আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

লওহে মাহফুজের সন্ধানে: ক্যাটম্যান সিরিজ - ১১

লিখেছেন ক্যাটম্যান

মুক্তচিন্তা চর্চা, প্রচার ও প্রসারের কারণে ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর নৃশংস হামলার শিকার হুমায়ুন আজাদ, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় ও ফয়সল আরেফিন দীপন সহ নিহত ও আহত সকল মুক্তচিন্তকের স্মরণে এই লেখাটি অপরিমেয় ভালোবাসার স্মারক স্বরূপ নিবেদন করছি।


বাইবেল ও আল-কুরআনে বর্ণিত ওপরোক্ত ঘটনায় আমরা দেখতে পাই যে, উভয় ধর্মগ্রন্থেই ঈশ্বর মূসার বিপথগামী অনুসারীদেরকে শাস্তির হুমকি প্রদান করেছেন। ইস্রায়েলের জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঐশ্বরিক ভীতিপ্রদর্শন বা শাস্তির হুমকি প্রদান নতুন কোনো ঘটনা নয়। মূসা তার ঐশী পরিকল্পনার প্রথম থেকেই চরম ভীতিপ্রদ ঈশ্বরের কল্পিত ভাবমূর্তিকে সুচারুভাবে ব্যবহার করেছেন। যদিও তার তেমন প্রয়াস প্রায়শ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কিন্তু ভীতিপ্রদর্শনমূলক পন্থা ব্যতিরেকে মূসার পক্ষে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর সহজসাধ্য কোনো বিকল্প পন্থা জানা ছিল না। তাই অমূলক ভীতিপ্রদর্শনকেই মোক্ষম হাতিয়ার হিসাবে গ্রহণ করেছেন তিনি। 

তাছাড়া লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের ধর্মের ন্যায় সেমেটিক ধর্মসমূহের প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার মূল উপকরণ হলো ভয়। ধর্মের প্রয়োজনে ভয়কে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে চর্চা করা হয়েছে, যেমন - ঈশ্বর ভীতি, পাপের ভয় ও ঈশ্বর প্রদত্ত শাস্তির ভয় ইত্যাদি। অর্থাৎ ধর্মসমূহের নিকট ঈশ্বরের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভয়। তাই ঘুরেফিরে শুধু ভয়-বন্দনার তাগিদ প্রদান করা হয়েছে। মূসার প্রবর্তিত ইহুদি ধর্মও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই মূসার সম্প্রদায় যখন বাছুরের মূর্তি নির্মাণ করে তার পূজায় লিপ্ত হয়, তখন তাদেরকে সে পথ থেকে ফেরাতে ঈশ্বর প্রদত্ত শাস্তির ভয় দেখানো হয়েছে; যেন তারা ঈশ্বরের শাস্তির ভয়ে মূর্তিপূজা থেকে বিরত থাকে। আর মূসার পরমেশ্বরও চাইতেন ইস্রায়েলের জনগণ যেন তাকে ভয় করতে শেখে। এ বিষয়ে বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে:
সেই দিনটির কথা স্মরণ কর, যেদিন তুমি হোরেবে তোমার পরমেশ্বর প্রভুর সাক্ষাতে দাঁড়িয়েছিলে; সেদিন প্রভু আমাকে বলেছিলেন: তুমি আমার কাছে জনগণকে একত্রে সমবেত কর, আমি আমার বাণীগুলো তাদের শোনাব, তারা পৃথিবীতে যতদিন জীবিত থাকে, ততদিন যেন আমাকে ভয় করতে শেখে ও তাদের সন্তানদেরও সেই বাণী শেখায়। [দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১০]
আর মূসার জনগণকে পরমেশ্বর কেন তার নিজের প্রতি অমূলক ভয় পোষণের তাগিদ প্রদান করেছেন, সেই বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন স্বয়ং মূসা। বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে:
গোটা জনগণ সেই বজ্রনাদ, বিদ্যুৎ-ঝলক, তুরিধ্বনি ও ধূমময় পর্বত দেখতে পাচ্ছিল। তা দেখে জনগণ সন্ত্রাসিত হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল। তারা মোশীকে বলল, 'তুমিই বরং আমাদের সঙ্গে কথা বল, আমরা শুনব; কিন্তু পরমেশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন, নইলে আমরা মারা পড়ব।' মোশী তাদের বললেন, ভয় করো না, কারণ পরমেশ্বর তোমাদের যাচাই করতে এসেছেন, যেন তাঁর ভয় সবসময়ই তোমাদের সামনে থাকলে তা পাপ থেকে তোমাদের দূরে রাখে। [যাত্রাপুস্তক ২০:১৮-২০]
উক্ত বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পারি, মূসা তার জনগণের মাঝে এতটা মাত্রায় ভীতিসঞ্চারে সফল হন যে, নিজ জণগণের মানসিক সুস্থিরতা ফেরাতে তাকে তাদের প্রতি অভয় দান করতে হয়েছে। তারা যেন বিপথগামী হয়ে না পড়েন অর্থাৎ মূসার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে পাপ না করে ফেলেন, সেজন্য ঈশ্বরভীতিকে জুজুর মত ব্যবহার করেছেন তিনি। তাদের ঈশ্বরভীতির বাস্তবিক কোনো ভিত্তি নেই; বিধায় অতিশয় ভীতিগ্রস্ত না হয়ে তারা যেন মানসিক সুস্থিরতা বোধ করেন। এভাবে মূসা ভয়কে পুঁজি করে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের প্রয়াস চালান। আর সেই কারণেই নানাবিধ অমূলক ভয়ের চাষবাস পুরো হিব্রু বাইবেল জুড়ে লক্ষণীয় স্থান দখল করে আছে।

ইস্রায়েলের জনগণের ওপর ক্রোধান্বিত হয়ে মূসা তার পরমেশ্বরের নিকট থেকে প্রাপ্ত প্রস্তর ফলকদুটি ভেঙে ফেললেও মূসার পরমেশ্বর মূসাকে প্রথম দুটির অনুরূপ একই আজ্ঞা বিশিষ্ট আরও দুটি প্রস্তরফলক প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। কিন্তু মুহম্মদের কুরআনে মূসাকে পুনরায় দুটি প্রস্তরফলক প্রদানের কথা ব্যক্ত না করে প্রথম দুটি প্রস্তরফলক যা মূসা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন সেটাকেই কুড়িয়ে নেয়ার বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন:
তারপর মূসার ক্রোধ প্রশমিত হলে সে ফলকগুলি উঠিয়ে নিল। যারা নিজেদের রবকে ভয় করে তাদের জন্য ঐ সব ফলকে ছিল পথনির্দেশ ও রহমত। [সূরা আল আরাফ: ১৫৪ আয়াত]
কিন্তু বাইবেলের বর্ণনায় পরমেশ্বর মূসাকে পুনরায় একই আজ্ঞা বিশিষ্ট দুটি প্রস্তরফলক প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করায় প্রমাণ হয় যে, মূসার পরমেশ্বর ও মুহম্মদের আল্লাহ এক সত্তা নন। যদি তারা একই সত্তা হতেন, তাহলে তাদের উভয়ের বর্ণনা সামঞ্জস্যপূর্ণ হত। মূলত মূসার ঘটনাসমূহ বাইবেল থেকে চুরি করে কুরআনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন মুহম্মদ; সেহেতু বর্ণনার ক্ষেত্রে অনবধানতাবশত বেশ কিছু অসামঞ্জস্য এড়াতে পারেননি। এ বিষয়ে বাইবেলের বর্ণনায় বলা হয়েছে:
প্রভু মোশীকে বললেন, 'আগেকার মত দু’টো প্রস্তরফলক কেটে নাও; প্রথম যে ফলক দু'টো তুমি ভেঙে ফেলেছ, সেগুলোতে যা কিছু লেখা ছিল, সেই সকল কথা আমি এই দু'টো ফলকে লিখব। তুমি কাল সকালে প্রস্তুত হও: কাল সকালে সিনাই পর্বতে উঠে এসো, এবং সেখানে, পর্বতচূড়ায়, আমার জন্য অপেক্ষা করে থাক। কিন্তু তোমার সঙ্গে কেউই যেন উপরে না আসে, এই পর্বতের কোন জায়গায়ও কেউ যেন না থাকে, কোন গবাদি পশু বা মেষের পালও যেন এই পর্বতের সামনে না চরে।' তাই মোশী দু’টো প্রস্তরফলক কেটে নিলেন যা প্রথম প্রস্তরগুলোর মত, এবং প্রভুর আজ্ঞামত সকালে উঠে সিনাই পর্বতের উপরে গেলেন, তাঁর হাতে ছিল সেই প্রস্তরফলক দু'টো। [যাত্রাপুস্তক ৩৪: ১-৪]
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন