আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬

খায়বার যুদ্ধ - ২০: লুটের মাল ভাগাভাগি -আল কাতিবা অঞ্চল!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৪৯): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত তেইশ

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খায়বারের নিরীহ জনপদবাসীদের খুন, জখম ও বন্দী করে দাস ও যৌনদাসী রূপে রূপান্তরিত করার পর তাঁদের আল-নাটা ও আল-শিইখ অঞ্চলের সমস্ত লুণ্ঠিত সম্পদ কী প্রক্রিয়ায় তাঁর অনুসারীদের মধ্যে বিলি-বণ্টন করেছিলেন, আদি উৎসে বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই প্রাণবন্ত বর্ণনার আলোকে তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

আদি উৎসে নথিভুক্ত এই সকল অত্যন্ত স্পষ্ট ও প্রাণবন্ত ইতিহাসগুলোকে পরবর্তী প্রজন্মের তথাকথিত মডারেট ইসলাম-বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা (অধিকাংশই না জেনে) তাঁদের নিজেদের সুবিধামত মিথ্যাচার, তথ্য-গোপন ও তথ্য-বিকৃতির মাধ্যমে উপস্থাপন করে যুগে যুগে সাধারণ সরলপ্রাণ অজ্ঞ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেচলেছেন (পর্ব: ৪৫); কী কারণে তাঁদের এই অসৎ প্রচেষ্টা আজও অব্যাহত আছে ও যতদিন ইসলাম বেঁচে থাকবে, ততদিন তা কী কারণে বলবত থাকবে, তার আলোচনা 'জ্ঞান তত্ত্ব (পর্ব: ১০)’পর্বে করা হয়েছে।

এই ইতিহাসগুলো লেখা হয়েছে মুহাম্মদের মৃত্যু-পরবর্তী সবচেয়ে নিকটবর্তী সময়ে, যা এখনও সহজলভ্য। উৎসাহী পাঠকরা ইচ্ছে করলেই তা বিভিন্ন উৎস থেকে অনায়াসেই খুঁজে নিয়ে প্রকৃত তথ্য জেনে নিতে পারেন। ইসলামকে সঠিকভাবে জানতে হলে "মুহাম্মদ-কে জানতেই হবে!" এর কোনোই বিকল্প নেই। ইসলামে কোনো কোমল, মডারেট বা উগ্রবাদী শ্রেণীবিভাগ নেই! ইসলাম একটিই, আর তা হলো মুহাম্মদের ইসলাম।

আল-ওয়াকিদির (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) অব্যাহত বিস্তারিত বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1]

‘ইবনে ওয়াকিদ বলেছেন: আমাদের মধ্যে আল-কাতিবার বিষয়টি বিতর্কিত; কেউ কেউ বলে: এটির সম্পূর্ণই ছিল আল্লাহর নবীর জন্য, মুসলমানরা এ ব্যাপারে মনক্ষুণ্ণ ছিল না। নিঃসন্দেহে তা ছিল নবীর জন্য। ইবনে ঘুফায়ের-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আবদুল্লাহ বিন নুহ, বশির বিন ইয়াসার-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মুসা বিন আমর বিন আবদুল্লাহ বিন রাফি, নিজ পিতার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইবরাহিম বিন জাফর আমাকে বলেছেন যে, এক ভাষ্যকার তাকে বলেছেন, যা তিনি বলেছেন: খায়বারে আল্লাহর নবীর এক-পঞ্চমাংশ হিস্যাটি এসেছিল আল-শিইখ ও আল-নাটা থেকে

আবু বকর বিন মুহাম্মদ বিন আমর বিন হিযাম-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কুদামা বিন মুসা আমাকে বলেছেন, যা তিনি বলেছেন: উমর বিন আবদুল আজিজ [৬৮২-৭২০ খ্রিষ্টাব্দ] তার শাসন আমলে আমার কাছে চিঠিতে যা লিখেছিলেন, তা হলো, "আমার জন্য আল-কাতিবা বিষয়টি তদন্ত করো!" আবু বকর বলেছেন: আমি আমরা বিনতে আবদ আল-রহমানকে জিজ্ঞাসা করি, সে বলেছে: বাস্তবিকই যখন আল্লাহর নবী বানু আবি আল-হুকায়েক-এর সাথে শান্তি চুক্তি করেন, তিনি নাটা, আল-শিইখ ও আল-কাতিবা পাঁচটি ভাগে ভাগ করেন। আল-কাতিবা ছিল তারই এক অংশ। আল্লাহর নবী তা পাঁচ "ভাগে ভাগ" করেন ও তা থেকে এক ভাগ আল্লাহর জন্যনির্দিষ্ট করেন। অতঃপর আল্লার নবী বলেন, "হে আল্লাহ, আমি তোমার অংশটি আল-কাতিবা এলাকায় নির্ধারণ করবো।" প্রথমেই যে ভাগটি নির্ধারণ করা হয়, তাতে লেখা ছিল আল-কাতিবা। সুতরাং আল-কাতিবা ছিল আল্লাহর নবীর এক-পঞ্চমাংশ অন্যান্য অংশগুলো চিহ্নিত করা হয়নি।  সেগুলো ছিল মুসলমানদের জন্য আঠারটি ভাগে ভাগ করা। আবু বকর বলেছেন: আমি উমর বিন আবদুল আজিজ-কে এই বিষয়টি লিখে জানাই।"  [3]

হিযাম বিন সা'দ বিন মুহায়েয়িসা হইতে > আবু মালিক হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আবু বকর বিন আবি সাবরা আমাকে জানিয়েছেন, তিনি যা বলেছেন: যখন আল্লাহর নবীর অংশটি গ্রহণ করা হয়, আল-শিইখ ও আল-নাটা মুসলমানদের জন্য সমভাবে চার-পঞ্চমাংশ হিস্যার অংশ হিসাবে অধিষ্ঠিত হয়।

সা'ইদ বিন আল-মুসায়েব হইতে > আবু মালিক আল-হিমায়েরি হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আবদুল্লাহ বিন আউন; এবং আল-যুহরি হইতে হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মুহাম্মদ আমাকে জানিয়েছেন। তারা যা বলেছেন: আল-কাতিবা ছিল আল্লাহর নবীর এক-পঞ্চমাংশ হিস্যার অংশ। তিনি বলেন: আল্লাহর নবী আল-কাতিবা অংশ থেকে খাবার খান ও তা থেকে তাঁর পরিবারের খরচ প্রদান করেন।

ইবনে ওয়াকিদ বলেন: আমাদের সঙ্গে যা নিশ্চিত করা হয়েছে, তা হলো - খায়বারে এটিই ছিল আল্লাহর নবীর এক-পঞ্চমাংশ হিস্যা। আল্লাহর নবী শুধুমাত্র আল-নাটা ও আল-শিইখ থেকেই খাবার খাননি, তিনি সেখানে মুসলমানদের জন্য হিস্যা নির্ধারণ করেন। আল-কাতিবা ছিল সেই স্থান, যেখান থেকে তিনি খাবার খেয়েছিলেন। যা অনুমান করা হয়, তা হলো - আল-কাতিবায় আট হাজার ব্যারেল খেজুর ছিল। তার অর্ধেক ছিল ইহুদিদের জন্য, অর্থাৎ চার হাজার ব্যারেল। আল-কাতিবায় বার্লি বপন করা হয়েছিল ও সেখান থেকে কাটা হয়েছিল তিন হাজার পরিমাপ, যার অর্ধেক ছিল আল্লার নবীর জন্য; অর্থাৎ, দেড় হাজার পরিমাপ বার্লি। সেখানে ছিল খেজুরের বিচি, সম্ভবতঃ যা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় এক হাজার পরিমাপ; যার অর্ধেক ছিল আল্লাহর নবীর জন্য। আল্লাহর নবী এই সমস্ত বার্লি, খেজুর ও খেজুরের বিচি থেকে মুসলমানদের দান করেন।'---- [*]

[[*] বানু নাদির (পর্ব: ৫২ ও ৭৫) গোত্র  বানু কেইনুকা গোত্র উচ্ছেদের (পর্ব-৫১)মতই মুহাম্মদ খায়বারের ইহুদিদেরও ভিটে-মাটি থেকে বিতাড়িত করতে চেয়েছিলেন, তাঁরা রক্ষা পেয়েছিলেন এই শর্তে যে, তাঁরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের গ্রাস করা “তাঁদেরই জমিতে ফল ও ফসল উৎপাদন” করে উৎপন্ন সেই ফল ও ফসলের অর্ধেকই (৫০ শতাংশ) তাঁদের ভূমির এই নব্য মালিকদের দিয়ে দেবেন। এ বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা "খায়বারে ইহুদিদের পরিণতি!" পর্বে করা হবে।]

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা: [2]

'অতঃপর আল্লাহর নবী আল-কাতিবার অংশ, যেটি ছিল খাস উপত্যকায়, তাঁর আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী ও অন্যান্য পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে বণ্টন করেন। তিনি তা প্রদান করেন তাঁর

[১] কন্যা ফাতিমাকে ২০০ লোড [4];
[২] আলীকে ১০০;
[৩] উসামা বিন যায়েদ-কে ২৫০ লোড খেজুর;
[৪] আয়েশাকে ২০০ লোড;
[৬] আবু বকরকে ১০০;
[৭] আকিল বিন আবু তালিবকে ১৪০;
[৮] বানু জাফরকে ৫০;
[৯] রাবিয়া বিন আল-হারিথ-কে ১০০;
[১০] আল-সালত বিন মাখরামা ও তার দুই পুত্রকে ১০০, যার ৪০ ছিল আল-সালিতের নিজের জন্য;
[১১] আবু নাকিকা-কে ৫০;
[১২] রুকানা বিন আবদু ইয়াজিদ-কে ৫০;
[১৩] কায়েস বিন মাখরামা-কে ৩০;
[১৪] তার ভাই আবুল কাসেমকে ৪০;
[১৫] উবায়েদা বিন আল-হারিথের কন্যাদের ও আল-হুসায়েন বিন আল-হারিথের কন্যাকে ১০০;
[১৬] বানু উবায়েদা বিন আবদু ইয়াজিদ-কে ৬০;
[১৭] ইবনে আউস বিন মাখরামা-কে ৩০;
[১৮] মিসতাহ বিন উথাথা ও ইবনে ইলিয়াসকে ৫০;
[১৯] উম্মে রুমায়েথা-কে ৪০;
[২০] নুয়ায়েম বিন হিন্দ-কে ৩০;
[২১] বুহায়েনা বিনতে আল-হারিথ-কে ৩-;
[২২] উজায়ের বিন আবদু ইয়াজিদ-কে ৩০;
[২৩] উম্মে হাকিম বিনতে আল-যুবায়ের বিন আবদুল মুত্তালিবকে ৩০;
[২৪] জুমানা বিনতে আবু তালিবকে ৩০;
[২৫] ইবনে আল-আকরামকে ৫০;
[২৬] আবদুল রহমান বিন আবু বকরকে ৪০;
[২৭] হমানা বিনতে জাহাশ কে ৩০;
[২৮] উম্মুল-যুবায়েরকে ৪০;
[২৯] দুবা'য়া বিনতে আল-যুবায়েরকে ৪০;
[৩০] আবু খুনায়েশ-কে ৩০;
[৩১] উম্মে তালিবকে ৪০;
[৩২] আবু বাসরা-কে ২০;
[৩৩] নুমায়েলা আল-কালবি-কে ৫০;
[৩৪] আবদুল্লাহ বিন ওহাব ও তার দুই কন্যাকে ৯০, যার ৪০ ছিল তার দুই পুত্রের জন্য;
[৩৫] উম্মে হাবিব বিনতে জাহাশ-কে ৩০;
[৩৬] মালকু বিন আবদা-কে ৩০; এবং
[৩৭] তাঁর নিজ স্ত্রীদেরকে ৭০০।

আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময় ও অতিশয় দয়ালু। একটি স্মারকলিপি, যা আল্লাহর নবী মুহাম্মদ খায়বারের গমের ব্যাপারে তাঁর পত্নীদের প্রদান করেন। তিনি তাদেরকে বিতরণ করেন ১৮০ লোড। তিনি তাঁর কন্যা ফাতিমাকে প্রদান করেন ৮৫ লোড, উসামা বিন যায়েদ-কে ৪০, আল-মিকদাদ বিন আল-আসওয়াদ-কে ১৫, উম্মে রুমায়েথা-কে ৫। যে ডকুমেন্টটি লিখেছিলেন আব্বাস ও যার সাক্ষী ছিলেন উসমান ইবনে আফফান।'---

ইমাম আবু দাউদের (৮১৭-৮৮৯ সাল) বর্ণনা: [5]

'মুজামমি ইবনে জারিয়াহ আল-আনসারি হইতে বর্ণিত: হুদাইবিয়ায় অংশগ্রহণকারী লোকদের মধ্যে খায়বার বণ্টন করে দেয়া হয়।আল্লাহর নবী (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হউক) তা আঠারটি ভাগে ভাগ করে দেন। সেনাদলে লোক সংখ্যা ছিল ১৫০০ জন। তদের মধ্যে অশ্বারোহী ছিল ৩০০ জন। তিনি অশ্বারোহী সৈন্যদের প্রদান করেন দুই অংশ, আর পদাতিক সৈন্যদের এক অংশ পরিমাণ।’

ইমাম মুসলিম (৮২১-৮৭৫ সাল) এর বর্ণনা: [6]

'ইবনে উমর হইতে বর্ণিত: খায়বারে উমর একটি জমি উপার্জন করেন। তিনি আল্লাহর নবীর (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) কাছে আসেন ও এই বিষয়ে আল্লাহর নবীর পরামর্শ কামনা করেন। তিনি বলেন: হে আল্লাহর নবী, আমি খায়বারে জমি অর্জন করেছি। আমি আমার জীবনে এর চেয়ে বেশি মূল্যবান সম্পদ কখনোই উপার্জন করিনি, অতএব এ দিয়ে আমি কী করবো, সে বিষয়ে আপনি কী আমাকে আদেশ করবেন?  তৎক্ষণাৎ তিনি (আল্লাহর নবী) বলেন: যদি তুমি চাও, জমিটি তুমি অক্ষত রাখতে পারো ও তাতে উৎপাদিত শস্যাদি দান (সাদাকা) করতে পারো। তাই উমর তা দান করেন ও ঘোষণা করেন যে, জমিটি যেন অবশ্যই বিক্রয় অথবা উত্তরাধিকারসূত্রে হস্তান্তর অথবা উপহার হিসাবে প্রদান না করা হয়। অতঃপর উমর তা একনিষ্ঠভাবে দরিদ্রদের জন্য, তার নিকটতম আত্মীয়-স্বজনদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, আল্লাহ ও মেহমানদের জন্য উন্মুক্ত করেন। এর তদারককারী কোনো ব্যক্তি যদি এখান থেকে কোনোকিছু যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ খায়, অথবা তার বন্ধু-বান্ধবদের খাওয়ায় ও (নিজের জন্য) এর পণ্য-সামগ্রী মজুদ না রাখে, তবে তাতে কোনো পাপ নেই। ---'

ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা: [7] [8] [9]

'উমর ইবনে খাত্তাব হইতে বর্ণিত: যার হাতে আমার জীবন তার কসম, অন্যান্য মুসলমানরা দরিদ্রতায় পতিত হতে পারে এই ভয়ে যদি আমি ভীত না হতাম, আমি যা কিছু গ্রামাঞ্চল জয় করতাম, সেগুলো (জমিগুলো) আমি (যোদ্ধাদের মধ্যে) ভাগ করে দিতাম; এই কারণে যে আল্লাহর নবী খায়বারের ভূমিগুলো বণ্টন করে দিয়েছিলেন। --'

'আয়েশা হইতে বর্ণিত: যখন খায়বার বিজয় সম্পন্ন হয়, আমরা বলি, "এখন আমরা পেট ভরে খেজুর খেতে পারবো।"’

'ইবনে ওমর হইতে বর্ণিত: “আমরা পেট ভরে খেতে পারিনি, যে পর্যন্ত না আমরা খায়বার বিজয় সম্পূর্ণ করেছিলাম।"’

- অনুবাদ, টাইটেল, [**] ও নম্বর যোগ - লেখক।

>>> খায়বারের জনপদবাসীদের পরাস্ত করার পর মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ কী প্রক্রিয়ায় 'খায়বারে লুন্ঠিত সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ' নিজে গ্রহণ করেছিলেন তাঁর অনুসারীদের মধ্যে বণ্টন করে দিয়েছিলেন, তা আদি উৎসে মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, আল-ওয়াকিদি, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম আবু দাউদের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় অত্যন্ত স্পষ্ট। আল-নাটা ও আল-শিইখ অঞ্চলে লুণ্ঠিত লুটের মালের ভাগাভাগি বিষয়ে যে-অস্পষ্টতা আমরা আগের পর্বটিতে (পর্ব: ১৪৮) প্রত্যক্ষ করেছিলাম, তার ব্যাখ্যাও আমরা আল-ওয়াকিদির ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় খুঁজে পাই। তাঁর এই বিস্তারিত বর্ণনায় যা স্পষ্ট, তা হলো, মুহাম্মদ খায়বারের আল-নাটা, আল-শিইক ও আল-কাতিবা অঞ্চল থেকে লুণ্ঠিত সমস্ত সম্পদ একত্র করার পর তা মোট 'পাঁচটি ভাগে' ভাগ করেন। অতঃপর সেখান থেকে তিনি এক ভাগ "আল্লাহর জন্য"  নির্ধারণ করে প্রথমেই সংরক্ষিত রাখেন। "কে সেই মুহাম্মদের ‘আল্লাহ’, যার জন্য মুহাম্মদ লুটের মালের হিস্যা নির্ধারণ করে রেখেছিলেন?” - তার আলোচনা "কুরান কার বাণী (পর্ব: ১৪)?"পর্বে করা হয়েছে।

অতঃপর, 'আল্লাহর জন্য' সংরক্ষিত এই ভাগটি মুহাম্মদ নিজে হস্তগত করেন, "আল্লাহর নবীর এক পঞ্চমাংশ অংশ (কুরান: ৮:৪১) হিসাবে। অতঃপর এই লুটের মালের উপার্জন তিনি তাঁর নিজের জন্য, তাঁর স্ত্রীদের জন্য ও তাঁর পরিবার সদস্যদের ভরণ-পোষণ ও সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য ব্যয় করেন। এ ছাড়াও তিনি এই লুটের মালের উপার্জন থেকে দান করেন তাঁর অন্যান্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, অনাথ-দরিদ্র ও মুসাফিরদের (পর্ব-১৪৬)

আদি উৎসে আল-ওয়াকিদির ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা আর যে-বিষয়টি জানতে পারি, তা হলো, অধিকাংশ ভাষ্যকারের মতে "আল-কাতিবার সমস্ত লুণ্ঠিত সম্পদই ছিল মুহাম্মদের ভাগের অংশ (এক পঞ্চমাংশ)”; এ ছাড়াও কিছু কিছু ভাষ্যকারদের মতে, তিনি আল-নাটা ও আল-শিইখ অঞ্চলের সমস্ত লুণ্ঠিত সামগ্রীর এক-পঞ্চমাংশও গ্রহণ করেছিলেন, তবে আদি উৎসে এই বিষয়টি বিতর্কিত। অধিকাংশ ভাষ্যকারদের মতে, আল-নাটা ও আল-শিইখ অঞ্চলের সমস্ত লুণ্ঠিত সম্পদ ছিল মুসলমানদের জন্য, তাদের চার-পঞ্চমাংশ হিস্যা!

মুহাম্মদের প্ররোচনায় তাঁর যে অনুসারীরা একদা আবিসিনিয়ায় হিযরত করেছিলেন (পর্ব-৪১), তাঁদের অনেকেই ফিরে এসেছিলেন মক্কায়; যার আলোচনা “শয়তানের বানী- প্রাপক ও প্রচারক মুহাম্মদ (পর্ব-৪২)!"পর্বে করা হয়েছে। যারা সেখানে অবশিষ্ট ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ফিরে এসে খায়বারে মুহাম্মদের সাথে মিলিত হন, মুহাম্মদের খায়বার বিজয় সম্পন্ন হওয়ার পর। যাদের অন্যতম ছিলেন মুহাম্মদের চাচাতো ভাই জাফর ইবনে আবু তালিব (পর্ব-১২৬) ও তাঁর আর এক বিশিষ্ট অনুসারী আবু হুরাইরা [10]। যেহেতু খায়বারের লুটের মালের হিস্যাদাররা ছিলেন মুহাম্মদের সঙ্গে হুদাইবিয়ায় অংশগ্রহণকারী অনুসারীরা, মুহাম্মদ আবু হুরাইরা-কে খায়বারের লুটের মালের কোন হিস্যা প্রদান করেননি। (বুখারী: ৫:৫৯:৫৪১) [11]

ওপরে বর্ণিত ইমাম মুসলিমের বর্ণনায় আমরা আরও জানতে পারি, ওমর ইবনে খাত্তাব খায়বারে যে ভূ-সম্পদ অর্জন করেছিলেন, তার চেয়ে বেশি মূল্যবান সম্পদ তিনি তার জীবনে কখনোই উপার্জন করেননি। আর ইমাম বুখারীর ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি, খায়বার বিজয়ের আগে মুসলমানরা পেট ভরে খেতে পাওয়ার মত আর্থিক সচ্ছলতার অধিকারী ছিলেন না খায়বার বিজয়ের পর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা এত বিশাল পরিমাণ লুটের মাল ও ভূ-সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন যে, তারা এই উপার্জনের মাধ্যমে পার্থিব সচ্ছলতার অধিকারী হতে পেরেছিলেন। মুহাম্মদের আবিষ্কৃত "'জিহাদ' এর ফজিলত (পর্ব-১৩৫)"এখানেই!

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে আল-ওয়াকিদির মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। ইবনে ইশাকের মূল ইংরেজি অনুবাদ ইন্টারনেটে বিনামূল্যে ডাউনলোড লিঙ্ক: তথ্যসূত্র [2]

The detailed narrative of Al-Waqidi (continued): [1]

‘Ibn Wāqid said: It was disputed among us about al-Katība; someone said: [Page 692] It was purely for the Prophet; the Muslims were not troubled about it. Rather, it was for the Prophet. Abdullah b. Nūḥ related to me from Ibn Ghufayr, and Mūsā b. Amr b. Abdullah b. Rāfi from Bashīr b. Yasār, and Ibrāhīm b. Jafar related to me from his father that a sayer said: The fifth of the Messenger of God from Khaybar was from al-Shiqq and al-Naṭā. Qudāma b. Mūsārelated to me from Abū Bakr b. Muammad b. Amr b. izām, who said: Umar b. Abdul Azīz wrote to me during his caliphate saying, “Investigate al-Katība for me!” Abū Bakr said: I asked Amra bt. Abd al-Ramān and she said: Indeed, when the Messenger of God contracted a peace with the Banū Abī l-uqayq he divided Naṭā and al-Shiqq and al-Katība into five parts. Al-Katība was a part of it. The Messenger of God made five “droppings”, and from it he apportioned one dropping for God. Then the Messenger of God said, “O God, I will make your portion in al-Katība.” The first of what came out was that in which it was written al-Katība. So al-Katība was the fifth of the Prophet. The other portions were not marked. They were equal to eighteen shares for the Muslims. Abū Bakr said: I wrote to Umar b. Abd al-Azīz about that.

Abū Bakr b. Abī Sabra related to me from Abū Māik from izām b. Sad b. Muayyia, who said: When the portion of the Prophet was taken out, al-Shiqq and Naṭā constituted four fifths for the Muslims equally. Abdullah b. Awn related to me from Abū Mālik al-Himyarī, from Sa‛īd b. al-Musayyib, [Page 693] and Muammad related to me from al-Zuhrī. They said: al-Katība was the fifth of the Messenger of God. He said: The Messenger of God ate the food from al-Katība and paid his family from it. Ibn Wāqid said: It is confirmed with us that it was the fifth of the Prophet from Khaybar. The Messenger of God did not eat the food of al-Shiqq and al-Naṭā alone, he made them portions for the Muslims. Al-Katība was what he ate from. Al-Katība was estimated at eight thousand barrels of dates. And there was for the Jews half of it, i.e. four thousand barrels. Barley was planted in al-Katība, and three thousand measures were reaped from there, and half of it was for the Prophet, that is, one thousand five hundred measures of barley. There were date stones and perhaps about a thousand measures were gathered, half of which were for the Messenger of God. The Messenger of God gave from all of this barley and dates, and date-stones to the Muslims.’-------

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1]আল-ওয়াকিদির বিস্তারিত বর্ণনা: “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬৯১-৬৯৩; ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩৪০-৩৪১

[2]“সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫২২

[3] উমাইয়া শাসক খলিফা উমর বিন আবদুল আজিজ (৬৮২-৭২০ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন দ্বিতীয় খুলাফায়ে রাশেদিন উমর ইবনে খাত্তাবের নাতি।  তিনি ৭১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৭২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেন।

Narated By Mujammi' ibn Jariyah al-Ansari: Khaybar was divided among the people of al-Hudaybiyyah. The Apostle of Allah (pbuh) divided it into eighteen portions. The army contained one thousand and five hundredpeople. There were three hundred horsemen among them. He gave double share to the horsemen, and a single to the footmen.

Ibn Umar reported: Umar acquired a land at Khaibar. He came to Allah's Apostle (may peace be upon him) and sought his advice in regard to it. He said: Allah's Messenger, I have acquired land in Khaibar. I have never acquired property more valuable for me than this, so what do you command me to do with it? There upon he (Allah's Apostle) said: If you like, you may keep the corpus intact and give its produce as Sadaqa. So 'Umar gave it as Sadaqa declaring that property must not be sold or inherited or given away as gift. And Umar devoted it to the poor, to the nearest kin, and to the emancipation of slaves, aired in the way of Allah and guests. There is no sin for one who administers it if he eats something from it in a reasonable manner, or if he feeds his friends and does not hoard up goods (for himself). --------

Narrated By 'Umar bin Al-Khattab: By Him in Whose Hand my soul is, were I not afraid that the other Muslims might be left in poverty, I would divide (the land of) whatever village I may conquer (among the fighters), as the Prophet divided the land of Khaibar. But I prefer to leave it as a (source of) a common treasury for them to distribute it revenue amongst themselves.

Narrated By 'Aisha: When Khaibar was conquered, we said, "Now we will eat our fill of dates!"

Narrated By Ibn Umar: We did not eat our fill except after we had conquered Khaibar.’

[10] Ibid “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক: আল-ওয়াকিদি, ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬৮৩; ইংরেজি অনুবাদ: পৃষ্ঠা ৩৩৬; Ibid “সিরাত রসুল আল্লাহ”, পৃষ্ঠা ৫২৬

‘Narrated Abu Huraira: When we conquered Khaibar, we gained neither gold nor silver as booty, but we gained cows, camels, goods and gardens. ----‘

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন