আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১২

একটি গল্প মোবারক


লিখেছেন অবর্ণন রাইমস 

[নিম্নস্থিত গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কোনও মৃত ব্যক্তির সহিত গল্পটির কোনও চরিত্র মিলিয়া গেলে তাহাকে অনভিপ্রেত কাকতাল বলিয়া মনে করিতে হইবে।]

একদা, আরবদেশে আমাদিগের প্রাণপ্রিয় মহানবী বাস করিতেন। তথায় তিনি চৌদ্দটি বধূ, দুই পিস ক্রীতদাসী এবং অগুণতি গনিমতের মালের সহিত শান্তিতে দিনাতিপাত করিতেন। তবে সব দিন শান্তিতে অতিবাহিত হইত না। রাজ্যবিস্তারের নিমিত্তে ধর্মের নাম লইয়া কিছুদিন পরপর যুদ্ধ করিতে হইত।

তো হইল কি, এক দিবসে নবীজী যুদ্ধের ময়দানের পার্শ্বে রচিত তাম্বু মোবারকে বসিয়া যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি ইস্তেমাল করিতেছিলেন। শুষ্ক আরবীয় প্রত্যুষ, পাখির ডাক কী বস্তু তাহা অপরিচিত, মাঝে মাঝে উষ্ট্রের ঘ্যাঁঘোঁ জাতীয় ধ্বনি শোনা যাইতেছে। উষ্ট্রের গাত্র এবং বিষ্ঠা হইতে নির্গত মধুর ঘ্রাণ নবীজীর নাসিকা মোবারকে মাঝে মাঝে পরশ বুলাইয়া যাইতেছে। তাম্বুর ভিতরে পাতিয়া রাখা বিছানা মোবারকের কিনারা মোবারকে বসিয়া নবীজী তাহার বদনা মোবারক হইতে হস্ত মোবারকে পানি লইয়া মুখমণ্ডল মোবারকে ছিটা দিতেছেন। ভয়ানক গরম পড়িয়াছে কিনা!

নবীজীর চক্ষু করকর করিতেছে। আঙ্গুল দিয়া খোঁচাইয়া তিনি দেখিলেন, চক্ষুর কোণে কিছু পিঁচুটি মোবারক জমিয়াছে। তিনি পরিহিত কালো জোব্বাটির কিনারা তুলিয়া আঙুলের ডগায় প্যাঁচাইয়া লইলেন, তারপর সন্তর্পণে দুই চক্ষুর কোণ হইতে পিঁচুটি মুছিয়া ফেলিলেন। তারপর খর দৃষ্টিতে সামনে দণ্ডায়মান আলীর দিকে নজর করিলেন। ব্যাটা ধেড়ে বদমায়েশ কিছুই না দেখার ভান করিয়া তাম্বুর সিলিং পর্যবেক্ষণ করিতেছে। গতরাত্রির গণিমতের যে মালখানাকে টানিয়া পাশের তাম্বুতে হান্দাইয়াছিলো, তার কথাই ভাবিতেছে কি না, কে জানে!

"ইয়া আলী!!" হুঙ্কার শুনিয়া আলী থতোমতো খাইয়া দাঁড়াইলেন।
"হুজুঢ়!! বান্দা হাজির খেদমতে।" আলীর কণ্ঠে মাটির তলায় অনাবিষ্কৃত তেল চুইয়া পড়ে। 
"লেটস গো কিল সাম ইনফিডেলস!!"
"চলুন হুজুঢ় পাক!"

নবীজী সেনাবাহিনী লইয়া সম্মুখের মরুভূমিতে অগ্রগামী হইলেন। ধুলা আসিয়া তাহার কালো জোব্বাখানি ধূসর হইয়া উঠিল। কিছুটা ধুলা নবীজীর গলা মোবারকের ভিতরে প্রবেশও করিল। তিনি খকখক করিয়া কাশিয়া উঠিলেন। অতঃপর হ্যাক থু বলিয়া বালিতে কফযুক্ত থুতু মোবারক নিক্ষেপ করিলেন। পেছনের কয়েকজন সৈন্য পবিত্র থুতু মোবারকের উপর হুমড়ি খাইয়া পড়িল। নবীজীর থুতু বড়ই কাঙ্ক্ষিত বস্তু। নবীজী ইত্যবসরে কালো জোব্বার খুঁট দিয়া মুখস্থিত থুতুকণা পরিষ্কার করিয়া লইলেন। পবিত্র বস্তুর এহেন বস্ত্রাহূতি দেখিয়া আর কজন সৈন্য জুলজুল নয়নে চাহিয়া রহিল।

যথাসময়ে যুদ্ধ (অথবা হামলা, যাহাই কহেন) শুরু হইল। যুদ্ধবাজ গ্যাংলিডার নবীজী তাহার তরবারি মোবারক দিয়া শত্রুর মুণ্ডচ্ছেদ করিতে লাগিলেন। তাহাদের ছিন্ন গলা হইতে ফিনিক দিয়া চারিদিকে "শান্তি" ছিটাইতে থাকিল। চারিধার "শান্তিতে" রঞ্জিত হইয়া উঠিল। রঞ্জিত মুখে নবীজী সৈন্যদল নিয়া সরোষে "যুদ্ধ" করিতে লাগিলেন। শত্রুর গাত্রনির্গত রক্তবর্ণ শান্তিতে তাহার গাত্র ভিজিয়া উঠিল, জোব্বা ভিজিয়া জবজবে হইল। এমনি করিয়া বেলা আগাইতে আগাইতে যুদ্ধ শেষ হইয়া আসিল। আহতদের গোঙানির শব্দ তাহার পরেও যুদ্ধরতদিগের হুঙ্কারের নিচে চাপা পড়িয়া যাইতে লাগিল।

সন্ধ্যাকালে যুদ্ধ খতম করিয়া সকলে ক্যাম্পে ফিরিল। আহতদিগকে অশ্বের উপরে উপুত করিয়া এবং নিহতদিগকে চিৎপটাং করিয়া ক্যাম্পে ফেরত আনা হইয়াছে। একটি তাম্বু খালি করিয়া উহাতে আহতদিগের স্থান মিলিল। লাশসমূহ দ্রুততার সহিত বালিতে পুঁতিয়া দেওয়া হইল।

স্বীয় তাম্বুতে ফেরত যাইবার আগে নবীজী ক্যাম্পে সান্ধ্য পরিদর্শনে বাহির হইলেন। সৈন্যদিগ এক স্থানে গণিমতের মালসমূহ একত্র করিয়া রাখিয়াছে। সেইখানে গমন করিয়া তিনি কোন কোন পুষ্ট কদলীকাণ্ডসম্পন্নাকে তাহার তাম্বু মোবারকে লইতে হইবে, তাহা বাছিতে শুরু করিলেন। দুয়েকটিকে ভালো লাগায় টিপিয়া টুপিয়া দেখিলেন। মালসমূহের গাত্র ধূলা ময়লায় একাকার। টিপিতে গিয়া নবীজীর হস্তের তালু মোবারক নোংরা হইয়া গেল। তিনি জোব্বার মধ্যবর্তী অংশে হাত মুছিয়া লইলেন, অতঃপর পার্শ্ববর্তী আলীকে চোখের ইশারায় বুঝাইয়া দিলেন, কোন কোন মালে গণিমতকে তাহার তাম্বুতে পৌঁছাইয়া দিতে হইবে। আলী ব্যাদ্দপের মত চোখ টিপি দিয়া কহিল, "হুজুঢ়পাকের রাত্রি মোবারক আনন্দময় হবে, টেনশন নেহি লেনেকা।" নবীজী দন্ত কিড়মিড় করিয়া সম্মুখপানে অগ্রসর হইলেন।

কিয়দ্দূরে আহতদিগের তাম্বু। আহতেরা ভিতর হইতে চেল্লাচিল্লি করিতেছে। নবীজী পুনরায় দন্ত কিড়মিড় করিয়া ভাবিলেন, "শালার্পুতেরা কাল যুদ্ধেও যাবে না, আবার বসে বসে রুটি ধ্বংসও করবে। ইচ্ছা করে নিজেই তলোয়ার চালিয়ে হতভাগাগুলোকে শহীদ বানিয়ে দি।" তবে চিন্তাকে কার্যে পরিণত করা সম্ভব নহে, সেই নিমিত্ত তিনি মুখে কিছুটা বিষাদের ছাপ ফুটাইয়া সেই তাম্বুর নিকটবর্তী হইলেন।

একটি সৈন্য মশকভর্তি পানি গামলায় ঢালিয়া তাম্বুতে প্রবেশ করিতে উদ্যত হইয়াছিল। নবীজী তাহাকে পিছু ডাকিয়া থামাইলেন। সৈন্য গামলা হস্তে ধরিয়াই সালাম প্রদান করিল। নবী ব্যাদ্দপি দেখিয়া আবারো দন্ত কিড়মিড়োদ্যত হইলেন। আরে শ্যালকপুত্র, নবী হইতে কি তোর গামলাখানা জরুরি? নামাইয়া রাখিতে পারিস না?

"এতো পানি দিয়ে কী হবে?" নবীজী শুধাইলেন।
"হুজুঢ়ে পাক, বহুত ইমানদাঁড় মমিন আহত হইছে। ওগোর লিগা সাপ্লাই নিতাছি।"

শ্যালকপুত্ররা পানির সাপ্লাইতে টানাটানি লাগাইয়া দিবে দেখা যাইতেছে। এমনিতেই সুপেয় পানির বড় সংকট। পান করিবার নিমিত্ত পানি যদিও মিলে, গোসল এবং ধৌতকরণের পানিতে টান পড়িয়া যায়। বড়ই অসুবিধার কথা।

নবীজী কিয়ৎক্ষণ ভাবিয়া পানিবাহকের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ক্লিনিক-তাম্বুতে প্রবেশ করিলেন। তারপর গলা উঁচাইয়া আহতদিগের ‌উদ্দেশ্যে ভাষণ করিতে শুরু করিয়া দিলেন। তাহাদিগকে আশ্বস্ত করিলেন, অচিরেই আঘাত সারিয়া যাইবে, এসলামের শান্তিময় রাজ্যপ্রতিষ্ঠা ঘটিবে, এন্তার মালে গণিমতও সকলের ভাগ্যে জুটিবে। আরো আশ্বস্ত করিলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করিতে করিতে শহীদ হইলে ডাইরেক্ট বেহেশতে পৌঁছাইবার টিকিট পাওয়া যাইবে। বেহেশতে কী কী পাওয়া যাইবে, তাহার কিছুটা বর্ণনাও তিনি দিলেন। আহত সৈন্যরা সেই অদেখা বেহেশতের জন্য কৃতজ্ঞ হইয়া উঠিল।

ভাষণের শেষে নবীজী আজিকার আহতদের জন্য একটি বিশেষ কনসেশন ঘোষণা করিলেন। তিনি স্বউদ্যোগে তাহাদিগের পানির গামলায় তাহার কালো জোব্বাটি ডুবাইয়া লইতে অনুমতি দিয়া দিলেন, যদিও কেউ অনুমতি চাহে নাই। তিনি এইটাও জানাইতে ভুলিলেন না, উটের মূত্র এবং মুখের থুতুর মতন ইহারও রোগহরণকারী ফজিলত আছে। অপ্রত্যাশিত অনুমতি পাইয়া সকলে ধন্য ধন্য করিয়া উঠিল। তারপর খাইবার পানির গামলায় নবীজীর জোব্বাটি ভালোমত মর্দন করিয়া লইল। সেই পানি ঢকঢক করিয়া রোগীসকলের কণ্ঠ বাহিয়া নামিয়া গেল। পরবর্তী প্রত্যূষে এই রোগীদিগের অনেকে পৈটিক গোলযোগে আক্রান্ত হইবে, এবং নবীজীও বিধান দিবেন যে, পৈটিক গোলাযোগে মৃত্যু ঘটিলেও বেহেশত পাওয়া যাইবে, (দ্রষ্টব্য- চিকিৎসাপদ্ধতি ৪)। এই জোব্বা ভিজাইয়া পানি পান করার তরিকায়ে মোবারক পরবর্তীকালে আবু বকরের কন্যা আসমা প্রচার করিবেন, আশ-শিফা শরীফে এই জোব্বার কথা আসমার বরাতে প্রচারিতও হইবে। তবে সেসকল অনেক পরবর্তী সময়কালের বিষয়।

যাহাই হউক, এই সকল বক্তৃতাবাজি খতম করিয়া সেদিন নবীজী ক্লিনিক তাম্বু হইতে বাহিরে আসিলেন। তাহার ওষ্ঠে ক্ষীণ হাসির রেখা দেখিতে পাওয়া গেল। 

তিনি ভাবিলেন, "যা-ই বলি তা-ই বিশ্বাস করে। কী চমৎকার ভুজুং দিয়ে নোংরা জোব্বাটা ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেললাম!!"

গল্পের আইডিয়া: আশ-শিফা শরীফ (পৃষ্ঠা ১৯৩)

অনুপ্রেরণা - আনাস।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন