আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৮ জুন, ২০১৬

লওহে মাহফুজের সন্ধানে: ক্যাটম্যান সিরিজ - ২৪

লিখেছেন ক্যাটম্যান

মুক্তচিন্তা চর্চা, প্রচার ও প্রসারের কারণে ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর নৃশংস হামলার শিকার হুমায়ুন আজাদ, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়, ফয়সল আরেফিন দীপন ও নাজিমুদ্দিন সামাদ সহ নিহত ও আহত সকল মুক্তচিন্তকের স্মরণে এই লেখাটি অপরিমেয় ভালোবাসার স্মারক স্বরূপ নিবেদন করছি।


তবে ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষদর্শন বিষয়ে আমরা শুধু মুহম্মদের আল্লাহকে স্ববিরোধী ভূমিকায় দেখতে পাই, বিষয়টি এমন নয়। মুহম্মদের আল্লাহ’র ন্যায় মূসার পরমেশ্বরকেও আমরা স্ববিরোধী ভূমিকায় দেখতে পাই। যে কারণে বাইবেলে মূসার পরমেশ্বরকে মারাত্মকদর্শন ও অসম্ভবদর্শন ঘোষণা করা সত্ত্বেও ইস্রায়েলের জনগণকে সেই মারাত্মকদর্শন ও অসম্ভবদর্শন পরমেশ্বরের শ্রীমুখ দর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বাইবেলে একাধিক বর্ণনা বিদ্যমান। যেমন:
তুমি বছরে তিনবার আমার উদ্দেশে উৎসব করবে। খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন করবে; আবীব মাসে নির্ধারিত সময়ে তুমি সাত দিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খাবে, যেমনটি তোমাকে আজ্ঞা করেছি; কেননা সেই আবীব মাসেই তুমি মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে। কেউই যেন খালি হাতে আমার শ্রীমুখদর্শন করতে না আসে। [যাত্রাপুস্তক ২৩: ১৪-১৫]
বছরে তিনবার তোমার সমস্ত পুরুষলোক প্রভু পরমেশ্বরের শ্রীমুখদর্শন করতে হাজির হবে। [যাত্রাপুস্তক ২৩: ১৭]
তোমার প্রত্যেক পুরুষ বছরে তিনবার করে তোমার পরমেশ্বর প্রভুর শ্রীমুখদর্শন করতে তাঁর বেছে নেওয়া স্থানে যাবে, তথা: খামিরবিহীন রুটির পর্বে, সাত সপ্তাহের পর্বে ও পর্ণকুটির পর্বে; কেউই খালি হাতে প্রভুর শ্রীমুখদর্শন করতে যাবে না। [দ্বিতীয় বিবরণ ১৬: ১৬]
যখন গোটা ইস্রায়েল তোমার পরমেশ্বর প্রভুর বেছে নেওয়া স্থানে তাঁর শ্রীমুখদর্শন করতে যাবে, সেসময় তুমি গোটা ইস্রায়েলের সামনে সকলেরই কাছে এই বিধান পাঠ করে শোনাবে। [দ্বিতীয় বিবরণ ৩১: ১১]
উপর্যুক্ত বর্ণনাসমূহে ইস্রায়েলের জনগণকে কেন মূসার পরমেশ্বরের অসম্ভবদর্শন-শ্রীমুখ দর্শনের স্ববিরোধী আহ্বান জানানো হয়েছে, তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা সুচতুর বাইবেলবোদ্ধা তো দূরে থাক, স্বয়ং মূসা ও তার পরমেশ্বরেরও জানা নেই। তবে সমস্ত স্ববিরোধী বর্ণনা সত্ত্বেও ইতিপূর্বে আলোচিত বিষয়ের প্রেক্ষিতে দু'টি বিষয় প্রমাণিত যে, ইস্রায়েলের জনগণের সমক্ষে মূসার পরমেশ্বর নিজেকে স্বরূপে উপস্থাপন করতে যেমন অক্ষম, তেমনি মূসাও তার স্বকপোলকল্পিত পরমেশ্বরকে ইস্রায়েলের জনগণের সমক্ষে প্রত্যক্ষরূপে প্রদর্শন করতে অপারগ। আর সেই অপারগতার দায় সুকৌশলে নিজের ও ইস্রায়েলের জনগণের মানবীয় সীমাবদ্ধতার ওপর চাপিয়ে দিয়ে অসম্ভবদর্শন এক কল্পিত পরমেশ্বরের অতিরঞ্জিত গল্প প্রচার করেছেন মূসা। আর সেই সুবাদে স্বকপোলকল্পিত পরমেশ্বরকে প্রত্যক্ষরূপে প্রদর্শনের ভারমুক্ত মূসার জন্যে ইস্রায়েলের জনগণের সম্মুখে নতুন এক ঐশী নাটক মঞ্চায়নের সুযোগ অবারিত হয়।

ইস্রায়েলের জনগণের মাঝে মারাত্মকদর্শন ও অসম্ভবদর্শন এক পরমেশ্বরের ধারণা প্রচার ও প্রতিষ্ঠার পর মূসা তার কল্পিত পরমেশ্বরকে এই মর্মে আশ্বস্ত করেন যে, তার সাথে সাক্ষাৎ ব্যপদেশে পরমেশ্বরকে আর কখনও ইস্রায়েলি শিবির হতে দূরবর্তী পর্বতচূড়ায় অবতরণ করতে হবে না। কারণ ইতিমধ্যে মূসা ইস্রায়েলের জনগণকে দর্শনাতীত এক পরমেশ্বরের ধারণায় দীক্ষিত করেছেন; বিধায় তাদের নিকট স্বকপোলকল্পিত পরমেশ্বরের অনুপস্থিতি আড়াল করতে ইস্রায়েলি শিবির হতে দূরবর্তী পর্বতচূড়ায় ঐশী সাক্ষাৎ-নাটক মঞ্চায়নের কোনো প্রয়োজন নেই। বরং মূসা এখন থেকে ইস্রায়েলি শিবিরে অবস্থান করেই স্বকপোলকল্পিত পরমেশ্বরের সাথে সাক্ষাতের ঐশী নাটক নির্ঝঞ্ঝাটে মঞ্চায়ন করতে সক্ষম। তাই এখন থেকে পরমেশ্বর নির্দ্বিধায় ও নির্ভয়ে ইস্রায়েলি শিবিরে উপস্থিত হয়ে মূসার সাথে সাক্ষাতে মিলিত হতে পারবেন। শুধু তাই নয়, তিনি ইচ্ছা করলে ইস্রায়েল সন্তানদের মাঝে বসবাসও করতে পারবেন। উক্ত আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে মূসার আজ্ঞাবহ পরমেশ্বর মূসার অভিপ্রায় অনুসরণ করে নিম্নে বর্ণিত বাণীসমূহ প্রসব করেছেন। যেমন:
প্রভু মোশীকে বললেন, ‘ইস্রায়েল সন্তানদের বল, যেন তারা আমার জন্য একটা অবদান আলাদা করে রাখে; হৃদয়ের ইচ্ছায় যে নিবেদন করে, তার কাছ থেকেই তোমরা আমার জন্য সেই অবদান গ্রহণ করে নেবে। তাদের কাছ থেকে তোমরা যা গ্রহণ করে নেবে, তা এ: সোনা, রুপো ও ব্রঞ্জ; নীল, বেগুনি ও সিঁদুরে-লাল সুতো, এবং শুভ্র ক্ষোম-সুতো ও ছাগলোম; রক্তলাল করা ভেড়ার চামড়া, সিন্ধুঘোটকের চামড়া ও বাবলা কাঠ; দীপাধারের জন্য তেল, এবং অভিষেকের জন্য তেলের ও সুগন্ধি ধূপের জন্য গন্ধদ্রব্য; এফোদ ও বুকপাটার জন্য গোমেদক মণি ইত্যাদি পাথর, যা খচিত হবে। তারা আমার জন্য একটা পবিত্রধাম নির্মাণ করবে যেন আমি তাদের মাঝে বসবাস করতে পারি। আবাসের ও তার সমস্ত দ্রব্যের যে নমুনা আমি তোমাকে দেখাব, সেই অনুসারেই তোমরা সবই করবে।’ [যাত্রাপুস্তক ২৫: ১-৯]
উপর্যুক্ত বর্ণনায় আমরা দেখতে পাই, পরমেশ্বর মূসাকে তার সম্প্রদায়ের নিকট হতে কতিপয় উপচার সংগ্রহ করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং প্রভুর জন্যে তাদেরকে একটি পবিত্রধাম নির্মাণ করতে বলেছেন, যেন তাকে ইস্রায়েল সন্তানদের নৈকট্যবঞ্চিত হয়ে দূরে অবস্থান করতে না হয়। বরং তিনি যেন এখন থেকে তাদের মাঝেই বসবাস করতে পারেন। অথচ এই একই পরমেশ্বর এতদিন কিনা ইস্রায়েলের জনগণের ভয়ে ভীত হয়ে ইস্রায়েলি শিবির হতে দূরে অবস্থান করতেন। মূসার সাথে সাক্ষাৎ ব্যপদেশে চরম গোপনীয়তা অবলম্বন করতেন। কিন্তু মূসার আশ্বাসধন্য পরমেশ্বর এখন আর ভীত নন। তাই তিনি ইস্রায়েল সন্তানদের থেকে আর দূরে অবস্থান না করে এখন থেকে তাদের নিকটে অবস্থান করতে চান।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন