আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ১৬ মে, ২০১২

ইসলামে কাম ও কামকেলি - ০৯

মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)

পর্ব ০১ > পর্ব ০২ > পর্ব ০৩ > পর্ব ০৪ > পর্ব ০৫ > পর্ব ০৬ > পর্ব ০৭ > পর্ব ০৮

সেক্স সম্পর্কে ইসলামের ধারণা কী, উপরোক্ত প্রামাণ্য সূত্রগুলো অধ্যয়ন করলে তার পুর্ণাঙ্গ চিত্র মেলে। সেক্স নর এবং নারী এই উভয় প্রজাতির দৈহিক তৃপ্তির চরমতম উপায় - এই ধারণা ইসলামে সম্পুর্ণ অনুপস্থিত। এখানে সেক্সকে শুধুমাত্র পুরুষ জাতির দৃষ্টিভঙ্গী হতে বিচার করা হয়, সেক্স যেন শুধুমাত্র একটি সেবা বা পণ্য। এই সেবা আহরণ করতে কিংবা পণ্যটি (স্ত্রীর যৌনাঙ্গ) হতে ফায়দা লুটতে পুরুষ মেয়েটিকে দেনমোহর প্রদান করে। এ যেন একটি ব্যবসায়িক চুক্তি, যে চুক্তির শর্ত মোতাবেক এককালীন কিছু অর্থ মূল্য (মোহরানা) ও পরবর্তীতে প্রদেয় ভরণপোষণের (নাফাক্ক) বিনিময়ে মেয়েটি তার যোনি এবং অন্যান্য প্রজনন যন্ত্র পুরুষটির কাছে বন্ধক রাখে।

পবিত্র কোরানের বিধান মোতাবেক একজন মেয়েকে যে কোন মূল্যে তার পবিত্রতা বজায় রাখতে হয় এবং জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত সব সময় নিজেকে গৃহাভ্যন্তরে গুটিয়ে রাখতে হয়। মেয়েদেরকে গৃহাভ্যন্তরে অবরুদ্ধ করে রাখার পেছনে কী কারণ, তা কখনও ভেবে দেখেছেন কি? যদি কোনো ইসলামপন্থীকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন, সে আপনাকে অনেক চোখা চোখা যুক্তি দেখাবে। বলবে, এতে সমাজে ধর্ষণজাতীয় অপরাধ কমে, যৌননির্যাতনের সম্ভাবনা কমে, ব্যভিচারের আশঙ্কা থাকে না... ইত্যাদি ইত্যাদি।

আত্মপক্ষ সমর্থনবাদীদের মনগড়া যুক্তির প্রতি কান না দিয়ে শরিয়া আইন হতে এর আসল কারণটি খুজে বার করার চেষ্টা করুন। দেখবেন, মেয়েদেরকে গৃহাভ্যন্তরে বন্দী করে রাখার পেছনের কারণ একটাই - চাহিবামাত্র পুরুষটিকে (স্বামী, মনিব কিংবা বন্দীকর্তা) সেক্স-সার্ভিস প্রদান করা। যদি আপনার বিশ্বাস না হয়, নীচের ইসলামি আইনটি পড়ে দেখুন:

মেয়েদের গৃহভ্যন্তরে থাকার একমাত্র কারণ- সেক্স (রেফারেন্স-১১, পৃ-৫৪) পক্ষান্তরে, ‘মিহ্ মোয়াজিল’ (তরিৎ মোহরানা) সম্পুর্ণ ভাবে আদায় না করা পর্য্যন্ত স্বামীর কোন অধিকার নাই স্ত্রীকে ভ্রমন হতে বিরত রাখা কিংবা বিদেশ গমন হতে বিরত রাখা কিংবা বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করা থেকে বিরত রাখা; কারণ স্ত্রীর দেহভোগ নিশ্চিত করার জন্যেই স্ত্রীকে গৃহাভ্যন্তরে অবরুদ্ধ করে রাখার অধিকার স্বামীকে দেয়া হয়েছে, এবং বিনিময় মুল্য পুরোপুরি পরিশোধ না করা পর্যন্ত ভোগ করার এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় না।

পাঠকদের জন্যে আরও কিছু চমক:

হাদিস শরীফে বর্ণিত নবীজির শিক্ষা (মিশকাত, আরবী সঙ্কলন; বাব-উন-নিকাহ): (রেফারেন্স-৬, পৃ-৬৭১)
“স্বামী স্ত্রীকে ডাকলে সে তৎক্ষনাৎ হাজির হবে যদি সে চুল্লীর মধ্যেও থাকে”।
সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার ইমাম গাজ্জালি (রঃ) বিখ্যাত ‘ইয়াহ্ইয়া উলুমেদ্দিন’ গ্রন্থে লিখেছেন (রেফারেন্স-৭, পৃ-২৩৫):
“স্ত্রীর উচিত স্বামীকে তার নিজ সত্ত্বার চেয়েও উপরে স্থান দেয়া, এমনকি তার সকল আত্মীয়স্বজনের উপরে স্থান দেয়া। সে স্বামীর জন্যে নিজকে সদা-সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন (রেডি) করে রাখবে যেন স্বামী যখন ইচ্ছা তাকে ভোগ করতে পারে...।”
এই হলো ইসলামের দৃষ্টিতে সেক্সের নমুনা। পুরুষের যৌনতৃপ্তিই (অরগাজম) এর প্রাথমিক লক্ষ্য। এক্ষেত্রে মেয়েটি একটি যৌন-মেশিনের অতিরিক্ত কিছু নয়। মেশিনটি সবসময় রানিং কন্ডিশনে থাকবে, যেন তার মালিক ইচ্ছে হলেই মেশিনের উপর সওয়ার হতে পারে। যে জগতে পুরুষের যৌনতৃপ্তিলাভই একমাত্র বিবেচ্য, সেখানে মেয়েদের স্পর্শকাতরতা বা তাদের পছন্দ-অপছন্দের মূল্যায়ন একেবারেই অবান্তর। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু মেয়েদের জন্যে নয়, পুরুষদের জন্যেও চরম অবমাননাকর। এতে পুরুষজাতি সেক্স-ম্যানিয়াক (যৌনোন্মাদ) হিসেবে চিত্রায়িত হয়, যেন সে যখন-তখন সঙ্গম করার জন্যে মুখিয়ে আছে। পুরুষের এই কামচিত্র একেবারেই বাজে।

এই প্রথার শেষ পরিণাম কী? অবশ্যই স্ত্রী প্রজাতিটির অবধারিত গর্ভসঞ্চার এবং ইসলামি পুরুষটির বিবেচনাহীন যৌনাচারের প্রায়শ্চিত্ত করা।

স্বামী ভরণপোষণ দিচ্ছে, এমতবস্থায় স্বামী যদি সেক্স করতে চায় এবং স্ত্রীর তাতে সম্মতি না থাকে, তা’হলে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? আপনার হয়তো বিশ্বাস না-ও হতে পারে, তবে ইসলামী আইন এমন ক্ষেত্রে স্ত্রীর ওপর বলপ্রয়োগের অধিকার দিয়েছে পুরুষকে। একে কি আপনি ‘ইসলামি স্টাইলে ধর্ষণ’ বলবেন না, পাঠক? এ সম্পর্কিত একটি হেদাইয়া (রেফারেন্স -১১, পৃ-১৪১) 
স্ত্রীকে বলপ্রয়োগে ভোগ করা যায় যদি না সে একগুয়ে হয়: 
যদি স্ত্রী অবাধ্য ও একগুয়ে হয় এবং স্বামীর সম্মতি ব্যতিরেকে বিদেশ ভ্রমনে যায়, এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর নিকট হতে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার হারায় যে পর্যন্ত না সে ফিরে আসে এবং স্বামীর নিকট নিজকে সমর্পণ করে, কারণ এ ক্ষেত্রে বৈবাহিক সম্পর্ক সংক্রান্ত বাধা স্ত্রীর তরফ হতে উদ্ভূত হয়েছে; তবে যখন সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে, তখন পুনরায় পূর্বের ন্যায় ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে সে। যখন কোনো স্ত্রী স্বামীগৃহে অবস্থান করেও স্বামীর দাম্পত্য আলিঙ্গন অস্বীকার করে, সে যেহেতু ভরণপোষণ ভোগ করছে এবং স্বামীর অধিকারে আছে, সুতরাং স্ত্রীর অসম্মতি সত্ত্বেও স্বামী ইচ্ছে করলে তাকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে উপভোগ করতে পারে।
এ বিষয়ে আর আলোচনা নয়, একটি ছোট্ট মন্তব্য রেখেই এ চ্যাপ্টার শেষ করব এখন। ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহযোগ্যা একটি মেয়ে পুরুষের (হোক সে স্বামী, অথবা মনিব অথবা বন্দীকর্তা) আনন্দ উপভোগের উপকরণ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু নয়। যৌনজীবন সম্পর্কে মেয়েদের স্পর্শকাতরতা, তাদের চাওয়া, তাদের আকাংখা, তাদের পছন্দ-অপছন্দ, তাদের প্রেম, তাদের ভালবাসা, তাদের অনুভুতি - এ বিষয়গুলি ইসলাম একেবারেই অস্বীকার করে। ইসলামে সেক্সের জগতটি একচ্ছত্রভাবে পুরুষের করায়ত্ত। পুরুষ সৃষ্টি হয়েছে যৌনসুখ উপভোগ করার জন্যে, মেয়েরা সেই আনন্দ যোগান দেয়ার যন্ত্র মাত্র। পাশ্চাত্যের সেকুলার সমাজগুলিতে মেয়েদের অবাধ যৌন স্বাধীনতার সমালোচনায় মুখর ইসলামী পণ্ডিতবর্গ। তাদের মতে একেবারেই পচা-গন্ধা সমাজ এটি। ডাবল ষ্ট্যান্ডার্ড আর কাকে বলে! ওপরে বর্ণিত ঐসব আইনসম্মত যৌন কদাচার সম্পর্কে এই ইসলামী পণ্ডিতগণ কী বলেন, তা শুনতে বড়ো ইচ্ছে হয়।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন