আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ইছলাম ত্যাগের কারণসমূহ - ২৩

ব্রিটেনের কাউন্সিল অভ এক্স-মুসলিম নামের সংগঠনের উদ্যোগে #ExMuslimBecause নামে টুইটারে একটি প্রচারণা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রাক্তন মুছলিমরা উপস্থাপন করছে ইছলাম ত্যাগের বিবিধ কারণ। অতি দীর্ঘ ও ক্রমবর্ধমান এই কারণ-তালিকা থেকে কিছু সরস ও সিরিয়াস কারণ অনুবাদ করে প্রকাশ করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। এতে যুক্ত করা হচ্ছে/হবে ধর্মকারীর ঠিকানায় পাঠানো লেখা/ছবি/ভিডিওও।

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২

Osman: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমার ধর্মশিক্ষক আমাদের শিখিয়েছিল, ইছলামে ছবি তোলা হারাম। এখন সে ইছলাম-প্রচারের জন্য ভিডিও ব্যবহার করে।

shameless: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ সবচেয়ে প্রথম কথা: আমি নিজে থেকে মুছলিম হতে চাইনি। 

Khaled Elmawardy: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ এমন আল্যায় আমি বিশ্বাস করি না, যে তার অনুসারীদের আদেশ দেয় অবিশ্বাসীদের হত্যা করতে।

Sam Wad: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ সৌরজগতের প্রান্ত থেকে আমাদের পৃথিবীটা একটি ক্ষুদ্র ধূলিকণার মতো। অথচ আল্যার মাথাব্যথা মেয়েদের চুল নিয়ে!

Sarah imanuel: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমি অনুধাবন করেছি, অধিকাংশ সময়েই যখন আমি কোরানের অপূর্ব আয়াত পাঠ করতাম, আমি আসলে দোজখে যাবার অভিশাপ দিতাম অন্য মানুষদের।

রাফাত সিরাজ নির্ঝর: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ইছলাম হচ্ছে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের একটি রূপ, হিজাব - নারীবিদ্বেষের প্রতীক, কোরান - স্ব-আরোপিত নিরন্তর দাসপ্রথার রেসিপি।

Faiz: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ নিজের কাজকর্মের দায় মানুষকেই নিতে হবে এবং ধর্মীয় বইয়ের ছুতো ধরে নিজের অপকর্মের ন্যায্যতা দান করা বন্ধ করতে হবে। 

bad baby: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ আমি মনে করি না, আকাশে বসে আছে এক অদৃশ্য সত্তা, যার একমাত্র লক্ষ্য আমাকে অবলোকন করা, যদিও সে নাকি সবকিছুই জানে!

Ahura Mazda: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ "সেই যুগে উত্তপ্ত জলবায়ুর কারণে ৯ বছর বয়সেই আরববাসী বালিকাদের শরীর পরিপক্কতা লাভ করতো" - এটা শিশুকামিতার সপক্ষে একটি অপযুক্তি।

Egyptian Atheist: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ বান্ধবী রাখার অধিকার আমার নেই, তবে যৌনদাসী রাখার ও তাকে ধর্ষণ করার অধিকার আমার আছে।

আমার বোরখা-ফেটিশ – ১৭১


ধর্মাতুল কৌতুকিম – ৭৩

আজকের কৌতুকগুলো ইউরোপে মুছলিম অভিবাসী সংক্রান্ত।

২১৩.
যেই সূর্য ওঠে পূবে, মুছলিমরা ছোটে পশ্চিমে।

২১৪. 
বার্লিনে আগুন লেগে পুড়ে গেল একটি চারতলা দালান।

মারা পড়লো একতলায় বসবাসকারী লিবীয় পরিবার, দোতলায় বসবাসকারী সোমালীয় পরিবার ও তিনতলায় বসবাসকারী সিরীয় পরিবার। বেঁচে গেল শুধু চারতলার জার্মান বাসিন্দারা।

স্থানীয় বামাতিরা (রিগ্রেসিভ লেফট) সমস্ত গণমাধ্যমে শোরগোল তুলে ফেললো: "এই বৈষম্য আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে পুঁজিবাদী ষড়যন্ত্র, বর্ণবাদ, ইসলামোফোবিয়া, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন..." ও ইত্যাকার হেনতেন।

তদন্ত করে জানা গেল, আগুন লাগার সময় জার্মান পরিবারের সকলেই ছিলো নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে।

২১৫.
ক্যাম্নে কী! রাশিয়া সহায়তা করছে সিরীয়দের, অথচ সিরীয়রা ছুটছে ইউরোপে!

২১৬.
ক্রসওয়ার্ড। "একটি মুছলিম দেশের রাজধানী - ৬ অক্ষর।"
- Berlin?
- না, মিলছে না।
- London?
- মিলেছে!

২১৭.
গজগজ করতে করতে এক অভিবাসী বললো:
- চারপাশটা ভরে গেছে স্থানীয় লোকে!

প্রকৃত মূত্রমনারা - ০৩

অবাস্তব, ভিত্তিহীন ও যুক্তিরহিত কথা বলায় মমিনদের জুড়ি নেই। এই যেমন 'মুক্তমনা' শব্দটিকে তারা ব্যঙ্গ করে 'মূত্রমনা' বলে থাকে, যদিও বিন্দুমাত্র কারণ নেই এর পেছনে। মুক্তমনাদের মূত্রপ্রীতির কথা কখনও শোনা যায় না। তাই বলে মূত্রমনা বলে কেউ নেই, তা কিন্তু নয়।

বর্তমান সিরিজে হাতে-কলমে প্রমাণ করা হবে, প্রকৃত মূত্রমনা কারা। এই যেমন, ইছলামের নবী উটের প্রস্রাব মমিনদের জন্য হালাল করে দিয়ে তা পান করার নির্দেশনাও দিয়েছে। নিচের ভিডিওতে ইছলামী স্কলাররাও স্বীকার করছে এ কথা। তাইলে কী খাড়াইল? কারা আসলে মূত্রমনা?

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/18i_SqmTBnQ

রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

লওহে মাহফুজের সন্ধানে: ক্যাটম্যান সিরিজ - ১৪

লিখেছেন ক্যাটম্যান

মুক্তচিন্তা চর্চা, প্রচার ও প্রসারের কারণে ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর নৃশংস হামলার শিকার হুমায়ুন আজাদ, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় ও ফয়সল আরেফিন দীপন সহ নিহত ও আহত সকল মুক্তচিন্তকের স্মরণে এই লেখাটি অপরিমেয় ভালোবাসার স্মারক স্বরূপ নিবেদন করছি।


এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মূসা তার পরিকল্পিত পরমেশ্বরের আজ্ঞাবহ দাস নন; বরং মূসার পরিকল্পিত পরমেশ্বর স্বয়ং মূসার আজ্ঞাবহ দাস। তাই মূসার আজ্ঞাবহ দাসসুলভ পরমেশ্বর দশ আজ্ঞাবিশিষ্ট প্রস্তরফলক ভেঙে ফেলার অপরাধে মূসাকে জবাবদিহির সম্মুখীন না করে বরং মূসার উদ্দেশ্যের অনুকূলে ভেঙে ফেলা দশ আজ্ঞাবিশিষ্ট প্রথম প্রস্তরফলক দু'টির অনুরূপ আরও দু'টি প্রস্তরফলক প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। কারণ সেই প্রতিশ্রুতি স্বয়ং মূসা তার পরিকল্পিত পরমেশ্বরের জবানিতে আরোপ করেছেন। আর স্বীয় পরমেশ্বরের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে মূসা পর্বতচূড়ায় আরোহণ করে দশ আজ্ঞা বিশিষ্ট প্রস্তরফলক দু'টির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রণয়নকালে একেশ্বরবাদের গুরুত্ব এবং মূর্তিপূজার কুফল বিবেচনায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় আজ্ঞা প্রণয়ন করেন। যা নিম্নরূপ:
প্রথম আজ্ঞা: “তখন পরমেশ্বর এই সমস্ত কথা বললেন, 'আমি তোমার পরমেশ্বর প্রভু, যিনি মিশর দেশ থেকে, দাসত্ব-অবস্থা থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন: আমার প্রতিপক্ষ কোন দেবতা যেন তোমার না থাকে!" [যাত্রাপুস্তক ২০:১-৩]
দ্বিতীয় আজ্ঞা: “তুমি তোমার জন্য খোদাই করা কোন প্রতিমূর্তি তৈরি করবে না; উপরে সেই আকাশে, নিচে এই পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নিচে জলরাশির মধ্যে যা কিছু রয়েছে, তার সাদৃশ্যেও কোন কিছুই তৈরি করবে না। তুমি তেমন বস্তুগুলির উদ্দেশে প্রণিপাত করবে না, সেগুলির সেবাও করবে না; কেননা আমি, তোমার পরমেশ্বর প্রভু যিনি, আমি এমন ঈশ্বর, যিনি কোন প্রতিপক্ষকে সহ্য করেন না; যারা আমাকে ঘৃণা করে, তাদের বেলায় আমি পিতার শঠতার দন্ড সন্তানদের উপরে ডেকে আনি - তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত; কিন্তু যারা আমাকে ভালবাসে ও আমার আজ্ঞাগুলি পালন করে, আমি সহস্র পুরুষ পর্যন্তই তাদের প্রতি কৃপা দেখাই।" [যাত্রাপুস্তক ২০:৪-৬]
ওপরোক্ত আজ্ঞা দু'টি মূসার পরিকল্পিত পরমেশ্বরের পক্ষে রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে, এই বিবেচনায় মূসা তা প্রণয়ন করেন।

মূসার নেতৃত্বে মিশর থেকে বের হয়ে আসার পরে সিনাই প্রান্তরে মূসার দীর্ঘকালব্যাপী অনুপস্থিতি ইস্রায়েলের জনগণের মাঝে নেতৃত্বশূন্যতার সৃষ্টি করে। তারা ভেবেছিল, পরমেশ্বরের সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে মূসা হয়ত মারা গিয়েছেন। যে-কারণে মরুভূমির প্রতিকূল পরিবেশে নেতৃত্বশূন্যতা ও হতাশাবোধ থেকে ইস্রায়েলের জনগণ নিজেদের নেতৃত্বশূন্যতা পূরণ ও হতাশা দূরীকরণের লক্ষ্যে মূসা ও তার পরিকল্পিত পরমেশ্বরের বিকল্প হিসাবে একটি বাছুরের মূর্তি নির্মাণ করে। এই ঘটনা দৃষ্টে মূসা উপলব্ধি করেন, মিশরে অতি চর্চিত পৌত্তলিক সংস্কৃতির মাঝে দীর্ঘকাল অবস্থান করায় পৌত্তলিক সংস্কৃতির প্রতি আবিষ্ট ইস্রায়েলের জনগণ মিশর থেকে বেরিয়ে আসার সময় মিশরীয়দের সাংস্কৃতিক দূষণ ও দুর্বলতাসমূহও বহন করে এনেছে বিধায় তাদের পক্ষে যখন-তখন পৌত্তলিকতার প্রতি ধাবিত হওয়া কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। স্বভাবতই তারা যখন বাস্তবিক কোনও সমস্যায় নিপতিত হয়, তখন তা থেকে উদ্ধার পেতে তারা অতিপ্রাকৃত কোনও সত্তার শরণাপন্ন হতে চায়। আর সেই চাহিদা পূরণে মূসা তার কল্পিত পরমেশ্বরকে পুঁজি করে ইস্রায়েলের জনগণকে যে-অতিপ্রাকৃত সত্তার যোগান দিয়েছেন, হয়ত তা তাদের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ছিল না। 

কারণ মূসার যোগানকৃত পরমেশ্বরকে ইস্রায়েলের জনগণ কখনও চাক্ষুষরূপে দেখেননি। তবে পরমেশ্বরকে চাক্ষুষরূপে দেখার সুযোগ তাদের যেন মেলে, সে-লক্ষ্যে মূসা একাধিকবার ঈশ্বর প্রদর্শনের বিভ্রান্তিকর নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন; যা ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি।

মূসা তার পরিকল্পিত পরমেশ্বরকে প্রদর্শনের জন্য যে-সব উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, তার সেই প্রতিটি উদ্যোগ ছিল সহজসাধ্য, তবে একইসাথে চরম কৌশলপূর্ণ। কারণ বাস্তবিক পরমেশ্বরকে প্রদর্শনের জন্য কোনোরকম কৌশলের আবশ্যকতা না থাকলেও পরিকল্পিত পরমেশ্বরকে বাস্তব আঙ্গিকে প্রদর্শনের জন্য নানাবিধ কৌশল অবলম্বনের আবশ্যকতা রয়েছে। সেই আবশ্যকতা থেকেই মূসা যেমন কৌশল প্রয়োগ করেছেন মঞ্চসজ্জায়, তেমনি কৌশল প্রয়োগ করেছেন দর্শক নির্বাচন ও দর্শক বিন্যাসে। আর তাই মূসার প্রয়োগকৃত সেই কৌশলসমূহ গভীরভাবে বোঝার জন্য সে-বিষয়ে আরও একটু চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক।

(চলবে)

হা-হা-হাদিস – ১৬৭

কতো রসময় কথা গুপ্ত আছে হাদিসে!

Narrated By Abu Huraira : The Prophet forbade the wearing of a gold ring.

কোরান, নাকি বাইবেল - কোনটি বেশি সহিংস

কোরান বাইবেলের চেয়ে কম সহিংস বলে একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে অনলাইনে। মুছলিমরা উৎফুল্ল ও পুলকিত চিত্তে ভাবছে: "আমাদের ধর্মীয় কিতাব ওদেরটার চেয়ে কম খারাপ।" কিন্তু কোনও পবিত্র কিতাবে সহিংস কিংবা কুৎসিত বাণী থাকবে কেন - সেই সরল স্বাভাবিক প্রশ্নটি উদয় হচ্ছে না নির্বোধদের মাথায়।

এবং একটি কথা। ধরা যাক, একটি আধঘণ্টার মুভিতে তিনটি ধর্ষণদৃশ্য আছে, অন্য একটি মুভিতে আছে পাঁচটি, তবে সেই মুভিটি দেড় ঘণ্টার। সেক্ষেত্রে আধঘণ্টার মুভিটিকে দেড় ঘণ্টার মুভিটির চেয়ে কম খারাপ বলার দাবি কতোটা গ্রহণযোগ্য? অতএব খিয়াল কৈরা: বাইবেলের আয়তন কোরানের চেয়ে অনেক বেশি।

প্রাসঙ্গিক বিধায় গত ২৭ ডিসেম্বরে ধর্মকারীতে প্রকাশিত একটি পোস্ট আবার প্রকাশ করা হচ্ছে।
#
পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বকালের সবচেয়ে সহিংস গ্রন্থ কোনটি, এ নিয়ে কোনও প্রতিযোগিতা হলে তাতে প্রথম দু'টি স্থান দখল করবে কোরান ও বাইবেল। সহিংসতার বিচারে আর কোনও পুস্তকই এদের নখের যোগ্যও নয়। ফলে তৃতীয় স্থান অধিকারী বইটি থাকবে এদের অ-নে-ক পেছনে।

কিন্তু কোরান ও বাইবেলের ভেতরে কোনটি স‌হিংসতর? প্রথম স্থান দখল করবে কোন কিতাব? নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন। লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এমনও সম্ভব, দুটোকেই যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করতে হতে পারে। 

এবার কিছু হিসেব দেখা যাক।

কোরানে সহিংস আয়াতের সংখ্যা ৫৩২ টি। বাইবেলে - ১৩২১ টি। তার মানে কি বাইবেল জিতে গেল? না। এখন দেখতে হবে শতকরা হিসেব। কারণ কোরানের চেয়ে বাইবেল ঢের বেশি ঢাউস।

কোরানে সর্বমোট আয়াত আছে ৬২৩৬ টি, আর বাইবেলে - ৩১,১০২ টি। অর্থাৎ কোরানে সহিংস আয়াতের সংখ্যা ৮.৫৩ শতাংশ এবং বাইবেলে - ৪.২৫ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, শতকরা হিসেবে কোরানে সহিংস আয়াতের সংখ্যা বাইবেলের দ্বিগুণ।

তার মানে কি কোরান জিতে গেল? সেটাও ঠিক বলা যাচ্ছে না। কারণ আলোচ্য পরিসংখ্যানে হিসেবে আনা হয়নি সহি‌ংসতার মাত্রা। এবং সেই মাত্রা নির্দিষ্টভাবে নিরূপণ করাও দুরূহ। যেমন, বাইবেল ও কোরানের নিচের দু'টি আয়াতের মধ্যে কোনটি বেশি সহিংস, তা নির্ধারণ করা কি সহজ?
[বাইবেল, গণনা পুস্তক ৩১:১৪-১৮] মোশি ১,০০০ সৈন্যের সেনাপতি এবং ১০০ সৈন্যের সেনাপতি, যারা যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছিল তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। মোশি তাদের বললেন, “তোমরা কেন স্ত্রীলোকদের বেঁচে থাকতে দিয়েছো? পিযোরের বিলিয়মের ঘটনার সময় এই সব স্ত্রীলোকরাই প্রভুর কাছ থেকে ইস্রায়েলীয় পুরুষদের দূরে সরিয়ে দিয়েছিল এবং সেই জন্যই প্রভুর লোকদের মধ্যে মহামারী হয়েছিল। এখন সমস্ত মিদিয়নীয় ছেলেদের হত্যা করো। সমস্ত মিদিয়নীয় স্ত্রীলোকদের হত্যা করো যাদের কোনো না কোনো পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল। তুমি সমস্ত যুবতী মেয়েদের বাঁচতে দিতে পারো। কিন্তু কেবল তখনই যদি তাদের সঙ্গে কোনো পুরুষের যৌন সম্পর্ক না থেকে থাকে। 
[কোরান ৫:৩৩] যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। 
সহিংসতার প্রতিযোগিতায় যে-কিতাবটিই এগিয়ে থাকুক না কেন, সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার এই যে, প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী এই দুই সহিংস কিতাবে আস্থা রাখে ও বিশ্বাস করে এ জগতের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। 

এই নিবন্ধ অবলম্বনে  

দু'টি ইছলামী কার্টুন


শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

যাহা হুবাল তাহাই আবাল

লিখেছেন শহীদুজ্জামান সরকার

আল্লার রহমত ছাড়া কারো ঈমানদার হওয়ার ক্ষমতা নেই - সে মুহাম্মদ হোক অথবা আবু জাহেল অথবা মুরগিব। কুরানে অসংখ্য আয়াত আছে যেগুলোতে আল্লা নিজেই বলেছে, "আমার রহমত ছাড়া কারো আমার ঈমানদার হওয়া সম্ভব নয়।" সুরা ফাতেহার এই আয়াতটা দেখলেই বুঝতে অনেক সুবিধা হবে:
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাজিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। (সুরা ফাতিহা, আয়াত ৭)
কুরানের এই সামান্য আয়াতটা বিশ্লেষণ করলে অনেক কিছুই আমরা বুঝতে পারবো। এই যেমন মুসলিমদের দাবি - কুরান লেখক হুবাল তথা আল্লাহ। আরবের আগের ঈশ্বরের নাম হুবাল ছিল। আরববাসীরা হুবালে বিশ্বাসী ছিল। মুহাম্মদ যে-ধর্ম প্রবর্তন করে, সেই ধর্মের ঈশ্বরও হুবাল, কিন্তু নাম বদল হয়ে আল্লা হয়ে গেছে। তবে যাহাই হুবাল, তাহাই আল্লা।

এই আয়াতে আল্লা কাকে কী বলতেছে? নাকি আয়াত পাঠকারী আল্লাকে বলতেছে, আমাদের উপর রহমত দান করো?

আসল সত্য - মুহাম্মদ নিজেই এই কুরানের রচয়িতা, নিজে নিজেই কাল্লনিক হুবালের কাছে নিজে রহমত চাচ্ছে, যে-হুবালের কোনো অস্তিত্বই নেই কোনো।

আবার কুরানের কোনো কোনো পড়লে মনে হয়, আল্লা নিজেই কিছু সরাসরি কিছু বলতেছে। এই যেমন:
আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছি এবং সেটিকে বনী ইসরাঈলের জন্য হেদায়েতে পরিণত করেছি যে, তোমরা আমাকে ছাড়া কাউকে কার্যনির্বাহী স্থির করবে না। (সুরা বনী-ইসরাঈল, আয়াত ২)
তবে এই আয়াতটাতে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, কুরান-লেখক মুহাম্মদ মাঝে মাঝে নিজেকেই হুবাল দেবতা ভাবতে শুরু করে কখনো কখনো। আমরা আরও জানি যে, মুহাম্মদ কোনো লেখাপড়া জানতো না, কিন্তু সে কীভাবে এই কুরান লিখতে পারলো? এই কাজটাও খুব সহজ একটা বিষয়।

মানুষ যখন বিপদে পড়ে, সেই সময় কিছু মানুষ তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসে কেউ আসে কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে। কেউ বা মানবিক কারণে। কিন্তু মুহাম্মদ এগিয়ে গিয়েছিল কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে। সে লোকদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে লাগলো। সেই লোকগুলো মুহাম্মদকে নবী মেনে নিল এবং পথ প্রদর্শক মনে করলো।

লিখতে-পড়তে জানা কিছু যুবকও যোগ দেয় তার সাথে। এই যুবকরাই মূলত মুহাম্মদের মুখের কথাকেই লিপিবন্ধ করতো মূলত খেজুর গাছের পাতায়। লেখার জন্য তারা বেছে নিতো ছোট গাছগুলোকেই, যে-গাছগুলোর পাতা নিচ থেকেই ছোঁয়া যায়।

তবে একটা মজার বিষয় হলো, এই গাছগুলোর পাতা বিভিন্ন পশু খেয়ে শেষ করে দিত। এভাবে অনেক আয়াত হারিয়ে যায়। আর পাখিরা এই আয়াতগুলোতে বিষ্ঠা ত্যাগ করতো। আর এই কারণেই কবুতর এবং অন্যান্য পাখি কুরানে বিষ্ঠা ত্যাগ করলে কুরানের পবিত্রতা নষ্ট হয় না।

কী হাস্যকর, তাই না? এরকম একটি গ্রন্থ নাকি মানবজাতির সকল সমস্যার সমাধান!

ডানপাশে বামাতি

ধর্মকারীর নাম লেখা থাকলেও অনুবাদ ও ফটোমাস্তানি করেছেন কৌস্তুভ

এসো, কোরান তিলাওয়াত করি - ০১

লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সাঃ)

১.
আর তার নিকট গুপ্ত তত্ত্বের চাবি, তা তিনি ছাড়া আর কেউই জানে না। যা কিছু জলে ও স্থলে আছে তিনি তার সবই জানেন এবং গাছের একটি পাতাও তার অজান্তে পড়ে না, এবং ভূগর্ভস্থ অন্ধকারের মধ্যে এমন কিছু নাই, সরস ও নীরস কোনো কিছু নাই যা এই কেতাবে নাই। - সুরা আনয়াম, আয়াত ৫৯ (৬:৫৯)

কিন্তু ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ডাইনোসর, কম্পিউটার, টিভি, মোবাইল, এক্সরে মেশিন, এরোপ্লেন ইত্যাদি জিনিসের নাম-গন্ধও এই কেতাবে পেলাম না। আল্লা কি এই কেতাবে মিথ্যা বলেছেন? মমিনরা আওয়াজ দেন।

২.
হে মমিনগণ, যদি প্রকৃত মমিন হয়ে থাকো তবে আল্লাকে ভয় করো এবং সুদী কারবার ত্যাগ করো। - সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৮ (২:২৭৮)

আল্লা বলেছেন, যে-মমিন সুদী কারবারের সাথে জড়িত থাকবে, সে প্রকৃত মমিন নয়। কিন্তু হায়! আজকাল মমিনরা কেউই আল্লাকে পাত্তাটাত্তা দেয় না। মমিনরা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করে। সুদ নেয় ও দেয়। ব্যাংক হলো সুদের কারবার। ব্যাংক থেকে সুদে ঋণ নিয়ে বাড়ি বানিয়ে সে-বাড়িতে বাস করে বা ভাড়া দিয়ে টাকা রোজগার ক'রে তাতে জীবিকা নির্বাহ করে। মমিন আপাদমস্তক সুদের ভেতর নিমজ্জিত থাকে সুদের বাড়িতে। মমিন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসা হলো পুরাই সুদের ব্যবসা। মমিন ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক থেকে সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ক'রে জীবিকা নির্বাহ করে। মমিন পুরাই আপাদমস্তক সুদে নিমজ্জিত। আল্লাপাকরে মমিনরা এক্কেরে গোনার মধ্যেই ধরে না। পাত্তাই দেয় না। আল্লা কী কইলেন, না কইলেন, তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না। অথচ নবীজি ও তার আমলের মমিনরা, মানে নবীজির ছাহাবীরা কেউ কি এইরকম নকল মমিন আছিলেন? তারা কি সুদের কারবার করতেন? তারা কি ক্রেডিট কার্ড দিয়া খেজুর, দাসী, তলোয়ার, মেছওয়াক ইত্যাকার বস্তু ও ব্যক্তি ক্রয় করতেন? তার কি ব্যাংক থেকে সুদে ঋণ নিয়ে খেজুরপাতা নিয়ে দালান বানায়ে বাস করতেন? ক্রেডিট কার্ডের সুদের টাকায় উট, দুম্বা, মেষ ইত্যাদি ক্রয় করতেন? আজকালকার মমিনরা কেন আল্লাকে এত অপমান করে? কেন আল্লাকে ভয় করে না, তিনি ভয় পেতে বলার পরেও? তাদের উদ্দেশ্য কী?

৩.
বস্তুত যারা কাফের, তুমি ওদেরকে ভয় দেখাও বা না দেখাও, একই কথা ওরা ঈমান আনবে না। আল্লা ওদের হৃদয়, চোখ ও কানে সীল মোহর মেরে দিয়েছেন। ওদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। - সুরা বাকারা, আয়াত ৬-৭ (২:৬-৭)

এই আয়াতে আল্লা নিজে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, কাফেরদের হৃদয়, চোখ ও কানে আল্লা নিজেই সীল মোহর মেরে দিয়েছেন। আর এ জন্যই কাফেররা ঈমান আনবে না। এবং এজন্যই কাফেরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।

আল্লা সর্বশক্তিমান। সর্বশক্তিমান আল্লার মেরে দেওয়া সীল মোহর তো তার সৃষ্টি কাফেরদের পক্ষে সরানো অসম্ভব। তাহলে ঈমান না আনার দোষটা কার? কঠিন শাস্তি কার প্রাপ্য?

ভয় দেখালেও কাফেররা ঈমান আনবে না জেনেও আল্লা পুরো কোরান শরীফ জুড়ে কাফেরদের ভয় ভীতি দেখিয়ে গেলেন কেন?

যিশুর ভালোবাসা

শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ইছলামকবলিত দেশে অভিজিৎ হত্যার সুবিচার অসম্ভব

লিখেছেন পুতুল হক

অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার এই দেশে হবে - এতো বড় আশা আমি করি না। এটা হচ্ছে সেই বাংলাদেশ, যেখানে রাজাকাররা, যারা আমাদেরই মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষ মেরেছে, তিন লক্ষ নারীর সম্ভ্রমহানী করেছে, জাতীয় নেতা হয়। 

যে-জাতি ইসলামের কারণে বাবার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী খুনিকে, মায়ের রাজাকার ধর্ষককে ক্ষমাই শুধু করে না, পরম আত্মীয়ও মনে করে, সে-জাতি অভিজিৎ রায়ের মত কোনো নাস্তিক, যে কিনা ধর্মহীন এক মুক্তবিশ্বের স্বপ্ন দেখতো আর দেখাতো, সেই অভিজিৎ হত্যার সুবিচার চাইবে, এরকম আশা করার মত জড়বুদ্ধি আমি নই।

এখানকার মানুষ মুক্তমনাদের কতল করে আর যারা মা-বোনদের ধর্ষণ করে, ভাইকে-বাবাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারে, তাদের শ্রদ্ধার আসনে বসায়। ধর্ষক আর খুনিরাই এই দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখানকার মানুষের মনন, চিন্তা গড়ে ওঠে এদেরই হাতে। এর বাইরে তারা ভাববেই বা কীভাবে? মুসলমান বাবা তাঁর ছেলেকে খুন হতে দিতে পারে, ছেলে তাঁর বাবাকে খুন করতে পারে, যদি তারা ইসলামের বাইরে যায়। এখানে সবার আগে ইসলাম। তাই মুক্তমনাদের খুন হতে হয়। এটাই ইসলামের আদেশ। 

মুসলমান আর যা-ই করুক, কখনো ইসলামের বাইরে যেতে পারবে না। পারবে না তাঁদের নবী আর আল্লাহ্‌র আদেশ এড়িয়ে চলতে। ইসলামী মনীষীদের লেখা ইতিহাস বলে, মোহাম্মদ তার সমালোচনাকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তার উম্মতরা হুমায়ুন আজাদ, অভিজিৎদের হত্যা করে শুধুমাত্র সে নির্দেশের বাস্তবায়ন করে। যে-মুখে ইসলামকে স্বীকার করা হয়, সে-মুখে অভিজিৎ হত্যার বিচার চাওয়া একেবারেই অসম্ভব। 

একজন মুসলমান, যে এক আল্লাহ আর মোহাম্মদকে আল্লাহ্‌র প্রেরিত পুরুষ বলে বিশ্বাস করে, তার মহানবীকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মনে করে, যাকে নির্ভুল, নিষ্পাপ, নিখুঁত মনে করে, নবীপ্রেম যার অন্তরে সদাসর্বদা ১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে টগবগ করে, সে কীভাবে অভিজিৎ হত্যার বিপক্ষে অবস্থান নেবে? 

আল্লাহ এবং রাসুলে বিশ্বাস স্থাপনের সাথে সাথে মুসলমান আরও বিশ্বাস করে, সমগ্র পৃথিবীর মালিক আল্লাহ, তাই এক আল্লাহ্‌র আইন ছাড়া অন্য কোনো আইন মেনে নেয়া যাবে না। আল্লাহ্‌র আইন প্রতিষ্ঠার জন্য কাফেরদের বিরুদ্ধে কেয়ামত পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। কোরআন বা হাদিসে কাফের হত্যার নির্দেশ আছে, কোনো কাফের হত্যার জন্য বিচার চাওয়ার নির্দেশ নেই।

মুসলমান কট্টর হোক বা মডারেট হোক, কোরআনের যে-সমস্ত আয়াতে বা যে-সমস্ত হাদিসে কাফের হত্যার নির্দেশ আছে, সেসবকে ভুল বলতে পারবে না। ধর্মকে গুটি কয়েক পুস্তকের মধ্যে আবদ্ধ করে নিজেদের ভিন্ন পথে এগিয়ে নেবার সুযোগ মুসলমানদের নেই। কারণ ইসলাম তাদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি জীবনাচারে, প্রতিটি ক্ষেত্রে বিস্তৃত। 

ইসলাম থেকে বের হয়ে যখনই কেউ শ্বাস নেবার চেষ্টা করবে, সেই কতলযোগ্য। আর ইসলামের মধ্যে থাকলে অভিজিৎ হত্যার বিচার চাওয়া যায় না। অভিজিৎকে যে হত্যা করেছে, মুসলমানের কাছে তার বেহেস্তপ্রাপ্তি হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ তাঁকে পুরস্কৃত করার জন্য শেষ বিচার পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। অভিজিতের খুনির জন্য তার কবর আলোকিত, সুরভিত আর হুরদের দ্বারা সুসজ্জিত হয়ে গেছে।

অভিজিৎহীন, তবু অভিজিৎময়

'মুক্তমনা' ব্লগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনলাইনে বাংলায় মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রকৃত পথিকৃৎ অভিজিৎ রায়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছর ঠিক এই দিনে মোল্লা একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত সিসি ক্যামেরাময় কিতাব মাহফিলের ঠিক বাইরে নির্লিপ্ত পুলিশের উপস্থিতিতে ও অজস্র মানুষের সামনে তাঁকে হত্যা করে শিক্ষাবিদ্বেষী, সভ্যতাবিমুখ ও বর্বর ইছলামের মহানবীর মহান বীর অনুসারীরা।

প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অনলাইনে কটু মন্তব্য করলে দক্ষ ও তৎপর গোয়েন্দা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে ঠিক পরদিনই, কিন্তু অগণ্য প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও কেউ ধরা পড়ে না এক বছরেও। 

ধর্মবাজদের ঘাঁটানোর সাহস আসলে নেই কোনও প্রশাসনেরই। বরং প্রশাসন এদেরই আজ্ঞাবহ। নইলে ইছলামীরা নিজেদের খোমা মোবারক প্রদর্শন করে বছরের পর বছর প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েও কীভাবে থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে? 

অভিজিৎ রায় বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ, দর্শন ও বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করলেও তাঁর প্রধান অপরাধ ছিলো - যুক্তি-তথ্য-প্রমাণের মাধ্যমে ইছলামের আরোপিত মাহাত্ম্যকে ধুলিস্যাৎ করা। ইছলামীরা তাই তাদের নবীর পথ অনুসরণ করে সমালোচনার জবাব দিয়েছে সুন্নতী উপায়ে - সমালোচক-হত্যার মাধ্যমে। এবং এ কথা মানতেই হবে, এই হত্যাকাণ্ড বিপুলভাবে জননন্দিত ও সমর্থিত, যেহেতু বাংলাদেশে হত্যা-ধর্ষণ-ডাকাতি-দুর্নীতিসহ যে-কোনও ভয়াবহ অপরাধের চেয়ে ইছলাম-সমালোচনার অপরাধ অনেক অনেক বেশি গুরুতর। 

অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুতে অপরিমেয় ক্ষতি হয়েছে মুক্তচিন্তা চর্চা আন্দোলনের। মৃত্যুর পরে কারুর স্থান শূন্য থাকে না বলে যে-কথাটির প্রচলন আছে, সেটি আসলে ভ্রান্ত বাণী। অভিজিৎ রায়ের মতো সুশিক্ষিত, প্রজ্ঞাবান, বিদগ্ধ, মানবতাবাদী, যুক্তিমনস্ক, সংস্কৃতিমনা, প্রতিভাধর, সুলেখক ও আপাদমস্তক ভদ্রজনের স্থান পূরণ হয় না।

(নিচের ছোট ছোট ছবিতে একের পর এক ক্লিক করে ১৬ টি পোস্টার দেখতে হবে।)


পোস্টারগুলো বানানোর কৃতিত্ব সামিনা চৌধুরী এ্যানি-র

বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

"ইসলামে নারী এবং যৌনতা": ব-দ্বীপ প্রকাশন থেকে যে-বইটি বের হবার কথা ছিলো এই বইমেলায়

আবুল কাশেম। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও কিংবদন্তিতুল্য ইছলাম-গবেষক। কোরান, হাদিস ও ইছলামের ইতিহাস সম্পর্কে অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী। বর্তমান শতাব্দীর শুরু থেকে ইংরেজি ও বাংলায় রচনা করেছেন অসংখ্য নিবন্ধ ও গবেষণাপত্র। দুটো তালিকা: ১. ইসলাম ওয়াচ, ২. ফেইথ ফ্রিডম। খ্যাতনামা সাইট উইকিইসলাম-ও তাঁর লেখা প্রকাশ করেছে। একটা সময়ে তিনি মুক্তমনায় অনেক লেখা প্রকাশ করেছেন। তাঁর বেশ কিছু লেখা প্রকাশের অনুমতি দিয়ে তিনি ধর্মকারীকে কৃতজ্ঞ করেছিলেন। "ইসলামে কাম ও কামকেলি" নামে তাঁর রচিত একটি কুফরী কিতাব ধর্মকারী প্রকাশ করেছে।

গতকাল ধর্মকারীর ইমেইলে নিচের তাঁর একটা মেইল পেলাম একটা অ্যাটাচমেন্টসহ:
জনাব সম্পাদক সাহেব;
মানিক ভাই-এর জেল হাজতে যাবার সংবাদে আমি অতিশয় কাতর অবস্থায় আছি। মানিক ভাই আমার অনেক দিনের বন্ধু।
উনার আমন্ত্রণে আমি "ইসলামে নারী এবং যৌনতা" বইটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে লিখি এক খণ্ডে অনেক নতুন তথ্য যোগান দিয়ে। উনি এবারকার বইমেলায় বইটা আনবেন বলে প্রত্যাশা করেছিলেন।
যাই হোক, সব খবরই আপনার জানা।
বইটি যদি ই-বুক হিসেবে আপনাদের বহুপঠিত ওয়েবসাইটে রাখেন তবে খুশি হবো।
বইটি ভালোমতো সম্পাদনা করা হয়নি। আশা করি, সর্বগুণে সব দোষ ক্ষমা করবেন।
ইতি;
আবুল কাশেম
তাঁর মেইল থেকে জানা গেল, ব-দ্বীপ প্রকাশন থেকে এই বইমেলায় তাঁর লেখা একটি বই প্রকাশ করার কথা ছিলো। তিনি সেই বইটির ড্রাফট পিডিএফ আকারে ধর্মকারীতে রাখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এ কারণে ধর্মকারী তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

সাইজ: ২.২ মেগাবাইট
ডাউনলোড লিংক (গুগল ড্রাইভ): https://goo.gl/qmlDu3
ডাউনলোড লিংক (ড্রপবক্স): https://goo.gl/fe3ipq

অনলাইনে পাঠযোগ্য ভার্শনও এমবেড করা হলো নিচে।

হুদাইবিয়া সন্ধি - ৫: অশ্রাব্য-গালি ও অসহিষ্ণুতা বনাম সহিষ্ণুতা: কুরানে বিগ্যান (পর্ব- ১১৫): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – ঊননব্বই

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭ > পর্ব ৭৮ > পর্ব ৭৯ > পর্ব ৮০ > পর্ব ৮১ > পর্ব ৮২ > পর্ব ৮৩ > পর্ব ৮৪ > পর্ব ৮৫ > পর্ব ৮৬ > পর্ব ৮৭ > পর্ব ৮৮ > পর্ব ৮৯ > পর্ব ৯০ > পর্ব ৯১ > পর্ব ৯২ > পর্ব ৯৩ > পর্ব ৯৪ > পর্ব ৯৫ > পর্ব ৯৬ > পর্ব ৯৭ > পর্ব ৯৮ > পর্ব ৯৯ > পর্ব ১০০ > পর্ব ১০১ > পর্ব ১০২ > পর্ব ১০৩ > পর্ব ১০৪ > পর্ব ১০৫ > পর্ব ১০৬ > পর্ব ১০৭ > পর্ব ১০৮ > পর্ব ১০৯ > পর্ব ১১০ > পর্ব ১১১ > পর্ব ১১২ > পর্ব ১১৩ > পর্ব ১১৪

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"

স্বঘোষিত নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীদেরকে কুরাইশরা কী রূপে মক্কা শহর প্রবেশে বাধা প্রদান করেছিলেন, মুহাম্মদ তাঁদের সেই বাধাকে অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে কী পন্থা অবলম্বন করেছিলেন, বিশর বিন সুফিয়ান আল-কাবি নামের এক লোক যখন মুহাম্মদের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন, তখন মুহাম্মদ তাঁকে কী জবাব দিয়েছিলেন - তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1] [2] [3] [4]

পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব:১১৪) পর:

আল-যুহরী তাঁর বর্ণনায় বলেছেন: 'যখন আল্লাহর নবী বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, বুদায়েল বিন ওয়ারকা আল-খুযায়ি (Budayl b. Warqa' al-Khuza'i) নামের এক লোক খুযাআ গোত্রের কিছু লোকদের নিয়ে তাঁর কাছে আসে ও তাঁকে জিজ্ঞাসা করে জানতে চায়, কী জন্য তিনি এসেছেন। তিনি তাদের বলেন যে, তিনি যুদ্ধের জন্য আসেননি, তিনি এসেছেন তীর্থ করতে ও পবিত্র স্থানটিতে শ্রদ্ধা জানাতে। তারপর তিনি বিশর বিন সুফিয়ান (Bishr b. Sufyan)-কে যা বলেছিলেন (পর্ব: ১১৪), তাদেরকেও তা-ই বলেন।

অতঃপর তারা কুরাইশদের কাছে গমন করে ও তারা যা শুনেছে, তা কুরাইশদের অবহিত করায়; কিন্তু তারা তদেরকে সন্দেহকরে ও তাদের সাথে রুক্ষ ভাষায় যে-কথাগুলো বলে, তা হলো, "সে হয়তো যুদ্ধের অভিপ্রায় নিয়ে আসেনি, কিন্তু আল্লাহর কসম আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে এখানে কিছুতেই ঢুকতে পারবে না, যেন আরবরা কখনো বলতে পারে যে, আমরা তাকে তা করার অনুমতি দিয়েছিলাম।" খুযাআ গোত্রের মুসলমান ও মুশরিক উভয় দলের লোকেরই মুহাম্মদের সাথে জোটবদ্ধ ছিলেন।মক্কার যা কিছু ঘটনা, তার সমস্ত খবরই মুহাম্মদের কাছে তারা সরবরাহ করে আসছিলেন।

অতঃপর কুরাইশরা বানু আমির বিন লুয়ভি গোত্রের মিকরায বিন হাফস বিন আল- আখিয়াফ (Mikraz b. Hafs b. al-Akhyaf) নামের এক ভাইকে তাঁর কাছে পাঠায়। যখন আল্লাহর নবী তাকে আসতে দেখেন, তখন তিনি বলেন, "এ হলো এক বিশ্বাসঘাতক ব্যক্তি!" যখন তিনি সেখানে আসেন ও তাঁর সাথে কথা বলেন, আল্লাহর নবী তাকে একই জবাব দেন, যা তিনি বুদায়েল ও তার সঙ্গীদের দিয়েছিলেন; অতঃপর তিনি কুরাইশদের কাছে ফিরে আসেন ও আল্লাহর নবী তাকে যা বলেছিলেন, তা তিনি তাদেরকে অবহিত করান।

তারপর তারা আল-হুলায়েস বিন আলকামা বা ইবনে যাববান (al-Hulays b. 'Alqama or Ibn Zabban)-কে তাঁর কাছে পাঠায়, তিনি ছিলেন বানু আল-হারিথ বিন আবদু মানাত বিন কিনানা গোত্রের এক লোক ও সেই সময়ের কালো সেনাদলের (black troops) প্রধান। যখন আল্লাহর নবী তাকে দেখেন, তখন বলেন, "এ হলো ধর্মপ্রাণ লোকদের একজন, সুতরাং কুরবানির পশুগুলোকে তার কাছে পাঠাও, যেন সে সেগুলো দেখতে পায়!" যখন তিনি দেখতে পান যে, সেই পশুগুলো উপত্যকার আশেপাশে ও তার পাশ দিয়ে বিচরণ করছে, যাদের গলায় আছে উৎসবের গলাবন্ধ (festive collars) ও চুলগুলো ছিল খাওয়া খাওয়া - এ কারণে যে তাদেরকে কুরবানি স্থানে না নিয়ে ধরে রাখা হয়েছে বহুদিন; এই দৃশ্যগুলো দেখে তিনি এতই প্রভাবিত হন যে, তিনি আল্লাহর নবীর কাছে না গিয়ে কুরাইশদের কাছে ফিরে আসেন। তিনি যখন তাদের এইসব ঘটনা বলেন, তারা বলে, "বসে পড়! তুমি শুধুই এক বেদুইন, একদম অজ্ঞ।"

আবদুল্লাহ বিন আবু বকর আমাকে বলেছেন যে, এই বিষয়টি আল-হুলায়েসকে করে ক্রুদ্ধ; তিনি বলেন, "হে কুরাইশরা, আমরা এ জন্য তোমাদের সাথে জোট ও চুক্তিবদ্ধ হইনি, আল্লাহর ঘরে যে মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে আসে, তাকে কী বাধা দেয়া যায়? যার হাতে আমার জীবন তার কসম, মুহাম্মদ যা করতে এসেছে, তা হয় তাকে তোমরা করতে দেবে, নতুবা আমি আমার সমস্ত কালো সৈন্যদের নিয়ে প্রস্থান করবো।" তারা বলে, "শান্ত হও হুলায়েস, যে পর্যন্ত না আমরা আমাদের নিজেদের জন্য গ্রহণযোগ্য শর্ত অর্জন করতে পারি!"

আল-যুহরি তাঁর বর্ণনায় যা বলেছেন: 'অতঃপর তারা উরওয়া বিন মাসুদ আল-থাকাফি (Urwa b. Mas'ud al-Thaqafi)-কে আল্লাহর নবীর কাছে প্রেরণ করে, তিনি বলেন, "হে কুরাইশরা, যাদেরকে তোমরা মুহাম্মদের কাছে পাঠিয়েছিলে, তাদের ফিরে আসার পর তাদের সাথে কঠোরতা ও কটুবাক্য আমি প্রত্যক্ষ করেছি। তোমরা জানো যে, তোমারাই হলে আমার পিতৃ সমতুল্য ও আমি তোমাদের সন্তান সমতুল্য”- এটি এই জন্য যে, উরওয়া ছিলেন সুবায়া বিনতে আবদু সামস (Subay'a d. 'Abdu Shams)-এর পুত্র- “তোমাদের ওপর যা ঘটেছে, তা আমি শুনেছি ও আমার যে-লোকেরা আমাকে মান্য করে, তাদেরকে আমি সংগ্রহ করেছি; অতঃপর আমি তোমাদেরকে সাহায্যের জন্য এসেছি।" তারা তার সাথে একমত হয় ও বলে যে তারা তাকে সন্দেহ করেনি। অতঃপর তিনি আল্লাহর নবীর নিকট আসেন, তাঁর সামনে বসে পড়েন ও বলেন: "মুহাম্মদ, তুমি কি বিভিন্ন ধরনের মানুষদের সংগ্রহ ও একত্রিত করেছো এবং তারপর তদেরকে নিয়ে এসেছ তোমার নিজের লোকদের ধ্বংস করার জন্য? কুরাইশরা তাদের মহিলা ও সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে চিতাবাঘের চামড়া পরিধান করে বাহির হয়ে এসেছে ও প্রতিজ্ঞা করেছে যে, তোমার জোরপূর্বক মক্কায় প্রবেশ তারা কখনোই হতে দেবে না। আল্লাহর কসম, আমি মনে করি যে, আগামীকাল এই লোকগুলো (এখানে) তোমাকে পরিত্যক্ত করবে।" [পর্ব- ৬৯]

তখন আবু বকর আল্লাহর নবীর পিছনে বসে ছিলেন, তিনি বলেন, "'আল-লাত এর দুধ চোষ! আমাদের কি তাঁকে পরিত্যক্ত করা উচিত?" তিনি জিজ্ঞাসা করে জানতে চান, কে এই কথাগুলো তাকে বলেছে। যখন তিনি জানতে পারেন, সে ছিল ইবনে আবু কুহাফা, তিনি বলেন, "আল্লাহর কসম, আমি তোমার আনুকূল্যের জন্য যদি আমি ঋণী না থাকতাম, তবে আমি এর সমুচিত জবাব দিতাম, কিন্তু এখন তা শোধবোধ হয়ে গেলো।" [5]

অতঃপর যখন তিনি আল্লাহর নবীর সাথে কথা বলছিলেন, তখন তিনি তাঁর দাড়ি ধরা শুরু করেন। আল-মুঘিরা বিন শুবা বর্ম-আবরণ পরিহিত অবস্থায় আল্লাহর নবীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যখন তিনি [উরওয়া] আল্লাহর নবীর দাড়ি ধরে ছিলেন, তখন তিনি তার হাতে আঘাত করা শুরু করেন ও বলেন,"হাতটা খোয়ানোর আগেই আল্লাহর নবীর দাড়ি থেকে তোমার হাতটা সরাও।"

উরওয়া বলেন, "তুমি আমাকে হতবুদ্ধি করলে, কী রুক্ষ ও অভদ্র তুমি!" আল্লাহর নবী মুচকি হাসেন; যখন উরওয়া জানতে চান, লোকটি কে ছিল, তখন তিনি বলেন, সে ছিল তার নিজেরই ভাইয়ের ছেলেআল-মুঘিরা বিন শুবা; তা শুনে তিনি বলেন, "এই নরাধম, এই তো সেদিনও না আমি তোর নাপাক শরীর ছাপ করে দিয়েছি!" [6]

আল্লাহর নবী তাকে সেই কথাগুলোই বলেন যা তিনি অন্যদের বলেছিলেন; যেমন, তিনি যুদ্ধ করার জন্য আসেননি। আল্লাহর নবীর অনুসারীরা তাঁর সাথে কীরূপ আচরণ করছে, তা প্রত্যক্ষ করে তিনি তাঁর কাছ থেকে উঠে আসেন। যখনই তিনি অজু করা সম্পন্ন করছিলেন, তারা দৌড়ে তাঁর সেই ব্যবহৃত পানি নেয়ার জন্য যাচ্ছিল; যখন তিনি থুতু ফেলছিলেন, তারা সেটার দিকে দৌড়ে যাচ্ছিলো; যদি তাঁর একটা মাথার চুলও পড়ে, তারা তা কুড়িয়ে নেয়ার জন্য দৌড়চ্ছিল।

অতঃপর তিনি কুরাইশদের কাছে ফিরে আসেন ও বলেন,
"আমি খসরুর সাম্রাজ্যে তাঁর সাথে দেখা করেছি, সিজারের সাম্রাজ্যে তাঁর সাথে দেখা করেছি ও নিগাস-এর সাম্রাজ্যে তাঁর সাথে দেখা করেছি; কিন্তু আমি এমন কোন রাজা দেখিনি, যে তাঁর জনগণের কাছে ছিলেন এমন, যেমন তাঁর অনুসারীদের কাছে ছিলেন মুহাম্মদ। আমি ঐ লোকদের দেখেছি যারা কখনোই কোনো কারণে মুহাম্মদকে পরিত্যাগ করবে না, সুতরাং তোমাদের বিবেচনা তোমরা নিজেরাই করো।" [7]

আল-তাবারীর (৮৩৯-৯২৩ সাল) অতিরিক্ত বর্ণনা:

মুহাম্মদ বিন আবদ আল-আলা আল-সানানি <মুহম্মদ বিন থাওয়ার < মামুর <আল-যুহরি < উরওয়া (বিন আল-যুবায়ের) < আল-মিসওয়ার বিন মাখরামা হইতে বর্ণিত; এবং ইয়াকুব বিন ইবরাহিম <ইয়াহিয়া বিন সাইদ আল-কাততান <আবদুল্লাহ বিন আল-মুবারক <মামুর <আল-যুহরি < উরওয়া < আল-মিসওয়ার বিন মাখরামা ও মারওয়ান বিন আল-হাকাম হইতে বর্ণিত:

'যখন তাঁরা সেখানে ছিলেন, বুদায়েল বিন ওয়ারকা আল-খুযায়ি খুযাআ গোত্রের কিছু লোককে নিয়ে তাদের কাছে আসেন। (তিহামা জনগণের মধ্যে তারা ছিলেন আল্লাহর নবীর বিশ্বস্ত বন্ধু।) বুদায়েল বলেন, "আমি কাব বিন লুয়ভি ও আমির বিন লুয়ভি-কে তাদের মহিলা ও সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে আল-হুদাইবিয়ার সারামৌসুমী কূপগুলোর (all season wells) পাশে শিবির স্থাপন করতে দেখেছি। তারা যুদ্ধ করার অভিপ্রায় নিয়ে এসেছে, যেন আপনি কাবা ঘরে ঢুকতে না পরেন।"

আল্লাহর নবী বলেন, "আমরা কারও সাথে যুদ্ধ করতে আসিনি; আমরা এসেছি তীর্থযাত্রা [হজ] পালনের উদ্দেশ্যে। যুদ্ধ কুরাইশদের ক্লান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যদি তারা ইচ্ছা করে, আমরা তাদেরকে কালক্ষেপণের সময় প্রদান করবো ও তারা আমাদেরকে আমাদের মত ছেড়ে দেবে, যেন আমরা লোকদের (অর্থাৎ, 'আরবদের') ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারি। যদি আমি বিজয়ী হই, তবে লোকেরা যে ভাবে ('ইসলামে') যোগ দেয়, ইচ্ছা করলে তারাও সেভাবে যোগ দিতে পারবে; যদি তারা তা না করে, তবে তারা বিশ্রাম ও শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে। যদি তারা তা প্রত্যাখ্যান করে,তবে যার হাতে আমার জীবন তার কসম, আমি তাদের সাথে যুদ্ধ করবো যতক্ষণে না আমার গর্দান বিচ্যুত হয় অথবা আল্লাহ তার আদেশ কার্যকর করে।" বুদায়েল বলেন, "আপনি যা বলেছেন, তা আমরা তাদের অবহিত করাবো।"

অতঃপর বুদায়েল যাত্রা করেন ও কুরাইশদের কাছে আসেন, বলেন, "আমরা এই লোকটির কাছ থেকে তোমাদের কাছে এসেছি। আমরা তার বিবৃতি শুনেছি - যদি তোমরা আমাদের তা উপস্থিত করতে বলো, আমরা তা করবো।" তাদের মধ্যে যারা নির্বোধ [8] তারা বলেন, "তার কাছ থেকে আনা কোনো খবর তোমাদের কাছ থেকে শোনার প্রয়োজন আমাদের নেই।" কিন্তু তাদের মধ্যের কোন এক বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলেন, "তাকে যা বলতে শুনেছ, আমাদের কাছে তা খুলে বলো।" অতঃপর তিনি বলেন, "আমি তাকে এই বলতে শুনেছি" - আল্লাহর নবী তাকে যা বলেছিলেন, তা তিনি তাদেরকে বলেন।

উরওয়া বিন মাসুদ আল-থাকাফি উঠে দাঁড়ান ও বলেন, "আমার লোকেরা, তোমরা কি আমার পিতৃ সমতুল্য নও?" তারা বলে, "হ্যাঁ।" "আমি কি তোমাদের সন্তান সমতুল্য নই [9]?" তিনি জিজ্ঞাসা করেন। তারা বলে, "হ্যাঁ।" "তোমরা কি আমাকে সন্দেহ করো?" তিনি জানতে চান। তারা বলে, "না।" তিনি বলেন, "তোমরা কি জানো যে, (একবার) সহযোগিতা পাওয়ার জন্য আমি 'উকাজ' এর লোকদের আহ্বান করেছিলাম ও যখন তারা আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি, তখন আমি আমার পরিবার ও সন্তান এবং যারা আমাকে মান্য করে তাদেরকে নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছি?" তারা বলে, "হ্যাঁ।" [10]

উরওয়া বলেন, "এই লোকটি যে-প্রস্তাব তোমাদের দিয়েছে, তা যুক্তিসম্মত। এটা গ্রহণ করো ও আমাকে তার কাছে যেতে দাও।" তারা বলে, "তার কাছে যাও।" তাই উরওয়া আল্লাহর নবীর কাছে গমন করেন ও তাঁর সাথে কথোপকথন শুরু করেন। আল্লাহর নবী তাকে তাই বলেন, যা তিনি বুদায়েল-কে বলেছিলেন।

অতঃপর উরওয়া বলেন, "মুহাম্মদ, তুমি আমাকে বলো: "যদি তুমি তোমার সগোত্রীয় লোকদের নির্মূল করো, তুমি কি এমন কখনো শুনেছো যে আরবের এমন কোনো লোক তোমার আগে তার নিজ-জাতিকে ধ্বংস করেছে? আর যদি তার বিপরীতটি ঘটে [11]; আল্লাহর কসম যা আমি দেখতে পাচ্ছি, তা হলো, বিশিষ্ট ও উচ্ছৃঙ্খল উভয় লোকগুলোই সম্ভবত তোমাকে পরিত্যাগ করে পলায়ন করবে।" [পর্ব: ৬৯]

আবু বকর বলেন, "যাও, গিয়ে আল-লাতের ভগাঙ্কুর (Clitoris) চোষ!" - আল-লাত ছিল আল-থাকিফ গোত্রের দেবীর প্রতিমা, যাকে তারা পূজা করতেন - "আমরা কি তাঁকে পরিত্যাগ করে পলায়ন করবো?" [12]

"কে বললো এ কথা?" উরওয়া জিজ্ঞাসা করেন। তারা বলে, "আবু-বকর।" উরওয়া বলেন, "যার হাতে আমার জীবন তার কসম, যদি তুমি আমার উপকার না করতে, যা আমি তোমাকে পরিশোধ করিনি, তবে আমি এর জবাব দিতাম।" [5]

উরওয়া আল্লাহর নবীর সাথে (আবার) আলোচনা শুরু করেন। যখন তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন, তিনি তাঁর দাড়িটি ধরে রাখছিলেন। আল-মুঘিরা বিন শুবা আল্লাহর নবীর পাশে তাঁর তরবারি[পর্ব-১১২] সহ দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁর পরিধানে ছিল গলা পর্যন্ত বিস্তৃত এক বর্ম-আবরণ; যখন উরওয়া তার হাতটি প্রসারিত করে আল্লাহর নবীর দাড়ির দিকে আনছিলেন, আল মুঘিরা তার তরবারির খাপের নীচের অংশটি দিয়ে তার হাতে আঘাত করেন ও বলেন, "তাঁর দাড়ি থেকে তোমার হাত সরাও!"

উরওয়া তার মাথাটি উঁচু করে জিজ্ঞাসা করে, "এ কে?" তারা বলে, "আল-মুঘিরা বিন শুবা।" উরওয়া বলেন, "বিশ্বাসঘাতক,আমি কি তোর বিশ্বাসঘাতকতা শোধরানোর চেষ্টা করছি না?" [6]

উরওয়া আল্লাহর নবীর অনুসারীদের পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেন। তিনি বলেন, "আল্লাহর কসম, যদি নবী থুথু দেয়--------।" তারপর উরওয়া কুরাইশদের কাছে ফিরে আসেন ও বলেন, "হে আমার লোকেরা, আমি খসরু, সিজার ও নিগাসের দরবারে গিয়েছি -----। সে তোমাদের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা যুক্তিসম্মত, তোমরা তা গ্রহণ করো।"

- অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।]

আল-ওয়াকিদিরি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ) অতিরিক্ত বর্ণনা:

আল-মুঘিরা বিন শুবা ছিলেন উরওয়া বিন মাসুদের ভ্রাতুষ্পুত্র (Nephew) অথবা নাতি (Grand nephew)। জাহিলিয়া যুগে বানু মালিক গোত্রের কিছু লোকদের সঙ্গে যাত্রাকালে পথিমধ্যে আল-মুঘিরা বিন শুবা ঐ লোকদের অতিরিক্ত মদ্যপান করিয়ে মাতাল করার পর, তাদের ১৩ জন লোকের সবাইকে খুন করেনও তাদের সমস্ত টাকাপয়সা হস্তগত করেন। ঐ লোকদের খুনের রক্ত-মূল্য পরিশোধ করার জন্য উরওয়া বিন মাসুদ তাঁর এই ভ্রাতুষ্পুত্র (অথবা নাতি) কে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ও ঐ লোকগুলোর খুনের রক্ত-মূল্য পরিশোধ করেন। সেই সময় আবু-বকর সাহায্য করেছিলেন উরওয়া-কে। তারপর আল-মুঘিরা ইসলাম গ্রহণ করেন। আল্লাহর নবী বলেন, "তোমার ইসলাম গ্রহণ আমরা কবুল করলাম; কিন্তু এই টাকাপয়সা হলো বিশ্বাসঘাতকতার অর্থ, যার প্রয়োজন আমাদের নেই।" [5] [6]

ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা:

ইমাম বুখারীর বর্ণনা ইবনে ইশাক, আল-তাবারী ও আল-ওয়াকিদির বর্ণনারই অনুরূপ। কিন্তু তিনি ইবনে ইশাক (''আল-লাত এর দুধ চোষ!") ও আল-তাবারী এবং আল-ওয়াকিদি ("আল-লাতের ভগাঙ্কুর চোষ!") প্রমুখ সিরাত লেখকদের মত উরওয়া বিন মাসুদ-কে দেয়া আবু বকরের অশ্রাব্য-গালি সুনির্দিষ্টভাবেউল্লেখ না করে যা লিখেছেন তা হলো, "--তা শুনে আবু বকর তাঁকে গালাগালি করেন--।" (বিস্তারিত তথ্যসূত্রে [4])

>>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যে-বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো - কুরাইশরা মুহাম্মদের কাছে তাঁদের বেশ কিছু প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য, তাঁরা নিশ্চিতরূপে জানতে চেয়েছিলেন, অস্ত্রসজ্জিত অবস্থায় বিশাল সংখ্যক অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে মুহাম্মদের মক্কা আগমনের প্রকৃত অভিপ্রায় কী ছিল? বুদায়েল বিন ওয়ারকা আল-খুযায়ি ও তাঁর সঙ্গের লোকেরা ছিলেন মুহাম্মদের বিশিষ্ট মিত্র; তাই স্বাভাবিক কারণেই তাঁরা তাদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেননি। তাঁরা আল-হুলায়েস বিন আলকামা-কে বিশ্বাস করতে পারেনি এই কারণে যে, তিনি 'কুরবানির উটগুলো দেখে এতই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, তিনি মুহাম্মদের কাছে না গিয়ে মাঝপথ থেকেই কুরাইশদের কাছে ফিরে এসেছিলেন! এমত পরিস্থিতিতে কুরাইশরা তাঁকে কী ভরসায় বিশ্বাস করবেন?

অন্যদিকে, মুহাম্মদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে যখন উরওয়া বিন মাসুদ আল-থাকাফি "শুধু তাঁর অভিমত"ব্যক্ত করেছিলেন, তার প্রতিক্রিয়ায় আবু-বকর তাঁকে কী রূপ অশ্রাব্য গালিগালাজ করেছিলেন তা ইবনে ইশাক, আল-ওয়াকিদি ও আল-তাবারীর বর্ণনায় অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট এবং ইমাম বুখারীর বর্ণনায় তা উহ্য! এ ছাড়াও তাঁকে শারীরিক আক্রমণ করেছিলেন আর এক মুহাম্মদ অনুসারী, নিতান্ত তুচ্ছ কারণে। মুহাম্মদ-কে আক্রমণ বা অসম্মান করার জন্য উরওয়া বিন মাসুদ আল-থাকাফি যে মুহাম্মদের দাড়িতে হাত দিয়েছিলেন, এমন আভাস আদি উৎসের বর্ণনায় কোথাও উল্লেখিত হয়নি।

অশ্রাব্য গালিগালাজ ও শারীরিক আক্রমণ ছাড়াও যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো আদি উৎসের সকল ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় যা বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়েছে তা হলো, মুহাম্মদ কুরাইশদের হুমকি দিয়েছিলেন এই বলে যে, যদি তাঁরা তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তবে মুহাম্মদ তাঁদের সাথে যুদ্ধ করবেন! মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা কুরাইশদের এলাকায় এসে তাঁদেরকেই হুমকি ও শাসানী প্রদর্শন করছেন! কুরাইশরা মুহাম্মদের এই হুমকি ও শাসানীকে উপেক্ষা করে বিনা বাধায় তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের যদি মক্কা শহরে ঢুকতে দেন তবে লোকে তাঁদেরকে কী বলবে? এ চিন্তা কুরাইশদের ছিল। তাই তো তাঁরা বলেছিলেন "সে হয়তো যুদ্ধের অভিপ্রায় নিয়ে আসেনি, কিন্তু --আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে এখানে কিছুতেই ঢুকতে পারবে না, যেন আরবরা কখনো বলতে পারে যে, আমরা তাকে তা করার অনুমতি দিয়েছিলাম।"

বদর যুদ্ধ অধ্যায়ের মতই (পর্ব: ৩১) হুদাইবিয়া সন্ধি অধ্যায়ের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের প্রশ্নে কুরাইশ ও তাঁদের সহযোগীরা ছিলেন দ্বিধাবিভক্ত।

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। - অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ - লেখক।]

The narrative of Al-Tabari:

According to Muhammad b Abd al-Ala al-Sanani <Muhammad bin Thawr <Mamar <al-Zuhri <Urwah [b al-Zubayr] <al-Miswar b Makhramah; and according to Yaqub b Ibrahim <Yahya b Said al-Qattan <Abdallah b al- Mubarak < Mamar <al-Zuhri < Urwah <al-Miswar b Makhramah and Marwan b al-Hakam, who said:

While they were there, Budayl bin Warqa al-Khuzai came to them with a band of his tribesmen from Khuzaah. (They were the faithful friends of the Messenger of God among the people of Tihamah.) Budayl said: “I left Ka’b bin Lu’ayy and Amir b Lu’ayy encamped at the all season wells of al-Hudaybiyah with their ‘foals and dams (women and children)’. They intended to fight you and turn you away from house.” The prophet said: “We have not come to fight anyone; we have come to make lesser pilgrimage. War has exhausted and harmed Quraysh. If they wish, we will grant them a delay and they can leave me to deal with the people (that is, ‘the Arabs’). If I am victorious, if they wish to enter that which the people enter (i.e, ‘Islam’), they can do so; if not, they will have rested and recovered their strength. If they refuse (the delay), by Him who holds my soul in his Hands, I shall fight them for the sake of this affair of mine until the side of my neck is separated (i.e, ‘until death’) or God effects his command.” Budayl said, “We will inform them of what you say.” Budayl then set out and went to Quraysh and said: “We came to you from this man. We have heard him make a statement – if you want us to present it to you, we will.” The foolish [8] among them said, “We have no need for you to say anything to us from him.” But someone intelligent among them said, “Present what you have heard him say.” So he said, “I heard him say the following” – and he told him what the prophet had said.

Urwah b Masud al-Thaqafi stood up and said, “My people, are you not the father?” “Yes,” they said. “And am I not the son [9]?” he asked. “Yes,” they said. “And do you doubt me?” he asked. “No,” they said. “Do you not know,” he said, “that (once) I called on the people of Ukaz [10]for assistance; and, when they give me no help, I came to you with my family and children and those who obeyed me?” “Yes,” they said. ‘Urwah said, “This man has offered you a sensible proposal. Accept it, and let me go to him.” They said, “Go to him.” So Urwah went to the prophet and began speaking to him. The prophet spoke as he had spoken to Budayl.

Then Urwah said: “Muhammad, tell me: if you extirpate your tribesmen, have you ever heard of any of the Arabs who destroyed his own race before you? And if the contrary comes to pass (**’If Quraysh prove too powerful for you’), by God I see both prominent people and rabble who are likely to flee and leave you.” Abu Bakr said, “Go suck the clitoris of al-Lat!”–al-Lat was the idol of Thaqif, which they used to worship “Would we flee and leave him?” “Who is this?” asked Urwah. They said, “Abu Bakr.” Urwah said, “By the One who holds my soul in His hand, were you not for a favor you did me for which I have not repaid you, I would answer you.” [12]

‘Urwah (again) began speaking to the Prophet. As often as he spoke to him, he took hold of his beard. Al-Mughirah b Shubah [Urwah’s own nephew or pehaps grandnephew] was standing next to the Prophet with his sword, wearing a mail neck protector, and whenever Urwah extended his hand toward the Prophet’s beard, al-Mughirah struck his hand with the lower end of the scabbard and said, “take your hand away from his beard!” Urwah raised his head and asked, “Who is this?” They said, “Al-Mughirah b Shubah.” Urwah said, “Treacherous man, am I not trying to rectify your act of treachery?-----” [5] [6]

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1]“তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৩৪ – ১৫৩৯ http://books.google.com/books?id=sD8_ePcl1UoC&printsec=frontcover&source=gbs_ge_summary_r&cad=0#v=onepage&q&f=false

[2]অনুরূপ বর্ণনা (Parallel): “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫০১-৫০৩

[3] অনুরূপ বর্ণনা (Parallel): “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৫৯৩-৫৯৯ http://www.britannica.com/biography/al-Waqidi
ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ২৯১-২৯৪

[4] অনুরূপ বর্ণনা- সহি বুখারী: ভলিউম ৩, বই ৫০, নম্বর ৮৯১
অনেক বড় হাদিস, এই পর্বের প্রাসঙ্গিক অংশ:
While they were still in that state, Budail bin Warqa-al-Khuza'i came with some persons from his tribe Khuza'a and they were the advisers of Allah's Apostle who would keep no secret from him and were from the people of Tihama. -----Urwa bin Mas'ud --went to the Prophet and started talking to him. The Prophet told him almost the same as he had told Budail. Then Urwa said, "O Muhammad! Won't you feel any scruple in extirpating your relations? Have you ever heard of anyone amongst the Arabs extirpating his relatives before you?On the other hand, if the reverse should happen, (nobody will aid you, for) by Allah, I do not see (with you) dignified people, but people from various tribes who would run away leaving you alone." Hearing that, Abu Bakr abused him and said, "Do you say we would run and leave the Prophet alone?" Urwa said, "Who is that man?" They said, "He is Abu Bakr." Urwa said to Abu Bakr, "By Him in Whose Hands my life is, were it not for the favor which you did to me and which I did not compensate, I would retort on you." Urwa kept on talking to the Prophet and seizing the Prophet's beard as he was talking while Al-Mughira bin Shu'ba was standing near the head of the Prophet, holding a sword and wearing a helmet. Whenever Urwa stretched his hand towards the beard of the Prophet, Al-Mughira would hit his hand with the handle of the sword and say (to Urwa), "Remove your hand from the beard of Allah's Apostle." Urwa raised his head and asked, "Who is that?" The people said, "He is Al-Mughira bin Shu'ba." Urwa said, "O treacherous!Am I not doing my best to prevent evil consequences of your treachery?" Before embracing Islam Al-Mughira was in the company of some people. He killed them and took their property and came (to Medina) to embrace Islam. The Prophet said (to him, "As regards your Islam, I accept it, but as for the property I do not take anything of it. (As it was taken through treason). Urwa then started looking at the Companions of the Prophet. By Allah, whenever Allah's Apostle spat, the spittle would fall in the hand of one of them (i.e. the Prophet's companions) who would rub it on his face and skin; if he ordered them they would carry his orders immediately; if he performed ablution, they would struggle to take the remaining water; and when they spoke to him, they would lower their voices and would not look at his face constantly out of respect. Urwa returned to his people and said, "O people! By Allah, I have been to the kings and to Caesar, Khosrau and An-Najashi, yet I have never seen any of them respected by his courtiers as much as Muhammad is respected by his companions. By Allah, if he spat, the spittle would fall in the hand of one of them (i.e. the Prophet's companions) who would rub it on his face and skin; if he ordered them, they would carry out his order immediately; if he performed ablution, they would struggle to take the remaining water; and when they spoke, they would lower their voices and would not look at his face constantly out of respect." Urwa added, "No doubt, he has presented to you a good reasonable offer, so please accept it."-----

[5][6]এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন আল-ওয়াকিদি, তাঁর (Ibid) “কিতাব আল-মাগাজি” গ্রন্থে: ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৫৯৫-৫৯৮; ইংরেজি অনুবাদ: পৃষ্ঠা ২৯১-২৯৪

[6] Ibid “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা:ইবনে হিশামের নোট নং-৭৫০, পৃষ্ঠা ৭৬৯

[7] ‘খসরু, সিজার ও নিগাস ছিলেন যথাক্রমে পারস্য, বাইজানটাইন ও রোম
সাম্রাজ্যের অধিপতি’।

[8] নির্বোধ- তাঁরা ছিলেন ইকরিমা বিন আবু জেহেল ও আল-হাকাম বিন আবিল আ'স’।
Ibid: আল-ওয়াকিদি-“কিতাব আল-মাগাজি”গ্রন্থে: ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৫৯৪; ইংরেজি অনুবাদ: পৃষ্ঠা ২৯১- ২৯২

[9] ‘উরওয়া বিন মাসুদের মা সুবায়া বিনতে আবদু সামস ছিলেন কুরাইশ বংশের, আর তাঁর পিতা 'মাসুদ' ছিলেন আল-তায়েফের আল-থাকিফ গোত্রের’।

[10] উকাজ: ‘উকাজ ছিল এক বাৎসরিক মেলার স্থান, আল-তায়েফ শহর থেকে এক দিনের ও মক্কা শহর থেকে তিন দিনের পথ’।

[11] অর্থাৎ, ‘যদি কুরাইশরা তোমার চেয়ে বেশী শক্তিশালী প্রমাণিত হয়'।

[12] ‘আল-লাত(যাকে বলা হতো আল-তাঘিয়া, কর্তৃত্ব কারী) ছিল নারীদের উদ্ভাবন-শীলতা (Female fertility) ও যোদ্ধা দেবী, বিশেষভাবে আল-তায়েফের জনগণরা যার পূজা করতেন।