আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

পুতুলের হক কথা - ২৮

লিখেছেন পুতুল হক

১০৬.
বেহেস্তের কথা শুনতেই বিরক্ত লাগে। কোনো কাজকর্ম নেই সারাদিন, শুধু মজার মজার খাবার খাও আর সেক্স কর। একনাগাড়ে এই পৃথিবীতে কতজন মানুষ এরকম একটা জীবন সহ্য করতে পারবে? বেহেস্ত একটু অন্যরকম হলে ভালো হত না? এই যেমন, আমরা আমাদের ভুলগুলো শুধরে আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে পারলাম। শারীরিক বা আর্থিক কারণে যে মানুষগুলো পৃথিবীতে অবিকশিত রয়ে গেলো, তারা বিকশিত হবার সুযোগ পেলো। দুর্ঘটনা বা যুদ্ধের কিংবা অসুখের কারণে যারা পূর্ণ জীবন পায়নি, তাঁরা একটা পরিপূর্ণ জীবন পেলো। বিয়ে না করে শেষ জীবনে একাকীত্বের শিকার মানুষগুলো যথাসময়ে বিয়ে করে ফেললো, যেসব দম্পতির ছেলেমেয়ে ছিল না, তাঁরা সন্তান পেলো। যার সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল কবিতার একটি বই বের করার কিংবা একটি উপন্যাস লেখার, সে তা করে ফেললো। যার সখ ছিল গায়ক হবার, সে গায়ক হল, যার সখ ছিল চিত্রকর হবার সে চিত্রকর হল... এরকম আরকি! বেহেস্ত সুখের হবে তখনই, যখন মানুষের অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো পূর্ণতা পাবে। ক্ল্যাসিকাল নাচ আমি খুব পছন্দ করি। আমার প্রিয় মানুষের সাথে ভরতনাট্যম কিংবা ফ্লেমিংগো নাচবো রোজ সকালে, দুপুরে, সন্ধ্যায়, সারারাত - এমন একটা বেহেস্ত কি আছে? খুব ছোটোবেলায় গ্রামে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। বরযাত্রী আমরা বউ নিয়ে ফিরেছিলাম মাঝরাতে নৌকায় ক্ষেতের পাশের খাল দিয়ে। সেদিন পূর্ণিমা ছিল। আকাশ ভরা তারা ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসের শীতল বাতাস ছিল। অনেকে নৌকা থেকে নেমে আইল ধরে হেঁটেছিল। কখনো হঠাৎ করে কেউ গেয়ে উঠেছিল কোনো গানের কয়েকটি লাইন। কী কারণে যে হঠাৎ করে কান্না আরম্ভ করেছিলাম! নওশা ছোটমামা জিজ্ঞেস করলে বলি, আমার কেমন যেন লাগে। এখন বুঝি, সে-রাতে আমার অসম্ভব ভালো লেগেছিল। বেহেস্তে কি সেরকম একটা রাত পাওয়া যাবে?

১০৭.
হাজার হাজার বছর আগে বাইবেল, বেদ বা কোরআন লেখা হয়েছিলো হয়তো। ওসব বই যারা লিখেছিল, তাদের কথামত পৃথিবী ঘোরে না, সূর্য-চন্দ্রের উদয়-অস্ত হয় না। ওসব বই না লেখা হলেও আকাশ-নদী-সমুদ্র-বায়ু-পশুপাখী সব কিছু তাদের নিয়মে চলতো। কৃষ্ণ, মোহাম্মদ বা ঈসা, মুসা নামে কেউ যদি জন্মেও থাকে, তারা পারেনি ভ্রুণ ছাড়া একটা শিশু জন্ম দিতে, গাছ ছাড়া একটা ফুল জন্ম দিতে, মেঘ ছাড়া বৃষ্টি দিতে। প্রকৃতির ওপর তারা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। তারা প্রভাব ফেলেছে শুধু মানুষের উপর। তাদের কথা শুনে মানুষ বিভক্তই হয়েছে শুধু।

১০৮.
আমাদের বাসায় শিবিরের যে-ছেলেটি আসে, সে গতকাল ছুটি নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি চলে গেছে। ফোনে খবর এসেছিলো, ওর বাবা ওর ছোটভাইকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। কিছুক্ষণ আগেই জেনে নিলাম কেন ভদ্রলোক এমন কাজটি করলো। বাবা ভদ্রলোক তাবলীগ জামাতের সমর্থক। তার গ্রামের প্রায় সবাই এই মনোভাবের। তার বাড়িতে নির্দেশ দেয়া আছে কেউ পীরের মুরিদ হতে পারবে না, মাজারে যেতে পারবে না, ওরশে যেতে পারবে না, কোন সূফীর শিষ্য হতে পারবে না। ছেলেটির নানাবাড়ির লোকজন আবার মাইজভাণ্ডারীর মুরিদ। নানাবাড়ির গ্রামে ওরশ হবে, গানবাজনা হবে, তাই ছোট ভাই লুকিয়ে সেখানে গিয়েছিল। বাবা ভদ্রলোক জেনে যায় এবং বাড়ি ফেরার পর এই কাণ্ড ঘটায়। ধর্ম এক, শুধুমাত্র তাকে পালন করার কিছু রীতিনীতির ভিন্নতার কারণে বাবা ছেলেকে প্রায় খুন করতে যাচ্ছিল। হিন্দু, খ্রিষ্টান বা ইহুদিদের কাছে তাদের ধর্ম দাঁত-নখ হারিয়ে যেমন একটা মিথে পরিণত হয়েছে। আমি আশা করি, ইসলাম এক সময় মুসলমানদের কাছে সেরকম একটা মিথে পরিণত হবে। কিন্তু সেটা কবে? মুসলমানদের খুলির ভেতর মগজ থাকে না, থাকে মোহাম্মদ। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রতিষেধক কবে পাবো আমরা?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন