আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০১৪

নতুন নাস্তিকদের জন্য কিছু গাইডেন্স

লিখেছেন অর্ণব খান

নাস্তিক হওয়ার পথে শুরুতে যে ব্যাপারটি আমাকে সমস্যায় ফেলেছিল, তা হচ্ছে: আমি চিরতরে হারিয়ে যাব এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিলাম না। আসলে সারাজীবন জেনে এসেছি মৃত্যুর পরেও অনন্ত জীবন পাব, এটা জেনে এতই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম যে, একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যাবার ব্যাপারটা কষ্ট দিচ্ছিল। মূলত টিকে থাকার মানসিক আকুতি বিবর্তনের একটা উপযোগ ছাড়া কিছুই নয়। কষ্টটা এখন হতে পারে, কিন্তু মৃত্যুর পর সে কষ্ট অনুভব করার জন্য আর আমি থাকব না। মৃত্যু ঘুমের মত। আমি যে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছি, সেটাই আমি জানব না, তাহলে খামাখা কষ্ট পাওয়ার কি কোনো মানে আছে?

নাস্তিকতার পথে আরেকটি যে সমস্যা হতে পারে, তা হচ্ছে: শেষ বিচারের প্রত্যাশা। দৈনন্দিন জীবনে আমরা এত পরিমাণ অন্যায়-অনাচার দেখি, যেগুলোর কোনো বিচার ইহজগতে হয় না। অসহায় ভিক্টিমও দুনিয়াতে বিচার না পেয়ে পরকালের বিচারে বিশ্বাস করে মানসিক শান্তি পায়। নাস্তিকদের সাথে তর্কে না পেরে আস্তিকদের প্রায়ই "মরলে বুঝবি" বলে নিজেকে প্রবোধ দিতে দেখা যায়। মূলত এই সমস্যাটা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়। ন্যায় বিচার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব আর অন্যায় না করা সুস্থ সমাজের মানুষের দায়িত্ব। নরডিক দেশগুলোতে এই সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রায় আদর্শ, তাই সেখানে এই বিচারজনিত সমস্যা খুবই কম। কিন্তু আমাদের দেশের অন্যায়কারীদের কী হবে? আসলে প্রতিটি ক্রিয়ার যেমন একটি প্রতিক্রিয়া থাকে, তেমনি অন্যায়কারীরাও মানসিক বা অন্য কোনোভাবে কষ্ট পায় - যদিও এটা কোন বৈজ্ঞানিক সত্য নয়। এটা মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই যে, জগতের নিয়ম এটাই, আমরা গরু-মুরগীর মাংস খেয়ে বেঁচে আছি, কী দোষ ছিল ওই প্রাণীগুলোর? প্রতিটি প্রাণীই একে অন্যকে খেয়ে বেঁচে থাকে, এসব অন্যায় নিয়েই আমাদের জগৎ। বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব এটাই যে, আমরা যেন অন্যায় এর পরিমাণ কমিয়ে আনি।

নাস্তিকতার পথে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, এই চিন্তা করা যে মৃত্যুর পর যদি সত্যিই দেখা যায় যে আল্লাহ আছে? আসলে এই সমস্যাটা খুবই সিলি। কোরানের কথাগুলো আপনি কিসের ভিত্তিতে সত্য ধরে নিচ্ছেন? মৃত্যুর পর তো আপনি এটাও দেখতে পারেন যে, ইসলাম নয় বরং খ্রীষ্টান, ইহুদি বা হিন্দু ধর্ম সত্য, তখনো তো আপনি নরকে পুড়বেন। আবার এমন তো হতে পারে যে, কোনো ধর্মই সত্য নয়, বরং বিবেকের নীতির কথা শোনেননি বলে নরকে যাবেন। আর যদি মৃত্যুর পর সত্যিই দেখেন যে, ইসলাম সত্য তবু আপনার বলার অনেক কিছুই থাকবে আল্লাহর কাছে। আপনি বলতে পারেন যে, আপনি পরিষ্কার মন নিয়েই কোরান-হাদিসে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজেছেন, কিন্তু পাননি, আর তাছাড়া অন্য কোনো মহা অন্যায় তো আপনি করেননি। আর যুক্তি দিয়ে চিন্তা করলে দেখবেন যে, অন্যায় করলে আল্লাহ অল্প কিছু শাস্তি দিতে পারেন, কিন্তু শুধুমাত্র তাঁর অস্তিত্বে অবিশ্বাসের কারণে আল্লাহ তো দূরের কথা চরম পাষাণও কাউকে চিরকাল নরকে পোড়াতে পারবে না।

নাস্তিক হবার আগে অনেকের এমনও মনে হতে পারে যে, দুনিয়ায় এত এত মুসলিম কেন? পৃথিবীর এতগুলো মানুষ কি একসাথে ভুল হতে পারে? এক্ষেত্রে ভেবে দেখতে হবে পৃথিবীতে ইসলামের অনুসারীর চাইতে খ্রীষ্ট ধর্মের অনুসারী বেশি। এতে করে কিন্তু খ্রীষ্ট ধর্ম সত্য হয়ে যায় না। এখনো দুনিয়ায় এত এত ধর্মবিশ্বাসী মানুষ থাকার কারণ হচ্ছে ছোটবেলায় মাথায় জোডর করে ঢুকিয়ে দেয়া ধর্মবিশ্বাস বড় হয়ে ঝেড়ে ফেলা একেবারেই সহজ কাজ নয়। একারণেই অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব ক্ষেত্রেই মুসলিম ঘরের ছেলে মুসলিম, হিন্দু ঘরের ছেলে হিন্দু আর খ্রীষ্টান ঘরের ছেলে খ্রীষ্টান হয়। ধর্মবিশ্বাস এমনই জিনিস যে, একটা পুরো গ্রামের লোক মাইকে শুনে বিশ্বাস করে ফেলে যে সাঈদিকে চাঁদে দেখা গিয়েছে। ওই গ্রামে সাঈদিকে চাঁদে দেখা গিয়েছে - এ কথা বিশ্বাসী গ্রামসুদ্ধ লোকের সংখ্যাধিক্যের কারণে কি সেই বিশ্বাস সত্য হয়ে গিয়েছিল? অন্যের কথায় না চলে নিজের যুক্তি বা বিবেচনায় চলাই কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়?

কোরান-হাদিসের বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য ত্রুটি দেখে যারা নাস্তিক হয়, অনেক সময় তারা নতুন করে কোরানের পক্ষে কিছু যুক্তি দেখে আবার আস্তিকতায় প্রত্যাবর্তন করে। আবার আস্তিকতায় যাবার আগে একটু ভাবুন, আপনি কোরানকে যতই নির্ভুল হিসেবে দেখান না কেন, সেগুলো কোনোভাবেই প্রমাণ করে না মুহাম্মদ একজন ইশ্বর প্রেরিত পুরুষ এবং কোরান একটি আলৌকিক গ্রন্থ। ইসলামের সুন্দর দিকগুলোকে সুন্দর বলা যেতে পারে এবং অসুন্দর দিকগুলোকেও অসুন্দর বলা যেতে পারে। আপনি যখন বিশ্বাস করে ফেলবেন যে, কোরান আলৌকিক তখন ইসলামের অসুন্দর দিকগুলোকেও সুন্দর লাগবে, অযৌক্তিক দিকগুলোকেও যৌক্তিক মনে হবে। আমি যদি ধরেই নিই যে, কোরান খোদ স্রষ্টা থেকেই এসেছে আমি কোন সাহসে যুক্তি-তর্ক দিয়ে স্রষ্টার বাণীর যথার্থতা বিচার করতে যাব? কোরানে যদি বলা থাকত 'ছোট মেয়েদের ধরে মেরে ফেল', তাহলে সেই বাণীর মধ্যেও আমি মাধুর্য খুজে পেতাম। 'বিজ্ঞান' দিয়ে প্রমাণ করে দিতাম যে, আমাদের পরিবেশে ছোট মেয়ে থাকা বিপদজনক। তাই আমি কখনও এই যুক্তি-তর্কে যাই না যে, বাণীগুলো মহান কি মহান নয়। বৌ পেটানো, দাসীর সঙ্গে সহবত ইত্যাদি সবই আমার কাছে পবিত্র মনে হবে, কারণ এ যে স্বয়ং বিধাতার নির্দেশ। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, আমি কীভাবে ধরে নেব যে কোরান আলৌকিক? কোরানে বিজ্ঞান থাকলেই কি তা অলৌকিক হয়ে যায়? আজকে আমি যদি বলি, আমি এই মাত্র আল্লাহর সাথে ডিনার করে এলাম এবং আমার অনেক অনুসরণীয় ভাল গুণাবলী আছে, আর আমি সত্যের পথে ডাকি, তাহলে আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করবেন? বিশ্বাস না করলে কেন করবেন না? আপনি কি প্রমাণ করতে পারবেন যে, আমি আসলেই ঈশ্বরের সাথে ডিনার করে আসিনি? এখন কেউ যদি আমার অনুসরনীয় ভাল গুণগুলো অনুসরন করতে চায়, সেটা অবশ্যই ভাল কাজ হতে পারে, সেজন্য আমাকে যদি কেউ ভালবাসে, বাসতেই পারে। কিন্তু আমি যে ঈশ্বরের সাথে ডিনার করে এসেছি এই কথাটা কখনোই সত্য প্রমাণিত হয় না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন