আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ২০ জুন, ২০১৪

প্রথম প্রথম নাস্তিকতা: ঔষধ এবং তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

লিখেছেন জগৎপ্রেমিক

যখন প্রথম প্রথম নাস্তিক, তখন বয়স খুব বেশি ছিল না। এগারো-বারো। কিন্তু সেটাকে নাস্তিকতা বলার চেয়ে সংশয়বাদ বলাই সঠিক। বড়ই বিষণ্ণতায় দিন যাপন করতাম। 

অনভিজ্ঞ নাস্তিকরা বড়ই সংশয়ে ভোগে। কারণ তখন তাদের অনেকেই নির্দিষ্ট একটা পয়েন্টের ভিত্তিতে নাস্তিক হয়। যেমন আমি হয়েছিলাম এই পয়েন্টে: কুকুরও তো আল্লাহ্‌র সৃষ্টি, মানুষের গৃহপালিত বন্ধু, তবুও কুকুর কেন আল্লাহ্‌র কাছে জঘন্যতম ?

একেবারে নতুন নাস্তিক যখন আড়ষ্টভাবে কোনো হুজুরের সাথে কথা বলে বা বেমক্কা কোনও প্রশ্ন করে, হুজুর তখন উলটা-পালটা তাফসির দিয়ে একটা বোঝ দিয়ে ফেলে। তখন তওবা-টওবা করে পুনরায় আস্তিক। এ রকম বহুবার হতে পারে অনেকর ক্ষেত্রে। সে বড়ই বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি। মানে এটা তো আর যা তা বিষয় নয়। ঈশ্বরবিষয়ক। কতই না গলার রগ ফুলিয়ে তিনি পাপী-কাফিরদের শাস্তির হুমকি দিয়েছেন, আবার তাকে উদ্দেশ্য করে সামান্য অংবংচং করলেই পাবে স্বর্গ বা জান্নাত, উম, বাহাত্তরটা চিরযৌবনা হুরপরী অথবা সুদর্শন গেলমান। [তলপেটের ভেতর গরম তরলের অনুভূতি] 

কিন্তু তবুও মানব মস্তিষ্ক বড়ই স্বাধীন, বহুভাগে ভাগ, অবচেতন-সচেতনের লড়াই, সংশয়বাদী ভাবনা কি থামে রে, মমিন? নাহ। পার্থিব জগতের সর্বোত্তম বিবর্তিত মস্তিষ্কখানার ক্ষমতা যে অকল্পনীয়। কৌতূহলী মন উত্তর চায়। কিন্তু উত্তর দিতে ঈশ্বর স্বয়ং আসেন না। আসে গণ্ডমূর্খ মমিনের দল। 

মনে সংশয়, প্রাণে আশংকা, মরে গেলে না জানি কী হয় ! কালও তো মরে যেতে পারি! যা হাবিজাবি ভেবেছি, আল্লাহ্‌ তো পশ্চাতে লাথি দিয়ে হাবিয়ায় ফেলে দেবে! এতটা মানসিক চাপ সহ্য করা যায়? 

নাহ। এত মানসিক চাপ সহ্য করা যায় না। আর পারছি না। তারচেয়ে মরেই যাই। অনেকের মনে আত্মহত্যার চিন্তা উঁকি দিতে পারে। এখানে দুই ধরণের ভিত্তি থাকে: 
১. ঈশ্বর তো নাইই। শাস্তি দিবে কোন শালায়? কেবল আমি নাই। তো সমস্যা কি? জীবন উপভোগ না করলাম, কষ্টগুলো তো আর সইতে হবে না! 
২. চলে যাব সব ছেড়ে। কিন্তু গেলেই তো আল্যায় ঘাড়টার মাঝে ক্যাক করে ধরে আগুনের কুয়ায় চুবাবে। কারণ আত্মহত্যা সাক্ষাত জাহান্নাম। কিন্তু পারি না তো আর। যাই মরে যাবো, আল্লাহ্‌ ধরলে বলবো, আমি তো আপনার এই শর্তের স্ট্যাম্প মারা দলিলে সাইন করে জন্মাই নি। আপনি জোর করে জন্ম দিয়েছেন। আর আমার এই পরিণতি তো আপনিই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। 

২ নাম্বার পয়েন্টটা একটা বড় ফ্যাক্ট। 
আসলে বিভ্রান্ত, মূলত নব্য নাস্তিকরা সুইসাইডাল হতে পারে।

আমার নিজের একটি উদাহরণ দেই। নব্য নাস্তিক থাকা অবস্থায় একবার একটি কঠিন বিপদে পড়েছিলাম। না পারছি বাবা-মাকে বলতে, না পারছি বন্ধুবান্ধব বা ভাই-বোনদের। যা করার আমার একাই করতে হবে। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাব, যদি ভুল হয় ? ভেতরটা গুঁড়িয়ে যায় যে, এ জগতে আমি একা। অদৃশ্য কেউ নেই পথ দেখানোর! 

অসম্ভব কষ্ট হত। চোখ দিয়ে বৃষ্টি পড়তো না, মাথায় ঘূর্ণিঝড় হত। ধার্মিক হলে ঈশ্বরকে ডেকে শান্ত হওয়া যেত এই ভেবে - তিনি সাহায্য করছেন। প্রকৃতপক্ষে সাহায্য না করলেও বিশ্বাসটা আত্মবিশ্বাস দারুণভাবে বাড়ায়। 

তখন ঈশ্বরভীতি জয় করেও পরাজিত একটাই ভাবনা: এ জগতে আমার পরম সঙ্গে কেউ নেই। কেউ নেই। আমি একা। আমি একা। বড়ই একা। তবে এই অর্থহীনভাবে বেঁচে থেকে লাভ কী? চলে যাই এ কষ্টের জগৎ থেকে। কষ্ট করে ক'টা দিন। তারপর অভ্যস্ত হয় যাব। মানুষ মানিয়ে নিতে এক্সপার্ট। জগৎ ছেড়ে কারো কিচ্ছু হবে না। পরেও কিচ্ছু হবে। 

এই সমস্যার সমাধান হতে পারে একজন বন্ধুত্বপূর্ণ গাইড, যিনি নিজে এই সময়টা পার করে এসেছেন। তিনি সহজেই সঞ্চারণ করতে পারবেন তাঁর অনুভূতি। হুজুরের লজিকের কাউন্টার দিয়ে মুহূর্তে সংশয় কাটিয়ে দেবেন। 
কিন্তু বর্তমান সমাজে এমন গাইডের বড়ই অভাব। আমরা লঘুতম সংখ্যা। মাথায় সিঁদুর বা টুপি, নামে সেন, পাল বা মোহাম্মদ আহাম্মদ থেকেও নির্ধারণ করা যায় না ইনি আমাকে সাহায্য করতে পারবেন কি না। 

আমি যখন নব্য নাস্তিক,আমার কোন গাইড ছিল না। প্রচুর বাধা ছিল। আমি আমার চিন্তাগুলো নিয়ে কারো সাথে আলোচনা করা তো দূরে থাক, বলা শুরু করলে থাপ্পড় খেতে হত। ভাবতাম, তবে কি ঈশ্বর বিষয়ক প্রশ্ন করা পাপ? নাকি উত্তরটা তাদের জানা নেই? উত্তর না জেনে তারা ধর্ম মানছে কেন? মেনে কী লাভ। 

অনেক কষ্ট-লাঞ্ছনায় বড় হয়েছি, পোড় খেয়ে এ পর্যন্ত বেঁচেছি। সত্যিই বলছি, এখন ভালোই আছি। ধার্মিক হলে বলতাম, ধন্যবাদ ঈশ্বর, আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, নয়তো আজ এই অবস্থায় বেঁচে থেকে তোমার লুঙ্গি খুলতে পারতাম না। যেহেতু ধার্মিক নই, তাই বলছি, মানব মস্তিস্ককে ধন্যবাদ এত শক্তিশালী চিন্তন ক্ষমতা দেয়ার জন্য। 

ঈশ্বর নেই - এটা কী? বাস্তবতা। বাস্তবতা স্বীকার করতে সংশয় কেন? আত্মবিশ্বাসের অভাব। মানুষ যেমন ঈশ্বরকে সৃষ্টি করেছে, তেমনি আজ আপনি ঈশ্বরকে ধ্বংস করে দেখান। আপনার সে ক্ষমতা আছে। 

সুখ-দুঃখ সহ্য করবো না, তাই মরে যাব - এটা পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণীর উদাহরণ নয়। আমরা মহাবিশ্বের প্রতি দায়িত্বশীল। বেঁচে থাকতে হবে পরের জন্য। স্পাইডার ম্যান ফিল্মের একটা কথা মনে পড়লো, মহা একটি ক্ষমতা মহা একটি দায়িত্বের সাথেই আসে। 

আপনার ক্ষমতা হল আপনি সত্যটা জেনে গেছেন। 

পরিশেষে এই বলি, নাস্তিকতার পথে যারা নতুন, তাদেরকে মানসিকভাবে সাহায্য করা ও কঠোর যুক্তিবাদিতার পথের সন্ধান দেয়া আমাদের দায়িত্ব। কুসংস্কারের কালো আঁধারকে আলোকিত করাটাও মানবিকতার অংশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন