আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬

খায়বার যুদ্ধ - ১৫: মুহাম্মদকে হত্যা-চেষ্টার আশঙ্কা ও তার কারণ!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৪৪): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত আঠার

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।" 

সাফিয়া বিনতে হুয়েই বিন আখতাব নামের এক অসামান্য সুন্দরী ইহুদি তরুণী ও তাঁর পরিবার ও গোত্রের সমস্ত মানুষকে বছর তিনেক আগে প্রায় এক বস্ত্রে মদিনা থেকে বিতাড়িত (পর্ব: ৫২ ও ৭৫) করে, তাঁর পিতা হুয়েই বিন আখতাব-কে বছর খানেক আগে গলা কেটে হত্যা (পর্ব: ৯১-৯২) করে, তাঁর স্বামী কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবি আল-হুকয়েক (পর্ব: ১৪১) ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের অল্প কিছু সময় আগে অমানুষিক নৃশংসতায় হত্যা করার পর স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কীভাবে তাঁর অন্য একজন অনুসারীর কাছ থেকে এই তরুণীটিকে হস্তগত করে নিজের ভাগের গনিমতের অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত ও বিবাহ করেছিলেন - তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে। এই হতভাগ্য তরুণীটির একান্ত পরিবার সদস্যদের খুন করার পর মুহাম্মদ তাঁকে তাঁর তাঁবুতে নিয়ে আসেন ও বিবাহ বাসর উদযাপনকরেন।

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা: [1]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব-১৪৩) পর:

'আল্লাহর নবী খায়বার অবস্থানকালে কিংবা পথিমধ্যে যখন সাফিয়া-কে বিবাহ করে ও আনাস বিন মালিক এর মাতা উম্মে সুলালিম বিনতে মিলহান তার চুলে চিরুনি দান করে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তাকে আল্লাহর নবীর জন্য উপযুক্ত করে; আল্লাহর নবী তাঁকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর তাঁবুতে রাত্রি যাপন করেনআবু আইয়ুব, বানু আল-নাজির গোত্রের খালিদ বিন যায়েদ নামের এক ভাই তার কোমরে তরবারি সমেত সারা রাত ধরে তাঁবুটি প্রদক্ষিণ করে আল্লাহর নবীকে প্রহরা দেয়, যতক্ষণে না সকাল হয়; আল্লাহর নবী তাকে সেখানে দেখতে পায় ও তাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে চায়, সে কী উদ্দেশ্যে এই কাজটি করেছে। সে জবাবে বলে, "এই মহিলাটি আপনার সঙ্গে থাকায় আমি ছিলাম আশংকাগ্রস্ত, এই কারণে যে আপনি তার পিতা, তার স্বামী ও তার লোকজনদের হত্যা করেছেন ও অতি সাম্প্রতিক কালেও  সে ছিলো অবিশ্বাসী, তাই তার ব্যাপারে আমি আপনার জন্য ছিলাম শঙ্কিত।"

তারা যা বলেছে তা হলো, আল্লাহর নবী বলেন, "হে আল্লাহ, আবু আইয়ুব-কে নিরাপদে রাখো, যেমন ভাবে সে রাত্রি যাপন করে আমাকে নিরাপদে রেখেছিলো।"--'

আল-ওয়াকিদির (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) বর্ণনা: [2]

'-----তারা যা বলেছেন তা হলো: আবু আইয়ুব আল্লাহর নবীর তাঁবুর নিকট দাঁড়িয়ে সারা রাত্রি যাবত তরবারি হাতে অবস্থান করে, যতক্ষণে না সকাল হয়। পরদিন সকালে যখন আল্লাহর নবী বের হয়ে আসেন, আবু আইয়ুব 'তাকবীর' ঘোষণা করে; আল্লাহর নবী তাকে জিজ্ঞাসা করেন, "আবু আইয়ুব, কী ব্যাপার?" সে জবাবে বলে, "হে আল্লাহর নবী, আপনি এই তরুণীটিকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেছেন; যার পিতা, ভাই, চাচা-মামা-ফুপা, স্বামী ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের আপনি হত্যা করেছেন; আমি এই ভেবে ভীত ছিলাম যে, সে আপনাকে হত্যা করতে পারে।" আল্লাহর নবী হেসে ফেলেন ও তার সাথে সদয় কথাবার্তা বলেন।---'

(------They said: Abu Ayyub stayed up the night close to the Prophet’s tent, standing with the sword until morning. When the Messenger of God set out next morning Abu Ayyub pronounced ‘takbir’ and the Prophet said, “What is the matter, O Abu Ayyub?” He replied, “O Messenger of God, you entered with this girl, and you had killed her father, brothers, uncle and husband and generally her relatives, and I feared that she would kill you.” The Messenger of God laughed and spoke kind words to him. ---’)

- অনুবাদ, টাইটেল, [**] ও নম্বর যোগ - লেখক।

>>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত প্রাণবন্ত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, সাফিয়া বিনতে হুয়েই বিন আখতাব নামের এই হতভাগ্য তরুণীটির পিতা, স্বামী, ভাই ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করার অল্প সময় পর মুহাম্মদ এই তরুণীটিকে তাঁর তাঁবুতে নিয়ে আসেন ও বিবাহ বাসর উদযাপন করেন। ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো - মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহর এই কর্মটি এত বেশি নৃশংস, হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ছিল যে, আবু আইয়ুব আল-আনসারী (Abu Ayyub al-Ansari) নামের মুহাম্মদের এক বিশিষ্ট অনুসারী ৫৮ বছর বয়স্ক মুহাম্মদের জীবন আশংকায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এই ভেবে যে, সপ্তদশী সাফিয়া প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মুহাম্মদকে হত্যা করতে পারে।এই ভাবনায় আবু আইয়ুব এত বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, তিনি উন্মুক্ত তলোয়ার হাতে মুহাম্মদকে রক্ষার চেষ্টায় তাঁর তাঁবুর  চারপাশে সারা রাত জেগে প্রহরায় নিযুক্ত ছিলেন।

আবু আইয়ুব আল-আনসারী (মৃত্যু ৬৭৪ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মদিনার বানু আল-নাজির (Banu al-Najir) গোত্রের এক বিশিষ্ট মুহাম্মদ অনুসারী। মদিনায় হিজরতের পর (পর্ব: ২৮) দুই সপ্তাহ বানু আমর বিন আউফ (Banu 'Amr b 'Auf) গোত্রের লোকদের সাথে অবস্থান করার পর মুহাম্মদ যার গৃহে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। [3]

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:


[1]“সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫১৬-৫১৭

[2] “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৭০৭-৭০৮; ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩৪৮-৩৪৯

‘Anas b. Malik reported: The Messenger of Allah (may peace be upon him) came to Medina and stayed in the upper part of Medina for fourteen nightswith a tribe called Banu 'Amr b 'Auf. He then sent for the chiefs of Banu al-Najir, and they came with swords around their necks. He (the narrator) said: I perceive as if I am seeing the Messenger of Allah (may peace be upon him) on his ride with Abu Bakr behind him and the chiefs of Banu al-Najjar around him till he alighted in the courtyard of Abu Ayyub.--‘

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন