আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১১

ইসলামে জোরাজুরি বলে কিছু নেই


সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারীর তবে কী হয় বিধান?

নিরক্ষর (মতান্তরে স্বল্পশিক্ষিত) লালনের সরল এই প্রশ্নের গ্রহণযোগ্য জবাব দেয়ার ক্ষমতা নেই মুসলমানদের, তবে লালনভক্তদের ওপর জোর করে নিজস্ব কুৎসিত মতবাদ চাপিয়ে দিতে তাদের তৎপরতা ঈর্ষণীয়! 

কালের কণ্ঠ পত্রিকার খবর: 

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরে লালন ভক্ত ২৮ বাউলকে লাঞ্ছিত করার পর মাথার চুল ও গোঁফ কেটে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। 'ধর্মবিরোধী' কর্মকাণ্ড চালানোর কারণ দেখিয়ে বাউলদের মসজিদে নিয়ে তওবাও পড়ানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে গত বুধবার রাতে পাংশা টেম্পোস্ট্যান্ডে সভা করেন স্থানীয় শাহ জুঁই বাউল শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা।

শাহ জুঁই বাউল শিল্পীগোষ্ঠীর উপদেষ্টা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, হাবাসপুর ইউপির চর রামনগর গ্রামে গত ৫ এপ্রিল লালন ভক্ত প্রবীণ বাউল মোহম্মদ ফকিরের বাড়িতে সাধু সংঘের দুই দিনব্যাপী বার্ষিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ২৮ জন লালন ভক্ত আসেন। সমাপনী দিনে তাঁরা ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান করছিলেন। এ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গিয়ে লালন ভক্তদের লাঞ্ছিত করে। মসজিদে নিয়ে গিয়ে বাউলদের গান না গাওয়ার বিষয়ে তওবা করানোর পাশাপাশি তাঁদের লম্বা চুল ও গোঁফ কেটে দেওয়া হয়।

নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, ঘটনার পরপরই লালন ভক্তরা তাঁর কাছে যান। তিনি সবাইকে নিয়ে পাংশা থানায় যান। এরপর বাউল মোহম্মদ ফকির ১৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
থানায় অভিযোগকারী বাউল মোহম্মদ ফকির বলেন, 'প্রতিবছরের মতো এবারও সাধু সংঘের উদ্যোগে আমাদের বাড়িতে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে পাড়া বেলগাছী গ্রামের ইউনুছ কারি ও চর রামনগর গ্রামের করিম বাজারী, জিন্দার শেখ, জয়নাল শেখসহ প্রায় অর্ধশত লোক আমার বাড়িতে আসে। তাঁরা অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলে একটি মাইক, তিনটি মাইক্রোফোন, তিনটি ব্যাটারি, তিনটি টিউব লাইট ও একজন শিল্পীর বাদ্যযন্ত্রসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এরপর তারা ২৮ জন লালন ভক্তকে পাশের মসজিদের সামনে নিয়ে গিয়ে তওবা পড়ায় এবং কাঁচি দিয়ে এলোমেলোভাবে তাদের চুল ও গোঁফ কেটে দেয়।'

ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারী দলের সঙ্গে ছিলেন পার্শ্ববর্তী কালিকাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিউর রহমান নবাব। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বাউলদের 'অনৈসলামিক' কর্মকাণ্ডকে দায়ী করেন। আতিউর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মুসলিম ধর্মীয় রীতি না মেনে বাউলরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জিন্দা ফয়তা ও এক ওয়াক্ত নামাজ আদায়সহ অনুষ্ঠানের নামে মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করছিল। এটা এলাকার মুসলি্লরা মেনে নিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে বাউলদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় এলাকার কিছু যুবক তাদের চুল ও গোঁফ কেটে দেয়।'

বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে যাওয়া হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুল আজিজ বলেন, যেসব বাউল ভক্তকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তাঁদের কারো বয়স ৬০ বছরের নিচে নয়। অন্যদিকে থানায় অভিযোগকারী বাউল মোহম্মদ ফকিরের ছেলে জিন্না মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, ঘটনার পর থেকে লালন ভক্তরা চাপের মুখে রয়েছেন। এলাকার কথিত মাতব্বর ও প্রভাবশালী লোকজন তাঁদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ও পাংশা থানার উপপরিদর্শক নাসির উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে বিষয়টির সংশ্লিষ্টতা থাকায় খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বুধবার দুইপক্ষকে থানায় ডাকা হয়, কিন্তু বাউলদের পক্ষের কেউ না আসায় সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। আগামী রবিবার আবার দুইপক্ষকে ডাকা হয়েছে।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন