আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬

বিগ ব্যাং সম্পর্কে জাকির নায়েকের মিথ্যাচার (নাকি অজ্ঞতা?) - ৪

লিখেছেন মানবিক মানব


বোঝার সুবিধের জন্য সুরা ফসিলতের কয়েকটি আয়াত তুলে ধরছি:
বলুন, তোমরা কি সে সত্ত্বাকে অস্বিকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুদিনে এবং তোমরা কি তার সমকক্ষ স্থির কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা। তিনি পৃথিবীর উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন - পূর্ণ হলো জিজ্ঞাসুদের জন্যে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রপুঞ্জ, অতপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা আসলাম স্বেচ্ছায়। অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু'দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রম শালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থা।(সুরা ফসিলত: ০৯-১২)
এখানে (৯ নাম্বার আয়াতে) বোঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ মুহাম্মদ (সঃ)-কে আদেশ দিয়েছে, সে যেন অবিশ্বাসীদেরকে বলে যে, তোমরা সেই সত্তাকে অস্বীকার কর, যিনি দু'দিনে পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছে। অর্থাৎ আল্লাহ দু'দিনে (আল্লাহর হিসেবে) পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছে, যেটা মানুষের হিসেবে দু'টি দশ হাজার বছর বা দু'টি পঞ্চাশ হাজার বছর অথবা দুটি নির্দিষ্ট সময়কাল।

আবার ১০ নাম্বার আয়াতে বলেছেন যে, আল্লাহ পৃথিবীর উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছে এবং তাতে খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে, যা করতে আল্লাহর সময় লেগেছে আল্লাহর হিসেবে চার দিন, যা মানুষের হিসেবে চারটি দশ হাজার বছর বা চারটি পঞ্চাশ হাজার বছর অথবা চারটি নির্দিষ্ট সময়কাল।

আবার ১১ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী, অতঃপর আল্লাহ আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন, সেটা ছিল ধোঁয়া বা বায়বীয়; তাকে এবং পৃথিবীকে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় পৃথক হতে বললেন (সুরা আল আম্বিয়ার ৩০ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী), এবং তারা আল্লাহর আদেশ পালন করলো।

আয়াত ১২ অনুযায়ী, অতঃপর আল্লাহ আকাশমণ্ডলীকে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং সবচেয়ে নিচের আকাশকে প্রদীপমালা অর্থাৎ তারকারাজি দিয়ে সুশোভিত ও সংরক্ষিত করলেন, যা করতে আল্লাহর সময় লাগলো দু'দিন, যা মানুষের হিসেবে দু'টি দশ হাজার বছর বা দু'টি পঞ্চাশ হাজার বছর অথবা দু'টি নির্দিষ্ট সময়কাল।

এই আয়াতগুলো থেকে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছে একটা নির্দিষ্ট সময়ে, তারপর পৃথিবীতে পাহাড় তৈরি করেছে এবং প্রাণীর বসবাস উপযোগী করেছে। তারপর তিনি পৃথিবীকে এবং আকাশকে পৃথক করেছে এবং আকাশকে সপ্ত আকাশ হিসেবে তৈরি করেছে এবং সবশেষে আকাশে তারকারাজি সৃষ্টি করেছে।

অনেক অনুবাদে অতঃপর-এর (আরবিটা মনে পড়ছে না) অর্থ করা হয়েছে তারপর। কিন্তু কিছু মুসলিম বলে, এর অর্থ হবে - সাথে সাথে। তাহলে আয়াতগুলোর অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেছে একটা নির্দিষ্ট সময়ে এবং পৃথিবীতে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছে ও একে প্রাণীর বসবাস উপযোগী করেছে আরেকটা নির্দিষ্ট সময়ে এবং আকাশ যা ছিল ধোঁয়া বা বায়বীয়, সেটাকে এবং পৃথিবীকে পৃথক করেছে। সাথে সাথে আল্লাহ আকাশমণ্ডলীকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে সাত আসমান সৃষ্টি করলো এবং সবচেয়ে নিচের আকাশে তারকারাজি সৃষ্টি করে সুন্দর করে সাজালো। সংক্ষেপে, "পৃথিবী সৃষ্টি –> (পাহাড় সৃষ্টি ও বসবাস উপযোগী করা + সাত আকাশ সৃষ্টি করা ও তারকা সৃষ্টি করা)।"

কোরআনের অন্য কয়েকটি আয়াত অনুযায়ী, মহাবিশ্ব তৈরি হতে সময় লেগেছে আল্লাহর হিসেবে মোট ছয় দিন, যেটা মানুষের হিসেবে ছয়টি দশ হাজার বছর বা ছয়টি পঞ্চাশ হাজার বছর অথবা ছয়টি নির্দিষ্ট সময়কাল। এখন প্রশ্ন হলো, এই আয়াতগুলো অনুযায়ী আল্লাহ দু'দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করলো। তারপর পৃথিবীতে পাহাড় সৃষ্টি করেছে ও পৃথিবীকে প্রাণীর বসবাসের উপযুগী করেছে চারদিনে। সাথে সাথে আকাশ, যা ছিল ধুম্রপুঞ্জ, সেটাকে পৃথিবী থেকে আলাদা করলো এবং আকাশকে সপ্ত আকাশ করে দিলো এবং তারকারাজি সৃষ্টি করলো। ফলে আল্লাহর ছয় দিন পূর্ণ হলো। তাহলে দাঁড়ালো আল্লাহ যে সময়ে পৃথিবী সৃষ্টি করেছে তারপরে পৃথিবী থেকে আকাশ পৃথক করেছে এবং তাকে সপ্ত আকাশ করেছে এবং তারকারাজি সৃষ্টি করেছে।

অর্থাৎ পৃথিবীকে আগে তৈরি করা হয়েছে। পরে আকাশকে পৃথিবী থেকে পৃথক করা হয়েছে। আকাশকে সপ্ত আকাশ তৈরি করা হয়েছে এবং তারকারাজি সৃষ্টি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, পৃথিবী তৈরি করা হয়েছে প্রথমে, তারপর তারকারাজি সৃষ্টি করা হয়েছে - যা বিগ ব্যাং থিওরির সম্পূর্ণ বিরোধী। কিন্তু জাকির নায়েক এই সুরার ১১ নাম্বার আয়াত ছাড়া সবগুলো আয়াত বাদ দিয়ে বিগ ব্যাং থিওরির সাথে কুরআনকে মেলাতে গিয়ে চরম মিথ্যাচার করেছে! যেখানে কোরান বিগ বাং থিওরির সরাসরি বিরোধিতা করছে, সেটাকে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে কী ভয়ঙ্কর মিথ্যাচারিতাই না সে করেছে!

আর এটা যে সে ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার বানাতেই করেছে, তা নিশ্চয়ই কারো বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। কারণ সে সম্পূর্ণ আয়াত না বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। মিথ্যাচার করা আর যা-ই হোক, সততা হতে পারে না। ধোঁকাবাজি সবসময়ই খারাপ। আর এতক্ষণে নিশ্চয়ই প্রমাণ হয়ে গেছে যে, মুসলমানদের বিখ্যাত (অ)বিজ্ঞানী জাকির নায়েক একজন বিশিষ্ট ও সম্মানীয় ইসলামী ভণ্ড।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন