আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ৩১ মে, ২০১৫

বিবর্তনবিদ্বেষী ধর্ম, ক্রমবিবর্তিত ইসলাম

লিখেছেন ভবঘুরে বিদ্রোহী

প্রচলিত ইসলামী মতানুসারে, পৃথিবীর প্রথম মানব আদম। কিন্তু বিজ্ঞানের উত্তরোত্তর প্রাপ্ত জীবাশ্মিক প্রমাণে যখন বিবর্তনবাদ সর্বজনস্বীকৃতির পথে পূর্ণপ্রতিষ্ঠিত, লাখো বছর পূর্বের প্রাপ্ত মানব ফসিলের মাধ্যমে আদিম মানবের অস্তিত্ব এবং জীবনযাত্রা যখন প্রমাণিত, সর্বসাকুল্যে মাত্র ৭/৮ হাজার বছর পূর্বের আদম-কাহিনী যখন আর ধোপে টেকে না, তখন মুমিন বিজ্ঞানীরা অনুঘোষণা দিলেন, আদম সভ্য জামানার প্রথম মানব। কোরানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ১৪০০ বছর আগেই বলে গেছে, আমি পৃথিবীতে খলিফা নিযুক্ত করতে যাচ্ছি। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, পৃথিবীতে আগে থেকেই মানবের অস্তিত্ব ছিলো, আর আদম সভ্য জামানার প্রথম খলিফামাত্র।

প্রথম আদি (মরু) মানবপিতা আদমকে সৃষ্টির পরে বেহেস্তে তার একাকিত্ব দূরীকরণে সঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব করায় আদমের বাম পাঁজরের হাড় থেকে আল্লাহ বিবি হাওয়াকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু রিচার্ড সিড মানব ক্লোন সম্পর্কে যখন সফল ধারণা দিলেন, মুসলিম বিজ্ঞানীরা অনুঘোণানা দিলেন, ১৪০০ বছর আগেই কোরান বলেছে, আল্লাহই প্রথম ক্লোন বিজ্ঞানী, কারণ তিনি আদমের দেহকোষ থেকে হাওয়াকে সৃষ্টি করেছেন।

চর্মচোখে স্থূল দৃষ্টিতে দেখা সমতল ভূপৃষ্ঠে সূর্যের অস্তোদয়, রাতের আকাশে চাঁদ-তাঁরা, পতিত উল্কা... ধর্মীয় বর্ণনায় তাই প্রতিফলন, সূর্যকে ফেরেশতাদল কেউ পালতোলা নৌকার মতো টেনে নিয়ে যাচ্ছে, রাতের বেলা সূর্য আরশের তলায় সেজদারত, কিংবা তপ্ত সূর্যকে মাথার ওপরে রাখার শাস্তি কল্পনা। কেউ চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করার দাবিদার, উল্কাকে শয়তানের তীর হিসাবে অবহিতকরণ। কিন্তু ষোড়শ শতাব্দী থেকেই যখন আধুনিক সৌরমডেল পাওয়া গেল, মুমিনীয় বিজ্ঞানীরা ভোল পাল্টালেন, ১৪০০ বছর আগেই কোরান বলেছে, পৃথিবী উটপাখির ডিমের মতো গোলাকার, তারপর...।

মানুষ কখনই আকাশ ভেদ করে যেতে পারবে না, যেমনটা পাখিকুল পারে। তাই কল্পনার রং মিশিয়ে মধ্যযুগীয় ধর্মীয় যতো আষাঢ়ে গল্প আকাশকুসুম। সাত আসমান, মেঘের ওপারে অদেখা জ্বিন-ফেরেশতা আরশের গল্প। কিন্তু মহাকাশবিজ্ঞান ততোদিনে নভোমণ্ডলে বহুপথ পাড়ি দিয়েছে, অতি গতিসম্পন্ন নভোযান ছুটে চলেছে গ্রহান্তরে, মহাকাশজ্ঞান অনেকটাই সাধারণের আয়ত্বে। মোহাম্মদী বিজ্ঞানীরা ১৪০০ বছর আগের এক নারীমাথা পাখাওয়ালা অশ্বারোহীকেই প্রথম নভোচারীর মর্যাদা দিতে উম্মুখ। কিন্তু জীবন্ত প্রাণী নিয়ে বায়ুশূন্য, ক্ষতিকর রশ্মিঘাত পেরিয়ে, অতি গতিতে দৈর্ঘ্যবৃদ্ধির প্রভাবে কীভাবে বেঁচে রইলেন, ১৪০০ বছর পরেও তার সদুত্তর কোনো মুমিনীয় পণ্ডিত বিজ্ঞানী হুজুরে বুজুর্গান আজও দিতে পারে না।

কেয়ামত সংক্রান্ত সমস্ত ঘটনাই পার্থিব ধ্বংসলীলা। পৃথিবীর যেহেতু শুরু আছে, তার শেষও থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, পৃথিবী সদৃশ অন্য কোনো গ্রহ পাওয়া যায় কি না? মুমিনের উল্লম্ফন - কোথাও এমন নেই, কারণ আল্লাহ দুইটি পৃথিবী সৃষ্টি করেননি। তারপরেও রহস্যের সন্ধানে অভিযান থেমে নেই। বিজ্ঞানীরা যখন কৃষ্ণগহ্বরের ধারণা দিলো, মুমিনেরা ঘোষনা দিলো, এটা নিশ্চয় সর্বগ্রাসী জাহান্নাম, যেখান থেকে কোনোকিছুই ফিরে আসতে পারে না। কিন্তু জাহান্নাম তো সাতটি আর কৃষ্ণগহ্বর লক্ষ-লক্ষ, তাহলে? দেখুন, একেকটা জাহান্নাম হাজার হাজার কৃষ্ণগহ্বর সমেত একেকটি অঞ্চল, জাহান্নাম মানে একটি গহ্বর নয়। কিন্তু স্টিফেন হকিং যখন কৃষ্ণগহ্বরেরও বিকিরণ থাকার ধারণা থেকে ঘোষণা দিলেন, প্রচলিত ধারনামতে কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব নেই, মুসলিম বিজ্ঞানীদের অনুঘোষণা - আল্লাহর নিদর্শন খুঁজে পাইবা, এতো সোজা না।

মহাবৈশ্বিক ভিনগ্রহবাসী প্রাণের খোঁজে মহাকাশবিজ্ঞানীরা যখন এলিয়েন প্রাপ্তির দ্বারপ্রান্তে, তখন মুমিনীয় বিজ্ঞানীদের অনুঘোষণা, এলিয়েন আর কিছুই নয়, ১৪০০ বছর আগে কোরানে উল্লিখিত জ্বিনজাতি ছাড়া।

আমি বললাম, এলিয়েন বলতে আদৌ কিছু এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তথাকথিত মুমিন বিজ্ঞানীর ঘোষণা, ১৪০০ বছর আগেই সুরা জ্বিন-এ স্পষ্ট বলা আছে, বিজ্ঞানীরা কোনোদিনই জ্বিনের দেখা পাবে না, কারণ তারা আগুনের তৈরি।

বুঝলাম, কিন্তু ঈশ্বর কিসের তৈরি? প্রত্যেক ধর্মমতে, ঈশ্বর প্রশ্নহীন এক বিশ্বাস। বিশ্বাস তো আর জ্ঞান নয়, বড়জোর ধর্ম হতে পারে। কিন্তু (বি)জ্ঞানের রাজ্যে বিশ্বাসের মূল্য কোথায়? তাই বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ ধর্মে বহুধা বিভক্ত ঈশ্বর এক অমীমাংসিত প্রশ্ন, প্রশ্নই জ্ঞান। জ্ঞানের সন্ধানে ঈশ্বর সার্নের ভূগর্ভস্থ লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারের ছুরিকাঁচি মাইক্রোস্কোপের তলায়। ঈশ্বরকণা আবিষ্কারের ঘোষণা নাড়িয়ে দিলো তামাম পৃথিবীর রহস্যজিজ্ঞাসু মানুষগুলোকে, মোহাম্মদী বিজ্ঞানীর অনুকম্পা প্রার্থনা - ১৪০০ বছর আগেই আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, শুধু হায়াৎ মওত রিজিক দৌলতের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া সব মানুষকে দিয়েছেন, সুতরাং মানুষ ঈশ্বর বা ঈশ্বরকণা আবিষ্কার করতেই পারে, এতে বিচিত্র কিছু নেই।

কিন্তু মানুষ একটি ঘাসের পাতাও সৃষ্টি করতে পারবে না। অধুনা অণুজীববিজ্ঞানের জিনতাত্বিক গবেষণার ফসল কৃত্রিম প্রাণসৃষ্টি। মানুষ তো নিজেই এখন প্রচলিত ঈশ্বর হওয়ার পথে, ঐশ্বরিক ক্ষমতা অর্জনের পথে, স্বর্গীয় বিলাস প্রাপ্তির পথে, অমরত্বের পথে। দয়া করে কোনো মুমিন মোহাম্মদী সুন্নতি শরিয়াপন্থী বিজ্ঞানী একটু অগ্রিম জানাবেন কি, ঈশ্বর স্বয়ং কোন দেহকোষের ক্লোন? যা ১৪০০ বছর আগের একজন মুসলিমকথিত সর্বজ্ঞানী আগেভাগেই লিখে গেছেন?

বিবর্তনবাদ সমর্থন বা স্বীকার করলেও মরবে; বিবর্তনবাদ প্রত্যাখ্যান বা স্বীকার না করলেও মরবে।

এক বিবর্তনবাদ তথা সার্বিক বিজ্ঞানের শাঁখের করাত পৃথিবীর সনাতনি বা প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক সকল ধর্মেরই মৃত্যুর তূর্যধ্বনি, বিলুপ্তির হাতছানি, তুমি আমি শুনি আর না-ই বা শুনি, আসলে যা একটানা বেজে চলেছে চার্লস ডারউইনের সময় থেকেই - ধ্বনি কিংবা প্রতিধ্বনি।

তূর্যধ্বনি, কান পেতে শুনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন