আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ১ মে, ২০১৬

'বিশ্বাস'-এর বিবিধ অর্থ

লিখেছেন ইত্তিলা ইতু

‘বিশ্বাস’ বড়ই অদ্ভুত একটি শব্দ। আসুন, ‘বিশ্বাস’ শব্দটি নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করা যাক।

বিশ্বাস শব্দটি সেখানেই ব্যবহার করা হয়, যেখানে সন্দেহ থাকে। একটা উদাহরণ দিই: পূর্ণিমায় চাঁদ ওঠে, আমরা সেটা জানি, আমরা সেটা দেখি। তাই আমরা কখনো বলব না যে, আমি বিশ্বাস করি পূর্ণিমায় চাঁদ ওঠে। আবার ধরুন, আপনি ডাক্তারের কাছে গেলেন, আপনি জানেন না, ডাক্তার আপনার রোগ ভাল করতে পারবে কি না, আপনি জানেন না, সে আপনাকে ভুল চিকিৎসা দেবে কি না, কিন্তু আপনি বিশ্বাস করেন যে, ডাক্তার আপনাকে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলবে। ডাক্তারের চিকিৎসায় আপনি সুস্থ না-ও হতে পারেন । আবার আপনি পুরোপুরি সুস্থও হয়ে যেতে পারেন। আপনি যেহেতু জানেন না কী হবে, তাই আপনি বিশ্বাস করেন। এই অজ্ঞতা থেকেই বিশ্বাসের সৃষ্টি।

আদিম যুগের মানুষ জানত না অনেক কিছু, তারা জানত না কেন চাঁদ ওঠে, কেন সূর্য ওঠে, তাদের অজ্ঞতার কারণে তারা অনেক বিশ্বাস নিজেদের মধ্যে লালন করত। প্রাচীন গ্রিসের লোকেরা বিশ্বাস করত, পৃথিবী চালান দেবতারা, আর তাদের কর্তা হল জিউস, তিনি পৃথিবীতে পাঠান বিজলির ঝলক। প্রাচীন গ্রিক কাহিনীর মতোই পুরানো ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ন আর মহাভারতের কাহিনীগুলো। এসব কাহিনীতে বলা হয়েছে, আকাশে বাস করেন দেবতা আর অসুররা। এই দেবতারা কেউ চালান সূর্যকে, কেউ সৃষ্টি করেন ঝড়-বৃষ্টি। কখনো দেবতা আর অসুরদের মধ্যে বেধে যায় দারুণ লড়াই।

কিন্তু কেবল বিশ্বাস নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না, জীবিকার প্রয়োজনে এবং মানুষের নিরন্তর সহজাত কৌতূহলের তাগিদে গ্রহ-নক্ষত্র-তারা কেন হয়, কীভাবে হয়, এর উত্তর খুঁজতে থাকে। তারা অজানাকে জয় করতে থাকে। আর তারই ফল হল আজকের সভ্যতা। বিজ্ঞান প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলছে। বিজ্ঞান এত দিন ধরে যা কিছু আবিস্কার করেছে, প্রতি ৮ বছরে তার দ্বিগুণ এগিয়ে যাচ্ছে। আদিম যুগে মানুষ অজানাকে বিশ্বাসের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দিত। আমরা পেছনের যুগ ফেলে মহাশূন্যের জগতে প্রবেশ করেছি বটে, কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো শিক্ষার আলো, বিজ্ঞানের ছোঁয়া প্রবেশ করতে পারেনি বলে আমরা এখনো নিজেদের অজ্ঞতাকে বিশ্বাসের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে রাখতে ভালবাসি। আর এই বিশ্বাসগুলো আমাদের অবচেতন মনে এমনভাবে গেঁথে গেছে যে, আমরা চোখ খুলে সত্যকে দেখতে চাই না।

‘সেটার নাম বিশ্বাস, কারণ সেটা জ্ঞান নয়’- ক্রিস্টোফার হিচেন্স।

বিশ্বাসের প্রয়োজন একেবারেই নেই, তা বলছি না। যেক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নেই, সেক্ষেত্রে বিশ্বাসই আমাদের সম্বল। যেমন, ডাক্তারের ক্ষেত্রে। ডাক্তারের ওপর বিশ্বাস রাখলে রোগীর আরোগ্য লাভ ঘটে। আমি যেই কাজটা করব ভাবছি, কাজটিতে আমি সফল নাও হতে পারি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আমি কাজটি সফলভাবে শেষ করব। এই বিশ্বাস আমাকে উৎসাহ যোগাবে কাজটি করতে। এই ক্ষেত্রে বিশ্বাসের দরকার আছে বটে। তবে মনে রাখতে হবে, এখানে বিশ্বাস অর্থ আস্থা বা কনফিডেন্স - ফেইথ বা অন্ধবিশ্বাস নয়।

কিন্তু পূর্বপুরষ বিশ্বাস করত, তাই সেই বিশ্বাস নিয়ে আমাকেও থাকতে হবে, তারা অজ্ঞ ছিল বলে আমাকেও চোখ বন্ধ করে অজ্ঞ থাকতে হবে, তাদের পথের অনুসারী হতে হবে, এমন বিশ্বাস ঠিক নয়। সত্যকে অস্বীকার করে যে-বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখতে হয়, সেই বিশ্বাস অপ্রয়োজনীয় বিশ্বাস। সেই বিশ্বাস আমাদের অজ্ঞ করবে, আমাদের পিছনের দিকে ঠেলে দেবে। আমাদেরকে অন্ধকারে রাখবে, এমন বিশ্বাস কি আমাদের আদৌ প্রয়োজন আছে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন