আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৬

নিলয় নীল: নির্বাচিত নিবন্ধ (ধর্মকারীর কুফরী কিতাব)

ঠিক এক বছর আগে ইছলাম নামের রক্তলোলুপ, বর্বর ধর্মের জিহাদী হামলায় নিহত হয়েছিলেন নিলয় নীল। বীভৎস এই হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে দু'টি নোট লিখেছিলেন নিলয় নীল। তিনি, সম্ভবত, অনুমান করতে পেরেছিলেন আসন্ন বিপর্যয়ের কথা। নোটদুটো পড়লে বুক ভেঙে যায় দুর্বহ বেদনায়।

গত বছর ১৯ এপ্রিল নিলয় নীল লিখেছিলেন: 
ইঁদুরে খুব জ্বালাচ্ছে, ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করলেও একটা ইঁদুরও মারতে পারিনি। অবশেষে নিয়ে আসলাম ইঁদুর মারার আঠার ফাঁদ। রিজিকের মালিক যেহেতু আল্লাহ্‌, তাই আল্লাহর উছিলা হিসেবে এই ফাঁদের ওপর খাবার দিলে ইঁদুর তা খেতে এসে আটকে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো: ইঁদুর আটকে অসহায়ের মতো বসে থাকবে, আর আমার তাকে হত্যা করতে হবে। হত্যা করার অস্ত্র হিসেবে আমি ব্যবহার করবো প্লায়ার্স, প্লায়ার্স দিয়ে অসহায় ইঁদুরের ঘাড় ধরে চাপ দিয়ে ঘাড় ভেঙে তাকে মেরে ফেলতে হবে। অনেক সময় ধরে ভাবছি, এটা আমি কীভাবে করবো? এটা কি আসলেই আমি করতে পারবো? মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছি, জ্যান্ত ইঁদুরটাকে আমাকেই হত্যা করতে হবে, কিন্তু পারবো কি না, আল্লাহ্‌ই জানে। আল্লাহ্‌, আমাকে ইঁদুর মারার তৌফিক দান করো।
আমি বাজার থেকে মুরগী আনলে সবসময় কেটে আনি, আর কাটার সময় মুরগী কাটা দেখি না। তবে কিছুদিন আগে দেশী জ্যান্ত মুরগী এনে ভাবছিলাম, এটার কল্লাটা আমি কীভাবে কাটবো? অবশেষে আমার দ্বারা এই কাজ করাও সম্ভব হয়নি। আমি একটা জ্যান্ত মুরগীকে কিছুতেই কাটতে পারলাম না। 
আমি একটা জ্যান্ত মুরগী বা ইঁদুর মারতে পারি না, কিন্তু ওরা কিভাবে একটা জ্যান্ত মানুষকে কুপিয়ে মেরে ফেলে, বুঝি না!
এর পর ১২ মে তারিখে লিখলেন:
আমার জীবন অর্থহীন, এই গাড়ি, বাড়ি, সুন্দর নারী, টাকা-কড়ি সবকিছুই অর্থহীন কারণ সবকিছু মৃত্যুতেই পরিসমাপ্তি ঘটবে, তারপরও আমি সেগুলোর পিছনে দৌড়াই। মৃত্যু চরম বাস্তবতা হলেও উদ্ভব ও বিকাশের শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে আমরা মানুষেরা কখনোই তা মানতে চাই না। উৎকর্ষতা কল্পনাশক্তিকে বাড়ায় তাই অর্থহীন এ জীবনকে অর্থপূর্ণ করার জন্য আমরা কল্পনা করি স্বর্গ, নরক, ঈশ্বর, আত্মা প্রভৃতি।
আমি জানি এগুলো কল্পনা মাত্র, ঐ কল্পনায় আমি সুখী হতে পারি না। একেক ধর্ম যেভাবে বলছে সেভাবে ঈশ্বর, আত্মা, স্বর্গ, নরক নেই তাহলে কি আছে এই প্রশ্নের উত্তরেও বলবো আমি জানি না, আমার জানা সম্ভবও না। আমি যেমন জানি না তেমন অন্যসব ধর্মের তথাকথিত মহাপুরুষরাও জানে না, তারা প্রতারিত করছে মানুষকে শুধু এটুকুই আমি জানি।
সেই প্রতারণার কথা বলতে গেলে আমায় কেন মরতে হবে? আমি বাঁচতে চাই, আরও কিছুকাল বাঁচতে চাই। আরও কিছু সময় নারীর বুকে মুখ লুকিয়ে ভালোবাসা খুজতে চাই, দুইখান তেল চুপচুপে বেগুন ভাঁজা দিয়ে সাদা ভাত মেখে গাপুস গুপুস খেতে চাই, কোলবালিশটা জড়িয়ে দুঃস্বপ্নমুক্ত নিদ্রা যেতে চাই, নতুন নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচিত হয়ে আড্ডা দিতে চাই, আরও কতোকিছু করতে চাই যা এখনো করতে পারি নি। মৌলিক চাহিদা এখন একটাই - অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা কিছুই চাই না, শুধু স্বাভাবিক মৃত্যুর একটুখানি নিশ্চয়তা চাই।
হায়! মদিনা সনদে পরিচালিত এই বাংলাস্তান আপনার মতো কাফের, মুরতাদকে এমন নিশ্চয়তা দেবে, সেই দুরাশা কেন করেছিলেন, নীল? তবে যখন আপনার বোধোদয় হলো যে, এই দেশের সরকার, প্রশাসন, পুলিশ এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আপনার মুক্তচিন্তাচর্চাকে ঘৃণা করে এবং ঘৃণা করে আপনাকেও (আপনার হত্যাকাণ্ডের পর এরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন উল্লাসে মেতে উঠেছিল), তখন আপনি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা পেতে দেশত্যাগের চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন বটে, কিন্তু হায়, দেরি হয়ে গিয়েছিল ততোদিনে।

মনে পড়ে, নিলয় নীল ধর্মকারীতে লিখতে শুরু করেছিলেন ২০১০ সালের শুরুর দিকে - ধর্মকারী চালু হবার কয়েক মাস পরের কথা সেটা। লিখেছেন অনেক নিবন্ধ। বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে, বিচিত্র বিষয় নিয়ে। তাঁর লেখা সেইসব নিবন্ধ থেকে সেরাগুলো বেছে নিয়ে সংকলিত করা হলো এই ইবুকে, যার নির্মাতা নরসুন্দর মানুষ, যাঁর আছে অনিঃশেষ উৎসাহ ও বিস্ময়জাগানিয়া ধৈর্য।

আরও মনে পড়ে, ধর্মকারী থেকে প্রকাশিত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইবুক দু'টির সংকলক ছিলেন নিলয় নীল। ইছলাম ও হিন্দুধর্মে নারীরা কতোটা ঘৃণ্য, অপাংক্তেয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে অস্পৃশ্য - সেটাই ছিলো ধর্মীয় কিতাবের উদ্ধৃতিবহুল এই বই দুটোর উপজীব্য। ইবুক দুটোর নাম – ‘ইসলামী শস্যক্ষেত্র’ ও ‘সনাতনী কামিনী’।

এর পরে তিনি "ভালো ধর্ম" হিসেবে প্রচারিত (যদিও ‘ভালো’ ও ‘ধর্ম’ – এই শব্দদু’টির সহাবস্থান অবাস্তব) বৌদ্ধধর্মে নারীর অবস্থান নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি সিরিজ লিখতে শুরু করেন। নাম দিয়েছিলেন ‘বৌদ্ধশাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র: নারীরা হল উন্মুক্ত মলের মতো দুর্গন্ধযুক্ত।

একটি বিষয় দিবালোকের মতো স্পষ্ট - কোনও ধর্মের প্রতিই তাঁর দুর্বলতা বা পক্ষপাতিত্ব ছিলো না। অকাতরে সমালোচনা করে গেছেন সব ধর্মেরই। কিন্তু তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে ইছলামের মহানবীর মহান বীর অনুসারীদের হাতে, যারা ইছলামের ফরজ ও ছুন্নত হাছিল করে জান্নাতের হুরসঙ্গমস্বপ্নে বিভোর এখন।

ফরম্যাট: পিডিএফ (সম্পূর্ণভাবে মোবাইলবান্ধব)
সাইজ: ৩.২ মেগাবাইট
ডাউনলোড লিংক (গুগল ড্রাইভ): https://goo.gl/PcfY6L
ডাউনলোড লিংক (ড্রপবক্স): https://goo.gl/OVGoyB

নিচে অনলাইনে পাঠযোগ্য ভার্শন:

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন