আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫

বাংলাদেশের যুগান্তকারী আবিষ্কার: প্রকাশ্যে প্রস্রাব বন্ধে আরবি ভাষার ব্যবহার

লিখেছেন নিলয় নীল

কারো পুরুষনুনুভুতিতে আঘাত লাগলেও একথা বলা অমূলক হবে না যে, মূত্র বিসর্জনের ক্ষেত্রে বাঙালি পুরুষ ও কুকুরের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। কুকুর যেমন যেখানে-সেখানে পা উঁচু করে মূত্র বিসর্জন করে, ঠিক তেমন বাঙালী পুরুষরাও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে রাস্তার আশেপাশে মূত্রারাধনায় নিমগ্ন হয়ে দেশ ভাসিয়ে দেয়। যে কোনো স্থানে যে কারো সামনে প্যান্টের চেইন খুলে মূত্রধারা সৃষ্টি করা তাদের জন্য অশ্লীলতা না হলেও রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মেয়েটির ওড়না ঠিকমতো জায়গায় রয়েছে কি না, তা দেখার এবং উপদেশ দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু এই পুরুষদেরই! 

সে যা-ই হোক, পুরুষের এই কুকুরীপনা বন্ধ করার প্রচেষ্টাও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। মাঝে মাঝে রাস্তায় কিছু ভুল/শুদ্ধ দেয়াললিখন দেখা যায়। যেমন,

- দয়া করে প্রস্রাব করিবেন না। 
- এখানে প্রস্রাব করিবেন না, করিলে ৫০ টাকা জরিমানা।
- এখানে প্রস্রাব করিবেন, না করিলে ৫০ টাকা জরিমানা। 
- এখানে প্রস্রাব করিলে ২০ টি জুতার বাড়ি ফ্রি।
... ইত্যাদি। 

তবে এই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে খুব একটা সফল হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়নি। “পুরুষ মানুষ! ভাঙবে তবু মচকাবে না” এই সূত্র ধরে এসব জরিমানা বা লজ্জা একজন পুরুষের মধ্যে কখনোই সামান্য চিন্তার উদ্রেক করেছে, তা বলা যাবে না। এতো কিছুর পরও পুরুষ তার মেশিন দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে অপ্রয়োজনীয় জলসিঞ্চন করতে একটুও কার্পণ্যবোধ করে বলে আমার মনে হয় না। 

বাংলাদেশে পুরুষদের প্রকাশ্যে প্রস্রাব করা নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিওতে ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান তো বলেই দিয়েছেন, “আমি বুঝি না, মসজিদ থাকতে মানুষ কেন রাস্তায় প্রসাব করে!” ("I don't understand why people urinate by the roadsides. Especially when every mosque provides public toilet facilities,") এমতাবস্থায় বাংলাদেশের এইসব পুরুষদের প্রকাশ্যে মূত্র বিসর্জন থেকে নিরুৎসাহিত করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যুগান্তকারী এক সমাধান এসেছে। 

বাংলাদেশের মানুষ ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বউ না থাকলে বা বউয়ের অগোচরে সুযোগ পেলে কাজের মহিলাপ্রীতি প্রভৃতিতে সিদ্ধহস্ত হলেও তারা মাশাল্লাহ ধার্মিক আছে। বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান, তাই প্রকাশ্যে প্রস্রাব করা বন্ধ করতে এবার ধর্ম মন্ত্রণালয় নিয়ে এসেছে এক ব্রহ্মাস্ত্র, যার নাম পবিত্র আরবি লেখা। প্রস্রাব করার সম্ভাবিলিটি রয়েছে, এমন স্থানগুলোয় আরবি হরফে প্রস্রাব না করার নির্দেশনা থাকলে পবিত্র মনে করেই ধর্মপ্রাণ পুরুষরা ঐ স্থানে প্রস্রাব করা থেকে বিরত থাকবে।


তবে পবিত্র কোরআনের ভাষা নিয়ে এই ধরনের কাজকে তামাশা বলে পরিত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম ইসলাম বিশেষজ্ঞ ফরিদ উদ্দিন মাসাউদ। তিনি বলেছেন, কোরআনের ভাষা নিয়ে এই ধরনের ক্যাম্পেইন করার কোনো অধিকার নেই। ("Nobody has the right to use the language of the Koran for such a campaign,") তবে ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে আনোয়ার হোসেন এএফপিকে জানান, আরবিকে অসম্মান করতে নয়, বরং বাংলাদেশীরা আরবিকে সম্মান করে বলেই আমরা তা কাজে লাগিয়েছি মাত্র। ("Bangladeshi people respect Arabic and we've just utilized that.")


এদিকে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো বাংলাদেশের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারকে হাইলাইট করছে বিভিন্নভাবে। এএফপি, বিজনেস ইনসাইডার, সৌদি গেজেট, ব্যাংকক পোষ্টসহ বেশকিছু পত্রিকা শিরোনাম করেছে - Bangladesh uses 'sacred Arabic' to stop peeing in public. আর টি নিউজ শিরোনাম করেছে - Bangladesh uses Arabic to stop public urination।


গত মঙ্গলবার এএফপির সাংবাদিক দ্বারা তোলা বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায়, আরবিতে লেখা রয়েছে “এখানে প্রস্রাব করিবেন না” তারপর বাংলায় লেখা আছে, এখান থেকে ২০০ গজ সামনে রয়েছে মসজিদ আর ১০০ গজ সামনে পাবলিক টয়লেট। অর্থাৎ আপনি মসজিদ বা পাবলিক টয়লেট যে কোনো একটি বেছে নিতে পারেন। 

এবার দেখা যাক, পবিত্র আল্লাহার ভাষা কোরআন প্রকাশ্যে পুরুষের মূত্র বিসর্জন বন্ধে কতোটা ভূমিকা রাখতে পারে। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন