আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছর (পর্ব ১৯)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ


{হচ্ছেটা কী? কোনো উপায়েই মক্কা ছেড়ে যাবার সুযোগ পাচ্ছি না! মাঠে যখন আবু জেহেল, তখন মদিনার জন্য সময় বের করা প্রায় অসম্ভব; বিগত ১৮ টি পর্বে যেসব বিষয়ে কথা দিয়ে রেখেছি, তার তালিকা মোটেও ভুলে যাইনি, সময়-সুযোগমত সব বিষয়ের অবতারণা করবো অবশ্যই!

আবু জেহেলের নেতৃত্বে কুরাইশরা নবী মুহাম্মদকে কতটা চাপে ফেলে দিয়েছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া শুরু হবে এ পর্বেই। মুহাম্মদকে পাগল, গণক, কবি, জাদুকর, মিথ্যাবাদী বলা হতে থাকলো মক্কায়, কুরাইশরা বুঝতে শুরু করলেন, মুহাম্মদ এসব নিজে নিজে রচনা করছেন; ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লোকগাথা আর ইহুদি-খ্রিষ্টান-জরাথ্রুষ্ট ধর্মের গল্পগুলোর সংমিশ্রণ করে নিজের মনের আল্লাহর নামে চালানোই হচ্ছে মুহাম্মদের কোরআন!

মুহাম্মদ মানসিকভাবে কুরাইশদের এই ধারণায় কষ্ট পেতে থাকেন, এবং এর বিরোধিতা করে ৮১/৮২/৮৪ তম প্রকাশ নিয়ে আসেন; সাথে চ্যালেঞ্জ দেন, পারলে কুরাইশদের এরকম রচনা উপস্থিত করার! এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা হয়; সে গল্প অন্য কোনো সিরিজের জন্য জমা করে রাখলাম! তবে কুরাইশরাও মুহাম্মদকে একটি চ্যালেঞ্জ দেবেন চ্যালেঞ্জের জবাবে, সেটা নিয়ে কোরআনে আয়াত থাকায় দ্রুতই সে বিষয়ে কথা বলতেই হবে!

মজার বিষয় হচ্ছে, আজ প্রায় ১৫০০ বছর পর এত-এত গবেষণা করে যে সত্য আমরা (সকল মুক্তচিন্তার মানুষেরা) বলে বোঝাতে চাচ্ছি, তা মুহাম্মদের ইসলাম প্রচারের খুব প্রাথমিক অবস্থাতেই মক্কার মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে ধরা পড়ে। মুহাম্মদ কিসের জোরে ক্রমশ এক প্রবল শক্তিশালী ধর্মপ্রচারক হয়ে উঠলেন, তার পরিচয় আগামী কয়েক পর্বেই পরিষ্কার হতে শুরু করবে। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে; যারা ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে রাজাকারের ভূমিকায় দেখেছেন, তাদের পক্ষে সাঈদীকে রাজাকার প্রমাণ করা যতটা সহজ, আমাদের পক্ষে তা ততটাই কঠিন!

সাঈদী যেমন কোটি-কোটি বাংলাদেশী মুসলিমের কাছে একজন ভালো মানুষ, কিন্তু সত্যটা জানে, তার সময়কালীন প্রত্যক্ষদর্শী গুটিকয়েক মানুষেরা; ঠিক তেমনটা হয়েছে নবী মুহাম্মদের বেলায়, ১৩০ কোটি মুসলমানের চোখের মণি ভালো মানুষটি আদতে ছিলেন; একজন বুদ্ধিমান, সুপ্ত প্রতিভাধর কবি, মানসিক রোগী, মরু ডাকাত দলের প্রধান, দাস ও নারীবন্দী ব্যবসায়ী, প্রবলভাবে একপেশে পুরুষ এবং সময় সময়ে প্রচণ্ড নৃশংস একজন বিকৃত মানুষ! ইসলামের ইতিহাসে, হাদিসের পাতায় পাতায়, আর কোরআনের কাব্যময়তার আড়ালে এখনও তার ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়; তবে তা তাঁর সমসাময়িক সময়ে আবু জেহেল যেভাবে সহজে বুঝতে পেরেছিলেন, আমাদের জন্য ততটা সহজ নয়!

যথাযথ নিয়মে মুহাম্মদ তার নবীন সাহাবীদের বেহেস্তের লোভ আর দোযখের ভয় দেখিয়ে আয়াত প্রকাশ করতে থাকেন। আবু জেহেল নবীন মুসলিমদের মক্কায় স্বাভাবিক চলাচলে বাধা দিতে থাকেন, নব্য মুসলিমগণ তাদের নিজ নিজ পরিবার থেকে প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হতে শুরু করেন। কুরাইশ প্রতিনিধি দল পাঠানো হয় হাবাশা/ইথিউপিয়া থেকে দেশত্যাগী মুসলিমদের ফিরিয়ে আনার জন্য। মুহাম্মদও আয়াতের মাধ্যমে ঘুরেফিরে একই গান গাইতে থাকেন! এরপর —

আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের সূত্র পাবেন না, যতক্ষণ না পোষ্টের শেষে উল্লেখিত "আয়াত প্রকাশের মনোজগত" পড়বেন! 

কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ১৯ তম পর্ব; এই পর্বে থাকছে মক্কা - দ্বিতীয় অধ্যায়: দেড় কিলোমিটারে সাত বছরের ১২ তম চার অংশ। অনুবাদের ভাষা একাধিক বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৮১ তম প্রকাশ: সূরা আত্ব তূর (৫২) (পাহাড়), ২৯ থেকে ৪৯ আয়াত:

২৯. কাজেই তুমি উপদেশ দিতে থাক, তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি গণকও নও, আর পাগলও নও।
৩০. তারা কি বলতে চায় যে, সে একজন কবি, আমরা তার জন্য কালের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করছি।
৩১. বল: তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।
৩২. তাদের বুদ্ধি বিবেক কি তাদেরকে এ নির্দেশ দেয়, নাকি তারা মূলতঃই এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়?
৩৩. তারা কি বলে: এই কুরআন তার নিজের রচনা? বরং তারা অবিশ্বাসী।
৩৪. যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবে এর অনুরূপ কোনো রচনা উপস্থিত করুক।
৩৫. তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
৩৬. নাকি তারা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারা তো অবিশ্বাসী
৩৭. নাকি তোমার প্রতিপালকের ধনভাণ্ডারগুলো তাদের হাতে, না তারা এর নিয়ন্ত্রক?
৩৮. নাকি তাদের কোনো সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।
৩৯. তাহলে কি কন্যাসন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্রসন্তান তোমাদের জন্য?
৪০. নাকি তুমি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাচ্ছ, যার ফলে তারা ঋণে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছে?
৪১. নাকি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লেখে?
৪২. নাকি তারা ষড়যন্ত্র করতে চায়? অতএব যারা কুফরী করে, তারাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার।
৪৩. না তাদের আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য আছে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র।
৪৪. তারা আকাশের কোনো খণ্ড ভেঙে পড়তে দেখলেও বলবে: এটা তো এক পূঞ্জীভুত মেঘ।
৪৫. কাজেই তাদেরকে উপেক্ষা কর, যতক্ষণ না তারা সাক্ষাৎ করে তাদের সেদিনের, যেদিন তারা হবে বজ্রাহত।
৪৬. যেদিন তাদের ষড়যন্ত্র কোনো কাজে আসবে না এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না।
৪৭. এ ছাড়াও আরও শাস্তি রয়েছে যালিমদের জন্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
৪৮. ধৈর্য ধারণ কর তোমার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর
৪৯. এবং রাত্রির কিছু অংশে এবং তারকা অস্তমিত হওয়ার সময় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৮২ তম প্রকাশ: সূরা আশ শুআরা (২৬) (কবিগণ), ১ থেকে ৫১ আয়াত:

১. ত্বা, সীন, মীম।
২. এগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
৩. তারা বিশ্বাস করে না বলে তুমি হয়তো মর্মব্যথায় আত্মঘাতী হবে।
৪. আমি ইচ্ছা করলে আকাশ হতে তাদের নিকট এক নিদর্শন প্রেরণ করতাম, ফলে তাদের গ্রীবা বিনত হয়ে পড়ত ওর প্রতি।
৫. যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোনো নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৬. তারা তো মিথ্যা জেনেছে, সুতরাং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত, তার প্রকৃত বার্তা তাদের নিকট শীঘ্রই এসে পড়বে।
৭. তারা কি ভূপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।
৮. নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
৯. তোমার পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।
১০. স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মূসাকে ডেকে বললেন: তুমি যালিম সম্প্রদায়ের নিকট চলে যাও 
১১. ফেরাউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করে না?
১২. সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে দেবে।
১৩. এবং আমার হৃদয় সংকুচিত হয়ে পড়ছে, আর আমার জিহবা তো সাবলীল নয়, সুতরাং হারুনের প্রতিও প্রত্যাদেশ পাঠান।
১৪. আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আছে। অতএব আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।
১৫. আল্লাহ বললেন: না কখনই নয়, অতএব তোমরা উভয়ে আমার নিদর্শনসহ যাও, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি শ্রবণকারী।
১৬. অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।
১৭. যাতে তুমি বনী-ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।
১৮. ফেরাউন বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায় আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? এবং তুমি আমাদের মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
১৯. তুমি তো তোমার কাজ যা করার তা করেছ; তুমি অকৃতজ্ঞ।
২০. মূসা বলল, আমি সে অপরাধ তখন করেছি, যখন আমি ভ্রান্ত ছিলাম। 
২১. অতঃপর আমি যখন তোমাদের ভয়ে ভীত হলাম, তখন আমি তোমাদের নিকট হতে পালিয়ে গিয়েছিলাম; অতঃপর আমার রাব্ব আমাকে জ্ঞান দান করেছেন এবং আমাকে রাসূল করেছেন।
২২. আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছ, তা তো এই যে, তুমি বানী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ।
২৩. ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কী?
২৪. মূসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
২৫. ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, তোমরা কি শুনছ না?
২৬. মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।
২৭. ফেরাউন বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রসূলটি নিশ্চয়ই বদ্ধ পাগল।
২৮. মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।
২৯. ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।
৩০. মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?
৩১. ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।
৩২. অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করলে তৎক্ষণাৎ তা এক সুস্পষ্ট অজগর হল।
৩৩. আর মূসা হাত বের করল, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল।
৩৪. ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।
৩৫. এ তোমাদেরকে তোমাদের দেশ হতে তার জাদুবলে বহিষ্কার করতে চায়! এখন তোমরা কী করতে বল? 
৩৬. তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।
৩৭. তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকরকে উপস্থিত করে।
৩৮. অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
৩৯. এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।
৪০. যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি - যদি তারাই বিজয়ী হয়।
৪১. যখন জাদুকররা আগমন করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?
৪২. ফেরাউন বলল: হ্যাঁ, তখন তোমরা অবশ্যই আমার নিকটজনদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
৪৩. মূসা তাদেরকে বললঃ তোমাদের যা নিক্ষেপ করার, তা নিক্ষেপ কর।
৪৪. অতঃপর তারা তাদের রজ্জু ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তারা বলল: ফেরাউনের মর্যাদার শপথ! আমরাই বিজয়ী হব।
৪৫. অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।
৪৬. তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।
৪৭. তারা বলল: আমরা ঈমান আনলাম জগতসমূহের রবের প্রতি
৪৮. যিনি মূসা ও হারুনের প্রতিপালক।’
৪৯. ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।
৫০. তারা বলল: কোন ক্ষতি নেই, আমরা আমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করব।
৫১. আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৮৩ তম প্রকাশ: সূরা আদ দাহর (৭৬) (মানুষ), ১ থেকে ৭, ১১ থেকে ৩১ আয়াত:

১. মানুষের উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে, যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। 
২. আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিলিত শুক্রবিন্দু হতে, তাকে পরীক্ষা করার জন্য; এ জন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
৩. আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।
৪. আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি শিকল, বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।
৫. নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে কাফুর মিশ্রিত পানপাত্র।
৬. এটা একটা ঝরনা, যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে - তারা একে প্রবাহিত করবে।
৭. তারা কর্তব্য পালন করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিন বিপত্তি হবে ব্যাপক।
১১. যার ফলে আল্লাহ তাদেরকে সে দিনের অনিষ্ট হতে রক্ষা করবেন আর তাদেরকে দেবেন সজীবতা ও আনন্দ।
১২. আর তাদের ধৈর্যশীলতার পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে দেয়া হবে জান্নাত ও রেশমী বস্ত্র।
১৩. সেখানে তারা সমাসীন হবে সুসজ্জিত আসনে, তারা সেখানে অতিশয় গরম ও অতিশয় শীত অনুভব করবে না।
১৪. উহার বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং এর ফলমূল সম্পূর্ণ রূপে তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে।
১৫. তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রূপার পাত্রে এবং স্ফটিকের মত পানপাত্রে।
১৬. রূপালী স্ফটিক পাত্রে পরিবেশনকারীরা যথাযথ পরিমাণে উহা পূর্ণ করবে।
১৭. তাদেরকে পান করানোর জন্য এমন পাত্র পরিবেশন করা হবে, যাতে আদার মিশ্রণ থাকবে।
১৮. সেখানে আছে একটা ঝরনা, যার নাম সালসাবীল।
১৯. তাদেরকে পরিবেশন করবে চির কিশোরগণ, তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা।
২০. তুমি যখন সেখানে দেখবে, দেখতে পাবে ভোগ বিলাসের উপকরণ এবং বিশাল রাজ্য।
২১. তাদের আবরণ হবে সূক্ষ্ম সবুজ রেশম ও স্থূল রেশম; তারা অলংকৃত হবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে, আর তাদের রাব্ব তাদেরকে পান করাবেন বিশুদ্ধ পানীয়।
২২. অবশ্যই এটাই তোমাদের পুরস্কার এবং তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা স্বীকৃতি প্রাপ্ত।
২৩. আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি পর্যায়ক্রমে।
২৪. সুতরাং ধৈর্যের সাথে তোমার পালনকর্তার নির্দেশের প্রতীক্ষা কর এবং তাদের মধ্য কোনো পাপিষ্ঠ অথবা কাফিরের আনুগত্য কর না।
২৫. এবং তোমার পালনকর্তার নাম স্মরণ কর সকাল সন্ধ্যায়।
২৬. রাতের কিয়দংশ তাঁর প্রতি সাজদায় নত হও এবং রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
২৭. তারা ভালবাসে পার্থিব জীবনকে এবং পরবর্তী কঠিন দিনকে তারা উপেক্ষা করে চলে।
২৮. আমি তাদের সৃষ্টি করেছি এবং তাদের গঠন সুদৃঢ় করেছি। আমি যখন ইচ্ছা করব, তখন তাদের পরিবর্তে তাদের অনুরূপ এক জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করব।
২৯. এটা উপদেশ, অতএব যার ইচ্ছা হয়, সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।
৩০. তোমরা ইচ্ছা করবে না, যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
৩১. তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেন, কিন্তু যালিমদের জন্য তো তিনি প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তদ শাস্তি।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৮৪ তম প্রকাশ: সূরা ছোয়াদ (৩৮) (আরবি বর্ণ), ১ থেকে ৬৬ আয়াত:

১. ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,
২. কিন্তু কাফিরেরা ঔদ্ধত্য ও বিরোধিতায় ডুবে আছে।
৩. এদের পূর্বে আমি কত জনগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি, তখন তারা আর্ত চিৎকার করেছিল। কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোনোই উপায় ছিল না।
৪. তারা বিস্ময় বোধ করছে যে, তাদের নিকট তাদেরই মধ্য হতে একজন সতর্ককারী এসেছে এবং কাফিরেরা বলে: এতো এক জাদুকর, মিথ্যাবাদী,
৫. সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয় এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।
৬. তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি এ কথা বলে প্রস্থান করে যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের পূজায় দৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই এ বক্তব্য কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।
৭. আমরা সাবেক ধর্মে এ ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া ব্যাপার বৈ নয়।
৮. আমাদের মধ্য হতে কি তারই ওপর কুরআন অবতীর্ণ হল? প্রকৃত পক্ষে তারা আমার কুরআনে সন্দিহান, তারা এখনও আমার শাস্তি আস্বাদন করেনি। 
৯. নাকি তাদের কাছে আপনার পরাক্রান্ত দয়াবান পালনকর্তার রহমতের কোন ভাণ্ডার রয়েছে?
১০. তাদের কি সার্বভৌমত্ব আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছুর ওপর? থাকলে তারা সিড়ি বেয়ে আরোহণ করুক। 
১১. বহু দলের এই বাহিনীও সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে।
১২. তাদের পূর্বেও রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল নূহের সম্প্রদায়, ‘আদ, বহু শিবিরের অধিপতি ফেরাউন
১৩. আর সামূদ, লূত সম্প্রদায় ও আইকার অধিবাসী। তারা ছিল এক একটি বিশাল বাহিনী।
১৪. তাদের প্রত্যেকেই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে। ফলে তাদের ক্ষেত্রে আমার শাস্তি হয়েছে যথার্থ।
১৫. তারা তো অপেক্ষা করছে একটি মাত্র একটি মাত্র মহাগর্জন ব্যতীত আর কিছুর, যাতে কোনো বিরাম থাকবে না।
১৬. তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! হিসাবের দিনের আগেই আমাদের প্রাপ্য (শাস্তি) আমাদেরকে তাড়াতাড়ি দিয়ে দিন।
১৭. তারা যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর। আর স্মরণ কর, আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদের কথা; সে ছিল অতিশয় আল্লাহর অভিমুখী।
১৮. আমি নিয়োজিত করেছিলাম পর্বতমালাকে, ওরা সকাল সন্ধ্যায় তার সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করত।
১৯. আর পক্ষীকুলকেও, যারা তার কাছে সমবেত হত। সবাই ছিল তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
২০. আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্মীতা।
২১. তোমার নিকট বিবাদকারী লোকের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি, যখন তারা প্রাচীর ডিঙিয়ে এল ইবাদাতখানায়
২২. এবং দাউদের নিকট পৌঁছল, তখন তাদের কারণে সে ভীত হয়ে পড়ল। তারা বলল: ভীত হবেন না, আমরা দুই বিবাদমান পক্ষ - আমরা একে অপরের ওপর যুল্‌ম করেছি; অতএব আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করুন, অবিচার করবেন না এবং আমাদেরকে সঠিক পথ নির্দেশ করুন।
২৩. এ আমার ভাই - এর আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে মাত্র একটি দুম্বা; তবুও সে বলে আমার জিম্মায় এটি দিয়ে দাও, এবং কথায় সে আমার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করেছে।
২৪. দাউদ বলল: তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলির সাথে যুক্ত করার দাবি করে সে তোমার প্রতি যুল্‌ম করেছে। শরীকদের অনেকে একে অন্যের ওপর অবিচার করে থাকে, করে না শুধু মুমিন ও সৎ কর্মশীল ব্যক্তিরা এবং তারা সংখ্যায় স্বল্প। দাউদ বুঝতে পারল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করলাম। অতঃপর সে তার রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করল এবং নত হয়ে লুটিয়ে পড়ল ও তাঁর অভিমুখী হল।
২৫. অতঃপর আমি তার ক্রটি ক্ষমা করলাম। আমার নিকট তার জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা ও শুভ পরিণাম।
২৬. হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর না, কেননা এটা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করবে। যারা আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিনকে বিস্মৃত হয়ে আছে।
২৭. আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত কোনোকিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি, যদিও কাফিরদের ধারণা তাই। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।
২৮. যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়, আমি কি তাদেরকে সমগন্য করব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করব?
২৯. এক কল্যাণময় কিতাব ইহা, আমি তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে।
৩০. দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে ছিল উত্তম বান্দা এবং সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী।
৩১. যখন অপরাহ্নে তার সামনে ধাবমান উৎকৃষ্ট অশ্বরাজিকে উপস্থিত করা হল
৩২. তখন সে বলল: আমি তো আমার রবের স্মরণ হতে বিমুখ হয়ে ঐশ্বর্য প্রীতিতে মগ্ন হয়ে পড়েছি, এদিকে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেছে।
৩৩. ওগুলোকে পুনরায় আমার সামনে নিয়ে এসো। অতঃপর সে ওগুলোর পা ও গলদেশ ছেদন করতে লাগল।
৩৪. আমি সুলাইমানকে পরীক্ষা করলাম এবং তার আসনের উপর রাখলাম একটি দেহ; অতঃপর সুলাইমান আমার অভিমুখী হল।
৩৫. সে বলল: হে আমার রাব্ব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং এমন এক রাজ্য দান করুন যার অধিকারী আমি ছাড়া আর কেহ না হয়। আপনি তো পরম দাতা।
৩৬. তখন আমি বাতাসকে তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌঁছাতে চাইত।
৩৭. এবং শাইতানদেরকে, যারা সবাই ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী।
৩৮. এবং শৃংখলে আবদ্ধ করলাম আরও অনেককে।
৩৯. এগুলো আমার অনুগ্রহ, অতএব, এগুলো কাউকে দাও অথবা নিজে রেখে দাও-এর কোনো হিসেব দিতে হবে না।
৪০. নিশ্চয় তার জন্যে আমার কাছে রয়েছে মর্যাদা ও শুভ পরিণতি।
৪১. স্মরণ কর আমার বান্দা আইয়ুবকে! যখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিল: শাইতান তো আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলেছে।
৪২. আমি তাকে বললাম: তুমি তোমার পা দ্বারা ভূমিতে আঘাত কর, এইতো গোসলের সুশীতল পানি ও পান করার পানীয়।
৪৩. আমি তাকে দিলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও, আমার অনুগ্রহস্বরূপ ও বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য উপদেশস্বরূপ।
৪৪. আমি তাকে আদেশ করলাম: এক মুষ্টি তৃণ তুলে নাও এবং তা দ্বারা আঘাত কর ও শপথ ভঙ্গ কর না। আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম বান্দা সে! সে ছিল আমার অভিমুখী।
৪৫. স্মরণ কর, আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের কথা, তারা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদর্শী।
৪৬. আমি তাদেরকে অধিকারী করেছিলাম এক বিশেষ গুণের, ওটা ছিল পরকালের স্মরণ।
৪৭. অবশ্যই তারা ছিল আমার মনোনীত ও উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
৪৮. স্মরণ কর ইসমাঈল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের কথা, তারা প্রত্যেকেই ছিল সজ্জন।
৪৯. এটা এক স্মরণীয় বর্ণনা এবং খোদাভীরুদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস
৫০. চিরস্থায়ী জান্নাত, তাদের জন্য উম্মুক্ত রয়েছে যার দরজাগুলো।
৫১. সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা বহুবিধ ফলমূল ও পানীয়ের জন্য আদেশ দিবে।
৫২. আর তাদের পাশে থাকবে আনত নয়না সমবয়স্কা তরুণীরা।
৫৩. এটাই হিসাব দিনে তোমাদেরকে দেয়া প্রতিশ্রুতি।
৫৪. এটাই আমার দেয়া রিযক, যা নিঃশেষ হবে না।
৫৫. এটা এরূপই! আর সীমালংঘনকারীদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্টতম ঠিকানা
৫৬. জাহান্নাম, সেখানে তারা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল।
৫৭. এটা সীমালংঘনকারীদের জন্য। সুতরাং তারা আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানি ও পুঁজ।
৫৮. আরও আছে এ রূপ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি।
৫৯. এই তো এক বাহিনী, তোমাদের সাথে প্রবেশ করেছে। তাদের জন্য নেই অভিনন্দন, তারা তো জাহান্নামে জ্বলবে।
৬০. তারা বলবে, তোমাদের জন্যে ও তো অভিনন্দন নেই। তোমরাই আমাদেরকে এ বিপদের সম্মুখীন করেছ। অতএব এটি কতই না ঘৃণ্য আবাসস্থল।
৬১. তারা বলবে: হে আমাদের রাব্ব! যে এটা আমাদের সম্মুখীন করেছে জাহান্নামে তার শাস্তি আপনি দ্বিগুণ বর্ধিত করুন!
৬২. তারা আরও বলবে: আমাদের কী হল যে, আমরা যে সব লোককে মন্দ বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি না?
৬৩. তাহলে কি আমরা তাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র মনে করতাম, নাকি তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিবিভ্রম ঘটেছে?
৬৪. এটা নিশ্চিত সত্য জাহান্নামীদের এই বাদ-প্রতিবাদ।
৬৫. বল: আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, যিনি এক, পরাক্রমশালী
৬৬. যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী এবং এগুলির মধ্যস্থিত সবকিছুর রাব্ব, যিনি পরাক্রমশালী, মহা ক্ষমাশীল।

আয়াত প্রকাশের মনোজগত: যদি সিরিজটি নিয়মিত পড়েন, তবে মুহাম্মদের মনোজগত আপনার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে ক্রমশ। মুহাম্মদের এ সময়ে দরকার বড় মাপের শক্তিশালী মানসিক সহযোগিতা, ঠিক যে মাপের মানসিক বিরোধিতা তিনি মক্কা থেকে পেতে শুরু করেছেন।

আবু জেহেল যদি মুহাম্মদের মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত থাকতেন (বদরে মারা না যেতেন), তবে হয়ত ইসলামের এ ইতিহাস লিখতে হতো না আমার, আর আপনিও পড়ে বিরক্ত হতেন না! 

এটা ঠিক তেমনই; যেমন খুব দ্রুত ৪/৫ জন বিশিষ্ট কুরাইশ মুসলিম না হলে, মুহাম্মদের ইসলাম মক্কাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতো। ইয়াসরিব/মদিনা তো ৪৫০ কিলোমিটার দুরে!

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন