আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছর (পর্ব ১১)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ


{সম্পর্কের গভীরতা নির্ণয়ের মাপকাঠি কী? রক্তের সম্পর্ক বড় নয় অবশ্যই, কারণ পিতা-মাতা ভাই-বোনকে ছেড়ে মানুষ বিচ্ছিন্ন হয় প্রতিনিয়ত। তবে কি শরীরের সম্পর্ক বড়? অথবা ভালবাসার?: আপনি ভালবাসার টানে তাজমহল তৈরি হতে দেখেছেন, শরীরের টানে প্রেমিকের হাত ধরে পালাতে দেখেছেন প্রেমিকাকে! কিন্তু শরীর ফুরিয়ে যায়, ভালবাসা টিকে থাকে কেবল ইট-পাথরে!

আজ আমাদের উত্তর খোঁজার পালা, কেন ‘আবু-বকর’ ইসলাম কবুলের পরপরই তার প্রথম স্ত্রী আর বড় পুত্র সন্তানকে ইসলাম কবুল না করার জন্য ত্যাগ করলেন; ‘সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস’, উহুদের যুদ্ধের পরপরই, নিজের আপন ভাইকে খুন করার জন্য সবচেয়ে অগ্রগামী হয়ে উঠলেন! কেন?

উত্তর হতে পারে এরকম: মানুষ সমর্পিত জীব, সমর্পণ ছাড়া মানুষ মানসিক তৃপ্তি লাভ করতে পারে না কখনই, এই সমর্পণ বাসনা ঈশ্বরবিশ্বাস সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ। একথা বলতে দ্বিধা নেই, মানুষ সবচেয়ে বেশি অন্ধভাবে সমর্পিত হতে পারে সৃষ্টিকতার ধারণার কাছে।

এবার ভাবুন, সত্যি সত্যি যদি এই অসীম মহাবিশ্বের একজন সৃষ্টিকর্তা থাকেন, এবং আগামীকাল সকালে তিনি তার একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি সত্যি সত্যিই আপনার কাছে পাঠান; সেক্ষেত্রে তার প্রতি এবং সেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি আপনার নিবেদন সমাজ-সংসার, পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, ধন-সম্পদের চেয়ে বেশি হবে কি না? এই প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে ‘আবু-বকর’ ও ‘সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস’ সহ সকল ইসলাম বিশ্বাসীর মনের হদিস অজানা থাকবার কথা নয় আপনার। ভাবতে থাকুন; আমরা ততক্ষণে ‘আরকাম’-এর বাসা থেকে ঘুরে আসি!

আয়াত প্রকাশের এই পর্যায়ে মুহাম্মদ ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে থাকলেন, নিজের বসবাসস্থান স্ত্রী খাদিজার বাসাটাকেও নিরাপদ মনে করতে পারছিলেন না; বাসায় অপুষ্ট দুগ্ধ্যপোষ্য সন্তান নিয়ে খাদিজা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, মুহাম্মদকে একটাই উপদেশ তাঁর, ‘যা-ই করেন, একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন।’ নিকট বন্ধু ও কয়েকজন সাহাবীর সাথে পরামর্শ করে ঠিক করলেন, সাফা পাহাড়ের ঠিক নিচেই, রাস্তার পাশে ‘আরকাম’-এর ঘরেই এখন থেকে সকল আলোচনা আর ধর্ম প্রচারের কাজ করবেন; কারণ, আরকাম তার মুসলিম হবার কথা এখনও প্রকাশ করেনি কাউকে; আর রাস্তার পাশে হওয়ায় যে কোনো সময় তার বাসায় বিনা সন্দেহে প্রবেশ করা যায়, আর একত্রিত হবার সময় ঠিক করলেন মধ্য দুপুর; কারণ, কড়া উত্তাপের জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসময়ে কেউ বাইরে বের হয় না। মক্কা দ্বিতীয় অধ্যায়ের সাত বছর, আরকামের বাসাই নব্য মুসলিমদের অস্থায়ী মিলনস্থল হয়ে দাড়ায়।

পর্ব-৬ এর সংযুক্ত ছবিতে আরকাম-এর বাসার অবস্থান দেখে নিতে পারেন; আর পর্ব-৮ এ দেওয়া সাফা পাহাড়কে পেছনে রেখে দাড়ালে সংযুক্ত ছবিটির লাল বৃত্তের অংশটুকু আরকাম এর বাসার বর্তমান অবস্থান। 

আজকের ৪ টি প্রকাশ মুহাম্মদের মনোজগতের ঝড় পূর্ব মেঘের গর্জন নির্দেশ করে মাত্র। যখন সবাই মুহাম্মদের নবী হবার দাবিকে হাসি-তামাসায় উড়িয়ে দিতে থাকে, মৃত্যুপরবর্তী জীবন, বিচার, বেহেশত, দোযখ-এর ধারণাকে উপহাস করতে থাকে, তারই পরিপ্রেক্ষিতের প্রকাশ ৪৮ থেকে ৫১; কিন্তু মুহাম্মদের মনোজগতের ঝড় আগামী পর্বে জন্ম দেবে এমন দু'টি প্রকাশের; যাকে ঝড় না বলে, ভূমিকম্প, সাইক্লোন আর সূনামীর মিলিত রূপ বলা চলে অনায়াসে! যাতে লোভ, হুমকি, প্রলোভন থাকবে; আর থাকবে মুহাম্মদের এ যাবৎকালের সবচেয়ে লম্বা সূরা প্রকাশের দক্ষতার পরিচয়!

কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ১১ তম পর্ব; এই পর্বে থাকছে মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছরের চতুর্থ চার অংশঅনুবাদের ভাষা ৫০ টির বেশি বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৪৮ তম প্রকাশ; সূরা আন-নাজম (৫৩) (তারা), ৩৩ থেকে ৬২ আয়াত:

৩৩. তুমি কি তাকে দেখেছ, যে (আল্লাহ হতে) মুখ ফিরিয়ে নেয়?
৩৪. এবং দেয় সামান্যই ও পাষাণ হয়ে যায়।
৩৫. তার কাছে কি আছে অদৃশ্যের জ্ঞান যে, সে দেখছে?
৩৬. তাকে কি অবগত করা হয়নি যা আছে মূসার কিতাবে,
৩৭. এবং ইব্রাহীমের কিতাবে, যে তার দায়িত্ব পালন করেছিল?
৩৮. ওটা এই যে, কোন বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না।
৩৯. এবং মানুষ তাই পায়, যা সে করে,
৪০. আর এই যে, তার চেষ্টা সাধনার ফল শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে,
৪১. অতঃপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিদান।
৪২. আর নিশ্চয় তোমার পালনকর্তার নিকটই হলো শেষ গন্তব্য।
৪৩. এবং তিনিই হাসান ও কাঁদান
৪৪. এবং এই যে, তিনিই মারেন, তিনিই বাঁচান,
৪৫. এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল - পুরুষ ও নারী।
৪৬. বীর্য বিন্দু হতে যখন তা স্খলিত হয়;
৪৭. আর নিশ্চয় পুনরায় সৃষ্টির দায়িত্ব তাঁর ওপরই।
৪৮. আর তিনিই অভাবমুক্ত করেন ও সম্পদ দান করেন।
৪৯. আর এই যে, শি'রা (অর্থাৎ লুব্ধক নক্ষত্র)’র তিনিই প্রতিপালক,
৫০. এবং এই যে, তিনিই প্রথম ‘আদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন।
৫১. এবং সামুদকেও; অতঃপর কাউকে অব্যহতি দেননি।
৫২. আর তার পূর্বে নূহের জাতিকেও, তারা ছিল অত্যধিক যালিম ও সীমালঙ্ঘনকারী।
৫৩. তিনি (লূত জাতির) উল্টানো আবাস ভূমিকে উঠিয়ে নিক্ষেপ করেছিলেন,
৫৪. অতঃপর তাকে আচ্ছন্ন করে নেয় যা আচ্ছন্ন করার।
৫৫. তাহলে তুমি তোমার রবের কোন্ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে?
৫৬. অতীতের সতর্ককারীদের ন্যায় এই নাবীও এক সতর্ককারী;
৫৭. কিয়ামত নিকটবর্তী।
৫৮. আল্লাহ ব্যতীত কেউ একে প্রকাশ করতে সক্ষম নয়।
৫৯. তোমরা কি এই কথায় বিস্ময় বোধ করছ!
৬০. এবং হাসি- ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছ না?
৬১. বৃথা খেল-তামাশায় সময় ক্ষেপন করছ,
৬২. অতএব আল্লাহকে সেজদা কর এবং তাঁর এবাদত কর।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৪৯ তম প্রকাশ; সূরা আন্‌ নাবা (৭৮) (সংবাদ), ৩৬ আয়াত:

১. তারা পরস্পরে কি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
২. সেই মহা সংবাদ সম্বন্ধে
৩. যে বিষয়ে তাদের মাঝে মতপার্থক্য আছে।
৪. কখনই না, তাদের ধারণা অবাস্তব, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
৫. পুনশ্চ, না, তারা অতি শীঘ্রই জানতে পারবে।
৬. আমরা কি পৃথিবীটাকে পাতানো-বিছানারূপে বানাইনি,
৭. আর পর্বতসমূহকে পেরেক?
৮. আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়।
৯. আর তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম,
১০. রাতকে করেছি আবরণ,
১১. দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়,
১২. নির্মাণ করেছি তোমাদের মাথার ওপর মজবুত সপ্ত-আকাশ।
১৩. এবং সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল প্রদীপ।
১৪. আর আমি বর্ষণ করি বৃষ্টিবাহী মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি,
১৫. যাতে তা দিয়ে আমি শস্য ও উদ্ভিদ উৎপন্ন করতে পারি।
১৬. আর ঘনসন্নিবিষ্ট বাগানসমূহ।
১৭. নিশ্চয়ই নির্ধারিত আছে মীমাংসা দিন।
১৮. সেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, আর তোমরা দলে দলে আসবে,
১৯. আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।
২০. আর পর্বতগুলোকে করা হবে চলমান, ফলে তা নিছক মরীচিকায় পরিণত হবে।
২১. নিশ্চয় জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে,
২২. সীমালংঘনকারীদের আশ্রয়স্থলরূপে।
২৩. সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে অবস্থান করবে,
২৪. সেখানে তারা কোনো শীতল ও পানীয় আস্বাদন করবে না
২৫. ফুটন্ত পানি ও পুঁজ ছাড়া।
২৬. এটাই সমুচিত প্রতিফল।
২৭. নিঃসন্দেহ তারা হিসাবের কথা ভাবেনি,
২৮. এবং আমার আয়াতসমূহে পুরোপুরি মিথ্যারোপ করত।
২৯. সবকিছুই আমি সংরক্ষণ করে রেখেছি লিখিতভাবে।
৩০. অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।
৩১. ধর্মভীরুদের জন্য নিশ্চয়ই রয়েছে মহাসাফল্য
৩২. প্রাচীরবেষ্টিত বাগান ও আঙুর;
৩৩. সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী।
৩৪. এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র।
৩৫. সেখানে তারা শুনবে না অসার ও মিথ্যা বাক্য;
৩৬. এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রতিফল, যথোচিত দান।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫০ তম প্রকাশ; সূরা আল মুরসালাত (৭৭) (প্রেরিতগণ), ৪৮ বাদে ৫০ আয়াত:

১. শপথ কল্যাণ-স্বরূপ প্রেরিত বায়ুর;
২. আর প্রলয়ঙ্করী ঝটিকার;
৩. মেঘবিস্তৃতকারী বায়ুর শপথ
৪. আর বিচ্ছিন্নকারী বাতাসের শপথ যা (মেঘমালাকে) বিচ্ছিন্ন করে,
৫. এবং তার, যে মানুষের অন্তরে পৌঁছে দেয় উপদেশ
৬. পরিশোধিত করতে অথবা সতর্ক করতে।
৭. নিশ্চয়ই তোমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তা অবশ্যম্ভাবী।
৮. যখন নক্ষত্ররাজির আলো বিলুপ্ত হবে,
৯. আর যখন আকাশ ভেঙে পড়বে,
১০. আর যখন পাহাড়গুলি চূর্ণবিচূর্ণ হবে,
১১. আর যখন রসূলগণকে নির্ধারিত সময়ে নিয়ে আসা হবে
১২. এই সমূদয় স্থগিত রাখা হয়েছে কোন দিনের জন্য?
১৩. বিচার দিনের জন্য।
১৪. বিচার দিন সম্বন্ধে তুমি জান কি?
১৫. মিথ্যারোপকারীদের জন্য সেদিনের দুর্ভোগ!
১৬. আমি কি পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করিনি?
১৭. অতঃপর তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করব পরবর্তীদেরকে।
১৮. অপরাধীদের প্রতি আমি এরূপই করে থাকি।
১৯. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
২০. আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি হতে সৃষ্টি করিনি?
২১. অতঃপর তা আমি রেখেছি সুরক্ষিত আধারে
২২. এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত।
২৩. আমি এটাকে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, আমি কত নিপুণ স্রষ্টা।
২৪. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
২৫. আমি কি পৃথিবীকে সৃষ্টি করিনি ধারণকারিণীরূপে,
২৬. জীবিত ও মৃতের জন্য?
২৭. আমি তাতে স্থাপন করেছি মজবুত সুউচ্চ পর্বতমালা এবং পান করিয়েছি তোমাদেরকে তৃষ্ণা নিবারণকারী সুপেয় পানি।
২৮. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
২৯. চল তোমরা তারই দিকে, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।
৩০. চল তোমরা তিন কুণ্ডলীবিশিষ্ট ছায়ার দিকে,
৩১. যে ছায়া শীতল নয় এবং যা রক্ষা করে না অগ্নি শিখা হতে।
৩২. এটা অট্টালিকা সদৃশ বৃহৎ স্ফুলিংগ নিক্ষেপ করবে।
৩৩. উহা পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণী সদৃশ।
৩৪. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
৩৫. এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না।
৩৬. আর তাদেরকে অজুহাত পেশ করার অনুমতিও দেয়া হবে না ।
৩৭. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
৩৮. এটা বিচার দিবস, আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে একত্রিত করেছি।
৩৯. তোমাদের কোনো অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ কর আমার বিরুদ্ধে।
৪০. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
৪১. নিশ্চয় খোদাভীরুরা থাকবে ছায়ায় এবং ঝর্ণাবহুল স্থানে,
৪২. আর তাদের জন্য থাকবে ফলমূল- যেটি তাদের মন চাইবে।
৪৩. তোমাদের কর্মের পুরস্কার স্বরূপ তোমরা তৃপ্তির সাথে পানাহার কর।
৪৪. এভাবে আমি সৎ কর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
৪৫. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
৪৬. (সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা!) তোমরা অল্প কিছুকাল খেয়ে নাও আর ভোগ করে নাও, তোমরা তো অপরাধী।
৪৭. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
৪৯. সেদিন দুর্ভোগ অস্বীকারকারীদের জন্য।
৫০. সুতরাং তারা কোন্ কথায় এরপর বিশ্বাস স্থাপন করবে?

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫১ তম প্রকাশ; সূরা আল ক্বিয়ামাহ্ (৭৫) (পুনরুত্থান), ২০ থেকে ৪০ আয়াত:

২০. না, তোমরা প্রকৃত পক্ষে পার্থিব জীবনকে ভালবাস।
২১. এবং পরকালকে উপেক্ষা কর।
২২. সেদিন কোন কোন মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে।
২৩. তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
২৪. কোন কোন মুখমণ্ডল হয়ে পড়বে বিবর্ণ।
২৫. তারা ধারণা করবে যে, তাদের সাথে কোমর-ভাঙা আচরণ করা হবে।
২৬. যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে।
২৭. এবং বলা হবে: (তাকে বাঁচানোর জন্য) ঝাড়ফুঁক দেয়ার কেউ আছে কি?
২৮. তখন তার প্রত্যয় হবে যে, উহা বিদায়ক্ষণ।
২৯. আর পায়ের গোছার সঙ্গে পায়ের গোছা জড়িয়ে যাবে।
৩০. সেদিন, আপনার পালনকর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে।
৩১. সে বিশ্বাস করেনি এবং নামায পড়েনি;
৩২. বরং সে প্রত্যাখ্যান করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
৩৩. তারপর সে দম্ভভরে পরিবার-পরিজনের কাছে চলে গিয়েছিল।
৩৪. তোমার দুর্ভোগের ওপর দুর্ভোগ।
৩৫. আবার তোমার দুর্ভোগের ওপর দুর্ভোগ!
৩৬. মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে?
৩৭. সে কি স্খলিত বীর্য ছিল না?
৩৮. অতঃপর সে ছিল রক্তপিণ্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন।
৩৯. অতঃপর তিনি তা হতে সৃষ্টি করেন যুগল নর ও নারী।
৪০. তবুও কি সেই স্রষ্টা মৃতকে পুনর্জীবিত করতে সক্ষম নন?

আয়াত প্রকাশের মনোজগত: আমরা মুহাম্মদের নবী জীবনের চার বছর শেষ করতে চলেছি প্রায়। আমরা আগামী পর্বে খুঁজে দেখবো, মুহাম্মদের বিরুদ্ধে কেন মক্কার বুদ্ধিজীবীদের একত্রিত হতে হয়েছিলো, আর খুঁজে দেখবো; মুহাম্মদ কীভাবে ফাটল ধরিয়েছিলেন গোত্র আর পারিবারিক ব্যবস্থায়! গুটিকয়েক সাহাবী থাকার পরেও কেন মুহাম্মদকে থামানো সম্ভব হয়নি; মুহাম্মদের টিকে থাকার পেছনে চাচা 'আবু-তালিব’-এর ভূমিকা কেন একমাত্র নিয়ামক ছিলো না। 

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন