আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ১২ মে, ২০১২

ইসলামে কাম ও কামকেলি - ০৮

মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)

পর্ব ০১ > পর্ব ০২ > পর্ব ০৩ > পর্ব ০৪ > পর্ব ০৫ > পর্ব ০৬ > পর্ব ০৭

স্ত্রী কর্তৃক পুর্ণ দেনমোহর প্রাপ্যতার শর্ত: যৌনমিলনের মাধ্যমে বিবাহ পুর্ণাঙ্গকরণ অথবা স্বামীর মৃত্যু।

কেউ দশ দিরহাম কিংবা তদোর্ধ কোনো অঙ্কের দেনমোহরের বিনিময়ে বিয়ে করল। অতঃপর সে যৌনমিলনের মাধ্যমে বিয়েকে পুর্ণাঙ্গ করল কিংবা মৃত্যুবরণ করল। এই উভয় ক্ষেত্রেই স্ত্রী পুর্ণ মোহরানা পাওয়ার অধিকারী। কারণ প্রথম ক্ষেত্রে দেনমোহরের বিনিময় হিসেবে স্ত্রী তার ‘বোজা’ বা স্ত্রী-অঙ্গ প্রদান করার শর্ত প্রতিপালন করেছে, সুতরাং তার দেনমোহর পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে স্বামীর মৃত্যুতে বিবাহ পুর্ণাঙ্গ হয়ে গেছে বলে বিবেচ্য, সুতরাং বিবাহ সংক্রান্ত সমুদয় শর্তাদি পালনযোগ্য। হ্যাঁ পাঠক, ‘বোজা’র ল্যাটিন প্রতিশব্দ Genetalia Arvum Mulierist। বাংলায় স্ত্রীযোনি। উপরের বাক্য ক’টি হতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইসলামী বিয়ে মানে দেনমোহরের বিনিময়ে স্ত্রীযোনি বিক্রি করা। এতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ আছে কি?

সেক্স বলতে এ রকমটিই বোঝায় ইসলামে। দেনমোহর প্রদান করে স্ত্রী-অঙ্গ ক্রয় করা এবং তা ভোগ করা। যৌনমিলনে স্ত্রী যৌনসুখ পেলো কি না, ইসলামী বিবেচনায় তা একেবারেই অবান্তর। নগদ অর্থে মোহরানা প্রদান করে (কিংবা পরবর্তীতে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে) বিয়ের চুক্তির মাধ্যমে স্ত্রীকে ঘরে আনার পর পুরুষটির চরমতৃপ্তিই মূল বিবেচ্য বিষয়। যদি কেউ মনে করে থাকেন যে, আমি বেশী বেশী বলছি কিংবা প্রসঙ্গহীন বক্তব্য রাখছি, তাদের জন্যে আইনটি আরেকটু বিশদভাবে বিবৃত করা দরকার আছে বলে মনে করি। পাঠক, ‘পজেশন অব অবজেক্ট অব কন্ট্রাক্ট’- এই লিগাল টার্মটির নাম শুনেছেন কখনও? নিশ্চয়ই শোনেননি। এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘চুক্তিকৃত বস্তুর উপর অধিকার’ অর্থাৎ বিয়ের কন্ট্রাক্টও একটি চুক্তি এবং চুক্তিকৃত বস্তুটি আপনার স্ত্রী।

দেনমোহর দিয়ে চুক্তিকৃত এই বস্তুটির উপর আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে, তা জানেন? ইসলামি আইনানুযায়ী রতিক্রিয়া বা উপভোগের মাধ্যমে এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। নারী তার যোনিটি স্বামীর কাছে ডেলিভারি দিলে তবেই তার মোহরানা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত হয়, নচেৎ নয়! নীচের আইনটি লক্ষ্য করুন:
‘খাওলাত সহিহ্’ বা শয্যা-সংক্রান্ত উদাহরণঃ-একজন লোক স্ত্রীর সাথে শয্যায় গেল। রতিক্রিয়া করার পথে তাদের সামনে কোন আইনগত কিংবা প্রাকৃতিক বাধা নেই। এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়, সেক্ষেত্রে পূর্ণ মোহরানা পাওয়ার অধিকার রয়েছে স্ত্রীর। ইমাম শাফেয়ীর মতে- এক্ষেত্রে স্ত্রী ধার্যকৃত দেনমোহরের অর্ধেকের বেশী দাবী করতে পারে না। কারণ রতিক্রিয়া ব্যতিরেকে চুক্তিকৃত বস্তুর উপর স্বামীর অধিকার পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এমত বলা যাবে না। স্ত্রীর দেহ উপভোগ না করা পর্যন্ত দেনমোহর পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ প্রসঙ্গে আমাদের ডাক্তারদের যুক্তি, যেহেতু স্ত্রী তার দেহ নিবেদন করে এবং সাধ্যমতো সমুদয় বাধা অপসারিত করে তার তরফের চুক্তি পরিপূর্ণরুপে পালন করেছে; সুতরাং তার বিনিময় মুল্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে; ঠিক সেইভাবে যেভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। একজন বিক্রেতা একটি পণ্য বিক্রি করে ক্রেতার কাছে ডেলিভারি দিল, এবং ক্রেতাকতৃর্ক পণ্যটি ভালভাবে যাচাই করে নেয়ার পথে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করল না, এবং ক্রেতা অবহেলাবশতঃ পণ্যটি সঠিকভাবে যাচাই করল না, এক্ষেত্রে আইনের দৃষ্টিতে ক্রেতা পণ্যটি যথাযথভাবে যাচাই করে নিয়েছে বলে গণ্য করা হবে, এবং ক্রেতার উপর পণ্যের মুল্য পরিশোধ বাধ্যতামুলক। (রেফ-১১, পৃ-৪৫-৪৬)।
পুরুষের যৌনতৃপ্তি বিষয়ক এই আইনি পদ্ধতিগুলোর দৃষ্টিতে স্ত্রী-প্রজাতিটির (হোক সে বউ, যৌনদাসী কিংবা যুদ্ধ-বন্দিনী) ভূমিকা একেবারেই নৈর্ব্যক্তিক। সে একজন চাকরাণীর চেয়ে বেশী কিছু নয়, যার একমাত্র কাজ স্বামীকে যৌনতৃপ্তি দেয়া। আপনি হয়তো বলবেন, এরকম হতেই পারে না। ইসলাম চিরদিনই নারীজাতিকে তার যোগ্য সম্মান দিয়ে আসছে।

সেই যোগ্য সম্মান কী এবং ইসলামি আইনে আপনার যৌন-সহচরীটির লিগাল ষ্ট্যাটাস কী - তার স্বরূপ আরেকটু ভালভাবে জেনে নিন। 
‘স্ত্রী সেবিকা, স্বামী সেবাগ্রহণকারী পাত্র’ (প্রাগুক্ত পৃ-৪৭)। 

বৈবাহিক সম্পর্কিত বিষয়াদিতে স্বামী কর্তৃক সেবা প্রদানের শর্ত।.......স্বামী যদি একজন স্বাধীন পুরুষ হয় (যদি ক্রীতদাস না হয়), তবে তার নিকট হতে সেবা (সার্ভিস) গ্রহণ করা স্ত্রীর জন্যে অবৈধ, কারণ তা পরস্পরের নির্ধারিত অবস্থানের বরখেলাফ, এই জন্যে যে বিয়ের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো স্ত্রী সেবিকা (Servant) এবং স্বামী সেবাগ্রহণকারী পাত্র (Person served); কিন্তু যদি এরূপ হয় যে দেনমোহর বাবদ প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের বিনিময়ে স্বামী স্ত্রীকে সেবা করে, এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে, স্বামী সেবক এবং স্ত্রী সেবা গ্রহণকারী পাত্র: যা বিয়ের মৌলিক শর্তের বরখেলাফ সুতরাং অবৈধ; তবে যদি স্বামী তদ্পরিবর্তে অপর কোনো স্বাধীন পুরুষ দ্বারা উক্ত সেবা প্রদান করে, তবে তা বৈধ বলে বিবেচ্য কারণ তা চুক্তির শর্তের পরিপন্থী নয়; এবং ক্রীতদাস দ্বারা প্রদত্ত সেবাও বৈধ, কারণ ক্রীতদাস কর্তৃক তার স্ত্রীকে প্রদত্ত সেবা প্রকৃতপক্ষে মনিবের সেবা করার নামান্তর এবং মনিবের সম্মতিক্রমেই সে এই সেবা প্রদান করছে; এবং মেষ পালন দ্বারা সেবা প্রদান গ্রহণীয়, কারণ মেষ পালন এমন একটি সার্ভিস যা চিরস্থায়ী প্রকৃতির, সুতরাং স্ত্রীর জন্যে এই সার্ভিস প্রদান করা বিয়ের শর্ত লঙ্ঘন করে না; কারণ দেনমোহর পরিশোধের জন্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে সেবা করা নিষিদ্ধ, যেহেতু তা স্বামীর মর্যাদার পরিপন্থী; কিন্তু মেষ পালন কোনো অসম্মানজনক পেশা নয় বিধায় তা স্বামীর মর্যাদার পরিপন্থী নয়। এবার পরিস্কার হয়েছে তো পাঠক? ইসলামি বিয়ের মর্মবাণী হৃদয়ঙ্গম হয়েছে আপনার? প্রকৃতপক্ষে ইসলামের দৃষ্টিতে সেক্স হচ্ছে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক মাত্র, এ এমন এক সম্পর্ক, যার মাধ্যমে একজন পুরুষ দেনমোহরের বিনিময়ে নারীদেহ ক্রয় করে। 

এর পরেও যদি কেউ আপত্তি তোলেন যে, উপরোক্ত শরিয়া আইন বিশ্বাসযোগ্য নয়, তাদেরকে আমি নিম্নবর্ণিত হাদিসগুলি পড়ে দেখতে অনুরোধ করছি। এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, স্ত্রীর সাথে যৌনসঙ্গম করতে হলে পুরুষকে অবশ্যই মোহরানা প্রদান করতে হবে। অমুসলিম দেশগুলিতে প্রচলিত পতিতাবৃত্তি ও নির্বিচার যৌনাচার সম্পর্কে ইসলামপন্থীরা খুবই উচ্চকন্ঠ। এই হাদিসগুলি সম্পর্কে তারা কী বলবেন? এগুলি পড়লে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, দেনমোহর আর কিছুই নয়, একটি মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গমের বিনিময়মূল্য মাত্র।
সুনান আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২০৭৮
উম্মুল মোমেনীন আয়েশা হতে বর্ণিত: আল্লাহর রাসুল (দঃ) বলেছেন: কোনো মেয়ে যদি অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করে, তবে সে বিয়ে বাতিল। তিন বার (এই কথাটি উচ্চারণ করেন তিনি); যদি তাদের মধ্যে সহবাস হয়ে গিয়ে থাকে, তা’হলে স্বামী যেহেতু মেয়েটির সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়েছে সুতরাং মেয়েটি দেনমোহর পাবে। এক্ষেত্রে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয়, সুলতান (কতৃর্পক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি) হবেন তার অভিভাবক যার কোন অভিভাবক নেই।
সুনান আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২০৪৪
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস হতে বর্ণিত: একজন লোক রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে আসল এবং বলল, এক ব্যক্তি আমার স্ত্রীর কাছে আসে এবং তাকে স্পর্শ করে, কিন্তু আমার স্ত্রী তাকে বাধা দেয় না। তিনি (নবী) বললেন- তাকে তালাক দাও। সে তখন বলল- আমার অন্তরাত্মা তাকে প্রবলভাবে কামনা করে বলে ভয় করি। তিনি বললেন, তা’হলে তাকে ভোগ কর।
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন