আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫

উফ্! এতো কষ্ট রাখি কোথায়!

লিখেছেন পৃথু স্যান্যাল

আমি জঙ্গিদের জন্য কোন কষ্ট পাই না, নাস্তিকদের জন্যও আমার কোনো আফসোস হয় না। আমার খুব বেশি কষ্ট হয় মুসলিম মডারেটদের জন্য। এদের অবস্থা দেখে সত্যিই আমি খুব আহত, মর্মাহত। 

এরা না পারছে ধর্মের সকল কিছুকে সমর্থন দিতে, না পারছে ধর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে। এরা জঙ্গিদের কার্যকলাপে সমর্থন দিতে পারে না, লজ্জা পায়। লজ্জা পেয়ে বলে, ইসলাম জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। কিন্তু এও অস্বীকার করতে পারে না যে, কোরানেই আছে অস্ত্র দিয়ে হলেও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এদের সামনে যখন কোরান-হাদিসের রেফারেন্স টেনে মোহাম্মদের জীবনে করা যুদ্ধগুলোর কথা বলা হয়, তখন তোতলাতে তোতলাতে বলে যে, মোহাম্মদ বাধ্য হয়েই আল্লাহর নির্দেশে এই যুদ্ধগুলো করেছে, কিন্তু ইসলাম যুদ্ধ সমর্থন করে না। যখন এদেরকে প্রমাণ দেয়া হয় যে, মোহাম্মদ কোরাইশদের সাথে প্রথম যুদ্ধটা করেছিলো আবু সুফিয়ানের কাফেলা লুট করার জন্য, ইসলামের জন্য না। তখন অপমানে কালো হয়ে যাওয়া, লজ্জায় নিচু হয়ে যাওয়া মডারেট মুসলমানের মুখটা দেখে সত্যি মায়া হয়, খুব মায়া হয়। আহারে বেচারার দল! না পারতেছে ইসলামকে বাদ দিয়ে সভ্য সমাজে প্রবেশ করতে, না পারতেছে ইসলামকে পুরোপুরি ধারণ করতে। কেউ এমন ফাটা বাঁশের মাঝখানে থাকলে তার জন্য মায়া না হয়ে কি আর পারে! 

মডারেট মুসলমানগণ এহেন ফাটা বাঁশের চিপায় পড়ে কোনো কিছু না বুঝে অথবা বুঝেও না বোঝার ভান করে সারাদিন ভাঙা রেকর্ডের মত বলতেই থাকে, বলতেই থাকে, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম শান্তির ধর্ম। তারা আমতা আমতা করে বলে, ব্লগার কিংবা যে কোনো হত্যাকে ইসলাম সমর্থন করে না, কিন্তু ধর্মকে কটাক্ষ করেও ব্লগারদের লেখা ঠিক না। যখন বলা হয়, তাই বলে কি হত্যা করতে হবে, তখন তারা জঙ্গিদের যহীহ (সহীহ-র বিপরীত) মুসলমান বলে ডিফেন্ড করে। আমার খুব কষ্ট হয়, যখন এদের দেখি এরা ধর্মের জন্য লজ্জা পায়, এরা নিজেদেরকে সভ্য বলে দাবি করে, কিন্তু ইসলামের বর্বরতার জন্য, সভ্য সমাজে বাস করার জন্য একদলকে সহীহ মুসলমান নয় বলে বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়। আহারে ইসলাম! আহারে মোহাম্মদ!! আহারে মডারেট মুসলমান!

মডারেটদের জন্য কষ্ট আরো বেড়ে যায়, যখন দেখি - ইসলাম ধর্মে কোনোভাবেই সমর্থন করে না কিন্তু সভ্য সমাজে স্বীকৃত এমন বিষয়গুলোর পক্ষে কথা বলতে তারা বাধ্য হয়। যখন কোনো মডারেটকে বলতে শুনি, মুখে মুখে তালাক দেয়া ঠিক নয়, তালাকের জন্য আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত। যখন মডারেট মুসলমানগণ বলতে বাধ্য হয় যে, একাধিক বিয়ে লজ্জাজনক একটি বিষয়, দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে, সত্যি বলছি, মডারেটদের এই অবস্থা দেখে আমার কান্না চলে আসে। কেন যে এরা সভ্যতার ছোঁয়া পেলো, আর কেনই বা মুসলমান পরিবারে জন্ম নিলো! বড়োই কষ্টের বিষয়। মডারেটগণ ইসলামে থাকার পরও, নবীর সুন্নত হবার পরও জোর গলায় বলতে পারছে না, একাধিক বিয়েতে কোনো সমস্যা নেই, তালাক-ফালাক একান্ত স্বামীর ব্যক্তিগত অধিকারের বিষয়, আইন বলতে শরিয়া আইনই আসল। 

আমি নাস্তিকদের জন্য কোনো দুঃখ পাই না। এরা অন্তত যা চিন্তা করছে, যা ভাবছে, বলে ফেলতে পারছে। অন্তরে যা আছে, মুখেও তা প্রকাশ করে দিতে পারছে। কিন্তু মডারেটরা দেখেন, কী এক অন্তর্জ্বালায় পুড়ে মরছে প্রতিনিয়ত। তারা মনে মনে ইসলামকে সমর্থন করে, ইসলামের জন্য মনে মনে সব কিছু করতে প্রস্তুত। নবীর সুন্নত পালন করে বেহেস্তে যাবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু মোহাম্মদের সকল সুন্নত পালন করতে পারছে না, সভ্য সমাজে পশ্চাৎপদ, বর্বর হিসেবে বিবেচিত হয়ে যাবার ভয়ে। 

মডারেট মুসলমানেরা কতই না সমস্যায় আছে তাদের ইসলাম নিয়ে, তাদের মুসলমান পরিচয় নিয়ে! তারা তাদের মুসলমান পরিচয়ের জন্য গর্ববোধ করলেও সভ্য সমাজে সরাসরি মুসলমান পরিচয় নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পায়, তারা মুসলমান শব্দের আগে মডারেট নামক আরেকটা শব্দ যোগ করেতে বাধ্য হয়েছে। এ যেন ময়ূরের পুচ্ছ লাগিয়ে সুন্দর হবার জন্য কাকের নিরন্তর প্রচেষ্টা। যখন কোনো জাতি লজ্জায়, অপমানে নিজেদের পরিচয় পরিবর্তন করে ফেলতে বাধ্য হয়, আর তাদের জন্য যদি আপনার কষ্ট না হয়, তাহলে আপনাকেও অমানুষের দলে ফেলে দেয়া উচিত! 

উফ্! এত কষ্ট রাখি কোথায়?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন