আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

আল্লাহু আসগর!

লিখেছেন ক্যাটম্যান

মুসলমানগণ নিজেদেরকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্প্রদায় বলে দাবি করে থাকে। যদিও ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় তাদের চেয়ে নিকৃষ্ট সম্প্রদায় বর্তমান পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া ভার। তাই এক আলোচনা সভায় তথাকথিত মুসলমানদের তেমন শ্রেষ্ঠত্বের অমূলক দাবির বিপরীতে আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বললাম, আমার বিবেচনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ন্যায় বিবেকহীন, নির্লজ্জ ও নিকৃষ্ট সম্প্রদায় বর্তমান পৃথিবীতে আর একটিও নেই। আমার এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নরাধম মুসলমানদের জঙ্গি ঈমানি চেতনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলো। তারা আমার কথা ভুল প্রমাণ করতে নানারকম উদাহরণ ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে হাজির করতে লাগল। তাদের এমন দুর্বিনীত প্রয়াসে বিরক্ত হয়ে আমি বললাম, আপনারা স্বীয় শ্রেষ্ঠত্বের দাবি প্রমাণ করতে অজস্র অমূলক উদাহরণের অবতারণায় লিপ্ত হয়েছেন, যদিও তেমন প্রয়াসে আপনাদের দাবি সত্য প্রমাণের সম্ভাবনা ক্ষীণ। অথচ আপনাদের দাবি অসত্য প্রমাণে আমার একটি উদাহরণই যথেষ্ট হতে পারে। আমার এমন মন্তব্যে তারা কিছুটা বিভ্রান্ত হলো এবং কৌতূহলী হয়ে উদ্দিষ্ট উদাহরণটি শোনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল।

উদাহরণটি ব্যক্ত করার পূর্বে তাদেরকে আমি কয়েকটি সাধারণ প্রশ্ন করলাম। তাদের উদ্দেশে  বললাম, "কুখ্যাত কোনো খুনির পরিহিত পোশাক সংগ্রহ করে যদি আপনাদেরকে তা পরিধানের আহ্বান জানানো হয়, আপনারা কি সেই আহ্বানে সাড়া দেবেন?" 

তারা সমস্বরে বললো, "না, সাড়া দেব না।"

আমি তাদেরকে বললাম, "পোশাক তো কোনো অপরাধ করেনি, তাহলে একটি পোশাক পরিধানের নিরীহ আহ্বানে আপনারা কেন সাড়া দেবেন না?"

তারা বলল, "পোশাকটি কোনো অপরাধ না করা সত্ত্বেও তা আমাদের নিকট ঘৃণার্হ বস্তু বলে বিবেচিত হয়েছে। কারণ কুখ্যাত একজন খুনি যে-পোশাক পরিধান করে নরহত্যা সম্পন্ন করেছে, সেই পোশাক আমরা পরিধান করতে পারি না; তেমন কর্ম আমাদের নিকট ঘৃণ্যকর্ম বলে বিবেচিত।"

তারপর তাদেরকে বললাম, "কুখ্যাত কোনো ধর্ষকের ব্যবহৃত পায়জামা-পাঞ্জাবি সংগ্রহ করে যদি আপনাদেরকে তা পরিধানের প্রস্তাব করা হয়, আপনারা কি তা পরিধানের প্রস্তাবে সম্মত হবেন?"

তারা সমস্বরে বললো, ‘না, সম্মত হবো না।’ 

আমি তাদেরকে বললাম, "পায়জামা-পাঞ্জাবি তো কোনো অপরাধ করেনি, তাহলে এক জোড়া পায়জামা-পাঞ্জাবি পরিধানের নিরীহ প্রস্তাবে আপনারা কেন সম্মত হবেন না?"

তারা বলল, "ধর্ষকের ব্যবহৃত পায়জামা-পাঞ্জাবি কোনো অপরাধ না করা সত্ত্বেও তা আমাদের নিকট ঘৃণার্হ বস্তু বলে বিবেচিত হয়েছে। কারণ, কুখ্যাত একজন ধর্ষক যে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরিধান করে ধর্ষণকাণ্ড সম্পন্ন করেছে, সেই পায়জামা-পাঞ্জাবি আমরা পরিধান করতে পারি না; তেমন কর্ম আমাদের নিকট ঘৃণ্যকর্ম বলে বিবেচিত।"

অতঃপর তাদেরকে বললাম, "সমাজ-রাষ্ট্রে ঘৃণিত কোনো রাজাকারের ব্যবহৃত টুপি সংগ্রহ করে যদি আপনাদেরকে প্রদান করা হয়, আপনারা কি তা পরিধানপূর্বক নামাজ আদায়ে সম্মত হবেন?"

তারা সমস্বরে বললেন, "না, সম্মত হবো না।"

আমি তাদেরকে বললাম, "টুপি তো কোনো অপরাধ করেনি, তাহলে একটি টুপি পরিধানের নিরীহ কর্মে আপনারা কেন সামিল হবেন না?"
তারা বলল, "টুপিটি কোনো অপরাধ না করা সত্ত্বেও তা আমাদের নিকট ঘৃণার্হ বস্তু বলে বিবেচিত হয়েছে। কারণ, সমাজ-রাষ্ট্রে ঘৃণিত একজন রাজাকার যে টুপি পরিধান করে নিজ দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে হীন ভূমিকা পালন করেছে, সেই টুপি আমরা পরিধান করতে পারি না; তেমন কর্ম আমাদের নিকট ঘৃণ্যকর্ম বলে বিবেচিত।"

তারা উত্তেজিত হয়ে আরও জানালো, "মুসলমান হিসাবে আমরা কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে যেমন সমর্থন করি না, তেমনি কোনো অপরাধীকেও আমরা পছন্দ করি না। আর সে কারণেই কোনো অপরাধীর ব্যবহৃত কোনো বস্তু আমরা ব্যবহার করতে চাই না। হোক সে সামান্য অথবা অসামান্য অপরাধী। এমনকি আমরা কোনো অপরাধীর আচার-ব্যবহারও অনুকরণ ও অনুসরণ করতে চাই না। তেমন কর্মকে আমরা বড্ড অস্বস্তিকর, বিব্রতকর, অপমানসূচক ও অন্যায় কর্ম বলেই বিবেচনা করে থাকি। আর এটাই আমাদের বাস্তবিক নীতি।"

এ পর্যায়ে আমি তাদের নিকট উদ্দিষ্ট উদাহরণ হিসাবে আল্লাহর মহিমাময় তাকবির ‘আল্লাহু আকবর’-এর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলাম। আর তাদেরকে বললাম, "আপনাদের নীতিনিষ্ঠতা ও নিকৃষ্টতার সত্যতা যাচাই করতে, আসুন, আমরা উপর্যুক্ত তাকবিরটির যথাযথ মাহাত্ম্য অনুসন্ধান করি।

‘আল্লাহু আকবর’ তাকবিরটির অর্থ — আল্লাহ মহান। যা আল্লাহর প্রতি অযাচিত স্তুতি নিবেদনের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ উচ্চারণ করে থাকে। এটি এমন একটি ধ্বনি, যা মুসলিম জঙ্গিরা বিশ্বমানবতার বিরুদ্ধে যাবতীয় বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতন সংঘটনের সময় গর্বের সাথে উচ্চারণ করে থাকে। তাই ফ্রান্সের প্যারিসে শার্লি এবদু কার্যালয়ে জঙ্গি হামলা, প্যারিসের রেস্তোরাঁ ও বাতাক্ল কনসার্ট হলে জঙ্গি হামলা, ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলা, ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা, ফ্রান্সের নিস শহরে ট্রাক হামলা, জার্মানির ট্রেনে আফগান শরণার্থীর কুড়াল হামলা ও সিরিয়া-ইরাকে আইএস অধিকৃত অঞ্চলে অসহায় নারীদেরকে যৌনদাসীরূপে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সংশ্লিষ্ট মুসলিম জঙ্গিগণ সচেতনভাবে নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়বাহী 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি জোর গলায় ঘোষণা করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রত্যেক হামলাকারী ও নির্যাতনকারী প্রমাণ করেছে যে, তাদের এই জঙ্গি হামলা ও নির্যাতন ইসলামধর্মে স্বীকৃত জিহাদ-ই-আকবরের সামিল এবং তারা প্রত্যেকে আল্লাহভক্ত মুসলমান। তারা নিরীহ মানুষ হত্যা, নারী ধর্ষণ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডকে আল্লাহ প্রদত্ত পবিত্র দায়িত্ব বলে গণ্য করে থাকে; তাই তারা নিজেদের পবিত্র দায়িত্ব সম্পন্ন করার সময় ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি মহা আনন্দে উচ্চারনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করে।

অপরপক্ষে নরহত্যাকারী, ধর্ষক ও দেশদ্রোহীদের ব্যবহৃত বস্তু ও সুচিহ্নিত আচারব্যবহার বর্জন করাই যদি আপনাদের বাস্তবিক নীতি হয়ে থাকে, তবে কোন মোহে আপনারা নরহত্যাকারী, ধর্ষক ও দেশদ্রোহী মুসলিম জঙ্গীদের প্রয়োগসিদ্ধ অভিব্যক্তি নির্লজ্জের ন্যায় অনুকরণ ও অনুসরণ করে থাকেন? যে মুসলিম জঙ্গিরা সারা বিশ্বের যে কোনো স্থানে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতন চালানোর সময় আল্লাহর মহিমাময় তাকবির 'আল্লাহু আকবর' জোর গলায় ঘোষণা করে থাকে; সেই একই 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি উচ্চারণ করে আপনারা কীভাবে নামাজ আদায় করে থাকেন? যে 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি উচ্চারণ করে মুসলিম জঙ্গিরা নরহত্যা চালায়; সেই একই আল্লাহু আকবর ধ্বনি উচ্চারণ করে আপনারা কীভাবে আযান ও ইকামত প্রদান করেন? যে 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি উচ্চারণ করে মুসলিম জঙ্গিরা অসহায় নারীদেরকে যৌনদাসীরূপে ক্রয়-বিক্রয় ও ধর্ষণ করে থাকে; সেই একই 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি উচ্চারণ করে আপনারা কীভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে থাকেন? এটা কি আপনাদের নীতিবিরুদ্ধতা নয়; যে নীতির বড়াই আপনারা ইতিপূর্বে করেছেন? খুনি, ধর্ষক ও দেশদ্রোহীর পরিহিত পোশাক ও টুপির ন্যায় খুনি, ধর্ষক ও দেশদ্রোহী মুসলিম জঙ্গিদের উচ্চারিত 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি কি আপনাদের নিকট ঘৃণার্হ বিষয় বলে বিবেচিত হয় না? নাকি খুনি, ধর্ষক ও দেশদ্রোহী মুসলিম জঙ্গিদের যাবতীয় অপকর্মের বেলায় সচেতনভাবে আপনারা আপনাদের নীতি বিসর্জন দিয়ে থাকেন? যদি আপনারা আপনাদের নীতি বিসর্জন না-ই দিয়ে থাকেন, তাহলে নিজেদের প্রতিশ্রুত নীতির অনুসরণ করে নামাজ, আযান ও ইকামত হতে খুনি, ধর্ষক ও দেশদ্রোহী মুসলিম জঙ্গিদের মুখে উচ্চারিত 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি কেন বর্জন করেন না? বর্বর মুসলিম জঙ্গিদের মুখে উচ্চারিত বুলি এখনও কেন আপনাদের মুখে উচ্চারিত হয়?

কারণ আপনারা খুনি, ধর্ষক ও দেশদ্রোহী মুসলিম জঙ্গিদের নিষ্ঠাবান সমর্থক। যে তাকবির মুসলিম জঙ্গিদেরকে যাবতীয় অপরাধ সংঘটনে প্রেরণা যোগায়, সেই একই তাকবির আপনাদেরকে প্রেরণা যোগায় ওই সকল মুসলিম জঙ্গিদের সংঘটিত যাবতীয় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করতে। আর সে কারণেই আপনারা নামাজ, আযান ও ইকামত হতে খুনে 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি বর্জন না করে বরং সেই ধ্বনির মোহে নিজেদের প্রতিশ্রুত নীতি বর্জন করেছেন। অথচ অসংখ্য নিরীহ মানুষ নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হলে যে-আল্লাহর মহিমা প্রতিষ্ঠিত হয়, অজস্র অসহায় নারী ইসলামি ধর্ষণের শিকার হলে যে-আল্লাহর গৌরব ঘোষিত হয়, মানবিক মূল্যবোধের বিচারে তেমন আল্লাহকে আপনারা কিছুতেই মহান বলে স্বীকার করতে পারেন না। তেমন আল্লাহ কোনোভাবেই ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনির যোগ্য নয়। বরং তার ঐতিহাসিক হীনতা তুলে ধরতে ‘আল্লাহু আসগর’ ধ্বনি উচ্চারণ করাই আপনাদের জন্য সমীচীন; যার অর্থ - আল্লাহ মহাক্ষুদ্র বা আল্লাহ হীনতম। কিন্তু আপনারা, নরাধম মুসলমানগণ, কখনই হীনতম আল্লাহর হীনতা স্বীকার করবেন না। আর এ কারণেই মুসলমানগণ আমার বিবেচনায় বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বিবেকহীন, নির্লজ্জ ও নিকৃষ্ট সম্প্রদায়।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন