সনাতনী কামিনী - ০১, সনাতনী কামিনী - ০২
শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী--
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি
...
লজ্জা দিয়ে, সজ্জা দিয়ে, দিয়ে আবরণ,
তোমারে দুর্লভ করি করেছে গোপন।
পড়েছে তোমার 'পরে প্রদীপ্ত বাসনা--
অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নারীর কাব্যিক সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে। তিনি পারেননি হিন্দু পিতৃতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে। হিন্দু পিতৃতন্ত্র পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে সফল পিতৃতন্ত্র। এতোটাই সফল যে, তা নারীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, স্বামীর মৃত্যুর পর তার সাথে জ্বলন্ত অগ্নিতে নিজেকে পোড়ালে স্বর্গলাভ হয়! হিন্দু পিতৃতন্ত্র এতো বেশি সফল যে, রবীন্দ্রনাথের মতো বহুমুখী প্রতিভারাও এই পিতৃতন্ত্রের জয়গান গেয়েছেন। সেই পিতৃতন্ত্রের রাজত্ব এখনও ভালোভাবেই বহাল আছে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটা কথা বলেছিলেন, "যাঁরা দাবি করেন, সনাতন ধর্মের নির্ভুল বিধি-ব্যবস্থার জন্যই তা এতো হাজার বছর ধরে তা টিকে আছে, তাঁদেরকে বলতে চাই: টিকিয়া থাকাটাই চরম সার্থকতা নয়। অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে , কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।"
শরৎচন্দ্রের ভাষাতে বলতে হয়, আজকে আমরা তেলাপোকা কতোটা নারীস্বাধীনতা দিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করবো।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান। আজ আপনাদের কিছু অমৃত পান করাবো।
মহাভারতের উল্লেখযোগ্য একটা চরিত্র হলো ভীষ্ম। তাঁর মুখনিঃসৃত বাণী: উহাদের (স্ত্রীলোকদের) মত কামোন্মত্ত আর কেহই নাই। ... কাষ্ঠরশি যেমন অগ্নির, অসংখ্য নদীর দ্বারা যেমন সমুদ্রের ও সর্বভূত সংহার দ্বারা অন্তকের তৃপ্তি হয় না, তদ্রুপ অসংখ্য পুরুষ সংসর্গ করিলেও স্ত্রীলোকের তৃপ্তি হয় না। (১৩/৩৮)
(আহা! পুরুষেরা তো চির-একগামী!)
এবার দেখুন ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের কথা, যিনি নাকি জীবনেও মিথ্যে কথা বলেননি: উহারা (নারীরা) ক্রিয়া-কৌতুক দ্বারা পুরুষদিগকে বিমোহিত করে। উহাদিগের হস্তগত হইলে প্রায় কোনো পুরুষই পরিত্রাণ লাভ করিতে পারে না। গাভী যেমন নূতন নূতন তৃণভক্ষণ করিতে অভিলাষ করে, তদ্রুপ উহারা নূতন নূতন পুরুষের সহিত সংসর্গ করিতে বাসনা করিয়া থাকে। (১৩/৩৯)
মহাভারতের উল্লেখযোগ্য একটা চরিত্র হলো ভীষ্ম। তাঁর মুখনিঃসৃত বাণী: উহাদের (স্ত্রীলোকদের) মত কামোন্মত্ত আর কেহই নাই। ... কাষ্ঠরশি যেমন অগ্নির, অসংখ্য নদীর দ্বারা যেমন সমুদ্রের ও সর্বভূত সংহার দ্বারা অন্তকের তৃপ্তি হয় না, তদ্রুপ অসংখ্য পুরুষ সংসর্গ করিলেও স্ত্রীলোকের তৃপ্তি হয় না। (১৩/৩৮)
(আহা! পুরুষেরা তো চির-একগামী!)
এবার দেখুন ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের কথা, যিনি নাকি জীবনেও মিথ্যে কথা বলেননি: উহারা (নারীরা) ক্রিয়া-কৌতুক দ্বারা পুরুষদিগকে বিমোহিত করে। উহাদিগের হস্তগত হইলে প্রায় কোনো পুরুষই পরিত্রাণ লাভ করিতে পারে না। গাভী যেমন নূতন নূতন তৃণভক্ষণ করিতে অভিলাষ করে, তদ্রুপ উহারা নূতন নূতন পুরুষের সহিত সংসর্গ করিতে বাসনা করিয়া থাকে। (১৩/৩৯)
পিতামহ ভীষ্মের মতে, নারী আর শূদ্রের মধ্যে সব ধরনের দোষ আছে: মানুষের চরিত্রে যত দোষ থাকতে পারে, সব দোষই নারী ও শূদ্রের চরিত্রে আছে। জন্মান্তরীয় পাপের ফলে জীব স্ত্রীরূপে (শূদ্ররূপেও) জন্মগ্রহণ করে। (ভীষ্মপর্ব ৩৩/৩২)
পিতামহ ভীষ্ম আরও বলেন: স্ত্রীগণের প্রতি কোন কার্য বা ধর্ম নেই। (কারণ) তারা বীর্যশূণ্য, শাস্ত্রজ্ঞানহীন। (অনু, ১৩/৩৯).
নারী কতো ভয়াবহ প্রাণী, এবারে দেখুন: তুলাদণ্ডের একদিকে যম, বায়ু, মৃত্যু, পাতাল, দাবানল, ক্ষুরধার বিষ, সর্প ও বহ্নিকে রেখে অপরদিকে নারীকে স্থাপন করিলে ভয়ানকত্বে উভয়ে সমান-সমান হবে। (অনুশাসনপর্ব ৩৮)
ব্রাহ্মণদের মন- এ দেহরঞ্জনের জন্য নারীদেরকে যজ্ঞের সময় দান করে দিতে দেখা যায় পবিত্র মহাভারতে। মহাভারতের কথিত শ্রেষ্ঠ সত্যবাদী যুধিষ্ঠির নিজেও যজ্ঞে-দানে-দক্ষিণায় বহুশত নারীকে দান করে দিতেন অবলীলায় অতিথিরাজাদের আপ্যায়নে! (আশ্বমেধিকপর্ব ৮০/৩২, ৮৫/১৮)
ব্রাহ্মণদের দক্ষিণাতেও নারী দান করার বিধান রয়েছে। শ্রাদ্ধের দক্ষিণার তালিকাতে পুরোহিত ব্রাহ্মণদের নারী দান করার রীতি আছে। দেখুন : আশ্রমবাসিকপর্ব ১৪/৪, ৩৯/২০, মহাপ্রস্থানপর্ব ১/৪, স্বর্গরোহণপর্ব ৬/১২,১৩।
ব্রাহ্মণদের দক্ষিণাতেও নারী দান করার বিধান রয়েছে। শ্রাদ্ধের দক্ষিণার তালিকাতে পুরোহিত ব্রাহ্মণদের নারী দান করার রীতি আছে। দেখুন : আশ্রমবাসিকপর্ব ১৪/৪, ৩৯/২০, মহাপ্রস্থানপর্ব ১/৪, স্বর্গরোহণপর্ব ৬/১২,১৩।
সত্যিকারের সতী-সাধ্বী কারা, জানতে চান? যারা স্বামী ব্যতীত পুংলিঙ্গের কোনও বস্তুও দর্শন করে না। এই দেখুন: "ন চন্দ্রসূর্যৌ ন তরুং পুন্নাুো যা নিরীক্ষতে/ভর্তৃবর্জং বরারোহা সা ভবেদ্ধর্মচারিণী"; বাংলা অর্থ: যে নারী স্বামী ব্যতীত কোনো পুংলিঙ্গান্ত (নামের বস্তু), চন্দ্র, সূর্য, বৃক্ষও দর্শন কওে না, সে-ই ধর্মচারিণী। (মহাভারত, ১২/১৪৬/৮৮)
(এর জন্যে তো আবিশ্বব্রহ্মাণ্ড বোরখা প্রয়োজন!)
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন