আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩

হাঁচি

লিখেছেন নিষ্কর্মা

আমার নাম আগে বলে নেই। আমার নাম রহমত উল্লাহ। ছোট করে ডাকে সবাই রহমত বলে। সেই আমি, যে কিনা সৃষ্টিকর্তার রহমতের প্রকাশ, আমার ওপর দিয়ে যে তার অনেক রহমত প্রকাশিত হবে, তাতে তো কোন সংশয়ের কিছু নেই। আসলেই আমি রহমতে বান্দা, তা জানতে পারলাম আজকে সকাল বেলা।

অনেক হাঁচিতে হাঁচিতে আমার সকাল ভরে উঠল। আর কে না জানে সেই বিখ্যাত হাদিসঃ
আবু হুরায়রা কর্তৃক বর্ণিত:
আল্লহার নবী বলেছেন, “আল্লাহ হাঁচি পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে ঘৃণা করেন। তাই কেউ যদি কারো হাঁচির শব্দ শুনে, তাহলে তার উচিত হবে সেই হাঁচির জবাব দেওয়া। সেই জবাব যারা শুনতে পারবে, তাদের সকলেরই ‘ইয়া হামুকাল্লা’ বলতে হবে। আর হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তাই যে কারোই উচিৎ তা বন্ধ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। যে হাই তোলে, শয়তান তাকে দেখে হাসে।”
[ বুখারি শরীফ, ৮:২৪২ ]
আমি মনে মনে তো ভীষণ খুশি। আমাকে আমার সৃষ্টিকর্তা অ্যাত্তো ভালোবাসেন যে, সক্কালবেলাই আমাকে এতো বার স্মরণ করছেন। আমি সেই খুশিতে তাড়াতাড়ি করে তৈরি হলাম বাইরে বের হবার জন্য, কেননা আজকের দিনটা ঐশী ইশারায় একটি ভাল দিন হিসাবে পেতে যাচ্ছি আমি।

যদিও আমি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে এটাও জানি যে, বিজ্ঞানের মতানুসারে, হাঁচিও মনুষ্য শরীরের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এটা বান্দার ওপর আল্লাপাক-প্রদত্ত সবিশেষ রহমতের বস্তু বলে বিজ্ঞান স্বীকার করে না। তবে ধর্ম বলে যে, সৃষ্টিকর্তা হাঁচি ভালবাসেন।

বিজ্ঞান আরো বলে যে, হাঁচির সাথে ঠাণ্ডা লাগার একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমার মনের ভেতরে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞা এতোই প্রবল হল যে, আমি ভুলেই গেলাম যে, আগের রাতে বাসায় ফেরার সময়ে রিক্সা না পেয়ে আমাকে অনেকটা পথ ভিজতে হয়েছিল বৃষ্টিতে। আর বিজ্ঞান বলে, শীতের ভেতরে এমন বৃষ্টিতে ভিজলে ঠাণ্ডা লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার ধর্মবিশ্বাসের কাছে ভেসে গেল সেই বিজ্ঞান। ভেসে গেল সেই লজিক। আমি সৃষ্টিকর্তার চয়েস, আজকে সকালের হাঁচিগুলাই তার প্রমাণ।

আজকে তাই অনেকগুলো কাজ সারতে হবে। সামিয়া আমার সাথে গোস্বা করে আছে, তাকে আজকে ভোলাতে হবে। আলম স্যার আমার অ্যাসাইনমেন্ট জমা না নিয়ে ঘোরাচ্ছেন কয়েকদিন ধরে, সেইটা মেটাতে হবে আজকের এই শুভদিনে। এমন অনেক অনেক কাজ জমে আছে আমার হাতে। আজকের দিনটা শুভ।

বাসা থেকে বের হয়ে সোজা ক্যাম্পাসে। আজকের দিনটা শুভ, হাজার হলেও অনেক হাঁচি দিয়া শুরু করেছি দিনটা। ক্লাশে ঢুকে আক্কেল গুড়ুম, আজকে কয়েকটা ক্লাস বাতিল হয়েছে। কারা নাকি ধর্মঘট ডেকেছে! আলম স্যার আসেন নাই। স্বাভাবিকভাবেই ক্লাস নাই, তাই সামিয়াও আসে নাই। ফোন করলে ফোন ধরছে না। মনে হয়, ক্লাস নাই, তাই ঘুমাচ্ছে ফোন অফ করে।

যাহ, এতো ভালো একটা দিন এইভাবে নষ্ট হবে? তাইলে আমার সকাল থেকে এতো হাঁচি উঠল কেন? হাঁচি না আমার সৃষ্টিকর্তার কাছে অতি প্রিয়। বলা হয়, দুনিয়ার কোনো পাতাই তাঁর ইশারা ছাড়া নড়ে না। তাহলে আমার যে সকাল বেলা সৃষ্টিকর্তার প্রিয় হাঁচি এল, তা তো তাঁর ইশারাতেই হয়েছে। তাহলে কেন আমার দিন ভাল গেল না?

তাহলে আমি কোনটা বিশ্বাস করব? বিজ্ঞান না ধর্ম? আছি তো ভাল দোটানায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন