আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১০

একটি মিথ্যা ঘটনা

লিখেছেন কৌস্তুভ

* বর্তমান বা অতীত, বাস্তব বা কল্পনা কোনো কিছুর সঙ্গেই এ গল্পের কোনো দুশ্চরিত্রের বা দুর্ঘটনাবলীর মিল নাই। *

সিন্ধু নদের তীরে সন্ধ্যা নেমেছে। শীতকাল আসছে, একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে আজকাল। চাদরটা গায়ে জড়িয়ে নিলেন আলেকজান্ডার। মনটন খারাপ কদিন থেকে। প্রিয় সাথী হেফাস্টিওন কদিন থেকে রোজ রাত্রেই ‘মাথা ধরে আছে’ বলছে। যুদ্ধবিগ্রহের সময়েও যদি রাত্রে একটু কামকাজ না হয় তবে চলে কি করে? অবশ্য তিনি লোক ভাল, সেনাবাহিনীর ছেলেছোকরাদের উপরে জোর করতে রাজি নন; সেই জন্যেই না সেনারা এত শ্রদ্ধাভক্তি করে তাদের নেতাকে। আশপাশের গ্রামেরই কিছু ছেলেপিলেকে নিয়ে আসতে লোক পাঠাতে হবে মনে হচ্ছে।

বাইরে গণ্ডগোলের আওয়াজে ভুরু কুঁচকে তাকান তিনি। পাশে ফিরে নীলচোখো তাতারী দেহরক্ষিণীকে বললেন, “মোনা ডার্লিং, দেখো তো, বাইরে কে শোরগোল করছে?” কিন্তু তার আগেই বাইরে সেনাপতি অ্যান্টিগোনাসের গলা শোনা যায়, “হুজুর, একটু বিরক্ত করতে পারি?”

“ভড়ং রাখো! হইহট্টগোল ছেড়ে ভিতরে এসে বল, এত হাল্লা কিসের?”

পর্দা সরিয়ে ভিতরে ঢোকে অ্যান্টিগোনাস, সঙ্গে দুজন রক্ষী একজন বন্দীকে নিয়ে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা মনে হয়। ‘নিশ্চয়ই সেই... কী যেন নাম... চন্দ্রগুপ্ত ব্যাটার মত শিবিরের আশপাশে ঝাড়ি মারছিল’, ভাবেন তিনি।

“কী, ব্যাপার কী?”

“আজ্ঞে, আজকে কুচকাওয়াজের পর বিকেলবেলা জনকয়েক সৈন্য মিলে পাশের গ্রামে একটু ইভনিং-ওয়াকে গিয়েছিল স্যার। জোয়ান ছেলেপিলে, বুঝতেই পারছেন, ওদেরও তো একটু সাধআহ্লাদ আছে...”

“হুঁ হুঁ, সাধআহ্লাদ! খুব বুঝেছি, তারপর বলো...”

মেজাজটা আরো চটে যায় তাঁর। ব্যাটারা গ্রামে গিয়েছিল, তাঁকে না জানিয়েই? গেছে সে যাক, কিন্তু যদি জানিয়ে যেত তাহলে তাঁর জন্যও একটু ব্যবস্থা দেখতে বলে দেওয়া যেত। তা না, আক্কেলজ্ঞানহীন ছোঁড়ারা!

“আজ্ঞে সেই গ্রামের চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে এই হতভাগা চশমা বিক্রি করছিল স্যার!”

“চশমা বিক্রি করছিল তো ধরে আনার কি আছে? ট্যাক্স দেয়নি বুঝি পাজিটা?”

“না না স্যার, ব্যাটা কি চশমা বেচছিল শুনুন একবার। ওই ছোঁড়া, বল না কি বেচছিলি!”

সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে বক্তৃতা দিতে শুরু করে বন্দী। “বন্ধুগণ, আসুন, আমার এই গে-ব্যান চশমা পরে ইহকাল ও পরকালের জন্য অশেষ নেকী হাসিল করুন। এই দুনিয়ায় কলঙ্ক হল সমকামীরা, তাদের দেখলেই কোতল করাই ফরজ; কিন্তু তাদের দেখলেও গুনাহ হয়, তাই আসুন, পবিত্র পানিতে ধোয়া আমার এই গে-ব্যান চশমা পরুন, এর মধ্যে দিয়ে তাদের দেখলে আর পাপ হবে না। দলে দলে আসুন, ছেলে বুড়ো আসুন, আমীর গরীব আ...”

রাগে কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়ান আলেকজান্ডার, তাঁর মূর্তি দেখে চুপ করে যায় সে।

“হতভাগা নচ্ছার, তোর সাহস তো কম না, তুই গ্রীসাধিপতির সামনে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলার সাহস পাস?”

“ও, তোরা কাফের! তাই ভাবি, ব্যাটাদের দাড়ি নেই কেন? এই মেয়েগুলোই বা এমন বেহায়ার মত পোষাক পরে আছে কেন? অ্যাই মেয়েরা, বোরখা কোথায় তোদের? লজ্জাশরম নেইকো?” শ্বেতাঙ্গিনী তাতারীদের দিকে তাকিয়ে একফোঁটা লুল গড়িয়ে পড়ে তার ঠোঁটের পাশ দিয়ে।

“কী, জবাব দিস না যে? খোদ আলেকজান্ডারের সামনে দাঁড়িয়েই এসব কথা বলিস, জানিস না উনি নিজেও সমকামী?” হুঙ্কার দেয় অ্যান্টিগোনাসও, হুজুরকে খুশী রাখতে হবে তো।

“জানি না আবার? এই দুনিয়ার এবং স্বর্গ-নরকের সব খবরই আমি রাখি। এই আলেকজান্ডারেরও ঠিকুজি-কুলুজি সবই জানি, শুধু ব্যাটাকেই চিনতাম না। জানি জানি, এ মেগাস্থিনিস নামের দেশের রাজা, এর বাপের নাম বুকেফালা, গুরুর নাম হৃষ্টপটোল, শ্বাশুড়ির নাম...”

“চুপ কর পাঁঠা! মেগাস্থিনিস আমার রেকর্ড-কীপার, আমাদের রাজ্যের নাম ম্যাসিডোনিয়া! বুকেফালা আমার ঘোড়ার নাম, কোন সাহসে তাকে আমার বাপের নাম বলিস! আর গুরুর নাম হৃষ্টপটোল বলিস? অ্যারিস্টটল’কে নিয়ে তামাশা? দাঁড়া, তোর হচ্ছে! এই, কে আছিস? বেঁধে নিয়ে যা ওকে, বন্দী করে রাখ, রাত্রে আমার ডিনারের পর তাঁবুতে নিয়ে আসিস... আর দেখ, আমার শরবতে একটু গণ্ডারের শিং বাটা মিশিয়ে দিস, অনেকদিন পর আজ...”

“সাবধান, শয়তান! তুই আমার দেহ পাবি, মন পাবি না! বেহেস্ত তো পাবিই না!”

“মু হা হা হা... তোর মনের ক্যাঁথায় আগুন। আর বাহাত্তরটা হুর দিয়ে আমি করবই বা কি? ওরে, নিয়ে যা না একে এখন...”
...

পরিশ্রান্ত আলেকজান্ডার পাশ ফিরে শুয়ে হাঁক দেন, “ওই, কে আছিস বাইরে?”

নীলচোখো দেহরক্ষিণীর শিফট শেষ হয়েছে, কটাচোখো তাতারী রক্ষিণী ভেতরে এসে বলে “জি হুজুর?”

“একে নিয়ে যা এবার; মেগাস্থিনিসকে বল, এর নামধাম লিখে এবারের মত ছেড়ে দিতে, ফের কোনোরকম গণ্ডগোল করে ধরা পড়লে একেবারে মুন্ডু ঘ্যাচাং করে দিতে বলিস!”

রক্ষিণী তাকে নিয়ে মেগাস্থিনিসের কাছে পৌঁছে দেয়। মেগাস্থিনিস বলে “উঃ, দূরে যা ব্যাটা, বনমানুষ কোথাকার! তোর দাড়িতে ভারি গন্ধ! চান-টান করিস না নাকি?”

“মূর্খ কাফের, তুই কি বুঝবি? এই হিন্দু-অধ্যুষিত হিন্দুস্থানের অপবিত্র জলে চান করব আমি? আরবদেশের পবিত্র পানি ছাড়া আমি চান করি না রে!”

“হুঃ! তা যাক, তোর ডেটা এনট্রি করে রাখি... বল রে নালায়েক, তোর ফার্স্টনেম কী?”

“জোকার...”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন