টুপি পরিধান, গার্বেজের বস্তা পরিধান, মাইকে দৈনিক পাঁচবার মরুভূমির ভাষায় শব্দদূষণকরণ, য়াল্যাকে পাছা প্রদর্শন, কথায় কথায় মরুর ভাষায় (ছুভানাল্ল্যাহ, এলহামদুলিল্যাহ প্রভৃতি) মানুষকে গালিগালাজ ইত্যাদিতে ভারাক্রান্ত বাংলার পরিবেশ। 

এখন বাকি আছে শুধু মরুভূমির একমাত্র এগ্রিকালছারে বাংলার মাটিকে ভরিয়ে দেওয়া। মরুর একমাত্র এগ্রিকালছার হতেছে খেজুর চাষ। বাংলাদেশে তাই অন্যান্য চাষাবাদ বাদ দিয়ে শুধু খেজুর চাষ করা ফরজ। কারণ বাংলাদেশ একটি খৎনাকৃত দেশ এবং খেজুর বৃক্ষই একমাত্র মুছলমান বৃক্ষ। তাই অন্যান্য বেদ্বীন কাফের এগ্রিকালছার ত্যাগ করতে হবে, কিংবা তাদেরকে কতল করতে হবে চাপাতি দিয়ে, অথবা তাদেরকে চাপাতি দিয়ে খৎনা করিয়ে মুছলমান গাছপালা-লতাপাতায় পরিণত করতে হবে।

৮৩.
য়াল্যা, ঈশ্বর, ভগবান ইত্যাকার ভূতপূর্ব লেখকেরা সবাই লেখালেখি ছেড়ে দিলো কেন?

৮৪.
যারা আমার আয়াতকে অস্বীকার করে তাদেরকে আমি অগুনে পোড়াবই; যখন ওদের চামড়া পুড়ে পুড়ে ছাই হবে তার স্থানে নতুন চামড়ার সৃষ্টি করবো যাতে ওরা শাস্তি আস্বাদন করে; আল্লা অতি পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময়। 
(সুরা ৪:৫৬)

পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময় দয়াময় য়াল্যা তার আয়াত অস্বীকারকারীদের চামড়া পুড়ে ছাই করবেন ও ছাই হওয়া চামড়ার জায়গায় নতুন চামড়া তৈরি করবেন। এই আয়াতটি পড়েই ত কাফের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্লাস্টিক সার্জারি করতে শিখেছে। কিন্তু কাফের মুশরিকরা য়াল্যার এই অবদানকে যথারীতি অস্বীকার করে; যেমন তারা অস্বীকার করে য়াল্যার অন্যান্য নেয়ামত ও সকল আয়াতকে এমনকি য়াল্যাকেও।

৮৫.
বেহেশতে দুধের নদী আছে। কিন্তু কোনো দই নাই কেন? আমার খুব দইয়ের শখ। নদী থেকে দুধ নিয়ে দই পাতা যাবে তো?

মুছলিমদের বিয়ের উপহারের নতুন ট্রেন্ড?

২০১১ সালে ধর্মকারীতে প্রকাশিত কার্টুন

এবার ২০১৫ সালের সংবাদ। আইসিস-ভুক্ত মহিলা শরিয়া কোর্টের এক মহিলা-বিচারক তার বিয়েতে উপহার হিসেবে চেয়েছিল কোনও এক কাফেরের ছিন্ন মস্তক। তার খায়েশ পূর্ণ করার অনুমতি দেয় আইসিস-প্রধান। 

মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫

পরিসংখ্যান তৈরির ইছলামী তরিকা

প্রথম আলোর "সারা বিশ্ব" পাতায় বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা একটি সংবাদে চোখ আটকে গেল। শিরোনাম: "ব্রিটেনে ইসলাম গ্রহণের হার এক দশকে দ্বিগুণ।" তথ্য উপস্থাপনার ধরনটি লক্ষণীয়। ১ যখন ২ হয়, সেটিও দ্বিগুণ, আবার ১ কোটি ২ কোটিতে পরিণত হলে সেটিও দ্বিগুণ। 

মার্ক টোয়েন তাঁর নিজের জন্ম প্রসঙ্গে স্বভাবসুলভ রসিকতার ধরনে লিখেছিলেন: I was born there in 1835. The village contained a hundred people and I increased the population by 1 per cent.

তাঁর অনুকরণে উপরোক্ত খবরের শিরোনামে "শতকরা একশো ভাগ বৃদ্ধি" বললে তা আরও বেশি গুরুত্ববহ মনে হতো। 

ওপরের খবরটির বিশ্লেষণ পড়লে ইছলামী হিসেবের ভেতরের শুভঙ্করের ফাঁকটি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। খবরে দাবি করা হয়েছে, প্রতি বছর গড়ে ৫২০০ জন ইসলাম গ্রহণ করেছে। এখন দেখা যাক, সংখ্যাটি কীভাবে পাওয়া গেছে।

এক ইছলামী চিন্তাচৌবাচ্চা, মানে থিংক ট্যাংক, (লক্ষ্য করুন, কোনও নিরপেক্ষ সংস্থা নয়) লন্ডনের মসজিদগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাতে দেখা গেছে, গত বারো মাসে ১৪০০ জন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।

একে তো সংখ্যাটি পরীক্ষিত নয়, তার ওপরে সেটি কেমন জানি সন্দেহজাগানিয়া। ঠিক ১৪০০? ১৩৯২ বা ১৪৩৮ নয়? আচ্ছা, তবু মেনে নেয়া যাক। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, পুরো ব্রিটেনে ৫২০০ জন - এই সংখ্যাটি কোনও জরিপ বা হিসেবের ফল নয়। স্রেফ কল্পনা করে নেয়া হয়েছে লন্ডনের ১৪০০-কে ভিত্তি হিসেবে ধরে। কীভাবে? তা তাদের আল্যা মালুম!

আর এ কথাও সত্য, ইছলাম গ্রহণকারীদের একটি বড়ো অংশ মোছলমান ভাই-বেরাদরদের অমুসলিম স্ত্রী, যারা বিয়ের সময় মসজিদে গিয়ে "লা ইলাহা" পড়ে নামেমাত্র মুছলিম হয়। এছাড়া জেলখানার কয়েদিদের মধ্যেও ধর্মান্তরিত হয়ে নূরের পথে আসে অনেকে। তাদের অনেককেই বলপ্রয়োগ করে বা ভীতিপ্রদর্শন করে মুসলমান বানানো হয়। কেউ কেউ মুসলমান হয় আলাদা সুবিধালাভের জন্য। সাম্প্রতিক এক খবর পড়ুন: সিরিয়াল কিলার ইছলাম গ্রহণ করেছে মশলাযুক্ত খাবারের লোভে।

পক্ষান্তরে, ইছলামত্যাগীদের সংখ্যা বাড়ছে আশাব্যঞ্জক গতিতে, যদিও সে কথা মূলধারার পত্রিকায় আসে না বড়ো একটা। অবশ্য তাঁদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা দুষ্কর, কারণ তাঁরা সচরাচর সরব এবং প্রকাশ্য নন। ইছলাম ত্যাগকারীকে হত্যার বিধান ইসলামে আছে জেনেও প্রাণের ঝুঁকি নিতে চাইবে ক'জন? তবু দুঃসাহসী কিছু প্রাক্তন মুছলমান নিজেদের পরিচয় গোপন রাখছেন না। প্রবণতাটি শুভ।

(৭.১.১১ তারিখে ধর্মকারীতে প্রকাশিত।)

কোরান কুইজ – ৬৯

নিশ্চয়ই মোমিন মুসলমানগণ কোরান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখেন। বেয়াড়া নাস্তিকগনও নিজেদেরকে কোরান-অজ্ঞ বলেন না কখনও। তাই মুসলিম-নাস্তিক নির্বিশেষে সকলেই অংশ নিতে পারেন কোরানের আয়াতভিত্তিক এই ধাঁধা প্রতিযোগিতায়। এই সিরিজের মাধ্যমেই তাঁরা নিজেদের কোরান-জ্ঞান যাচাই করে নিতে পারবেন। 

প্রশ্ন ৭৮: বদর যুদ্ধের সময় নবীকে সাহায্য করেছিল কতোজন ফেরেশতা?

১. তিন হাজার
২. এক হাজার

উত্তর বেছে নিয়েছেন? এবারে মিলিয়ে দেখুন।
.
.

.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.

উত্তর ৭৮: 

দুটো উত্তরই সঠিক।
১. তিন হাজার (সুরা ৩:১২৪)
২. এক হাজার (সুরা ৮:৯)

পরম বিনোদনের ব্যাপার এই যে, একজন খাছ মুছলিম কোরানের অজস্র পরস্পরবিরোধী বাণী ও অগণ্য ভুল নিজে চোখে দেখলে বা অনুধাবন করলেও অবলীলায় দাবি করে - এই কিতাবখানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, যা সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত, যাতে কোনও অসামঞ্জস্য নেই। এই জাতীয় চোখ-থাকিতেও-অন্ধ মানুষদের সম্পর্কে রিচার্ড ডকিন্স বলেছিলেন: a disgrace to the human species.

* কোরানের ছয়টি ভিন্ন অনুবাদ একসঙ্গে পাওয়া যাবে এখানে

** কৃতজ্ঞতা: আবুল কাশেম

অবিস্মরণ: থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় - ১৩

I am Avijit - আমিই অভিজিৎ-এর জন্য বানিয়েছেন সামিনা চৌধুরী এ্যানি



ইছলামী ইতরামি

১. জুম্মাবারে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১২০ জন নিহত! তবে মমিন ও বামাতিদের জন্য একটু সংশোধনী: গাজায় নয়, ইয়েমেনে এবং হামলা করেছে ইসরায়েল নয়, চৌদি আজব।

২. ফ্রান্সের জনসংখ্যার ৮ থেকে ১০ শতাংশ মুছলিম। তবে সে দেশের কারাগারে মুছলিমরা বিপুলভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ - শতকরা ৭০ জন। স্পেনে অবস্থা আরও ভয়াবহ: সেখানেও কয়েদিদের শতকরা ৭০ জন মুছলিম, তবে মূল জনসংখ্যায় মুছলিমের সংখ্যা মাত্র ২.৩ শতাংশ। বস্তুত পশ্চিম ইয়োরোপের প্রায় সব দেশেই সংখ্যালঘু মুছলিমরা জেলখানায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। ২০০৯ সালের একটি বিশদ পরিসংখ্যান

৩. মুছলিম-মুছলিম ভাই-ভাই, আর তাই ইছলামী ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ সুন্নি-মোল্লা বলেছে, "শিয়াদের আমরা ভেড়ার মতো করে জবাই করবো, ইনশাল্যা।" ছোট্ট ভিডিও

৪. ইছলামীদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিশোরী আত্মঘাতী বোমারু ক্যামেরুনে হত্যা করেছে ২০ জনকে। নাইজেরিয়ায় ১০ বছর বয়সী আরেক কিশোরীর আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছে ১৪ জন

৫. আইসিস-এর সম্ভাব্য ৩০ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মস্কোতে।

৬. মুছলিমরা আল্যার ওপর আস্থা একেবারেই হারিয়ে ফেলেছে। নইলে কেন ধর্ম, ঐশী কিতাব, নবী-রছুল, পবিত্র স্থান, উপাসনালয়ের সমালোচনাকে আন্তর্জাতিকভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানালো চৌদি আজব? সেক্ষেত্রে তো ভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি প্রত্যক্ষ আঘাত হানার কারণে নবীজিই হবে সবচেয়ে বড়ো আসামী এবং ইহুদি-খ্রিষ্টানদেরকে কুৎসিতভাবে অপমান করা আয়াত সমৃদ্ধ কোরানকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

৭. কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেনের হালাল ভার্শন - ইছলামী এক্সপ্লোডেড চিকেন

৮. ইছলামের বিধান অনুযায়ী উঁচু জায়গা থেকে সমকামীদের নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা করার চর্চা বজায় রেখেছে আইসিস। এবং এবারেও মডারেট মুছলিমদের দল শিশুদের নিয়ে উপভোগ করেছে এই দৃশ্য।

৯. সোমালিয়ায় ইছলামী দল আল-শাবাব হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ১২ জনকে।

সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০১৫

ঊর্ধ্বগগণে


এই কার্টুনে ধর্মকারীর নাম থাকলেও অনুবাদ ও ফটোমাস্তানি কৌস্তুভ-এর

খন্দক যুদ্ধ – ১০ (শেষ পর্ব): মিত্রবাহিনীর প্রত্যাবর্তন!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব- ৮৬) ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – ষাট

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭ > পর্ব ৭৮ > পর্ব ৭৯ > পর্ব ৮০ > পর্ব ৮১ > পর্ব ৮২ > পর্ব ৮৩ > পর্ব ৮৪ > পর্ব ৮৫

নুইয়াম বিন মাসুদ বিন আমির নামের এক মুহাম্মদ অনুসারী কীভাবে তার নিজ জাতি-গোত্র ও মিত্রবাহিনীর লোকদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে গোপনে মুহাম্মদের কাছে এসেছিলেন; স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে নুইয়াম-কে কীভাবে বনি কুরাইজা, কুরাইশ ও ঘাতাফান গোত্রের লোকদের প্রতারিত করার নির্দেশ সহকারে নিযুক্ত করে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, "যুদ্ধ হলো প্রতারণা"; মুহাম্মদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে তাঁর এই অনুসারী কীভাবে তাঁদেরকে প্রতারিত করেছিলেন - ইত্যাদি বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1] [2]

পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ৮৫) পর:

‘মুহাম্মদ বিন কাব বিন আল-কুরাজির কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াজিদ বিন যিয়াদ আমাকে [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] বলেছেন:

কুফার এক লোক হুদাইফাকে জিজ্ঞাসা করে, "আপনি কি সত্যিই আল্লাহর নবীকে দেখেছেন ও তাঁর সহকারী ছিলেন?" যখন তিনি জবাবে বলেন, “হ্যাঁ”, তখন সে তাকে জিজ্ঞাসা করে, তাঁরা কীভাবে জীবনযাপন করতেন। তিনি জবাবে বলেন যে, তাদের জীবনযাপন ছিল কঠিন। [3]

সে [লোকটি] বলে, "আল্লার কসম, যদি আমরা তাঁর সময়ে বসবাস করতাম, তবে আমরা তাঁকে মাটিতে পা রাখতে দিতাম না, তাঁকে ঘাড়ে করে বহন করতাম।"
হুদাইফা বলেন, ‘আমি এখনও দেখতে পাই যে, আমরা আল্লাহর নবীর সঙ্গে খন্দক যুদ্ধের সেই সময়, যখন তিনি রাত্রির কিছু অংশ নামাজে কাটান ও তারপর আমাদের দিকে ঘুরে বসেন ও বলেন,

"তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে, যে উঠে যাবে ও মিত্র বাহিনীর সৈন্যরা কী করছে তা দেখে এসে আমাদের জানাবে?”-আল্লাহর নবী শর্ত রাখেন, সে যেন ফিরে আসে- আমি আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবো, যেন সে আমার সাথে বেহেশতের সঙ্গী হয়।" [4]

একজন লোকও উঠে দাঁড়ায় না, কারণ তারা ছিল খুবই ভীত, ক্ষুধার্ত ও তখন শীত ছিল প্রচণ্ড। যখন কেউই উঠে আসে না, তখন আল্লাহর নবী আমাকে ডাকেন, আর তাঁর সেই ডাকে আমাকে উঠে আসতে হয়।

মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা কী করছে, তা দেখার জন্য তিনি আমাকে যেতে বলেন ও বলেন যে, এখানে প্রত্যাবর্তন করার পূর্বে আমি যেন কোনকিছু না করি (অর্থাৎ, নিজে আগ বাড়িয়ে যেন সে কিছুই না করে)।

তাই আমি বাইরে বের হই ও সেখানে গিয়ে তাদের সৈন্যদের সঙ্গে মিশে যাই, তখন ঝড়-বায়ু ও আল্লাহর সৈন্যরা (God's troops) তাদের সাথে এমনভাবে মোকাবিলা করছিল যে, তাদের না ছিল কোনো রান্নার পাত্র, না ছিল আগুন, না ছিল কোনো অক্ষত তাঁবু। [5]

আবু সুফিয়ান উঠে দাঁড়ায় ও বলে, "হে কুরাইশ, তোমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশের লোকটিকে লক্ষ্য করে দেখো, কোন লোকটি তোমাদের পাশে বসে আছে।"

তাই আমি আমার পাশের লোকটিকে জিজ্ঞাসা করি, সে কে; সে বলে, সে মুক। 

তারপর আবু সুফিয়ান বলে, "হে কুরাইশ, আমাদের কোনো স্থায়ী তাঁবু নেই; অনেক ঘোড়া ও উট মরণাপন্ন; বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা ভঙ্গ করেছে তাদের ওয়াদা ও আমরা শুনেছি তাদের অস্বস্তিকর রিপোর্ট। তোমরা দেখতে পাচ্ছ বাতাসের প্রচণ্ডতা, যা আমাদের রান্নার সরঞ্জাম, কিংবা আগুন, কিংবা তাঁবু - কোনোকিছুই অবশিষ্ট রাখে নাই। স্বচ্ছন্দ বোধ করো, কারণ আমি ফিরে যাচ্ছি।"

তারপর সে তার বেঁধে রাখা উটের কাছে যায়, তার পর চড়ে বসে ও তাকে আঘাত করলে উটটি তার তিন পায়ের পর ভর করে উঠে দাঁড়ায়; আল্লাহর কসম উটটি পুরাপুরি দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত বাঁধন মুক্ত হয় না।

যদি আল্লাহর নবী আমাকে তাঁর কাছে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত অন্য কোনো কাজে নিয়োজিত হতে নিষেধ না করতেন, তবে আমি ইচ্ছা করলে একটি তীরের আঘাতে তাকে খুন করতে পারতাম। 

'আমি আল্লাহর নবীর কাছে ফিরে আসি যখন তিনি তাঁর কোন এক স্ত্রীর র‍্যাপারের (wrapper) পর দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। যখন তিনি আমাকে দেখতে পান, তখন তিনি আমাকে তাঁর পায়ের কাছে গিয়ে বসার সুযোগ করে দেন ও র‍্যাপারটির এক প্রান্ত আমার দিকে ছুড়ে দেন; তারপর আমার তার উপর বসা অবস্থাতেই তিনি রুকু ও সেজদায় যান (তাবারী: 'এবং আমি তাঁকে বিরক্ত করি');  যখন তিনি নামাজ শেষ করেন, আমি তাঁকে খবরটি জানাই।

যখন ঘাতাফানরা জানতে পায় যে, কুরাইশরা কী করেছে, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের নিজেদের দেশে প্রত্যাবর্তন করে।'

সেই দিন সকালে আল্লাহর নবী ও মুসলমানরা খন্দক পরিত্যাগ করে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন।’

(অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ – লেখক।)

মুহাম্মদের অভিশাপ:

সহি বুখারী: ভলুম ৮, বই নম্বর ৭৫, হাদিস নম্বর ৪০৫: 
আলী ইবনে আবু তালিব হইতে বর্ণিত: খন্দক যুদ্ধের দিন আমরা আল্লাহর নবীর সঙ্গে ছিলাম। আল্লাহর নবী বলেন, "আল্লাহ যেন তাদের (কাফেরদের) সমাধি-স্থল ও বাড়ি-ঘর (সহি মুসলিম: "অথবা, পাকস্থলী") আগুনে পূর্ণ করে, কারণ তারা আমাদের এত ব্যস্ত রেখেছিল যে আমরা সূর্যাস্তের আগে মধ্যবর্তী নামাজটি আদায় করতে পারিনি; সেই নামাজটি ছিল 'আছর  নামাজ'।" [6] [7]
(অনুবাদ– লেখক।)

>>> আদি উৎসের ইসলামে নিবেদিতপ্রাণ মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই বর্ণনায় খন্দক যুদ্ধের সংক্ষিপ্তসার: [8]

১) বদর ও ওহুদ যুদ্ধের মতই খন্দক যুদ্ধের আদি কারণ হলো - মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী, আক্রমণাত্মক ও অমানবিক কার্যকলাপ(পর্ব- ৭৭)।

২) মিত্র বাহিনীর সৈন্যদের সেনা ছাউনিটি ছিল খন্দকটির উত্তর দিকে; আর তাঁদের সরাসরি সম্মুখে ছিল খন্দকের বাধা, যে-বাধাটি অতিক্রম করে সদল বলে মুসলমানদের সরাসরি আক্রমণ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। অন্যদিকে, মুসলমান বাহিনীর সৈন্যদের সেনা ছাউনিটি ছিল খন্দকটির দক্ষিণে। তাঁদের সরাসরি সম্মুখে ছিল তাদের খননকৃত 'প্রতিরক্ষা খন্দক' ও তার ওপারে মিত্র বাহিনী; আর তাঁদের সরাসরি পেছনেই ছিল সাল-পর্বত, তার পেছনে মদিনা এবং তারও পেছনে ছিল বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা। (পর্ব- ৭৮)।

৩) ওহুদ  যুদ্ধের মতই এই যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা জীবনের এক চরম পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেনসেই দু:সহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের চেষ্টায় মুহাম্মদ নিজ উদ্যোগে মিত্র বাহিনীর ঘাতাফান গোত্রের দুই নেতাকে উৎকোচ (ঘুষ) প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। (পর্ব- ৮১)।

৪) আলী ইবনে আবু তালিবের পিতার কুরাইশ বন্ধু আমর বিন আবদু উদ্দ, তাঁর বন্ধু-পুত্র আলীর সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে আলীকে রক্তাক্ত অথবা হত্যা করতে রাজি ছিলেন না; পক্ষান্তরে আলী তাঁকে হত্যা করার জন্য ছিলেন উদগ্রীব! (পর্ব- ৮২)।

৫) বনি কুরাইজার নৃশংস গণহত্যার রায় প্রদানকারী ব্যক্তিটি ছিলেন অত্যন্ত হিংস্র, নৃশংস ও প্রতিহিংসাপরায়ণ; সাদ বিন মুয়াদ নামের মুহাম্মদের এই অনুসারী খন্দক যুদ্ধে গুরুতর আহত হন ও বনি কুরাইজার পর তার বীভৎস আকাঙ্ক্ষা প্রত্যক্ষ করার পূর্ব পর্যন্ত তাকে মৃত্যুবরণ করতে না দেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন করেন। (পর্ব- ৮৩)।

৬) অন্তত যে-তিনটি কারণে খন্দক যুদ্ধটি বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী, তার অন্যতম হলো, যুদ্ধশেষে মুহাম্মদের নেতৃত্বে "বনি কুরাইজা গণহত্যা!"; অজুহাত হলো, বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা চুক্তিভঙ্গ করে খন্দক যুদ্ধকালে মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করেছিলেন।

কিন্তু,
আদি উৎসে খন্দক যুদ্ধ উপাখ্যানের বর্ণনার কোথাও বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের কখনো কোনোরূপ আক্রমণ বা হত্যা চেষ্টা করেছেন; কিংবা তাঁরা মিত্রবাহিনীকে কোনোরূপ সাহায্য-চেষ্টা করেছেন; কিংবা তাঁরা মিত্রবাহিনীর সাথে কোনরূপ সক্রিয় স্বতঃস্ফূর্ত যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন - এমন সুনির্দিষ্ট একটিও তথ্য বা প্রমাণ (Evidence) কোথাও বর্ণিত হয়নি!

যা বর্ণিত হয়েছে তা হলো "সর্বসাকুল্যে চার লাইনের ও কম কয়েকটি বাক্য, যথা:

"এইভাবে কাব তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে এবং তার ও আল্লাহর নবীর মধ্যে যে-চুক্তি ছিল, তা ছিন্ন করে(পর্ব-৮০)। --বানু কুরাইজা আল্লাহর নবীর সাথে চুক্তিভঙ্গ করে যুদ্ধে যায়(পর্ব: ৮৪)। --আর তোমরা তাদেরকে তার বিরুদ্ধে সাহায্য করেছ; --মুহাম্মদের বিপক্ষে ইহুদিরা যা করেছে তার জন্য তারা অনুতপ্ত।" (পর্ব: ৮৫)।

শুধু তাইই নয়,

আমরা দেখেছি এই দাবীর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র, অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণিত! শুধুমাত্র সন্দেহের বশে এক মুহাম্মদ অনুসারী বনি কুরাইজার এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার পরেও বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ সহিংসতার আশ্রয় নেননি (পর্ব- ৮৪)।

সুতরাং,
বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা চুক্তিভঙ্গ করে খন্দক যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করেছিলেন, এই দাবি "ইসলামের হাজারও মিথ্যাচারের একটি!"

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৬০

[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮,ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৮৩-১৪৮৫

[3] ‘প্রাচীন আল-হিরাহ (Al-Hirah) শহরের সন্নিকটে, ইউফ্রেটিস নদীর কিনারে মুসলমানদের গ্যারিসন শহর (Garrison city) আল-কুফা স্থাপিত হয় ৬৩৮ সালে (হিজরি ১৭ সাল); খলিফা উমরের শাসন আমলে। উপরের বর্ণনাটি খন্দক যুদ্ধের বহু বছর পরে মুসলমানদের ইরাক দখলের পর এক নবীন কুফা বাসীর প্রশ্নের জবাবে হুদাইফার স্মৃতি-চারণ।’

[4] ‘অর্থাৎ, সে শহিদদের (Martyrs) মত মৃত্যুবরণ না করা সত্বেও সুনিশ্চিত ভাবেই বেহেশতে দাখিল হবে।’

[5] ‘আল্লাহর সৈন্যরা বলতে সম্ভবত: ফেরেশতাদের বুঝানো হয়েছে। তুলনা, কুরান: সুরা আল আহযাব (৩৩:৯) - "হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন শত্রুবাহিনী তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল, অতঃপর আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্চাবায়ু এবং এমন সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলাম, যাদেরকে তোমরা দেখতে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।"’

[6] সহি বুখারী: ভলুম ৮, বই নম্বর ৭৫, হাদিস নম্বর ৪০৫: http://www.hadithcollection.com/sahihbukhari/108-Sahih%20Bukhari%20Book%2075.%20Invocations/7350-sahih-bukhari-volume-008-book-075-hadith-number-405.html
Narated By 'Ali bin Abi Talib : We were in the company of the Prophet on the day (of the battle) of Al-Khandaq (the Trench). The Prophet said, "May Allah fill their (the infidels') graves and houses with fire, as they have kept us so busy that we could not offer the middle prayer till the sun had set; and that prayer was the 'Asr prayer."

[7] সহি মুসলিম: বই নম্বর ৪, হাদিস নম্বর ১৩১৩:  http://www.hadithcollection.com/sahihmuslim/132-Sahih%20Muslim%20Book%2004.%20Prayer/10067-sahih-muslim-book-004-hadith-number-1313.html

[8] খন্দক যুদ্ধঃ
Ibid: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ) - পৃষ্ঠা ৪৫০-৪৬০; আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ) - পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৬৩-১৪৮৫